hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাকওয়া

লেখকঃ আমির জামান, নাজমা জামান

৫০
আয়-রোজগারের ক্ষেত্রে তাকওয়া
ইবাদত কবুলের পূর্ব শর্ত হালাল ইনকাম প্রত্যেক মুসলিম নরনারীর হালাল রুজির সন্ধান করা অবশ্য কর্তব্য। কেননা হালাল সম্পদ বা খাদ্যই হলো ইবাদত কবুলের শর্তসমূহের মধ্যে অন্যতম প্রধান শর্ত। হালাল উপায়ে অর্জিত ও শরীয়ত অনুমোদিত অর্থ-সম্পদ বা খাদ্যগ্রহণ ছাড়া আল্লাহর দরবারে কোন ইবাদতই কবুল হয় না।

জীবিকা নির্বাহের জন্য উপার্জনের গুরুত্ব ইসলামে যেমনি রয়েছে, ঠিক তেমনি হালাল উপার্জনের গুরুত্বও অত্যাধিক। ইসলাম অর্থসম্পদ উপার্জনের ক্ষেত্রে হালাল-হারামের পার্থক্য সুনির্দিষ্ট করে দিয়েছে। সমাজ রাষ্ট্র ও ব্যক্তির জন্য কল্যাণকর যাবতীয় ব্যবস্থাকে ইসলাম হালাল করেছে। এক. হালাল উপার্জন একটি অলঙ্ঘনীয় বিধান ইসলাম মানুষের জন্য হালাল ও হারামের মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য নিরূপন করেই শেষ করেনি, বরং হালাল উপার্জনে রয়েছে এর সুস্পষ্ট নির্দেশনা। ফরয ইবাদত সমূহের আদায়ের পর এ মহতি কর্মে ঝাপিয়ে পরতে উৎসাহিত করা হয়েছে। উপার্জনের ক্ষেত্রে হালাল ও বৈধ উপায় অবলম্বন করা ব্যবসায়ীসহ সকল মানুষের উপর ইসলামের একটি অলঙ্ঘনীয় বিধান। যারা উপার্জনের ক্ষেত্রে হালাল ও হারামের প্রশ্নে সতর্কতা অবলম্বন করে না তাদের ব্যপারে রসূলুল্লাহ (ﷺ) সতর্কবাণী করেছেন। তিনি বলেন : মানুষের নিকট এমন একটি সময় আসবে, যখন ব্যক্তি কোন উৎস থেকে সম্পদ আহরন করছে, তা হালাল না হারাম, সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ করবে না। (সহীহ বুখারী) দুই. হালাল উপার্জন দু'আ কবুলের পুর্বশর্ত মানুষের প্রাত্যহিক ও জাগতিক জীবনের চাহিদার কোন অন্ত নেই। তবে এগুলো মানুষের কাঙ্খিত হলেও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে মহান স্রষ্ট্রার অনুগ্রহের, ভূমিকাই সবচেয়ে বেশী। আর এর জন্য প্রয়োজন একান্তে তাঁর দরবারে আরাধনা করা । মহান আল্লাহও মানুষকে এ ব্যাপারে সাড়া দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, এটি অন্যতম ইবাদতও বটে। রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ “দু’আ হচ্ছে। ইবাদত” (আবু দাউদ)। অতএব দু’আ ইসলামে অন্যতম একটি ইবাদতে পরিণত হয়েছে, যার মাধ্যমে বান্দার সাথে আল্লাহর গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং যাবতীয় প্রয়োজন পূরণে সহায়ক হয়। এ গুরুত্বপূর্ণ কর্মটি আল্লাহর দরবারে গৃহীত হতে হলে উপার্জন। অবশ্যই হালাল হতে হবে । কেননা আল্লাহ পবিত্র । তিনি পবিত্র ছাড়া কোন কিছুই গ্রহণ করেন না, অতএব অবৈধ উপার্জন যারা করে তাদের খাদ্যের উপার্জন অবৈধ অর্থে হওয়ায় তার যাবতীয় রক্ত মাংস সবই হারাম দ্বারা পুষ্ট হয়। ফলে এ ধরনের ব্যক্তির প্রার্থনাকে ইসলামে কখনো সমর্থন করেনা। এ মর্মে রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন :

নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা পবিত্র । তিনি শুধু পবিত্র বস্তুই গ্রহণ করেন। তিনি মু'মিনদের সেই আদেশই দিয়েছেন, যে আদেশ তিনি দিয়েছিলেন রসূলদিগকে। আল্লাহ তা'আলা বলেন : “হে ইমানদারগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু-সামগ্রী আহার কর, যেগুলো আমি তোমাদেরকে রুযী হিসেবে দান করেছি।” অতঃপর রসূলুল্লাহ (ﷺ) এমন এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দীর্ঘ সফরে থাকা অবস্থায় এলোমেলো চুল ও ধূলি-ধূসরিত ক্লান্ত-শ্রান্ত বদনে আকাশের দিকে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে প্রার্থনা করে ডাকছে : হে আমার প্রভূ! হে আমার প্রভূ! অথচ সে যা খায় তা হারাম, যা পান করে তা হারাম, যা পরিধান করে তা হারাম এবং হারামের দ্বারা সে পুষ্টি অর্জন করে। তার প্রার্থনা কিভাবে কবুল। হবে?” (সহীহ মুসলিম) তিন. হালাল উপার্জনে বরকত লাভ হয় উপার্জনে বরকত লাভ করতে হলে একমাত্র হালাল পন্থায় হতে হবে। কেননা বরকত দানের মালিক মহান আল্লাহ। তিনি শুধু বৈধ উপার্জনেকেই বরকত মন্ডিত করেন এবং যাবতীয় অবৈধ উপার্জনের বরকত নষ্ট করে দেন। আর সেখানে অপচয় বৃদ্ধি পায় ফলে সম্পদের প্রাচুর্যতা লাভে বিলম্ব হয়। অন্যদিকে হালাল উপার্জন কম হলেও তাতে বরকতের কারণে খুব স্বল্প সময়েই বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। চার. হালাল উপার্জন জান্নাত লাভের একমাত্র উপায় মানুষের দু’টি জীবন রয়েছে, একটি ইহলৌকিক, অপরটি পরলৌকিক। অতএব হালাল পন্থায় উপার্জনকারী পরকালে জান্নাতে যাবে। আর অবৈধ পন্থায় উপার্জনকারী ব্যক্তি দুনিয়ার জীবনে সম্পদের পাহাড় গড়লেও পরকালীন জীবনে তার জন্য ভয়াবহ আযাব ও শাস্তি অপেক্ষা করছে। পাঁচ. অবৈধ উপায়ে সম্পদ উপার্জনকারীর জন্য জাহান্নাম অবধারিত ইবন আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহু বর্ণিত হাদীসে রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ “আর যে দেহ হারাম খাদ্য দ্বারা গড়ে উঠে তার জন্য দোযখের আগুনই উত্তম।” কাব ইবন উজরাহ রাদিআল্লাহু আনহু রসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন : “যে শরীর হারাম পেয়ে হ্রষ্ট পুষ্ট হয়েছে, তা জান্নাতে যাবে না।”

ইবনে মাসউদ রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহর নির্ধারিত রিযিক পূর্ণ মাত্রায় লাভ না করা পর্যন্ত কোন লোকই মারা যাবে না। সাবধান! আল্লাহকে ভয় কর এবং বৈধ পন্থায় আয় উপার্জনের চেষ্টা কর। রিযিক প্রাপ্তিতে বিলম্ব যেন তোমাদেরকে অবৈধ পন্থা অবলম্বনে প্ররোচিত করে। কেননা আল্লাহর কাছে যা কিছু রয়েছে তা কেবল আনুগত্যের মাধ্যমে লাভ করা যায় । (সূনান ইবনে মাজাহ)। দুনিয়ার জীবনের কৃতকর্মের উপর ভিত্তি করে মহান আল্লাহ মানুষের জন্য পুরস্কার ও শাস্তি উভয়ের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। যারা তাঁর অনুগত বান্দা তারাই পুরস্কার প্রাপ্ত হবে। যেহেতু অবৈধ উপায়ে উপার্জনকারী ব্যক্তি তার অবাধ্য ও শত্র তাই তাদের জন্যও শাস্তি নির্ধারিত রয়েছে। অতএব এ পন্থা অবলম্বনকারী ব্যক্তি জাহান্নামী। ছয়. হালাল উপার্জন ইবাদত কবুলের পুর্বশর্ত অর্থ-সম্পদ দ্বারাই মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে, খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করে তার দেহের বৃদ্ধি ঘটে এবং সুস্বাস্থ্য লাভ হয়। কিন্তু এ উপকরণ ক্রয়ের অর্থ যদি অবৈধ উপায়ে উপার্জিত হয় তবে তা কিভাবে বৈধ শারিরিক বৃদ্ধি হতে পারে! ফলে তার শরীরের রক্তে ও মাংসে অবৈধ বিষয়ের সংমিশ্রন ঘটে। আর এর দ্বারা যত। ইবাদতই করা হোক না তা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। কেননা আল্লাহ অপবিত্র কোন কিছুই গ্রহণ করে না। অতএব হালাল উপার্জন ইবাদত কবুলের পূর্ব শর্ত। সলাত, যাকাত ও হাজ্জ ইত্যাদি ফরয ইবাদতসমূহ কবুল হওয়ার জন্য অবশ্যই বৈধ পন্থায় উপার্জন করতে হবে। খুলাফায়ে রাশেদীন ও সাহাবায়ে কিরাম। ছিলেন হালাল উপার্জনের অন্বেষক তাঁরা যাবতীয় লেনদেন হালাল পন্থা অবলম্বন করতেন। হারামের ভয়াবহতা সম্পর্কে তারা খুবই সচেতন ছিলেন। আবু বকর রাদিআল্লাহু আনহু এর একটি ঘটনা থেকে তাঁর হারাম বর্জন প্রবণতা ও হালালের বিষয়ে কঠোরতা সহজেই অনুমেয়।

বর্ণিত আছে যে, আবু বকর রাদিআল্লাহু আনহু এর এক দাস ছিল সে তাঁর সঙ্গে কিছু অর্থের বিনিময়ে মুক্তির চুক্তি পত্র করে। অতঃপর সে যখন প্রতিদিন মুক্তিপনের কিছু অর্থ নিয়ে আসতো, তখন আবু বকর রাদিআল্লাহু আনহু তাকে জিজ্ঞাসা করতেন, এ অর্থ কিভাবে সংগ্রহ করেছো? যদি সে সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারতো, তবেই তিনি তা গ্রহণ ও ব্যবহার করতেন। অন্যথায় ব্যবহার করতেন না। এক রাতে সে আবু বকর রাদিআল্লাহু আনহু এর জন্য কিছু খাবার নিয়ে এলো। সেদিন তিনি সিয়াম পালন করেছিলেন। তাই সেই খাবার সম্পর্কে প্রশ্ন করতে ভুলে যান এবং তা থেকে এক লোকমা খেয়ে ফেলেন। অতঃপর মনে হওয়া মাত্র তাকে জিজ্ঞেস করলেন, এ খাবার তুমি কিভাবে অর্জন করেছ? সে বললো : জাহিলিয়াতের আমলে আমি মানুষের ভাগ্য গণনা করতাম। আমি ভাল গণক ছিলাম না। তাই মানুষকে শুধু ধোঁকা দিতাম। এই খাবার সেই ধোঁকার মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ দিয়ে সংগৃহীত। আবু বকর (রা.) বললেন : সর্বনাশ তুমি আমায় একি করেছ! অতঃপর তিনি গলায় আংগুল দিয়ে বমি করার চেষ্টা করেন, কিন্তু সে খাবারের কিছুই বের হয়নি। অতঃপর তিনি পানি পান করে ইচ্ছাকত বমির মাধ্যমে পেটের সব খাবার বের করে দিলেন। তিনি আরো বললেন : উক্ত খাবার বের করতে গিয়ে আমার মৃত্যুর ঝুঁকি থাকত তাহলেও তা বের করে ছাড়তাম। কেননা রসূল (ﷺ) বলেছেন : “যে শরীর হারাম খাদ্য দিয়ে স্বাস্থ্য লাভ করে, তার জন্য জাহান্নাম উপযুক্ত স্থান। তাই আমি ভয় পেয়ে যাই, যে এক লোকমা হারাম খাবার দিয়ে আমার শরীর কিভাবে মোটা-তাজা হতে পারে।”

পরহেজগারী “পরহেজ ফার্সি শব্দ যার অর্থ সকল গুনাহের কাজ বর্জন করা। সমাজে আমরা অনেকে পরহেজগার (দ্বীনদার) বলে পরিচিত, অনেকে সলাত আদায় করতে করতে কপালে দাগ ফেলে দিয়েছি, কেউ কেউ পরহেজগারীকে পাঁচ ওয়াক্ত সলাত, আর কয়েকবার হাজ্জের মধ্যে সীমিত করে ফেলেছি। অনেকে চিল্লা দিতে দিতে অনেক বড় বুজুর্গ বনে গেছি। অনেকে সারা রাত জেগে তাহাজ্জুদ সলাত পড়তে পড়তে দুই চোখ ফুলিয়ে ফেলেছি। অনেকে মোরাকাবা আর যিকর করতে করতে আল্লাহর ওলি হয়ে গেছি বলে মনে করছি। অনেকে ইসলামী আন্দোলন করতে করতে অনেক বড় মাপের নেতা বা নেত্রী হয়ে গেছি। আবার অনেকে উচ্চমাত্রার পর্দা করেও চলছি।

অথচ আল্লাহর ফরয হুকুম হালাল রুজীর বেলায় আমরা উদাসীন, তখন আমরা এই সিম্পল ব্যাপারটা আর বুঝি না। অন্যকে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে বেড়াচ্ছি। কিন্তু অবৈধ রুজীর সাথে হারামের আশ্রয় নিচ্ছি নানা কায়দায়। এটা ইবাদতের ক্ষেত্রে নিছক আত্মপ্রতারণা। আসুন একটি বার ভেবে দেখি ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন