hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কিতাবুন নিসা

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৬১
হায়েয ও নিফাস অবস্থায় যেসব কাজ করা যায়
১. যিকির করা, দরূদ পাঠ করা, তাসবীহ পাঠ করা, দু‘আ পাঠ করা :

হায়েয ও নিফাস অবস্থায় উপরোক্ত কাজগুলো মহিলারা করতে পারবে। তারা এ অবস্থায় আল্লাহকে ভুলে যাবে না। বরং যিকির-আযকার করবে, নবী ﷺ এর প্রতি দরূদ পাঠ করবে। তারা কুরআনের তাফসীর, হাদীস গ্রন্থ ও অন্যান্য ইসলামী বই-পুসত্মক পড়ে দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করতে পারবে।

২. হায়েয অবস্থায় কুরআন পাঠের বিধান :

অনেক আলেমের মতে হায়েয এবং নিফাসগ্রস্ত মহিলারা মুখে উচ্চারণ করে কুরআন পড়বে না, তবে একান্ত প্রয়োজন হলে পড়তে পারবে। যেমন- শিক্ষিকা কুরআন শিক্ষা দেয়ার জন্য এবং ছাত্রীরা কুরআন শিক্ষা করার জন্য হায়েয অবস্থায়ও কুরআন পড়তে পারবে।

কিন্তু বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী হায়েয এবং নিফাস অবস্থায়ও মহিলারা স্বাভাবিকভাবে মুখে উচ্চারণ করে কুরআন পাঠ করতে পারবে। এমনকি তারা কুরআন স্পর্শও করতে পারবে। কেননা হায়েয অবস্থায় কুরআন স্পর্শ করা নিষেধ মর্মে কোন স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

আল্লামা ইবনে হাযম (রহ.) তাঁর মুহাল্লা গ্রন্থে বলেন, কুরআন তিলাওয়াত, তিলাওয়াতের সিজদা, কুরআন স্পর্শ করা ও আল্লাহর যিকির করা উত্তম কাজ। এজন্য যিকিরকারী আল্লাহর কাছে উত্তম প্রতিদান পাবে। এখন কেউ যদি এগুলোকে কিছু কিছু অবস্থায় বৈধ নয় বলে দাবি করে, তবে সে ক্ষেত্রে তাকে প্রমাণ উপস্থিত করতে হবে। শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যা (রহ.) বলেন, হায়েযগ্রসত্ম মহিলাকে কুরআন পড়া থেকে বিরত রাখার ব্যাপারে মূলত কোন প্রমাণ নেই। [আল ফাতাওয়া মাজমূআতু ইবনুল কাসেম ২৬ খন্ড, ১৯১ পৃঃ।]

একটি হাদীসে এসেছে, ঋতুস্রাবে আক্রান্ত এবং (যার প্রতি গোসল ফরয হয়েছে এমন) নাপাক ব্যক্তি কুরআন থেকে কিছুই পাঠ করবে না। [যঈফ তিরমিযী, হা/১৩১।]

এ হাদীসটি যঈফ হওয়ার ব্যাপারে হাদীস বিশারদগণ একমত। ইমাম তিরমিযী (রহ.) এ হাদীসটি বর্ণনা করার পর বলেন, আমি মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল (ইমাম বুখারী রহ.)-কে বলতে শুনেছি যে, এ হাদীসের একজন বর্ণনাকারী হলেন ইসমাঈল ইবনে আইয়াশ। তিনি হিজায এবং ইরাকবাসীদের থেকে অনেক মুনকার তথা অগ্রহণযোগ্য হাদীস বর্ণনা করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে অনেক দুর্বলতা। শাইখ আলবানী (রহ.) বলেন, এ হাদীসটি মুনকার তথা পরিত্যাজ্য।

ইমাম বায়হাকী এ হাদীসটি বর্ণনা করে বলেন, لَيْسَ هٰذَا بِالْقَوِىِّ অর্থাৎ এ হাদীসটি শক্তিশালী নয়। [সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/১৫৩৫।]

শারহুস সুন্নাহ গ্রন্থে বর্ণিত রয়েছে, ইমাম মালিক (রহ.) হায়েযগ্রসত্ম মহিলার জন্য কুরআন পাঠ করাকে জায়েয বলেছেন। কেননা হায়েযের সময়টি অনেক দীর্ঘায়িত হয়। ফলে সে কুরআন ভুলে যেতে পারে। [শারহুস সুন্নাহ, হা/২৭৩।]

রাসূলুল্লাহ ﷺ এর যুগে মহিলাদের হায়েয হতো। এতে কুরআন পাঠ করা যদি তাদের প্রতি নামাযের ন্যায় হারাম হতো, তাহলে তিনি নিশ্চয় উম্মতের জন্য তা বর্ণনা করতেন এবং মুসলিম নারীদেরকে শিক্ষা দিতেন। যেহেতু এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে কেউ নিষিদ্ধ বর্ণনা করেননি, সেহেতু এটাকে নিষিদ্ধ বলা যাবে না।

৩. সিজদার আয়াত শ্রবণে সিজদা করা :

ঋতুবতী মহিলার সিজদার আয়াত শ্রবণ করে সিজদা করতে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। কেননা নামায ও তিলাওয়াতে সিজদা এক নয়। আর এ সিজদার ক্ষেত্রে পবিত্রতাও শর্ত নয়। হাদীসে এসেছে,

ইবনে আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদা রাসূলুল্লাহ ﷺ সূরা নাজম পড়ে সিজদা দিলেন। এ সময় তার সাথে সকল মুসলিম, মুশরিক ও জিনজাতি সিজদা করেছিল। [সহীহ বুখারী, হা/১০৭১; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/৩৮৫৭; সহীহ ইবনে হিববান, হা/২৭৬৩; তিরমিযী, হা/৫৭৫; মিশকাত, হা/১০২৩; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হা/৪২৭৫।]

এ হাদীস থেকে জানা যাচ্ছে যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কিরাআত শুনে উপস্থিত সবাই সিজদা করেছেন। কিন্তু এ সময় কেউ পবিত্রতা অর্জন করতে গেছেন বলে কোন প্রমাণ নেই। আবার এটাও অসম্ভব যে, তখন সবাই পবিত্র ছিল।

৪. ঋতুবতী মহিলার কোলে মাথা রেখে পুরুষের কুরআন তিলাওয়াত করা :

আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ঋতুবতী থাকাবস্থায় রাসূলুল্লাহ ﷺ আমার কোলে মাথা রেখে কুরআন পাঠ করতেন। [সহীহ বুখারী, হা/৭৫৪৯।]

৫. একামত্ম প্রয়োজনে মসজিদে প্রবেশ করা :

ঋতুবতী মহিলা একামত্ম প্রয়োজনে মসজিদের ভেতর দিয়ে যেতে পারবে এবং প্রয়োজন মিটাতে পারবে। তবে সে মসজিদে অবস্থান করবে না। কেননা রাসূলুল্লাহ ﷺ ঋতুবতী মহিলাদেরকে ঈদগাহে যেতে বলেছেন এবং তাদেরকে নামায পড়ার স্থান ত্যাগ করতে আদেশ করেছেন। [সহীহ বুখারী, হা/৩২৪; আবু দাউদ, হা/১১৩৯।]

৬. স্বামীর খেদমত করা :

ঋতুবতী মহিলা তার স্বামীর সেবা করতে পারবে। যেমন- স্বামীর মাথা ধুয়ে দেয়া, চুল আঁচড়িয়ে দেয়া, কোথাও বের হওয়ার সময় স্বামীকে প্রসত্মুত করে দেয়া ইত্যাদি। আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হায়েয অবস্থায় রাসূলুল্লাহ ﷺ এর মাথা আঁচড়িয়ে দিতাম। [সহীহ বুখারী, হা/২৯৫; সহীহ মুসলিম, হা/২৯৭।]

৭. হায়েয অবস্থায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া :

হায়েয অবস্থায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়াতে কোন দোষ নেই। কিন্তু পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত স্বামী তার সাথে মিলিত হতে পারবে না।

৮. স্বামীর সাথে একই লেপের মধ্যে ঘুমানো :

উম্মে সালামা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথে একই চাদরের নিচে শুয়ে ছিলাম। হঠাৎ আমার হায়েয দেখা দিলে আমি চুপি চুপি বেরিয়ে গিয়ে হায়েযের কাপড় পড়ে নিলাম। তিনি বললেন, তোমার কি হায়েয দেখা দিয়েছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তখন তিনি আমাকে ডাকলেন এবং আমি তাঁর সাথে চাদরের ভেতর শুয়ে পড়লাম। [সহীহ বুখারী, হা/২৯৮;সহীহ মুসলিম, হা/৭০৯।]

ঋতুবতী মহিলার সাথে সহবাস ব্যতীত সবকিছু বৈধ। হাদীসে এসেছে,

মাসরুক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা তিনি আয়েশা (রাঃ)-কে বলেছিলেন, আমি আপনাকে কিছু প্রশ্ন করতে চাই। কিন্তু আপনাকে তা বলতে লজ্জা করে। তখন আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমি তোমার মায়ের মতো এবং তুমি আমার ছেলের মতো। অতঃপর মাসরুক (রাঃ) বললেন, হায়েয অবস্থায় পুরুষরা তাদের স্ত্রীদের সাথে কীরূপে মেলামেশা করবে? তিনি বললেন, লজ্জাস্থান উপভোগ করা ব্যতীত তার সাথে সবকিছু করতে পারবে। [তাফসীরে তাবারানী, ৪/৩৭৮।]

কোন মহিলার হায়েয বন্ধ হওয়ার পর উত্তম হলো সে আগে গোসল করবে; তারপর স্বামী তার সাথে মিলিত হবে। ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, فَاِذَا تَطَهَّرْنَ এর অর্থ হলো, যখন তারা পানি দ্বারা পবিত্র হবে তখন তোমরা স্ত্রীর সাথে মিলিত হও। [তাফসীরে ইবনে কাসীর, সূরা বাকারার ২২২ নং আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন