hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কিতাবুন নিসা

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১১
মুসলিম নারীকে জ্ঞানার্জন করতে হবে
ইসলাম নারীকে যে সম্মান দান করেছে তন্মধ্যে অন্যতম হলো ইসলাম নারীর জন্য শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ নির্ধারণ করেছে। কুরআনের প্রথম আদেশ ‘‘পড়ো’’ রাসূলুল্লাহ ﷺ এর উপর সর্বপ্রথম যে ওহী নাযিল হয়েছিল তা ছিল জ্ঞানার্জন করার আদেশ সম্পর্কিত। আল্লাহ তা‘আলা এর মাধ্যমে বান্দাদেরকে জ্ঞানার্জন করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন,

﴿اِقْرَاْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِيْ خَلَقَ - – خَلَقَ الْاِنْسَانَ مِنْ عَلَقٍ - اِقْرَاْ وَرَبُّكَ الْاَكْرَمُ - اَلَّذِيْ عَلَّمَ بِالْقَلَمِ - عَلَّمَ الْاِنْسَانَ مَا لَمْ يَعْلَمْ﴾

পড়ো, তোমার পালনকর্তার নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে ঝুলন্ত রক্তপিন্ড হতে। পড়ো, তোমার পালনকর্তা অতি সম্মানিত। যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষাদান করেছেন। শিক্ষাদান করেছেন মানুষকে, যা সে জানত না। (সূরা আলাক, ১-৫)

ইলম অর্জনকারীদের মর্যাদা বর্ণনা করে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿يَرْفَعِ اللهُ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا مِنْكُمْ وَالَّذِيْنَ اُوْتُوا الْعِلْمَ دَرَجَاتٍ﴾

তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে, আল্লাহ তাদের মর্যাদা আরো উন্নত করে দেবেন। (সূরা মুজাদালা- ১১)

যারা জানে আর যারা জানে না তারা সমান নয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿قُلْ هَلْ يَسْتَوِى الَّذِيْنَ يَعْلَمُوْنَ وَالَّذِيْنَ لَا يَعْلَمُوْنَؕ اِنَّمَا يَتَذَكَّرُ اُولُوا الْاَلْبَابِ﴾

বলো, যারা জানে আর যারা জানে না, তারা কি সমান হতে পারে? শুধুমাত্র জ্ঞানী লোকেরাই উপদেশ গ্রহণ করে থাকে। (সূরা যুমার- ৯)

বিশ্বনবী মুহাম্মাদ ﷺ জ্ঞানার্জনের অনেক গুরুত্ব ও ফযীলত বর্ণনা করেছেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, দুনিয়ায় যে ব্যক্তি কোন ঈমানদারের মুসীবত দূর করে দেবে, আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামতের দিন তার মুসীবত দূর করে দেবেন। যে ব্যক্তি কোন অভাবী ব্যক্তির অভাব দূর করবে, আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়া ও আখিরাতে তার অভাব দূর করে দেবেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের দোষত্রুটি লুকিয়ে রাখবে, আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষত্রুটি লুকিয়ে রাখবেন। বান্দা যতক্ষণ পর্যন্ত তার ভাইয়ের সহযোগিতায় আত্মনিয়োগ করে, আল্লাহ ততক্ষণ পর্যমত্ম তার সহযোগিতা করতে থাকেন। যে ব্যক্তি জ্ঞানার্জনের জন্য বের হয়, আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য জান্নাতের পথকে সহজ করে দেন। যখন কোন সম্প্রদায় আল্লাহর গৃহসমূহের কোন একটি গৃহে একত্রিত হয়ে আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং একে অপরের সাথে মিলে (কুরআন) অধ্যয়নে লিপ্ত থাকে তখন তাদের উপর প্রশান্তি অবতীর্ণ হয়, রহমত তাদেরকে আচ্ছন্ন করে ফেলে এবং ফেরেশতাগণ তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রাখেন। আর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নিকটবর্তীদের (ফেরেশতাগণের) সাথে তাদের কথা আলোচনা করেন। আর যাকে তার কৃতকর্ম পেছনে সরিয়ে দেবে, তার বংশমর্যাদা তাকে অগ্রসর করতে পারবে না। [সহীহ মুসলিম, হা/৭০২৮; তিরমিযী, হা/২৯৪৫; ইবনে মাজাহ, হা/২২৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৩২১; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২৯; জামেউস সগীর, হা/১১৫২৩; মিশকাত, হা/২০৪।]

অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,

خَيْرُكُمْ مَنْ تَعَلَّمَ الْقُرْاٰنَ وَعَلَّمَه

তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম হলো সেই ব্যক্তি, যে কুরআন শিক্ষা করে এবং অপরকে শিক্ষা দেয়। [সহীহ বুখারী, হা/৫০২৭; আবু দাউদ, হা/১৪৫৪; তিরমিযী, হা/২৯০৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/৫০০; সহীহ ইবনে হিববান, হা/১১৮; মুসনাদুল বাযযার, হা/৬৯৮; সাদ ইবনে মানসূর, হা/২১; শারহুস সুন্নাহ, হা/১১৭২; মুসনাদে ইবনে জা‘দ, হা/৪৭৪; জামেউস সগীর, হা/৫৬৩০; সিলসিলা সহীহাহ, হা/১১৭৩; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১৪১৫; মিশকাত, হা/২১০৭।]

অনেক মুসলিম নারী ইসলামের জ্ঞানার্জনের জন্য অনেক গুরুত্ব দিয়েছেন। যেমন- উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রাঃ), যিনি ছিলেন জ্ঞান অন্বেষণকারী নারীদের মধ্যে অন্যতম। তিনি ছিলেন অধিক হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবীদের মধ্যে একজন। অনেক মাসআলার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন সাহাবীদের আশ্রয়স্থল। কখনো কখনো তিনি কোন কোন সাহাবীর দেয়া ফতওয়ার ভুল সংশোধন করে দিতেন। মোটকথা মুসলিম নারীদের জন্য তিনি এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

তিনি ছাড়াও আরো অনেক মহিলা সাহাবী জ্ঞানার্জনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। যেমন- উম্মে সালামা (রাঃ), মায়মুনা (রাঃ) ও আসমা (রাঃ) প্রমুখ মহিলা সাহাবী।

ইসলাম জ্ঞানার্জনের জন্য নারীকে উৎসাহিত করেছে। যাতে এর মাধ্যমে নিজেরা উপকৃত হতে পারে এবং সমাজেরও উপকার সাধন করতে পারে। ইসলামের দৃষ্টিতে নারীদের শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য এই যে, এই শিক্ষার মাধ্যমে সে আদর্শ স্ত্রী, আদর্শ মাতা এবং আদর্শ গৃহিণীরূপে গড়ে উঠবে। তাছাড়া তার জন্য ঐ সকল বিদ্যা শিক্ষারও প্রয়োজন রয়েছে, যা মানুষকে প্রকৃত মানুষরূপে গড়ে তুলতে, চরিত্র গঠন করতে এবং তার দৃষ্টিভঙ্গি প্রশসত্ম করতে সাহায্য করে। এ ধরনের শিক্ষা প্রত্যেক নারীর জন্য অপরিহার্য। এরপর কোন নারী যদি অসাধারণ প্রজ্ঞা ও মানসিক যোগ্যতার অধিকারিণী হয় এবং এসকল মৌলিক শিক্ষার পরও জ্ঞান-বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখায় উচ্চ শিক্ষা লাভ করতে চায়, তাহলে তা তার জন্য আরো ভালো।

ইসলামের নির্ধারিত সীমা ও গন্ডির মধ্যে অবস্থান করেই নারীগণ আত্মসংশোধন এবং জাতির সেবার উদ্দেশ্যে দ্বীনী শিক্ষা লাভ করবে এবং নিজ সমত্মানদেরকে এমন আদর্শবান করে গড়ে তুলবে, যাতে তারা জাতির মধ্যে শামিত্ম প্রতিষ্ঠা করতে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করতে পারে।

রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকট হতে যেমনিভাবে পুরুষরা শিক্ষা গ্রহণ করত, তেমনিভাবে মহিলারাও শিক্ষা গ্রহণ করত। রাসূলুল্লাহ ﷺ নারীদেরকে শিক্ষা দেয়ার জন্য একটি সময় নির্ধারণ করতেন। অতঃপর সে সময় তিনি তাদেরকে তালীম দিতেন। উম্মুল মুমিনীনগণও ছিলেন মহিলাদের শিক্ষিকা। তবে আয়েশা সিদ্দীকা (রাঃ) কেবল নারীদের নয়, বরং পুরুষদেরও বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন। অনেক বড় বড় সাহাবীগণও তাঁর কাছ থেকে হাদীস, তাফসীর এবং ফিকহের জ্ঞান অর্জন করতেন।

নারী সাহাবীগণ জ্ঞানার্জনের জন্য সর্বদা ব্যস্ত থাকতেন :

রাসূলুল্লাহ ﷺ এর যুগে নারীসমাজের মধ্যে ইসলামের বিধিবিধান সম্পর্কে অবগত হওয়ার এমন উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছিল যে, সেজন্য তারা সবসময় ব্যসত্ম থাকত। জ্ঞান আহরণের পথে কোন প্রতিবন্ধকতা তাদেরকে নিরাশ ও নিরোৎসাহিত করতে পারত না। আনসারী মহিলাদের সম্পর্কে আয়েশা (রাঃ) বলেন,

نِعْمَ النِّسَاءُ نِسَاءُ الْأَنْصَارِ لَمْ يَمْنَعْهُنَّ الْحَيَاءُ أَنْ يَتَفَقَّهْنَ فِي الدِّيْنِ

আনসারী মহিলারা কতই না ভালো- দ্বীনের বিধিবিধান সম্পর্কে জ্ঞান লাভের ক্ষেত্রে লজ্জাশরমও তাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। [সহীহ বুখারী, ইলম অর্জনে লজ্জা করা অধ্যায়, ১/৪৪ পৃঃ; সহীহ মুসলিম, হা/৭৭৬; আবু দাউদ, হা/৩১৬; ইবনে মাজাহ, হা/৬৪২; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫১৮৮; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/২৪৮; বায়হাকী, হা/৮১৯।]

সুতরাং প্রতিটি মুসলিম নারীকে অবশ্যই জ্ঞানার্জন করতে হবে যে, কীভাবে ঈমান আনতে হয়, কীভাবে ইবাদাত করতে হয়, কীভাবে পবিত্রতা অর্জন করতে হয়, কীভাবে নামায আদায় করতে হয়, কীভাবে রোযা রাখতে হয়, কীভাবে তার স্বামীর হক আদায় করতে হয়, কীভাবে পিতামাতার সেবা করতে হয়, কীভাবে তার সন্তানদেরকে লালনপালন করতে হয়, কীভাবে আল্লাহর হক আদায় করতে হয় এবং কীভাবে বান্দার হক আদায় করতে হয় ইত্যাদি। আর এগুলো এমন জ্ঞান, যা ব্যতীত ইসলামী ধারায় জীবন পরিচালনা করা যায় না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন