মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
তাকওয়া কোনো বাহ্যিক ধরন-ধারণ এবং বিশেষ কোনো সামাজিক আচার অনুষ্ঠানের নাম নয় । তাকওয়া মূলতঃ মানব মনের সেই অবস্থাকেই বলা হয় যা আল্লাহর গভীর ভীতি ও প্রবল দায়িত্বানুভূতির দরুন সৃষ্টি হয় এবং জীবনের প্রত্যেকটি দিকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আত্মপ্রকাশ করে। মানুষের মনে আল্লাহর ভয় হবে, নিজে আল্লাহর দাসানুদাস-এ চেতনা জাগ্রত থাকবে আল্লাহর সামনে নিজের দায়িত্ব ও জবাবদিহি করার কথা স্মরণ থাকবে এবং এ একটি পরীক্ষাগার, আল্লাহ জীবনের একটি নির্দিষ্ট আয়ুদান করে এখানে পাঠিয়েছেন, এ খেয়াল তীব্রভাবে বর্তমান থাকবে । পরকালে ভবিষ্যতের ফায়সালা এ দৃষ্টিতে হবে যে, এ নির্দিষ্ট অবসরকালের মধ্যে এ পরীক্ষাগারে নিজের শক্তি, সামর্থ ও যোগ্যতা কিভাবে প্রয়োগ করেছে, আল্লাহর ইচ্ছানুক্রমে যেসব দ্রব্যসামগ্রী লাভ করতে পেরেছে, তার ব্যবহার কিভাবে করেছে এবং আল্লাহর নিজস্ব বিধান অনুযায়ী জীবনকে বিভিন্ন দিক দিয়ে যেসব মানুষের সাথে বিজড়িত করেছে, তাদের সাথে কিরূপ কাজকর্ম ও লেনদেন করা হয়েছে-একথাটিও মনের মধ্যে জাগরুক থাকবে। বস্তুত এরূপ অনুভূতি ও চেতনা যার মধ্যে তীব্রভাবে বর্তমান থাকবে, তার হৃদয় মন জাগ্রত হবে, তার ইসলামী চেতনা তেজস্বী হবে, আল্লাহর মর্জির বিপরীত প্রত্যেকটি বস্তুই তার মনে খটকার সৃষ্টি করবে, আল্লাহর মনোনীত প্রত্যেকটি জিনিসই তার রুচিতে অসহ্য হয়ে উঠবে, তখন সে নিজেই নিজের যাচাই করবে। তার কোন ধরনের ঝোক ও ভাবধারা লালিত-পালিত হচ্ছে নিজেই তার জরীপ করবে। সে কোন সব কাজ-কর্মে নিজের সময় ও শক্তি ব্যয় করছে, তার হিসাব সে নিজেই করতে শুরু করবে । তখন সুস্পষ্টরূপে নিষিদ্ধ কোনো কাজ করা দূরের কথা সংশয়পূর্ণ কোনো কাজে লিপ্ত হতে সে নিজে ইতস্তত করবে । তার অন্তর্নিহিত কর্তব্যজ্ঞানই তাকে আল্লাহর সকল নির্দেশ পূর্ণ আনুগত্যের সাথে পালন করতে বাধ্য করবে । যেখানেই আল্লাহর নির্দিষ্ট সীমালংঘন হওয়ার আশংকা হবে, সেখানেই তার অন্ত র্নিহিত আল্লাহভীতি তার পদযুগে প্রবল কম্পন সৃষ্টি করবে-চলৎশক্তি রহিত করে দিবে । আল্লাহর হক ও মানুষের হক রক্ষা করা স্বতঃস্ফূর্ত রূপেই তার স্বভাবে পরিণত হবে। কোথাও সত্যের বিপরীত কোনো কথা বা কাজ তার দ্বারা না হয়ে পড়ে সেই ভয়ে তার মন সতত কম্পমান থাকবে। এরূপ অবস্থা বিশেষ কোনো ধরনের কিংবা বিশেষ কোন পরিধির মধ্যে পরিলক্ষিত হবে না, ব্যক্তির সমগ্র চিন্তা-পদ্ধতি এবং তার সমগ্র জীবনের কর্মধারাই এর বাস্তব অভিব্যক্তি হবে । এর অনিবার্য প্রভাবে এমন এক সুসংবদ্ধ সহজ, ঋজু এবং একই ভাবধারা বিশিষ্ট ও পরম সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রকৃতি গঠিত হবে, যাতে সকল দিক দিয়েই একই প্রকারের পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা ফুটে উঠবে । পক্ষান্তরে কেবল বাহ্যিক আকার-আকৃতি ও কয়েকটি নির্দিষ্ট পথের অনুসরণ এবং নিজেকে কৃত্রিমভাবে কোনো পরিমাপযোগ্য ছাঁচে ঢেলে নেয়াকেই যেখানে তাকওয়া বলে ধরে নেয়া হয়েছে, সেখানে শিখিয়ে দেয়া কয়েকটি বিষয়ে বিশেষ ধরন ও পদ্ধতিতে ‘তাকওয়া’ পালন হতে দেখা যাবে, কিন্তু সেই সাথে জীবনের অন্যান্য দিকে ও বিভাগে এমনসব চরিত্র, চিন্তা-পদ্ধতি ও কর্মনীতি পরিলক্ষিত হবে, যা তাকওয়া তো দূরের কথা ঈমানের প্রাথমিক স্তরের সাথেও এর কোনো সামঞ্জস্য হবে না। এটাকেই ঈসা (আ.) উদাহরণের ভাষায় বলেছেন : “এক দিকে মাছি বলে বের করো আর অন্যদিকে বড় বড় উট অবলীলাক্রমে গলধঃকরণ করো।” প্রকৃত তাকওয়া এবং কৃত্রিম তাকওয়া পারস্পরিক পার্থক্য অন্য একভাবেও বুঝতে পারা যায় । যে ব্যক্তির মধ্যে পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতার একটি তীব্র ও জাগ্রত রুচি-অনুভূতি বর্তমান রয়েছে, সে নিজেই অপবিত্রতা ও পংকিলতাকে। ঘৃণা করবে-তা যে আকারেই হোক না কেন এবং পবিত্রতাকে পূর্ণরূপে ও স্থায়ীভাবে গ্রহণ করবে। এর বাহ্যিক অনুষ্ঠান যথাযথভাবে প্রতিপালিত না হলেও কোনো আপত্তি থাকবে না। অপর ব্যক্তির আচরণ এর বিপরীত হবে। কারণ, পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতার কোনো স্বতঃস্ফুর্ত চেতনা তার মধ্যে নেই; বরং ময়লা ও অপবিত্রতার একটি তালিকা কোথা হতে লিখে নিয়ে সবসময়ই সাথে রেখে চলে, ফলে এ ব্যক্তি তার তালিকায় উল্লেখিত ময়লাগুলো হতে নিশ্চিয় আত্মরক্ষা করবে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তা অপেক্ষা অধিক জঘন্য ও ঘৃণিত বহু প্রকার। পংকিলতার মধ্যে সে অজ্ঞতাসারেই লিপ্ত হয়ে পড়বে, তা নিঃসন্দেহে। কারণ, তালিকায় অনুল্লেখিত পংকিলতা যে কোনোরূপ পংকিল বা ঘৃণিত হতে পারে এটা সে মাত্রই বুঝতে পারে না। এ পার্থক্য কেবল নীতিগত ব্যাপারেই নয়, চারদিকে যাদের তাকওয়ার একেবারে ধুম পড়ে গেছে তাদের জীবনে এ পার্থক্য সুস্পষ্ট হয়ে ধরা পড়ে। তারা একদিকে শরীরের খুঁটিনাটি বিষয়ে খুবই কড়াকড়ি করে থাকে, এমনকি দাড়ির দৈর্ঘ্য একটি বিশেষ পরিমাপ হতে একটু কম হলেই তাকে জাহান্নামী হওয়ার “সুসংবাদ” শুনিয়ে দিতে সঙ্কোচবোধ করে না এবং ফিকাহর শাস্ত্রীয় মত হতে কোথাও সমাজ বিচ্যুতিকেও তারা দ্বীন। ইসলামের সীমালংঘন করার সমান মনে করে। কিন্তু অন্যদিকে ইসলামের মূলনীতি ও বুনিয়াদী আদর্শকে তারা চরমভাবে উপেক্ষা করে চলে। গোটা জীবনের ভিত্তি তারা স্থাপিত করেছে অনুমতি ও রাজনৈতিক সুবিধাবাদী নীতির উপর । আল্লাহর দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠা করার জন্য চেষ্টা-সাধনা ও সংগ্রাম করার দায়িত্ব এড়ানোর জন্য তারা বহু সুযোগের পথ আবিষ্কার করে নিয়েছে। আনইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার অধীনে তারা ইসলামী জীবন যাপনের প্রস্তুতি করার জন্যই সকল চেষ্টা ও সাধনা নিযুক্ত করে রেখেছে। শুধু তা-ই নয়, তাদেরই ভুল নেতৃত্ব মুসলিমদেরকে একথা বুঝিয়েছে যে, এক ইসলাম বিরোধী সমাজ ব্যবস্থার অধীন থেকে বরং এর খিদমত করেও সীমাবদ্ধ গণ্ডীর মধ্যে ধর্মীয় জীবনযাপন করা যায় এবং তাতেই দ্বীন ইসলামের যাবতীয় নির্দেশ প্রতিপালিত হয়ে যায়-অতঃপর ইসলামের জন্য তাদেরকে আর কোনো চেষ্টা-সাধনা বা কষ্ট স্বীকার আদৌ করতে হবে না। এটা অপেক্ষাও অধিকতর দুঃখের কথা এই যে, তাদের সামনে দ্বীন ইসলামের মূল দাবী যেমন পেশ করা হয় এবং দ্বীন প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা-সাধনা ও আন্দোলনের দিকে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়, তখন তারা এর প্রতি শুধু চরম উপেক্ষাই প্রদর্শন করে না, এটা হতে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য এবং অন্যান্য মুসলিমকেও তা হতে বিরত রাখার জন্যে শত রকমের কৌশলের আশ্রয় নেয়। আর এতসব সত্ত্বেও তাদের তাকওয়া ক্ষুন্ন হয় না; আর ধর্মীয় মনোবৃত্তি সম্পন্ন লোকদের মনে তাদের তাকওয়ার অন্তসারশূন্যতা সম্পর্কে সন্দেহ মাত্র জাগ্রত হয় না। এভাবেই প্রকৃত ও নিষ্ঠাপূর্ণ তাকওয়া এবং কৃত্রিম ও অন্তসারশূন্য ‘তাকওয়ার পারস্পরিক পার্থক্য বিভিন্নরূপে সুস্পষ্ট হয়ে ধরা পড়ে। কিন্তু তা অনুভব করার জন্য তাকওয়ার প্রকৃত ধারণা মনের মধ্যে পূর্বেই বদ্ধমূল হওয়া অপরিহার্য।
কিন্তু পোশাক-পরিচ্ছদ, চলাচল, উঠা-বসা ও সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানের বাহ্যিকরূপ-যা সহীহ হাদীস হতে প্রমাণিত হয়েছে-তাকে হীন ও অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করা হয়, পূর্বোক্ত আলোচনা হতে সেরূপ ধারণা করা মারাত্মক ভুল হবে, সন্দেহ নেই। এরূপ কথা কল্পনাও করা যায় না। বস্তুত এখানে শুধু একথাই বুঝানো হয়েছে যে, প্রকৃত তাকওয়াই হচ্ছে আসল গুরুত্বপূর্ণ জিনিস, এর বাহ্যিক প্রকাশ মুখ্য নয়, গৌণ । আর প্রকৃত ‘তাকওয়ার মহিমা দীপ্তি যার মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে উঠবে, তার সমগ্র জীবনই পরিপূর্ণ সামঞ্জস্যের সাথে খাটি ‘ইসলামী জীবন রূপেই গড়ে উঠবে এবং তার চিন্তাধারায়, মতবাদে, তার হৃদয়াবেগ ও মনের ঝোক প্রবণতায়, তার স্বভাবগত রুচি তার সময় বন্টন ও শক্তির ব্যয়-ব্যবহার, তার চেষ্টা-সাধনার পথে পন্থায়, তার জীবনধারায় ও সমাজ পদ্ধতিতে তার আয়-ব্যয়ের ব্যাপারে, তার সমগ্র পার্থিব ও বৈষয়িক জীবনের প্রত্যেকটি দিকে ও বিভাগে পূর্ণ ব্যাপকতা ও সামগ্রিকতার সাথে ইসলাম রূপায়িত হতে থাকবে । কিন্তু আসল তাকওয়া অপেক্ষা তার বাহ্যিক বেশ-ভূষাকেই যদি প্রাধান্য দেয়া হয়-তার উপরই যদি অযথা গুরুত্ব আরোপ করা হয় এবং প্রকৃত তাকওয়ার বীজ বপন ও তার পরিবর্ধনের জন্য যত্ন না নিয়ে যদি কৃত্রিম উপায়ে কয়েকটি বাহ্যিক হুকুম-আহকাম পালন করান হয়, তবে বর্ণিত রূপেই যে এর পরিণাম ফল প্রকাশিত হবে তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। প্রথমোক্ত কাজ অত্যন্ত সময় সাপেক্ষ, সে জন্য অসীম ধৈর্যের আবশ্যক; এমন বিকাশের নীতি অনুসারেই তা বিকশিত হয়ে এবং দীর্ঘ সময়ের সাধনার পরই তা সুশোভিত হয়ে থাকে-ঠিক। যেমন একটি বীজ হতে বৃক্ষ সৃষ্টি এবং তাতে ফুল এবং ফল ধারণে স্বভাবতই বহু সময়ের আবশ্যক হয় । এ কারণেই স্কুল ও অস্থির স্বভাবের লোক ঐরূপ তাকওয়া লাভ করার জন্য চেষ্টা করতে সাধারণত প্রস্তুত হয় না। দ্বিতীয় প্রকার তাকওয়ার বাহ্যিক বেশ-ভূষা, সহজলভ্য, অল্প সময় সাপেক্ষ। যেমন একটি কাষ্ঠখণ্ডের পত্র ও ফুল-ফল বেঁধে “ফল-ফুলে শোভিত একটি বৃক্ষ” দাঁড় করা হয়তোবা সহজ; কিন্তু মূলতঃ তা কৃত্রিম, প্রতারণামূলক এবং ক্ষণস্থায়ী। এজন্যই আজ শেষোক্ত প্রকারের তাকওয়াই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। কিন্তু একটি স্বাভাবিক বৃক্ষ হতে যা কিছু লাভ করার আশা করা যায়; একটি কৃত্রিম বৃক্ষ হতে তা কিছুতেই সম্ভব নয়, এটা সর্বজনবিদিত সত্য।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/573/72
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।