hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ঈমান-ইসলামের মূলভিত্তি ও ইসলামী আকীদা বিশ্বাস

লেখকঃ মুহাম্মাদ বিন জামীল যাইনূ

৪০
যাকাত কোথায় ও কাকে দিতে হবে
যাকাত কোথায় ব্যয় করতে হবে এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ-

(আরবি)

সদক্বা পাবার যোগ্য শুধুমাত্র ফকীর, মিসকীন, যাকাত সংগ্রহকারী, যাদের অন্তর (ইসলামে) ঝুকে পড়ার সম্ভাবনা আছে, আর ক্রীতদাস মুক্তিতে, ঋণগ্রস্তরা, আর যারা আল্লাহ তাআলার রাস্তায় আছে, আর রাস্তার পথিক (মুসাফীর)। ইহা আল্লাহর তরফ হতে ফরয। আল্লাহ তাআলা সমস্ত কিছু জ্ঞাত আছেন, আর তিনি হিকমত ওলা। (সূরা তাওবা ৬০)

(সদক্বাহ বলতে এ আয়াতে ফরয যাকাতকে বুঝাচ্ছে) আল্লাহ তাআলা এ আয়াতে ৮ ধরণের লোকের কথা উল্লেখ করেছেন যাদের প্রত্যেকেই যাকাত পাওয়ার অধিকার রাখে।

১। ফকিরঃ- ঐ ব্যক্তি, তার যা প্রয়োজন, তার অর্ধেকরও তিনি মালিক নন। অথবা তার থেকেও কম। তিনি মিসকীনের চেয়েও বেশী অভাবী।

২। মিসকীনঃ- এমন অভাবী ব্যক্তি যার অবস্থা ফকিরের চেয়ে ভাল। যেমন তার প্রয়োজন ১০ টাকার, তার নিকট আছে ৭ টাকা। ফকির তাকে বলা হয়, যে মিসকীনের থেকেও বেশী অভাবী। এর দলিল হচ্ছে আল্লাহ তাআলার বাণী-

(আরবি)

আর ঐ নৌকা যা ছিল কয়েকজন মিসকিনের, যারা সমুদ্রে কাজ করত। (সূরা কাহাফ ৭৯)

আল্লাহ তাআলা এ আয়াতে তাদেরকে মিসকিন বলেছেন যদিও তারা একটা নৌকার মলিক ছিল। ফকির ও মিসকিনদের এই পরিমাণ সম্পদ দিতে হবে যাতে তাদের পুরা বছর চলে যায়। কারণ, যাকাত প্রত্যেক বছরই ওয়াজিব হয়, তাই সে পূর্ণ এক বছরের মাল নেবে।

কতটা সাহায্য প্রয়োজনঃ- উহাতে শামিল হল খানা, পোশাক, বাসস্থান এবং অন্যান্য জিনিস যা ছাড়া বাঁচা সম্ভবপর নয়, তবে কোন অতিরিক্ত খরচ করা চলবে না। আর যার নিকট হতে সে যাকাত পাবে তার উপর সে বোঝা স্বরূপ হতে পারবে না। এ জন্য এই পরিমাণ এক এক যামানায়, এক এক এলাকায় ও ব্যক্তি হতে ব্যক্তিতে পার্থক্য হয়। যা এখানে এক ব্যক্তির চলে অন্যত্র হয়ত অন্য ব্যক্তির তাতে চলবে না। যা হয়ত অনেকের ১০ দিনের জন্য যথেষ্ট, তা হয়ত অন্য কারো এক দিনের খরচ। যাতে এই ব্যক্তির চলে তাতে অন্যের চলবে না। কারণ তার পারিবারিক খরচ বেশী।

আলেমগণ ফতোয়া দেন যে, পূর্ণ প্রয়োজনীয়তার মধ্যে শামিল আছে, রুগীর চিকিৎসা, অবিবাহিতের বিবাহ, কিতাব পত্র খরিদ ইত্যাদি।

ফকির ও মিসকিনদের মধ্যে যারা যাকাত নিবে তাদের অবশ্যই মুসলিম হতে হবে। বনু হাশেম এবং তাদের সাথে সংযুক্ত লোকেরা যাকাত নিতে পারবে না। আর যাদের উপর খরচ করা তার জন্য লাযেম তাদের যাকাত দেয়া যাবে না। যেমন পিতা-মাতা, সন্তান, স্বামী-স্ত্রী। আর যার পক্ষে উপার্জন করার মত শক্তি আছে, তার জন্য যাকাত নেয়া জায়েয নয়। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ ধনী বা কর্মক্ষম যারা তাদের এতে কোন অংশ নেই। (বর্ণনায় আহমদ, আবু দাউদ, নাসায়ী)

যাকাত আদায়কারীঃ- তারা হচ্ছেন ঐ ব্যক্তিবৃন্দ যাদেরকে দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা তার নায়েব নিদিষ্ট করে দিয়েছেন যাকাতের মাল সম্পদ সংগ্রহ করা, হেফাজত করা এবং তা বন্টন করার জন্য। তাদের মধ্যে আছে যাকাতের সম্পদ সংগ্রহকারী, হেফাজতকারী, লেখক, হিসাবরক্ষক, পাহারাদার, একস্থান হতে অন্য স্থানে পরিবহনকারী, এবং যারা উহা বিলি-বন্টন করে তারাও।

তাদেরকে তাদের কাজ অনুযায়ী বেতন দেয়া হয়, সে ধনী হলেও। যদি সে মুসলিম, প্রাপ্ত বয়স্ক, বুদ্ধিমান, বিশ্বাসী এবং কর্মপটু হয়। যদি তিনি বনু হাশেম গোত্রের হন তবে তাকে যাকাত দেয়া যাবে না। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “নিশ্চয়ই যাকাত ও সদক্বাহ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বংশধরদের জন্য নয়। (বর্ণনায়: মুসলিম)

৪। যাদের অন্তর ইসলামের দিকে ঝুকছেঃ তারা হচ্ছেন ঐ সমস্ত নেতৃস্থানীয় লোকেরা যাদেরকে বংশের লোকেরা মান্য করে এবং আশা করা যায় যে, তারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করবে। অথবা তার ঈমানী শক্তি এবং ইসলাম গ্রহণ উদাহরণ হবে অন্যদের সম্মুখে, অথবা মুসলিদের রক্ষা বা তার ক্ষতি হতে বাঁচানোর চেষ্টা করবে। তাদের সাহায্য করা এখনও চলছে, এটা মনসুখ (বাতিল) হয়নি। তাদেরকে যাকাত হতে এই পরিমাণ মাল দেয়া হবে যাতে তারা ইসলামের প্রতি ঝুকে পড়ে, তাকে সাহায্য করে এবং কেউ বিরুদ্ধাচরণ করলে তার বিরোধিতা করে। এই অংশ কাফেরকে ও দেয়া চলে। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাফওয়ান বিন উমাইয়াকে হুনাইন যুদ্ধের গনিমত দিয়েছিলেন। আর এটা মুসলিমকেও দেয়া চলে। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবু সূফইয়ান ইবনে হারবকে দিয়েছিলেন। এমনি ভাবে আকরা বিন হাবেসকেও দিয়েছিলেন। তারপর উয়াইনাহ্ ইবনে হিসানকেও দিয়েছিলেন। তাঁদের প্রত্যেককে তিনি একশত করে উট দিয়েছিলেন। (বর্ণনায় মুসলিম)

৫। ক্রীতদাস মুক্তিতেঃ- এর মধ্যে শামিল আছে দাসদের মুক্ত করা। যারা মুক্তির ব্যাপারে চুক্তিনামা লিখেছে তাদের ও সাহায্য করা। তারপর যারা শত্রুর হাতে বন্দী হয়েছে, তাদের মুক্ত করা। কারণ, এ ব্যক্তি ঐ ঋণগ্রস্তদের দলে শামিল হবে যাকে ঋণের বোঝা হতে মুক্ত করা হয়। তাকে আরো বেশী সাহায্য করা উচিত, এজন্য যে, হয়ত শত্রুরা তাকে হত্যা করবে অথবা অত্যাচারের কারণে সে ইসলাম ত্যাগ করবে।

৬। ঋণগ্রস্তঃ- তারা হচ্ছেন ঐ ব্যক্তিরা যারা দেনা করেছেন এবং শোধ করার ওয়াদা করেছেন। দেনা দুই রকমের হতে পারেঃ-

(১)কোন ব্যক্তি তার জায়েয প্রয়োজনের জন্য ঋণ গ্রহণ করেছেন। যেমন তার খরচ চালানোর অথবা পোষাক ক্রয় বা বিয়ে বা চিকিৎসার জন্য, অথবা বাড়ী নির্মাণ বা আসবাবপত্র ক্রয়ের জন্য ঋণ করেছে। অথবা অন্য কোন জিনিস ভূলক্রমে অথবা বেখেয়ালে নষ্ট করেছে। তখন তাকে ঐ পরিমাণ টাকা দেয়া হবে। যাতে সে ঋণমুক্ত হতে পারে। হয়ত সে আল্লাহ তাআলার কোন হুকুম পালনের জন্য মুবাহ কোন কাজ করার জন্য ঋণ করেছে।

এই দলে শামিল হতে হলে তাকে মুসলিম হতে হবে, এমন ধনী হওয়া চলবে না যাতে সে তার ঋণ নিজেই শোধ করতে পারে। তার ঋণ গ্রহণ কোন পাপ কাজের জন্য হয়নি।

(২) অপরের উপকার করতে ঋণগ্রস্ত হওয়াঃ যেমন দুই ব্যক্তির মধ্যে আপোষ করতে। আর এই ক্ষেত্রে যাকাতের টাকা নেয়া যাবে। কারণ কুবাইসাহ বিন হিলালী (রাঃ) বলেনঃ আমি কোন ব্যক্তির ঋণের বোঝা গ্রহণ করেছিলাম। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে তাকে সে সম্বন্ধে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেনঃ তুমি এখানেই থেকে যাও যতক্ষণ না আমাদের নিকট যাকাত সাদাক্বার টাকা আসে। তখন তোমার ঋণ শোধের জন্য মাল দিতে বলব।

তারপর বললেনঃ হে কুবাইসাহ! অন্যের কাছে ভিক্ষা করা তিন ধরণের লোক ছাড়া অন্যের জন্য জায়েয নয়। যখন কোন ব্যক্তি অন্যকে উপকার করার উদ্দেশ্যে ঋণ গ্রহণ করে তখন তার জন্য অন্যের নিকট চাওয়া বৈধ। যখন উহা শোধ হয়ে যাবে, তখন আর চাইবে না।

(দ্বিতীয়) ঐ ব্যক্তি যার এত বেশী প্রয়োজন পড়েছিল যে, টাকা ধার ছাড়া চলে না, তখন তার জন্য ভিক্ষা করা হালাল যাতে করে সে কোনক্রমে বাঁচতে পারে।

(তৃতীয়) ঐ ব্যক্তি যাকে অভাব পাকড়াও করেছে। তারপর অবস্থা এমন দাড়িয়েছে যে, তার কাওমের কমপক্ষে তিন জন লোক বলেছে সত্যিই ঐ ব্যক্তি অন্নকষ্টে পড়েছে। তখন বাঁচার তাগিদে তার জন্য সাওয়াল করা জায়েয হবে। এর বাইরে যে সমস্ত ভিক্ষা করা হবে, কুবাইসা! তা হারাম। এ ধরণের সাওয়ালকারী হারাম দ্বারা পেট পূর্ণ করে। (বর্ণনায় মুসলিম ও আহমদ)

যাকাতের মাল দিয়ে মৃত ব্যক্তির ঋণও শোধ করা যায়। কারণ এক্ষেত্রে মালিকত্ব শর্ত নয়। এ ক্ষেত্রে তার পক্ষ থেকে আদায় করতে হবে। কারণ, আল্লাহ তাআলা তাদের পক্ষে যাকাত নির্দিষ্ট করেছেন, তাদের জন্য নয়।

৭। আল্লাহর রাস্তায়ঃ- ঐ সমস্ত লোক যারা দ্বীনের কাজ করে, সরকারী তহবিল হতে কোন বেতন পায় না। এই দলে গরীব ও ধনী উভয়েই শরিক হবে। এতে আরো আছে, যারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করবে তারাও। এতে অন্যান্য উত্তম কাজ শামিল হবে না। কারণ, আয়াতে এই দলকে আলাদা করার উদ্দেশ্য হচ্ছে তাতে পূর্বের দলগুলো অন্তর্ভুক্ত হবে না।

আল্লাহর রাস্তায় সমস্ত ধরণের জিহাদ শামিল হবে। যেমন চিন্তাভাবনার দ্বারা জিহাদ, যারা ইসলামের বিরুদ্ধাচারণ করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ইত্যাদি। আর যারা নানা ধরণের সন্দেহের দোলায় দুলছে তাদের সন্দেহ দূর করার জন্য যারা চেষ্টা-প্রচেষ্টা চালায় তারাও। যে সমস্ত ধ্বংসকারী দল ইসলামের ক্ষতি করছে তাদের বিরুদ্ধে যারা কাজ করে তারাও জিহাদ করে বলে গণ্য। যেমন প্রয়োজনীয় ইসলামী গ্রন্থ ছাপিয়ে বিলি করা, ভাল বিশ্বাসী ও মুখলিস লোকদের নিযুক্ত করা যার খৃষ্টান ও নাস্তিকদের কার্যকলাপের বিরুদ্ধাচরণ করবে।

কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ কর জান, মাল এবং কথার দ্বারা।

(বর্ণনায় আবু দাউদ)

৮। রাস্তার পথিকঃ- ঐ মুসাফির, যে তার দেশ হতে অন্য দেশে গেছে, কিন্তু টাকার অভাবে নিজ গৃহে ফেরত যেতে পারছে না। তাকে ঐ পরিমাণ যাকাত দেয়া যাবে যা দ্বারা সে নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন করতে পারে। তবে শর্ত হচ্ছে, তার এই সফর কোন পাপের জন্য হতে পারবে না।

বরং কোন ওয়াজিব, মুস্তাহাব বা মুবাহ কাজের জন্য হতে হবে। আরও শর্ত হল, যদি সে কোথাও থেকে কর্জ পায় তবে সে যাকাত নিতে পারবে না। ঐ ধরণের মুসাফির যারা বহুদিন অন্য দেশে থাকে, তার কোন প্রয়োজনে, তাকেও যাকাতের মাল দেয়া যাবে।

পরিশিষ্টঃ

যাকাত দেয়ার ক্ষেত্রে উপরক্ত সমস্ত ধরণের লোকদেরই দিতে হবে তা শর্ত নয়। বরঞ্চ মুস্তাহাব হচ্ছে প্রয়োজনীয়তা এবং উপকারিতা দেখে আদায় করা। এটা লক্ষ্য করবেন দেশের সরকার প্রধান, তার প্রতিনিধি বা যিনি যাকাত দিবেন তিনি।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন