hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কিতাবুন নিসা

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

২৯
স্বামীর ব্যাপারে স্ত্রীর দায়িত্ব
স্ত্রীর উপর তার স্বামীর অধিকার অনেক বড়, যা তার পিতামাতার অধিকারের চেয়েও বেশি। সুতরাং সে স্বামীর সকল বিষয়ের তত্ত্বাবধায়ক। হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ ، عَنِ النَّبِيِّ قَالَ : لَوْ كُنْتُ اٰمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِأَحَدٍ لَأَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا

আবু হুরায়রা (রাঃ) নবী ﷺ হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সিজদা করার আদেশ দিতাম তবে আমি নারীদেরকে তাদের স্বামীকে সিজদা করার আদেশ দিতাম। [মুসনাদে আহমাদ, হা/১২৬৩৫; তিরমিযী, হা/১১৫৯; ইবনে মাজাহ, হা/১৮৫২; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/২৭৬৮।]

অন্য হাদীসে এসেছে,

عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ - - أَيُّمَا امْرَأَةٍ مَاتَتْ وَزَوْجُهَا عَنْهَا رَاضٍ دَخَلَتِ الْجَنَّةَ

উম্মে সালামা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, কোন নারী যদি এমতাবস্থায় মারা যায় যে, তার স্বামী তার উপর সমত্মুষ্ট; তাহলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। [তিরমিযী, হা/১১৬১; ইবনে মাজাহ, হা/১৪৫৪।]

সুতরাং একজন মুসলিম নারীকে জান্নাতে যেতে হলে তাকে অবশ্যই স্বামীর আনুগত্য করতে হবে। আর স্বামীর আনুগত্য করতে হলে স্বামীর অধিকারসমূহ যথাযথভাবে পালন করতে হবে।

স্বামীর হকসমূহ :

১. আল্লাহ তা‘আলার অবাধ্যতা নেই এমন কাজে স্বামীর আনুগত্য করা। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, যখন নারী পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়বে, রমাযান মাসের রোযা রাখবে, লজ্জাস্থানের হেফাযত করবে এবং স্বামীর আনুগত্য করবে, তখন তাকে বলা হবে, তুমি যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা জান্নাতে প্রবেশ করো। [মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬৬১।]

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে জিজ্ঞেস করা হলো, কোন্ নারী সবচেয়ে উত্তম? জবাবে তিনি বললেন, ঐ নারীই উত্তম, যে নারী তার স্বামীকে আনন্দ দেয় যখন সে তার দিকে তাকায়। যখন সে তাকে কোন নির্দেশ দেয় তখন সে তার আনুগত্য করে এবং তার স্বামী তার নিজের ব্যাপারে ও তার সম্পদের ব্যাপারে যা অপছন্দ করে সে তার বিরুদ্ধাচরণ করে না। [নাসাঈ, হা/৫৩৪৩।]

২. স্বামীর সাথে উত্তম আচরণ করা, তার কষ্ট লাঘব করা, তাকে সমত্মুষ্ট করা এবং তার ব্যক্তিত্বকে রক্ষা করা। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, দুনিয়াতে কোন স্ত্রী তার স্বামীকে কষ্ট দিলে তার ডাগর চক্ষুবিশিষ্ট হুর স্ত্রী বলে উঠে, তুমি তাকে কষ্ট দেবে না। আল্লাহ তোমাকে ধ্বংস করুক! কারণ সে তোমার নিকট আগমত্মুক মাত্র। অচিরেই সে তোমাকে ছেড়ে আমাদের নিকট চলে আসবে। [তিরমিযী, হা/১১৭৪; ইবনে মাজাহ, হা/২০১৪;]

৩. স্বামীকে ভালোবাসা এবং তার সাথে এমন বন্ধুত্ব স্থাপন করা যে, সে তাকে দেখে হাসবে এবং তাকে সম্বোধন করার ক্ষেত্রে নম্রতা প্রদর্শন করবে। আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতের নারীদের প্রশংসা করেছেন এভাবে-

﴿عُرُبًا أَتْرَابًا﴾

সোহাগিনী ও সমবয়স্কা। (সূরা ওয়াকিয়া- ৩৭)

৪. স্ত্রী তার স্বামীর অনুপস্থিতিতে নিজেকে ও তার ধনসম্পদকে রক্ষণাবেক্ষণ করবে।

৫. স্ত্রী তার স্বামীর উপস্থিতিতে তার অনুমতি ব্যতীত নফল রোযা রাখবে না। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, স্ত্রী তার স্বামীর উপস্থিতিতে তার অনুমতি ব্যতীত রোযা রাখবে না। আর স্বামীর অনুমতি ছাড়া অন্য কাউকে তার গৃহে প্রবেশ করতে দেবে না। [সহীহ মুসলিম, হা/২৪১৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/৯৭৩২; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১০৫২; জামেউস সগীর, হা/১৩৩০৮।]

৬. স্ত্রী স্বামীর ঘরকে সংরক্ষিত রাখবে। সুতরাং সে তার ঘরে কোন অপরিচিত পুরুষ অথবা এমন কোন ব্যক্তিকে প্রবেশ করাবে না, যার অনুপ্রবেশকে তার স্বামী অপছন্দ করে। যদিও সেই ব্যক্তিটি তার ভাই হয়।

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, জেনে রাখো! তোমাদের স্ত্রীদের উপর তোমাদের যেমন অধিকার রয়েছে, অনুরূপভাবে তোমাদের উপরও তোমাদের স্ত্রীদের তেমন অধিকার রয়েছে। তোমাদের স্ত্রীদের উপর তোমাদের অধিকার হলো, তারা যেন তোমাদের বিছানায় এমন কাউকে যেতে না দেয়, যাকে তোমরা অপছনদ কর। জেনে রাখো! তোমাদের উপর তাদের অধিকার হলো, তোমরা তাদের বস্ত্র ও অন্নের ব্যাপারে তাদের প্রতি উত্তম ব্যবহার করবে। [তিরমিযী, হা/১১৬১; ইবনে মাজাহ, হা/১৪৫৪।]

৭. স্ত্রী তার স্বামীর উপর এমন ব্যয়ের বোঝা চাপিয়ে দেবে না, যার সামর্থ্য তার নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿لِيُنْفِقْ ذُوْ سَعَةٍ مِّنْ سَعَتِهٖؕ وَمَنْ قُدِرَ عَلَيْهِ رِزْقُهٗ فَلْيُنْفِقْ مِمَّاۤ اٰتَاهُ اللهُؕ لَا يُكَلِّفُ اللهُ نَفْسًا اِلَّا مَاۤ اٰتَاهَاؕ سَيَجْعَلُ اللهُ بَعْدَ عُسْرٍ يُّسْرًا﴾

সামর্থ্যবান ব্যক্তি নিজ সামর্থ্যানুযায়ী ব্যয় করবে এবং যার জীবনোপকরণ সীমিত সে আল্লাহ যা দান করেছেন তা হতে ব্যয় করবে। আল্লাহ যাকে যে সামর্থ্য দিয়েছেন তার চেয়ে অতিরিক্ত বোঝা তিনি তার উপর চাপিয়ে দেন না। অচিরেই আল্লাহ কষ্টের পর সুখ আনয়ন করবেন। (সূরা তালাক- ৭)

৮. বিশেষ প্রয়োজনের মুহূর্তে স্বামীর চাহিদা পূরণ করা এবং কোন নির্ভরযোগ্য কারণ ছাড়া তাকে নিষেধ না করা। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, যদি কোন পুরুষ তার স্ত্রীকে তার সাথে একই বিছানায় শোয়ার জন্য আহবান করে, আর স্ত্রী সেই আহবান প্রত্যাখ্যান করে, তবে সকাল পর্যন্ত ফেরেশতারা ঐ মহিলার উপর লানত বর্ষণ করতে থাকেন। [সহীহ বুখারী, হা/৪৮৯৭; সহীহ মুসলিম, হা/৩৬১১।]

৯. স্বামীর জন্য সাজ-গোছ করা, যাতে নিজের প্রতি তাকে আকৃষ্ট করা যায়। এর ফলে স্বামী তার দৃষ্টিকে অবনমিত রাখবে এবং তাকে হারামের মধ্যে ছেড়ে দেবে না। তাই স্ত্রীর উচিত নিজেকে এমন বসত্মু দ্বারা সুসজ্জিত করার চেষ্টা করা, যাতে স্বামী আকৃষ্ট হয়।

১০. স্বামীর অনুগ্রহের স্বীকৃতি প্রদান করা। সুতরাং সে তার ভালো আচরণকে অস্বীকার করবে না। বিশেষ করে যখন সে তার কাছ থেকে ব্যয় ও দানশীলতার মানসিকতা লক্ষ্য করবে। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, তোমরা সাদাকা করো। কারণ তোমাদের অধিকাংশই হবে জাহান্নামের ইন্ধন। অতঃপর মহিলাদের মধ্য থেকে একজন দাঁড়াল, যার উভয় গালে কালো দাগ ছিল। সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! তা কেন? তিনি বললেন, তোমরা বেশি অভিযোগ করে থাক এবং উপকারকারীর উপকার অস্বীকার কর। [সহীহ মুসলিম, হা/২০৮৫।]

অপর এক হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তুমি যদি দীর্ঘকাল তাদের কারো প্রতি ইহসান করতে থাক এবং হঠাৎ কোন এক সময় তাদের প্রতি সামান্য অবহেলা করে ফেল তখনই তারা বলে থাকে যে, আমি কখনো তোমার কাছ থেকে ভালো ব্যবহার পাইনি। [সহীহ বুখারী, হা/২৯; সহীহ মুসলিম, হা/২১৪৭।]

১১. স্বামীর অনুমতি ব্যতীত ঘর থেকে বের না হওয়া। যদিও পিতামাতার সাথে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে বের হোক না কেন।

১২. স্বামীর ঘরের কাজসমূহ সম্পাদন করা। যেমন- খাবার প্রসত্মুত করা, পোশাক-পরিচ্ছদ পরিষ্কার করা, ঘরের আসবাবপত্র পরিপাটি করে রাখা ইত্যাদি।

আসমা বিনতে আবু বকর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন যুবায়ের (রাঃ) আমাকে বিয়ে করলেন, তখন তার কাছে কোন ধনসম্পদ ছিল না। এমনকি কোন স্থাবর জমিজমা ও দাসদাসীও ছিল না। শুধু কুয়ো থেকে পানি উত্তোলনকারী একটি উট ও একটি ঘোড়া ছিল। আমি তাঁর উট ও ঘোড়া চরাতাম, পানি পান করাতাম, পানি উত্তোলনকারী মশক ছিঁড়ে গেলে তা সেলাই করতাম এবং আটা পিষতাম। [সহীহ বুখারী, হা/৪৯২৬; সহীহ মুসলিম, হা/৫৮২১।]

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফাতেমা (রাঃ) চাক্কি ঘুরাতে গিয়ে তাঁর হাতে ব্যথা অনুভব করলেন। তখন নবী ﷺ এর কাছে বন্দী এসেছিল। তাই তিনি বন্দী হতে একজন খাদিমের জন্য নবী ﷺ এর নিকট গেলেন, কিন্তু তিনি নবী ﷺ-কে পেলেন না। ফলে তিনি আয়েশা (রাঃ) এর সাথে দেখা করে তাঁকে ব্যাপারটি অবহিত করলেন। অতঃপর যখন নবী ﷺ আগমন করলেন তখন আয়েশা (রাঃ) তাঁর নিকট ফাতেমা (রাঃ) এর আগমনের বিষয়টি অবহিত করলেন। {ফাতেমা (রাঃ) বলেন} অতঃপর নবী ﷺ আমাদের নিকট আসলেন। এমন সময় আমরা আমাদের শয্যাগ্রহণ করেছিলাম। অতঃপর আমরা উঠতে লাগলাম। নবী ﷺ বললেন, তোমরা তোমাদের যথাস্থানে থাকো। অতঃপর তিনি আমাদের দু’জনের মাঝে বসলেন। এমনকি আমি তাঁর পায়ের শীতলতা আমার সিনার মধ্যে অনুভব করলাম। অতঃপর তিনি বললেন, আমি কি তোমাদের এমন বিষয় শিখিয়ে দিব না, যা তোমরা প্রার্থনা করছিলে তার চেয়ে উত্তম? যে সময় তোমরা তোমাদের শয্যাগ্রহণ করবে তখন ৩৪ বার ‘আল্লাহু আকবার’, ৩৩ বার ‘সুবহা-নাল্লাহ’ এবং ৩৩ বার ‘আল হাম্দু লিল্লাহ’ পড়ে নিবে। এটি তোমাদের জন্য খাদিমের চেয়ে উত্তম। [সহীহ বুখারী, হা/৫৯৫৯; সহীহ মুসলিম, হা/৭০৯০।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন