hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাকওয়া

লেখকঃ আমির জামান, নাজমা জামান

৭৯
অগ্নি পরীক্ষায় নিখাদ (নির্ভেজাল) প্রমাণিত হওয়া
মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন এই আওয়ায় উচ্চারণ করেছিলেন, তখনো ঠিক এই একই অবস্থা ও পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছিল। ঘোষক জেনে বুঝেই ঘোষণা দিচ্ছিলেন। শ্রোতারাও বুঝতে পারছিল কি কথার ঘোষণা দেয়া হচ্ছে? তাই এ ঘোষণার যে দিকটি যাকে আঘাত করেছে, সেই উদ্যত হয়ে উঠছে একে নিভিয়ে দেবার জন্যে। পোপ ও ঠাকুররা দেখলো এ আওয়ায তাদের পৌরহিত্যের জন্য। বিপজ্জনক। জমিদার মহাজনরা তাদের অর্থ সম্পদের, অবৈধ উপার্জনকারীরা অবৈধ উপার্জনের, গোষ্ঠী পূজারীরা গোষ্ঠীগত শ্রেষ্ঠত্বের, জাতি পূজারীরা পূর্বপুরুষদের থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত পথ ও মতের। মোটকথা এ আওয়ায শুনে সব ধরনের মূর্তি পূজারীরা নিজ নিজ মূর্তি বিচূর্ণ হবার ভয়ে আতংকিত হয়ে উঠল। তাই এতোদিন পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধোমত্ত থাকা সত্ত্বেও, এখন সকল কুফরী শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেলো। “আল কুফর মিল্লাতুন ওয়াহিদা এই নীতি কথাটি তারা বাস্তবে রূপ দিলো। এক নতুন আন্দোলনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্যে তারা সমবেত হয়ে গেলো এক প্লাটফরমে। গঠন করলো ঐক্যজোট। এই কঠিন অবস্থাতে মুহাম্মাদ (ﷺ) -এর সাথী কেবল তারাই হলো, যাদের ধ্যান ধারণা ও মনমগজ ছিলো পরিষ্কার পরিশুদ্ধ । যাদের মধ্যে যোগ্যতা ছিলো সত্যকে বুঝার এবং গ্রহণ করার। যাদের মধ্যে সত্যপ্রিয়তা ছিলো এতোটা প্রবল যে, সত্য উপলব্ধির পর সে জন্যে অগ্নিকুণ্ডে ঝাপ দেবার এবং মৃত্যুকে আলিংগন করার জন্যে ছিলো তারা সদা প্রস্তুত। এই মহান আন্দোলনের জন্যে এই ধরনের লোকদেরই ছিলো প্রয়োজন। এ ধরনের লোকেরা দু'একজন করে আন্দোলনে আসতে থাকে। সাথে সাথে বৃদ্ধি পেতে থাকে সংঘাত। অতঃপর কারো রুজি রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে যায় । কাউকে ঘর থেকে বের করে দেয়া হয়। কেউ আপনজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কারো ছুটে যায় বন্ধু, কারো হিতাকাংখী। কারো উপরে আসে মারধর। কাউকেও করা হয় জিঞ্জীরাবদ্ধ। কাউকে পাথর চাপা দিয়ে শুইয়ে রাখা হয় তপ্ত বালুকার উপর। কাউকেও জর্জরিত করা হয় গালি দিয়ে, কাউকেও বা পাথর দিয়ে । উৎপাটিত করা হয় কারো চোখ । বিচুর্ণ করা হয় কারো শির। নারী, সম্পদ, ক্ষমতা, নেতৃত্ব এবং সকল প্রকার লোভনীয় জিনিস দিয়ে খরিদ করার চেষ্টাও করা হয় কাউকে । এই সকল অগ্নিপরীক্ষা ইসলাম প্রতিষ্ঠার সময় এসেছিল । আসা জরুরী ছিলো। এগুলো ছাড়া ইসলামিক মুভমেন্ট না মজবুত হতে পারতো, আর না পারতো ক্রমবিকাশ ও প্রসার লাভ করতে। এসব অগ্নিপরীক্ষা ইসলামিক মুভমেন্টের জন্যে ছিলো খুবই সহায়ক। এসব অগ্নিপরীক্ষার প্রথম সুবিধা এই ছিলো যে, এর ফলে ভীরু কাপুরুষ, হীন চরিত্র ও দুর্বল সংকল্পের লোকেরা এ মুভমেন্টের কাছেই ঘেঁষতে পারেনি। তাই সমাজের মণিমুক্তগুলোই কেবল এসে শরীক হলো মুভমেন্টে। আর এ মহান মুভমেন্টের জন্যে প্রয়োজন ছিলো এদেরই। তাই যিনিই এ মুভমেন্টে শরীক। হলেন, কঠিন অগ্নিপরীক্ষার মধ্য দিয়েই তাকে শরীক হতে হয়েছে। বস্তুত এক মহান বিপ্লবী মুভমেন্টের উপযোগী শ্রেষ্ঠ লোকদের বাছাইর জন্যে এর চাইতে উত্তম আর কোনো পন্থা হতে পারে না।

এই অগ্নি পরীক্ষার দ্বিতীয় সুবিধা হলো, এরকম কঠিন অবস্থার মধ্যে যারা মুভমেন্টে শরীক হয়েছে, তাঁরা কোনো প্রকার ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা জাতীয় স্বার্থে হয়, বরঞ্চ কেবলমাত্র সত্যপ্রিয়তা এবং আল্লাহ ও তাঁর সন্তুষ্টির জন্যেই এই ভয়াবহ বিপদ মুসীবত ও দুঃখ লাঞ্ছনার মোকাবেলা করেছেন। এরই জন্যে তাঁদের সইতে হয়েছে শত অত্যাচার নির্যাতন। এরই জন্যে হতে হয়েছে আহত-প্রহৃত। এরই জন্যে তাদের পড়তে হয়েছে কায়েমী স্বার্থবাদীদের হিংস্র কোপানলে । কিন্তু এর ফল হয়েছে শুভ। এর ফলে তাদের মধ্যে সৃষ্টি হতে থাকে ইসলামিক মুভমেন্টের উপযোগী মন মানসিকতা। সৃষ্টি হতে থাকে খাটি ইসলামী চরিত্র। আল্লাহর ইবাদতে সৃষ্টি ও বৃদ্ধি হতে থাকে পরম আন্তরিকতা আর নিষ্ঠা। আসলে বিপদে মুসীবতের এই মহা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ইসলামী চরিত্র ও ভাবধারা সৃষ্টি হওয়া ছিলো এক স্বাভাবিক ব্যাপার। কোনো ব্যক্তি যখন একটি লক্ষ্য অর্জনের জন্যে প্রবল উদ্যমে যাত্রা শুরু করে, আর তার সেই লক্ষ্য পথে যদি তাকে সম্মুখীন হতে হয় প্রাণান্তকর সংগ্রাম, চরম দ্বন্দ্ব সংঘাত, অবর্ণনীয় বিপদ মুসীবত, দুঃখ কষ্ট, সীমাহীন হয়রানী, যাতনাকর আঘাত, অমানবিক কারা নির্যাতন, বিরামহীন ক্ষুধা আর দুঃসহনীয় নির্বাসনের, তবে এই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ফলে তার সেই মহান লক্ষ্য ও আদর্শের সমস্ত বৈশিষ্ট্য প্রবলভাবে রেখাপাত করে তার হৃদয়-মনে। তার মন মগজ, শিরা উপশিরায় প্রবাহিত হতে থাকে তার সেই মহান লক্ষ্যেরই ফরুধারা। তার গোটা ব্যক্তি সত্তাই তখন তার জীবনোদ্দেশ্যের রূপ পরিগ্রহ করে । লক্ষ্য অর্জনের পরিপূর্ণতা সাধনের এ সময়টিতে তাদের উপর ফরয করা হয়। সলাত । এর ফলে, দূর হয়ে যায় তাদের দৃষ্টির সকল সংকীর্ণতা। গোটা দৃষ্টি ও চিন্তাশক্তি এসে নিবদ্ধ হয় আপন লক্ষ্যের উপর। যাকে তারা একচ্ছত্র সার্বভৌম শাসক বলে স্বীকার করে নিয়েছে, বার বার স্বীকৃতির মাধ্যমে তাদের ধ্যান ধারণা ও মন-মস্তিষ্কে বদ্ধমূল হয়ে যায় তাঁর প্রভুত্ব আর সার্বভৌমত্ব। যাঁর হুকুম ও নির্দেশনার ভিত্তিতে এগিয়ে দিতে হবে জীবন ও জগতের সকল কাজ, তিনি যে প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য সবকিছুই অবহিত। তিনি যে বিচার দিনের সম্রাট। তিনি যে সকল বান্দাহর উপর দুর্দণ্ড প্রতাপশালী-এই কথাগুলো বদ্ধমূল হয়ে যায় তাদের মন ও মস্তিষ্কে। কোনো অবস্থাতেই তাঁর আনুগত্য ছাড়া অপর কারো আনুগত্যের বিন্দুমাত্র চিন্তাও তাদের অন্তরে প্রবেশের পথ রুদ্ধ হয়ে যায় সম্পূর্ণরূপে।

এই অগ্নি পরীক্ষা ও চরম সংঘাতের তৃতীয় সুফল এই ছিলো যে, এর ফলে একদিকে এই বিপ্লবী কাফেলায় যারা শরীক হচ্ছিল, বাস্তব ময়দানে তাদের হতে। থাকে যথার্থ প্রশিক্ষণ। অপরদিকে দিনের পর দিন প্রসারিত সম্প্রসারিত হতে থাকে ইসলামিক মুভমেন্ট । মানুষ যখন দেখতে থাকলো, কিছু লোক দিনের পর দিন মার খাচ্ছে। নির্যাতিত হচ্ছে। তখন স্বাভাবিকভাবেই এর আসল কারণ। জানার প্রবল আগ্রহ সৃষ্টি হতে থাকে তাদের মনে। এই লোকগুলোকে নিয়ে কেন এতো হৈ হট্টগোল?-এই প্রশ্নের জবাব পেতে উৎসুক হয়ে উঠে তাদের মন। অতঃপর তাদের অনুসন্ধানী দৃষ্টি যখন জানতে পারতো, আল্লাহর এই বান্দাগুলো কোনো নারী, সম্পদ, প্রতিপত্তি বা কোনো প্রকার ব্যক্তিগত স্বার্থে নয়, বরং এক মহাসত্য তাদের কাছে উন্মুক্ত হয়েছে এবং তারা তা একনিষ্ঠভাবে আঁকড়ে ধরে আছে বিধায় এভাবে তাদের অত্যাচার করা হচ্ছে, তখন স্বতই সেই মহাসত্যকে জানার জন্যে তাদের মন হয়ে উঠতো ব্যাকুল । অতঃপর যখন লোকেরা জানতে পারতো, সেই মহাসত্য হচ্ছে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, আর এ জিনিসই মানব জীবনে এমন ধরনের বিপ্লব সৃষ্টি করে, এরই দাওয়াত নিয়ে এমনসব লোকেরা উত্থিত হয়েছে, যারা কেবল এই সত্যেরই জন্যে দুনিয়ার সমস্ত স্বার্থকে ভূলুষ্ঠিত করছে। নিজেদের ধন-সম্পদ, সন্তান, সন্তুতিসহ প্রতিটি জিনিস অকাতরে কুরবানী করছে, তখন তারা বিস্ময়ে অবিভূত হয়ে যেতো। খুলে যেতো তাদের চোখ । ফেটে যেতো তাদের মন মগজকে আচ্ছন্ন করে রাখা পর্দা। আর এই মহাসত্য তাদের হৃদয়ের মধ্যে বিদ্ধ হতো তীরের তীব্র ফলকের মতো। এরি ফলে সব মানুষ এসে শামিল হয়েছে এই মুভমেন্টে। অবশ্য শেষ পর্যন্ত কেবল সেই গুটি কয়েক লোকই এ মুভমেন্টে শরীক হতে পারেনি, যাদেরকে আভিজাত্যের অহংকার, পূর্ব পুরুষদের অন্ধ অনুকরণ আর পার্থিব স্বার্থ সম্পূর্ণরূপে মোহাচ্ছন্ন করে রেখেছিল। এছাড়া সে সমাজের প্রতিটি নিঃস্বার্থ ও সত্যপ্রিয় লোককেই, কেউ আগে কেউ পরে, শেষ পর্যন্ত এ মুভমেন্টে এসে শরীক হতে হয়েছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন