মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আমাদের অনেকের মধ্যেই একটা ভুল ধারণা বিদ্যমান যে যারা মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল বা শিক্ষক, খানকা বা মাজারের খাদেম, পীর সাহেব, যারা লম্বা জুব্বা পরেন, যাদের লম্বা দাড়ি আছে, যারা লম্বা পাগড়ী পরেন, যারা কালো বোরকা পরেন, যারা নিকাব করেন প্রমুখ ব্যক্তিগণই তাকওয়াবান এবং তাকওয়ার বিষয়টি শুধু তাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আর যারা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, প্রফেসর, ইঞ্জিনিয়র, ডাক্তার, পাইলট, ব্যাংক ম্যানেজার, উকিল, ব্যারিষ্টার, আর্মি অফিসার, থানার ওসি, ড্রাইভার, রিক্সাওয়ালা, বাদাম ওয়ালা, কষক, কন্ট্রাকটর, রাজনীতিবিদ, চেয়ারম্যান, এমপি, মিনিষ্টার, দেশের প্রসিড্যান্ট ইত্যাদি প্রফেশনের লোকদের জন্যে তাকওয়া নয়। আসলে তাকওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে ইলম এবং আমলের উপর । ইসলামের পরিভাষায় পরিষ্কার ভাবে বলা যায়, যার ভেতর দ্বীন ইসলামের জ্ঞান আছে এবং সেই অনুযায়ী যিনি আমল করেন তিনিই তাকওয়াবান। এখন একজন ইঞ্জিনিয়র বা একজন ডাক্তার বা একজন পাইলট বা একজন ব্যাংক ম্যানেজার বা একজন ইউনিভার্সিটির প্রফেসর বা একজন ব্যারিষ্টার বা একজন এমপি বা একজন মিনিষ্টার বা একজন থানার ওসি বা একজন বাস ড্রাইভারের মধ্যেও দ্বীন ইসলামের সঠিক জ্ঞান থাকতে পারে এবং সেই জ্ঞান অনুযায়ী যদি সে ব্যক্তিগত জীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন ও রাষ্ট্রীয় জীবন পরিচালনা করে থাকেন তাহলেই বাস্তবে তার তাকওয়ার প্রমাণ মিলবে। এখন একটু বিশ্লেষণে আসি । কুরআন নাজিলের উদ্দেশ্য কী? কুরআন-হাদীসের মধ্যে আছেটা কী? আমরা জানি কুরআনের মূল আলোচ্য বিষয় হচ্ছে মানুষ। উদাহরণস্বরূপ এই পৃথিবীতে যতো জিনিস তৈরী হচ্ছে, যেমন, রেডিও, টেলিভিশন, কম্পিউটার, ফ্রিজ, গাড়ি, প্লেন, ট্রেন, সেলফোন ইত্যাদি বাজারজাত করার সময় কোম্পানী পণ্যের সাথে একটা করে অপারেটিং ম্যানিউয়ালও দিয়ে দেয় । ঠিক তেমনি, আল্লাহ যখন মানুষকে তৈরী করে এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। তখনও একটা ম্যানিউয়্যাল সাথে দিয়ে দিয়েছেন, যার ভেতরে আছে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবন কিভাবে পরিচালনা করব এসব নিয়মাবলীর সেই ম্যানিউয়্যাল হচ্ছে আল কুরআন। এরপর মহান আল্লাহ এতই দয়ালু যে তিনি শুধু ম্যানিউয়াল পাঠিয়েই ক্ষান্ত হননি, তিনি আবার সাথে একজন ট্রেইনারও পাঠিয়েছেন যিনি ঐ ম্যানিউয়্যালটা তার বাস্তব জীবনে বাস্তবায়ন করে আমাদেরকে দেখিয়ে দিয়ে গেছেন, আর সেই ট্রেনার হচ্ছেন মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (ﷺ) । রসূল (ﷺ) পারিবারিক জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্র পরিচালনা পর্যন্ত সবকিছুই নিজে করে দেখিয়ে দিয়ে গেছেন। এই আল-কুরআন হচ্ছে মানব জাতীর সকল সমস্যার সমাধান। যেমন : ব্যক্তিগত জীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন, অর্থনীতি, পৌরনীতি, রাষ্ট্রনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, যুদ্ধনীতি, শিক্ষানীতি, চিকিৎসানীতি, ধর্মনীতি, আইননীতি, বিজ্ঞান ইত্যাদি। এককথায়, There is no Deen without Dunya, অর্থাৎ দ্বীন ইসলাম এসেছেই দুনিয়াকে চালানোর জন্য। আর আমাদের সামাজিক জীবন হচ্ছে social engineering, আর এই social engineering হচ্ছে Islamic science এর একটা অংশ। একটা সাধারণ common-sense হচ্ছে যারা বাস্তব জীবনের সাথে জড়িত। যেমন : ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, পাইলট, ব্যাংক ম্যানেজার, ব্যারিষ্টার, এমপি, মিনিষ্টার, থানার ওসি, ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ইত্যাদি বিভিন্ন পেশার লোকেরা যদি কুরআন ও সহীহ হাদীসের উপর পড়াশোনা করে তাকওয়ার উপর ভিত্তি করে এই সমাজ এবং দেশকে পরিচালনা করেন তাহলেই কুরআনের সঠিক বাস্তবায়ন সম্ভব । আর যারা কুরআন-হাদীস পড়ছেন ঠিকই কিন্তু বাস্তব জীবনের সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই তাহলে কে এই সমাজ বা দেশকে কুরআনের আলোকে পরিবর্তন করবে? যেমন, যিনি finance বা economics-এ পড়াশোনা করেছেন বা M.B.A করেছেন তিনি যাকাত বা ইসলামিক ব্যাংকিং ভাল বুঝবেন। তাই আমাদের প্রয়োজন এমন শিক্ষা ব্যবস্থা যেখানে থাকবে general education Islamic education 45 combination সত্যিকার চিত্রটা হওয়ার কথা ছিল এমন যে, যখন মাগরিবের আজান হবে ডিউটিরত থানার ওসি সকল পুলিশদের সাথে নিয়ে জামাতে নামাযে দাঁড়িয়ে যাবেন এবং ইমামতি করবেন ওসি সাহেব নিজে, সলাত আদায় শেষে ১০/১৫ মিনিট কুরআন হাদীস থেকে ওসি সাহেব সিপাহীদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে শিক্ষামূলক দিকনির্দেশনা নসিহত করবেন। একইভাবে যখন যোহরের আজান হয়ে যাবে তখন প্রত্যেকটা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীসাহেবগণ তার নিজ নিজ ডিপার্টমেন্টের সকলকে নিয়ে জামাতে নামাযের ইমামতি করবেন এবং মন্ত্রণালয় চালাবেন তাকওয়ার উপর ভিত্তি করে। আবার একইভাবে যোহর-আসর নামাযের আজান হলে ইউনিভার্সিটির ভাইস চান্সেলরের ইমামতিতে সকল ছাত্রছাত্রীরা জামাতের সাথে সলাত আদায় করবেন। জেলখানার জেলার সাহেব। ডিউটিরত পুলিশ এবং সকল কয়েদীদের নিয়ে জামাতে সলাত তো আদায় করবেনই তার পাশাপাশি সাপ্তাহিক ইসলামী মাহফিল ও তাদেরকে নিয়ে জামাতে তাহাজ্জুদ এর সলাত আদায় করবেন। এভাবে যার যার এলাকার এমপি সাহেব জুম্মার সলাতের খুতবা দিবেন এবং ইমামতি করবেন। তিন বাহিনীর প্রধান সেনাদের নিয়ে মাসিক ইসলামিক সেমিনার ও ওয়ার্কসপ করবেন এবং কুরআনের শিক্ষা অন্যান্য অফিসারদের মাধ্যমে সারা দেশে ছড়িয়ে দিবেন। ঈদের সবচেয়ে বড় জামাতের ইমামতি করবেন রাষ্ট্রপতি নিজে এবং দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তাকওয়া ভিত্তিক দেশ গঠনের জন্য খুতবা দিবেন। হ্যা, কুরআন বলে যে, মুসলিমগণের মাঝে যারা সমাজ পরিচালনা করবেন বা দেশ পরিচালনা করবেন অথবা কোন নেতৃস্থানীয় স্থানে থাকবেন, তাদের অবশ্যই কুরআনের উপর যথেষ্ট দখল থাকতে হবে। আমাদের সকলের মধ্যে একটা ভুল। ধারণা সবসময় কাজ করে যে, যারা মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছেন কুরআনহাদীস নিয়ে শুধু তারাই ইসলাম চর্চা করবেন এবং এই বিষয়টা শুধু তাদের, অন্যদের নয় ।
সকল সেক্টরের প্রফেশনালরা যদি তাকওয়ার উপর ভিত্তি করে নিজ নিজ ডিপার্টমেন্ট পরিচালনা করেন তাহলেই শুধু মাত্র ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা সম্ভব। শিক্ষণীয় হিসেবে আমরা শ্রেষ্ঠ আদর্শ রাষ্ট্র পরিচালক চার খলিফার জীবনি থেকে দুই একটা ঘটনা দেখি ।
ঘটনা এক
আবু বকর রাদিআল্লাহু আনহু যখন রাষ্ট্র প্রধান ছিলেন তখন তিনি উমর রাদিআল্লাহু আনহু -কে দেশের প্রধান বিচারপতি (Chief Justice) হিসেবে নিয়োগ দেন। উমর রাদিআল্লাহু আনহু দীর্ঘ দিন এই পদে থাকার পর একদিন রাষ্ট্র প্রধানের নিকট এসে অভিযোগ করলেন যে – “মোহতারাম, আমাকে প্রধান। বিচারকের পদ থেকে অব্যহতি দেন। কারণ আমি কাজ বিহীন দীর্ঘ দিন অলস জীবনযাপন করছি।” আবু বকর এর কারণ জানতে চাইলে, উমর রাদিআল্লাহু আনহু জানালেন যে - “আমি এই দায়িত্ব পদ পাওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত কোর্টে একটি কেইস ও আসেনি। তার কারণ হচ্ছে দেশের জনগন আল্লাহর আইন পালনে এতই তাকওয়াবান হয়ে গেছে যে কারো বিরুদ্ধে কারো কোন অভিযোগ নেই। যারা এক সময় সম্পদের ভক্ষক ছিল তারা সম্পদের রক্ষক হয়ে গেছে, যারা নারীর সতিত্বের হরণকারী ছিল তারা নারীর অবিভাবক হয়ে গেছে।” আলহামদুলিল্লাহ। আর এর সব কিছুর মূলে হলো তাকওয়া।
ঘটনা দুই
উমর রাদিআল্লাহু আনহু যখন রাষ্ট্র প্রধান ছিলেন তখন তিনি গভীর রাতে ঘুরে ঘুরে দেখতেন দেশের জনগণের প্রকৃত অবস্থা। এক রাতে তিনি মরুভূমির মধ্যে কোন এক তাবু থেকে বাচচাদের কান্নার শব্দ শুনতে পেলেন। এতো গভীর রাতে বাচ্চাদের কান্না! তাই তিনি ঘটনা জানবার জন্য এগিয়ে গেলেন। কাছে গিয়ে দেখলেন এক মহিলা হাড়ির মধ্যে কিছু একটা রান্না করছেন এবং বাচ্চাদের এই বলে শান্তনা দিচ্ছেন যে মাংস রান্না হচ্ছে অপেক্ষা কর। উমর রাদিআল্লাহু আনহু মহিলার কাছে আসল ঘটনা জানতে চাইলেন, মহিলা প্রকৃত ঘটনা বর্ণনা করলেন যে - “আমি খুবই দরিদ্র, আমি মদীনা স্টেটের লোক নই, আমি অন্য স্টেট থেকে এসেছি, আমার ঘরে কোন খাবার নেই। বাচ্চারা ক্ষুধার যন্ত্রনায় কান্নাকাটি করছে। আমি বাচ্চাদের শান্তনা দেয়ার জন্য হাড়ির মধ্যে পাথর আর পানি দিয়ে জাল দিচ্ছি যেন এক সময় তারা কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে যায় কিন্তু ক্ষুধা এমনই প্রকট যে ক্ষুধার তাড়নায় তাদের ঘুম আসছে না।” উমর রাদিআল্লাহু আনহু মহিলাকে বললেন, আপনি একটু অপেক্ষা করুন আমি এক্ষুনি আসছি। উমর রাদিআল্লাহু আনহু দ্রুত গতিতে চলে গেলেন রাষ্ট্রীয় বায়তুলমাল গোডাউনে এবং নিজে কাঁধে বোঝা বহন করে নিয়ে এলেন ঐ মহিলার নিকট। মহিলা রুটি তৈরী করলেন ও তরকারী রান্না করলেন এবং উমর রাদিআল্লাহু আনহু তাকে রান্নার কাজে সহায়তা করলেন যাতে দ্রুত খাবার তৈরী হয়। রান্না শেষে উমর রাদিআল্লাহু আনহু বাচ্চাদের নিজ কোলে বসিয়ে তাদেরকে আহার করালেন। এসময় উমর রাদিআল্লাহু আনহু -র দুই চোখ দিয়ে পানি ঝড়ছে আর দাড়ি বেয়ে বেয়ে পরছে। এই দৃশ্য দেখে ঐ মহিলা উক্তি করছেন যে – “এই দেশের রাষ্ট্র প্রধান যদি উমর রাদিআল্লাহু আনহু না হয়ে আপনি হতেন তাহলে কতোই না ভাল হতো!” উমর ঐ মূহুর্তে নিজ পরিচয় না দিয়ে মহিলাকে আগামী কাল দিনে খলিফার দরবারে আসতে অনুরোধ করলেন। পরবর্তী দিনে মহিলা খালিফার দরবারে গিয়ে দেখতে পেলেন যে গত রাতের ঐ ব্যক্তিটিই তো খলিফা উমর রাদিআল্লাহু আনহু। মহিলা উমর রাদিআল্লাহু আনহু-র কাছে ক্ষমা চাইলেন। কিন্তু উমর রাদিআল্লাহু আনহু মহিলাকে বললেন - “আপনি তো উল্টো করছেন, ক্ষমা তো আমি আপনার কাছে চাইবো, কারণ এই ঘটনার জন্য না জানি মহান আল্লাহর দরবারে আমাকে কী জবাবদিহি করতে হয়! আসামীর কাঠগড়ায় দাড়াতে হয়! সেজন্য আমি সংকিত, দয়া করে আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন, কারণ আমি আপনার দুঃসময়ে খোজ নিতে পারিনি, আপনি চাওয়ার আগে আপনার ঘরে খাবার পৌছাতে পারিনি।” এই হলো প্রকৃত তাকওয়ার পরিচয়। একজন রাষ্ট্র প্রধানকে তার দেশের প্রতিটি জনগনের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/573/43
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।