hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কিতাবুন নিসা

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১৯
মুসলিম নারীকে সৎকর্মশীল হতে হবে
প্রতিটি মুসলিমই তার নিজ নিজ কর্মকান্ডের ব্যাপারে দায়বদ্ধ। সুতরাং প্রত্যেকটি নারীও তার কর্মকান্ডের ব্যাপারে দায়বদ্ধ। তার কাজের হিসাব নেয়া হবে এবং তাকে প্রতিদান দেয়া হবে।

প্রত্যেক নারীকেই জিজ্ঞেস করা হবে, সে আল্লাহর হুকুম পালন করেছে কিনা, সে তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছে কিনা, স্বামীর আমানত হেফাযত করেছে কিনা, স্বামীর আনুগত্য করেছে কিনা, পিতামাতার সেবা করেছে কিনা, কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী সন্তান লালনপালন করেছে কিনা, সন্তানদেরকে দ্বীন শিক্ষা দিয়েছে কিনা, সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজ থেকে নিষেধ করেছে কিনা, আল্লাহর দ্বীন প্রচারের দায়িত্ব পালন করেছে কিনা অথবা এসব দায়িত্ব সে কতটুকু পালন করেছে। সে যদি এসব দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে থাকে তবে সে এর যথাযথ প্রতিদান পাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِّنْ ذَكَرٍ اَوْ اُنْثٰى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهٗ حَيَاةً طَيِّبَةً وَّلَنَجْزِيَنَّهُمْ اَجْرَهُمْ بِاَحْسَنِ مَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ ﴾

মুমিন থাকাবস্থায় পুরুষ ও নারীদের মধ্যে যে কেউ সৎকর্ম করবে, নিশ্চয় আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং তাদেরকে তাদের কর্মের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব। (সূরা নাহল- ৯৭)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿وَمَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِّنْ ذَكَرٍ اَوْ اُنْثٰى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَاُولٰٓئِكَ يَدْخُلُوْنَ الْجَنَّةَ يُرْزَقُوْنَ فِيْهَا بِغَيْرِ حِسَابٍ﴾

পুরুষ কিংবা নারীদের মধ্যে যারা মুমিন হয়ে সৎ আমল করে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে। সেখানে তারা অসংখ্য রিযিক পাবে। (সূরা মু’মিন- ৪০)

ফরয আমলে অবহেলা করা যাবে না :

মুসলিম নারীর উপর আবশ্যক হলো সৎ আমল করা। যদি তা ফরয কাজ হয়, যেমন- ফরয নামায, ফরয যাকাত, রমাযান মাসের রোযা, সামর্থ্যবান হলে জীবনে একবার হজ্জ করা, তবে তার উপর কর্তব্য হচ্ছে কোন প্রকার ত্রুটিবিচ্যুতি ও অবহেলা ছাড়াই তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা।

নফল আমলেরও গুরুত্ব দিতে হবে :

যদি কোন আমল নফল ও মুস্তাহাব হয়, যা করার অনুমতি দিয়ে আল্লাহ তা‘আলা তার মুমিন বান্দাদেরকে করুণা করেছেন, তাহলে তার উচিত হবে সে কাজগুলো থেকে পূর্ণ সওয়াব গ্রহণ করা। কারণ, ফরযসমূহ পালনের ক্ষেত্রে যে ত্রুটিবিচ্যুতি হয়েছে, এই নফল কাজসমূহ তার ক্ষতিপূরণ করবে। তা ঐসব অপকর্ম ও গোনাহসমূহ ক্ষমা করার ব্যবস্থা করবে, যে অপরাধ তার জীবনে সংঘটিত হয়েছে এবং তা তার মর্যাদাকে সমুন্নত করবে। আর এর মাধ্যমে সৎকর্মশীল পুরুষ ও নারীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হবে এবং ঈমানের সম্পর্ক বৃদ্ধি পাবে।

হুরাইস ইবনে কাবীসা (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি মদিনায় আগমন করলাম। অতঃপর বললাম, হে আল্লাহ! আমাকে একজন উত্তম সঙ্গী দান করুন। অতঃপর আমি আবু হুরায়রা (রাঃ) এর নিকট গিয়ে বসলাম এবং বললাম, আমি আল্লাহর কাছে দু‘আ করেছি যে, তিনি যেন আমাকে উত্তম সঙ্গী দান করেন। সুতরাং আপনি এমন একটি হাদীস বর্ণনা করুন, যা আপনি নবী ﷺ হতে শুনেছেন। আমি আশা রাখি আল্লাহ তা‘আলা এর দ্বারা আমাকে উপকৃত করবেন। এরপর আবু হুরায়রা (রাঃ) বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন বান্দার সকল আমলের মধ্যে প্রথমে নামাযের হিসাব নেয়া হবে। যদি তার নামায সঠিক হয়, তবে সে মুক্তি পাবে এবং সফলতা লাভ করবে। আর যদি তার নামায সঠিক না হয়, তবে সে বঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যদি ফরয নামাযের মধ্যে কিছু ভুলত্রুটি হয়ে যায়, তবে আল্লাহ তা‘আলা ফেরেশতাদেরকে বলবেন, দেখো! আমার বান্দার আমলের মধ্যে নফল নামায আছে কিনা। যদি আমলের মধ্যে নফল নামায থাকে তবে তা দিয়ে ফরযের ঘাটতি পূর্ণ করে দেয়া হবে। এরপর তার সকল আমলের হিসাব এভাবেই নেয়া হবে। [তিরমিযী, হা/৪১৩; নাসাঈ, হা/৪৬৫; ইবনে মাজাহ, হা/১৪২৬; জামেউস সগীর, হা/৩৭৮৩।]

মুসলিম বুদ্ধিমতী নারী হলো ঐ নারী, যে তার জন্য নামায, রোযা, সাদাকা, হজ্জ, উমরা, দাওয়াত, সৎকাজের আদেশ, অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ, সততা, পরোপকার ইত্যাদি নফল ইবাদাতের কিছু অংশ বরাদ্ধ রাখে।

তার উচিত হবে, সে যেন বিভিন্ন প্রকারের নফল কাজ করার ব্যাপারে যত্নবান হয়। সুতরাং সে নফল কর্মসমূহ থেকে এমন কাজ করার উদ্যোগ গ্রহণ করবে, যার ফায়দা বা উপকারিতা তার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে এবং এমন কাজ করার উদ্যোগও গ্রহণ করবে, যার ফায়দা অপরাপর ব্যক্তিদের দিকেও ধাবিত হবে।

আর যখন বিভিন্ন প্রকার নফল কাজ তার সামনে উপস্থিত হবে, এমতাবস্থায় সে ঐ আমলটিকেই প্রাধান্য দেবে, যার উপকারিতা অন্যের মাঝে ছড়িয়ে পড়বে। যেমন- অপরকে কুরআন শিক্ষা দেয়া।

মুসলিম নারীর আবশ্যকীয় কাজ হলো সে তার দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক ও বার্ষিক কর্মকান্ডের জন্য একটি কর্মসূচী তৈরি করবে। অতঃপর তার জন্য একটা সম্ভাব্য ছক তৈরি করবে, যাতে সে তার কাজগুলোর অনুশীলন, বাস্তবায়ন ও এগুলোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে।

যেসব কাজ নেক আমলের অন্তর্ভুক্ত হবে :

১. নামায পড়া। সুতরাং একজন নারী প্রতিদিন পাঁচ বার সময়মতো নামায পড়বে। তার শর্ত ও ওয়াজিবসমূহ এবং যথাসম্ভব তার মুস্তাহাবসমূহও যথাযথভাবে আদায় করবে।

২. যাকাত প্রদান করা। সুতরাং তার কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকলে যথাযথভাবে যাকাত আদায়ের মাধ্যমে তার সম্পদকে পবিত্র করবে। এমনকি তার কাছে সংরক্ষিত গয়নাসমূহেরও যাকাত প্রদান করবে।

৩. রোযা রাখা। সুতরাং সে রমাযান মাসের ফরয রোযাসমূহ পালন করবে এবং যথাসম্ভব অন্যান্য মাসেও নফল রোযা রাখবে। তবে অন্যান্য মাসের বিশেষ রোযাসমূহের প্রতিও গুরুত্বারোপ করবে। যেমন- শাওয়াল মাসের রোযা, মহররমের ৯ ও ১০ অথবা ১০ ও ১১ তারিখের রোযা, আরাফা দিবসের রোযা ইত্যাদি।

৪. হজ্জ পালন করা। সুতরাং সে সামর্থ্যবান হলে জীবনে একবার হজ্জ পালন করবে। আর দ্বিতীয়বার সামর্থ্যবান হলে অসমর্থ্য ব্যক্তিকে আর্থিকভাবে হাদিয়া প্রদানের মাধ্যমে তাকে হজ্জ পালন করার সুযোগ করে দেবে। এতে তারা উভয়েই লাভবান হতে পারবে।

৫. স্বামীর আনুগত্য করা। সুতরাং সে যথাসম্ভব স্বামীর আনুগত্য করবে এবং স্বামীর আমানতের হেফাযত করবে। সর্বদা স্বামীর আদেশ মেনে চলবে। তবে আল্লাহর আদেশের বিপরীত কোন আদেশ সে মানতে বাধ্য থাকবে না।

৬. পর্দা করা। একজন মুসলিম নারী শরীয়ত কর্তৃক ফরযকৃত পর্দা যথাযথভাবে মেনে চলবে। আর তা হলো, সে গাইরে মাহরাম তথা যাদের থেকে পর্দা করতে হয় না তাদেরকে ছাড়া অন্যদের থেকে তার চেহারা ও সম্পূর্ণ শরীরকে ঢেকে রাখবে। অনুরূপভাবে সে লজ্জাশরম ও সচ্চরিত্রের হেফাযত করবে।

৭. বেশি বেশি নফল আমল করা। সুতরাং সে সকল প্রকার নফল ও মুস্তাহাব আমলসমূহ যথাসম্ভব পালন করার চেষ্টা করবে। এতে তার ঈমান দৃঢ় হবে। যেমন- কুরআন পাঠ করা অথবা তা অপরের কাছ থেকে শোনা, মাসনূন যিকিরসমূহ পাঠ করা, নফল নামায পড়া, নফল রোযা রাখা এবং নফল দান-সাদাকা করা ইত্যাদি।

৮. উত্তম গুণাবলি অর্জন করা। সুতরাং সে সর্ব ক্ষেত্রে আদব-কায়দা ও শিষ্টাচারিতায় উত্তম পন্থা অবলম্বন করবে, যা আয়ত্ত করা প্রত্যেক মুসলিম নারীর জন্য আবশ্যক। যেমন- কথায় ও কাজে সত্যবাদিতা অবলম্বন করা, মিথ্যা না বলা, ধৈর্যধারণ করা, উত্তম ব্যবহার করা, কথার সময় বিনয় ও নম্রতা প্রদর্শন করা, সাক্ষাতের সময় প্রফুল্ল থাকা এবং চলাফেরায়, পানাহারে, ঘুমানোর সময়, কথাবার্তা, উঠাবসা ইত্যাদির ক্ষেত্রে সাধারণ শিষ্টাচারের প্রতি লক্ষ্য রাখা।

৯. অপরকে সাহায্য করা। সুতরাং সে সর্বদা এমন কর্মপদ্ধতি গ্রহণ করবে, যার দ্বারা অন্যজনও উপকার লাভ করতে পারে। যেমন- দারিদ্রকে দান করা, অভাবী ও বিপদগ্রস্তকে সহযোগিতা করা, ইয়াতীম ও বিধবাকে সাহায্য করা, অপরের দুঃখ-কষ্ট দূর করা ইত্যাদি।

১০. লজ্জাস্থান ও জিহবার হেফাযত করা। সুতরাং সে যে কোন মূল্যে নিজ লজ্জাস্থান ও জিহবা (ভাষা)-কে হেফাযত করবে এবং দৃষ্টি অবনমিত রাখবে।

১১. স্বামীর অধিকারসমূহ প্রতিষ্ঠা করা। বস্তুত এই অধিকারসমূহ বিশেষভাবে আলোচনার দাবি রাখে। কেননা রাসূলুল্লাহ ﷺ এ ব্যাপারে খুবই গুরুত্বারোপ করেছেন। এমনকি তিনি আল্লাহ তা‘আলার হক তথা অধিকারসমূহের পর স্বামীর হককে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

১২. সাদাকায়ে জারিয়ামূলক কর্মসমূহ সম্পাদন করা। সুতরাং যেসব কাজ সাদাকায়ে জারিয়ার অন্তর্ভুক্ত সে সেগুলো পালন করার জন্য সচেষ্ট হবে। যেমন- ইলম বা জ্ঞান শিক্ষা দেয়া, কুরআন শিক্ষা দেয়া, উপদেশ দেয়া, সৎকর্মের আদেশ দেয়া, মুসাফিরখানা নির্মাণ করা, মসজিদ নির্মাণ করা, মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা, মানুষের উপকারের উদ্দেশ্যে গাছ লাগানো, রাস্তা বানিয়ে দেয়া, ইসলামী জ্ঞান সমৃদ্ধ বই-পুস্তক রচনা করা, লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা করা, সাপ্তাহিক/মাসিক/ত্রৈমাসিক/বাৎসরিক হারে ইসলামিক পত্রিকা প্রকাশের ব্যবস্থা করা, ইসলামিক বই-পুস্তক ফ্রি বিতরণ করা এবং যারা ইসলামিক কাজ করে তাদেরকে সহযোগিতা করা ইত্যাদি।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন