hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ঈমান-ইসলামের মূলভিত্তি ও ইসলামী আকীদা বিশ্বাস

লেখকঃ মুহাম্মাদ বিন জামীল যাইনূ

৮০
বড় শিরকের শ্রেণী বিভাগ
প্রশ্নঃ আমরা কি মৃত অথবা অনুপস্থিত ব্যক্তিদের নিকট বিপদে উদ্ধার প্রার্থনা করব?

উত্তরঃ না, কখনো নয়। বরং সর্বাবস্থাতেই আমরা। চিরঞ্জীব আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করব।

১। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

(আরবি)

আর যারা আল্লাহ ছাড়া অন্যের নিকট দুআ করে, যারা কোন কিছুই সৃষ্টি করে না বরং তাদেরকেই সৃষ্টি করা হয়েছে। তারা মৃত, জীবিত নয়। আর তাদের একথাও জানা নেই যে, কখন তাদের পূনর্জীবিত করা হবে। (সূরা নাহাল ২০-২১)

২। আল্লাহ তাআলা আরও বলেনঃ

(আরবি)

আর যখন (বদরের প্রান্তে তোমরা তোমাদের রবের নিকট সাহায্য চেয়েছিলে তখন তিনি তোমাদের দুআ কবুল করেন। (সূরা আনফাল ৯)

৩। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

يا حي يا قيوم برحمتك أستغيث ( رواه الترمذي )

হে চিরজীব ! চিরস্থায়ী, আমরা একমাত্র আপনার রহমতের উসিলায় সাহায্য ভিক্ষা চাচ্ছি। (বর্ণনায় তিরমিযি হাসান)

প্রশ্নঃ আমরা কি জীবিতদের নিকট বিপদাপদে সাহায্য ভিক্ষা করব?

উত্তরঃ হ্যাঁ, যে সমস্ত ক্ষেত্রে তারা সাহায্য করার ক্ষমতা রাখে কেবল মাত্র সে সব ক্ষেত্রে তাদের নিকট সাহায্য চাবো। যেমন আল্লাহ তাআলা মুসা (আঃ) সম্পর্কে বলেনঃ

(আরবি)

ঐ ব্যক্তি, যিনি তার (মুসার) দলের ছিল। সে তার নিকট সাহায্য চাইল তার শত্রুর বিরুদ্ধে। তখন মূসা তাকে এমন এক ঘুষি মারল যার কারণে তার মৃত্যু হয়। (সূরা ক্বাসাস ১৫)

প্রশ্নঃ আল্লাহ ছাড়া অন্যের কাছে সাহায্য চাওয়া কি বৈধ (জায়েয)?

উত্তরঃ ঐ সমস্ত কাজ যা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো দ্বারা সমাধান করা সম্ভব নয় তাতে সাহায্য চাওয়া জায়েয নেই।

আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

(আরবি)

আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং একমাত্র তোমার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি। (সূরা ফাতিহা ৫)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

إذا سألت فاسأل الله وإذا استعنت فاستعن بالله ( رواه الترمذي )

যখন প্রার্থনা কর তখন একমাত্র আল্লাহর নিকটই কর। আর যখন সাহায্য চাও তখন একমাত্র তারই নিকট সাহায্য চাও। (বর্ণনায় তিরমিযী হাসান সহীহ)

প্রশ্নঃ আমরা জীবিতদের নিকট কোন ধরণের সাহায্য ভিক্ষা করব?

উত্তরঃ যে সমস্ত কাজে জীবিত ব্যক্তি সাহায্য করতে সমর্থ যেমনঃ কর্জ দেয়া, আর্থিক বা দৈহিকভাবে সাহায্য করা ইত্যদি।

আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

(আরবি)

এবং তোমরা একে অপরকে সাহায্য কর উত্তম কাজ ও তাকওয়ার ক্ষেত্রে।

(সূরা মায়িদা ২)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

والله فى عون العبد ماكان العبد فى عون اخيه ( رواه مسلم )

আল্লাহ তাআলা তার বান্দাকে ততক্ষণ পর্যন্ত সাহায্য করেন যতক্ষণ পর্যন্ত সে তার ভাইকে সাহায্য করে। (বর্ণনায় মুসলিম)

আর রোগ মুক্তি, রিযিক, হিদায়েত এবং এই জাতীয় জিনিসগুলো আল্লাহ ছাড়া অন্যের নিকট চাওয়া যাবে না। জীবিত ব্যাক্তিরা এই জাতীয় কার্য করতে যেমন সামর্থ রাখে না তেমনি মৃত্যুদেরতো তা করার প্রশ্নই আসে না।

আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

(আরবি)

যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন তিনিই আমাকে হিদায়েত দান করেন। তিনি আমাকে খাওয়ান এবং পান করান। আর যখন অসুস্থ হই তখন তিনিই আমাকে সুস্থ করেন। (সূরা শুআরা ৭৮-৮০)

প্রশ্নঃ আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে নযর (মানত) দেয়া জায়েয আছ কি?

উত্তরঃ আল্লাহ ছাড়া অন্যকে মানত দেয়া আদৌ জায়েয নেই বরং ইহা বড় শিরকের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তাআলা এমরান বিবির জবানীতে বলেনঃ

(আরবি)

হে আমার রব, আমার পেটে যে সন্তান আছে তা আমি তোমার নামে মানত করে মুক্ত করে দিলাম। (দ্বীনের কাজে)। (সুরা আল ইমরান ৩৫)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

من نذر ان يطيع الله فليطيعه ومن نذران يعصيه فلايعصيه ( رواه البخاري )

যে ব্যক্তি আল্লাহর আনুগত্য করার জন্য কোন মানত করে সে যেন অবশ্যই তা পালন করে। আর যে মানত করে আল্লাহর সাথে অবাধ্যতার কোন কাজ, তবে সে যেন তা আদায় না করে। (বর্ণনায় বুখারী)

প্রশ্নঃ আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে যবেহ করা জায়েয আছে কি?

উত্তরঃ না জায়েয নেই। কারণ, আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

(আরবি)

তুমি তোমার রবের জন্য সালাত আদায় কর এবং যবেহ কর। (সূরা কাওসার ২)

রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

لعن الله من ذبح لغير الله ( رواه مسلم )

যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে যবেহ করে তার উপর আল্লাহর লানত বর্ষিত হয়। (বর্ণনায় মুসলিম)

এ জন্য কবর, মাজার, দরগাহ জাতীয় কোন জায়গা অথবা দর্শনীয় কোন বস্তুর নিকট যবেহ করা জায়েয নয়, যদিও তা আল্লাহর নামে যবেহ করা হয়। উহা মুশরিকদের কাজ।

রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

من تشبه بقوم فهو منهم ( رواه أبو داود )

যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের অনুসরণ করবে সে তাদের অন্তর্ভুক্ত। (বর্ণনায় আবুদাউদ)

প্রশ্নঃ আমরা কি আল্লাহর নৈকট্য হাসিল করার জন্য কবরের চারিদিকে তাওয়াফ করব?

উত্তরঃ না, আল্লাহর ঘর কাবা ব্যতীত অন্য কোন স্থানের চারিদিকে তাওয়াফ করব না। কারণ উহা আল্লাহর হুকুম। যেমন আল্লাহ বলেনঃ

(আরবি)

এবং তারা যেন আল্লাহর ঘরে (চতুর্দিকে) তাওয়াফ করে। (সূরা হজ ২৯)

আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

من طاف بالبيت سبعا وصلى ركعتين كان كعتق رقبة ( رواه ابن ماجه )

যে ব্যক্তি আল্লাহর ঘরে তাওয়াফ করে এবং তাওয়াফ শেষে দুই রাকাআত সালাত আদায় করে সে যেন একটি গোলাম আযাদ করল। (ইবনে মাজাহ, ছহীহ)

প্রশ্নঃ যাদুর হুকুম কি?

উত্তরঃ যাদু কবিরা গুনাহের অন্তর্ভক্ত। অনেক ক্ষেত্রে উহা কুফরী পর্যায়েও চলে যায়।

আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

(আরবি)

কিন্তু শয়তানেরা কুফরী করেছিলো এবং মানুষদের যাদু শিক্ষা দিত।

( সূরা বাক্বারাহ,১০২)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

اجتنبوا السبع الموبقات : الشرك بالله والسحر ( رواه مسلم )

তোমরা সাতটি ধ্বংসকারী কাজ হতে নিজেদেরকে বিরত রাখ- আল্লাহর সাথে শিরক করা, যাদু ... (বর্ণনায় মুসলিম)

কখনো কখনো যাদুর কারণে মুশরিক কিংবা কাফির হয়ে যায় অথবা ফাসাদ সৃষ্টিকারী হয়। তখন আমাদের উপর ওয়াজিব হল তার বিচার করে হত্যা করা। তার যাদুর কর্ম তৎপরতা মোতাবেক শাস্তি দেয়া যাবে। কারণ যাদুকর যাদুর মাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চায়। অথবা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চায়, অথবা কারও জীবন নাশ করতে চায়। বিংবা কারও বুদ্ধি ভ্রান্ত করে পাগল বানাতে চায়। এ কারণে তাকে শাস্তি দেয়া হবে।

প্রশ্নঃ আমরা জ্যোতিষী ও ভবিষ্যৎ বক্তাদের (গণক, হস্তরেখাবিদ) কথাকে বিশ্বাস করব?

উত্তরঃ না, কখনো নয়। আমরা তাদের কথাকে আদৌ বিশ্বাস করব না। গায়েবী সংবাদ যেন কেউ বিশ্বাস না করে। এ ব্যাপারে আল্লাহ তালা তার কোরআনে বলেনঃ

(আরবি)

আপনি বলুন, আল্লাহ ব্যতীতে গায়েবী খবর আসমান ও যমীনের কেউ জান না। (সূরা নামাল ৬৫)

ঐ ধরণের কথা বিশ্বাস করা নিজেদের উপর কত বড় জুলুম তারই প্রতি ঈঙ্গিত করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

من اتى عرافا او كاهنا فصدقه بما يقول فقد كفر بما أنزل على محمد

( رواه احمد )

যে ব্যক্তি জ্যোতিষী (গণক) অথবা জ্বিন পূজারীদের কাছে যাতায়াত করে এবং তারা যা বলে উহা বিশ্বাস করে নিশ্চয় সে ব্যক্তি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করল। (বর্ণনায় আহমদ)

প্রশ্নঃ গায়েবের খবর কেউ জানে কি?

উত্তরঃ আল্লাহ ছাড়া কারো গায়েবের খবর জানা নেই। এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

(আরবি)

আল্লহর নিকট গায়েবের চাবিসমূহ রয়েছে, উহা আল্লাহ ব্যতীত কেউ জানে না। (সূরা আনআম ৫৭)

প্রশ্নঃ ইসলাম পরিপন্থী আইন মোতাবেক বিচারকারীর হুকুম কি?

উত্তরঃ যে বা যারা আল্লাহ প্রদত্ত আইনে বিচার-ফয়সালা করা বর্তমান সময়োপযোগী না হওয়ার আক্বীদা পোষণ করে অথবা ইসলামী আইনকে অনুপযুক্ত হওয়ার প্রতি বিশ্বাস রাখে তারা যেন কুফরী করল এবং ইসলাম থেকে বের হয়ে গেল। তাদের প্রতি কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ করে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

(আরবি)

আল্লাহ তাআলা যা অবতীর্ণ করেছেন ঐ মোতাবেক যারা বিচার করে না তারা কাফির (সূরা মায়িদাহ ৪৪)

আল্লাহর আইনের অবাধ্যকারীদের পরবর্তী পরিণাম সম্পর্কে সাবধান করে দিয়ে নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

وما لم تحكم أئمتهم بكتاب الله ويتخيروا مما أنزل الله إلا جعل بأسهم بينهم

আর যখন তাদের নেতা ও প্রধানরা আল্লাহর আইন মুতাবেক বিচার করে না অথবা আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন উহার কিছু গ্রহণ করবে এবং কিছু ছেড়ে দেবে তখনই তাদের মধ্যে আপোষের সন্ত্রাস সৃষ্টি করে দেবেন। (বর্ণনায় ইবনে মাজাহ)

প্রশ্নঃ ইলহাদ কি এবং ইলহাদের ব্যাপারে ইসলামের মতামত কি?

উত্তরঃ ইলহাদ, যানদাকার মানে হচ্ছে ধর্মদ্রোহীতা। তা হল, আল্লাহ্ প্রদত্ত পথ, নীতি ও আদর্শ বর্জন করে বিভ্রান্ত ও মেকী আদর্শের প্রতি ঝুকেঁ যাওয়া এবং নানা অজুহাতে আল্লাহ তাআলার হুকুমের উল্টো পথে নিপতিত হওয়া। তাই আল্লাহ তাআলা প্রদত্ত তাওহীদের পথকে উপেক্ষা করে যারা সন্দেহজনক কথা বলে এবং দ্বীন সম্পর্কে যারা বিকৃত ব্যাখ্যা প্রদান করে তাদেরকে বলা হয় নাস্তিক। এর বিভিন্ন শাখা প্রশাখার মধ্যে আছে-আল্লাহ্ রাব্বুলআলামীনের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা অথবা অন্য কাউকে আল্লাহর সমতুল্য মনে করে তাকে উপাস্য করে কিছু চাওয়া ও সম্মান করা, অথবা ঐ গাইরুল্লাহর পক্ষ হতে আল্লাহর শরীয়ত বিরোধী রচিত আহবান কিংবা ব্যাখ্যাকে কবুল করা। যে ব্যক্তি তার বিভ্রান্ত শিক্ষা অথবা সীমিত জ্ঞান ও খেয়াল খুশিমতে কোরআন এবং হাদীসের প্রকাশ্য অর্থ বিকৃত করল সেও তাদের অন্তর্ভুক্ত। যে ব্যক্তি আল্লাহ তালার গুণবাচক নাম ও গুণাবলীর মধ্যে এবং কোরআনের আয়াত ও রাসূলের হাদীসের ব্যাপারে সীমা লংঘন করল সেই নাস্তিক। এদের ব্যাপারে কঠোর বাণী উচ্চারণ করে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

(আরবি)

আল্লাহর সুন্দর সুন্দর নাম রয়েছে। ঐ সমস্ত নামের উসিলায় তার নিকট দু’আ কর। যারা তার নামসমূহকে অস্বীকার করে তাদেরকে তোমরা পরিত্যাগ কর। তাদের ঐ কৃতকর্মের প্রতিফল অতি সত্বরই দেয়া হবে। (সূরা আ’রাফ১৮০)

ইমাম কাতাদাহ্ (রঃ) বলেনঃ “ইলহাদ” অর্থ আল্লাহর সাথে শিরক করা। ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ “ইলহাদ” অর্থ মিথ্যা।

আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

(আরবি)

নিশ্চয় যারা আমার আয়াতসমূহকে (ইলহাদ) অস্বীকার করে তারা আমার কাছ থেকে গোপন নয়। (সূরা ফুসসিলাত ৪০)

ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ “ইলহাদ” হচ্ছে আল্লাহর বাণীর মর্ম ঘুরিয়ে বলা।

ইমাম কাতাদাহ (রঃ) এবং অন্যান্য তাফসীরকারকগণ বলেনঃ উহার অর্থ হচ্ছে কুফরী করা এবং সঠিক নীতি হতে মুখ ঘুরিয়ে নেয়া। (তাফসীরে ইবনে কাসির)

অনুরূপভাবে, মুলহিদ ঐ ব্যক্তি, যে মনে করে যে, ইসলামী শরীয়া সব ধরণের সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম নয় এবং এ ধারণার বশবর্তী হয়ে তারা তাদের নিজেদের ভ্রান্ত বিবেক প্রসূত আইন ধারা সমস্যার মোকাবিলা করতে চায়। সে এ ক্ষেত্রে তার বুদ্ধি বিবেককে ইসলামের তথা আল্লাহর আইনের উপরে প্রাধান্য দিল। উপরোক্ত পর্যালোচনা থেকে আমরা দেখতে পাই যে, ইলহাদ বা নাস্তিকতা বিভিন্ন ধরণের, তাদের বিভিন্ন নাস্তিকতা মুলত আমলের কারণে। তারা হল-

১। এক ধরণের নাস্তিক হচ্ছে তারা, যারা জগতের প্রতিপালক এবং ব্যবস্থাপককে অস্বীকার করে এবং আল্লাহ তাআলার সুন্দর সুন্দর নাম ও গুণাবলীকেও অস্বীকার করে। এ ধরণের নাস্তিক কাফির।

২। আর এক ধরণের নাস্তিক হল ঐ ব্যক্তি, যে আল্লাহকে ছেড়ে গাইরুল্লাহকে ডাকে, মৃতের নিকট সাহায্য কামনা করে- যা প্রকৃত পক্ষে প্রকাশ্য শিরক এবং ইসলামের অন্যান্য সৎ আমল সমূহকে ধ্বংস করে দেয়। এ ধরণের লোকদের জন্য জাহান্নাম অবধারিত যদি তারা মৃত্যুর পূর্বে আল্লাহর কাছে তাওবা না করে এবং খাটি দ্বীনের রাস্তায় প্রত্যাবর্তন না করে।

৩। অন্য আর এক শ্রেণীর নাস্তিক হল তারা, যারা আল্লাহর কিতাব এবং সহীহ সুন্নাতে সুসাব্যস্ত থাকা সত্ত্বে ও আল্লাহর নাম ও সিফতকে বিকৃত অর্থে ব্যবহার করে থাকে এ ধরণের লোক প্রকাশ্য গোমরাহীর মধ্যে আছে।

হে আল্লাহ! আপনি আমাদের সমস্ত ধরণের নাস্তিকতা থেকে রক্ষা করুন।

প্রশ্নঃ আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে?

উত্তরঃ যদি এধরণের প্রশ্ন মনে উদয় হয় তাহলে মনে করবে, শয়তানের কু-প্ররোচনার কারণে এ প্রশ্ন উদয় হয়েছে। তখন আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বানির রাজীম বলবে।

আল্লাহ তাআলা উপদেশ দিয়ে বলেনঃ

(আরবি)

আর যদি শয়তানের পক্ষ থেকে আপনি কিছু কু-মন্ত্রণা অনুভব করেন,তবে আল্লাহর শরণাপন্ন হউন। নিশ্চয়ই তিনি সব কিছু শুনেন ও জানেন)। (সূরা ফুসিসলাত,৩৬)

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন কিভাবে আমরা শয়তানের কু মতলব মন থেকে দূর করবো। তিনি বলতে বলেছেন-আমানতু বিল্লাহি ওয়া রুসুলিহি, আল্লাহু আহাদ, আল্লাহু সামাদ, লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইয়ুলাদ, ওয়া লাম ইয়া কুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ। তারপর বাম দিকে তিনবার থুতু ফেলবো এবং আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতা নির রাজীম বলব এবং ঐ রূপ কু-ধারণা থেকে বিরত থাকব। এভাবে মন থেকে শয়তানের কুমন্ত্রণা দূর হয়ে যাবে। (বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম)

আবু দাউদ, আহমাদে বর্ণিত সহীহ হাদীসের সংক্ষেপ সার হল এই যে, ঐ সাথে এ কথাও বলা প্রয়োজন- আল্লাহ আমাদের স্রষ্টা, সব কিছুর স্রষ্টা-আল্লাহু খালেকুন।

তিনি এক, তার পূর্বে কোন কিছুই নেই।

রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

اللهم انت الاول فلا شئ قبلك : ( رواه مسلم )

হে আল্লাহ্! আপনি প্রথম। আপনার পূর্বে কোন কিছু ছিল না। (বর্ণনায় মুসলিম)

প্রশ্নঃ ইসলাম পূর্ব যুগে মুশরিকদের আক্বীদা কি ছিল?

উত্তরঃ জাহেলীয়াত যুগে আল্লাহর নৈকট্য লাভ এবং আল্লাহর কাছে সুপারিশ করার জন্য তারা তাদের মনোনীত অলিদের (তাদের ধারণায়) নিকট প্রর্থনা করত। আল্লাহর কিতাবের অনুসারী না হয়ে বরং নিছক নিজেদের খেয়াল খুশি মত তারা বিভিন্ন জিনিসের পূজা করত আর বলত যে, এরাই আল্লাহর তরফ থেকে কোন বিপদ এলে তখন সাহায্য করবে।

আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ

(আরবি)

যারা আল্লাহ ব্যতীত অন্যদের উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছে এবং বলে যে, আমরা তাদেরে ইবাদত করি এইজন্য যেন তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেয়। (সূরা যুমার ২)

আল্লাহ অন্যত্র বলেনঃ

(আরবি)

তারা আল্লাহকে ছেড়ে এমন কাউকে ডাকে যে না পারে তাদের কোন ক্ষতি করতে, আর না পারে কোন উপকার করতে। তারা বলে, এরা আল্লাহর নিকট আমাদের সুপারিশকারী। (সুরা ইউনূস ১৮)

বর্তমান যামানায় কিছু কিছু মুসলিম নামধারী মুশরিকদের অনুকরণ করে কবরের কাছে দিয়ে মৃতদের এই উদ্দেশ্যে ডাকে যে, তারা (মৃতরা) তাদের উপকার করবে, আল্লাহর নৈকট্য লাভ করাবে, কিংবা যা একমাত্র আল্লাহর অধিকারে যথাঃ রোগ মুক্ত, বিপদাপদ থেকে উদ্ধার ইত্যাদি, তা তারা দান করবে।

প্রশ্নঃ ভয় কি ? উহার শ্রেণী বিভাগ কি কি?

উত্তরঃ উহা হচ্ছে হৃদয়ের মধ্যস্থিত এক ধরণের অনুভূতি। উহা দুই শ্রেণীর – (১) আন্তরিকভাবে বিশ্বাস স্থাপন করতঃ ভয় করা। (২) স্বাভাবিক বা বাহ্যিক কারণে ভয়।

প্রথমটাকে বলা যায় আক্বীদাগত বা বিশ্বাসের কারণে ভয়ঃ উহা হল এ ধরণের যে, মৃত ব্যক্তিরা ক্ষতি করবে, বিপদে ফেলবে, জানমালের ক্ষতি করবে এরূপ বিশ্বাস দৃঢ়ভাবে মনে পোষণ করা। ইহা বড় শিরকের পর্যায়ভূক্ত এবং শয়তানের কার্যকলাপ। আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ

(আরবি)

উহা তো একমাত্র শয়তানের কাজ, যে তার বন্ধুদের ভয় প্রদর্শন করে। তাই, তোমরা যদি সত্যিকারভাবে মুমিন হয়ে থাক তাহলে তাদেরকে ভয় করোনা বরং আমাকেই ভয় কর। (সূরা আল-ইমরা ১৭৫)

অর্থাৎ শয়তানের পূজারীরা তোমাদের এ বলে ভয় দেখায় যে, ঐ সব মৃত ব্যক্তিরা বড় ভয়ানক ও শক্ত ক্ষমতার অধিকারী। যখন তোমাদের মন মস্তিষ্ক ও চিন্তা ধারায় শয়তান এইরূপ কথা সাজাবে এবং কু-ধারণায় নিপতিত করবে তখন তোমরা একমাত্র আমার উপর ভরসা কর এবং আমারই সাহয্য চাও। নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য যথেষ্ট এবং ঐ সমস্ত শয়তানী দলের বিরুদ্ধে আমি তোমাদের সাহায্যকারী। (ইবনে কাসির)

মৃতদের পক্ষ থেকে ক্ষতির আশংকা মনে বদ্ধমূল হয় শয়তানের প্ররোচনার কারণে। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

(আরবি)

আল্লাহ কি তার বান্দার জন্য যথেষ্ট নন? অথচ তারা তোমাকে অন্য মা’বুদদের (গাইরুল্লাহ) ভয় দেখায়। (সূরা যুমার ৩৬)

অর্থাৎ মুশরিকরা রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তাদের ঐ সমস্ত মূর্তি ও দেবতাদের ভয় দেখাতো, যারা ছিল মৃত, আর যাদেরকে তারা অজ্ঞতা ও গোমরাহীর কারণে ডাকতো।

(ইবনে কাসির)

অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

(আরবি)

আমরা তো মনে করি যে, আমাদের মা’বুদগুলোর কেউ তোমার মাথা খারাপ করে দিয়েছে। তাই তুমি আমাদের ধর্মের বিপরীত কথা বলছো। (সূরা হুদ ৫৪)

অর্থাৎ, কাফিররা মনে করত যে, তাদের মাবুদদের অস্বীকার করার কারণে কোন মাবুদ হুদ (আঃ) এর বিবেকের মধ্যে গোলমাল ও পাগল করে দিয়েছে। এর উত্তরে হুদ (আঃ) বলেনঃ

(আরবি)

আমি আল্লাহকে স্বাক্ষী রাখছি এবং তোমরাও স্বাক্ষী থেক যে, তোমরা যে গাইরুল্লাহর ইবাদত করছ উহা হতে আমি মুক্ত। সুতরাং তোমরা সকলে মিলে (গাইরুল্লাহসহ) আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাক এবং আমাকে কিছুমাত্র অবকাশ দিওনা। (সূরা হুদ ৫৪-৫৫)

লেখক বলেনঃ মৃত ব্যক্তি কোন ক্ষমতার অধিকারী-একথা ধারণা করা বড় শিরক। এর দলিল উপরোক্ত আয়াত। কিছু কিছু মুসলিম শিরকে পতিত হয়েছে মৃতদেরকে ভয় করার কারণে। অথচ ঐ মৃতরা নিজেদের রক্ষা করতেই অক্ষম, তারা আবার অন্যের ক্ষতি করবে এটা তো অবাস্তব ধারণা। মৃত ব্যক্তিদের অবস্থা এরূপ যে, তাদের অবস্থানের স্থলে যদি আগুন লেগে যায় তবে সেখান থেকে পালাতে ও সক্ষম হবে না, বরং পুড়ে যাবে।

স্বাভাবিক ভয়ঃ স্বাভাবিক ভয় বলতে কোন যালিম অত্যাচারীকে ভয় করা অথবা কোন হিংস্র পশুকে ভয় করা ইত্যাদি বুঝায়। ইহা শিরকের অন্তর্ভূক্ত নয়। আল্লহ্ তালা বলেনঃ

(আরবি)

(যাদুকরদের যাদু দেখে) মূসা ভয় পেয়ে গেল। (সূরা ত্বাহা ৬৭)

অন্যত্র দেখতে পাই যে, মূসা (আঃ) কে যখন আল্লাহ তাআলা ফিরাউনকে হিদায়েতের জন্য পাঠালেন তখন মূসা (আঃ) বলেনঃ

(আরবি)

আমার উপর তাদের এক অন্যায় দাবী আছে, যে কারণে আমি ভয় করছি যে, তারা আমায় মেরে ফেলতে পারে। (সূরা শু’আরা ১৪)

প্রশ্নঃ মৃতদের মসজিদে দাফন করার ব্যাপারে হুকুম কি?

উত্তরঃ মসজিদ হচ্ছে আল্লাহর ঘর। সেখানে কাউকে দাফন করা হারাম। আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ

(আরবি)

নিশ্চয় মসজিদসমূহ আল্লাহর। তাই সেখানে আল্লাহ্ ছাড়া অন্যের নিকট দু’আ করো না। (সূরা জিন, ১৮)

রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরূপ আমলকারীদের সাবধান বাণী উচ্চারণ করে বলেনঃ

لعن الله اليهود والنصارى اتخذوا قبور أنبيائهم مساجدا ( متفق عليه )

ইয়াহুদী ও খৃষ্টানদের উপর আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হউক। কারণ, তারা নবীদের কবরগুলোকে মসজিদ বানিয়েছিল। (বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম)

প্রশ্নঃ কররের দিকে সালাত আদায় করা জায়েয কি?

উত্তরঃ না, জায়েয নয়। কারণ, আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

(আরবি)

আপনি আপনার মুখকে মসাজিদুল হারামের দিকে ফিরান। (সূরা বাক্বারাহ ১৪৪)

রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

ِلاتصلوا إلى القبور ولا تجلسوا عليها ( رواه مسلم )

তোমরা কবরের দিকে সালাত আদায় কর না, আর না তার উপর উপবেশন কর। (বর্ণনায় মুসলিম)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন