hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইতিহাসের ইতিহাস

লেখকঃ গোলাম আহমাদ মোর্তজা

৬০
করমচাঁদ গান্ধী
আমরা প্রচলিত ইতিহাস পাঠান্তে একথা জানি, স্বাধীনতা এনেছে কংগ্রেস আর বিজয় মাল্য ও পুরস্কারে পূর্ণ অধিকার যেন কংগ্রেস কর্মীদেরই। তাই আমরা প্রচলিত মতে গান্ধীজিকে জাতির জনক বলে আসছি। আর মতিলাল, জওহর লাল, মাওলানা আজাদ, সর্দার প্যাটেল প্রমুখ প্রত্যক্ষ সংগ্রামের নেতাদের আর ঐ নেতাদের পথ দেখিয়েছেন যারা সেই রামমোহন রায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বঙ্কিমচন্দ্র, বিদ্যাসাগর, হেয়ার, তিলক, আবদুল লতিফ, স্যার আহমাদ খাঁ, নজরুল, শরৎচন্দ্র প্রমুখকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে আসছি। কিন্তু বর্তমান ইতিহাস বিজ্ঞানীরা এগুলি কিছু স্বীকার কিছু কিছু অস্বীকার আর চাপা দেওয়া তথ্যকে তুলে ধরে পুরাতন কঠিন বিশ্বাস বুহ্যকে বাতিল করে নূতন-পুরাতন ধারণার সংমিশ্রণে মিলিত একটা আধুনিক বৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে চান, যেটা আমরা বক্ষ্যমাণ গ্রন্থে নাতিদীর্ঘাকারেই তুলে ধরছি।

পলাশী যুদ্ধের পর হতে বহু আন্দোলনে মুসলমান প্রজাবৃন্দ বারে বারে ইংরেজকে যারপরনাই ভাবিয়ে তোলে। তাই তারা মুসলমান বুদ্ধিজীবীদের ধ্বংস করার সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রে একদিকে প্রয়োগ করল সরকারি ব্যবস্থায় ফারসী ভাষাকে সরিয়ে ‘ইংরাজির প্রবর্তন’ অপর দিকে ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের’ চক্রান্ত। তেমনিভাবে ইংরেজরা হিন্দু ইংরেজি শিক্ষিত ব্যক্তিদের ও কিছু মুসলমানদের নিয়ে শোষণের হাতিয়ার হিসেবে কংগ্রেস পার্টির জন্ম দেয়। ১৮৮৫ সালে ইংরেজ নেতা মিঃ হিউম ছিলেন এর উদোক্তা।

“ওহাবী আন্দোলন, সিপাহী বিদ্রোহ” প্রভৃতির সঙ্গে যে জাতীয় চেতনা ক্রমশ সংঘবদ্ধ হইয়া উঠিতেছিল তাহা ব্যর্থ করিয়া দেয়ার জন্য শাসনগত ব্যাপারে ভারতে একশ্রেণীর লোকের সহযোগিতা লাভই এই প্রচেষ্টার মূল উদ্দেশ্য ছিল। শ্ৰীযুক্ত উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রতিষ্ঠানের প্রথম সভাপতি। এই সময়ে উচ্চ পদস্থ ইংরেজ কর্মচারীগণ কংগ্রেসের অধিবেশনে যোগদান করিতেন। তখনকার দিনের উচ্চ শিক্ষিত ও পদ মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিগণ বিশেষ করিয়া ইংরাজি ভাষার মারফত পাশ্চাত্য জ্ঞান বিজ্ঞানের সহিত যাঁহারা ঘনিষ্ঠ সংযোগ স্থাপন করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন তাঁহারাই কংগ্রেসের কর্ণধার ছিলেন। ইহাদের মধ্যে রমেশচন্দ্র দত্ত, স্যার ফিরোজ শাহ মেটা, আনন্দমোহন বসু, দাদা ভাই নৌরোজী, রানাড়ে, স্যার সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। বাংলার রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মহারাষ্ট্রের গোপাল রাও প্রমুখ মনীষী নব আলোক আন্দোলন প্রবর্তিত করে...............ভারতবাসীকে উদ্বুদ্ধ করিতে চাহিয়াছিলেন। (দ্রঃ 'পনেরই আগষ্ট', সত্যেন সেন পৃঃ ৯৮)।

ঐ কংগ্রেস নামে মাত্র জাতীয় কংগ্রেস হলেও জনসাধারণের প্রতিনিধি ছিল না। এক কথায় জনসাধারণের সাথে সম্বন্ধবিহীন এক রাজনৈতিক দল। এ কথা উক্ত দলের সদস্য স্যার ফিরোজ শাহ মেটা নিজ মুখে স্বীকার করেছিলেন, “The Congress was indeed not the voice of the masses." অর্থাৎ কংগ্রেস প্রকৃত পক্ষে জনসাধারণের মুখপাত্র ছিল না। (দ্রঃ পনেরই আগষ্ট, পৃঃ ৯৯)।

ঐ কংগেসেরই মধ্যে আবার একটি দল নিজেদের খাঁটি হিন্দু জাতীয়তাবাদীরূপে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এঁরা হচ্ছে “মহারাষ্ট্রের গঙ্গাধর তিলক, পাবের লালা লাজপৎ রায় এবং বাংলার অরবিন্দ ঘোষ ও বিপিন চন্দ্র পাল। ইহারা নিজেদের জাতীয়তাবাদী অথবা গোড়া জাতীয়তাবাদীরূপে অভিহিত করিলেন।” (দ্রষ্টব্য পনেরই আগষ্ট, পৃঃ ৯৯)। এরা লক্ষ্য করেছিলেন ইংরেজদের বিরুদ্ধে মুসলমান জাতি প্রায় একাই লড়াই করে যাচ্ছে এবং এও বুঝতে পারলেন যে ইংরেজরা বেশ বিব্রতবোধ করছে এবং আমাদের দালাল শ্রেণীতে মর্যাদা দিয়ে নিজেদের রক্ষা করতে চায়। এঁরা আরও লক্ষ্য করেছিলেন মুসলমানদের সংগ্রাম শুধু ইংরেজ বিতাড়নের উদ্দেশ্যে হলেও সেই সঙ্গে নিজেদের ধর্মের পুরাতন ধারাকে পুনঃ প্রতিষ্ঠা করতে তারা সমানভাবে সচেষ্ট। অপরদিকে হিন্দু শিক্ষিত সম্প্রদায় নাস্তিক বা খৃষ্টান হয়েছে, হচ্ছে বা হতে চলেছে, ফলে মুসলমান যখন একাই স্বাধীনতা নিয়ে আসবে তখন হিন্দু জাতির অস্তিত্ব নাও থাকতে পারে। এ এরাও হিন্দু ধর্মের পুরাতন সব নিয়মনীতিকে আবার পুনঃ প্রতিষ্ঠিত করিতে বদ্ধ পরিকর হলেন। ফলে তখন স্বাভাবিকভাবেই এঁদের সংগ্রামে সাম্প্রদায়িকতা মিশ্রিত হয়। অবশ্য কেউ কেউ বলেন, এই চরমপন্থী ও নরমপন্থীর বিভাজন চতুর ইংরেজেরই সুদক্ষ ইঙ্গিতে।

সে যাইহোক, আপাতত চরমপন্থী দলের উদ্দেশ্য ও কাজে প্রমাণ পাওয়া যেতে লাগলো যে তারা পুরোপুরি মুসলমানবিরোধী দল। অতএব তাঁদের কার্যকলাপে দলে দলে সহজে জাতীয় কংগ্রেসে মুসলমানদের যোগ দেওয়া নিঃসন্দেহে সম্ভব ছিল না। হিন্দু ধর্ম ধর্মের অনেক কুসংস্কার ও কুৎসিত প্রথাকে বর্জন করে যেমন উন্নত হতে শুরু করেছিল যথা বর্ণাশ্রমের কারণে অস্পৃশ্যতা, বাল্যবিবাহ, সতীদাহ, সীমাহীন প্রাত্যহিক পূজাপার্বণ প্রভৃতি। এই নতুন দলটি সমস্ত কিছু আবার যথাস্থানে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করে ফলে সহজেই প্রাচীন সংস্কারপন্থী হিন্দুরা ঐ দলকে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন। সত্যেন সেন মহাশয় লিখেছেন, “বাল গঙ্গাধর তিলক এই সনাতনপন্থীদের নেতৃত্ব গ্রহণ করিলেন। ১৮৯০ খৃষ্টাব্দে বালিকাদের বিবাহের বয়স দশ হইতে বারো বছর করার উদ্দেশ্যে আনিত একটি বিলের বিরুদ্ধে তিলক প্রবল আন্দোলন শুরু করিয়া দিলেন। রানাডে প্রমুখ উদারপন্থীগণ এই বিলের সমর্থক ছিলেন। অতঃপর তিলক গোহত্যা নিবারণের উদ্দেশ্যে গো রক্ষা সোসাইটি নামে একটি সমিতি সংগঠন করিলেন। এতদ্বতীত শিবাজী উৎসব, হস্তী মুখো দেবতা গণেশ প্রভৃতির পুজাও মহা সমারোহে অনুষ্ঠিত হইতে লাগিলো। বাংলাদেশে শুরু হইল ধ্বংসের দেবতা কালী সাধনা।” “তথাপি হিন্দু সভ্যতা ও সংস্কৃতির উপরে অত্যধিক গুরুত্ব আরোপ করিবার ফলে জাতীয় আন্দোলনের গতিধারা সম্মুখ গতি অবলম্বন না করিয়া পশ্চাদগামী হইয়া পড়িল। কারণ গো হত্যা নিবারণ, দেব দেবীর পূজা প্রভৃতি ধর্মানুষ্ঠান কোন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্মসূচী হইলে অপরাপর ধর্ম সম্প্রদায় সেই প্রতিষ্ঠানকে প্রীতির চক্ষে দেখিবে ইহা আশা করা যুক্তিযুক্ত নয়। বলা বাহুল্য, এই গোঁড়া হিন্দু মনোভাবই শেষ পর্যন্ত মুসলমান সম্প্রদায়কে জাতীয় আন্দোলন হইতে বিচ্ছিন্ন করিয়া দেয়।" (দ্রঃ পনেরই আগষ্ট, পৃঃ ১০০-১০১)

প্রচলিত স্বাধীনতার ইতিহাসে দেখা যায় মুসলমানগণ সামগ্রিকভাবে যেন হিন্দুদের সঙ্গে যোগ না দিয়ে ইংরেজদের পক্ষই অবলম্বন করেছিলেন। কিন্তু আসল ইতিহাস তা নয়, বরং মুসলমান জাতি প্রথম হতে শেষের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত অনাহার আর অত্যাচারকে সানন্দে বরণ করে নিয়ে লড়তে লড়তে মৃত্যুর দিকে ঝাপিয়ে পড়েছে। তখন তারা শত চেষ্টা করেও যোগ দেওয়াতে পারেনি সামগ্রিকভাবে হিন্দু সম্প্রদায়কে। ভারতের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে মত পোষণ করে চলেছে সেই বৃহত্তর সম্প্রদায় আর নানা পত্রপত্রিকায় গদ্য ও পদ্যে মুসলমান বিপ্লবীদের বিপ্লবকে বিদ্রুপ ও উপেক্ষা করা হয়েছে। তথাপিও মুসলমান বিপ্লবী দল চালিয়ে গেছেন তাঁদের বিপ্লবের চলন্ত ধারা। ১৯০৬ সালে দাদা ভাই নৌরোজী চরমপন্থীদের নিয়ে কলকাতায় কংগ্রেসে সর্ব প্রথমে স্বাধীনতার পরিবর্তে স্বরাজের দাবি করা হয়। স্বাধীনতা আর স্বরাজ এক নয়। স্বরাজ হচ্ছে নিজেদের দাবি দাওয়া ইংরেজের কাছ হতে আদায় করা আর স্বাধীনতা হচ্ছে ইংরেজকে তাড়িয়ে নিজেরা ইচ্ছামতভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া। যাইহোক মুসলমান বিদ্বেষী এই দলের নীতির সঙ্গে মুসলমানগণ হাত মেলানোর পরিবর্তে স্বভাবতই বিরোধিতা করেছিলেন। (দ্রঃ সত্যেন সেনের রচনা)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন