hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাকওয়া

লেখকঃ আমির জামান, নাজমা জামান

১৮
দ্বীনের সঠিক উপলব্ধি
দ্বীনের স্বচ্ছ ধারণা

দ্বীন শব্দটির প্রচলিত কিন্তু অপূর্ণাঙ্গ অর্থ হচ্ছে ধর্ম। এতে দ্বীনের পুরোপুরি অর্থ প্রকাশ পায়না। এর প্রকৃত অর্থ ব্যাপক। তবে সংক্ষেপে ও এককথায় দ্বীন শব্দের অর্থ ও জীবন-বিধান। আল কুরআনে দ্বীন শব্দটি কয়েক ধরণের অর্থে ব্যবহার হয়েছে। এর মধ্যে জীবনের সকল মৌলিক বিষয়ের নির্দেশনা পাওয়া যায় । মুসলিম জনগোষ্ঠীর বেশীর ভাগই আজ দ্বীন সম্বন্ধে কিছু না জেনেও জানার ভান করে নির্দ্বিধায় দ্বীন বিরোধী কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বরং কেউ বাধা দিলে চরম অজ্ঞতার পরিচয় দিয়ে তর্ক শুরু করে দেয়। কেবল সলাত-সিয়াম পালনকে দ্বীন মনে করছে। ব্যাপক জনগোষ্ঠী দ্বীনের অপেক্ষাকৃত কম ও অস্পষ্ট বিষয়কে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও সুস্পষ্ট বিষয়াদির উপর স্থান দিয়ে বিকৃতির প্রতিযোগিতায় বিভোর রয়েছে। সুতরাং কোন ব্যক্তিকে দ্বীনের মৌলিক বিষয়াদি সম্পর্কে জানানো ও বুঝানোর জন্য নূন্যতম ভূমিকা রাখাও যে কত বড় পূণ্যের কাজ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

দ্বীনের সঠিক জ্ঞান ও উপলব্ধি (Clear Knowledge & Understanding of Deen)

রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন : আল্লাহ তা'আলা যাকে কল্যাণ দান করতে ইচ্ছা করেন, তাকে তিনি দ্বীন সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান ও তা উপলব্ধি করার ক্ষমতা (clear knowledge & understanding) দান করেন। (মুসনাদে আহমাদ)

দ্বীনের সঠিক জ্ঞান ও উপলব্ধি লাভ আল্লাহর করুণা ও ইচ্ছার উপর নির্ভর করে। যে কেউ চাইলেই এটা পেতে পারে না। তবে অব্যাহত প্রচেষ্টা, প্রবল ইচ্ছা ও সর্বদা আল্লাহর অনুগত বান্দাগণের দ্বীনের জ্ঞান ও উপলব্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ ধরনের ভাগ্যবানদের সাথে কথা বললেই বুঝা যায় যে তারা। অন্যদের চাইতে কিছুটা ব্যতিক্রম। তারা দ্বীনের বিভিন্ন বিষয়ে গতানুগতিক। ব্যাখ্যা দেন না। তারা দ্বীনকে খুব সুন্দর করে মানুষের নিকট উপস্থাপন করতে পারেন। তারা দ্বীন সম্পর্কে এক শ্রেণীর মানুষের মাঝে যে ভুল ধারণা বদ্ধমূল। তা দূর করার চেষ্টা করেন। অজ্ঞ লোকদের থাবা হতে বের করে দ্বীনকে গণমানুষের সামনে সহজ সরল ভাষায় তুলে ধরেন। এ ধরনের ঈমানদারদের মাধ্যমে আল্লাহ দ্বীনের সৌন্দর্য ও শোভা সমাজে, রাষ্ট্রে ও সমগ্র দুনিয়াতে ছড়িয়ে দেন। খুঁটিনাটি বিষয়ের দিকে বেশী গুরুত্ব না দিয়ে বরং দ্বীনের মৌলিক বিষয়ের প্রতি নজর দেয়াই থাকে তাদের প্রধান লক্ষ্য। তারা সবাইকে সংগঠিত করার দিকেও মন দেন। মুসলিমদের ঐক্য তাদের স্বপ্ন, বিশ্বমুসলিমের ভ্রাতৃত্ব অর্জন তাদের আকাঙ্ক্ষা, মুসলিমদের শিক্ষা তাদের কর্মসূচী। দ্বীনের সঠিক বুঝ যিনি লাভ করেন তার মনের দুয়ার কখনো বদ্ধ থাকে না। জ্ঞানের পিপাসা ও জানার আগ্রহ তার অদম্য।

Pillars of Islam

১) ঈমান

২) সলাত

৩) যাকাত

৪) সিয়াম

৫) হজ্জ

ঈমান, সলাত, যাকাত, সিয়াম, হাজ্জ এই পাঁচটি হচ্ছে ইসলামের মূল স্তম্ভ বা পিলার। সলাত, যাকাত, সিয়াম, হাজ্জ এই চারটি পিলার আবার নির্ভর করছে। প্রথম পিলার ঈমানের উপর। কারো প্রথম পিলার যদি ঠিক না থাকে তাহলে পরের চারটি পিলার নড়বড়ে হয়ে যাবে। কারণ ঈমানের অনেক শাখা-প্রশাখা রয়েছে। মানুষের প্রতিটি কর্মের সাথে ঈমান জড়িত। কেউ যদি মনে করেন যে আমি শুধু সলাত, যাকাত, সিয়াম, হাজ্জ এই চারটিকেই পরিপূর্ণ ইসলাম মনে। করে পালন করে যাবো তাহলে একটা বড় ধরণের গ্যাপ থেকে যাবে। এই চারটির বাইরে আরো অনেক বি ইসলামে রয়েছে যা ঈমানের অংশ এবং ফরয। বুঝার সুবিধার্থে উদাহরণ হিসেবে আমরা বলতে পারি যে একটি ঘর তৈরী করার জন্য কিছু পিলার দিলাম কিন্তু ছাদ, দরজা, জানালা, দেয়াল ইত্যাদি কিছুই দিলাম না তাহলে ঘরটির মধ্যে শুধু পিলার কয়টি দাঁড়িয়ে থাকবে এবং পরিপূর্ণ ঘর তৈরী হবে না। ইসলাম হচ্ছে একটি পরিপূর্ণ ঘরের মতো যাকে বলা। হয় পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। এই পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থার দিক নির্দেশনা পাওয়া যায় আল কুরআনে। তাই পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থার উপকার পেতে হলে সলাত, যাকাত, সিয়াম, হাজ্জ এর বাইরে আল কুরআনের আরো সমস্ত নির্দেশও অবশ্যই মেনে চলতে হবে ।

আরো একটি উদাহরণ দেয়া যাক;

মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে যদি আমরা বলি সলাত, যাকাত, সিয়াম ও হাজ্জ হচ্ছে ৩৩% (পাশ মার্কস) এবং দ্বীনের অন্যান্য ফরয হুকুমগুলো ৬৭% যা সবই ঈমানের অংশ । এখানে বোঝানোর চেষ্টা করা। হয়েছে যে, শুধু সলাত, যাকাত, সিয়াম, হাজ্জ-ই ফরয ইবাদত নয়, এর বাইরে ইসলামে আরো অনেক কিছুই রয়েছে যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ফরয । যদি আমরা ইসলামের মূল কাজ মনে করে শুধু সলাত, যাকাত, সিয়াম, হাজ্জ এই চারটিকে ধরে থাকি অর্থাৎ ১০০-র মধ্যে যদি ৩৩ হয় টার্গেট বা পরীক্ষায় শুধু ৩৩-এর উত্তর দিয়ে থাকি তাহলে পাশ করা কঠিন হয়ে যেতে পারে এবং দ্বীন ইসলামের অন্যান্য ফরয বিষয়গুলোকে (৬৭%) গুরুত্ব না দেই তাহলে পরকালে পার পাওয়া কঠিন হয়ে যেতে পারে। আমরা জানি ইবাদতের কোন % নেই । এই ক্ষেত্রে যেন আমরা কোন ভুল না বুঝি এবং misinterpret করার চেষ্টা না করি । ফরয ইবাদতের গুরুত্ব বুঝানোর সুবিদার্থে এই দুটি উদাহরণ টানা হয়েছে। নিম্মের এই সহীহ হাদীস থেকে আমরা বিষটি আরো পরিষ্কার হতে পারি:

আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন : তোমরা কি জান দরিদ্র অসহায় ব্যক্তি কে? সাহাবায়ে কেরাম বললেন, আমাদের মধ্যে দরিদ্র অসহায় ব্যক্তিতো সে যার কোন টাকা পয়সা বা সম্পদ নেই। রসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, আমার উম্মতের মধ্যে সত্যিকার দরিদ্র অসহায় হলো সেই ব্যক্তি যে কিয়ামতের দিন সলাত, সিয়াম ও যাকাতসহ অনেক ভাল কাজ নিয়ে উপস্থিত হবে, অথচ দুনিয়াতে বসে সে কাউকে গালি দিয়েছিল, কারো প্রতি অপবাদ দিয়েছিল, করো সম্পদ আত্মসাত করেছিল, কারো রক্তপাত ঘটিয়েছিল, কাউকে মারধোর করেছিল ফলে তার নেক আমলগুলো থেকে নিয়ে তার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পাওনা আদায় করা হবে। এভাবে যখন তার নেক আমলগুলো শেষ হয়ে যাবে ক্ষতিগ্রস্তদের দেয়ার জন্য আর কিছু থাকবে না তখন তাদের পাপগুলো তাকে দেয়া হবে ফলে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে । (সহীহ মুসলিম)

তাকওয়া নিয়ে আরো কিছু আলোচনা

আল্লাহর ইবাদত অকৃত্রিমভাবে শুধুই আল্লাহর খুশীর জন্যে করতে হবে, লোক দেখানো ইবাদত নয় কারণ সেটা হবে রিয়া যা আল্লাহ খুব অপছন্দ করেন। এমন ইবাদত তাকওয়ার আওতায় পড়ে না। তাকওয়ার প্রকাশ ও প্রমাণ কিভাবে হয় তা কুরআন ও হাদীস মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনা করে জেনে নিতে হবে, তারপর সেই অনুসারে আমল করতে হবে। ইখলাস (sincerity) হলো ইবাদতে অকৃত্রিমতা যা শুধু আল্লাহর তুষ্টির জন্যে করা হয়, আর সেখানেই তাকওয়া উপস্থিত থাকে কারণ তখন আল্লাহর সান্নিধ্য ও সেই সান্নিধ্যের সুগন্ধ অন্তরে অনুভব করা যায় । এক হাদীসের বর্ণনা অনুসারে জানা যায় যে রসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর কাছে কোন এক ব্যক্তি কিছু উপদেশ চাইলে তিনি বললেন : আল্লাহকে ভয় কর কারণ এটাই সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করে। এই ভয়টাই হচ্ছে তাকওয়া। তাকওয়ার সুফল নিয়ে পূর্বেও আলোচনা করা হয়েছে। এবার কুরআনের কিছু আয়াত লক্ষ্য করি । তাকওয়া সৎকর্ম করতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে, এবং তাকওয়ার পুরস্কারস্বরূপ আল্লাহ বান্দার সেইসব সৎকর্ম কবুল করেন।

১) সূরা আল-আহযাব, ৩৩ : ৭০-৭১

হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর। তা হলে তিনি তোমাদের কর্ম ত্রুটিমুক্ত করবেন এবং তোমাদের পাপ ক্ষমা করবেন। যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করে, তারা অবশ্যই মহাসাফল্য অর্জন করবে।

২) সূরা আল-হুজুরাত, ৪৯ : ১৩

তোমাদের মাঝে আল্লাহর নিকট সেই ব্যক্তিই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে অধিক মুত্তাকী (তাকওয়ার অধিকারী)।

৩) সূরা আলে-ইমরান, ৩: ৭৬

যে কেউ অঙ্গীকার পূর্ণ করলে এবং তাকওয়া অবলম্বন করলে আল্লাহ অবশ্যই মুত্তাকীদের ভালোবাসেন।

৪) সূরা তালাক, ৬৫ : ৫

যে আল্লাহকে ভয় করে তিনি তার পাপ মোচন করবেন এবং তাকে মহাপুরস্কার দেবেন।

৫) সূরা আনফাল, ৮ : ২৯

হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর তবে আল্লাহ তোমাদের দেবেন ‘ফুরকান ন্যায়-অন্যায় পার্থক্য করার ক্ষমতা তাফসীর ইবনে কাসীরে উল্লেখ করা হয়েছে যে ‘ফুরকান’ হচ্ছে বিপদ বা সংকট থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার একটি পথ । মুজাহিদ আরো এগিয়ে গিয়ে বলেছেন :

‘দুনিয়া এবং আখিরাত এই উভয় জগতে পরিত্রাণ পাওয়ার রাস্তা। ইবনে আব্বাস বলেছেন : “মুক্তি (salvation)”; “সাহায্যপ্রাপ্ত হওয়া”। মুহাম্মাদ ইসহাক ফুরকান অর্থ করেছেন : “সত্য ও মিথ্যা নির্ণয়ের মানদণ্ড”। সূরা হাদীদ (৫৭), এর ২৮ নম্বর আয়াতে তাকওয়ার (আল্লাহর ভয়ের) গুরুত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে মহান আল্লাহ বলেছেন : হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর (ইত্তাকুল্লাহ) এবং তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর। তিনি তাঁর অনুগ্রহে তোমাদিগকে দ্বিগুণ পুরস্কার দেবেন, আর দেবেন আলো (নূর) যার সাহায্যে তোমরা পথ চলবে এবং তিনি তোমাদের ক্ষমা করবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন