hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাকওয়া

লেখকঃ আমির জামান, নাজমা জামান

৭৬
১৩শ অধ্যায় : আদর্শ প্রতিষ্ঠায় তাকওয়া তাকওয়া এক কঠিন পথ
أحب الكاس أن يروا أن يقولوا آمنا وهم لايفون

লোকেরা ভেবেছে নাকি যে, ঈমান এনেছি একথা বললেই তাদেরকে বিনা পরীক্ষায় ছেড়ে দেয়া হবে। (সূরা আনকাবুত : ২)

দুনিয়ার সুদীর্ঘ ইতিহাসে মানুষ যেসব মতবাদ-মতাদর্শ ও জীবন দর্শন পরীক্ষানিরিক্ষা করে দেখেছে অথবা যেসব আদর্শ সম্পর্কে ধারণা অর্জন করেছে এর মধ্যে কোনো একটি মতবাদ-মতাদর্শ ও জীবন দর্শন সর্বপ্রকার যুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে ইসলামী জীবন দর্শনের মতো আপোষহীন যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, এমন ধারণা যারা করে অথবা এসব জীবন দর্শনের কোনো একটিও ইসলামের ন্যায় মানবতার সাহায্য-সহযোগিতা করেছে কিংবা দুনিয়ার স্বৈরাচারী একনায়কদের বিরুদ্ধে অপর কোন জীবন বিধান চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করেছে - এমন ধারণা যারা করে তারা নিশ্চিতভাবে মারাত্মক ভ্রান্তির মধ্যে নিমজ্জিত। সুতরাং যারা নিজেদেরকে মুসলিম বলে দাবি করে, কিন্তু সর্বপ্রকারের যুলম। নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ সৃষ্টি করে না, মযলুমের সাহায্য সহযোগিতায় এগিয়ে আসে না, স্বৈরাচারী শক্তির বিরুদ্ধে সত্যের আওয়াজ তুলে- তারা নিজেদেরকে ঈমানদার ও তাকওয়াবান বলে যতোই মনে করুক না কেনো, তা প্রকৃত ঈমানদার ও তাকওয়াবানের পরিচয় না । প্রকৃতপক্ষে ইসলাম শুধুমাত্র একটি ধর্মের নাম নয়- এটি একটি বিশাল মতাদর্শ, একটি স্বাধীনতা আন্দোলন, একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান, একটি বিপ্লবী মতবাদ এক কথায় মানব রচিত মতবাদ-মতাদর্শের বিরুদ্ধে একটি আপোষহীন সংগ্রাম। ইসলাম মানুষের ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক জীবন, সমাজ জীবন, রাষ্ট্রীয় জীবন তথা আন্তর্জাতিক জীবনের প্রত্যেক দিক ও বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই পৃথিবীতে আগমন করেছে। একজন মানুষ ইসলাম কবুল করবে অথচ পরম পরাক্রমশালী আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনো শক্তির সম্মুখে সে মাথা নত করবে, নিজেকে করবে পদদলিত, অবনমিত; আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো বাধ্যানুগত হবে, এটা কিছুতেই সম্ভব নয়। ঠিক একইভাবে যার মন-মানসিকতায় ইসলামের আলো জ্বলবে কিন্তু সে যুলুমঅত্যাচার দেখে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করবে, সে যুলুম-নির্যাতন দ্বারা নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হোক বা সমগ্র বিশ্ব মানবতা, সে অন্যায় অত্যাচার তার দেশে চলুক বা দুনিয়ার অন্য কোন প্রান্তে চলুক, তা কোন প্রকৃত মুসলিম ব্যক্তির পক্ষে সহ্য করা কোনক্রমেই সম্ভব নয়। সুতরাং দুনিয়ায় হয় ইসলাম চলবে না হয় ইসলামের বিপরীত আদর্শ চলবে। ইসলাম চললে সেখানে থাকবে নিরবচ্ছিন্ন সাধনা, অবিরাম প্রচেষ্টা, সত্য-ন্যায়, স্বাধীনতা ও সাম্যের পথে শাহাদাত লাভের জন্য অদম্য আগ্রহ। আর যদি ইসলামের খোলস পরিয়ে মানুষের বানানো আদর্শ চলতে থাকে তাহলে সেখানে দেখা যাবে ফযীলতের ছড়াছড়ি, অজীফা, দু'আ-তাবীজ ও ঝাড়-ফুঁকের ব্যাপক ছড়াছড়ি। সাধারণ মানুষ তখন এক ভ্রান্ত ধারণায় নিমজ্জিত হবে যে, একদিক হঠাৎ আকাশ থেকে ন্যায় ও কল্যাণের বৃষ্টি বর্ষিত হবে; স্বাধীনতা ও ন্যায়নীতির মৃত আত্মা আপনা আপনি জেগে উঠবে । অথচ প্রকৃত ব্যাপার এই যে, আকাশ থেকে এমন ধরনের বর্ষণ আজ পর্যন্ত হয়নি কখনো, আল্লাহর নীতি অনুযায়ী ভবিষ্যতেও তা কখনো হতে পারে না, কারণ যারা নিজেরা নিজেদের সাহায্য করে না, আল্লাহর উপর আস্থা রাখে না। এবং আল্লাহ তায়ালার আদেশ অনুযায়ী কাজ করতে প্রস্তুত হয় না, আল্লাহ কখনো তাদের সাহায্য করেন না। কুরআনুল কারীমে আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:

إن الله لا يغير ما بقوم حتى يغيروا ما بأسيوة

আল্লাহ কখনো সে জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যে জাতি নিজেই নিজের অবস্থা পরিবর্তনে স্বচেষ্ট না হয়। (সূরা রা'দ : ১১)

পূর্বেই বলা হয়েছে ইসলাম একটি বিপ্লবী মতবাদ। এ মতবাদ প্রকৃত অর্থেই যদি কারো হৃদয়-মন স্পর্শ করে, তাহলে তার মন-মস্তিষ্কে বা অন্তজগতে সার্বিক বিপ্লবের সূচনা হয়। চিন্তাধারা, ধ্যান-ধারণায়, জীবনযাত্রায় ব্যক্তিগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে, পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তথা জীবনের প্রত্যেক ক্ষেত্রে বিপ্লব সাধিত হয়। এমন এক বিপ্লব সাধিত হয় যে, গতকাল যে মানুষটি ছিলো অন্যের সম্পদ আত্মসাৎকারী, এই বিপ্লব সাধিত হবার পরে সে বর্তমানে অন্যের সম্পদের পাহারাদার হিসেবে ভূমিকা পালন করে। মানুষের কোন পার্থক্য সে করে না, যদি পার্থক্য করেও তাহলে পার্থক্য করবে শুধুমাত্র আল্লাহভীতির ভিত্তিতে। কারণ যে ইসলামী আদর্শ সে গ্রহণ করেছে, সেই আদর্শই তাকে শিখিয়েছে, ঐ ব্যক্তিই সব থেকে বেশী সম্মান-মর্যাদার অধিকারী, যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালাকে সর্বাধিক ভয় করে । ইসলামী বিপ্লব এমনই এক বিপ্লব যে- যার ভিত্তি রচিত হয়েছে মানুষের মর্যাদার উপর আর তা এমন মর্যাদা তাকে দুনিয়ার সব কিছুর বিনিময়েও বিসর্জন দেয়া যায় না। এই বিপ্লবের ভিত্তি ন্যায়-নীতির উপর স্থাপিত, আর তা এমন ন্যায়নীতি যা কারো স্বৈরাচারী নীতিকে সহ্য করতে পারে না- পারে না কারো উপর কোনো নির্যাতন সহ্য করতে। এ বিপ্লবী সিস্টেম মানুষের মন-মানসিকতায় ও চিন্তার জগতে প্রবেশ করার সাথে সাথেই তাকে কার্যত প্রয়োগ করার জন্য সে কর্মচঞ্চল হয়ে উঠে। মহান আল্লাহর অবতীর্ণ করা এ মতবাদ অনুযায়ী একটি নতুন বিশ্ব প্রতিষ্ঠার আগে সে কিছুতেই শান্ত হতে পারে না এবং নিজের তৎপরতা থেকে নীরব-নিস্তব্ধ ও বিরত হবে না। ইসলাম একটা বিপ্লবী মতবাদ একথার তাৎপর্য এখানেই। অতএব যারা প্রকৃত অর্থে আল্লাহর উপর সত্যিকারের ঈমান রাখে একমাত্র তারাই আল্লাহর পথে প্রচেষ্টার হক আদায় করতে পারে। তারাই আল্লাহর কালিমাকে প্রতিষ্ঠার করার জন্য প্রাণপণে চেষ্টা করতে পারে । চারদিকে যুলুম-নির্যাতনের জয়-জয়কার দেখেও হাত-পা সঞ্চালনের শক্তিসামর্থ্যের অধিকারী হয়েও যারা হাত-পা গুটিয়ে রেখেছে- যুলুমের বিরুদ্ধে ‘টু’ শব্দ পর্যন্ত উচ্চারণ করে না, প্রকৃতপক্ষে তাদের মুখে দাড়ি, গায়ে লম্বা জামা আর মাথায় পাগড়ী দেখা গেলেও এদের মন-মানসিকতা ইসলামের প্রকৃত তাৎপর্য উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছে। এদের অন্তরে ইসলামের মূল ভিত্তিসহ প্রবেশ করতে পারেনি। কারণ এদের অন্তরে যদি ইসলাম প্রবেশ করতো তাহলে।

ইসলামের বিদ্যুৎ স্পর্শে এরা এক একজন বিপ্লবী মুজাহিদে পরিণত হত। হক ও বাতিলের সংগ্রামে শাহাদাতের অদম্য আগ্রহে ঝাপিয়ে পড়তো।

সঙ্কীর্ণ জাতীয়তাবাদ তথা জাতি পুজার মোহ যদি আমাদেরকে যালিম এবং সাম্রাজ্যবাদের সাথে লড়তে উদ্বুদ্ধ করতে পারে, সমাজতন্ত্রের ফানুস যদি আমাদের জায়গীরদারী এবং পুঁজিবাদী অর্থনীতির সাথে লড়তে বাধ্য করতে পারে, ব্যক্তি স্বাধীনতার চেতনা যদি আমাদেরকে যালিম-নিষ্ঠুর শাসকদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে অনুপ্রাণিত করতে পারে, তাহলে ইনসাফ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কুরআনের বাস্তবায়নের জন্য কেনো আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম করবো না!

এ কথা স্মরণ রাখা দরকার যে, সাম্রাজ্যবাদ, পুঁজিবাদ, সামন্তবাদ, একনায়কত্ব ও সঙ্কীর্ণ জাতীয়তাবাদ এ সবকিছুই ইসলামের দৃষ্টিতে বিষ ফোড়ার মতো। এসব বিষ ফোড়া সমাজ, দেশ ও জাতির দেহ থেকে উৎখাত করার আপোষহীন সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ার জন্য ইসলাম আমাদের প্রতি জানিয়েছে উদাত্ত আহবান। শুধু মুসলিম হলাম; এ শক্তিই আমাকে সমাজের সকল প্রকার যুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদমুখর করে তুলবে । কিন্তু যদি আমি এসবের বিরুদ্ধে লড়াই না করি, তবে আমার অন্তরকে যাচাই করে দেখা উচিত যে - ঈমান সম্পর্কে কোন প্রতারণায় পড়িনি তো! তা না হলে সামাজিক যুলুমের বিরুদ্ধে লড়তে ভয় কিসের?

মানবরচিত জীবন ব্যবস্থার অনুসারীরা অগ্রসর হয় আপন শক্তির উপর নির্ভর করে; কিন্তু ইসলাম প্রতিষ্ঠার মু'মিনগণ অগ্রসর হয় মহাশক্তিধর আল্লাহ তায়ালার উপর ভরসা করে। তাই আল্লাহ্পাক কুরআনুল কারীমে বলেছেনঃ

إن الله اشتری من المؤمنين أتفتفة وأمالة بأن لفة التي يقاتلون في

سبيل اللي فيقتلون ويقتلون

“নিশ্চয়ই আল্লাহ তা'য়ালা মু'মিনের কাছ থেকে তাদের হৃদয়-মন এবং তাদের ধন-সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে ক্রয় করে নিয়েছেন। তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে মারে এবং মরে। তাদের প্রতি জান্নাত দানের যথার্থ ওয়াদা করা হয়েছে।” (সূরা তওবা : ১১১)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন