hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কিতাবুন নিসা

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

নারী মোহরানা পাওয়ার হকদার
বিবাহ বন্ধন উপলক্ষে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে বাধ্যতামূলকভাবে প্রদত্ত মালকে মোহর বলে। যা স্ত্রীর নিজ সম্পত্তিরূপে গণ্য হয়।

বিয়ে-শাদীতে মোহর অপরিহার্য শর্ত। অথচ মোহর নিয়ে আমাদের সমাজে নানা অজ্ঞতা বিরাজমান। ফলে নারীরা প্রতিনিয়তই প্রবঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। জাহেলী যুগে নারী কোন সম্পদের মালিক হতে পারত না। এমনকি তার প্রাপ্ত মোহর হতেও কিছুই পেত না। তৎকালীন সমাজে বিবাহের সময় বরপক্ষ হতে যে মোহর প্রদান করা হতো তা কনের অভিভাবক তথা পিতা, ভাই অথবা যে আত্মীয়ের অভিভাবকত্বে সে থাকত তার হাতে প্রদান করা হতো। আর তারা এটাকে বিনিময় হিসেবে গ্রহণ করত; নারীর অধিকার হিসেবে নয়।

মোহর কেন দিতে হবে :

যদিও বৈবাহিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয় উভয় পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে। তবুও দাম্পত্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে পুরুষের উপর ইসলাম অধিকতর দায়িত্ব ও কর্তব্য অর্পণ করেছে। একদিকে যেমন স্বামী স্বীয় স্ত্রী ও সন্তান-সমত্মতির ভরণ-পোষণ, বাসস্থান, শিক্ষা ইত্যাদির ব্যবস্থা করতে আইনগত ও নীতিগতভাবে বাধ্য, অপরদিকে সারা জীবনের জন্য স্ত্রীকে একান্তভাবে তার জন্য হালাল এবং অপরের জন্য হারাম করে নেয়া এ বৈবাহিক সম্পর্কের বিনিময়ে একটি যুক্তিসঙ্গত পরিমাণ অর্থ বা সম্পদ মোহররূপে স্ত্রীকে প্রদান করতেও স্বামী বাধ্য থাকে। কুরআন মাজীদ নারীকে যেসকল অধিকার প্রদান করেছে তন্মধ্যে মোহর অন্যতম।

মোহরানা আদায় করা স্বামীর উপর ফরয :

﴿فَاٰتُوْهُنَّ اُجُوْرَهُنَّ فَرِيْضَةً﴾

তাদের ধার্যকৃত মোহর তাদেরকে দিয়ে দেবে। (সূরা নিসা- ২৪)

অধিকাংশ লোক এ বিষয়টিকে গতানুগতিক ধারায় গ্রহণ করে। এ জন্য ফরয মনে করে মোহর আদায়ের প্রক্রিয়া সচরাচর দেখা যায় না। ফলে নারী সমাজ স্রষ্টা নির্ধারিত একটি হক থেকে বঞ্চিত থেকে যায়।

সহবাসের আগে তালাক দিলেও অর্ধেক মোহর দিতে হবে :

﴿وَاِنْ طَلَّقْتُمُوْهُنَّ مِنْ قَبْلِ اَنْ تَمَسُّوْهُنَّ وَقَدْ فَرَضْتُمْ لَهُنَّ فَرِيْضَةً فَنِصْفُ مَا فَرَضْتُمْ﴾

যদি তোমরা মোহর ধার্য করার পর সহবাসের পূর্বেই তালাক দিয়ে দাও, তবে যা (মোহর হিসেবে) নির্ধারণ করেছ (স্ত্রী) তার অর্ধেক পাবে। (সূরা বাকারা- ২৩৭)

সম্পর্ক স্থাপন করার পর তা ভেঙ্গে দেয়ার কারণে স্ত্রীলোকের অবশ্যই কিছু না কিছু ক্ষতি হয়ে যায়। সাধ্যমতো এ ক্ষতিপূরণ করার জন্যই আল্লাহ তা‘আলা এ নির্দেশ দিয়েছেন।

মোহরানার পরিমাণ :

সকল মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা সমান নয়। তাই ইসলামী শরীয়ত মোহরের পরিমাণ নির্ধারণ করেনি। এটাই যুক্তিসঙ্গত। যার বেশি দেয়ার সামর্থ্য আছে সে বেশি দেবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَاِنْ اَرَدْتُّمُ اسْتِبْدَالَ زَوْجٍ مَّكَانَ زَوْجٍ وَّاٰتَيْتُمْ اِحْدَاهُنَّ قِنْطَارًا فَلَا تَأْخُذُوْا مِنْهُ شَيْئًا﴾

আর যদি তোমরা এক স্ত্রীর পরিবর্তে অন্য স্ত্রী গ্রহণ করতে চাও এবং তাদের কাউকে অঢেল সম্পদও দিয়ে থাক, তবুও তা থেকে কিছুই গ্রহণ করবে না।

(সূরা নিসা- ২০)

এ আয়াতে অঢেল মোহরের কথা বলা হয়েছে। সুতরাং কারো যদি সামর্থ্য থাকে এবং সে প্রচুর মোহরানা স্ত্রীকে প্রদান করে তাতে কোন আপত্তি নেই।

অপরপক্ষে যার সামর্থ্য কম সে যতটুকু পারে ততটুকু মোহরানা দেবে।

রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সময় এক সাহাবীর মোহরানা হিসেবে দেয়ার মতো কিছুই ছিল না। তারপর তিনি কুরআন শিক্ষা দেয়ার বিনিময়ে ঐ সাহাবীর বিবাহ সম্পন্ন করেছেন। হাদীসে উল্লেখ রয়েছে,

عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ أَتَتِ النَّبِيَّ امْرَأَةٌ فَقَالَتْ إِنَّهَا قَدْ وَهَبَتْ نَفْسَهَا لِلّٰهِ وَلِرَسُوْلِ اللهِ فَقَالَ‏ : ‏ مَا لِي فِي النِّسَاءِ مِنْ حَاجَةٍ ‏‏ . ‏ فَقَالَ رَجُلٌ زَوِّجْنِيْهَا‏ . ‏ قَالَ‏ : ‏ أَعْطِهَا ثَوْبًا ‏‏ . ‏ قَالَ لَا أَجِدُ‏ . ‏ قَالَ : ‏أَعْطِهَا وَلَوْ خَاتَمًا مِنْ حَدِيْدٍ ‏‏‏ . ‏ فَاعْتَلَّ لَه ‏. ‏ فَقَالَ : ‏ مَا مَعَكَ مِنَ الْقُرْاٰنِ ‏‏‏ . ‏ قَالَ كَذَا وَكَذَا‏ . ‏ قَالَ : ‏ فَقَدْ زَوَّجْتُكَهَا بِمَا مَعَكَ مِنَ الْقُرْاٰنِ ‏‏‏ .‏

সাহল ইবনে সা‘দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক মহিলা নবী ﷺ এর কাছে এসে বলল যে, সে নিজেকে আল্লাহ এবং রাসূলের জন্য উৎসর্গ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। (এ কথা শুনে) নবী ﷺ বললেন, কোন মহিলার নিকট আমার কোন দরকার নেই। তখন এক ব্যক্তি বলল, তাহলে আপনি তাকে আমার কাছে বিবাহ দিয়ে দিন। নবী ﷺ তাকে বললেন, তুমি তাকে একটি কাপড় দাও। তখন সে বলল, আমি তা দিতে সক্ষম নই। নবী ﷺ বললেন, তুমি তাকে একটি লোহার আংটি হলেও দাও। কিন্তু লোকটি এবারও পূর্বের ন্যায় অপারগতা প্রকাশ করল। অতঃপর নবী ﷺ তাকে প্রশ্ন করলেন, তোমার কি কিছু কুরআন মুখস্থ আছে? সে বলল, কুরআনের অমুক অমুক অংশ আমার মুখস্থ আছে। তখন নবী ﷺ বললেন, যে পরিমাণ কুরআন তোমার মুখস্থ আছে এর বিনিময়ে এ মহিলাটিকে তোমার নিকট বিয়ে দিলাম। [সহীহ বুখারী, হা/৫১৪৯; মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/১০৯২; সহীহ মুসলিম, হা/৩৫৫৩; আবু দাউদ, হা/২১১৩; তিরমিযী, হা/১১১৪; ইবনে মাজাহ, হা/১৮৮৯; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৪০৯৩; নাসাঈ, হা/৩২৮০; মুসনাদে আহমাদ, হা/২২৮৫০; মুসনাদে আবু ই‘আলা, হা/৭৫২২; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/১৪৭৪৮; মুসত্মাখরাজে আবু আওয়ানা, হা/৩৩৬৮; সুনানে দারেমী, হা/২২০১; সুনানে দার কুতনী, হা/৩৬১১; মু‘জামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/৫৬৪৯; শারহুস সুন্নাহ, হা/২৩০২; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হা/১২২৭৪; মুসনাদে হুমাইদী, হা/৯৭৪; মিশকাত, হা/৩২০২।]

স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে মোহরানা চেয়ে নিতে পারে :

আমাদের সমাজের অনেক নারীর ধারণা হলো, স্বামীর কাছে মোহর চাওয়া যাবে না। আবার অনেকে ভাবেন যে, বিবাহ বিচ্ছেদের সাথে এটা সম্পৃক্ত। এরূপ ধারণা একান্তই অমূলক। স্ত্রী তার পাওনা হিসেবে স্বামীর কাছ থেকে মোহর চেয়ে নিতে পারে, এতে দোষের কিছু নেই। স্ত্রীর চাওয়ার আগে দিয়ে দেয়া স্বামীর জন্য উত্তম। মোহর আদায়ের সর্বোত্তম নিয়ম হলো, সামর্থ্যের মধ্যে তা নির্ধারণ করে নগদ আদায় করা। প্রাপ্তবয়স্কা নারী নিজেই মোহর গ্রহণ করার অধিকার রাখে। অপ্রাপ্তবয়স্কা হলে পিতা অথবা তার নিকটতর অভিভাবক মোহর গ্রহণ করতে পারবে।

মোহর একটি মেয়ের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা। সঙ্কটকালে সে যেন এ সম্পদ ব্যবহার করে সম্মানজনক জীবনযাপন করতে পারে সেজন্য এ ব্যবস্থা।

মোহরানা মাফ চেয়ে নেয়া ঠিক নয় :

আমাদের সমাজে মোহর নিয়ে নানা রকম কুসংস্কার চালু আছে। এর একটি হচ্ছে, স্ত্রীর কাছ থেকে ছলে-বলে-কৌশলে মাফ চেয়ে নেয়া। দেশের কোন কোন অঞ্চলে এ কুপ্রথা চালু আছে যে, বিয়ের রাতেই স্বামী স্ত্রীর কাছ থেকে মোহর মাফ করিয়ে নেয়। মেয়ে যেহেতু মোহরের গুরুত্ব সম্পর্কে জানে না এবং প্রথম প্রথম সে মানসিকভাবে দুর্বল থাকে। এহেন অবস্থায় সে তার স্বামীকে মাফ করবে না- এ কথা বলতে পারে না। মোহরানা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত স্ত্রীর একান্ত একক অধিকার। এটা স্বামীর কোন করুণা নয়। ছলে-বলে-কৌশলে বা অজ্ঞতার সুযোগে তা মাফ করিয়ে নিলে, সেটা মাফ না হয়ে যুলুম ও প্রতারণা হিসেবে গণ্য হবে।

দেশের কোন কোন অঞ্চলে এমন অবস্থাও বিরাজমান যে, স্বামী-স্ত্রীর হয়তো মিল হচ্ছে না। এক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রীকে তার বাপের বাড়িতে দিয়ে বসে থাকে এবং বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখে। মনে করে আমি অগ্রসর হয়ে তালাক দিলে মোহর দিতে হবে। এটা বড় অন্যায়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন