hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কিতাবুন নিসা

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৯২
নারীরা যেসব ভুল বেশি করে থাকে
১. দ্বীনের জ্ঞান থেকে দূরে থাকা :

অধিকাংশ মহিলা অবসর সময় পেলে জ্ঞান অর্জন না করে গল্প-গুজব করে সময় অতিবাহিত করে। ফলে তারা ইসলামের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিধিবিধান সম্পর্কে অজ্ঞ থাকে।

২. সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ থেকে দূরে থাকা :

অধিকাংশ মহিলাই এ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা থেকে দূরে রয়েছে। অনেকের এ ধারণাই নেই যে, মহিলাদেরকে মহিলারাই দ্বীনের পথে আনার ক্ষেত্রে বেশি সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।

৩. পাপকে ছোট মনে করা :

অনেক মহিলা এমন রয়েছে, যারা অনেক পাপকেই হালকাভাবে দেখে। এজন্য তারা ঐসব পাপের মধ্যে লিপ্ত থাকে। অথচ সগীরা গোনাহ বার বার করার ফলে তা কবীরা গোনাহের পর্যায়ে চলে যায়।

৪. সময় নষ্ট করা :

অধিকাংশ মহিলা জীবনের মূল্যবান সময়কে নষ্ট করে ফেলে। কাজকর্মের ফাঁকে যে সময়টুকু পাওয়া যায়, তা আখেরাতের কাজে ব্যয় করে না।

৫. দীর্ঘ সময় ধরে ফোনালাপ করা :

অনেক নারীই পরপুরুষের সাথে প্রয়োজন ছাড়া ফোনে আলাপ করে থাকে। অথচ এটা নারী-পুরুষ কারো জন্যই জায়েয নয়।

৬. টেলিভিশন দেখা :

নারীরা একটু অবসর পেলেই টেলিভিশনে বিভিন্ন ধরনের নাচ-গান দেখে থাকে। অথচ এগুলো একজন মুসলিম নারীর জন্য জায়েয নয়।

৭. শরীরের অঙ্গ প্রদর্শন করা :

অনেক মুসলিম নারী বিভিন্নভাবে নিজেদের শরীরের অঙ্গভঙ্গিকে পরপুরুষের সামনে প্রকাশ করে থাকে। অথচ এটা হারাম।

৮. পর্দা না করা :

বর্তমান সময়ে অধিকাংশ নারী আল্লাহর নির্ধারিত একটি ফরয বিধান পর্দাকে লঙ্ঘন করে থাকে। তারা বিভিন্ন যুক্তি দাঁড় করিয়ে বেপর্দা হয়ে রাসত্মায় চলাফেরা করে থাকে।

৯. নারীদের সুগন্ধি মেখে রাস্তায় বের হওয়া :

অনেক নারী রয়েছে, যারা সাজগোজ তো করেই- এর উপর আবার সেন্ট বা কড়া সুগন্ধি মেখে রাসত্মায় বের হয়। কোন মুসলিম নারীর জন্য এমন কাজ করা কোনভাবেই সঠিক নয়। কেননা রাসূলুল্লাহ ﷺ সুগন্ধি ব্যবহার করে রাসত্মায় বের হওয়া থেকে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। যেমন হাদীসে এসেছে,

عَنِ اَبِىْ مُوْسٰى الْأَشْعَرِيِّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ أَيُّمَا امْرَأَةٍ اِسْتَعْطَرَتْ فَمَرَّتْ عَلٰى قَوْمٍ لِيَجِدُوْا مِنْ رِيْحِهَا فَهِيَ زَانِيَةٌ

আবু মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে মহিলা সুগন্ধি ব্যবহার করে কোন সম্প্রদায়ের নিকট দিয়ে অতিক্রম করে যাতে তারা তার সুগন্ধি পায়, তাহলে সে মহিলা ব্যভিচারিণী। [তিরমিযী, হা/২৭৮৬; নাসাঈ, হা/৫১২৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৯৭২৬; মুসত্মাদরাকে হাকেম, হা/৩৪৯৭; জামেউস সগীর, হা/৩২৩; সিলসিলা সহীহাহ, হা/২০১৯; মিশকাত, হা/১০৬৫।]

১০. পাশ্চাত্য নারীদের অনুসরণ :

অনেক নামধারী মুসলিম নারী নিজেদেরকে মর্যাদাবান করে তোলার জন্য ইসলামী আদর্শকে বাদ দিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের আদর্শ গ্রহণ করে থাকে। তারা চলাফেরায়, পোশাক-পরিচ্ছদে ঐসব নারীর অনুসরণ করে থাকে। যার ফলস্বরূপ বর্তমান সময়ের নারীরা রাসত্মায় বের হলে পদে পদে লাঞ্চিত ও ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছে।

১১. নারী পুরুষের সাদৃশ্য অবলম্বন করা :

অনেক নারী রয়েছে, যারা পুরুষের সাদৃশ্য অবলম্বন করতে পছন্দ করে। সাম্প্রতিক সময়ে আধুনিকতার নাম দিয়ে বহু নারীকে সরাসরি পুরুষের পোশাক পরিধান করতে দেখা যাচ্ছে। যে নারীর মধ্যে ঈমান আছে সে নারী কখনো পুরুষের বেশ ধারণ করতে পারে না। মূলত শয়তান যাদেরকে কাবু করে নেয় এবং যাদের দ্বারা সে তার উদ্দেশ্য বাসত্মবায়ন করে এমন নারীরাই এ কাজ করতে পারে। সুতরাং কোন মুসলিম নারীর জন্য পুরুষের বেশ ধারণ করা কোনভাবেই উচিত নয়। এ ব্যাপারে নিচের হাদীসটি লক্ষণীয় :

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ لَعَنَ رَسُوْلُ اللهِ الْمُتَشَبِّهِيْنَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ وَالْمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ

ইবনে আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যেসকল পুরুষ মহিলাদের সাদৃশ্য অবলম্বন করে এবং যেসকল মহিলা পুরুষদের সাদৃশ্য অবলম্বন করে আল্লাহর রাসূল তাদের উপর অভিশম্পাত করেছেন। [সহীহ বুখারী, হা/৫৮৮৫; ইবনে মাজাহ, হা/১৯০৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/৩১৫১; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৫৭৫১; মু‘জামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/১১৪৮১; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩২০৬; জামেউস সগীর, হা/৯২৩১; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২০৬৭; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হা/২৭০২৪; মিশকাত, হা/৪৪২৯।]

১২. খারাপ বান্ধবীদের সঙ্গী হওয়া :

অনেক ভালো মেয়ে আছে, যারা খারাপ বান্ধবীদের সঙ্গে চলাফেরা করে। এসব বান্ধবীদের চরিত্রের কু-প্রভাব ঐসব ভালো মেয়ের উপরও পড়ে। যার ফলে ভালো মেয়েরাও অতি তাড়াতাড়ি খারাপের দিকে ধাবিত হয়।

১৩. গান শ্রবণ করা :

অনেক মুমিন নারীই গান গাইতে এবং গান শুনতে পছন্দ করে। এমনকি তারা গানের প্রতিযোগিতায়ও অংশগ্রহণ করে। অথচ ইসলামে এসব হারাম।

১৪. যিনায় লিপ্ত হওয়া :

অনেক নারী এমন রয়েছে, যারা নিজেদেরকে মুসলিম হিসেবে পরিচয় দিলেও যিনার মতো খারাপ কাজে জড়িয়ে পড়ে। তারা খারাপ ছেলেদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে এবং এই সম্পর্ক তাদেরকে এক পর্যায়ে যিনার মতো নিষিদ্ধ কাজের দিকে নিয়ে যায়।

১৫. খোলা জায়গায় গোসল করা :

গ্রামে-গঞ্জে বহু নারী রয়েছে, যারা গোসল করতে গেলেও পর্দা করে না। তারা পরপুরুষদের চোখের সামনেই এমনকি কোথাও কোথাও তাদের সাথেই পুকুর ঘাটের গোসল করে থাকে। অথচ এটা ইসলামী শরীয়তে সম্পূর্ণ হারাম। এর ফলস্বরূপ ঐ সমাজের নারী-পুরুষরা অতি সহজেই নানা প্রকার অশ্লীল কাজে লিপ্ত হয়ে যায়।

১৬. কোমল সুরে পরপুরুষের সাথে কথা বলা :

ইসলাম নারীদেরকে পরপুরুষদের সাথে এমন সুরে কথা বলতে নিষেধ করে দিয়েছে, যার মাধ্যমে পুরুষরা তাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। কিন্তু বর্তমান সমাজে অনেক নারীই ইসলামের এই বিধানটির প্রতি দৃষ্টিপাত করে না। তারা সামাজিকতার দোহাই দিয়ে পরপুরুষদের সাথে সুন্দর ও মিষ্টি সুরে কথা বলে। আবার অনেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পরপুরুষদের সাথে কথা বলে থাকে। এর ফলে মুসলিম সমাজে নানা ধরনের অশ্লীলতা অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং নানা ধরনের সামাজিক অপরাধের বিকাশ ঘটছে।

১৭. মিথ্যা বলা :

নারীদের মধ্যে মিথ্যা বলার অভ্যাস অনেক ক্ষেত্রেই লক্ষ্য করা যায়। অথচ মিথ্যা কথা বলা বড় ধরনের অপরাধ। এর মাধ্যমে সমাজ ধ্বংস হয়। মিথ্যাবাদীকে আল্লাহ সৎপথে পরিচালিত করেন না। এর পরিণাম জাহান্নাম। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

وَإِنَّ الْكَذِبَ يَهْدِيْ إِلَى الْفُجُوْرِ وَإِنَّ الْفُجُوْرَ يَهْدِيْ إِلَى النَّارِ وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيَكْذِبُ حَتَّى يُكْتَبَ عِنْدَ اللهِ كَذَّابًا

নিশ্চয় মিথ্যা পাপের পথ খুলে দেয়, আর পাপ জাহান্নামের পথ খুলে দেয়। আর যখন কোন ব্যক্তি মিথ্যা বলতে থাকে তখন সে আল্লাহর কাছে মিথ্যুক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যায়। [সহীহ বুখারী, হা/৬০৯৪; সহীহ মুসলিম, হা/৬৮০৩; আবু দাউদ, হা/৪৯৯১; তিরমিযী, হা/১৯৭১; ইবনে মাজাহ, হা/৪৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৬৩৮; সহীহ ইবনে হিববান, হা/২৭৩; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/২১৩৩৮; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হা/২৬১১২; মুসনাদে দারেমী, হা/২৭৫৭; মিশকাত, হা/৪৮২৪।]

১৮. অহংকার করা :

অনেক নারী এমন রয়েছে, যারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অহংকার প্রকাশ করে থাকে। বিশেষ করে যাদের ভালো কোন গুণাবলি রয়েছে, তারা এসব নিয়ে ঐসব নারীদের সাথে গর্ব করে, যাদের এসব গুণাবলি নেই। অথচ অহংকার করা কোন মুসলিম নারীর জন্য শোভা পায় না। এ অহংকারবোধের কারণেই ইবলিস আল্লাহর লানতে পড়েছিল এবং জান্নাত থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিল। অহংকারবোধ ব্যক্তিকে ধ্বংস করে দেয়। অহংকারের কারণেই মানুষ পৃথিবীতে বিপর্যয় ও অনাচার সৃষ্টি করে। অহংকারীর ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। যেমন-

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ عَنِ النَّبِىِّ - قَالَ : لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ كَانَ فِىْ قَلْبِه مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِنْ كِبْرٍ

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) নবী ﷺ হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, যার অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণ অহংকার থাকবে, সে জান্নাতে যেতে পারবে না। [সহীহ মুসলিম, হা/২৭৫; তিরমিযী, হা/১৯৯৯; জামেউস সগীর, হা/১৩৬৩২; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২৯১২; মিশকাত, হা/৫১০৮।]

১৯. হিংসা-বিদ্বেষ :

অনেক ক্ষেত্রেই নারীদের মধ্যে প্রচুর হিংসা-বিদ্বেষ লক্ষ্য করা যায়; অথচ হিংসা করা হারাম। হিংসা-বিদ্বেষ মানবতার জন্য একটি মারাত্মক ক্ষতিকর বিষয়। হীন মানসিকতা, পদমর্যাদার লোভ, নিজের উদ্দেশ্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা- এসব থেকেই হিংসা-বিদ্বেষের জন্ম হয়। ইসলামী শরীয়তে হিংসা করা হারাম। ব্যক্তির চরিত্র গঠনে হিংসা-বিদ্বেষ বিরাট প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এতে পরস্পরের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ সৃষ্টি হয়, সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট হয় এবং বিপর্যয় দেখা দেয়। হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَنَسٍ أَنَّ النَّبِىَّ - - قَالَ : لَا تَحَاسَدُوْا وَلَا تَبَاغَضُوْا وَلَا تَقَاطَعُوْا وَكُوْنُوْا عِبَادَ اللهِ إِخْوَانًا

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেন, তোমরা হিংসা করো না, ক্রোধান্বিত হয়ো না এবং পরস্পর সম্পর্কচ্ছেদ করো না। আর তোমরা এক আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভাই ভাই হয়ে যাও। [সহীহ মুসলিম, হা/৬৬৯৫; মুসনাদুল বাযযার, হা/৭১৬০।]

২০. অশ্লীল কথাবার্তা :

নারীদের মধ্যে অশ্লীলতার চর্চা অনেক ক্ষেত্রেই লক্ষ্য করা যায়। সামান্য বিষয়কে কেন্দ্র করে তারা গালিগালাজ শুরু করে দেয়। অথচ অশ্লীল কথাবার্তা অসচ্চরিত্রের অন্তর্ভুক্ত। অশ্লীল কথাবার্তা ও গালিগালাজ করা জায়েয নেই। মানুষ প্রবৃত্তি তাড়িত হয়ে আবার কখনো ক্রোধের বশবর্তী হয়ে এ ধরনের কথাবার্তা বলে থাকে। হাদীসে এসেছে,

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ - - لَيْسَ الْمُؤْمِنُ بِالطَّعَّانِ وَلَا اللَّعَّانِ وَلَا الْفَاحِشِ وَلَا الْبَذِىءِ

আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, প্রকৃত ঈমানদার ব্যক্তি কারো উপর দোষারোপ করে না, কারো প্রতি লানত করে না, কারো উপর অভিশাপ দেয় না এবং সে কারো সাথে কর্কশ ভাষায় কথাবার্তা বলে না। [তিরমিযী, হা/১৯৭৭; সহীহ ইবনে হিববান, হা/১৯২; মুসনাদুল বাযযার, হা/১৫২৩; মুসনাদে আবু ই‘আলা, হা/৫৩৭৯; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/২১৩১৪; আদাবুল মুফরাদ, হা/৩১২; মু‘জামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/১০৩৩২; মুসত্মাদরাকে হাকেম, হা/২৯; জামেউস সগীর, হা/৯৫১২; সিলসিলা সহীহাহ, হা/৩২০; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হা/৩০৯৭৩; মিশকাত, হা/৪৮৪৬।]

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ - - سِبَابُ الْمُسْلِمِ فُسُوْقٌ وَقِتَالُهٗ كُفْرٌ

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, কোন মুসলিমকে গালি দেয়া ফাসিকী এবং তার সাথে লড়াই করা কুফরী। [সহীহ বুখারী, হা/৪৮; সহীহ মুসলিম, হা/২৩০; তিরমিযী, হা/১৯৮৩; নাসাঈ, হা/৪১০৭; ইবনে মাজাহ, হা/৬৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৬৪৭; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৫৯৩৯; মুসনাদুল বাযযার, হা/১৬৬০; মু‘জামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/৯৯৫৮; জামেউস সগীর, হা/৫৯০৮; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২৭৭৯; মুসনাদে হুমাইদী, হা/১১০; মিশকাত, হা/৪৭১৪।]

আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ গালিগালাজ করতেন না, অশালীন উক্তি করতেন না এবং তিনি অভিশাপকারীও ছিলেন না। তিনি আমাদের কারো উপর নারাজ হলে কেবল এতটুকু বলতেন যে, তার কী হলো! তার কপাল ধুলায় ধূসরিত হোক। [সহীহ বুখারী, হা/৬০৩১; মুসনাদে আহমাদ, হা/১২২৯৬; মুসনাদুল বাযযার, হা/৬২২৪; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/২১৩১১; আদাবুল মুফরাদ, হা/৪৩০; মিশকাত, হা/৫৮১১।]

অশালীন কথাবার্তা নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ হলো সীমালঙ্ঘন। যদি কোন ব্যক্তি অপর কারো বাবা-মাকে গালি দেয়, তবে অপরজনও তার বাবা-মাকে গালি দেয়। এভাবে সীমালঙ্ঘন হয়ে যায়। অশালীন ও অশ্লীল কথা বলতে যারা অভ্যস্ত তাদেরকে লোকেরা ঘৃণা করে। কেউ তাদের সাথে চলাফেরা করতে চায় না। কেননা গালমন্দ করা ভদ্রতার পরিপন্থী কাজ। এজন্যই হাদীসে এসেছে,

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا ، عَنِ النَّبِيِّ قَالَ : الْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُوْنَ مِنْ لِسَانِه وَيَدِه

আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) নবী ﷺ হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, প্রকৃত মুসলিম সে ব্যক্তি, যার কথা ও হাত থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ থাকে। [সহীহ বুখারী, হা/১০; সহীহ মুসলিম, হা/১৭১; আবু দাউদ, হা/২৪৮৩; তিরমিযী, হা/২৬২৭; মিশকাত, হা/৬।]

عَنْ عَائِشَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهَا قَالَ النَّبِىُّ -- .... يَا عَائِشَةُ إِنَّ اللهَ لَا يُحِبُّ الْفَاحِشَ الْمُتَفَحِّشَ

আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেন, হে আয়েশা! নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা অশ্লীল ও কর্কশভাষী লোকদেরকে পছন্দ করেন না। [আবু দাউদ, হা/৪৭৯৪; জামেউস সগীর, হা/১৩৮৮২।]

২১. প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া :

এমন অনেক নারী রয়েছে, যারা প্রতিবেশীর সম্মান বুঝে না। অনেকে ছোট-খাটো বিষয়কে কেন্দ্র করে প্রতিবেশীর সাথে ঝগড়া করে। এমনকি অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজও করে। আর এর জের ধরে অনেক দিন পর্যমত্ম প্রতিবেশীর সাথে কথা বলা, তাদের সাথে উঠাবসা বন্ধ রাখে। অথচ এমন কাজ ইসলাম কোনভাবেই সমর্থন করে না। সুতরাং প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ - - قَالَ : لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ لَا يَأْمَنُ جَارُهٗ بَوَائِقَهٗ

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যার অত্যাচার থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয় সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। [সহীহ মুসলিম, হা/১৮১; মুসনাদে আহমাদ, হা/৮৮৪২; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২৫৫০; মিশকাত, হা/৪৯৬৩।]

ইবনে আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি তৃপ্তিসহকারে পেটপুরে খায়; অথচ তার পাশে তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে সে ঈমানদার নয়। [মুসনাদে আবু ই‘আলা, হা/২৬৯৯; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/২০১৬০; মুসত্মাদরাকে হাকেম, হা/২১৬৬; মু‘জামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/৭৫০; জামেউস সগীর, হা/৯৫১৩; সিলসিলা সহীহাহ, হা/১৪৯; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২৫৬১; মিশকাত, হা/৪৯৯১।]

২২. পারস্পরিক সম্পর্ক ছিন্ন করা :

মুমিনদের পারস্পরিক সুসম্পর্ক বজায় রাখা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অথচ লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, বিভিন্ন কারণে অনেকেই আত্মীয়-স্বজন বা প্রতিবেশীর সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করে। বিশেষ করে এমন অনেক মহিলা রয়েছে, তারা যখন কোন বিষয় নিয়ে কারো সাথে রাগারাগি করে বা ঝগড়া করে তখন কসম খেয়ে বলে ফেলে- অমুক জিনিস খাব না, অমুকের বাসায় যাব না ইত্যাদি। অথচ কোন মুসলিম নারীর জন্য এসব কাজ করা বৈধ নয়। হাদীসে এসেছে,

عَنْ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ عَنِ النَّبِيِّ يَقُوْلُ لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِعٌ

জুবায়ের ইবনে মুতঈম (রাঃ) নবী ﷺ থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না। [সহীহ বুখারী, হা/৫৯৮৪; সহীহ মুসলিম, হা/৬৬৮৪; আবু দাউদ, হা/১৬৯৮; তিরমিযী, হা/১৯০৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬৭৭৮; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৪৫৪; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২৫৪০; মিশকাত, হা/৪৯২২।]

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেন, পারস্পরিক সম্পর্ক রহমান হতে নির্গত হয়েছে। তাই আল্লাহ তা‘আলা বলেন, যে ব্যক্তি সম্পর্ক বজায় রাখবে আমি তার উপর রহমত বর্ষণ করব। আর যে ব্যক্তি সম্পর্ক ছিনণ করবে আমি তার থেকে রহমত বন্ধ করে দেব। [সহীহ বুখারী, হা/৫৯৮৮; তিরমিযী, হা/১৯২৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৯১৮; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৪৪২; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২৫৩০; সিলসিলা সহীহাহ, হা/৯২৫; মিশকাত, হা/৪৯২০।]

২৩. চোগলখোরী করা :

অনেক নারী নিয়মিত চোগলখোরীর মধ্যে লিপ্ত থাকে। প্রায়ই লক্ষ্য করা যায় যে, কয়েকজন নারী যখন একত্রিত হয়, তখন তারা অনুপস্থিত নারীদের ব্যাপারে চোগলখোরীতে লিপ্ত হয়ে যায়। অথচ আল্লাহর নবী চোগলখোরদের ব্যাপারে বলেছেন যে, তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। হাদীসে এসেছে,

عَنْ حُذَيْفَةَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ يَقُوْلُ لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَتَّاتٌ

হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, আমি নবী ﷺ-কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেছেন, চোগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করবে না। [সহীহ বুখারী, হা/৬০৫৬; সহীহ মুসলিম, হা/৩০৪; আবু দাউদ, হা/৪৮৭৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৩২৯৫; মুসনাদুল বাযযার, হা/২৯৫৪; সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/১১৫৫০; সিলসিলা সহীহাহ, হা/১০৩৪; মিশকাত, হা/৪৮২৩।]

২৪. খোটা দেয়া :

খোটা দেয়াও নারীদের একটি বদ অভ্যাস। যখন কারো সাথে মনোমালিন্য হয় তখন সে তার প্রতি অনুগ্রহ করে থাকলে অনর্গল খোটা দিতে থাকে। অথচ অনুগ্রহ করে খোটা দিলে অনুগ্রহের সওয়াব নষ্ট হয়ে যায়। তাই সবাইকে খোটা দেয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। হাদীসে এসেছে,

আবু যর (রাঃ) নবী ﷺ থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন, তিন প্রকার লোকের সাথে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা কথা বলবেন না, তাদের দিকে দৃষ্টিপাতও করবেন না এবং তাদেরকে পবিত্রও করবেন না, আর তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি। আর তিনি এ বাক্যগুলো তিন বার উচ্চারণ করলেন। তখন আবু যর (রাঃ) বললেন, তার তো ধ্বংস অনিবার্য এবং সে ক্ষতিগ্রসত্ম হবে- হে আল্লাহর রাসূল! তারা কারা? তিনি বললেন, ১. টাখনুর নিচে কাপড় পরিধানকারী, ২. দান করে খোটাদানকারী, ৩. মিথ্যা শপথ করে পণ্যদ্রব্য বিক্রয়কারী। [সহীহ মুসলিম, হা/৩০৬; আবু দাউদ, হা/৪০৮৯; তিরমিযী, হা/১২১১; ইবনে মাজাহ, হা/২২০৮; মুসনাদে আহমাদ, হা/২১৩৫৬; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২০৩৪; মিশকাত, হা/২৭৯৫।]

২৫. স্বামীর প্রতি কৃতজ্ঞ না হওয়া :

স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞ হওয়া নারীদের একটি স্বভাবজাত অভ্যাস। কোন স্বামী তাদের প্রতি অনেক অনুগ্রহ করলেও যদি কোন সময় সামান্য ব্যতিক্রম হয় তবে তারা আগের অনুগ্রহকে ভুলে যায়। এমনটি করা কোন মুসলিম নারীর জন্য উচিত নয়। স্বামীর অবস্থা ও সঙ্গতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে যা কিছু পাওয়া যায় তার উপর সমত্মুষ্ট থেকে সৎভাবে জীবনযাপন করাই মুসলিম নারীর কর্তব্য। হাদীসে এসেছে,

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ : قَالَ النَّبِيُّ أُرِيْتُ النَّارَ فَإِذَا أَكْثَرُ أَهْلِهَا النِّسَاءُ يَكْفُرْنَ قِيْلَ أَيَكْفُرْنَ بِاللهِ قَالَ يَكْفُرْنَ الْعَشِيْرَ وَيَكْفُرْنَ الْإِحْسَانَ لَوْ أَحْسَنْتَ إِلٰى إِحْدَاهُنَّ الدَّهْرَ ثُمَّ رَأَتْ مِنْكَ شَيْئًا قَالَتْ مَا رَأَيْتُ مِنْكَ خَيْرًا قَطُّ

ইবনে আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, আমাকে জাহান্নাম দেখানো হলো। আর (তখন) আমি দেখতে পেলাম যে, জাহান্নামের অধিকাংশই মহিলা, যারা কুফরী করত। প্রশ্ন করা হলো, তারা কি আল্লাহর সঙ্গে কুফরী করত? রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তারা স্বামীর সাথে কুফরী করে থাকে। তারা স্বামীর উপকার স্বীকার করে না। তুমি যদি তাদের কারো প্রতি জীবনভর অনুগ্রহ করে থাক, এরপর সে তোমার পক্ষ হতে যদি কোন সময় খারাপ কিছু দেখতে পায় তখন সে বলে ফেলে, আমি কখনো তোমার নিকট থেকে কোন ভালো কিছু পাইনি। [সহীহ বুখারী, হা/২৯; নাসাঈ, হা/১৪৯৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৩৭৪; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/৬৫২৭; মুসত্মাখরাজে আবু আওয়ানা, হা/১৯৭৫; শারহুস সুন্নাহ, হা/১১৪০; মিশকাত, হা/১৪৮২।]

২৬. গীবত করা ও শোনা :

অনেক মহিলা এমন রয়েছে, যারা সুযোগ পেলেই বা একটু অবসর পেলেই গীবতের মতো জঘন্য অপরাধে লিপ্ত হয়। প্রায়ই লক্ষ্য করা যায়, যখন কয়েকজন নারী একত্রিত হয়, তখনই তারা অন্য মানুষের গীবত করে আত্মতৃপ্তি লাভ করতে চায়। অথচ গীবত করা হারাম। গীবত করাকে আল্লাহ তা‘আলা কুরআন মাজীদে মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার সাথে তুলনা করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَلَا يَغْتَبْ بَّعْضُكُمْ بَعْضًا أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَنْ يَّأْكُلَ لَحْمَ أَخِيْهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوْهُ﴾

আর তোমাদের মধ্যে কেউ যেন কারো গীবত না করে। তোমাদের মধ্যে কি এমন কেউ আছে, যে তার মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া পছন্দ করে?। (সূরা হুজুরাত- ১২)

২৭. তাবিজ-কবজ ব্যবহার করা :

তাবিজ-কবজ ব্যবহার করা এবং এর প্রতি বিশ্বাস রাখা নারীদের একটি মারাত্মক কু-অভ্যাস। বিভিন্ন ব্যাপারে তারা তাবিজ-কবজ ব্যবহার করে থাকে এবং তাবিজ-কবজ ব্যবহার করার জন্য অন্যকেও উৎসাহিত করে থাকে। মূলত অজ্ঞতার কারণেই তারা এমনটি করে থাকে। তাবিজ-কবজ ব্যবহার করা শিরকী কাজ। হাদীসে এসেছে,

عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ الْجُهَنِيِّ ، أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ أَقْبَلَ إِلَيْهِ رَهْطٌ ، فَبَايَعَ تِسْعَةً وَأَمْسَكَ عَنْ وَاحِدٍ ، فَقَالُوْا : يَا رَسُوْلَ اللهِ ، بَايَعْتَ تِسْعَةً وَتَرَكْتَ هٰذَا ؟ قَالَ : إِنَّ عَلَيْهِ تَمِيْمَةً فَأَدْخَلَ يَدَهٗ فَقَطَعَهَا ، فَبَايَعَهٗ ، وَقَالَ : مَنْ عَلَّقَ تَمِيْمَةً فَقَدْ أَشْرَكَ

উকবা ইবনে আমের আল জুহানী (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদা রাসূলুল্লাহ ﷺ এক সম্প্রদায়ের নিকট গেলেন। অতঃপর তাদের নয়জনের থেকে বাইআত গ্রহণ করলেন এবং একজন থেকে করলেন না। লোকজন বলতে লাগল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি নয়জনের কাছ থেকে বাইআত নিলেন; কিন্তু একজনকে ছেড়ে দিলেন- এর কারণ কী? তিনি বললেন, তার সাথে তাবিজ রয়েছে। অতঃপর সে লোকটি তার হাত ঢুকাল এবং তাবিজটি ছিঁড়ে ফেলল। এরপর নবী ﷺ তার বাইআত গ্রহণ করলেন এবং বললেন, যে ব্যক্তি তাবিজ লটকাল সে শিরক করল। [মুসনাদে আহমাদ, হা/১৭৪৫৮; মু‘জামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/১৪২৯৯।]

২৮. মাযারে দান করা :

অনেক মহিলা রয়েছে, যারা একটু বিপদাপদে পড়লেই আল্লাহকে স্মরণ করার পরিবর্তে বিভিন্ন মাযার ও দর্গায় চলে যায়। মাযারের জন্য মান্নত করে। অথচ বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মাযার ও দরগায় যাওয়া, সেখানে কোন কিছু দেয়ার জন্য মান্নত করা, সেখানে টাকা-পয়সা ও অন্য কিছু দান করা ইত্যাদি শিরকী কাজ।

২৯. পীর-মুরিদীতে বিশ্বাস করা :

অনেক মহিলা রয়েছে, যারা পীরের ভক্ত। ধর্মজ্ঞানে অজ্ঞ অনেক মানুষের আকীদা বা বিশ্বাস হলো, পীরের কাছে মুরিদ হওয়া ব্যতীত জান্নাতে যাওয়া যায় না। বর্তমানে পীর-মুরিদীর যে সিলসিলা দেখা যাচ্ছে, এটা সম্পূর্ণ নবোদ্ভাবিত। এটা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর যুগে ছিল না, তিনি কখনো পীর-মুরিদী করেননি। সাহাবায়ে কেরামও কখনো এই পীর-মুরিদী করেননি। তাবেয়ীন ও তাবে তাবেয়ীনের যুগেও এ পীর-মুরিদীর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। অথচ বর্তমানকালের এক শ্রেণির জাহেল লোক এ পীর-মুরিদীকে ইসলামের অন্যতম ভিত্তিগত বিষয় বলে প্রচারণা চালাচ্ছে।

৩০. পীর বা আওলিয়াদেরকে ওসীলা বানানো :

ইসলাম সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান না থাকার কারণে ইসলামের নামে অনেক শিরক ও বিদআতের প্রচলন ঘটেছে। এর মধ্যে একটি হলো, ওলী-আওলিয়াদের ওসীলা নিয়ে দু‘আ করা ও তাদের কাছে সাহায্য চাওয়া। অনেক মহিলা রয়েছে, যারা এ ভুলটি বিনা দ্বিধায় করে যাচ্ছেন। অথচ ইসলামী শরীয়তের বিধান হচ্ছে, কেউ যদি ওসীলা নিতে চায় তবে যেসব ওসীলা কুরআন ও সুন্নাহতে রয়েছে সেসব বিষয়ের ওসীলা নিতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা কুরআন মাজীদে বলেছেন,

﴿يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللهَ وَابْتَغُوْاۤ اِلَيْهِ الْوَاسِيْلَةَ وَجَاهِدُوْا فِىْ سَبِيْلِه لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ﴾

হে মুমিনগণ! আলস্নাহ তা‘আলাকে ভয় করো, তাঁর নৈকট্য লাভের ওসীলা অমেবষণ করো ও তাঁর পথে সংগ্রাম করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সূরা মায়েদা- ৩৫)

সঠিক ওসীলা কী :

সঠিক ওসীলা হচ্ছে নেক আমল। কেউ কোন নেক আমল করে এর ওসীলা নিতে পারে। যেমন- বনী ইসরাঈলের তিন ব্যক্তি বিপদে পড়ে তারা নিজেদের নেক আমলের ওসীলা নিয়ে আল্লাহর কাছে দু‘আ করেছিলেন। ফলে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে বিপদ থেকে উদ্ধার করেন।

এছাড়াও আল্লাহ তা‘আলার গুণবাচক নামের ওসীলা নিয়ে তাঁর কাছে চাওয়া যায় এবং ক্ষমা প্রার্থনা করা যায়। আলস্নাহ তায়ালা বলেন,

﴿وَ لِلّٰہِ الۡاَسۡمَآءُ الۡحُسۡنٰی فَادۡعُوۡہُ بِہَا ﴾

আর আলস্নাহর জন্যই রয়েছে সুন্দর নামসমূহ। সুতরাং তোমরা তাঁকে সেসব নামের মাধ্যমে ডাকো। (সূরা আরাফ- ১৮০)

কিন্তু মৃত ওলী-আওলিয়াদের কবরের কাছে যাওয়া, তাদের নামে মানত করা, তাদের কাছে নিজের অভাব অভিযোগের কথা বলা এবং এসব কাজকর্মের মাধ্যমে ওসীলা গ্রহণ করা শুধু নিষিদ্ধই নয়; বরং এগুলো শিরক ও কুফরী। কেউ এগুলোতে লিপ্ত হলে তার ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে।

সুতরাং প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য উচিত হলো যাবতীয় শিরকী কাজ থেকে দূরে থাকা। কারণ যে শিরক করে তার জন্য আল্লাহর জান্নাত হারাম হয়ে যায়। আল্লাহ তা‘আলা কুরআন মাজীদে বলেছেন,

﴿ اِنَّهٗ مَنْ يُّشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَاْوَاهُ النَّارُؕ وَمَا لِلظَّالِمِيْنَ مِنْ اَنْصَارٍ﴾

যে আল্লাহর সাথে শরীক করে আল্লাহ অবশ্যই তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন। (ফলে) তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। আর যালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। (সূরা মায়েদা– ৭২)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন