hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শরয়ী ইলম সংক্রান্ত কিছু জরূরী জ্ঞাতব্য বিষয়

লেখকঃ আবু আব্দিল ইলাহ্ ছালেহ্ বিন মুক্ববিল আল্ উছায়মী আত্ তামীমী

৫১
ইসলাম বিনষ্টকারী বিষয়সমূহঃ
১-শিরক। মহান আল্লাহ্ বলেনঃ

( إنَّ اللهَ لاَيَغْفِرُ أنْ يُشْرَكَ بِهِ )[ النساء :৪৮]

‘নিশ্চয় আল্লাহ তার সাথে শির্ক করাকে ক্ষমা করেন না।’ (সূরা আন্ নিসাঃ৪৮)

২-যে ব্যক্তি নিজের ও আল্লাহর মধ্যে মধ্যস্থ স্থির করে তাদেরকে আহবান করে, তাদের নিকট সুপারিশ তলব করে, তাদের উপর ভরসা করে (এই ধরনের ব্যক্তি সর্ব সম্মতিক্রমে কাফের বলে গণ্য)।

মহান আল্লাহ্ বলেনঃ

وَيَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ مَا لا يَضُرُّهُمْ وَلا يَنْفَعُهُمْ ( وَيَقُولُونَ هَؤُلاءِ شُفَعَاؤُنَا عِنْدَ اللَّهِ )[ يونس :১৮]

‘তারা আল্লাহ্ ব্যতীত এমন কিছু উপাসনা করে যা তাদের অপকার ও উপকার কিছুই করতে পারে না (আর তারা বলে যে এরা-তথা তাদের বাতিল উপাস্যগুলি-আল্লাহর নিকট আমাদের জন্য সুপারিশকারী) (সূরা ইউনুসঃ১৮)

মহান আল্লাহ্ আরো বলেনঃ

مَا نَعْبُدُهُمْ إِلَّا لِيُقَرِّبُونَا إِلَى اللَّهِ زُلْفَى [ الزمر :৩]

‘(তারা বলেঃ) আমরা তো তাদের ইবাদত এজন্যই করি যাতে করে তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেয়।’ (সূরা আয্ যুমারঃ৩)

৩-যে ব্যক্তি মুশরিকদেরকে কাফের বলবে না বা তাদের কুফরীতে সন্দেহ পোষণ করবে কিংবা তাদের ধর্মকে সঠিক ভাববে সে কাফের বলে গণ্য হবে। কারণ এর অর্থই হল আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা কিছু নিয়ে এসেছেন তাতে সন্দেহ সৃষ্টি করা। মহান আল্লাহ্ বলেনঃ

وَقَالُوا إِنَّا كَفَرْنَا بِمَا أُرْسِلْتُمْ بِهِ وَإِنَّا لَفِي شَكٍّ مِمَّا تَدْعُونَنَا إِلَيْهِ مُرِيبٍ (৯)[ إبراهيم ]

আর তারা বললঃ নিশ্চয় আপনারা যা নিয়ে প্রেরিত হয়েছেন আমরা তার সাথে কুফরী করলাম। আর নিশ্চয়ই আপনারা আমাদেরকে যার প্রতি আহবান করতেছেন সে বিষয়ে আমরা সন্দেহে আছি, ইহা আমাদেরকে উৎকন্ঠায় ফেলে রেখেছে। (সূরা ইবরাহীমঃ ৯)

কারণ যে ব্যক্তি তাদের ধর্মকে সঠিক মনে করবে এবং তারা যার উপর প্রতিষ্ঠিত তা উত্তম জানবে অর্থাৎ তাদে কুফরী ও সীমালংঘণকে উত্তম গণ্য করবে সে মুসলিমদের ঐকমত্যে কাফের। (শাইখ সুলাইমান আল্ উলওয়ান প্রণীত ‘আত্ তিবয়ানু বিশারহি নাওয়াক্বিযিল ইসলাম’ পৃঃ২৬)

৪-যে ব্যক্তি এই বিশ্বাস করে যে অন্যের আদর্শ বা তার ফায়ছালা নবীর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শের ও ফায়ছালার চাইতে বেশী উত্তম, অথবা তার মত। তাহলে সে তাদের মত হয়ে গেল যারা ত্বাগুতদের বিধানকে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিধানের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে থাকে। মহান আল্লাহ্ বলেনঃ

فَلا وَرَبِّكَ لا يُؤْمِنُونَ حَتَّى يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لا يَجِدُوا فِي أَنْفُسِهِمْ حَرَجاً مِمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوا تَسْلِيماً (৬৫)[ النساء ].

‘আপনার প্রতিপালকের কসম! তারা মুমিন হবে না যতক্ষণ না আপনাকে তাদের বিতর্কিত বিষয়ে ফায়ছালাকারী হিসাবে গ্রহণ করবে, অতঃপর আপনার ফায়ছালা মর্মে তাদের অন্তরে সামান্য সংকীর্ণতাবোধ তারা পাবে না, এবং পরিপূর্ণরূপে তা মেনে নেবে।’ (সূরা আন্ নিসাঃ৬৫)

৫-রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম আনিত কোন বস্ত্তকে যদি কেউ ঘৃণার চোখে দেখে তবে যদিও সে ঐ বস্ত্তর উপর বাহ্যিকভাবে আমল করে তবুও সমস্ত ওলামায়ে দ্বীনের ঐকমত্যে সে কাফের বলে গণ্য হবে। যেমন আল ইক্বনা’ কিতাবের গ্রন্থকার সংকলন করেছেন।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

( ذلكَ بِأنَّهُمْ كَرِهُوا ماَ أنْزَل اللهُ فَأحْبَطَ أعْماَلَهُمْ )[ محمد :৯]

এটা এজন্য যে, তারা আল্লাহর নাযীলকৃত বিষয়কে ঘৃণা করেছে সুতরাং আল্লাহ তাদের আমলগুলোকে বাতিল করে দিয়েছেন। (সূরা মুহাম্মাদ : ৯)

৬-যে ব্যক্তি আল্লাহর দ্বীনের কোন কিছুকে নিয়ে বা তার পুরস্কার কিংবা শাস্তি-কে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করবে, সে কাফের হয়ে যাবে।

মহান আল্লাহ্ বলেনঃ

( قُلْ أ بِاللهِ وآياَتِهِ وَرَسُوْلِهِ كُنْتُمْ تستهزئون . لاَ تَعْتَذِرُوْا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إيْماَنِكُمْ )[ التوبة :৬৫-৬৬].

(হে রাসূল!) বল, তোমরা কি আললাহর সাথে, তদীয় আয়াতসমূহের সাথে এবং তাঁর রাসূলের সাথে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করছিলে? কোন প্রকার ওযর আপত্তির অবতারনা করোনা। তোমরা ঈমানের পর আবার কুফরী করেছ। (সূরা আত্ তাওবাহ্ : ৬৫-৬৬)

এ ক্ষেত্রে কথা, কাজ, নির্দেশ, নিষেধাজ্ঞায় কোন পার্থক্য নেই।

৭- যাদু টোনা করা, বা তাতে পরিতুষ্ট থাকা (কাউকে কারো থেকে ফিরানো, কাউকে কারো সাথে সংযুক্ত করার কৌশল অবলম্বন -ইহা যাদু টোনারই অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং যে ব্যক্তি যাদু করবে বা তাতে রাযী হবে সে কাফের বলে বিবেচিত হবে)। মহান আল্লাহ্ বলেন:

وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنْ أَحَدٍ حَتَّى يَقُولا إِنَّمَا نَحْنُ فِتْنَةٌ فَلا تَكْفُرْ فَيَتَعَلَّمُونَ مِنْهُمَا مَا يُفَرِّقُونَ بِهِ بَيْنَ الْمَرْءِ وَزَوْجِهِ وَمَا هُمْ بِضَارِّينَ بِهِ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ وَيَتَعَلَّمُونَ مَا يَضُرُّهُمْ وَلا يَنْفَعُهُمْ وَلَقَدْ عَلِمُوا لَمَنِ اشْتَرَاهُ مَا لَهُ فِي الْآخِرَةِ مِنْ خَلاقٍ وَلَبِئْسَ مَا شَرَوْا بِهِ أَنْفُسَهُمْ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ (১০২)[ البقرة ]

আর তারা (হারূত ও মারূত ফেরেশ্তা) কাউকে শেখাত না যে পর্যন্ত না বলত যে, ‘আমরা তো পরীক্ষা, সুতরাং তোমরা কুফরী করো না।' এরপরও তারা এদের কাছ থেকে শিখত, যার মাধ্যমে তারা পুরুষ ও তার স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাত। অথচ তারা তার মাধ্যমে কারো কোন ক্ষতি করতে পারত না আল্লাহর অনুমতি ছাড়া। আর তারা শিখত যা তাদের ক্ষতি করত, তাদের উপকার করত না এবং তারা নিশ্চয় জানত যে, যে ব্যক্তি তা ক্রয় করবে, আখিরাতে তার কোন অংশ থাকবে না। আর তা নিশ্চিতরূপে কতই-না মন্দ, যার বিনিময়ে তারা নিজদেরকে বিক্রয় করেছে। যদি তারা বুঝত।

(সূরাবাক্বারাহ্: ১০২)

৮-মুশরিকদেরকে মুসলমানদের বিরূদ্ধে সাহায্য-সহযোগিতা করা। মহান আল্লাহ্ বলেনঃ

( وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ مِنْكُمْ فَإنَّهُ مِنْهُمْ )

তোমাদের মধ্য হতে যে ওদের (অর্থাৎ বিধর্মীদের) সাথে বন্ধুত্ব করবে সে তাদেরই দলভূক্ত বলে গণ্য হবে। (সূরা আল্ মায়েদাহ্ : ৫১)

৯-যে ব্যক্তি বিশ্বাস করে যে, কারো জন্য ইসলামের শরী‘আতের বাইরে থাকার অবকাশ রয়েছে তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে।

এরই অন্তর্ভুক্ত হবে ঐ ব্যক্তি যে খৃষ্টান বা ইহুদীদের ইসলামের শরী‘আতের বাইরে থাকা বৈধ মনে করবে, এই অযুহাতে যে, তাদের ধর্মও আসমানী ধর্ম। অথবা তাসাউফপন্তী পীরদের ব্যাপারে এ ধারনা করা যে, তারা শরীয়তের আওতার বাহিরে অবস্থান করছে।

মহান আল্লাহ বলেন:

( وَمَنْ يَبْتَغِ غَيْرَ الإسْلاَمِ دِيْناً فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوِ فِيْ الآخِرَةِ مِنَ الْخاَسِرِيْنَ )

‘যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কিছু অন্বেষণ করবে তার থেকে তা কক্ষণই গ্রহণ করা হবে না। এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের দলভূক্ত হবে।’ (সূরা আলে ইমরান: ৮৫)

অতএব, ইসলাম হল ব্যাপক ও সর্ববিষয় অন্তর্ভূক্তকারী। এই ইসলাম দ্বারা আল্লাহ্ পূর্বেও সকল শরী‘আতকে মিটিয়ে দিয়েছেন। মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আবির্ভাবের পর আল্লাহ্ কারো থেকে এই ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনই ধর্ম গ্রহণ করবেন না।

অত্যন্ত আফসুসের বিষয় যে, ইহুদী ও খৃষ্টানদের জন্য এই ইসলাম এর বাইরে থাকার মাসয়ালাটি এমনই একটি দর্শন যা দ্বারা অজ্ঞতা বা গাফলাতির কারণ ধোকাগ্রস্ত হয়েছেন এমন কিছু কিছু ব্যক্তি যারা ইসলামী চিন্তাধারার লোক বলে মানুষ জানে। [‘ইসলামী চিন্তা ধারা’-তথা ইসলামী চিন্তাবিদ’এই পরিভাষাটি আমাদের শাইখ আল্লামাহ্ বাকর বিন আব্দুল্লাহ্ আবু যায়দ তাঁর ‘মু’জামুল মানাহী আল্ লাফযিয়্যাহ’ নামক গ্রন্থে অস্বীকার-প্রতিবাদ করেছেন। এর পরও আমি তা বলেছি কারণ ঐজাতীয় লোকদের পরিচয়ে এজাতীয় শব্দ ব্যবহার করার ব্যাপক প্রচলন রয়েছে।] অথচ রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই মর্মে সংবাদ দিয়েছেন যে, তার (আনিত) ধর্ম অন্য সকল ধর্মকে মানসূখ-রহিত করে দিয়েছে।

তিনি বলেন-যেমনটি নাসায়ীর নিকট এসেছেঃ

( لَوْ كَانَ أَخِيْ مُوْسَى حَيًّا مَا وَسِعَهُ إِلَّا اتِّبَاعِيْ )[ أخرجه أحمد ৩/৩৭৩ ، وقد حسنه الألباني في الإرواء ৬/৩৪]

যদি আমার ভাই মুসা আজ জীবিত থাকতেন তাহলে তার আমার আনুগত্য ছাড়া কোন উপায় থাকত না। (আহমাদ,৩/৩৭৩, আলবানী হাদীছটিকে ইরওয়াউল গালীল গ্রন্থে ৬/৩৪ হাসান বলেছেন)

শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়া বলেন:

‘যে বিষয় দ্বারা তাদের মূসা ও খিযির এর ঘটনা দ্বারা শরী‘আতের বিরোধিতা করার দলীল গ্রহণ করার বিষয়টি স্পষ্টভাবে ভুল প্রমাণিত হয়ে যায় তাহল ইহাই যে, মূসা আলাইহিস্ সালাম ‘খাযের’ আলাইহিস্ সালামের নিকট নবী হিসাবে প্রেরিত হননি। অনুরূপভাবে আল্লাহ্ খাযিরের উপর মূসার অনুসরণ ও আনুগত্য করা ওয়াজিবও করেননি। বরং বুখারী ও মুসলিমে এই মর্মে হাদীছ সুসাব্যস্ত হয়েছে যে, তাঁকে তথা মূসা কে লক্ষ্য করে খাযির আলাইহিস্ সালাম বলেছিলেনঃ হে মূসা! আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন এক ইলমের উপর আছি যা আল্লাহ্ আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন; আপনি সে ইলম সম্পর্কে জানেন না। অনুরূপভাবে আল্লাহর শিখানো এমন এক ইলমের উপর আপনি সুপ্রতিষ্ঠিত রয়েছেন যা আমি জানি না। আর এর কারণই হল যে, মূসা আলাইহিস্ সালামের দাওয়াত খাছ ছিল। আর আমাদের-রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দাওয়াত হল ব্যাপক এবং সমস্ত মানুষকে শামিল করে। তাঁর আনুগত্য থেকে বাইরে অবস্থান করা ও তা থেকে অমুখাপেক্ষী থাকার কারও অধিকার নেই।’

১০-সম্পূর্ণ রূপে আল্লাহর দ্বীন হতে বিমুখ থাকা। সে ব্যাপারে জ্ঞানার্জন না করা, তদানুযায়ী কাজ করার প্রয়োজন অনুভব না করা (এই ধরনের মন মানসিকতার ব্যক্তিও কাফের বলে গন্য)।

মহান আল্লাহ্ বলেন:

( وَمَنْ أظْلَمُ مِمَّنْ ذُكِّرَ بِآياَتِ رَبِّهِ ثُمَّ أعْرَضَ عَنْهاَ ، إناَّ مِنَ الْمُجْرِمِيْنَ مُنْتَقِمُوْنَ ) [ السجدة :২২]

‘ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা কে বেশী যালিম (অত্যাচারী) হতে পারে, যাকে উপদেশ দেওয়া হয়েছে স্বীয় প্রতিপালকের আয়াত সমূহ দ্বারা অত:পর সে উহা হতে বিমুখ হয়েছে? নিশ্চয় আমি অপরাধীদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণকারী।’ (সূরা আস সাজদাহ্ : ২২)

এতে আমাদের যামানার ও তার পূর্বের যামানার বহু কবর পূজারীর বিধান শামিল রয়েছে। যাদের নিকট তাওহীদের দাওয়াত পৌঁছেছে, তাদেরকে তা খুলে বলার পরও তারা তা মানে না। বস্ত্তত এরাই হল রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক আনিত শরী‘আত থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখা ব্যক্তি যারা নিজের কান ও অন্তর উভয় দিক দিয়েই সম্পূর্ণরূপে (শরী‘আত থেকে) বিমুখ হয়ে রয়েছে।

এরা কোন নছীহতকারীর নছীহতে এবং কোন পথপ্রদর্শকের দিক নির্দেশনার প্রতি মোটেও কান দেয় না। এরূপ ধর্ম বিমুখতার কারণে এজাতীয় লোক কাফের। মহান আল্লাহ্ বলেনঃ

وَالَّذِينَ كَفَرُوا عَمَّا أُنْذِرُوا مُعْرِضُونَ (৩)[ الأحقاف ]

‘আর যারা কাফির তাদেরকে যে বিষয়ে ভীতি প্রদর্শন করানো হয়েছে তা থেকে তারা বিমুখ।’ (সূরা আল্ আহক্বাফঃ৩)

সাধারণতঃ জাহেল-অজ্ঞ ব্যক্তিকে কোনটি হক খুলে বলা হলে সে তার অনুসরণ ও আনুগত্য করে। অথচ এই কবর পূজারীগণ তারা তাদের বাতিল উপাস্যগুলির ইবাদতে অটল থাকছে। তারা আল্লাহ্ ও রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথায় কর্ণপাত করে না। এবং উপদেশদাতাদের দিক নির্দেশনা থেকে সর্বদা বিমুখ থাকে। বরং কখনও কখনও তারা-তাদের বাতিল ও ফাসেক্বী (মুশরেকী) কাজের যারা প্রতিবাদ করে তাদেরকে দুঃখ-কষ্ট দিয়ে থাকে। এই প্রকৃতির লোকদের উপর হুজ্জত কায়িম হয়ে গেছে। হটকারিতা ছাড়া এদের আর কোনই ওযর-আপত্তি বাকী নেই।

(দেখুন, শাইখ সুলাইমান আল্ উলওয়ান প্রণীত ‘আত্ তিবয়ান,পৃঃ৬৯)।

মহান আল্লাহ্ বলেন:

( وَمَنْ أظْلَمُ مِمَّنْ ذُكِّرَ بِآياَتِ رَبِّهِ ثُمَّ أعْرَضَ عَنْهاَ ، إناَّ مِنَ الْمُجْرِمِيْنَ مُنْتَقِمُوْنَ )[ السجدة :২২]

‘ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা কে বেশী যালিম (অত্যাচারী) হতে পারে, যাকে উপদেশ দেওয়া হয়েছে স্বীয় প্রতিপালকের আয়াত সমূহ দ্বারা অত:পর সে উহা হতে বিমুখ হয়েছে? নিশ্চয় আমি অপরাধীদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণকারী।’ (সূরা আস সাজদাহ্ : ২২)

১১-মহান আল্লাহ্ যা কিছু নিজের জন্য সাব্যস্ত করেছেন অথবা রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা কিছু স্থির করেছেন-এ গুলির কোন কিছুকে অস্বীকার করা ।

অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি কোন মাখলূকের জন্য আল্লাহর জন্য খাছ গুণাবলী হতে কিছু গুণ কোন মাখলুকের জন্য নির্ধারণ করবে যেমন আল্লাহর ইলম, অথবা তার পক্ষ থেকে এমন বস্ত্ত সাব্যস্ত করা যা মহান আল্লাহ্ নিজেই নিজের পক্ষ থেকে নাকচ করেছেন অথবা তাঁর পক্ষ থেকে তদীয় রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নাকচ করেছেন। যেমন ঐ ব্যক্তির বিষয়টি যে আল্লাহর জন্য সন্তান নির্ধারণ করে থাকে। (এরূপ আচরণকারী সকলেই কাফের)।

মহান আল্লাহ্ বলেনঃ

قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ (১) اللَّهُ الصَّمَدُ (২) لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ (৩) وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُواً أَحَدٌ (৪)[ سورة الإخلاص ]

বল, তিনিই আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়। আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি। আর তাঁর কোন সমকক্ষও নেই। (সূরা আল ইখলাছ)

বাণীঃ

وَذَرُوا الَّذِينَ يُلْحِدُونَ فِي أَسْمَائِهِ سَيُجْزَوْنَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ (১৮০)[ الأعراف ]

‘আর আপনি তাদেরকে ছেড়ে দিন যারা আল্লাহর নামসমূহে ‘ইলহাদ’ করে তথা বিকৃত ও মনগড়া ব্যাখ্যা দেয়। অচিরেই তাদেরকে তাদের কৃত কর্মের (উচিত) বিনিময় প্রদান করা হবে। (সূরা আল্ আরাফঃ১৮০)

১২-রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা ঐসব বিষয়ের কোন একটি বিষয়ে যা তিনি নিয়ে এসেছেন। হোক তা গায়েবী-অদৃশ্য অতীত বা ভবিষ্যত সংক্রান্ত বিষয়। অথবা শরী‘আতের বাধ্যতামূলক বিষয়।

মহান আল্লাহ্ বলেনঃ

وَإِنْ يُكَذِّبُوكَ فَقَدْ كَذَّبَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ جَاءَتْهُمْ رُسُلُهُمْ بِالْبَيِّنَاتِ وَبِالزُّبُرِ وَبِالْكِتَابِ الْمُنِيرِ (২৫) ثُمَّ أَخَذْتُ الَّذِينَ كَفَرُوا فَكَيْفَ كَانَ نَكِيرِ (২৬)[ فاطر ].

তারা যদি আপনাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, তবে তাদের পূর্ববর্তীরাও মিথ্যা প্রতিপনণ করেছিল। তাদের কাছে তাদের রাসূলগণ ষ্পষ্ট নিদর্শন, ছহীফা এবং উজ্জ্বল কিতাবসহ এসেছিলেন। অতঃপর আমি কাফিরদেরকে ধৃত করেছিলাম। কেমন ছিল আমার আযাব? (সূরা ফাত্বিরঃ২৫-২৬)

এ গুলো হল সুপ্রসিদ্ধ ইসলাম ভঙ্গকারী বিষয়সমূহ। আরও অনেক ইসলাম ভঙ্গকারী বিষয় রয়েছে যা সামষ্টি গতভাবে প্রাগুক্ত বিষয়গুলোর যে কোন একটির অন্তর্ভূক্ত যাবে। এরই অন্যতম হল কুরআন অস্বীকার করা বা কুরআনের কোন অংশ অস্বীকার করা, অথবা তা ই’জায-তথা চিরন্তন মুজিযা হওয়া বিষয়ে সন্দেহ করা। অথবা এই কুরআনকে বেহুরমত-অসম্মান করা, অথবা এমন বিষয়কে হালাল করে নেওয়া যার হারাম হওয়ার ব্যাপারে সকলে ঐকমত্য যেমন যেনা-ব্যভিচার প্রভৃতি...।

যে এ সমস্ত ইসলাম বিধ্বংসী বিষয়ে লিপ্ত হয় ঠাট্টা বিদ্রুপকরার ছলে বা ইচ্ছা করে অথবা কাউকে ভয় করে [অর্থাৎঃ যে নিজের মাল বা মর্যাদা বিলুপ্ত হওয়ার ভয় করে। শাইখুল ইসলাম মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহ্হাব (রহিমাহুললাহ্) কাশফুশ্ শুবুহাত’-সংশয় নিরসন নামক কিতাবে এই মাসআলাহ্টির বিস্তারিত বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেনঃ নিশ্চয় যে ব্যক্তি কুফরী বাক্য উচ্চারণ করবে বা কুফরীর উপর আমল করবে সম্পদ বা মর্যাদা হ্রাসের ভয়ে অথবা কারো সাথে শিথিলতাস্বরূপ-এরূপ ব্যক্তি ঐব্যক্তির চেয়েও বড় অপরাধী যে ঠাট্টা করে কোন (কুফরী) কথা বলে। এর পর তিনি বিষয়টির বর্ণনা দেন..অথবা এই কুফরী কাজটি করে ভয়ে বা লোভে পড়ে অথবা কারও সাথে শিথিলতা প্রদর্শন করতে যেয়ে অথবা নিজ দেশ, পরিবার,বংশ বা ধন-সম্পদ এর ক্ষতির ভয়ে (এসকল অবস্থায় সে কাফির বলেই গণ্য হবে)।] এদের মধ্যে কোনই পার্থক্য নেই। তবে এগুলো করতে যাকে জোর করে বাধ্য করা হয়েছে তার কথা ভিন্ন।

মহান আল্লাহ্ বলেনঃ

مَنْ كَفَرَ بِاللَّهِ مِنْ بَعْدِ إِيمَانِهِ إِلَّا مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالْأِيمَانِ وَلَكِنْ مَنْ شَرَحَ بِالْكُفْرِ صَدْراً فَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ مِنَ اللَّهِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ (১০৬)[ النحل ]

যে ঈমান আনার পর আল্লাহর সাথে কুফরী করেছে এবং যারা তাদের অন্তর কুফরী দ্বারা উন্মুক্ত করেছে, তাদের উপরই আল্লাহর ক্রোধ এবং তাদের জন্য রয়েছে মহাআযাব। ঐ ব্যক্তি ছাড়া যাকে বাধ্য করা হয় (কুফরী করতে) অথচ তার অন্তর থাকে ঈমানে পরিতৃপ্ত। (সূরা আন নাহল, আয়াত ১০৬)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন