hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কিতাবুন নিসা

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

২৮
মুসলিম নারীর ঘরের দায়িত্ব
ঘর হচ্ছে একটি ছোট্ট রাষ্ট্র, যা আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক তাঁর বান্দাদের প্রতি প্রদত্ত নিয়ামতরাজির মধ্যে অন্যতম। তিনি তাদের জন্য এমন আবাসিক ব্যবস্থা করেছেন, যাতে তারা আশ্রয় গ্রহণ করে। যার দ্বারা তারা নিজেদেরকে ঢেকে রাখে এবং সকল প্রকার উপকার ভোগ করে। সুতরাং ঘরের মধ্যে মুসলিম নারীর দায়িত্ব ও কর্তব্য অনেক বড়।

১. ঘরের মধ্যে তার দায়িত্ব ও কর্তব্যের শরয়ী ভিত্তি :

ঘরের দায়িত্ব ও কর্তব্যসমূহ পালন করা প্রত্যেক নারীর উপর আবশ্যক। আর শরীয়ত এসব দায়িত্ব ও কর্তব্যের প্রতি নজর দেয়। স্বামী ও স্ত্রী কল্যাণকর সীমারেখার মধ্যে ব্যাপক দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে দায়বদ্ধ থাকে। হাদীসে এসেছে,

عَنْ عَبْدِ اللهِ  : أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ : ‏ كُلُّكُمْ رَاعٍ وَمَسْئُوْلٌ عَنْ رَعِيَّتِه ، فَالْأَمِيْرُ الَّذِيْ عَلَى النَّاسِ فَهُوَ رَاعٍ عَلَيْهِمْ وَهُوَ مَسْئُوْلٌ عَنْهُمْ، وَالرَّجُلُ رَاعٍ عَلٰى أَهْلِ بَيْتِه وَهُوَ مَسْئُوْلٌ عَنْهُمْ، وَالْمَرْأَةُ رَاعِيَةٌ عَلٰى بَيْتِ بَعْلِهَا وَوَلَدِه وَهِىَ مَسْئُوْلَةٌ عَنْهُمْ، وَالْعَبْدُ رَاعٍ عَلٰى مَالِ سَيِّدِه وَهُوَ مَسْئُوْلٌ عَنْهُ، أَلَا فَكُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْئُوْلٌ عَنْ رَعِيَّتِه ‏

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমরা প্রত্যেকেই শাসক বা দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই তার অধীনস্ত ব্যক্তিদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। যিনি জনগণের নেতা বা আমীর, তিনি তাদের রক্ষক ও তত্ত্বাবধায়ক। সুতরাং সে ঐসব ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। একজন পুরুষ তার পরিবারের ব্যক্তিদের শাসক ও রক্ষক, সুতরাং পরিবারের ব্যক্তিদের বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। স্ত্রী তার স্বামীর ঘরবাড়ি ও সন্তানদের রক্ষক ও তত্ত্বাবধায়ক। সুতরাং তাকেও এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আর গোলাম তার মনিবের সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণকারী। সুতরাং তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হবে। তাই জেনে রাখো! তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল ও রক্ষণাবেক্ষণকারী। আর তাই প্রত্যেককেই তার অধীনস্তদের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। [সহীহ বুখারী, হা/৭১৩৮; সহীহ মুসলিম, হা/৪৮২৮; আবু দাউদ, হা/২৯৩০; তিরমিযী, হা/১৭০৫; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৪৪৯০; মুসনাদে আবু ই‘আলা, হা/৫৮৩১; আদাবুল মুফরাদ, হা/২০৬; শারহুস সুন্নাহ, হা/২৪৬৯; জামেউস সগীর, হা/৮৬৯৮; মুসনাদে আহমাদ, হা/৬০২৬; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/১৩০৬১; মুসত্মাদরাকে হাকেম, হা/৫৬৬৩; মু‘জামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/৪৮৩; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২১৬৯; ...............তনি বলেন, দায়বদ্ধ থাকে। কারণ বুখারী ও মুসলিমের আবদুল্লা ইবনে উমার সীমারেখার মধেমানসে : বশেষভাবে আলোচনার দাবীমিশকাত, হা/৩৬৮৫।]

বিদায় হজ্জের ভাষণে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, জেনে রাখো! তোমাদের স্ত্রীদের উপর তোমাদের অধিকার রয়েছে। অনুরূপভাবে তোমাদের উপরও তোমাদের স্ত্রীদের অধিকার রয়েছে। সুতরাং তোমাদের স্ত্রীদের উপর তোমাদের অধিকার হলো, তারা যেন তোমাদের বিছানায় এমন কাউকে যেতে না দেয়, যাকে তোমরা অপছন্দ কর এবং তারা যেন তোমাদের ঘরের মধ্যে এমন কাউকে প্রবেশ করতে অনুমতি না দেয়, যাকে তোমরা অপছন্দ কর। আরো জেনে রাখো! তোমাদের উপর তাদের অধিকার হলো, তোমরা তাদের বস্ত্র ও অন্নের ব্যাপারে তাদের প্রতি উত্তম ব্যবহার করবে। [তিরমিযী, হা/১১৬৩; ইবনে মাজাহ, হা/১৮৫১।]

২. দায়িত্বশীল ও নিষ্ঠাবান হতে হবে :

﴿فَالصَّالِحَاتُ قَانِتَاتٌ حَافِظَاتٌ لِّلْغَيْبِ بِمَا حَفِظَ اللهُ﴾

সুতরাং সতী-সাধ্বী নারীরা একান্ত অনুগত হয় এবং লোকচক্ষুর অন্তরালে আল্লাহ যা সংরক্ষণ করতে বলেছেন, তা সংরক্ষণ করে। (সূরা নিসা- ৩৪)

৩. স্বামীকে দ্বীনের কাজে বাধা সৃষ্টি করবে না :

﴿يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْاۤ اِنَّ مِنْ اَزْوَاجِكُمْ وَاَوْلَادِكُمْ عَدُوًّا لَّكُمْ فَاحْذَرُوْهُمْ﴾

হে মুমিনগণ! নিশ্চয় তোমাদের স্ত্রী ও সন্তানসন্ততিদের মধ্যে কেউ কেউ তোমাদের শত্রু। অতএব তোমরা তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকো। (সূরা তাগাবুন- ১৪)

৪. স্বামীর খিয়ানত করবে না :

﴿ضَرَبَ اللهُ مَثَلًا لِّلَّذِيْنَ كَفَرُوا امْرَاَتَ نُوْحٍ وَّامْرَاَتَ لُوْطٍؕ كَانَتَا تَحْتَ عَبْدَيْنِ مِنْ عِبَادِنَا صَالِحَيْنِ فَخَانَتَاهُمَا فَلَمْ يُغْنِيَا عَنْهُمَا مِنَ اللهِ شَيْئًا وَّقِيْلَ ادْخُلَا النَّارَ مَعَ الدَّاخِلِيْنَ﴾

আল্লাহ কাফিরদের জন্য নূহ ও লূতের স্ত্রীদের দৃষ্টান্ত পেশ করছেন, তারা ছিল আমার বান্দাদের মধ্যে দু’জন সৎকর্মপরায়ণ বান্দার অধীন; কিন্তু তারা তাদের প্রতি খিয়ানত করেছিল। ফলে নূহ ও লূত (উভয়ের কেউই) তাদেরকে আল্লাহর শাস্তি হতে রক্ষা করতে পারল না। অতঃপর তাদেরকে (সে স্ত্রীদেরকে) বলা হলো, জাহান্নামে প্রবেশকারীদের সাথে তোমরাও তাতে প্রবেশ করো। (সূরা তাহরীম- ১০)

৫. দুনিয়ায় ভোগবিলাসী না হয়ে আখিরাতমুখী হতে হবে :

﴿يَاۤ اَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِّاَزْوَاجِكَ اِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِيْنَتَهَا فَتَعَالَيْنَ اُمَتِّعْكُنَّ وَاُسَرِّحْكُنَّ سَرَاحًا جَمِيْلًا وَاِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ وَالدَّارَ الْاٰخِرَةَ فَاِنَّ اللهَ اَعَدَّ لِلْمُحْسِنَاتِ مِنْكُنَّ اَجْرًا عَظِيْمًا﴾

হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে বলে দিন, যদি তোমরা পার্থিব জীবন ও তার সৌন্দর্য চাও, তবে এসো- আমি তোমাদের ভোগের ব্যবস্থা করে দেই এবং তোমাদেরকে সম্মানের সাথে বিদায় দেই। আর যদি তোমরা আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও পরকাল চাও, তবে তোমাদের মধ্যে যারা সৎ আল্লাহ তাদের জন্য বিরাট পুরস্কার প্রস্তুত করে রেখেছেন। (সূরা আহযাব- ২৮, ২৯)

জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আবু বকর (রাঃ) এসে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকট উপস্থিত হওয়ার অনুমতি প্রার্থনা করলেন। তখন তিনি তাঁর দরজায় অনেক লোককে উপবিষ্ট দেখতে পেলেন। তবে তাদের কাউকে ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি আবু বকর (রাঃ)-কে প্রবেশের অনুমতি প্রদান করলে তিনি প্রবেশ করলেন। তারপর উমর (রাঃ) এলেন এবং তিনিও অনুমতি প্রার্থনা করলেন। ফলে তাঁকেও প্রবেশের অনুমতি প্রদান করা হলো। তিনি নবী ﷺ-কে চিন্তাযুক্ত ও নীরবে বসে থাকতে দেখলেন। এমতাবস্থায় তাঁর চতুষ্পার্শ্বে তাঁর সহধর্মিণীগণ উপবিষ্ট ছিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, উমর (রাঃ) বললেন, নিশ্চয় আমি নবী ﷺ এর নিকট এমন কথা বলব, যা তাঁকে হাসাবে। এরপর তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি যদি খারিজার কন্যা {উমর (রাঃ) এর স্ত্রী}-কে আমার কাছে অন্ন ও বস্ত্র তলব করতে দেখতেন তাহলে তৎক্ষণাৎ আপনি তাঁর দিকে অগ্রসর হয়ে তার স্কন্ধে আঘাত করতেন। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ হেসে উঠলেন এবং বললেন, আমার চতুষ্পার্শ্বে তোমরা যাদেরকে দেখতে পাচ্ছ তারা আমার কাছে অন্ন ও বস্ত্র দাবি করছে।

তখন সাথে সাথে আবু বকর (রাঃ) আয়েশা (রাঃ) এর দিকে ছুটলেন এবং তাঁর গর্দানে আঘাত করলেন। আর উমর (রাঃ)ও দাঁড়িয়ে গেলেন এবং হাফসা (রাঃ) এর দিকে অগ্রসর হয়ে তাঁর ঘাড়ে আঘাত করলেন। তাঁরা উভয়ে বললেন, তোমরা নবী ﷺ এর নিকট এমন জিনিস দাবি করছ, যা তাঁর কাছে নেই। তখন নবী ﷺ এর সহধর্মিণীগণ বললেন, আল্লাহর কসম! আমরা আর কখনো রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে এমন জিনিস চাইব না, যা তাঁর কাছে নেই। এরপর তিনি তাদের থেকে এক মাস কিংবা ঊনত্রিশ দিন পৃথক রইলেন। অতঃপর তাঁর উপর উপরোক্ত আয়াত নাযিল হয়।

বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ আয়েশা (রাঃ)-কে দিয়ে আয়াতের নির্দেশ বাসত্মবায়ন করতে শুরু করলেন। তিনি বললেন, হে আয়েশা! আমি তোমার কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলাপ করতে চাই। তবে সে বিষয়ে তোমার পিতামাতার সঙ্গে পরামর্শ না করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করাই আমি পছন্দ করি। তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার ব্যাপারে আমি কি আমার পিতামাতার কাছে পরামর্শ নিতে যাব? না- বরং আমি আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও আখিরাতকেই বেছে নিয়েছি। তবে আপনার কাছে আমার একান্ত নিবেদন, আমি যা বলেছি সে সম্পর্কে আপনি আপনার অন্যান্য সহধর্মিণীদের কারো কাছে ব্যক্ত করবেন না। তিনি বললেন, তাঁদের যে কেউ সে বিষয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলে আমি অবশ্যই তাঁকে তা বলে দেব। কারণ আল্লাহ আমাকে কঠোরতা আরোপকারী ও অত্যাচারীরূপে নয় বরং সহজ পন্থায় (শিক্ষাদানকারী) হিসেবে প্রেরণ করেছেন। [সহীহ মুসলিম, হা/৩৭৯৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৪৫৫৫; সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/৭১৬৪; মুসনাদে আবু ই‘আলা, হা/২২৫৩; মুসত্মাখরাজে আবু আওয়ানা, হা/৩৭১৪; বায়হাকী, হা/১৩০৪৭; মিশকাত, হা/৩২৪৯।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন