hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাকওয়া

লেখকঃ আমির জামান, নাজমা জামান

১০
২য় অধ্যায়: তাকওয়ার গভীরতার উপর বিশ্লেষণ তাকওয়া বিশ্লেষণ
তাকওয়ার বিশ্লেষণ আল কুরআনুল কারীমে আল্লাহ বারবার আমাদের অভয় দিয়েছেন যারা মুত্তাকী তাঁদের কোন ভয় নেই, তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বা তাঁদের প্রতি কোন অবিচার করা হবে না । এখন প্রশ্ন হচ্ছে মুত্তাকী কারা? মুত্তাকী তারা যারা তাকওয়া অবলম্বন করে তাদের জীবন গঠন ও পরিচালনা করে। এবার স্বভাবতঃই তাকওয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে মন আনচান করে। মূলতঃ তাকওয়ার প্রধানত চারটি অংশ :

১. আল্লাহ [বিষয়ক সচেতনতা (Allah Consciousness)

২. আল্লাহ ভীতি (Fear of Allah)

৩. আল্লাহর আনুগত্য (Obeying Allah)

৪. আল্লাহ প্রেম (Love for Allah)

১. আল্লাহ বিষয়ক সচেতনতা (Allah Consciousness)

প্রথম অংশটি হচ্ছে তওহীদ অর্থাৎ আল্লাহর অস্তিত্ব, অসীম ক্ষমতা ও তাঁর একক সত্ত্বা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ ও দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন যে একমাত্র তিনিই সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, রক্ষাকর্তা, শাস্তিদাতা, পুরষ্কারদাতা, জীবন-মৃত্যু দাতা এবং দুনিয়া ও আখিরাতের একমাত্র মালিক। মৃত্যুর পর তাঁর কাছেই আমাদের ফিরে যেতে হবে এবং জীবনের সমস্ত কর্মকাণ্ডের হিসাব দিতে হবে । তাঁর কোন শরীক বা অংশীদার নেই। এসবকে মনে প্রাণে বিশ্বাস এবং কর্মে বাস্তবায়ন।

করার মনোভাবকেই আল্লাহ [বিষয়ক সচেতনতা বা Allah Consciousness বলে অভিহিত করা যায়। একজন মুত্তাকী সকল অবস্থায় আল্লাহর কথা স্মরণ রাখবে, ফলে তার সকল কাজেকর্মে আল্লাহর ইচ্ছা ও আদেশ নির্দেশের প্রতিফলন ঘটবে।

২. আল্লাহ ভীতি (Fear of Allah)

দ্বিতীয় অংশটি হচ্ছে পৃথিবীর বুকে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী যে আল্লাহ তাঁকে ভয় করতে হবে, সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। আল কুরআনে আল্লাহ আমাদের বারবার সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, আমাকে ভয় কর এবং আমার আদেশ পালন কর যাতে আমার অবাধ্যতার শাস্তি থেকে রক্ষা পেতে পার, আমার রহমত থেকে বঞ্চিত না হও। এটাকে Fear of Allah বলা চলে। (এই ভয় বলতে এখানে হিংস্র প্রাণী বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা নয় বরং আল্লাহর আদেশ-নিষেধের ব্যাপারে সদাজাগ্রত থেকে তা জীবনের সর্বক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করা না হলে আল্লাহর পক্ষ থেকে যে শাস্তি অবধারিত সে শাস্তির ভয়ের কথা বলা হয়েছে।)

৩. আল্লাহর আনুগত্য (Obeying Allah)

তাকওয়ার তৃতীয় অংশটি হচ্ছে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ বিনা প্রতিবাদে, বিনা শর্তে খুশী মনে স্বীকার করে নিয়ে তা পালন করা এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। সেইসাথে পরিবারের সকল সদস্যদেরও তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদতের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা। কেননা পরিবারের সদস্যদের আনইসলামী কার্যকলাপের জন্যেও পরিবারের কর্তা এবং কীকে আল্লাহর কাছে। জবাবদিহি করতে হবে, একথাও স্মরণে রাখতে হবে। এই অংশটিকে আমরা Obeying Allah বলতে পারি।

৪. আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা বা প্রেম (Love for Allah)

তাকওয়ার চতুর্থ অংশটি হচ্ছে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা (Love for Allah) আল্লাহকে আমাদের ভালোবাসতে হবে। শুধু ভয় করলেই চলবে না।

এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, তাকওয়া বুঝাতে সাধারণতঃ আল্লাহ-ভীতি (Fear of Allah) বলে উল্লেখ করা হয়ে থাকে যা তাকওয়ার পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা নয়। কেউ কেউ আবার তাকওয়া বলতে “সাবধানতা” বোঝাতে চান। সেটাও ঠিক নয় । তাকওয়া বলতে আলোচিত চারটি অংশকেই বুঝতে হবে, এবং তা জীবনের সকল ক্ষেত্রে বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বিনা শর্তে আল্লাহর ইচ্ছার কাছে পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণ করাই হলো - Complete surrender to the wishes of Allah.

“তাকওয়া” ও আল্লাহকে ভালোবাসা

তাকওয়ার চারটি অংশ উপরে বর্ণনা করা হয়েছে, তবে চতুর্থ অংশ আল্লাহকে ভালোবাসার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টা একটু অধিক ব্যাখ্যার দাবী রাখে । ‘তাকওয়া' কথাটা সমগ্র কুরআনে বারবার উল্লেখ একজন মুমিনের জীবনে তাকওয়া যে গুরুত্বপূর্ণ সেটারই সাক্ষ্য বহন করে। এত অধিকবার তাগাদা এসেছে একমাত্র সলাতের ব্যাপারে - এক হিসাব অনুযায়ী সলাতের জন্যে সরাসরি তাগিদ এসেছে অন্ততঃ ৭৮ বার এবং ইংগিতে আরো ১৯ বার । কুরআনের সকল অনুবাদেরই (অতীতের এবং বর্তমানের) তাকওয়া কথাটার অর্থ করা হয়েছে -

(ক) আল্লাহ-ভীতি/আল্লাহকে ভয়/Fear of Allah অথবা

(খ) Allah Consciousness

অনুবাদগুলো সঠিক, কোন ভুল নেই তাতে। তবে ভয়ের পাশাপাশি আল্লাহকে ভালোবাসতে হবে একথাটা আল্লাহ একাধিকবার কুরআনে উল্লেখ করেছেন যা ভয়ের ভারী পাল্লার দাপটে দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে। এবার আয়াতগুলো দেখি –

“তথাপি মানুষের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহ ছাড়া অপরকে আল্লাহর সমকক্ষরূপে গ্রহণ করে এবং আল্লাহকে ভালোবাসার ন্যায় ভালোবাসে; কিন্তু যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসায় তারা সুদৃঢ়।” (সূরা বাকারা, ২: ১৬৫)

“বল (হে মুহাম্মাদ), তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাসো তবে আমাকে অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন। আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সূরা আলে ইমরান, ৩: ৩১)

“অতঃপর তুমি মুহাম্মাদ ! কোন সংকল্প করলে আল্লাহর উপর নির্ভর করবে; যারা আল্লাহর উপর নির্ভর করে আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন।” (সূরা আলে ইমরান, ৩: ১৫৯)।

আয়াতগুলো থেকে একথা অতি স্পষ্ট যে তাঁকে ভয় করার পাশাপাশি আল্লাহকে ভালোও বাসতে হবে, তবেই তাঁর ভালোবাসা এবং ক্ষমা আশা করা যাবে। আল্লাহকে ভালোবাসা প্রকাশ পায় হাসিমুখে, কষ্ট সহ্য করে অথবা কিছু অর্থআরাম-আয়েস বিসর্জন (sacrifice) করেও তাঁর আদেশ পালনে অবিচল থাকার মাধ্যমে। যাকে ভালোবাসি তার জন্যে তো আমরা বিনা প্রতিদানেই অথবা বিনা তাগিদেই কত রকম sacrifice করে থাকি। তেমনি দীন-দুনিয়া, জন্ম-মৃত্যু ও জান্নাত-জাহান্নামের একমাত্র মালিক আল্লাহকে তো অবশ্যই ভালোবাসতে হবে ।

এটা একটা স্বাভাবিক মানবিক আচরণ যে যাকে আমরা ভালোবাসি তার নৈকট্য আমরা কামনা করে থাকি, আর যাকে আমরা ভয় করি তার থেকে দূরে সরে থাকতে চাই। কিন্তু এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা এই যে আল্লাহ এমন এক। সত্তা যার কাছ থেকে দূরে সরে থাকার কোনই উপায় নেই, তাঁর সম্মুখীন। আমাদের হতেই হবে। সুতরাং এটাই যুক্তিসংগত যে তাঁকে ভয়ও করতে হবে, আবার তাঁর সব আদেশ-নিষেধও যথাসাধ্য মেনে চলে তাঁর প্রতি আমাদের আনুগত্য এবং ভালোবাসাও প্রদর্শন করতে হবে । কারণ আল্লাহ শুধু শাস্তিদাতাই নন, তিনি কোমল-হৃদয় (ওয়াদূদ)ও বটেন। আল কুরআনে তাকওয়ার আলোচনা কুরআনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মানুষের প্রতি তাকওয়া অর্জন ও তার সুফল সম্পর্কে বিশদ আলোচনা ও আদেশ-নির্দেশ স্থান পেয়েছে। তাকওয়া বলতে আল্লাহ-ভীতি, আল্লাহ-ভক্তি, ধার্মিকতা, সাবধানতা, সকাজে একাগ্রতা, পাপ কাজ বর্জন ইত্যাদি সবই বোঝানো হয়েছে। আল্লাহর অমর অস্তিত্ব, সর্ববিষয়ে তাঁর অসীম ও একচ্ছত্র অংশীদারবিহীন আধিপত্য, তার শাস্তির ভয়, তাঁর পুরস্কারের আশা- এগুলোর সবই তাকওয়ার আওতায় পড়ে । ইসলামের দৃষ্টিতে আল্লাহর ভয়টা হচ্ছে একটা সতর্কতা যাতে :

(১) তাঁর শাস্তি থেকে আত্মরক্ষা করা যায়।

(২) তাঁর রহমত থেকে বঞ্চিত না হতে হয়, এবং

(৩) আল্লাহর মত আপনজনকে অসন্তুষ্ট না করা হয় ।

তাকওয়াবান লোকদের (মুত্তাকীদের) অন্তরেই আল্লাহ ও তাঁর ভয় ও তার জন্যে। ভালোবাসা সর্বদা বিরাজমান থাকে।

তাকওয়ার এক অর্থ হলো আল্লাহকে ভয় করে চলা। সূরা আলে ইমরান (৩) এর ১০২ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেছেন : “হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে যথার্থভাবে ভয় কর।”

কুরআনের একটি বাংলা অনুবাদে লক্ষ্য করলাম যে সেখানে যথার্থভাবে ভয় করার অর্থ এভাবে করা হয়েছে : যথার্থ ভয় করার ব্যাখ্যায় হাদীসে আছে, আল্লাহর অনুগত হবে, অবাধ্য হবে না; আল্লাহকে স্মরণ করবে, তাকে ভুলবে না; আল্লাহর কৃতজ্ঞ হবে, অকৃতজ্ঞ হবে না ।

সূরা আনআম (৬) এর ৩২ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেছেন যে – “যারা তাকওয়া অবলম্বন করে তাদের জন্যে আখিরাতের আবাসই শ্রেয়।”

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন