HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
মুমিনের আমল ও চরিত্র যেমন হওয়া উচিত
লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী
اَلْحَمْدُ للهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلٰى رَسُوْلِهٖ مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰلِهٖ وَصَحْبِهٖ اَجْمَعِيْنَ
‘মুমিনের আমল ও চরিত্র যেমন হওয়া উচিত’ বইটি বের করতে পেরে মহান আল্লাহর অগণিত শুকরিয়া আদায় করছি। দরূদ ও সালাম পেশ করছি বিশ্বনবী মুহাম্মাদ ﷺএর উপর এবং তাঁর পরিবার-পরিজন ও সকল সাহাবায়ে কেরামের উপর।
আল্লাহ তা‘আলার উপর যখন কেউ ঈমান আনে তখন তার উপর আমলের গুরুত্ব দেখা দেয়। কারণ ঈমান ও আমলের উদাহরণ হল চাবি ও তার দাঁতের সাথে। চাবির দাঁত না থাকলে যেমন তালা খুলে না, অনুরূপভাবে ঈমানের সাথে নেক আমল না থাকলে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায় না। এজন্য পবিত্র কুরআনে ঈমান আনার সাথে সাথে নেক আমলের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। আর আল্লাহর ভালবাসা পেতে হলে ফরজ ইবাদাতসমূহের উপর আমল তো করতেই হবে, সাথে সাথে নফল আমলের ব্যাপারেও গুরুত্ব দিতে হবে। এক হাদীসে এসছে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘আমার বান্দা নফল ইবাদাতের মাধ্যমে আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকে, শেষ পর্যন্ত আমি তাকে ভালবাসতে আরম্ভ করি।’’
আর আমল কবুল হওয়ার জন্য শর্ত হল আল্লাহর রাসূল ﷺ যেভাবে আমল করেছেন ঠিক সেভাবে আমল করা এবং রাসূলের চরিত্রে চরিত্রবান হওয়া। কারণ মানুষের চরিত্রে এমনও কুঅভ্যস রয়েছে যা তার সারাজীবনের নেক আমলগুলোকে বরবাদ করে দেয়।
মহান আল্লাহর মেহেরবানীতে কুরআন ও হাদীসের আলোকে আমরা এ কিতাবে নেক আমল ও নেক চরিত্র সম্পর্কে কিছুটা আলোচনা করেছি। আশা করি পাঠকসমাজ বইটির মাধ্যমে অনেক উপকৃত হবেন। ইনশা-আল্লাহ!
বইটি প্রকাশনার কাজে যারা যেভাবে সহযোগিতা করেছেন আল্লাহ তা‘আলা যেন সবাইকে উত্তম বিনিময় দান করেন এবং আমাদেরকে সঠিকভাবে বেশি বেশি নেক আমল করার ও উত্তম চরিত্র গঠন করার তাওফীক দান করেন আর এর ওসীলায় আমাদেরকে দুনিয়াতে শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির ফয়সালা করে দেন। আমীন!!
বিনীত
শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী
চেয়ারম্যান
ইমাম পাবলিকেশন্স লিমিটেড
‘মুমিনের আমল ও চরিত্র যেমন হওয়া উচিত’ বইটি বের করতে পেরে মহান আল্লাহর অগণিত শুকরিয়া আদায় করছি। দরূদ ও সালাম পেশ করছি বিশ্বনবী মুহাম্মাদ ﷺএর উপর এবং তাঁর পরিবার-পরিজন ও সকল সাহাবায়ে কেরামের উপর।
আল্লাহ তা‘আলার উপর যখন কেউ ঈমান আনে তখন তার উপর আমলের গুরুত্ব দেখা দেয়। কারণ ঈমান ও আমলের উদাহরণ হল চাবি ও তার দাঁতের সাথে। চাবির দাঁত না থাকলে যেমন তালা খুলে না, অনুরূপভাবে ঈমানের সাথে নেক আমল না থাকলে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায় না। এজন্য পবিত্র কুরআনে ঈমান আনার সাথে সাথে নেক আমলের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। আর আল্লাহর ভালবাসা পেতে হলে ফরজ ইবাদাতসমূহের উপর আমল তো করতেই হবে, সাথে সাথে নফল আমলের ব্যাপারেও গুরুত্ব দিতে হবে। এক হাদীসে এসছে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘আমার বান্দা নফল ইবাদাতের মাধ্যমে আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকে, শেষ পর্যন্ত আমি তাকে ভালবাসতে আরম্ভ করি।’’
আর আমল কবুল হওয়ার জন্য শর্ত হল আল্লাহর রাসূল ﷺ যেভাবে আমল করেছেন ঠিক সেভাবে আমল করা এবং রাসূলের চরিত্রে চরিত্রবান হওয়া। কারণ মানুষের চরিত্রে এমনও কুঅভ্যস রয়েছে যা তার সারাজীবনের নেক আমলগুলোকে বরবাদ করে দেয়।
মহান আল্লাহর মেহেরবানীতে কুরআন ও হাদীসের আলোকে আমরা এ কিতাবে নেক আমল ও নেক চরিত্র সম্পর্কে কিছুটা আলোচনা করেছি। আশা করি পাঠকসমাজ বইটির মাধ্যমে অনেক উপকৃত হবেন। ইনশা-আল্লাহ!
বইটি প্রকাশনার কাজে যারা যেভাবে সহযোগিতা করেছেন আল্লাহ তা‘আলা যেন সবাইকে উত্তম বিনিময় দান করেন এবং আমাদেরকে সঠিকভাবে বেশি বেশি নেক আমল করার ও উত্তম চরিত্র গঠন করার তাওফীক দান করেন আর এর ওসীলায় আমাদেরকে দুনিয়াতে শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির ফয়সালা করে দেন। আমীন!!
বিনীত
শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী
চেয়ারম্যান
ইমাম পাবলিকেশন্স লিমিটেড
কেউ যদি আল্লাহর পথের পথিক হতে চায় এবং আল্লাহর নৈকট্য, রহমত, বরকত ও নাজাত কামনা করে, তাহলে তাকে নিম্নের বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে।
প্রথমত :
বিশুদ্ধভাবে তাওহীদ ও রিসালাতের উপর ঈমান আনতে হবে। সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ী ও তাবে-তাবেয়ীগণের আকীদা বা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকীদা অনুযায়ী নিজের আকীদা গঠন করতে হবে। পরবর্তী যুগের বিদআত ও বানোয়াট আকীদা বর্জন করতে হবে। সাথে সাথে সকল প্রকার শিরক, কুফর, ও বিদআত থেকে আত্মরক্ষা করতে হবে।
দ্বিতীয় :
ফরজ ইবাদাতসমূহ বিশুদ্ধভাবে পালন করার সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে। সকল প্রকার কাবীরা গুনাহ ও হারাম কাজ বর্জন করতে হবে। সকল প্রকার হারাম উপার্জন পরিহার করতে হবে। কোন মানুষ অথবা প্রাণীর হক বা অধিকার নষ্ট করা বা ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
তৃতীয়ত :
মনকে হিংসা-বিদ্বেষ, ঘৃণা, অহংকার ও জাগতিক লোভ-লালসা থেকে যথাসম্ভব পবিত্র রাখার জন্য সর্বদা চেষ্টা করতে হবে। এজন্য সর্বদা আল্লাহর দরবারে তাওফীক চেয়ে দো‘আ করতে হবে।
চতুর্থত :
নফল ইবাদাত বেশি বেশি পালনের চেষ্টা করতে হবে। মানুষের সেবা, উপকার ও সাহায্য এসব কাজ যথাসম্ভব বেশি বেশি করে করতে হবে। নফল নামায যথাসম্ভব বেশি আদায়ের চেষ্টা করতে হবে এবং দৈনন্দিন সকল কাজে রাসূল ﷺ এর সুন্নাতের অনুসরণ করতে হবে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّوْنَ اللهَ فَاتَّبِعُوْنِي يُحْبِبْكُمُ اللهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ وَ اللهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ
‘‘(হে নবী) আপনি বলে দিন, যদি তোমরা আল্লাহর ভালবাসা পেতে চাও তবে আমার অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের গুনাহসমূহ ক্ষমা করবেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।’’ (সূরা আলে ইমরান- ৩১)
প্রথমত :
বিশুদ্ধভাবে তাওহীদ ও রিসালাতের উপর ঈমান আনতে হবে। সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ী ও তাবে-তাবেয়ীগণের আকীদা বা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকীদা অনুযায়ী নিজের আকীদা গঠন করতে হবে। পরবর্তী যুগের বিদআত ও বানোয়াট আকীদা বর্জন করতে হবে। সাথে সাথে সকল প্রকার শিরক, কুফর, ও বিদআত থেকে আত্মরক্ষা করতে হবে।
দ্বিতীয় :
ফরজ ইবাদাতসমূহ বিশুদ্ধভাবে পালন করার সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে। সকল প্রকার কাবীরা গুনাহ ও হারাম কাজ বর্জন করতে হবে। সকল প্রকার হারাম উপার্জন পরিহার করতে হবে। কোন মানুষ অথবা প্রাণীর হক বা অধিকার নষ্ট করা বা ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
তৃতীয়ত :
মনকে হিংসা-বিদ্বেষ, ঘৃণা, অহংকার ও জাগতিক লোভ-লালসা থেকে যথাসম্ভব পবিত্র রাখার জন্য সর্বদা চেষ্টা করতে হবে। এজন্য সর্বদা আল্লাহর দরবারে তাওফীক চেয়ে দো‘আ করতে হবে।
চতুর্থত :
নফল ইবাদাত বেশি বেশি পালনের চেষ্টা করতে হবে। মানুষের সেবা, উপকার ও সাহায্য এসব কাজ যথাসম্ভব বেশি বেশি করে করতে হবে। নফল নামায যথাসম্ভব বেশি আদায়ের চেষ্টা করতে হবে এবং দৈনন্দিন সকল কাজে রাসূল ﷺ এর সুন্নাতের অনুসরণ করতে হবে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّوْنَ اللهَ فَاتَّبِعُوْنِي يُحْبِبْكُمُ اللهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ وَ اللهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ
‘‘(হে নবী) আপনি বলে দিন, যদি তোমরা আল্লাহর ভালবাসা পেতে চাও তবে আমার অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের গুনাহসমূহ ক্ষমা করবেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।’’ (সূরা আলে ইমরান- ৩১)
সকল মুমিন নর-নারীর উচিত দিন ও রাতের প্রতিটি কাজ-কর্মকে আল্লাহর ইবাদাতে পরিণত করা এবং সর্বদা আল্লাহর স্মরণ ও যিকির অন্তরে জাগ্রত রাখা। মুমিন বান্দার প্রতিটি কাজ নেক আমলে পরিণত হয়ে যায় যদি তা আল্লাহর হুকুম ও নবী ﷺএর সুন্নাত অনুযায়ী সম্পাদিত হয়। তাই প্রতিটি কাজ আমরা আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ এবং রাসূল ﷺএর তরিকা অনুযায়ী সম্পাদন করার চেষ্টা করব। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে সে তাওফীক দান করুন। আমীন!
মুমিন বান্দা ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার পর দু’হাত দ্বারা চোখ ও মুখ মুছে নেবে, যেন ঘুমের প্রভাব দূর হয়ে যায়। আল্লাহর রাসূল ﷺ তা-ই করতেন।
(শামায়েলে তিরমিযী)
মুমিন বান্দা ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবে :
ঘুম একধরনের মৃত্যু। আল্লাহ তা‘আলা যখন বান্দাকে সেই মৃত্যু থেকে জীবিত করলেন এবং নতুন আরো একটি দিন তাকে উপহার দিলেন, সেজন্য বান্দা প্রথমেই আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবে এভাবে-
اَلْحَمْدُ للهِ الَّذِيْ أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وإِلَيْهِ النُّشُوْرُ
আল্ হাম্দুলিল্লা-হিল্লাযী আহ্ইয়া-না বা‘দা মা আমা-তানা ওয়াইলাইহিন নুশূর।
অর্থ : ‘‘সকল প্রশংসা ঐ আল্লাহর জন্য যিনি আমাদেরকে মৃত্যুর পর জীবিত করেছেন, আর তাঁর দিকেই আবার প্রত্যাবর্তন করতে হবে।’’ (বুখারী)
ঘুম থেকে উঠে মুমিন বান্দা নামায পড়ে আল্লাহর কাছে দো‘আ করে। আল্লাহ যাতে তার নামায ও দো‘আ কবুল করেন সেজন্য বান্দা তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করবে, সেই সাথে তাঁর একত্ববাদের স্বীকৃতি দেবে। যে ভাষায় মহিমা প্রকাশ করতে হবে নবী ﷺ তা আমাদেরকে শিখিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কেউ যদি শেষ রাত্রে ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে নিচের দো‘আটি পড়ে, তবে সে যে কোন দো‘আ করলে তার দো‘আ কবুল করা হবে। আর যদি সে ওযূ করে নামায আদায় করে তবে তার নামায কবুল করা হবে :
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ-- وَسُبْحَانَ اللهِ وَ الْحَمْدُ للهِ وَلَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَاللهُ أَكْبَرُ وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ- اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِيْ
লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা শারীকা লাহু, লাহুলমুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়া হুওয়া ‘আলা কুল্লি শায়ইন ক্বাদীর, ওয়া সুবহা-নাল্লা-হি ওয়ালহামদু লিল্লা-হি ওয়ালা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াল্লা-হু আকবার, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ, আল্লা-হুম্মাগ ফিরলী।
অর্থ : ‘‘আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। রাজত্ব তাঁরই, সকল প্রশংসা তাঁরই। তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাশীল। আমরা আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করি। সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবূদ নেই। আল্লাহ সবচেয়ে বড়। তাঁর সাহায্য ব্যতীত কোন শক্তি বা উপায় নেই। হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন।’’ (বুখারী, মেশকাত হা: ১২১৩)
ঘুম থেকে জেগে উঠে বান্দা যখন বিশ্বজগতের দিকে তাকায় তখন দেখতে পায় বিশাল এক আকাশ, তাতে নেই কোন স্তম্ভ; তারপরও তা শূণ্যের উপর ঝুলে আছে। সে আকাশে আবার কত অগণিত তারা মিটি মিটি করে জ্বলছে। বান্দা আরো দেখতে পায় এক বিশাল পৃথিবী, আর এই পৃথিবীতে রয়েছে কত সাগর-নদী, খাল-বিল, পাহাড়-পর্বত, গাছ-পালা। আরো আছে বিভিন্ন জাতের প্রাণী। এসব দেখে একটু চিন্তা করলেই মাথা নত হয়ে আসে এসবের স্রষ্টার সামনে। কত যে শক্তিশালী ও মহান তিনি তা কল্পনাও করা যায় না। এসব দেখে মুমিন বান্দা বলতে বাধ্য হয় ‘হে আল্লাহ! এসবের কোনটাই তুমি অনর্থক সৃষ্টি করোনি’। এ ধরণের একটি বাস্তব চিত্র বর্ণনা করেছেন আল্লাহ তা‘আলা তাঁর পবিত্র কালামের সূরা আলে ইমরানের শেষ রুকুতে। এজন্য নবী ﷺ ঘুম থেকে জেগে সূরা আলে ইমরানের শেষ রুকু, অপর বর্ণনানুসারে শেষ রুকুর প্রথম পাঁচটি আয়াত পাঠ করতেন।
আবদুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, যখন রাতের দুই-তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হল তখন নবী ﷺ উঠলেন এবং আকাশের দিকে তাকালেন অতঃপর সূরা আলে ইমরানের শেষ রুকুটি তেলাওয়াত করলেন। তারপর ওযূ করে তাহাজ্জুদের নামায আদায় করলেন। (বুখারী হা: ৬৩১৬, মুসলিম হা: ৭৬৩)
সূরা আলে ইমরানের শেষ রুকুর প্রথম পাঁচটি আয়াত :
إِنَّ فِيْ خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لَآيَاتٍ لِّأُولِي الْاَ لْبَابِ - اَلَّذِيْنَ يَذْكُرُوْنَ اللهَ قِيَامًا وَّقُعُوْدًا وَّعَلٰى جُنُوبِهِمْ وَيَتَفَكَّرُوْنَ فِيْ خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هٰذَا بَاطِلًا سُبْحَانَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ - رَبَّنَا إِنَّكَ مَنْ تُدْخِلِ النَّارَ فَقَدْ أَخْزَيْتَهٗ وَمَا لِلظَّالِمِيْنَ مِنْ أَنْصَارٍ - رَبَّنَا إِنَّنَا سَمِعْنَا مُنَادِيًا يُّنَادِيْ لِلْإِيمَانِ أَنْ آمِنُوْا بِرَبِّكُمْ فَآمَنَّا - رَبَّنَا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَكَفِّرْ عَنَّا سَيِّئَاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الْاَبْرَارِ - رَبَّنَا وَآتِنَا مَا وَعَدْتَّنَا عَلٰى رُسُلِكَ وَلَا تُخْزِنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّكَ لَا تُخْلِفُ الْمِيْعَادَ -
ইন্না ফী খালক্বিসসামা-ওয়া-তি ওয়ালআরযি, ওয়াখতিলা-ফিল লাইলি ওয়াননাহা-রি, লাআ-য়া-তিল লিউলিল আলবা-ব। আল্লাযীনা ইয়াযকুরূনাল্লা-হা ক্বিয়া-মাওঁ ওয়া কু‘ঊদাওঁ ওয়া‘আলা জুনূবিহিম, ওয়া ইয়াতাফাক্কারূনা ফী খালকিসসামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি, রববানা মা-খালাক্বতা হা-যা বা-ত্বিলা, সুবহা-নাকা ফাক্বিনা ‘আযা-বাননা-র। রববানা ইন্নাকা মান তুদ্খিলিন না-রা ফাক্বাদ আখঝাইতাহ্, ওয়ামা লিযযো-লিমীনা মিন আনসা-র। রববানা ইন্নানা সামি’না মুনা-দিয়াই ইউনা-দী লিলঈমা-নি আনআ-মিনূ বিরাব্বিকুম ফাআ-মান্না। রববানা ফাগফিরলানা যুনূবানা ওয়াকাফ্ফির ‘আন্না সায়্যিআ-তিনা ওয়া তাওয়াফ্ফানা মা‘আল আবরা-র। রববানা ওয়াআ-তিনা মা ওয়া‘আত্তানা ‘আলা রুসুলিকা ওয়ালা তুখযিনা ইয়াউমাল ক্বিয়ামাহ, ইন্নাকা লা তুখলিফুল মী‘আ-দ।
অর্থ : ‘‘নিশ্চয় আসমান ও যমীনের সৃষ্টির মধ্যে এবং দিবস ও রাত্রির পরিবর্তনে জ্ঞানবানদের জন্য স্পষ্ট নিদর্শনাবলী রয়েছে। যারা দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে সর্বাবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং আসমান ও যমীনের সৃষ্টি বিষয়ে চিন্তা করে (বলে), হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি এসব বৃথা সৃষ্টি করেননি, আপনিই পবিত্রতম। অতএব আমাদেরকে জাহান্নাম হতে রক্ষা করুন। হে আমাদের প্রতিপালক! অবশ্যই আপনি যাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন, নিশ্চয় তাকে লাঞ্চিত করবেন এবং অত্যাচারীদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। হে আমাদের রব! নিশ্চয় আমরা এক আহবানকারীকে আহবান করতে শুনেছি যে, তোমরা স্বীয় প্রতিপালকের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, তাতেই আমরা ঈমান এনেছি; হে আমাদের রব! আমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করুন আর আমাদের গুনাহগুলো মুছে দিন এবং পুণ্যবানদের সাথে আমাদেরকে মৃত্যুদান করুন। হে আমাদের রব! আপনি স্বীয় রাসূলগণের মাধ্যমে আমাদের সাথে যে অঙ্গীকার করেছিলেন তা দান করুন এবং কিয়ামতের দিন আমাদেরকে লাঞ্চিত করবেন না; নিশ্চয় আপনি ওয়াদা খিলাফ করেন না।’’
(শামায়েলে তিরমিযী)
মুমিন বান্দা ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবে :
ঘুম একধরনের মৃত্যু। আল্লাহ তা‘আলা যখন বান্দাকে সেই মৃত্যু থেকে জীবিত করলেন এবং নতুন আরো একটি দিন তাকে উপহার দিলেন, সেজন্য বান্দা প্রথমেই আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবে এভাবে-
اَلْحَمْدُ للهِ الَّذِيْ أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وإِلَيْهِ النُّشُوْرُ
আল্ হাম্দুলিল্লা-হিল্লাযী আহ্ইয়া-না বা‘দা মা আমা-তানা ওয়াইলাইহিন নুশূর।
অর্থ : ‘‘সকল প্রশংসা ঐ আল্লাহর জন্য যিনি আমাদেরকে মৃত্যুর পর জীবিত করেছেন, আর তাঁর দিকেই আবার প্রত্যাবর্তন করতে হবে।’’ (বুখারী)
ঘুম থেকে উঠে মুমিন বান্দা নামায পড়ে আল্লাহর কাছে দো‘আ করে। আল্লাহ যাতে তার নামায ও দো‘আ কবুল করেন সেজন্য বান্দা তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করবে, সেই সাথে তাঁর একত্ববাদের স্বীকৃতি দেবে। যে ভাষায় মহিমা প্রকাশ করতে হবে নবী ﷺ তা আমাদেরকে শিখিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কেউ যদি শেষ রাত্রে ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে নিচের দো‘আটি পড়ে, তবে সে যে কোন দো‘আ করলে তার দো‘আ কবুল করা হবে। আর যদি সে ওযূ করে নামায আদায় করে তবে তার নামায কবুল করা হবে :
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ-- وَسُبْحَانَ اللهِ وَ الْحَمْدُ للهِ وَلَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَاللهُ أَكْبَرُ وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ- اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِيْ
লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা শারীকা লাহু, লাহুলমুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়া হুওয়া ‘আলা কুল্লি শায়ইন ক্বাদীর, ওয়া সুবহা-নাল্লা-হি ওয়ালহামদু লিল্লা-হি ওয়ালা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াল্লা-হু আকবার, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ, আল্লা-হুম্মাগ ফিরলী।
অর্থ : ‘‘আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। রাজত্ব তাঁরই, সকল প্রশংসা তাঁরই। তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাশীল। আমরা আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করি। সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবূদ নেই। আল্লাহ সবচেয়ে বড়। তাঁর সাহায্য ব্যতীত কোন শক্তি বা উপায় নেই। হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন।’’ (বুখারী, মেশকাত হা: ১২১৩)
ঘুম থেকে জেগে উঠে বান্দা যখন বিশ্বজগতের দিকে তাকায় তখন দেখতে পায় বিশাল এক আকাশ, তাতে নেই কোন স্তম্ভ; তারপরও তা শূণ্যের উপর ঝুলে আছে। সে আকাশে আবার কত অগণিত তারা মিটি মিটি করে জ্বলছে। বান্দা আরো দেখতে পায় এক বিশাল পৃথিবী, আর এই পৃথিবীতে রয়েছে কত সাগর-নদী, খাল-বিল, পাহাড়-পর্বত, গাছ-পালা। আরো আছে বিভিন্ন জাতের প্রাণী। এসব দেখে একটু চিন্তা করলেই মাথা নত হয়ে আসে এসবের স্রষ্টার সামনে। কত যে শক্তিশালী ও মহান তিনি তা কল্পনাও করা যায় না। এসব দেখে মুমিন বান্দা বলতে বাধ্য হয় ‘হে আল্লাহ! এসবের কোনটাই তুমি অনর্থক সৃষ্টি করোনি’। এ ধরণের একটি বাস্তব চিত্র বর্ণনা করেছেন আল্লাহ তা‘আলা তাঁর পবিত্র কালামের সূরা আলে ইমরানের শেষ রুকুতে। এজন্য নবী ﷺ ঘুম থেকে জেগে সূরা আলে ইমরানের শেষ রুকু, অপর বর্ণনানুসারে শেষ রুকুর প্রথম পাঁচটি আয়াত পাঠ করতেন।
আবদুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, যখন রাতের দুই-তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হল তখন নবী ﷺ উঠলেন এবং আকাশের দিকে তাকালেন অতঃপর সূরা আলে ইমরানের শেষ রুকুটি তেলাওয়াত করলেন। তারপর ওযূ করে তাহাজ্জুদের নামায আদায় করলেন। (বুখারী হা: ৬৩১৬, মুসলিম হা: ৭৬৩)
সূরা আলে ইমরানের শেষ রুকুর প্রথম পাঁচটি আয়াত :
إِنَّ فِيْ خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لَآيَاتٍ لِّأُولِي الْاَ لْبَابِ - اَلَّذِيْنَ يَذْكُرُوْنَ اللهَ قِيَامًا وَّقُعُوْدًا وَّعَلٰى جُنُوبِهِمْ وَيَتَفَكَّرُوْنَ فِيْ خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هٰذَا بَاطِلًا سُبْحَانَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ - رَبَّنَا إِنَّكَ مَنْ تُدْخِلِ النَّارَ فَقَدْ أَخْزَيْتَهٗ وَمَا لِلظَّالِمِيْنَ مِنْ أَنْصَارٍ - رَبَّنَا إِنَّنَا سَمِعْنَا مُنَادِيًا يُّنَادِيْ لِلْإِيمَانِ أَنْ آمِنُوْا بِرَبِّكُمْ فَآمَنَّا - رَبَّنَا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَكَفِّرْ عَنَّا سَيِّئَاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الْاَبْرَارِ - رَبَّنَا وَآتِنَا مَا وَعَدْتَّنَا عَلٰى رُسُلِكَ وَلَا تُخْزِنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّكَ لَا تُخْلِفُ الْمِيْعَادَ -
ইন্না ফী খালক্বিসসামা-ওয়া-তি ওয়ালআরযি, ওয়াখতিলা-ফিল লাইলি ওয়াননাহা-রি, লাআ-য়া-তিল লিউলিল আলবা-ব। আল্লাযীনা ইয়াযকুরূনাল্লা-হা ক্বিয়া-মাওঁ ওয়া কু‘ঊদাওঁ ওয়া‘আলা জুনূবিহিম, ওয়া ইয়াতাফাক্কারূনা ফী খালকিসসামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি, রববানা মা-খালাক্বতা হা-যা বা-ত্বিলা, সুবহা-নাকা ফাক্বিনা ‘আযা-বাননা-র। রববানা ইন্নাকা মান তুদ্খিলিন না-রা ফাক্বাদ আখঝাইতাহ্, ওয়ামা লিযযো-লিমীনা মিন আনসা-র। রববানা ইন্নানা সামি’না মুনা-দিয়াই ইউনা-দী লিলঈমা-নি আনআ-মিনূ বিরাব্বিকুম ফাআ-মান্না। রববানা ফাগফিরলানা যুনূবানা ওয়াকাফ্ফির ‘আন্না সায়্যিআ-তিনা ওয়া তাওয়াফ্ফানা মা‘আল আবরা-র। রববানা ওয়াআ-তিনা মা ওয়া‘আত্তানা ‘আলা রুসুলিকা ওয়ালা তুখযিনা ইয়াউমাল ক্বিয়ামাহ, ইন্নাকা লা তুখলিফুল মী‘আ-দ।
অর্থ : ‘‘নিশ্চয় আসমান ও যমীনের সৃষ্টির মধ্যে এবং দিবস ও রাত্রির পরিবর্তনে জ্ঞানবানদের জন্য স্পষ্ট নিদর্শনাবলী রয়েছে। যারা দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে সর্বাবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং আসমান ও যমীনের সৃষ্টি বিষয়ে চিন্তা করে (বলে), হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি এসব বৃথা সৃষ্টি করেননি, আপনিই পবিত্রতম। অতএব আমাদেরকে জাহান্নাম হতে রক্ষা করুন। হে আমাদের প্রতিপালক! অবশ্যই আপনি যাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন, নিশ্চয় তাকে লাঞ্চিত করবেন এবং অত্যাচারীদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। হে আমাদের রব! নিশ্চয় আমরা এক আহবানকারীকে আহবান করতে শুনেছি যে, তোমরা স্বীয় প্রতিপালকের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, তাতেই আমরা ঈমান এনেছি; হে আমাদের রব! আমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করুন আর আমাদের গুনাহগুলো মুছে দিন এবং পুণ্যবানদের সাথে আমাদেরকে মৃত্যুদান করুন। হে আমাদের রব! আপনি স্বীয় রাসূলগণের মাধ্যমে আমাদের সাথে যে অঙ্গীকার করেছিলেন তা দান করুন এবং কিয়ামতের দিন আমাদেরকে লাঞ্চিত করবেন না; নিশ্চয় আপনি ওয়াদা খিলাফ করেন না।’’
মুমিন বান্দা প্রস্রাব-পায়খানায় যাওয়ার সময় পবিত্রতার উপকরণ যেমন- পানি, ঢিলা বা টিসু সঙ্গে নিয়ে যাবে। টয়লেটে পানি আছে কি না আগে চেক করে নেবে। প্রস্রাব-পায়খানায় ঢোকার সময় প্রথমে বাম পা দিয়ে ঢোকবে এবং বের হওয়ার সময় প্রথমে ডান পা দিয়ে বের হবে। প্রস্রাবের ছিটা যাতে কাপড়ে ও শরীরে না লাগে সেদিকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখবে। পূর্ব অথবা পশ্চিম দিকে প্রস্রাব-পায়খানা করবে না। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া দাঁড়িয়ে প্রস্রাব-পায়খানা করবে না। প্রস্রাবের শেষ ফুটা ভালোভাবে নিষ্কাশন হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সময় নেবে। তবে ঢিলা ব্যবহারের সময় লজ্জা বজায় রাখবে। প্রস্রাব-পায়খানা হতে উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করবে। প্রস্রাব থেকে পবিত্রতা অর্জন না করলে মৃত্যুর পর কবর থেকেই আযাব শুরু হয়ে যাবে।’’ (বুখারী হা: ২১৮)
প্রতিটি মানুষেরই প্রস্রাব-পায়খানা করতে হয়। কিন্তু প্রস্রাব-পায়খানা নাপাক জিনিস। আর প্রস্রাব-পায়খানার জায়গায় শয়তান ও জ্বিনদের আনাগুনা থাকে। তাই শয়তানের অনিষ্ট থেকে হেফাযতের জন্য টয়লেটে প্রবেশ করার পূর্বে দো‘আ পড়ে নিতে হবে। হাদীসের ব্যাখ্যাকারী মোল্লা আলী কারী (রহ:) বলেন, নিচের দো‘আটি পড়ার বরকতে সবধরনের ক্ষতিকারক শয়তান এবং দো‘আ পাঠকারীর মধ্যে আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি আড়াল সৃষ্টি করে দেয়া হয় :
اَللّٰهُمَّ إِنِّى أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ
আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল খুবুসি ওয়ালখাবা-ইস।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট অপবিত্র পুরুষ ও মহিলা জ্বিন হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’’ (বুখারী, মুসলিম, মেশকাত হা: ৩৩৭, পৃ: ৮২।)
মুমিন বান্দা প্রস্রাব-পায়খানা করার সময় সাময়িকভাবে আল্লাহর যিকির থেকে বিরত থাকে এজন্য টয়লেট থেকে বের হয়ে সে আল্লাহর নিকট ক্ষমাপ্রার্থনা করবে। আয়েশা (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ যখন প্রস্রাব-পায়খানা হতে বের হতেন, তখন নিচের দো‘আ বলতেন।
غُفْرَانَكَ (গুফরা-নাকা); অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমি ক্ষমা চাই।
(তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, মেশকাত হা: ৩৫৯, পৃ: ৪৩)
প্রতিটি মানুষেরই প্রস্রাব-পায়খানা করতে হয়। কিন্তু প্রস্রাব-পায়খানা নাপাক জিনিস। আর প্রস্রাব-পায়খানার জায়গায় শয়তান ও জ্বিনদের আনাগুনা থাকে। তাই শয়তানের অনিষ্ট থেকে হেফাযতের জন্য টয়লেটে প্রবেশ করার পূর্বে দো‘আ পড়ে নিতে হবে। হাদীসের ব্যাখ্যাকারী মোল্লা আলী কারী (রহ:) বলেন, নিচের দো‘আটি পড়ার বরকতে সবধরনের ক্ষতিকারক শয়তান এবং দো‘আ পাঠকারীর মধ্যে আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি আড়াল সৃষ্টি করে দেয়া হয় :
اَللّٰهُمَّ إِنِّى أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ
আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল খুবুসি ওয়ালখাবা-ইস।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট অপবিত্র পুরুষ ও মহিলা জ্বিন হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’’ (বুখারী, মুসলিম, মেশকাত হা: ৩৩৭, পৃ: ৮২।)
মুমিন বান্দা প্রস্রাব-পায়খানা করার সময় সাময়িকভাবে আল্লাহর যিকির থেকে বিরত থাকে এজন্য টয়লেট থেকে বের হয়ে সে আল্লাহর নিকট ক্ষমাপ্রার্থনা করবে। আয়েশা (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ যখন প্রস্রাব-পায়খানা হতে বের হতেন, তখন নিচের দো‘আ বলতেন।
غُفْرَانَكَ (গুফরা-নাকা); অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমি ক্ষমা চাই।
(তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, মেশকাত হা: ৩৫৯, পৃ: ৪৩)
মুখ এবং দাঁত মানুষের অতি গুরুত্বপূর্ণ দু’টি অঙ্গ। কিন্তু নিয়মিত তা পরিস্কার করা না হলে তাতে ময়লা জমে এবং নানা ধরণের জীবানু সৃষ্টি হয় ও মুখে দূর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। তাই বিশেষ বিশেষ সময়ে দাঁত ও মুখের ভেতরের অংশ পরিষ্কার করা অতি জরুরি। রাসূল ﷺ নামাযের পূর্বে, ওযূর সময়, ঘুম থেকে উঠে, বাড়িতে প্রবেশের সময়, দিনের প্রথম ও শেষ ভাগে, আহারের আগে ও পরে মিসওয়াক ব্যবহার করতেন।
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল ﷺ বলেছেন, আমার উম্মতের যদি কষ্ট না হত, তাহলে অবশ্যই আমি তাদেরকে প্রত্যেক নামাযের পূর্বে মিসওয়াক করার আদেশ করতাম। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, ‘প্রত্যেক ওযূর পূর্বে।’
(বুখারী, মুসলিম)
আয়েশা (রাঃ) বলেন, নবী করীম ﷺ যখন নিজের বাড়িতে প্রবেশ করতেন তখন তিনি মিসওয়াক করতেন। (মুসলিম)
হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ যখন তাহাজ্জুদের নামাযের জন্য উঠতেন তখন মিসওয়াক ব্যবহার করতেন। (বুখারী, মুসলিম)
আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল ﷺ বলেছেন,
اَلسِّوَاكُ مَطْهَرَةٌ لِلْفَمِ مَرْضَاةٌ لِلرَّبِّ
মিসওয়াক মুখকে পবিত্র রাখে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি আনয়ন করে। (নাসায়ী)
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল ﷺ বলেছেন, আমার উম্মতের যদি কষ্ট না হত, তাহলে অবশ্যই আমি তাদেরকে প্রত্যেক নামাযের পূর্বে মিসওয়াক করার আদেশ করতাম। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, ‘প্রত্যেক ওযূর পূর্বে।’
(বুখারী, মুসলিম)
আয়েশা (রাঃ) বলেন, নবী করীম ﷺ যখন নিজের বাড়িতে প্রবেশ করতেন তখন তিনি মিসওয়াক করতেন। (মুসলিম)
হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ যখন তাহাজ্জুদের নামাযের জন্য উঠতেন তখন মিসওয়াক ব্যবহার করতেন। (বুখারী, মুসলিম)
আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল ﷺ বলেছেন,
اَلسِّوَاكُ مَطْهَرَةٌ لِلْفَمِ مَرْضَاةٌ لِلرَّبِّ
মিসওয়াক মুখকে পবিত্র রাখে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি আনয়ন করে। (নাসায়ী)
নামাযের আগে পবিত্রতা অর্জন করা জরুরি। তাই গোসলের প্রয়োজন হলে গোসল অথবা ওযূ করে পবিত্রতা অর্জন করতে হবে। আল্লাহর নাম নিয়ে
بِسْمِ اللهِ ‘বিসমিল্লাহ’ বলে ওযূ আরম্ভ করবে। (মুসলিম)
ওযূ শেষ করার পর কালেমায়ে শাহাদাত পড়ে তাওহীদ এবং রিসালাতের সাক্ষ্য দেবে। উমর (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি উত্তমরূপে পূর্ণ নিয়মের সাথে ওযূ করবে এবং নিচের দো‘আ পড়বে, তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে, যে কোন দরজা দিয়ে সে তাতে প্রবেশ করতে পারবে :
أَشْهَدُ اَنْ لَّا إلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ ، وَأَشْهَدُ أنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُوْلُهٗ
আশহাদু আল্লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা-শারীকালাহু ওয়াআশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহু ওয়া রাসূলুহ্।
অর্থ : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ ﷺ তাঁর বান্দা ও রাসূল। (মুসলিম হা: ৫৭৬; মেশকাত পৃ: ৩৯ হা: ২৮৯)
بِسْمِ اللهِ ‘বিসমিল্লাহ’ বলে ওযূ আরম্ভ করবে। (মুসলিম)
ওযূ শেষ করার পর কালেমায়ে শাহাদাত পড়ে তাওহীদ এবং রিসালাতের সাক্ষ্য দেবে। উমর (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি উত্তমরূপে পূর্ণ নিয়মের সাথে ওযূ করবে এবং নিচের দো‘আ পড়বে, তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে, যে কোন দরজা দিয়ে সে তাতে প্রবেশ করতে পারবে :
أَشْهَدُ اَنْ لَّا إلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ ، وَأَشْهَدُ أنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُوْلُهٗ
আশহাদু আল্লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা-শারীকালাহু ওয়াআশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহু ওয়া রাসূলুহ্।
অর্থ : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ ﷺ তাঁর বান্দা ও রাসূল। (মুসলিম হা: ৫৭৬; মেশকাত পৃ: ৩৯ হা: ২৮৯)
মুমিন বান্দা ঘুম থেকে জেগে পবিত্রতা অর্জন করার পর তাহাজ্জুদের নামাযে দাঁড়াবে। রাসূল ﷺ তাহাজ্জুদের নামাযে বিশেষ সানা পড়তেন। তিনি তাহাজ্জুদের নামাযে দাঁড়িয়ে শুরুতেই এমন একটি সানা পড়তেন যার মধ্যে আল্লাহর প্রশংসা, তাঁর গুণগান, ইসলামী সবধরনের আকীদা, আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ এবং তাঁর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করার সর্বোত্তম ভাষা ব্যবহার করেছেন। একজন মুমিন বান্দা আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করার ক্ষেত্রে এ সানাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও অর্থবহ। তাই তাহাজ্জুদের নামাযের শুরুতে আমরাও এ সানাটি পড়ব।
ইবনে ‘আববাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহর নবী ﷺ রাতে তাহাজ্জুদের উদ্দেশ্যে যখন দাঁড়াতেন, তখন এ দো‘আ পড়তেন :
اَللّٰهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ قَيِّمُ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ ، وَمَنْ فِيْهِنَّ وَلَكَ الْحَمْدُ لَكَ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ ، وَمَنْ فِيْهِنَّ وَلَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ نُوْرُ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ وَلَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ الْحَقُّ وَوَعْدُكَ الْحَقُّ وَلِقَاؤُكَ حَقٌّ وَقَوْلُكَ حَقٌّ وَالْجَنَّةُ حَقٌّ وَالنَّارُ حَقٌّ وَالنَّبِيُّوْنَ حَقٌّ وَمُحَمَّدٌ ﷺ حَقٌّ وَالسَّاعَةُ حَقٌّ اَللّٰهُمَّ لَكَ أَسْلَمْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْكَ أَنَبْتُ وَبِكَ خَاصَمْتُ وَإِلَيْكَ حَاكَمْتُ فَاغْفِرْ لِيْ مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ أَنْتَ الْمُقَدِّمُ وَأَنْتَ الْمُؤَخِّرُ لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ
আল্লা-হুম্মা লাকাল হামদু আনতা-ক্বায়্যিমুস-সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি, ওয়ামান ফী-হিন্না, ওয়া-লাকাল হামদু লাকা-মুল্কুস-সামাওয়াতি ওয়াল আরযি ওয়া-মান ফী-হিন্না, ওয়া-লাকাল হামদু, আনতা নূ-রুস-সামাওয়াতি ওয়াল আরযি ওয়ালাকাল হামদু আনতাল হাক্কু ওয়া ওয়া’দুকাল হাক্কু, ওয়ালিক্বা-উকা হাক্কুন, ওয়া ক্বাউলুকা হাক্কুন, ওয়াল-জান্নাতু হাক্কুন, ওয়ান্না-রু হাক্কুন, ওয়ানণাবিয়্যূনা হাক্কুন, ওয়া-মুহাম্মাদুন হাক্কুন, ওয়াস্সা-‘আতু হাক্কুন, আল্লা-হুম্মা লাকা আস্লামতু ওয়াবিকা আমান্তু, ওয়া‘আলাইকা তাওক্কালতু, ওয়া ইলাইকা আনাব্তু ওয়াবিকা খা-সাম্তু ওয়া-ইলাইকা হা-কাম্তু, ফাগ্ফির্লী মা-ক্বাদ্দাম্তু ওয়ামা আখ্খারতু, ওয়ামা আছরারতু ওয়ামা-আ’লানতু, আনতাল মুক্বাদ্দিমু ওয়া আনতা‘ল মুআখ্খিরু, লা-ইলা-হা ইল্লা আনতা।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! সকল প্রশংসা আপনারই জন্য। আপনি আকাশ, পৃথিবী ও এ দু’য়ের মধ্যে বিদ্যমান সবকিছুর নিয়ন্ত্রক এবং আপনারই জন্যই সকল প্রশংসা। আসমান-যমীন এবং এ দু’য়ের মধ্যে বিদ্যমান সবকিছুর কর্তৃত্ব আপনারই। আর আপনারই জন্য সকল প্রশংসা। আপনি আসমান ও যমীনের নূর। আপনার জন্যই সকল প্রশংসা। আপনি আসমান ও যমীনের মালিক, আপনার জন্যই সকল প্রশংসা, আপনি চিরসত্য। আপনার অঙ্গীকার চিরসত্য; আপনার সাক্ষাত সত্য, আপনার বাণী সত্য, জান্নাত সত্য; জাহান্নাম সত্য; নবীগণ সত্য; মুহাম্মাদ ﷺ সত্য, কিয়ামত সত্য। হে আল্লাহ! আপনার কাছেই আমি আত্মসমর্পণ করলাম; আপনার প্রতি ঈমান আনলাম; আর আপনার উপরই ভরসা করলাম, আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তন করলাম, আপনার সন্তুষ্টির জন্যই শত্রুতা করি, আপনাকেই বিচারক মানি। সুতরাং আপনি আমার পূর্বের ও পরের, গোপন ও প্রকাশ্য অপরাধসমূহ ক্ষমা করুন। আপনিই অগ্রগামী এবং পশ্চাদগামী। আপনি ছাড়া (প্রকৃত সত্য) কোন ইলাহ বা উপাস্য নেই। (বুখারী, হা: ১১২০)
আবু সালামা ইবনে আবদুর রহমান (রাঃ) বলেন, আমি আয়েশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূল ﷺ যখন তাহাজ্জুদের নামাযে দাঁড়াতেন তখন কী পড়ে নামায আরম্ভ করতেন? আয়েশা (রাঃ) উত্তরে বললেন, তিনি নিচের দো‘আ পড়তেন :
اَللّٰهُمَّ رَبَّ جِبْرَائِيْلَ وَمِيْكَائِيْلَ وَإِسْرَافِيْلَ فَاطِرَ السَّمَوَاتِ وَالْاَرْضِ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ أَنْتَ تَحْكُمُ بَيْنَ عِبَادِكَ فِيمَا كَانُوْا فِيْهِ يَخْتَلِفُوْنَ اِهْدِنِىْ لِمَا اخْتُلِفَ فِيْهِ مِنَ الْحَقِّ بِإِذْنِكَ إِنَّكَ تَهْدِىْ مَنْ تَشَاءُ إِلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ
আল্লা-হুম্মা রববা জিবরা-ঈল ও মীকা-ঈল ওয়া ইসরা-ফীল, ফা-ত্বিরাস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি ‘আ-লিমাল গাইবি ওয়াশ্শাহা-দাতি, আনতা তাহকুমু বাইনা ‘ইবা-দিকা ফীমা-কা-নূ ফীহি ইয়াখ্তালিফূন। ইহদিনী লিমাখতুলিফা ফীহি মিনালহাক্কি বিইজনিকা ইন্নাকা তাহদী মানতাশা-উ ইলা সিরা-ত্বিম মুসতাক্বীম।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! জিবরাঈল, মিকাঈল ও ইসরাফীলের রব, আকাশ ও পৃথিবীর স্রষ্টা, দৃশ্য-অদৃশ্য সকল জ্ঞানের অধিকারী, আপনি আপনার বান্দাদের মাঝে মীমাংসা করে দেবেন যে বিষয়ে তারা মতভেদ করছে। অতএব মতভেদপূর্ণ বিষয়ে আমাকে সঠিক পথের সন্ধান দিন। আপনি যাকে চান তাকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন।’’ (মুসলিম হা: ১৮৪৭)
ইবনে ‘আববাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহর নবী ﷺ রাতে তাহাজ্জুদের উদ্দেশ্যে যখন দাঁড়াতেন, তখন এ দো‘আ পড়তেন :
اَللّٰهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ قَيِّمُ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ ، وَمَنْ فِيْهِنَّ وَلَكَ الْحَمْدُ لَكَ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ ، وَمَنْ فِيْهِنَّ وَلَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ نُوْرُ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ وَلَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ الْحَقُّ وَوَعْدُكَ الْحَقُّ وَلِقَاؤُكَ حَقٌّ وَقَوْلُكَ حَقٌّ وَالْجَنَّةُ حَقٌّ وَالنَّارُ حَقٌّ وَالنَّبِيُّوْنَ حَقٌّ وَمُحَمَّدٌ ﷺ حَقٌّ وَالسَّاعَةُ حَقٌّ اَللّٰهُمَّ لَكَ أَسْلَمْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْكَ أَنَبْتُ وَبِكَ خَاصَمْتُ وَإِلَيْكَ حَاكَمْتُ فَاغْفِرْ لِيْ مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ أَنْتَ الْمُقَدِّمُ وَأَنْتَ الْمُؤَخِّرُ لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ
আল্লা-হুম্মা লাকাল হামদু আনতা-ক্বায়্যিমুস-সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি, ওয়ামান ফী-হিন্না, ওয়া-লাকাল হামদু লাকা-মুল্কুস-সামাওয়াতি ওয়াল আরযি ওয়া-মান ফী-হিন্না, ওয়া-লাকাল হামদু, আনতা নূ-রুস-সামাওয়াতি ওয়াল আরযি ওয়ালাকাল হামদু আনতাল হাক্কু ওয়া ওয়া’দুকাল হাক্কু, ওয়ালিক্বা-উকা হাক্কুন, ওয়া ক্বাউলুকা হাক্কুন, ওয়াল-জান্নাতু হাক্কুন, ওয়ান্না-রু হাক্কুন, ওয়ানণাবিয়্যূনা হাক্কুন, ওয়া-মুহাম্মাদুন হাক্কুন, ওয়াস্সা-‘আতু হাক্কুন, আল্লা-হুম্মা লাকা আস্লামতু ওয়াবিকা আমান্তু, ওয়া‘আলাইকা তাওক্কালতু, ওয়া ইলাইকা আনাব্তু ওয়াবিকা খা-সাম্তু ওয়া-ইলাইকা হা-কাম্তু, ফাগ্ফির্লী মা-ক্বাদ্দাম্তু ওয়ামা আখ্খারতু, ওয়ামা আছরারতু ওয়ামা-আ’লানতু, আনতাল মুক্বাদ্দিমু ওয়া আনতা‘ল মুআখ্খিরু, লা-ইলা-হা ইল্লা আনতা।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! সকল প্রশংসা আপনারই জন্য। আপনি আকাশ, পৃথিবী ও এ দু’য়ের মধ্যে বিদ্যমান সবকিছুর নিয়ন্ত্রক এবং আপনারই জন্যই সকল প্রশংসা। আসমান-যমীন এবং এ দু’য়ের মধ্যে বিদ্যমান সবকিছুর কর্তৃত্ব আপনারই। আর আপনারই জন্য সকল প্রশংসা। আপনি আসমান ও যমীনের নূর। আপনার জন্যই সকল প্রশংসা। আপনি আসমান ও যমীনের মালিক, আপনার জন্যই সকল প্রশংসা, আপনি চিরসত্য। আপনার অঙ্গীকার চিরসত্য; আপনার সাক্ষাত সত্য, আপনার বাণী সত্য, জান্নাত সত্য; জাহান্নাম সত্য; নবীগণ সত্য; মুহাম্মাদ ﷺ সত্য, কিয়ামত সত্য। হে আল্লাহ! আপনার কাছেই আমি আত্মসমর্পণ করলাম; আপনার প্রতি ঈমান আনলাম; আর আপনার উপরই ভরসা করলাম, আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তন করলাম, আপনার সন্তুষ্টির জন্যই শত্রুতা করি, আপনাকেই বিচারক মানি। সুতরাং আপনি আমার পূর্বের ও পরের, গোপন ও প্রকাশ্য অপরাধসমূহ ক্ষমা করুন। আপনিই অগ্রগামী এবং পশ্চাদগামী। আপনি ছাড়া (প্রকৃত সত্য) কোন ইলাহ বা উপাস্য নেই। (বুখারী, হা: ১১২০)
আবু সালামা ইবনে আবদুর রহমান (রাঃ) বলেন, আমি আয়েশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূল ﷺ যখন তাহাজ্জুদের নামাযে দাঁড়াতেন তখন কী পড়ে নামায আরম্ভ করতেন? আয়েশা (রাঃ) উত্তরে বললেন, তিনি নিচের দো‘আ পড়তেন :
اَللّٰهُمَّ رَبَّ جِبْرَائِيْلَ وَمِيْكَائِيْلَ وَإِسْرَافِيْلَ فَاطِرَ السَّمَوَاتِ وَالْاَرْضِ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ أَنْتَ تَحْكُمُ بَيْنَ عِبَادِكَ فِيمَا كَانُوْا فِيْهِ يَخْتَلِفُوْنَ اِهْدِنِىْ لِمَا اخْتُلِفَ فِيْهِ مِنَ الْحَقِّ بِإِذْنِكَ إِنَّكَ تَهْدِىْ مَنْ تَشَاءُ إِلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ
আল্লা-হুম্মা রববা জিবরা-ঈল ও মীকা-ঈল ওয়া ইসরা-ফীল, ফা-ত্বিরাস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি ‘আ-লিমাল গাইবি ওয়াশ্শাহা-দাতি, আনতা তাহকুমু বাইনা ‘ইবা-দিকা ফীমা-কা-নূ ফীহি ইয়াখ্তালিফূন। ইহদিনী লিমাখতুলিফা ফীহি মিনালহাক্কি বিইজনিকা ইন্নাকা তাহদী মানতাশা-উ ইলা সিরা-ত্বিম মুসতাক্বীম।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! জিবরাঈল, মিকাঈল ও ইসরাফীলের রব, আকাশ ও পৃথিবীর স্রষ্টা, দৃশ্য-অদৃশ্য সকল জ্ঞানের অধিকারী, আপনি আপনার বান্দাদের মাঝে মীমাংসা করে দেবেন যে বিষয়ে তারা মতভেদ করছে। অতএব মতভেদপূর্ণ বিষয়ে আমাকে সঠিক পথের সন্ধান দিন। আপনি যাকে চান তাকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন।’’ (মুসলিম হা: ১৮৪৭)
তাহাজ্জুদের নামায শেষ করার পর আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে মুনাজাত করবে। তারপর আযান হলে আযানের জওয়াব দেবে।
পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায়ের প্রাক্কালে নামাযের সময় জানিয়ে দেয়ার জন্য আযান দেয়া সুন্নাত। আর এ আযানের মধ্যে রয়েছে আল্লাহর বড়ত্বের ঘোষণা, তাওহীদের সাক্ষ্য, রিসালাতের সাক্ষ্য এবং নামাযের প্রতি আহবান ইত্যাদি। আযানের শব্দগুলো মুমিনের ঈমান ও আকীদাকে আরো বেশি মযবুত ও দৃঢ় করে। মুয়াজ্জিন সাহেব তো আযানের শব্দগুলো ঘোষণা করেন, সেই সাথে যারা আযানের শব্দগুলো শুনবে তাদেরও উচিত সেগুলো উচ্চারণ করে আযানের জওয়াব দেয়া।
আযান শুনলে মুয়াজ্জিন যা বলেন তা-ই উচ্চারণ করে আযানের জওয়াব দিতে হয়। তবে ‘‘হাইয়্যা ‘আলাস সালাহ’’ ও ‘‘হাইয়্যা ‘আলাল ফালাহ’’ বলার সময় বলতে হয় ‘‘লা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ’’।
রাসূল ﷺ বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি অন্তর থেকে আযানের জওয়াব দেবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’’ (মুসলিম হা: ৫৭৮)
আযান শোনার পর দরূদ এবং দো‘আ পাঠ করা :
আযান শেষ হলে প্রথমে নবীর উপর দরূদ পড়া সুন্নাত। (বুখারী, মুসলিম)
আযান শেষ হওয়ার পর আযান ও নামাযের মাহাত্ম্য অনুধাবন করা এবং মুহাম্মাদ ﷺ এর জন্য ওয়াসীলার দো‘আ করা মুমিন বান্দার জন্য এক বিরাট সওয়াবের কাজ। জাবির (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আযান শুনে নিচের দো‘আ পাঠ করবে, কিয়ামতের দিন তার জন্য শাফাআত করা আমার উপর জরুরি হয়ে যাবে :
اَللّٰهُمَّ رَبَّ هٰذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلَاةِ الْقَائِمَةِ آتِ مُحَمَّدَنِ الْوَسِيْلَةَ وَالْفَضِيْلَةَ وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَّحْمُوْدَنِ الَّذِيْ وَعَدْتَّهٗ
আল্লা-হুম্মা রাববা হা-যিহিদ্ দা‘ওয়াতিত্তা-ম্মাহ, ওয়াসসালা-তিল ক্বা-ইমাহ, আ-তি মুহাম্মাদানিল ওয়াসীলাতা ওয়ালফাদ্বীলাহ, ওয়াব‘আছ্হু মাক্বা-মাম্ মাহমূদানিল্লাযী ওয়া‘আত্তাহ।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! এই পরিপূর্ণ আহবান ও প্রতিষ্ঠিত নামাযের তুমিই প্রভু। মুহাম্মাদ ﷺ কে দান কর অসীলা নামক স্থান ও মর্যাদা। আর তাঁকে অধিষ্ঠিত কর সেই প্রশংসিত স্থানে যার প্রতিশ্রুতি তুমি তাঁকে দিয়েছ।’’
(বুখারী, মেশকাত- ৬৫৯, পৃঃ ৬৫ )
সা‘দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি মুয়াজ্জিনের আযান শুনে নিচের দো‘আ পড়বে, তার পাপসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে :
أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُوْلُهٗ رَضِيْتُ بِاللهِ رَبًّا وَّبِمُحَمَّدٍ رَسُوْلًا وَّبِالْاِسْلَامِ دِيْنًا .
আশহাদু আল্লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা শারীকা লাহু ওয়া আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহু ওয়ারাসূলুহ, রাযীতু বিল্লা-হি রাববাও ওয়া বিমুহাম্মাদিন রাসূলাও ওয়া বিল ইসলা-মি দ্বীনা।
অর্থ : ‘‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহাম্মাদ ﷺ তাঁর বান্দা ও রাসূল। আমি আল্লাহকে রব হিসেবে, মুহাম্মাদ ﷺ -কে রাসূল হিসেবে এবং ইসলামকে দ্বীন হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট হয়েছি।’’ (মুসলিম হা: ৩৮৬)
পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায়ের প্রাক্কালে নামাযের সময় জানিয়ে দেয়ার জন্য আযান দেয়া সুন্নাত। আর এ আযানের মধ্যে রয়েছে আল্লাহর বড়ত্বের ঘোষণা, তাওহীদের সাক্ষ্য, রিসালাতের সাক্ষ্য এবং নামাযের প্রতি আহবান ইত্যাদি। আযানের শব্দগুলো মুমিনের ঈমান ও আকীদাকে আরো বেশি মযবুত ও দৃঢ় করে। মুয়াজ্জিন সাহেব তো আযানের শব্দগুলো ঘোষণা করেন, সেই সাথে যারা আযানের শব্দগুলো শুনবে তাদেরও উচিত সেগুলো উচ্চারণ করে আযানের জওয়াব দেয়া।
আযান শুনলে মুয়াজ্জিন যা বলেন তা-ই উচ্চারণ করে আযানের জওয়াব দিতে হয়। তবে ‘‘হাইয়্যা ‘আলাস সালাহ’’ ও ‘‘হাইয়্যা ‘আলাল ফালাহ’’ বলার সময় বলতে হয় ‘‘লা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ’’।
রাসূল ﷺ বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি অন্তর থেকে আযানের জওয়াব দেবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’’ (মুসলিম হা: ৫৭৮)
আযান শোনার পর দরূদ এবং দো‘আ পাঠ করা :
আযান শেষ হলে প্রথমে নবীর উপর দরূদ পড়া সুন্নাত। (বুখারী, মুসলিম)
আযান শেষ হওয়ার পর আযান ও নামাযের মাহাত্ম্য অনুধাবন করা এবং মুহাম্মাদ ﷺ এর জন্য ওয়াসীলার দো‘আ করা মুমিন বান্দার জন্য এক বিরাট সওয়াবের কাজ। জাবির (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আযান শুনে নিচের দো‘আ পাঠ করবে, কিয়ামতের দিন তার জন্য শাফাআত করা আমার উপর জরুরি হয়ে যাবে :
اَللّٰهُمَّ رَبَّ هٰذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلَاةِ الْقَائِمَةِ آتِ مُحَمَّدَنِ الْوَسِيْلَةَ وَالْفَضِيْلَةَ وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَّحْمُوْدَنِ الَّذِيْ وَعَدْتَّهٗ
আল্লা-হুম্মা রাববা হা-যিহিদ্ দা‘ওয়াতিত্তা-ম্মাহ, ওয়াসসালা-তিল ক্বা-ইমাহ, আ-তি মুহাম্মাদানিল ওয়াসীলাতা ওয়ালফাদ্বীলাহ, ওয়াব‘আছ্হু মাক্বা-মাম্ মাহমূদানিল্লাযী ওয়া‘আত্তাহ।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! এই পরিপূর্ণ আহবান ও প্রতিষ্ঠিত নামাযের তুমিই প্রভু। মুহাম্মাদ ﷺ কে দান কর অসীলা নামক স্থান ও মর্যাদা। আর তাঁকে অধিষ্ঠিত কর সেই প্রশংসিত স্থানে যার প্রতিশ্রুতি তুমি তাঁকে দিয়েছ।’’
(বুখারী, মেশকাত- ৬৫৯, পৃঃ ৬৫ )
সা‘দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি মুয়াজ্জিনের আযান শুনে নিচের দো‘আ পড়বে, তার পাপসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে :
أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُوْلُهٗ رَضِيْتُ بِاللهِ رَبًّا وَّبِمُحَمَّدٍ رَسُوْلًا وَّبِالْاِسْلَامِ دِيْنًا .
আশহাদু আল্লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা শারীকা লাহু ওয়া আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহু ওয়ারাসূলুহ, রাযীতু বিল্লা-হি রাববাও ওয়া বিমুহাম্মাদিন রাসূলাও ওয়া বিল ইসলা-মি দ্বীনা।
অর্থ : ‘‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহাম্মাদ ﷺ তাঁর বান্দা ও রাসূল। আমি আল্লাহকে রব হিসেবে, মুহাম্মাদ ﷺ -কে রাসূল হিসেবে এবং ইসলামকে দ্বীন হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট হয়েছি।’’ (মুসলিম হা: ৩৮৬)
আযান শেষ হলে সংক্ষেপে ফজরের দু’রাকাত সুন্নাত পড়ে নেবে। এ নামাযে রাসূল ﷺ প্রথম রাকাতে সূরা কাফিরুন এবং দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ইখলাছ পাঠ করতেন।
ফজরের দু’রাকাত সুন্নাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘ফজরের দু’রাকাত সুন্নাত আমার কাছে দুনিয়া এবং এর মধ্যে যা কিছু রয়েছে তার চেয়েও উত্তম।’’ (বুখারী ও মুসলিম)
রাসূল ﷺ এ দু’রাকাত নামায সংক্ষেপে পড়তেন। ফজরের সুন্নাত আদায়ের পর একটু বিশ্রাম নেয়া সুন্নাত। রাসূল ﷺ ফজরের সুন্নাত আদায় করার পর ডান কাতে শুয়ে একটু বিশ্রাম নিতেন। এ সময় রাসূল ﷺ এর কোন স্ত্রী সজাগ থাকলে জামাআত শুরুর পূর্ব পর্যন্ত তাদের সাথে কথাও বলতেন।
ফজরের দু’রাকাত সুন্নাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘ফজরের দু’রাকাত সুন্নাত আমার কাছে দুনিয়া এবং এর মধ্যে যা কিছু রয়েছে তার চেয়েও উত্তম।’’ (বুখারী ও মুসলিম)
রাসূল ﷺ এ দু’রাকাত নামায সংক্ষেপে পড়তেন। ফজরের সুন্নাত আদায়ের পর একটু বিশ্রাম নেয়া সুন্নাত। রাসূল ﷺ ফজরের সুন্নাত আদায় করার পর ডান কাতে শুয়ে একটু বিশ্রাম নিতেন। এ সময় রাসূল ﷺ এর কোন স্ত্রী সজাগ থাকলে জামাআত শুরুর পূর্ব পর্যন্ত তাদের সাথে কথাও বলতেন।
জামাআতে নামায পড়ার উদ্দেশ্যে যখন মসজিদের দিকে রওনা দেবে তখন আশপাশের লোকজনকে নামাযের জন্য ডাকবে। মুসলিম ইবনে আবু বকরা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল ﷺ এর সাথে ফজরের নামাযের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। তিনি যখনই কারো পাশ দিয়ে গমন করতেন তখনই তাকে নামাযের জন্য ডাক দিতেন অথবা তাকে নাড়া দিয়ে জাগিয়ে দিতেন। (আবু দাউদ, হা/১২৬৬)
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, যখন কোন বান্দা উত্তমরূপে ওযূ করে। অতঃপর নামাযের উদ্দেশ্যে মসজিদের দিকে বের হয়। এমতাবস্থায় সে যত কদম হাঁটবে প্রত্যেকটি কদমের বিনিময়ে তার জন্য একটি করে মর্যাদা বাড়িয়ে দেয়া হবে এবং একটি করে তার গুনাহ ক্ষমা করা হবে। (বুখারী, মুসলিম)
প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর চেষ্টা করা :
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যদি লোকেরা জানত যে, আযান দেয়া এবং প্রথম কাতারে নামায পড়ার মধ্যে কী পরিমাণ সওয়াব রয়েছে। আর সেজন্য যদি লটারী করা ব্যতীত কোন উপায় না পেত, তাহলে তারা লটারী করত। আর যদি তারা জানত যে, আগে নামাযে যাওয়ার মধ্যে কী পরিমাণ সওয়াব রয়েছে, তাহলে তারা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আগে যাওয়ার চেষ্টা করত। আর যদি লোকেরা জানত যে, এশা ও ফজরের জামাআতের মধ্যে কী পরিমাণ সওয়াব রয়েছে। তাহলে তারা হামাগুড়ি দিয়ে অর্থাৎ হাত ও হাঁটুর উপর ভর দিয়ে হলেও মসজিদে আসত। (বুখারী, মুসলিম)
মসজিদে যাওয়ার সময় নূর প্রার্থনা করা :
আল্লাহর পক্ষ থেকে নূর লাভ করা মুমিনের জন্য এক বিরাট সৌভাগ্যের ব্যাপার। হাশরের ময়দানে মুমিনদের সামনে এবং তাদের ডানে ও বামে নূর চমকাতে থাকবে। আর তখন মুনাফিকরা অন্ধকারে থাকবে এবং আফসোস করতে থাকবে। এজন্য নবী ﷺ মসজিদে যাওয়ার সময় আল্লাহর পক্ষ থেকে নূর চেয়ে দো‘আ করতেন। আমরাও এ দো‘আটি পড়ব :
اَللّٰهُمَّ اجْعَلْ فِىْ قَلْبِىْ نُوْرًا وَّ فِىْ بَصَرِىْ نُوْرًا وَّ فِىْ سَمْعِىْ نُوْرًا وَّ عَنْ يَّمِيْنِىْ نُورًا وَّ عَنْ يَّسَارِىْ نُوْرًا وَّ فَوْقِىْ نُوْرًا وَّ تَحْتِىْ نُوْرًا وَّ أَمَامِىْ نُوْرًا وَّ خَلْفِىْ نُوْرًا وَّ عَظِّمْ لِىْ نُوْرًا
আল্লা-হুম্মাজ‘আল ফী-ক্বালবী নূরাও ওয়াফী বাসরী নূরাও ওয়াফী সাম‘য়ী নূরাও ওয়া‘আন ইয়ামীনী নূরাও ওয়া‘আন ইয়াসা-রী নূরাও ওয়াফাউক্বী নূরাও ওয়াতাহ্তী নূরাও ওয়াআমা-মী নূরাও ওয়াখালফী নূরাও ওয়া ‘আজ্জিম লী নূরা।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! আমার অন্তরে, চোখে, কানে এবং আমার ডানে-বামে, উপরে-নিচে, সামনে-পিছনে নূর দান কর। এবং আমাকে অধিক নূর দান কর।’’ (মুসলিম, মেশকাত হাঃ ১১৯৫ পৃঃ ১০৬)
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, যখন কোন বান্দা উত্তমরূপে ওযূ করে। অতঃপর নামাযের উদ্দেশ্যে মসজিদের দিকে বের হয়। এমতাবস্থায় সে যত কদম হাঁটবে প্রত্যেকটি কদমের বিনিময়ে তার জন্য একটি করে মর্যাদা বাড়িয়ে দেয়া হবে এবং একটি করে তার গুনাহ ক্ষমা করা হবে। (বুখারী, মুসলিম)
প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর চেষ্টা করা :
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যদি লোকেরা জানত যে, আযান দেয়া এবং প্রথম কাতারে নামায পড়ার মধ্যে কী পরিমাণ সওয়াব রয়েছে। আর সেজন্য যদি লটারী করা ব্যতীত কোন উপায় না পেত, তাহলে তারা লটারী করত। আর যদি তারা জানত যে, আগে নামাযে যাওয়ার মধ্যে কী পরিমাণ সওয়াব রয়েছে, তাহলে তারা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আগে যাওয়ার চেষ্টা করত। আর যদি লোকেরা জানত যে, এশা ও ফজরের জামাআতের মধ্যে কী পরিমাণ সওয়াব রয়েছে। তাহলে তারা হামাগুড়ি দিয়ে অর্থাৎ হাত ও হাঁটুর উপর ভর দিয়ে হলেও মসজিদে আসত। (বুখারী, মুসলিম)
মসজিদে যাওয়ার সময় নূর প্রার্থনা করা :
আল্লাহর পক্ষ থেকে নূর লাভ করা মুমিনের জন্য এক বিরাট সৌভাগ্যের ব্যাপার। হাশরের ময়দানে মুমিনদের সামনে এবং তাদের ডানে ও বামে নূর চমকাতে থাকবে। আর তখন মুনাফিকরা অন্ধকারে থাকবে এবং আফসোস করতে থাকবে। এজন্য নবী ﷺ মসজিদে যাওয়ার সময় আল্লাহর পক্ষ থেকে নূর চেয়ে দো‘আ করতেন। আমরাও এ দো‘আটি পড়ব :
اَللّٰهُمَّ اجْعَلْ فِىْ قَلْبِىْ نُوْرًا وَّ فِىْ بَصَرِىْ نُوْرًا وَّ فِىْ سَمْعِىْ نُوْرًا وَّ عَنْ يَّمِيْنِىْ نُورًا وَّ عَنْ يَّسَارِىْ نُوْرًا وَّ فَوْقِىْ نُوْرًا وَّ تَحْتِىْ نُوْرًا وَّ أَمَامِىْ نُوْرًا وَّ خَلْفِىْ نُوْرًا وَّ عَظِّمْ لِىْ نُوْرًا
আল্লা-হুম্মাজ‘আল ফী-ক্বালবী নূরাও ওয়াফী বাসরী নূরাও ওয়াফী সাম‘য়ী নূরাও ওয়া‘আন ইয়ামীনী নূরাও ওয়া‘আন ইয়াসা-রী নূরাও ওয়াফাউক্বী নূরাও ওয়াতাহ্তী নূরাও ওয়াআমা-মী নূরাও ওয়াখালফী নূরাও ওয়া ‘আজ্জিম লী নূরা।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! আমার অন্তরে, চোখে, কানে এবং আমার ডানে-বামে, উপরে-নিচে, সামনে-পিছনে নূর দান কর। এবং আমাকে অধিক নূর দান কর।’’ (মুসলিম, মেশকাত হাঃ ১১৯৫ পৃঃ ১০৬)
আমরা ঘর থেকে বের হওয়ার পর অনেককিছু দেখি। অনেকের সাথে সাক্ষাত করি। বিভিন্ন ধরণের পরিবেশের সম্মুখীন হই। এসব ক্ষেত্রে যাতে আমরা দ্বীনের উপর অটল থাকতে পারি সেজন্য আল্লাহর উপর ভরসা করে তাঁর আশ্রয় ও সাহায্য চেয়ে ঘরের বাইরে বের হওয়া একজন মুমিনের দায়িত্ব। আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি ঘর থেকে বের হওয়ার সময় নিচের দো‘আটি পড়বে, তাকে বলা হয়- তোমাকে পথ দেখানো হল এবং সংরক্ষণ করা হল। ফলে শয়তান তার থেকে দূর হয়ে যায়। তখন অপর শয়তান এ শয়তানকে বলে, তুমি ঐ ব্যক্তির কী ক্ষতি করবে যাকে পথ দেখানো হয়েছে, উপায় বলে দেয়া হয়েছে এবং রক্ষা করা হয়েছে :
بِسْمِ اللهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللهِ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ
বিসমিল্লা-হি তাওয়াক্কালতু ‘আলাল্লা-হি লা-হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ।
অর্থ : ‘‘আমি আল্লাহর নামে বের হলাম, তাঁর উপর ভরসা করলাম। আল্লাহ ব্যতীত কোন উপায় ও শক্তি নেই।’’ (আবু দাউদ, তিরমিযী)
বাড়িতে প্রবেশ করার সময় আমরা এ দো‘আ পড়ব :
اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ خَيْرَ الْمَوْلَجِ وَخَيْرَ الْمَخْرَجِ بِسْمِ اللهِ وَلَجْنَا وَعَلَى اللهِ رَبَّنَا تَوَكَّلْنَا
আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা খাইরাল মাওলাযি ওয়া খাইরাল মাখরাযি বিসমিল্লা-হি ওয়ালাজনা ওয়া ‘আলাল্লা-হি রাববানা তাওয়াক্কালনা।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! আমি প্রবেশ করার এবং বের হওয়ার কল্যাণ চাই। আল্লাহর নামেই আমরা পৌঁছি এবং আল্লাহর উপর আমরা ভরসা করি।’’
(আবু দাঊদ, মেশকাত)
ঘরে প্রবেশ করেই ঘরবাসীকে সালাম দেবে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, ‘‘যখন তোমরা ঘরে প্রবেশ কর তখন নিজেদের উপর সালাম দাও। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে অতি বরকতময় এবং পবিত্র সম্ভাষণ।’’ (সূরা নূর : ৬১)
بِسْمِ اللهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللهِ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ
বিসমিল্লা-হি তাওয়াক্কালতু ‘আলাল্লা-হি লা-হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ।
অর্থ : ‘‘আমি আল্লাহর নামে বের হলাম, তাঁর উপর ভরসা করলাম। আল্লাহ ব্যতীত কোন উপায় ও শক্তি নেই।’’ (আবু দাউদ, তিরমিযী)
বাড়িতে প্রবেশ করার সময় আমরা এ দো‘আ পড়ব :
اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ خَيْرَ الْمَوْلَجِ وَخَيْرَ الْمَخْرَجِ بِسْمِ اللهِ وَلَجْنَا وَعَلَى اللهِ رَبَّنَا تَوَكَّلْنَا
আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা খাইরাল মাওলাযি ওয়া খাইরাল মাখরাযি বিসমিল্লা-হি ওয়ালাজনা ওয়া ‘আলাল্লা-হি রাববানা তাওয়াক্কালনা।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! আমি প্রবেশ করার এবং বের হওয়ার কল্যাণ চাই। আল্লাহর নামেই আমরা পৌঁছি এবং আল্লাহর উপর আমরা ভরসা করি।’’
(আবু দাঊদ, মেশকাত)
ঘরে প্রবেশ করেই ঘরবাসীকে সালাম দেবে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, ‘‘যখন তোমরা ঘরে প্রবেশ কর তখন নিজেদের উপর সালাম দাও। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে অতি বরকতময় এবং পবিত্র সম্ভাষণ।’’ (সূরা নূর : ৬১)
মসজিদ আল্লাহর ঘর। মসজিদ হচ্ছে শান্তির জায়গা। মুমিন মসজিদে ঢুকলে ঐভাবে প্রশান্তি লাভ করে যেভাবে একটি মাছ শুকনা থেকে পানিতে ছেড়ে দিলে প্রশান্তি লাভ করে। মসজিদে প্রবেশ করার সময় আগে ডান পা দিয়ে প্রবেশ করবে এবং বের হওয়ার সময় আগে বাম পা দিয়ে বের হবে। মসজিদে প্রবেশ করে বসার আগে দু’রাকাত ‘তাহিয়্যাতুল মসজিদ’-এর নামায পড়বে। মসজিদের ভেতর আমলে মশগুল থাকবে।
মসজিদ হচ্ছে আল্লাহর রহমত ও বরকতের স্থান। তাই মসজিদে প্রবেশ করার সময় আল্লাহর রহমত কামনা করবে। সেই সাথে শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করবে এবং নবী ﷺ-এর উপর দরূদ পাঠ করবে।
মসজিদে প্রবেশের সময় দো‘আ :
মসজিদে প্রবেশের একাধিক দো‘আ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। উক্ত হাদীসসমূহ একত্রিত করলে মসজিদে প্রবেশের দো‘আ হবে নিম্নরূপ-
اَعُوْذُ بِاللهِ الْعَظِيْمِ وَبِوَجْهِهِ الْكَرِيْمِ وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيْمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ بِسْمِ اللهِ وَ الصَّلَاةُ وَ السَّلَامُ عَلٰى رَسُوْلِ اللهِ اَللّٰهُمَّ افْتَحْ لِىْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ
আঊযুবিল্লা-হিল আযীম, ওয়া বিওয়াজ্হিহিল কারীম, ওয়া সুলত্বা-নিহিল ক্বাদীম, মিনাশ শাইত্বা-নির রাজীম, বিসমিল্লা-হি ওয়াসসালা-তু ওয়াসসালা-মু ‘আলা রাসূলিল্লা-হ্, আল্লা-হুম্মাফ্তাহ্লী আব্ওয়া-বা রাহমাতিক।
অর্থ : ‘‘আমি মহান আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি তাঁর সম্মানিত চেহারার মাধ্যমে এবং তাঁর চিরন্তন প্রতাপের মাধ্যমে বিতাড়িত শয়তান থেকে। আল্লাহর নামে প্রবেশ করছি। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর রাসূলের প্রতি। হে আল্লাহ! তুমি আমার জন্য তোমার রহমতের দরজাসমূহ খুলে দাও।’’ (নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)
মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় দো‘আ : মসজিদের ইবাদাত শেষ করার পর আল্লাহর নির্দেশ হল তাঁর রিযিক তালাশের জন্য বের হওয়া। তাই নামায শেষে যে যেখানেই যাক না কেন আল্লাহর অনুগ্রহ ও সাহায্য কামনা করে বের হবে। মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় বলবে :
بِسْمِ اللهِ وَ الصَّلَاةُ وَ السَّلَامُ عَلٰى رَسُوْلِ اللهِ اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ أَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ اَللّٰهُمَّ اَعْصِمْنِىْ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ
বিসমিল্লা-হি ওয়াছ্ছালা-তু ওয়াস্সালা-মু ‘আলা রাসূলিল্লা-হ্, আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা মিনফাযলিক, আল্লা-হুম্মা আ‘ছিম্নী মিনাশ্ শাইত্বা-নির রাজীম।
অর্থ : ‘‘আল্লাহর নামে বের হচ্ছি। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর রাসূলের প্রতি। হে আল্লাহ! আমি তোমার অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ! আমাকে বিতাড়িত শয়তান থেকে হেফাযত করুন।’’ (ইবনে মাজাহ)
মসজিদ হচ্ছে আল্লাহর রহমত ও বরকতের স্থান। তাই মসজিদে প্রবেশ করার সময় আল্লাহর রহমত কামনা করবে। সেই সাথে শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করবে এবং নবী ﷺ-এর উপর দরূদ পাঠ করবে।
মসজিদে প্রবেশের সময় দো‘আ :
মসজিদে প্রবেশের একাধিক দো‘আ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। উক্ত হাদীসসমূহ একত্রিত করলে মসজিদে প্রবেশের দো‘আ হবে নিম্নরূপ-
اَعُوْذُ بِاللهِ الْعَظِيْمِ وَبِوَجْهِهِ الْكَرِيْمِ وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيْمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ بِسْمِ اللهِ وَ الصَّلَاةُ وَ السَّلَامُ عَلٰى رَسُوْلِ اللهِ اَللّٰهُمَّ افْتَحْ لِىْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ
আঊযুবিল্লা-হিল আযীম, ওয়া বিওয়াজ্হিহিল কারীম, ওয়া সুলত্বা-নিহিল ক্বাদীম, মিনাশ শাইত্বা-নির রাজীম, বিসমিল্লা-হি ওয়াসসালা-তু ওয়াসসালা-মু ‘আলা রাসূলিল্লা-হ্, আল্লা-হুম্মাফ্তাহ্লী আব্ওয়া-বা রাহমাতিক।
অর্থ : ‘‘আমি মহান আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি তাঁর সম্মানিত চেহারার মাধ্যমে এবং তাঁর চিরন্তন প্রতাপের মাধ্যমে বিতাড়িত শয়তান থেকে। আল্লাহর নামে প্রবেশ করছি। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর রাসূলের প্রতি। হে আল্লাহ! তুমি আমার জন্য তোমার রহমতের দরজাসমূহ খুলে দাও।’’ (নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)
মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় দো‘আ : মসজিদের ইবাদাত শেষ করার পর আল্লাহর নির্দেশ হল তাঁর রিযিক তালাশের জন্য বের হওয়া। তাই নামায শেষে যে যেখানেই যাক না কেন আল্লাহর অনুগ্রহ ও সাহায্য কামনা করে বের হবে। মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় বলবে :
بِسْمِ اللهِ وَ الصَّلَاةُ وَ السَّلَامُ عَلٰى رَسُوْلِ اللهِ اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ أَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ اَللّٰهُمَّ اَعْصِمْنِىْ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ
বিসমিল্লা-হি ওয়াছ্ছালা-তু ওয়াস্সালা-মু ‘আলা রাসূলিল্লা-হ্, আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা মিনফাযলিক, আল্লা-হুম্মা আ‘ছিম্নী মিনাশ্ শাইত্বা-নির রাজীম।
অর্থ : ‘‘আল্লাহর নামে বের হচ্ছি। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর রাসূলের প্রতি। হে আল্লাহ! আমি তোমার অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ! আমাকে বিতাড়িত শয়তান থেকে হেফাযত করুন।’’ (ইবনে মাজাহ)
ফরজ নামায শেষ হওয়ার পর মাসনূন যিকিরগুলো আদায় করবে। তারপর সকাল-সন্ধ্যার কিছু বিশেষ যিকির ও দো‘আ রয়েছে সেগুলোর উপর আমল করবে। ফরজ নামাযের পর নবী করীম ﷺ অনেক চমৎকার অর্থবোধক কিছু যিকির করতেন এবং দো‘আ পড়তেন। আমাদেরকেও নবীর শিখানো সেই দো‘আ ও যিকিরগুলোর উপর আমল করা একান্ত জরুরি। ফরজ নামাযের পর পাঠ করার জন্য যেসব দো‘আ ও যিকির সহীহ হাদীসসমূহে বর্ণনা করা হয়েছে, তার কয়েকটি নিচে উল্লেখ করা হল :
(১) একবার اَللهُ اَكْبَرُ ‘আল্লাহু আকবার’ বলবে। (বুখারী)
(২) নবী ﷺ সালাম ফিরিয়ে তিন বার বলতেন,
أَسْتَغْفِرُ اللهَ ، أَسْتَغْفِرُ اللهَ ، أَسْتَغْفِرُ اللهَ
আসতাগ্ফিরুল্লা-হ, আসতাগ্ফিরুল্লা-হ, আসতাগ্ফিরুল্লা-হ।
‘‘আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।’’ অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমি পরিপূর্ণ হক আদায় করে নামায পড়তে পারিনি, তাই আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে দিন এবং আমার নামাযকে কবুল করুন। (মুসলিম)
(৩) এরপর নবী ﷺ বলতেন-
اَللّٰهُمَّ أَنْتَ السَّلَامُ - وَمِنْكَ السَّلَامُ - تَبَارَكْتَ يَاذَا الْجَلَالِ وَالْاِكْرَامِ
আল্লা-হুম্মা আনতাস্ সালা-ম, ওয়ামিনকাস্ সালা-ম, তাবা-রাকতা ইয়া-যাল্যালা-লি ওয়াল ইকরা-ম।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! আপনি শান্তি, আপনার থেকেই শান্তি আসে। হে সম্মান ও মহত্ত্বের অধিকারী! আপনি বরকতময়।’’ (মুসলিম, মেশকাত)
(৪) মুয়াজ (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ আমার হাত ধরে বললেন, হে মুয়াজ! আমি তোমাকে খুব ভালবাসি। তখন মুয়াজ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমিও আপনাকে ভালবাসি। এরপর নবী ﷺ তাকে বললেন, তুমি প্রত্যেক নামাযের পর এ দো‘আটি ছেড়ে দিও না।
اَللّٰهُمَّ أَعِنِّيْ عَلٰى ذِكْرِكَ ، وَشُكْرِكَ، وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ
আল্লা-হুম্মা আ‘ইন্নী ‘আলা-যিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়াহুসনি ‘ইবা-দাতিক
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! তোমার যিকির করা, শুকরিয়া আদায় করা ও উত্তম ইবাদাত করার ক্ষেত্রে আমাকে সাহায্য কর।’’ (আহমাদ, আবু দাঊদ)
(৫) তাসবীহে ফাতেমী :
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর ৩৩ বার ‘সুবহা-নাল্লাহ’ ৩৩ বার ‘আলহামদু লিল্লাহ’ ও ৩৩ বার ‘আল্লা-হু আকবার’ এবং একবার
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ ، وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ
লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহূ লা- শারীকা লাহূ লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা- কুল্লি শায়ইন্ ক্বাদীর।
কালেমাটি পড়ে একশত পূর্ণ করবে, তার সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে- যদিও তা সমুদ্রের ফেনার মত বেশি হয়। (মুসলিম)
(৬) নবী ﷺ প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর এ দো‘আটিও পড়তেন-
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ ، وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ ، لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ ، وَ لَا نَعْبُدُ إِلَّا إيَّاهُ ، لَهُ النِّعْمَةُ وَلَهُ الْفَضْلُ وَلَهُ الثَّنَاءُ الْحَسَنُ ، لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُوْنَ ، اَللّٰهُمَّ لَا مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَ لَا مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَ لَا يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ
লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহূ লা- শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া ‘আলা- কুল্লি শায়ইন্ ক্বাদীর, লা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ। লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ্, ওয়ালা না‘বুদু ইল্লা ইয়্যা-হ, লাহুন্নি‘মাতু ওয়ালাহুল ফায্লু ওয়ালাহুস্ সানা-উলহাসান, লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু মুখলিসীনা লাহুদ্দ্বীন, ওয়ালাও কারিহাল কা-ফিরূন। আল্লা-হুম্মা লা- মা-নি‘আ লিমা- আ‘ত্বাইতা ওয়ালা- মু‘ত্বিয়া লিমা- মানা‘তা ওয়ালা- ইয়ান্ফা‘উ যাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দ।
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোন মাবূদ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। রাজত্ব তাঁর জন্য, প্রশংসাও তাঁর জন্য। তিনি সকল বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান। আল্লাহ প্রদত্ত শক্তি ব্যতীত কোন শক্তি নেই। আল্লাহ ব্যতীত আর কোন মাবূদ নেই। আমরা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত করি না। সকল নিয়ামত ও অনুগ্রহ তাঁরই। সকল সুন্দর প্রশংসা তাঁর জন্যই। তিনি ব্যতীত আর কোন মাবূদ নেই। একমাত্র তাঁরই জন্য আমরা দ্বীনকে নির্ধারিত করে নিয়েছি, যদিও কাফিররা তা অপছন্দ করে। হে আল্লাহ! তুমি যা দান কর তা কেউ বাধা দিতে পারে না। আর যা দান কর না তা কেউ দিতে পারে না। আর কোন সম্পদশালীর সম্পদ তোমার আযাব হতে তাকে বাঁচাতে পারে না। (বুখারী, মুসলিম)
(৭) আলী (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল ﷺকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর আয়াতুল কুরসী পড়বে, সে মৃত্যুর সাথে সাথে জান্নাতের নিয়ামত লাভ করবে। আর যে ব্যক্তি রাত্রে শোয়ার সময় এটা পড়বে, তার এবং তার প্রতিবেশীর ঘরকে আল্লাহ বিপদাপদ থেকে নিরাপদ রাখবেন। (বাইহাকী, মেশকাত)
(১) একবার اَللهُ اَكْبَرُ ‘আল্লাহু আকবার’ বলবে। (বুখারী)
(২) নবী ﷺ সালাম ফিরিয়ে তিন বার বলতেন,
أَسْتَغْفِرُ اللهَ ، أَسْتَغْفِرُ اللهَ ، أَسْتَغْفِرُ اللهَ
আসতাগ্ফিরুল্লা-হ, আসতাগ্ফিরুল্লা-হ, আসতাগ্ফিরুল্লা-হ।
‘‘আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।’’ অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমি পরিপূর্ণ হক আদায় করে নামায পড়তে পারিনি, তাই আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে দিন এবং আমার নামাযকে কবুল করুন। (মুসলিম)
(৩) এরপর নবী ﷺ বলতেন-
اَللّٰهُمَّ أَنْتَ السَّلَامُ - وَمِنْكَ السَّلَامُ - تَبَارَكْتَ يَاذَا الْجَلَالِ وَالْاِكْرَامِ
আল্লা-হুম্মা আনতাস্ সালা-ম, ওয়ামিনকাস্ সালা-ম, তাবা-রাকতা ইয়া-যাল্যালা-লি ওয়াল ইকরা-ম।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! আপনি শান্তি, আপনার থেকেই শান্তি আসে। হে সম্মান ও মহত্ত্বের অধিকারী! আপনি বরকতময়।’’ (মুসলিম, মেশকাত)
(৪) মুয়াজ (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ আমার হাত ধরে বললেন, হে মুয়াজ! আমি তোমাকে খুব ভালবাসি। তখন মুয়াজ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমিও আপনাকে ভালবাসি। এরপর নবী ﷺ তাকে বললেন, তুমি প্রত্যেক নামাযের পর এ দো‘আটি ছেড়ে দিও না।
اَللّٰهُمَّ أَعِنِّيْ عَلٰى ذِكْرِكَ ، وَشُكْرِكَ، وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ
আল্লা-হুম্মা আ‘ইন্নী ‘আলা-যিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়াহুসনি ‘ইবা-দাতিক
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! তোমার যিকির করা, শুকরিয়া আদায় করা ও উত্তম ইবাদাত করার ক্ষেত্রে আমাকে সাহায্য কর।’’ (আহমাদ, আবু দাঊদ)
(৫) তাসবীহে ফাতেমী :
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর ৩৩ বার ‘সুবহা-নাল্লাহ’ ৩৩ বার ‘আলহামদু লিল্লাহ’ ও ৩৩ বার ‘আল্লা-হু আকবার’ এবং একবার
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ ، وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ
লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহূ লা- শারীকা লাহূ লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা- কুল্লি শায়ইন্ ক্বাদীর।
কালেমাটি পড়ে একশত পূর্ণ করবে, তার সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে- যদিও তা সমুদ্রের ফেনার মত বেশি হয়। (মুসলিম)
(৬) নবী ﷺ প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর এ দো‘আটিও পড়তেন-
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ ، وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ ، لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ ، وَ لَا نَعْبُدُ إِلَّا إيَّاهُ ، لَهُ النِّعْمَةُ وَلَهُ الْفَضْلُ وَلَهُ الثَّنَاءُ الْحَسَنُ ، لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُوْنَ ، اَللّٰهُمَّ لَا مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَ لَا مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَ لَا يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ
লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহূ লা- শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া ‘আলা- কুল্লি শায়ইন্ ক্বাদীর, লা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ। লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ্, ওয়ালা না‘বুদু ইল্লা ইয়্যা-হ, লাহুন্নি‘মাতু ওয়ালাহুল ফায্লু ওয়ালাহুস্ সানা-উলহাসান, লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু মুখলিসীনা লাহুদ্দ্বীন, ওয়ালাও কারিহাল কা-ফিরূন। আল্লা-হুম্মা লা- মা-নি‘আ লিমা- আ‘ত্বাইতা ওয়ালা- মু‘ত্বিয়া লিমা- মানা‘তা ওয়ালা- ইয়ান্ফা‘উ যাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দ।
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোন মাবূদ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। রাজত্ব তাঁর জন্য, প্রশংসাও তাঁর জন্য। তিনি সকল বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান। আল্লাহ প্রদত্ত শক্তি ব্যতীত কোন শক্তি নেই। আল্লাহ ব্যতীত আর কোন মাবূদ নেই। আমরা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত করি না। সকল নিয়ামত ও অনুগ্রহ তাঁরই। সকল সুন্দর প্রশংসা তাঁর জন্যই। তিনি ব্যতীত আর কোন মাবূদ নেই। একমাত্র তাঁরই জন্য আমরা দ্বীনকে নির্ধারিত করে নিয়েছি, যদিও কাফিররা তা অপছন্দ করে। হে আল্লাহ! তুমি যা দান কর তা কেউ বাধা দিতে পারে না। আর যা দান কর না তা কেউ দিতে পারে না। আর কোন সম্পদশালীর সম্পদ তোমার আযাব হতে তাকে বাঁচাতে পারে না। (বুখারী, মুসলিম)
(৭) আলী (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল ﷺকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর আয়াতুল কুরসী পড়বে, সে মৃত্যুর সাথে সাথে জান্নাতের নিয়ামত লাভ করবে। আর যে ব্যক্তি রাত্রে শোয়ার সময় এটা পড়বে, তার এবং তার প্রতিবেশীর ঘরকে আল্লাহ বিপদাপদ থেকে নিরাপদ রাখবেন। (বাইহাকী, মেশকাত)
দিনের শুরুতে এবং রাতের শুরুতে নবী ﷺ অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ যিকির ও দো‘আ পড়তেন এবং উম্মতকেও পড়ার জন্য উৎসাহিত করতেন। সহীহ হাদীসে এ মর্মে অনেক দো‘আ পাওয়া যায়, যেগুলোর অর্থ ও ভাব খুবই চমৎকার। একজন মানুষের দৈনন্দিন জীবনে যা কিছু চাওয়া-পাওয়ার থাকে তার সবকিছুই এসব দো‘আর মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকেও নিচের দো‘আ এবং যিকিরগুলোর উপর আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন।
১. সকাল হলে নবী ﷺ এ দো‘আ পাঠ করতেন-
أَصْبَحْنَا وَأَصْبَحَ الْمُلْكُ للهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ أَسْأَلُكَ خَيْرَ هٰذَا الْيَوْمِ فَتْحَهٗ وَنَصْرَهٗ وَ نُوْرَهٗ وَبَرَكَتَهٗ وَهُدَاهٗ وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا فِيْهِ وَشَرِّ مَا بَعْدَهٗ
আসবাহনা ওয়া আসবাহাল মুলকু লিল্লা-হি রবিবল ‘আ-লামীন। আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা খায়রা হা-যাল ইয়াউমি ফাতহাহু ওয়া নাসরাহু ওয়া নূরাহু ওয়া বারাকাতাহু ওয়া হুদা-হু, ওয়া আঊযুবিকা মিন শাররি মা ফীহি ওয়া শাররি মা বা‘দাহু।
অর্থ : ‘‘আমরা এবং সমগ্র জগত রাববুল ‘আলামীন আল্লাহর জন্য সকালে উপণীত হয়েছি। হে আল্লাহ! আমি এই দিনের কল্যাণ, সফলতা, সাহায্য, নূর, বরকত এবং হেদায়াত কামনা করছি এবং আমি আশ্রয় চাচ্ছি এই দিনের মধ্যে এবং তার পরে যে অকল্যাণ রয়েছে তার অনিষ্ট থেকে।’’
(আবু দাউদ, মেশকাত)
২. আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, সকাল হলে নবী ﷺ এ দো‘আ বলতেন-
اَللّٰهُمَّ بِكَ أَصْبَحْنَا ، وَبِكَ أَمْسَيْنَا ، وَبِكَ نَحْيَا ، وَبِكَ نَمُوْتُ وَإِلَيْكَ النُّشُوْرُ
আল্লা-হুম্মা বিকা আসবাহ্না ওয়াবিকা আমসাইনা ওয়াবিকা নাহ্ইয়া ওয়াবিকা নামূতু ওয়া ইলাইকান নুশূর।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! তোমার কুদরতে আমরা সকাল করি এবং তোমার কুদরতে আমরা সন্ধ্যা করি, তোমার নামে আমরা বাঁচি আর তোমার নামে আমরা মৃত্যুবরণ করি এবং তোমার দিকেই আমাদের প্রত্যাবর্তন করতে হবে।’’
৩. আবার সন্ধ্যা হলে তিনি বলতেন-
اَللّٰهُمَّ بِكَ أَمْسَيْنَا وَبِكَ أَصْبَحْنَا، وبِكَ نَحْيَا ، وَبِكَ نَمُوْتُ وَإِلَيْكَ النُّشُوْرُ
আল্লা-হুম্মা বিকা আমসাইনা ওয়াবিকা আস্বাহনা ওয়াবিকা নাহ্ইয়া ওয়াবিকা নামূতু ওয়া ইলাইকান নুশূর।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! তোমার কুদরতে আমরা সন্ধ্যা করি এবং তোমার কুদরতে আমরা সকাল করি, তোমার নামে আমরা বাঁচি আর তোমার নামে আমরা মৃত্যুবরণ করি এবং তোমার দিকেই আমাদের প্রত্যাবর্তন করতে হবে।’’ (আবু দাঊদ, তিরমিযী, মেশকাত হা: ২৩৮৯)
৪. সন্ধ্যার সময় নবী ﷺনিচের দো‘আটিও পড়তেন :
أَمْسَيْنَا وَأَمْسَى الْمُلْكُ للهِ وَالْحَمْدُ للهِ وَ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِ هٰذِهِ اللَّيْلَةِ وَخَيْرِ مَا فِيْهَا وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَشَرِّ مَا فِيْهَا اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْكَسَلِ وَالْهَرَمِ وَسُوْءِ الْكِبَرِ اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابٍ فِى النَّارِ وَعَذَابٍ فِى الْقَبْرِ
আমসাইনা ওয়া আমসাল মুলকু লিল্লা-হ, ওয়ালহামদু লিল্লা-হ, ওয়ালা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা শারীকালাহ্, লাহুলমুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শায়ইন ক্বাদীর। আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা মিন খাইরি হা-যিহিললাইলাতি ওয়াখাইরি মা ফীহা, ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিনশাররিহা ওয়াশাররি মা ফীহা, আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল কাসালি ওয়াল হারামি ওয়া সূইল কিবারি, আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিন আযা-বিন ফিন্না-রি ওয়া আযা-বিন ফিল ক্বাবরি।
অর্থ : ‘‘আল্লাহর উদ্দেশ্যে আমরা এবং সমগ্র জগত সন্ধ্যায় প্রবেশ করলাম। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। তিনি ব্যতীত ইবাদাতের যোগ্য কোন মাবূদ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। রাজত্ব তাঁরই এবং সমস্ত প্রশংসা তাঁর। তিনি সকল বিষয়ে ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট এ রাতের মঙ্গল এবং এ রাতে যা আছে তার মঙ্গল কামনা করছি, আর আমি আশ্রয় চাই এ রাতের অমঙ্গল এবং এ রাতে যে অমঙ্গল রয়েছে তা হতে। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই অলসতা, বার্ধক্য ও বার্ধক্যের অপকারিতা হতে। হে আল্লাহ! আমি আশ্রয় চাই জাহান্নামের আযাব ও কবরের শাস্তি হতে।’’ (মুসলিম, মেশকাত হা: ২৩৮১)
৫. আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) নবী ﷺ কে বললেন, আমাকে কিছু বাক্য শিখিয়ে দিন যা আমি সকালে ও সন্ধ্যায় পড়ব। তখন নবী ﷺ বললেন, তুমি সকালে, সন্ধ্যায় এবং শয়নের সময় নিচের বাক্যগুলো পড়বে :
اَللّٰهُمَّ فَاطِرَ السَّمَاوَاتِ وَ الْاَرْضِ عَالِمَ الْغَيْبِ وَ الشَّهَادَةِ رَبَّ كُلِّ شَيْءٍ وَ مَلِيْكَهٗ أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ نَفْسِيْ وَ شَرِّ الشَّيْطَانِ وَ شِرْكِهٖ
আল্লাহুম্মা ফা-তিরাস সামাওয়াতি ওয়াল আরযি আ-লিমাল গায়বি ওয়াশ শাহাদাতি, রববা কুল্লি শায়ইন ওয়ামালীকাহু আশহাদু আল্লা-ই লা-হা ইল্লা আনতা, আওযুবিকা মিন শাররি নাফসী, ওয়া শার্রিশ শায়তা-নি ওয়া শিরকিহ।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! আপনি আসমান এবং যমীনের স্রষ্টা, দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী, প্রত্যেক জিনিসের রব এবং মালিক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি ছাড়া কোন মাবূদ নেই আর আমি আমার অন্তরের অনিষ্ট থেকে এবং শয়তানের অনিষ্ট ও তার শির্ক থেকে আপনার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি।’’ (মুসতাদরাকে হাকীম হা: ১৮৯২)
৬. আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ কোন দিনই সকালে এবং সন্ধ্যায় নিচের দো‘আগুলো পড়া বাদ দিতেন না।
اَللّٰهُمَّ إِنِّى أَسْأَلُكَ الْعَافِيَةَ فِى الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ اَللّٰهُمَّ إِنِّى أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ فِى دِينِى وَدُنْيَاىَ وَأَهْلِى وَمَالِى اَللَّهُمَّ اسْتُرْ عَوْرَاتِى وَآمِنْ رَوْعَاتِى اَللّٰهُمَّ احْفَظْنِى مِنْ بَيْنِ يَدَىَّ وَمِنْ خَلْفِى وَعَنْ يَمِيْنِى وَعَنْ شِمَالِى وَمِنْ فَوْقِى وَأَعُوذُ بِعَظَمَتِكَ أَنْ أُغْتَالَ مِنْ تَحْتِىْ
আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল আ-ফিয়াতা ফিদ্দুনইয়া ওয়াল আ-খিরাতি, আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল আফওয়া ওয়াল আ-ফিয়াতা ফী দীনী ওয়াদুন ইয়া ওয়াআহলী ওয়ামা-লী আল্লা-হুম্মাসতুর ‘আওরা-তী ওয়াআমিন রাওআ-তী, আল্লা-হুম্মাহ ফাযনী মিমবাইনি ইয়াদাইয়া ওয়ামিন খালফী ওয়া ‘আন ইয়ামীনী ওয়াআন শিমা-লী ওয়ামিন ফাওক্বী ওয়া আউযূ বিআযমাতিকা আন-উগতা-লা মিন তাহতী।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার নিকট দুনিয়া ও আখেরাতের নিরাপত্তা চাই, হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার নিকট আমার দ্বীন ও দুনিয়া এবং আমার পরিবার ও আমার মালের নিরাপত্তা চাই। হে আল্লাহ! আমার দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখুন এবং আমার ভয় দূর করুন, হে আল্লাহ! আমাকে আমার সামনে থেকে, পিছন থেকে, ডান থেকে, বাম থেকে, উপর থেকে এবং নিচ থেকে হেফাযত করুন।’’ (আবু দাউদ হা: ৫০৭৬)
৭. সায়্যিদুল ইস্তেগফার :
শাদ্দাদ ইবনে আউস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি বিশ্বাস সহকারে সকালে এটা পড়বে, সে মারা গেলে জান্নাতবাসী হয়ে মারা যাবে। আর যদি সন্ধ্যায় তা পড়ে, অতঃপর যদি মারা যায় তাহলেও সে জান্নাতবাসী হবে :
اَللّٰهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِيْ وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلٰى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوْءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوْءُ بِذَنْبِيْ فَاغْفِرْ لِيْ فَإِنَّهٗ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلَّا أَنْتَ
আল্লা-হুম্মা আনতা রাববী লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খালাক্বতানী ওয়াআনা ‘আবদুকা ওয়াআনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাসতাত্বা‘তু, ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন শার্রি মা-সানা‘তু, আবুউ লাকা বিনি‘মাতিকা আলাইয়্যা ওয়া আবুউ বিযামবী, ফাগফিরলী ফাইন্নাহু লা ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আনতা।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! তুমি আমার প্রতিপালক, তুমি ছাড়া কোন উপাস্য নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমার বান্দা। আমি আমার সাধ্যমত তোমার প্রতিশ্রুতিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ রয়েছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হতে তোমার নিকট আশ্রয় চাই। আমার উপর তোমার অনুগ্রহকে স্বীকার করছি এবং আমার পাপও স্বীকার করছি। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও, কেননা তুমি ছাড়া গুনাহ ক্ষমা করার আর কেউ নেই।’’
(আহমাদ হা: ১৭১১১, মেশকাত হা: ২৩৩৫)
৮. উসমান ইবনে আফ্ফান (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, কোন লোক দৈনিক সকালে ও সন্ধ্যায় নিচের দো‘আটি তিন বার পাঠ করলে কোন বস্তু তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না :
بِسْمِ اللهِ الَّذِيْ لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهٖ شَيْءٌ فِي الْاَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ
বিস্মিল্লা-হিললাযী লা ইয়াযুর্রু মা‘আসমিহী শাইউন ফিলআর্যি ওয়ালা ফিস্সামা-ই ওয়াহুয়াস সামী‘উল ‘আলীম।
অর্থ : ‘‘সেই আল্লাহর নামে আমি শুরু করছি যার নামের বরকতে আসমান ও যমীনের কোন বস্তু ক্ষতি করতে পারে না এবং তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ।’’ (আবু দাঊদ, তিরমিযী, মেশকাত হা: ২৩৯১)
৯. সাওবান (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি সকালে ও সন্ধ্যায় তিন বার করে নিচের দো‘আ পাঠ করবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার উপর খুশি হয়ে যাবেন :
رَضِيْتُ بِاللهِ رَبًّا وَّبِالْاِسْلَامِ دِيْنًا وَّبِمُحَمَّدٍ نَّبِيًّا
রাযীতু বিল্লা-হি রাববাও ওয়াবিল ইসলা-মি দ্বীনাও ওয়া বিমুহাম্মাদিন নাবিয়্যা।
অর্থ : ‘‘আমি আল্লাহকে রব হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে এবং মুহাম্মাদ ﷺকে নবী হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট হয়েছি।’’ (তিরমিযী, মেশকাত হা: ২৩৯৯)
১০. উম্মুল মু‘মিনীন জুওয়াইরিয়া (রাঃ) ফজরের নামায পড়ার পর চাশ্তের সময় পর্যন্ত নিজের স্থানে বসা ছিলেন। নবী ﷺ বাহির থেকে এসে তাকে বললেন, তোমার এখান থেকে যাওয়ার পর আমি এমন চারটি কালিমা তিন বার পাঠ করেছি, আজ তুমি যা কিছু পড়েছ তার সাথে ওজন করা হলে তা সমান হবে। সে কালিমাগুলো হচ্ছে :
سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدهٖ عَدَدَ خَلْقِه ٖ وَ رِضَا نَفْسِهٖ وَ زِنَةَ عَرْشِهٖ وَ مِدَادَ كَلِمَاتِهٖ
সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াবিহামদী ‘আদাদা খালক্বিহী ওয়ারিযা নাফসিহী ওয়া যিনাতা ‘আরশিহী ওয়া মিদা-দা কালিমা-তিহ।
অর্থ : ‘‘আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি তাঁর সৃষ্টির সংখ্যা, তাঁর সন্তুষ্টি, তাঁর আরশের ওজন এবং তাঁর বাক্যাবলীর সমান সংখ্যক।’’
(মুসলিম হা: ৭০৮৯, তিরমিযী হা: ৩৫৫৫)
১১. রাসূল ﷺ বলেন, যে ব্যক্তি দৈনিক ৩ বার আল্লাহর কাছে জান্নাত কামনা করে জান্নাত তার জন্য বলতে থাকে, হে আল্লাহ! তুমি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও। আর যে ব্যক্তি ৩ বার জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি কামনা করে জাহান্নামও তার জন্য এ বলে দো‘আ করে, হে আল্লাহ! তুমি তাকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি দাও। (ইবনে মাজাহ)
জান্নাত লাভের দো‘আ :
اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ اَسْأَلُكَ جَنَّةَ الْفِرْدَوْسِ
আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা জান্নাতাল ফির্দাউস।
‘‘হে আল্লাহ! আমি জান্নাতুল ফিরদাউস কামনা করছি।’’
জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের দো‘আ :
اَللّٰهُمَّ اَجِرْنِىْ مِنَ النَّارِ -
আল্লাহুম্মা আজিরনী মিনান নার।
‘‘হে আল্লাহ আমাকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দিন।’’ (আবু দাউদ)
১২. মুয়াজ ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘‘সকালে ও সন্ধ্যায় সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক্ব ও সূরা নাস তিনবার করে পাঠ কর, তাহলে সবকিছু থেকে তোমাকে হেফাযত করার জন্য এগুলো যথেষ্ট হবে।’’ (আবু দাঊদ, তিরমিযী হা: ৩৫৭৫)
১. সকাল হলে নবী ﷺ এ দো‘আ পাঠ করতেন-
أَصْبَحْنَا وَأَصْبَحَ الْمُلْكُ للهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ أَسْأَلُكَ خَيْرَ هٰذَا الْيَوْمِ فَتْحَهٗ وَنَصْرَهٗ وَ نُوْرَهٗ وَبَرَكَتَهٗ وَهُدَاهٗ وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا فِيْهِ وَشَرِّ مَا بَعْدَهٗ
আসবাহনা ওয়া আসবাহাল মুলকু লিল্লা-হি রবিবল ‘আ-লামীন। আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা খায়রা হা-যাল ইয়াউমি ফাতহাহু ওয়া নাসরাহু ওয়া নূরাহু ওয়া বারাকাতাহু ওয়া হুদা-হু, ওয়া আঊযুবিকা মিন শাররি মা ফীহি ওয়া শাররি মা বা‘দাহু।
অর্থ : ‘‘আমরা এবং সমগ্র জগত রাববুল ‘আলামীন আল্লাহর জন্য সকালে উপণীত হয়েছি। হে আল্লাহ! আমি এই দিনের কল্যাণ, সফলতা, সাহায্য, নূর, বরকত এবং হেদায়াত কামনা করছি এবং আমি আশ্রয় চাচ্ছি এই দিনের মধ্যে এবং তার পরে যে অকল্যাণ রয়েছে তার অনিষ্ট থেকে।’’
(আবু দাউদ, মেশকাত)
২. আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, সকাল হলে নবী ﷺ এ দো‘আ বলতেন-
اَللّٰهُمَّ بِكَ أَصْبَحْنَا ، وَبِكَ أَمْسَيْنَا ، وَبِكَ نَحْيَا ، وَبِكَ نَمُوْتُ وَإِلَيْكَ النُّشُوْرُ
আল্লা-হুম্মা বিকা আসবাহ্না ওয়াবিকা আমসাইনা ওয়াবিকা নাহ্ইয়া ওয়াবিকা নামূতু ওয়া ইলাইকান নুশূর।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! তোমার কুদরতে আমরা সকাল করি এবং তোমার কুদরতে আমরা সন্ধ্যা করি, তোমার নামে আমরা বাঁচি আর তোমার নামে আমরা মৃত্যুবরণ করি এবং তোমার দিকেই আমাদের প্রত্যাবর্তন করতে হবে।’’
৩. আবার সন্ধ্যা হলে তিনি বলতেন-
اَللّٰهُمَّ بِكَ أَمْسَيْنَا وَبِكَ أَصْبَحْنَا، وبِكَ نَحْيَا ، وَبِكَ نَمُوْتُ وَإِلَيْكَ النُّشُوْرُ
আল্লা-হুম্মা বিকা আমসাইনা ওয়াবিকা আস্বাহনা ওয়াবিকা নাহ্ইয়া ওয়াবিকা নামূতু ওয়া ইলাইকান নুশূর।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! তোমার কুদরতে আমরা সন্ধ্যা করি এবং তোমার কুদরতে আমরা সকাল করি, তোমার নামে আমরা বাঁচি আর তোমার নামে আমরা মৃত্যুবরণ করি এবং তোমার দিকেই আমাদের প্রত্যাবর্তন করতে হবে।’’ (আবু দাঊদ, তিরমিযী, মেশকাত হা: ২৩৮৯)
৪. সন্ধ্যার সময় নবী ﷺনিচের দো‘আটিও পড়তেন :
أَمْسَيْنَا وَأَمْسَى الْمُلْكُ للهِ وَالْحَمْدُ للهِ وَ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِ هٰذِهِ اللَّيْلَةِ وَخَيْرِ مَا فِيْهَا وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَشَرِّ مَا فِيْهَا اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْكَسَلِ وَالْهَرَمِ وَسُوْءِ الْكِبَرِ اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابٍ فِى النَّارِ وَعَذَابٍ فِى الْقَبْرِ
আমসাইনা ওয়া আমসাল মুলকু লিল্লা-হ, ওয়ালহামদু লিল্লা-হ, ওয়ালা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা শারীকালাহ্, লাহুলমুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শায়ইন ক্বাদীর। আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা মিন খাইরি হা-যিহিললাইলাতি ওয়াখাইরি মা ফীহা, ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিনশাররিহা ওয়াশাররি মা ফীহা, আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল কাসালি ওয়াল হারামি ওয়া সূইল কিবারি, আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিন আযা-বিন ফিন্না-রি ওয়া আযা-বিন ফিল ক্বাবরি।
অর্থ : ‘‘আল্লাহর উদ্দেশ্যে আমরা এবং সমগ্র জগত সন্ধ্যায় প্রবেশ করলাম। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। তিনি ব্যতীত ইবাদাতের যোগ্য কোন মাবূদ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। রাজত্ব তাঁরই এবং সমস্ত প্রশংসা তাঁর। তিনি সকল বিষয়ে ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট এ রাতের মঙ্গল এবং এ রাতে যা আছে তার মঙ্গল কামনা করছি, আর আমি আশ্রয় চাই এ রাতের অমঙ্গল এবং এ রাতে যে অমঙ্গল রয়েছে তা হতে। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই অলসতা, বার্ধক্য ও বার্ধক্যের অপকারিতা হতে। হে আল্লাহ! আমি আশ্রয় চাই জাহান্নামের আযাব ও কবরের শাস্তি হতে।’’ (মুসলিম, মেশকাত হা: ২৩৮১)
৫. আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) নবী ﷺ কে বললেন, আমাকে কিছু বাক্য শিখিয়ে দিন যা আমি সকালে ও সন্ধ্যায় পড়ব। তখন নবী ﷺ বললেন, তুমি সকালে, সন্ধ্যায় এবং শয়নের সময় নিচের বাক্যগুলো পড়বে :
اَللّٰهُمَّ فَاطِرَ السَّمَاوَاتِ وَ الْاَرْضِ عَالِمَ الْغَيْبِ وَ الشَّهَادَةِ رَبَّ كُلِّ شَيْءٍ وَ مَلِيْكَهٗ أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ نَفْسِيْ وَ شَرِّ الشَّيْطَانِ وَ شِرْكِهٖ
আল্লাহুম্মা ফা-তিরাস সামাওয়াতি ওয়াল আরযি আ-লিমাল গায়বি ওয়াশ শাহাদাতি, রববা কুল্লি শায়ইন ওয়ামালীকাহু আশহাদু আল্লা-ই লা-হা ইল্লা আনতা, আওযুবিকা মিন শাররি নাফসী, ওয়া শার্রিশ শায়তা-নি ওয়া শিরকিহ।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! আপনি আসমান এবং যমীনের স্রষ্টা, দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী, প্রত্যেক জিনিসের রব এবং মালিক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি ছাড়া কোন মাবূদ নেই আর আমি আমার অন্তরের অনিষ্ট থেকে এবং শয়তানের অনিষ্ট ও তার শির্ক থেকে আপনার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি।’’ (মুসতাদরাকে হাকীম হা: ১৮৯২)
৬. আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ কোন দিনই সকালে এবং সন্ধ্যায় নিচের দো‘আগুলো পড়া বাদ দিতেন না।
اَللّٰهُمَّ إِنِّى أَسْأَلُكَ الْعَافِيَةَ فِى الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ اَللّٰهُمَّ إِنِّى أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ فِى دِينِى وَدُنْيَاىَ وَأَهْلِى وَمَالِى اَللَّهُمَّ اسْتُرْ عَوْرَاتِى وَآمِنْ رَوْعَاتِى اَللّٰهُمَّ احْفَظْنِى مِنْ بَيْنِ يَدَىَّ وَمِنْ خَلْفِى وَعَنْ يَمِيْنِى وَعَنْ شِمَالِى وَمِنْ فَوْقِى وَأَعُوذُ بِعَظَمَتِكَ أَنْ أُغْتَالَ مِنْ تَحْتِىْ
আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল আ-ফিয়াতা ফিদ্দুনইয়া ওয়াল আ-খিরাতি, আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল আফওয়া ওয়াল আ-ফিয়াতা ফী দীনী ওয়াদুন ইয়া ওয়াআহলী ওয়ামা-লী আল্লা-হুম্মাসতুর ‘আওরা-তী ওয়াআমিন রাওআ-তী, আল্লা-হুম্মাহ ফাযনী মিমবাইনি ইয়াদাইয়া ওয়ামিন খালফী ওয়া ‘আন ইয়ামীনী ওয়াআন শিমা-লী ওয়ামিন ফাওক্বী ওয়া আউযূ বিআযমাতিকা আন-উগতা-লা মিন তাহতী।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার নিকট দুনিয়া ও আখেরাতের নিরাপত্তা চাই, হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার নিকট আমার দ্বীন ও দুনিয়া এবং আমার পরিবার ও আমার মালের নিরাপত্তা চাই। হে আল্লাহ! আমার দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখুন এবং আমার ভয় দূর করুন, হে আল্লাহ! আমাকে আমার সামনে থেকে, পিছন থেকে, ডান থেকে, বাম থেকে, উপর থেকে এবং নিচ থেকে হেফাযত করুন।’’ (আবু দাউদ হা: ৫০৭৬)
৭. সায়্যিদুল ইস্তেগফার :
শাদ্দাদ ইবনে আউস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি বিশ্বাস সহকারে সকালে এটা পড়বে, সে মারা গেলে জান্নাতবাসী হয়ে মারা যাবে। আর যদি সন্ধ্যায় তা পড়ে, অতঃপর যদি মারা যায় তাহলেও সে জান্নাতবাসী হবে :
اَللّٰهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِيْ وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلٰى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوْءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوْءُ بِذَنْبِيْ فَاغْفِرْ لِيْ فَإِنَّهٗ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلَّا أَنْتَ
আল্লা-হুম্মা আনতা রাববী লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খালাক্বতানী ওয়াআনা ‘আবদুকা ওয়াআনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাসতাত্বা‘তু, ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন শার্রি মা-সানা‘তু, আবুউ লাকা বিনি‘মাতিকা আলাইয়্যা ওয়া আবুউ বিযামবী, ফাগফিরলী ফাইন্নাহু লা ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আনতা।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! তুমি আমার প্রতিপালক, তুমি ছাড়া কোন উপাস্য নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমার বান্দা। আমি আমার সাধ্যমত তোমার প্রতিশ্রুতিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ রয়েছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হতে তোমার নিকট আশ্রয় চাই। আমার উপর তোমার অনুগ্রহকে স্বীকার করছি এবং আমার পাপও স্বীকার করছি। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও, কেননা তুমি ছাড়া গুনাহ ক্ষমা করার আর কেউ নেই।’’
(আহমাদ হা: ১৭১১১, মেশকাত হা: ২৩৩৫)
৮. উসমান ইবনে আফ্ফান (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, কোন লোক দৈনিক সকালে ও সন্ধ্যায় নিচের দো‘আটি তিন বার পাঠ করলে কোন বস্তু তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না :
بِسْمِ اللهِ الَّذِيْ لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهٖ شَيْءٌ فِي الْاَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ
বিস্মিল্লা-হিললাযী লা ইয়াযুর্রু মা‘আসমিহী শাইউন ফিলআর্যি ওয়ালা ফিস্সামা-ই ওয়াহুয়াস সামী‘উল ‘আলীম।
অর্থ : ‘‘সেই আল্লাহর নামে আমি শুরু করছি যার নামের বরকতে আসমান ও যমীনের কোন বস্তু ক্ষতি করতে পারে না এবং তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ।’’ (আবু দাঊদ, তিরমিযী, মেশকাত হা: ২৩৯১)
৯. সাওবান (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি সকালে ও সন্ধ্যায় তিন বার করে নিচের দো‘আ পাঠ করবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার উপর খুশি হয়ে যাবেন :
رَضِيْتُ بِاللهِ رَبًّا وَّبِالْاِسْلَامِ دِيْنًا وَّبِمُحَمَّدٍ نَّبِيًّا
রাযীতু বিল্লা-হি রাববাও ওয়াবিল ইসলা-মি দ্বীনাও ওয়া বিমুহাম্মাদিন নাবিয়্যা।
অর্থ : ‘‘আমি আল্লাহকে রব হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে এবং মুহাম্মাদ ﷺকে নবী হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট হয়েছি।’’ (তিরমিযী, মেশকাত হা: ২৩৯৯)
১০. উম্মুল মু‘মিনীন জুওয়াইরিয়া (রাঃ) ফজরের নামায পড়ার পর চাশ্তের সময় পর্যন্ত নিজের স্থানে বসা ছিলেন। নবী ﷺ বাহির থেকে এসে তাকে বললেন, তোমার এখান থেকে যাওয়ার পর আমি এমন চারটি কালিমা তিন বার পাঠ করেছি, আজ তুমি যা কিছু পড়েছ তার সাথে ওজন করা হলে তা সমান হবে। সে কালিমাগুলো হচ্ছে :
سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدهٖ عَدَدَ خَلْقِه ٖ وَ رِضَا نَفْسِهٖ وَ زِنَةَ عَرْشِهٖ وَ مِدَادَ كَلِمَاتِهٖ
সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াবিহামদী ‘আদাদা খালক্বিহী ওয়ারিযা নাফসিহী ওয়া যিনাতা ‘আরশিহী ওয়া মিদা-দা কালিমা-তিহ।
অর্থ : ‘‘আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি তাঁর সৃষ্টির সংখ্যা, তাঁর সন্তুষ্টি, তাঁর আরশের ওজন এবং তাঁর বাক্যাবলীর সমান সংখ্যক।’’
(মুসলিম হা: ৭০৮৯, তিরমিযী হা: ৩৫৫৫)
১১. রাসূল ﷺ বলেন, যে ব্যক্তি দৈনিক ৩ বার আল্লাহর কাছে জান্নাত কামনা করে জান্নাত তার জন্য বলতে থাকে, হে আল্লাহ! তুমি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও। আর যে ব্যক্তি ৩ বার জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি কামনা করে জাহান্নামও তার জন্য এ বলে দো‘আ করে, হে আল্লাহ! তুমি তাকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি দাও। (ইবনে মাজাহ)
জান্নাত লাভের দো‘আ :
اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ اَسْأَلُكَ جَنَّةَ الْفِرْدَوْسِ
আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা জান্নাতাল ফির্দাউস।
‘‘হে আল্লাহ! আমি জান্নাতুল ফিরদাউস কামনা করছি।’’
জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের দো‘আ :
اَللّٰهُمَّ اَجِرْنِىْ مِنَ النَّارِ -
আল্লাহুম্মা আজিরনী মিনান নার।
‘‘হে আল্লাহ আমাকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দিন।’’ (আবু দাউদ)
১২. মুয়াজ ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘‘সকালে ও সন্ধ্যায় সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক্ব ও সূরা নাস তিনবার করে পাঠ কর, তাহলে সবকিছু থেকে তোমাকে হেফাযত করার জন্য এগুলো যথেষ্ট হবে।’’ (আবু দাঊদ, তিরমিযী হা: ৩৫৭৫)
যিকির আরবি শব্দ। বাংলায় এর অর্থ স্মরণ করা বা স্মরণ করানো। যে কোন প্রকারে মনে, মুখে, অন্তরে, কর্মের মাধ্যমে, চিন্তার মাধ্যমে, আদেশ পালন করে বা নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে আল্লাহর নাম, গুণাবলী, বিধি-বিধান, তার পুরস্কার ও শাস্তি ইত্যাদি স্মরণ করা বা করানোকে ইসলামের পরিভাষায় আল্লাহর যিকির বলা হয়। ব্যাপক অর্থে ঈমান ও নেককর্ম সবই যিকির বলে গণ্য।
বিশেষভাবে মুখে বারংবার আল্লাহর নাম, গুণাবলী ইত্যাদি পাঠ বা জপ করা কুরআন-হাদীস নির্দেশিত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। আল্লাহর তাকবীর, তাহলীল, প্রশংসা, গুণগান, দো‘আ, ইস্তেগফার, দরূদ ও সালাম ইত্যাদি সবই এ পর্যায়ের যিকির। মুমিন বসে, শুয়ে, হাঁটতে, চলতে ওযূসহ বা ওযূ ছাড়া সর্বাবস্থায় এ সকল যিকির করতে পারেন।
নফল ইবাদাত বহুমুখী ও অনেক আর যিকিরও এক ধরণের নফল ইবাদাত। অন্যান্য নফল ইবাদাত না করতে পারলেও সর্বক্ষণ জিহবাকে আল্লাহর যিকিরে রত রাখা অতীব জরুরি। মহান আল্লাহ বলেন-
فَاذْكُرُوْنِيْ أَذْكُرْكُمْ
‘‘তোমরা আমাকে স্মরণ কর, তাহলে আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করব।’’ (সূরা বাকারা : ১৫২)
وَاذْكُرُوْا اللهَ كَثِيْرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ
‘‘তোমরা আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ কর যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।’’ (সূরা জুম‘আ : ১০)
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا اذْكُرُوْا اللهَ ذِكْراً كَثِيْرًا وَسَبِّحُوْهُ بُكْرَةً وَّ أَصِيْلاً
‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ কর। আর সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা কর।’’ (সূরা আহযাব : ৪১-৪২)
আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ সর্বাবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করতেন।
(মুসলিম হা: ৮৫২)
আবু মূসা আশ‘আরী (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, ‘‘যে লোক তার রবের যিকির করে এবং যে লোক তার রবের যিকির করে না, তাদের উদাহরণ হচ্ছে জীবিত ও মৃতের মত।’’
তবে ইমাম মুসলিমের বর্ণনায় বলা হয়েছে, ‘‘আল্লাহর যিকির যে ঘরে হয় এবং যে ঘরে হয় না তাদের উদাহরণ হচ্ছে জীবিত ও মৃতের মত।’’
(বুখারী হা: ৬৪০৭, মুসলিম হা: ৭৭৯)
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘আমার বান্দা আমার সম্বন্ধে যে রকম ধারণা করে আমি ঠিক সেরকম। সে যখন আমাকে স্মরণ করে তখন আমি তার সাথে থাকি। যদি সে মনে মনে আমাকে স্মরণ করে আমিও মনে মনে তাকে স্মরণ করি। আর সে যদি কোন মজলিসে আমাকে স্মরণ করে তবে আমিও তার চেয়ে উত্তম মজলিসে অর্থাৎ ফেরেশ্তাদের মজলিসে তাকে স্মরণ করি। (বুখারী হা: ৭৪০৫, মুসলিম হা: ২৬৭৫)
আবদুল্লাহ ইবনে বুস্র (রাঃ) বলেন, জনৈক লোক বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার জন্য ইসলামের হুকুম-আহকাম অধিক হয়ে গেছে। কাজেই আমাকে আপনি এমন একটি বিষয় বলে দিন যেটাকে আমি শক্তভাবে আঁকড়ে ধরব। তিনি বললেন, ‘‘তোমার জিহবা যেন সর্বক্ষণ আল্লাহর যিকিরে ব্যস্ত থাকে।’’
(আল-জামি‘ হা: ৭৭০০, তিরমিযী হা: ৩৩৭৫)
বিশেষভাবে মুখে বারংবার আল্লাহর নাম, গুণাবলী ইত্যাদি পাঠ বা জপ করা কুরআন-হাদীস নির্দেশিত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। আল্লাহর তাকবীর, তাহলীল, প্রশংসা, গুণগান, দো‘আ, ইস্তেগফার, দরূদ ও সালাম ইত্যাদি সবই এ পর্যায়ের যিকির। মুমিন বসে, শুয়ে, হাঁটতে, চলতে ওযূসহ বা ওযূ ছাড়া সর্বাবস্থায় এ সকল যিকির করতে পারেন।
নফল ইবাদাত বহুমুখী ও অনেক আর যিকিরও এক ধরণের নফল ইবাদাত। অন্যান্য নফল ইবাদাত না করতে পারলেও সর্বক্ষণ জিহবাকে আল্লাহর যিকিরে রত রাখা অতীব জরুরি। মহান আল্লাহ বলেন-
فَاذْكُرُوْنِيْ أَذْكُرْكُمْ
‘‘তোমরা আমাকে স্মরণ কর, তাহলে আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করব।’’ (সূরা বাকারা : ১৫২)
وَاذْكُرُوْا اللهَ كَثِيْرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ
‘‘তোমরা আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ কর যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।’’ (সূরা জুম‘আ : ১০)
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا اذْكُرُوْا اللهَ ذِكْراً كَثِيْرًا وَسَبِّحُوْهُ بُكْرَةً وَّ أَصِيْلاً
‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ কর। আর সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা কর।’’ (সূরা আহযাব : ৪১-৪২)
আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ সর্বাবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করতেন।
(মুসলিম হা: ৮৫২)
আবু মূসা আশ‘আরী (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, ‘‘যে লোক তার রবের যিকির করে এবং যে লোক তার রবের যিকির করে না, তাদের উদাহরণ হচ্ছে জীবিত ও মৃতের মত।’’
তবে ইমাম মুসলিমের বর্ণনায় বলা হয়েছে, ‘‘আল্লাহর যিকির যে ঘরে হয় এবং যে ঘরে হয় না তাদের উদাহরণ হচ্ছে জীবিত ও মৃতের মত।’’
(বুখারী হা: ৬৪০৭, মুসলিম হা: ৭৭৯)
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘আমার বান্দা আমার সম্বন্ধে যে রকম ধারণা করে আমি ঠিক সেরকম। সে যখন আমাকে স্মরণ করে তখন আমি তার সাথে থাকি। যদি সে মনে মনে আমাকে স্মরণ করে আমিও মনে মনে তাকে স্মরণ করি। আর সে যদি কোন মজলিসে আমাকে স্মরণ করে তবে আমিও তার চেয়ে উত্তম মজলিসে অর্থাৎ ফেরেশ্তাদের মজলিসে তাকে স্মরণ করি। (বুখারী হা: ৭৪০৫, মুসলিম হা: ২৬৭৫)
আবদুল্লাহ ইবনে বুস্র (রাঃ) বলেন, জনৈক লোক বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার জন্য ইসলামের হুকুম-আহকাম অধিক হয়ে গেছে। কাজেই আমাকে আপনি এমন একটি বিষয় বলে দিন যেটাকে আমি শক্তভাবে আঁকড়ে ধরব। তিনি বললেন, ‘‘তোমার জিহবা যেন সর্বক্ষণ আল্লাহর যিকিরে ব্যস্ত থাকে।’’
(আল-জামি‘ হা: ৭৭০০, তিরমিযী হা: ৩৩৭৫)
১. জাবির (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺকে আমি বলতে শুনেছি, সবচাইতে উত্তম যিকির হচ্ছে :
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ
লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ।
‘‘আল্লাহ ছাড়া কোন মাবূদ নেই’’। (তিরমিযী, সহীহ আল জামি‘ হা: ১১০৪)
২. আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, আমার নিকট নিচের বাক্যগুলো বলা পৃথিবীর সকল বস্তু অপেক্ষা অধিক প্রিয় :
سُبْحَانَ اللهِ ، وَالْحَمْدُ للهِ ، وَلَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ ، وَاللهُ أكْبَرُ .
সুবহা-নাল্লা-হি ওয়ালহাম্দুলিল্লা-হি ওয়ালা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াল্লা-হু আকবার।
অর্থ : ‘‘আল্লাহ পবিত্র, সকল প্রশংসা তাঁর, আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই, আল্লাহ সবচেয়ে বড়।’’ (মুসলিম হা: ২৬৯৫)
৩. আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘‘যে লোক দৈনিক একশ বার নিচের কালেমাটি পাঠ করবে, সে ১০ টি দাস মুক্ত করার সমান সওয়াব অর্জন করবে, তার জন্য একশটি নেকী লিখা হবে এবং তার আমলনামা থেকে একশটি গুনাহ মুছে ফেলা হবে। আর সেদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সে শয়তানের (ওয়াস্ওয়াসা) থেকে মুক্ত থাকবে এবং কিয়ামতের দিন আর কেউ তার চাইতে উত্তম আমালসহ উপস্থিত হবে না, একমাত্র সে লোক ব্যতীত যে এ কালেমা তার চাইতে অধিক আমল করেছে।’’
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ .
লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা শারীকা লাহু লাহুলমুল্কু ওয়ালাহুল হাম্দু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শায়ইন ক্বাদীর।
অর্থ : ‘‘আল্লাহ ব্যতীত কোন মা’বুদ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন অংশীদার নেই, সমস্ত রাজত্ব তাঁর, সকল প্রশংসাও তাঁর। তিনি সকল বিষয়ের উপর শক্তিশালী।’’ (বুখারী, মুসলিম)
৪. রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে লোক প্রতিদিন একশত বার নিচের বাক্যগুলো বলবে তার সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমান হয়।
سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهٖ
সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াবি-হামদিহী,
‘‘আমি প্রশংসার সাথে আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছি।’’
(বুখারী, মুসলিম, মেশকাত হা: ২৩৯৫)
৫. আবু আইয়ূব আনসারী (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, যে লোক নিচের কালেমাটি ১০বার পাঠ করে, সে ইসমাঈল এর বংশের ৪টি সন্তানকে গোলামী থেকে মুক্ত করার সওয়াব পাবে :
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ ، لَهُ الْمُلْكُ ؛ وَلَهُ الْحَمْدُ ، وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ
লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা শারীকালাহু লাহুলমুলকু ওয়ালাহুল হাম্দু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শায়ইন ক্বাদীর।
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। সমস্ত বাদশাহী এবং সমস্ত প্রশংসা তাঁরই জন্য। আর তিনি সবকিছুর উপর সর্ব শক্তিমান।’’ (বুখারী, মুসলিম হা: ৭০২০)
৬. রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, পবিত্রতা ঈমানের অর্ধাংশ।
اَلْحَمْدُ للهِ
‘‘আলহাম্দু লিল্লা-হ’’ বাক্যটি মীযান (দাঁড়িপাল্লা) ভরে দেয় এবং
سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ للهِ
‘‘সুবহা-নাল্লা-হি ওয়ালহাম্দুলিল্লা-হ’’
এ বাক্য দু’টি বা এদের প্রত্যেকটি আসমান ও যমীনের মধ্যবর্তী সবটুকু ভরে দেয়। (মুসলিম হা: ৫৫৬, মেশকাত হা: ২৮১)
৭. আবু মূসা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাকে বললেন, আমি কি তোমাকে জান্নাতের গুপ্তধনের কথা জানাব না? আমি বললাম, অবশ্যই হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, তা হল :
لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ .
লা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ।
‘‘আল্লাহ ছাড়া কোন শক্তি ও আশ্রয় নেই।’’ (বুখারী, মুসলিম, মেশকাত)
৮. আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, এমন দু’টি বাক্য রয়েছে, যা মুখে বলতে হালকা (সহজে উচ্চারিত হয়) কিন্তু পাল্লায় (ওজনে) ভারী এবং আল্লাহর নিকট অত্যন্ত প্রিয় :
سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهٖ ، سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيْمِ
সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহী, সুবহা-নাল্লা-হিল ‘আজীম।
‘‘প্রশংসার সহিত আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি। মহান আল্লাহর মাহাত্ম্য ঘোষণা করছি।’’ (বুখারী হা: ৬৪০৬, মুসলিম হা: ২৬৯৪)
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ
লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ।
‘‘আল্লাহ ছাড়া কোন মাবূদ নেই’’। (তিরমিযী, সহীহ আল জামি‘ হা: ১১০৪)
২. আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, আমার নিকট নিচের বাক্যগুলো বলা পৃথিবীর সকল বস্তু অপেক্ষা অধিক প্রিয় :
سُبْحَانَ اللهِ ، وَالْحَمْدُ للهِ ، وَلَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ ، وَاللهُ أكْبَرُ .
সুবহা-নাল্লা-হি ওয়ালহাম্দুলিল্লা-হি ওয়ালা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াল্লা-হু আকবার।
অর্থ : ‘‘আল্লাহ পবিত্র, সকল প্রশংসা তাঁর, আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই, আল্লাহ সবচেয়ে বড়।’’ (মুসলিম হা: ২৬৯৫)
৩. আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘‘যে লোক দৈনিক একশ বার নিচের কালেমাটি পাঠ করবে, সে ১০ টি দাস মুক্ত করার সমান সওয়াব অর্জন করবে, তার জন্য একশটি নেকী লিখা হবে এবং তার আমলনামা থেকে একশটি গুনাহ মুছে ফেলা হবে। আর সেদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সে শয়তানের (ওয়াস্ওয়াসা) থেকে মুক্ত থাকবে এবং কিয়ামতের দিন আর কেউ তার চাইতে উত্তম আমালসহ উপস্থিত হবে না, একমাত্র সে লোক ব্যতীত যে এ কালেমা তার চাইতে অধিক আমল করেছে।’’
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ .
লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা শারীকা লাহু লাহুলমুল্কু ওয়ালাহুল হাম্দু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শায়ইন ক্বাদীর।
অর্থ : ‘‘আল্লাহ ব্যতীত কোন মা’বুদ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন অংশীদার নেই, সমস্ত রাজত্ব তাঁর, সকল প্রশংসাও তাঁর। তিনি সকল বিষয়ের উপর শক্তিশালী।’’ (বুখারী, মুসলিম)
৪. রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে লোক প্রতিদিন একশত বার নিচের বাক্যগুলো বলবে তার সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমান হয়।
سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهٖ
সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াবি-হামদিহী,
‘‘আমি প্রশংসার সাথে আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছি।’’
(বুখারী, মুসলিম, মেশকাত হা: ২৩৯৫)
৫. আবু আইয়ূব আনসারী (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, যে লোক নিচের কালেমাটি ১০বার পাঠ করে, সে ইসমাঈল এর বংশের ৪টি সন্তানকে গোলামী থেকে মুক্ত করার সওয়াব পাবে :
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ ، لَهُ الْمُلْكُ ؛ وَلَهُ الْحَمْدُ ، وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ
লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা শারীকালাহু লাহুলমুলকু ওয়ালাহুল হাম্দু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শায়ইন ক্বাদীর।
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। সমস্ত বাদশাহী এবং সমস্ত প্রশংসা তাঁরই জন্য। আর তিনি সবকিছুর উপর সর্ব শক্তিমান।’’ (বুখারী, মুসলিম হা: ৭০২০)
৬. রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, পবিত্রতা ঈমানের অর্ধাংশ।
اَلْحَمْدُ للهِ
‘‘আলহাম্দু লিল্লা-হ’’ বাক্যটি মীযান (দাঁড়িপাল্লা) ভরে দেয় এবং
سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ للهِ
‘‘সুবহা-নাল্লা-হি ওয়ালহাম্দুলিল্লা-হ’’
এ বাক্য দু’টি বা এদের প্রত্যেকটি আসমান ও যমীনের মধ্যবর্তী সবটুকু ভরে দেয়। (মুসলিম হা: ৫৫৬, মেশকাত হা: ২৮১)
৭. আবু মূসা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাকে বললেন, আমি কি তোমাকে জান্নাতের গুপ্তধনের কথা জানাব না? আমি বললাম, অবশ্যই হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, তা হল :
لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ .
লা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ।
‘‘আল্লাহ ছাড়া কোন শক্তি ও আশ্রয় নেই।’’ (বুখারী, মুসলিম, মেশকাত)
৮. আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, এমন দু’টি বাক্য রয়েছে, যা মুখে বলতে হালকা (সহজে উচ্চারিত হয়) কিন্তু পাল্লায় (ওজনে) ভারী এবং আল্লাহর নিকট অত্যন্ত প্রিয় :
سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهٖ ، سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيْمِ
সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহী, সুবহা-নাল্লা-হিল ‘আজীম।
‘‘প্রশংসার সহিত আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি। মহান আল্লাহর মাহাত্ম্য ঘোষণা করছি।’’ (বুখারী হা: ৬৪০৬, মুসলিম হা: ২৬৯৪)
আল কুরআনুল কারীমের সকল সূরা ও আয়াতই মর্যাদাপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ। তবে কিছু বিশেষ আয়াত ও সূরা রয়েছে যেগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে আল্লাহর গুণাবলীর কথা উল্লেখ রয়েছে। হাদীসেও এসব আয়াত ও সূরার ফযীলত বর্ণনা করা হয়েছে। সকাল-সন্ধ্যায় এসব আয়াত ও সূরা পাঠ করলে বিশেষ উপকার লাভ করা যায়। নিম্নে এ সংক্রান্ত কিছু আয়াত উল্লেখ করা হল :
আয়াতুল কুরসী :
اَللهُ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لَا تَأْخُذُهٗ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ لَهٗ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْاَرْضِ مَنْ ذَا الَّذِيْ يَشْفَعُ عِنْدَهٗ إِلَّا بِإِذْنِهٖ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يُحِيْطُوْنَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهٖ إِلَّا بِمَا شَاءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضَ وَلَا يَئُوْدُهٗ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيْمُ
আল্লা-হু লা- ইলা-হা ইল্লা- হুওয়াল হাইয়ুল ক্বাইয়ূম। লা-তা’খুযুহূ সিনাতুঁ ওয়ালা- নাঊম। লাহূ মা- ফিস্সামা-ওয়াতি ওয়ামা-ফিল আরয্। মান্যাল্লাযী ইয়াশ্ফা‘উ ‘ইন্দাহূ ইল্লা- বিইয্নিহ, ইয়া‘লামু মা- বাইনা আইদীহিম ওয়া মা-খল্ফাহুম ওয়ালা-ইউহীতূনা বিশায়ইম্ মিন ‘ইলমিহী ইল্লা- বিমা-শা-আ ওয়াসি‘আ কুর্সিয়্যুহুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরয্, ওয়ালা-ইয়াউদুহূ হিফ্যুহুমা- ওয়া হুয়াল ‘আলিয়্যুল ‘আযীম।
অর্থ : ‘‘আল্লাহ তিনি, যিনি ব্যতীত কোন (প্রকৃত) উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও সবকিছুর ধারক। তন্দ্রা এবং নিদ্রা কিছুই তাঁকে স্পর্শ করে না। আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে সবকিছু তাঁরই মালিকানাধীন। তাঁর হুকুম ব্যতীত এমন কে আছে, যে তাঁর নিকট সুপারিশ করতে পারে? তাদের সম্মুখে ও পিছনে যা কিছু আছে সবকিছুই তিনি জানেন। তিনি যতটুকু ইচ্ছা করেন ততটুকু ছাড়া তাঁর জ্ঞানসমুদ্র হতে তারা কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না। তার সিংহাসন আসমান ও যমীনকে বেষ্টন করে আছে। আর সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ তাঁকে মোটেই ক্লান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ ও সর্বাপেক্ষা মহান।’’ (সূরা বাক্বারা- ২৫৫)
সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত :
آمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَّبِّهٖ وَالْمُؤْمِنُوْنَ كُلٌّ آمَنَ بِاللهِ وَمَلَائِكَتِهٖ وَكُتُبِهٖ وَرُسُلِهٖ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّن رُّسُلِهٖ وَقَالُواْ سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ لَا يُكَلِّفُ اللهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهٗ عَلَى الَّذِيْنَ مِن قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهٖ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنتَ مَوْلَانَا فَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِيْنَ -
আ-মানার রাসূলু বিমা উনযিলা ইলাইহি মির রাবিবহী ওয়াল মুমিনূন, কুল্লুন আমানা বিল্লাহি ওয়া মালা-ইকাতিহী ওয়া কুতুবিহী ওয়া রুসুলিহ। লা নুফাররিক্কু বাইনা আহাদিম মিররুসূলিহ ওয়াক্বালু ছামি’না ওয়া আতা’না গুফরানাকা রাববানা ওয়া ইলাইকাল মাসীর। লা-ইয়ুকাল্লিফুল্লাহু নাফসান ইল্লা উসআহা লাহা মা কাসাবাত ওয়া আলাইহা মাকতাসাবাত, রববানা লা তুআ-খিযনা ইন নাসীনা আও আখতা’না রববানা ওয়ালা তাহমিল আলাইনা ইসরান কামা হামালতাহু আল্লাযীনা মিন কাবলিনা, রববানা ওয়ালা তুহাম্মিল না মা-লা-ত্বা-কাতা-লানা বিহ, ওয়া’ফু আন্না, ওয়াগফির লানা, ওয়ার হামনা আন্তা মাওলানা ফানসুরনা আলাল ক্বাওমিল কাফিরীন।
অর্থ : ‘‘রাসূল বিশ্বাস করেছেন যা তার রবের পক্ষ থেকে নাযিল হয়েছে এবং ঈমানদাররাও। প্রত্যেকেই আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা, তাঁর কিতাবসমূহ এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান এনেছে। আমরা তাঁর রাসূলদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না এবং তারা বলেছেন, আমরা শুনলাম এবং মেনে নিলাম। হে আমাদের রব! আমরা আপনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করি। আর আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তন স্থল। আল্লাহ সামর্থ্যের বাইরে কাউকে দায়িত্ব দেন না। সে যা ভাল করেছে তা তার কল্যাণে আসবে এবং যা মন্দ করেছে তা তার বিপক্ষে আসবে। হে আমাদের রব! আমাদের উপর এমন বোঝা চাপিয়ে দেবেন না যা আমাদের পূর্ববর্তীদের দিয়েছেন। আর আমাদের উপর এমন ভার দেবেন না যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই। আমাদেরকে মুক্তি দান করুন, ক্ষমা করুন এবং দয়া করুন। আপনি আমাদের অভিভাবক। সুতরাং আমাদেরকে কাফিরদের উপর সাহায্য করুন।’’
সূরা আলে ইমরানের ১৮ আয়াত :
شَهِدَ اللهُ أَنَّهٗ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ وَالْمَلَائِكَةُ وَأُولُو الْعِلْمِ قَائِمًا ۢبِالْقِسْطِ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
শাহিদাল্লা-হু আন্নাহু লা-ইলা-হা ইল্লা-হুওয়া ওয়াল মালাইকাতু ওয়া উলুলইল্মি ক্বা-ইমাম বিলক্বিস্তি লা-ইলা-হা ইল্লা- হুওয়াল আযীযুল হাকীম।
অর্থ : ‘‘আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, তিনি ছাড়া কোন মাবূদ নেই। (এ বিষয়ে আরো সাক্ষ্যদানকারী হচ্ছেন) ফেরেশতারা এবং জ্ঞানীরা। তিনি ন্যায়-নীতিতে প্রতিষ্ঠিত। তিনি ছাড়া কোন মাবূদ নেই। তিনি পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।’’
সূরা আলে ইমরানের ২৬, ২৭ আয়াত :
قُلِ اللّٰهُمَّ مَالِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِي الْمُلْكَ مَنْ تَشَاءُ وَتَنْزِعُ الْمُلْكَ مِمَّنْ تَشَاءُ وَتُعِزُّ مَنْ تَشَاءُ وَتُذِلُّ مَنْ تَشَاءُ بِيَدِكَ الْخَيْرُ إِنَّكَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ - تُولِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَتُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَتُخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ وَتُخْرِجُ الْمَيِّتَ مِنَ الْحَيِّ وَتَرْزُقُ مَنْ تَشَاءُ بِغَيْرِ حِسَابٍ
কুলিল্লা-হুম্মা মা-লিকাল মুলকি তু’তিল মুলকা মানতাশা-উ ওয়াতানযিউল মুলকা মিমমানতাশা-উ ওয়াতুইযযূ মানতাশা-উ ওয়াতুযিল্লু মানতাশা-উ বিয়াদিকাল খায়রু, ইন্নাকা আলা কুল্লি শায়ইন ক্বাদী-র। তু-লিযুল লায়লা ফিন্নাহারি ওয়াতু-লিযূন্নাহারা ফিল্লায়লি ওয়াতুখরিযুল হায়্যাই মিনাল মায়্যিতি ওয়া তুখরিযূল মায়্যিতা মিনাল হায়্যি, ওয়াতারযুকু মানতাশা-উ বিগাইরি হিসা-ব।
অর্থ : ‘‘বলুন, হে আল্লাহ! আপনিই রাজত্বের মালিক যাকে চান রাজত্ব দান করেন, আবার যার থেকে চান রাজত্ব কেড়ে নেন। আর যাকে চান সম্মানিত করেন আবার যাকে চান অপদস্থ করেন। আপনার হাতেই কল্যাণ। নিশ্চয় আপনি সর্ব বিষয়ে সর্ব শক্তিমান। আপনি রাতকে দিনের মধ্যে এবং দিনকে রাতের মধ্যে প্রবেশ করান এবং জীবিতকে মৃত হতে আর মৃতকে জীবিত হতে বের করেন। আর যাকে ইচ্ছা করেন অগণিত রিযিক দান করেন।’’
সূরা তওবার শেষ দুই আয়াত :
لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُوْلٌ مِّنْ أَنْفُسِكُمْ عَزِيْزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيْصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِيْنَ رَؤُوْفٌ رَّحِيْمٌ - فَإِنْ تَوَلَّوْا فَقُلْ حَسْبِيَ اللهُ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ
লাকাদ জা-আকুম্ রাসূলুম্ মিন আনফুসিকুম আযীযুন আলাইহি মা আনিত্তুম্ হারীসুন আলাইকুম্ বিল মু’মিনীনা রাউফুর রাহীম। ফাইন্ তাওয়াল্লাও ফাকুল হাসবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়া আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুয়া রববুল আরশিল আযীম্।
অর্থ : ‘‘অবশ্যই তোমাদের মধ্য হতেই তোমাদের নিকট একজন রাসূল এসেছে। তোমাদেরকে যা বিপন্ন করে সেটা তার জন্য কষ্টদায়ক। সে তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি সে দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু। অতঃপর তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে তুমি বলও, আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নেই। আমি তাঁরই উপর নির্ভর করি এবং তিনি মহান আরশের অধিপতি।’’
সূরা বনী ইসরাঈলের শেষ দুই আয়াত :
قُلِ ادْعُوا اللّٰهَ أَوِ ادْعُوا الرَّحْمٰنَ أَيًّا مَّا تَدْعُوا فَلَهُ الْاَسْمَاءُ الْحُسْنٰى وَلَا تَجْهَرْ بِصَلَاتِكَ وَلَا تُخَافِتْ بِهَا وَابْتَغِ بَيْنَ ذٰلِكَ سَبِيْلًا - وَقُلِ الْحَمْدُ للهِ الَّذِي لَمْ يَتَّخِذْ وَلَدًا وَّلَمْ يَكُنْ لَّهٗ شَرِيْكٌ فِي الْمُلْكِ وَلَمْ يَكُنْ لَّهٗ وَلِيٌّ مِّنَ الذُّلِّ وَكَبِّرْهُ تَكْبِيْرًا
কুলিদ উল্লা-হা আওভিদ উররহমা-না আইয়াম মা-তাদউ ফালাহুল আসমা-উল হুসনা- ওয়ালা তাজহার বিসালা-তিকা ওয়ালা তুখা-ফিত বিহা ওয়াবতাগি বাইনা যা-লিকা সাবীলা। ওয়া কুলিল হামদু লিল্লা-হিললাযি লাম ইয়াত্তাখিয ওয়ালাদাও ওয়া লাম ইয়াকুল লাহু শারীকুন ফীল মুলকি ওয়া লাম ইয়াকুল লাহু ওয়ালিয়্যুম মিনাযযুল্লি ওয়া কাবিবরহু তাকবীরা।
অর্থ : ‘‘বল, তোমরা ‘আল্লাহ’ নামে আহবান করো বা ‘রহ্মান’ নামে আহবান করো, সকল সুন্দর নামই তো তাঁর। তোমার সালাতে স্বর উচ্চ করো না এবং অতিশয় ক্ষীণও করো না; দু’য়ের মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা। বলো, ‘প্রশংসা আল্লাহরই যিনি কোন সমত্মান গ্রহণ করেননি, তার সার্বভৌমত্বে কোন অংশিদার নেই এবং যিনি দুর্দশাগ্রসত্ম হন না যে কারণে তাঁর অভিভাবকের প্রয়োজন হতে পারে। সুতরাং সম্ভ্রমে তাঁর মাহাত্ম্য ঘোষণা কর।’’
সূরা আম্বিয়ার ৮৭ আয়াত :
لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّيْ كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِيْن
লা ইলা-হা ইল্লা আনতা সুবহা-নাকা ইন্নী কুনতু মিনায্যো-লিমীন।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! আপনি ব্যতীত কোন মাবূদ নেই। আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করি। নিশ্চয় আমি অপরাধীদের অন্তর্ভুক্ত।’’
সূরা মু’মিনূনেরর শেষ ৪ আয়াত :
أَفَحَسِبْتُمْ أَنَّمَا خَلَقْنَاكُمْ عَبَثًا وَّأَنَّكُمْ إِلَيْنَا لَا تُرْجَعُوْنَ ---- فَتَعَالَى اللهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيْمِ - وَمَنْ يَّدْعُ مَعَ اللهِ إِلٰهًا آخَرَ لَا بُرْهَانَ لَهٗ بِهٖ فَإِنَّمَا حِسَابُهٗ عِنْدَ رَبِّهٖ إِنَّهٗ لَا يُفْلِحُ الْكَافِرُوْنَ - وَقُلْ رَّبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِيْنَ
আফাহাসিবতুম আন্নামা খালাকনা-কুম আবাসাওঁ ওয়া আন্নাকুম ইলাইনা লা তুরজাউন। ফাতা‘আলাল্লাহুল মালিকুল হাক্কু লা ইলাহা ইল্লা হুওয়া রববুল আরশিল কারীম। ওয়া মাই ইয়াদউ মা‘আল্লাহি ইলা-হান আ-খারা লা বুরহা-না লাহু বিহী ফাইন্নামা হিসা-বুহু ইন্দা রবিবহ, ইন্নাহু লা-ইউফলিহুল কা-ফিরু-ন। ওয়া কুররবিবগফির ওয়ারহাম ওয়া আনতা খাইরুর রা-হিমীন।
অর্থ : ‘‘তোমরা কি মনে করেছিলে যে, আমি তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে না?’ মহিমান্বিত আল্লাহ যিনি প্রকৃত মালিক, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই; তিনি সম্মানিত ‘আর্শের অধিপতি। যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্য ইলাহ্কে ডাকে যে বিষয়ে তার নিকট কোন প্রমাণ নেই; তার হিসাব তার প্রতিপালকের নিকট আছে; নিশ্চয় কাফিরগণ সফলকাম হবে না। বলো, ‘হে আমার প্রতিপালক! ক্ষমা করো ও দয়া করো, তুমিই তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।’’
সূরা রূমের ১৭, ১৮ ও ১৯ আয়াত :
فَسُبْحَانَ اللهِ حِيْنَ تُمْسُوْنَ وَحِيْنَ تُصْبِحُوْنَ - وَلَهُ الْحَمْدُ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ وَعَشِيًّا وَّحِيْنَ تُظْهِرُوْنَ - يُخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ وَيُخْرِجُ الْمَيِّتَ مِنَ الْحَيِّ وَيُحْيِي الْاَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا وَكَذَالِكَ تُخْرَجُوْنَ
ফাসুবহা-নাল্লাহি হী-না তুমসু-না ওয়া হী-না তুসবিহুন। ওয়া লাহুল হামদু ফিস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি ওয়া আশিয়্যাও ওয়া হী-না তুযহিরুন। ইউখরিযুল হাইয়্যা মিনাল মায়্যিতি ওয়া ইউখরিযুল মায়্যিতা মিনাল হায়্যি ওয়া ইউহয়িল আরযা বা‘দা মাওতিহা ওয়া কাযা-লিকা তুখরাযু-ন।
অর্থ : ‘‘অতঃপর তোমরা আল্লাহর পবিত্র ও মহিমা ঘোষণা কর সন্ধ্যায় ও প্রতুষ্যে। এবং অপরা হ্ন ও যোহরের সময়; আর আসমানে ও যমীনে সকল প্রশংসা তো তাঁরই। তিনি জীবিতকে মৃত থেকে আর মৃতকে জীবিত থেকেবের করে আনেন, আর তিনিই যমীনকে তার মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত করেন। এভাবেই তোমাদেরকে (মৃত্যুর পর পুনরায়) বের করে আনা হবে।’’
সূরা মুমিন এর প্রথম ৩ আয়াত :
حٰم - تَنْزِيلُ الْكِتَابِ مِنَ اللهِ الْعَزِيْزِ الْعَلِيْمِ - غَافِرِ الذَّنْبِ وَقَابِلِ التَّوْبِ شَدِيْدِ الْعِقَابِ ذِي الطَّوْلِ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ إِلَيْهِ الْمَصِيْرُ
হা-মীম। তানযীলুল কিতা-বি মিনাল্লা-হিল আযীযিল আলীম। গা-ফিরিয যানবি ওয়া কা-বিলিত তাওবি শাদীদিল ইকা-বি যিত তাওলি লা ইলাহা ইল্লা- হুওয়া ইলাইহিল মাসীর।
অর্থ : ‘‘হা-মীম, এই কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর নিকট হতে- যিনি পাপ ক্ষমাকারী, তওবা কবুলকারী, যিনি শাস্তিদানে কঠোর এবং শক্তিশালী। তিনি ব্যতীত (সত্য) কোন মাবূদ নেই। তাঁরই নিকট প্রত্যাবর্তনস্থল।’’
সূরা জাসিয়ার শেষ ২ আয়াত :
فَلِلّهِ الْحَمْدُ رَبِّ السَّمَاوَاتِ وَرَبِّ الْاَرْضِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ - وَلَهُ الْكِبْرِيَاءُ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
ফালিল্লা-হিল হামদু রবিবস সামা-ওয়া-তি ওয়া রবিবল আরযি রবিবল আলামীন। ওয়ালাহুল কিবরিয়া-উ ফিস্সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি ওয়া হুওয়াল আযীযুল হাকীম।
অর্থ : ‘‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। যিনি আসমান-যমীন ও জগতসমূহের প্রতিপালক। আসমান ও যমীনে তাঁরই রাজত্ব এবং তিনি মহাপরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাবান।’’
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত :
هُوَ اللهُ الَّذِيْ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ هُوَ الرَّحْمٰنُ الرَّحِيْمُ - هُوَ اللهُ الَّذِيْ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوْسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيْزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ سُبْحَانَ اللهِ عَمَّا يُشْرِكُوْنَ - هُوَ اللهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ لَهُ الْاَسْمَاءُ الْحُسْنٰى يُسَبِّحُ لَهٗ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيْزُ الْحَكِيْمُ -
হুয়াল্লা-হুল্লাযী লা-ইলাহা ইল্লা-হুওয়া, ‘আলিমুল গাইবি ওয়াশ্ শাহা-দাতি হুয়ার রাহমানুর রাহীম। হুয়াল্লা-হুল্লাযী লা-ইলাহা ইল্লা হুওয়াল মালিকুল ক্কুদ্দٍূ-সুস সালা-মুল মু‘মিনুল মুহাইমিনুল আযীযুল জাববা-রুল মুতাক্কাবির, সুবহানাল্লা-হি আম্মা ইউশরিকু-ন। হুয়াল্লা-হুল খা-লিক্কুল বা-রিউল মুসাবিবরু লাহুল আসমা-উল হুসনা। ইউসাবিবহু লাহু মা- ফিসসামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি ওয়া হুয়াল আযীযুল হাকীম।
অর্থ : ‘‘তিনিই আল্লাহ, তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ্ নেই। গুপ্ত ও প্রকাশ্য সবই তিনি জানেন। তিনি পরম দয়ালু, পরম করুণাময়। তিনিই আল্লাহ, তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তিনিই মালিক, তিনি পবিত্র, তিনিই শান্তি, তিনিই নিরাপত্তাদাতা, তিনিই রক্ষক, তিনিই পরাক্রান্ত, তিনিই প্রবল, তিনিই মহান, আল্লাহই সর্ব প্রকার শিরক হতে পবিত্র মহান। তিনিই আল্লাহ, তিনিই স্রষ্টা, তিনিই উদ্ভাবনকারী, তিনিই আকৃতিদাতা, আর তাঁরই জন্য উত্তম নামসমূহ রয়েছে; আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে তার সবই তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করছে। তিনি মহা পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।’’
সূরা তাকাছুর :
﷽(1) --أَلْهَاكُمُ التَّكَاثُرُ (2) حَتّٰى زُرْتُمُ الْمَقَابِرَ (3) كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُونَ (4) ثُمَّ كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُوْنَ (5) كَلَّا لَوْ تَعْلَمُوْنَ عِلْمَ الْيَقِيْنِ (6) لَتَرَوُنَّ الْجَحِيْمَ (7) ثُمَّ لَتَرَوُنَّهَا عَيْنَ الْيَقِيْنِ (8) ثُمَّ لَتُسْأَلُنَّ يَوْمَئِذٍ عَنِ النَّعِيْمِ
আল হা-কুমুত্তাকা-সুর। হাত্তা যুরতুমুল মাকা-বির। কাল্লা- সাওফাতা‘লামু-ন। সুম্মা কাল্লা- সাওফাতা‘লামু-ন। কাল্লা- লাও তা‘লামু-না ‘ইল মালইয়াকীন। লাতারাভুন্নাল জাহীম। ছুম্মা লাতারাভু্ন্নাহা- আইনাল ইয়াকী-ন। ছুম্মা লাতুস আলুন্না ইয়াওমাইযিন ‘আনিন্নাইম।
অর্থ : ১. প্রাচুর্যের লালসা তোমাদেরকে গাফেল রাখে, ২. এমনকি তোমরা কবরস্থানে পৌঁছে যাও। ৩. এটা কখনও উচিত নয়। তোমরা অচিরেই জেনে নেবে, ৪. অতঃপর কখনও উচিত নয়। তোমরা অচিরেই জেনে নেবে। ৫. কখনই নয়; যদি তোমরা নিশ্চিত জানতে। ৬. তোমরা অবশ্যই জাহান্নাম দেখবে, ৭. অতঃপর তোমরা তা অবশ্যই দেখবে স্বচক্ষে, ৮. এরপর অবশ্যই সেদিন তোমরা নিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞেসিত হবে।
সূরা কাফিরুন :
﷽
(1) قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُوْنَ (2) لَا أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُوْنَ (3) وَلَا أَنْتُمْ عَابِدُوْنَ مَا أَعْبُدُ (4) وَلَا أَنَا عَابِدٌ مَّا عَبَدْتُمْ (5) وَلَا أَنْتُمْ عَابِدُوْنَ مَا أَعْبُدُ (6) لَكُمْ دِيْنُكُمْ وَلِيَ دِيْنِ
বিসমিল্লা-হির রাহমা-নির রাহীম- (১) কুল্ ইয়া আইয়ুহাল কা-ফিরূন, (২) লা- আ‘বুদু মা- তা‘বুদূন, (৩) ওয়ালা আন্তুম ‘আবিদূনা মা আ‘বুদ, (৪) ওয়ালা আনা ‘আবিদুমমা ‘আবাত্তুম, (৫) ওয়ালা আনতুম ‘আবিদূনা মা আ‘বুদ, (৬) লাকুম দ্বী-নুকুম ওয়ালিয়া দ্বীন।
অর্থ : ১. (হে নবী!) আপনি বলে দিন, হে কাফিররা! ২. আমি তাদের ইবাদাত করি না তোমরা যাদের ইবাদাত কর। ৩. আর তোমরা তার ইবাদাতকারী নও যার ইবাদাত আমি করি। ৪. এবং আমিও তাদের ইবাদাতকারী নই যাদের ইবাদাত তোমরা কর। ৫. আর তোমরা তার ইবাদাতকারী নও যার ইবাদাত আমি করি। ৬. (এ দ্বীনের মধ্যে কোন মিশ্রণ সম্ভব নয়, অতএব) তোমাদের পথ তোমাদের জন্য আর আমার পথ আমার জন্য।
সূরা নাসর :
﷽ (1) إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ (2) وَرَأَيْتَ النَّاسَ يَدْخُلُوْنَ فِي دِيْنِ اللهِ أَفْوَاجًا (3) فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُ إِنَّهٗ كَانَ تَوَّابًا
বিসমিল্লা-হির রাহমা-নির রাহীম- (১) ইযা জা-আ নাস্রুল্লাহি ওয়াল্ ফাত্হু, (২) ওয়ারা আইতান্নাসা ইয়াদ্খুলূনা ফী দ্বীনিল্লাহি আফ্ওয়াজা, (৩) ফাসাব্বিহ বিহাম্দি রাবিবকা ওয়াস্তাগ্ফিরহু ইন্নাহূ কা-না তাও্ওয়াবা।
অর্থ : ১. যখন আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য ও বিজয় আসবে। ২. তখন মানুষদেরকে তুমি দেখবে, তারা দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে দাখিল হচ্ছে। ৩. অতঃপর তুমি তোমার মালিকের প্রশংসা কর এবং তার কাছেই ক্ষমাপ্রার্থনা কর; অবশ্যই তিনি তওবা কবুলকারী।
সূরা লাহাব :
﷽ (1) تَبَّتْ يَدَا أَبِيْ لَهَبٍ وَّتَبَّ (2) مَا أَغْنٰى عَنْهُ مَالُهٗ وَمَا كَسَبَ (3) سَيَصْلٰى نَارًا ذَاتَ لَهَبٍ (4) وَّامْرَأَتُهٗ حَمَّالَةَ الْحَطَبِ (5) فِيْ جِيْدِهَا حَبْلٌ مِّنْ مَّسَدٍ
বিসমিল্লা-হির রাহমা-নির রাহীম- (১) তাব্বাত্ ইয়াদা আবী লাহাবিওঁ ওয়া তাববা, (২) মা আগ্না-আন্হু মা-লুহূ ওয়ামা-কাসাব, (৩) সাইয়াস্লা না-রান্ যা-তা লাহাব, (৪) ওয়াম্রাআতুহূ হাম্মা-লাতাল হাত্বাব, (৫) ফী জীদিহা হাব্লুম মিম্ মাসাদ।
অর্থ : ১. আবু লাহাবের (দুনিয়া-আখিরাতে) দু’হাতই ধ্বংস হয়ে যাক, ধ্বংস হয়ে যাক সে নিজেও। ২. তার ধন-সম্পদ ও আয়-উপার্জন তার কোন কাজে আসেনি। ৩. অচিরেই সে লেলিহান শিখা বিশিষ্ট আগুনে প্রবেশ করবে। ৪. সাথে থাকবে জ্বালানিকাঠের বোঝা বহনকারিণী তার স্ত্রীও। ৫. (অবস্থা দেখে মনে হবে) তার গলায় যেন খেজুরপাতার পাকানো শক্ত কোন রশি জড়িয়ে আছে।
সূরা ইখলাস :
﷽
(1) قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ (2) اَللهُ الصَّمَدُ (3) لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُوْلَدْ (4) وَلَمْ يَكُنْ لَّهٗ كُفُوًا أَحَدٌ
বিসমিল্লা-হির রাহমা-নির রাহীম- (১) কুল্ হুওয়াল্লা-হু আহাদ, (২) আল্লা-হুস্সামাদ, (৩) লাম্ ইয়ালিদ্ ওয়ালাম্ ইউলাদ্, (৪) ওয়ালাম্ ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান্ আহাদ।
অর্থ : ১. (হে মুহাম্মাদ) আপনি বলুন, তিনি আল্লাহ, তিনি এক ও একক। ২. তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। ৩. তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কারো থেকে জন্মগ্রহণও করেননি। ৪. আর তাঁর সমতুল্য দ্বিতীয় কেউ নেই।
সূরা ফালাক :
﷽ (1) قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ (2) مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ (3) وَمِنْ شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ (4) وَمِنْ شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ (5) وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ
বিসমিল্লা-হির রাহমা-নির রাহীম, (১) কুল আ‘উযু বিরাবিবল্ ফালাক্ব, (২) মিনশার্রিমা খালাক্ব, (৩) ওয়ামিন শার্রি গা-সিক্বিন ইযা-ওয়াক্বাব, (৪) ওয়ামিন শার্রিন্ নাফ্ফা-সা-তি ফিল্‘উক্বাদ, (৫) ওয়ামিন শার্রি হা-সিদিন্ ইযা-হাসাদ।
অর্থ : ১. (হে নবী) আপনি বলুন, আমি উজ্জ্বল প্রভাতের মালিকের কাছে আশ্রয় চাই। ২. (আশ্রয় চাই) তাঁর সৃষ্টি করা প্রতিটি জিনিসের অনিষ্ট থেকে ৩. আমি আশ্রয় চাই রাতের অন্ধকারে সংঘটিত অনিষ্ট থেকে, (বিশেষ করে) যখন রাত তার অন্ধকার বিছিয়ে দেয়। ৪. (আমি আশ্রয় চাই) গিরায় ফুঁক দিয়ে যাদুটোনাকারিণীদের অনিষ্ট থেকে। ৫. (আমি আশ্রয় চাই) হিংসুকের অনিষ্ট থেকেও যখন সে হিংসা করে।
সূরা সূরা নাস :
﷽ (1) قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ النَّاسِ (2) مَلِكِ النَّاسِ (3) إِلٰهِ النَّاسِ (4) مِنْ شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ (5) الَّذِيْ يُوَسْوِسُ فِيْ صُدُوْرِ النَّاسِ (6) مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ
বিসমিল্লা-হির রাহমা-নির রাহীম (১) কুল্ আ‘উযু বিরাবিবন্ না-স, (২) মালিকিন্ না-স, (৩) ইলা-হিন্ না-স, (৪) মিন শার্রিল্ ওয়াসওয়া-সিল্ খান্না-স, (৫) আল্লাযী ইউওয়াসওয়িসু ফী সুদূরিন্না-স, (৬) মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্না-স।
অর্থ : ১. (হে নবী) আপনি বলুন, আমি আশ্রয় চাই মানুষের মালিকের কাছে। ২. আশ্রয় চাই মানুষের প্রকৃত বাদশাহের কাছে। ৩. আশ্রয় চাই মানুষের একমাত্র মাবূদের কাছে। ৪. আশ্রয় চাই কুমন্ত্রণাকারীর অনিষ্ট থেকে, যে প্ররোচনা দিয়েই গা ঢাকা দেয়। ৫. যে মানুষের অন্তরে কুমন্ত্রণা দেয়। ৬. জ্বিনের মধ্য থেকে হোক বা মানুষের মধ্য থেকে হোক।
তাছাড়া সকালে সূরা ইয়াসীন ও সূরা আর রহমান এবং রাতে সূরা ওয়াকিয়া ও সূরা মূলক তেলাওয়াত করা উত্তম।
হেফাযতের ৫টি আয়াত :
فَاللهُ خَيْرٌ حَافِظًا وَّهُوَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِيْنَ
ফাল্লা-হু খাইরুন হা-ফিযাও ওয়া হুওয়া আরহামুর রাহিমী-ন।
‘‘আল্লাহই রক্ষণাবেক্ষণে শ্রেষ্ঠ এবং তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।’’ (সূরা ইউসূফ- ৬৪)
إِنْ كُلُّ نَفْسٍ لَّمَّا عَلَيْهَا حَافِظٌ
ইন কুল্লু নাফসিল লাম্মা- আলাইহা- হা-ফিয।
‘‘নিশ্চয় প্রত্যেক জীবের উপরই এক সংরক্ষক রয়েছে।’’ (সূরা আত-তারিক- ৪)
وَلَا يَئُودُهٗ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ
ওয়ালা- ইয়াউ-দুহূ হিফযুহুমা- ওয়া হুওয়াল আলিয়্যুল আযীম।
‘‘সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ তাঁকে মোটেই ক্লান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ ও সর্বাপেক্ষা মহান।’’ (সূরা বাকারা- ২৫৫)
وَحِفْظًا مِّنْ كُلِّ شَيْطَانٍ مَّارِدٍ
ওয়া হিফযাম মিন কুল্লি শাইতা-নিম মা-রিদ।
‘‘নিরাপদ করেছি প্রত্যেক অবাধ্য শয়তান থেকে।’’ (সূরা সফফাত- ৭)
وَحَفِظْنَاهَا مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ رَّجِيمٍ
ওয়াহিয না-হা- মিন কুল্লি শাইতা-নির রাজীম।
‘‘প্রত্যেক অভিশপ্ত শয়তান হতে আমি সেটাকে রক্ষা করে থাকি।’’ (সূরা হিজর- ১৭)
মনে প্রশান্তি দানকারী কয়েকটি আয়াত :
وَكَأَيِّنْ مِّنْ دَابَّةٍ لَّا تَحْمِلُ رِزْقَهَا ---. اَللهُ يَرْزُقُهَا وَإِيَّاكُمْ وَهُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ
ওয়াকাআইয়িম মিন দা-ববাতিল্লা- তাহমিলূ রিযিকাহা- আল্লাহু ইয়ার যুকুহা ওয়াইয়্যা-কুম ওয়াহুওয়াস সামি-উল-‘আলি-ম।
অর্থ : ‘‘এমন কত জীবজন্তু আছে যারা নিজেদের খাদ্য মওজুদ রাখে না। আল্লাহই তাদেরকে ও তোমাদেরকে রিযিক দান করেন এবং তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ।’’ (সূরা আনকাবুত- ৬০)
قُلْ لَّنْ يُّصِيْبَنَا إِلَّا مَا كَتَبَ اللهُ لَنَا هُوَ مَوْلَانَا وَعَلَى اللهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُوْنَ
কুল্লাই ইউসি-বানা- ইল্লা- মা-কাতাবাল্লা-হু লানা- হুওয়া মাওলা-না ওয়া ‘আলাল্লা-হি ফালইয়াতাওয়াক্কালীল মু‘মিনূ-ন।
অর্থ : ‘‘বল, আল্লাহ আমাদের জন্য যা নির্দিষ্ট করেছেন তা ব্যতীত আমাদের অন্যকিছু হবে না; তিনি আমাদের কর্মবিধায়ক এবং আল্লাহর উপরই মুমিনদের নির্ভর করা উচিত।’’ (সূরা তওবা- ৫১)
وَإِنْ يَّمْسَسْكَ اللهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ لَهٗ إِلَّا هُوَ وَإِنْ يُّرِدْكَ بِخَيْرٍ فَلَا رَادَّ لِفَضْلِهٖ يُصِيبُ بِهٖ مَنْ يَّشَاءُ مِنْ عِبَادِهٖ وَهُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ
ওয়া ইন ইয়াম-সাসকাল্লা-হু বিযুররিন ফালা-কা-শিফালাহু ইল্লা-হু, ওয়াইন-ইউরিদ-কা বিখাইরিন ফালা-রা-দ্দা- লিফাযলিহী- ইউসী-বু বিহি-মাইয়াশা-উ মিন-ইবা-দিহি ওয়াহুওয়াল-গাফু-রুর রাহী-ম।
অর্থ : ‘‘আল্লাহ তোমাকে ক্লেষ দিলে তিনি ব্যতীত এটা মোচনকারী আর কেউ নেই এবং আল্লাহ যদি তোমার মঙ্গল চান তবে তাঁর অনুগ্রহ রদ করারও কেউ নেই। তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা তিনি মঙ্গল দান করেন। তিনি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।’’ (সূরা ইউনুস- ১০৭)
إِنِّيْ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللهِ رَبِّي وَرَبِّكُمْ مَا مِنْ دَابَّةٍ إِلَّا هُوَ آخِذٌ ۢبِنَاصِيَتِهَا إِنَّ رَبِّي عَلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ
ইন্নি-তাওয়াক্কালতু আলাল্লা-হি রবিব- ওয়ারবিবকুম মা-মিন দা-ববাতিন ইল্লা-হুওয়া আ-খিযূমবিনা সিয়াতিহা- ইন্নারববী- আলা- সিরা-তিমমুস্তাকীম।
অর্থ : ‘‘আমি নির্ভর করি আমার ও তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহর উপর; এমন কোন জীবজন্তু নেই, যে তাঁর পূর্ণ আয়ত্তাধীন নয়; নিশ্চয় আমার প্রতিপালক সরল পথে আছেন। ’’ (সূরা হুদ- ৫৬)
مَا يَفْتَحِ اللهُ لِلنَّاسِ مِنْ رَّحْمَةٍ فَلَا مُمْسِكَ لَهَا وَمَا يُمْسِكْ فَلَا مُرْسِلَ لَهٗ مِنْۢ بَعْدِهٖ وَهُوَ الْعَزِيْزُ الْحَكِيْمُ
মা-ইয়াফতাহিললা-হু লিন্না-সি মিররাহমাতিন ফালা-মুমসিকা লাহা- ওয়ামা ইউমসিক ফালা-মুরসিলা-লাহু মিম-বা‘দিহি, ওয়াহুওয়ালা-আযীযুল-হাকীম।
অর্থ : ‘‘আল্লাহ মানুষের জন্য যে রহমত মুক্ত করে দেন তা কেউ প্রতিরোধ করতে পারে না; আর যা তিনি বন্ধ করে দেন তা বন্ধ করার পরে কেউ মুক্ত করতে পারে না। তিনি প্রতাপশালী ও পরম কৌশলী।’’ (সূরা ফাতির- ২)
وَلَئِنْ سَأَلْتَهُمْ مَّنْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضَ لَيَقُوْلُنَّ اللهُ قُلْ أَفَرَأَيْتُمْ مَّا تَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللهِ إِنْ أَرَادَنِيَ اللهُ بِضُرٍّ هَلْ هُنَّ كَاشِفَاتُ ضُرِّهٖ أَوْ أَرَادَنِي بِرَحْمَةٍ هَلْ هُنَّ مُمْسِكَاتُ رَحْمَتِهٖ - قُلْ حَسْبِيَ اللهُ عَلَيْهِ يَتَوَكَّلُ الْمُتَوَكِّلُوْنَ
ওয়ালাইন সাআলতাহুম মান খালাক্বাসসামা-ওয়া-তি ওয়াল-আরযা লাইয়াকু লুন্নাল্লা-হু কুল আফারাইতুম মা-তাদউনা মিনদু-নিল্লাহি ইন আ‘রা-দানিয়াল্লা-হু বিযুররিন হাল হুন্না কা-শিফা-তু যুররিহী আও ‘আরা-দানি-বিরাহমাতিন হাল হুন্না মুমসিকা-তু রাহমাতিহ। কুল হাসবিয়াল্লা-হু ‘আলাইহি ইয়াতা ওয়াক্কালুল মুতাওয়াক্কিলূন।
অর্থ : ‘‘তুমি যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস কর আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী কে সৃষ্টি করেছেন? তারা অবশ্যই বলবে আল্লাহ। বল তোমরা কি ভেবে দেখছো যে, আল্লাহ আমার অনিষ্ট চাইলে তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে ডাকো তারা কি সেই অনিষ্ট দূর করতে পারবে? অথবা তিনি আমার প্রতি অনুগ্রহ করতে চাইলে তারা কি সেই অনুগ্রহকে বন্ধ করতে পারবে? বল আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। নির্ভরকারীরা তাঁর উপরই নির্ভর করে।’’ (সূরা যুমার- ৩৮)
আয়াতুল কুরসী :
اَللهُ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لَا تَأْخُذُهٗ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ لَهٗ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْاَرْضِ مَنْ ذَا الَّذِيْ يَشْفَعُ عِنْدَهٗ إِلَّا بِإِذْنِهٖ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يُحِيْطُوْنَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهٖ إِلَّا بِمَا شَاءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضَ وَلَا يَئُوْدُهٗ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيْمُ
আল্লা-হু লা- ইলা-হা ইল্লা- হুওয়াল হাইয়ুল ক্বাইয়ূম। লা-তা’খুযুহূ সিনাতুঁ ওয়ালা- নাঊম। লাহূ মা- ফিস্সামা-ওয়াতি ওয়ামা-ফিল আরয্। মান্যাল্লাযী ইয়াশ্ফা‘উ ‘ইন্দাহূ ইল্লা- বিইয্নিহ, ইয়া‘লামু মা- বাইনা আইদীহিম ওয়া মা-খল্ফাহুম ওয়ালা-ইউহীতূনা বিশায়ইম্ মিন ‘ইলমিহী ইল্লা- বিমা-শা-আ ওয়াসি‘আ কুর্সিয়্যুহুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরয্, ওয়ালা-ইয়াউদুহূ হিফ্যুহুমা- ওয়া হুয়াল ‘আলিয়্যুল ‘আযীম।
অর্থ : ‘‘আল্লাহ তিনি, যিনি ব্যতীত কোন (প্রকৃত) উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও সবকিছুর ধারক। তন্দ্রা এবং নিদ্রা কিছুই তাঁকে স্পর্শ করে না। আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে সবকিছু তাঁরই মালিকানাধীন। তাঁর হুকুম ব্যতীত এমন কে আছে, যে তাঁর নিকট সুপারিশ করতে পারে? তাদের সম্মুখে ও পিছনে যা কিছু আছে সবকিছুই তিনি জানেন। তিনি যতটুকু ইচ্ছা করেন ততটুকু ছাড়া তাঁর জ্ঞানসমুদ্র হতে তারা কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না। তার সিংহাসন আসমান ও যমীনকে বেষ্টন করে আছে। আর সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ তাঁকে মোটেই ক্লান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ ও সর্বাপেক্ষা মহান।’’ (সূরা বাক্বারা- ২৫৫)
সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত :
آمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَّبِّهٖ وَالْمُؤْمِنُوْنَ كُلٌّ آمَنَ بِاللهِ وَمَلَائِكَتِهٖ وَكُتُبِهٖ وَرُسُلِهٖ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّن رُّسُلِهٖ وَقَالُواْ سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ لَا يُكَلِّفُ اللهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهٗ عَلَى الَّذِيْنَ مِن قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهٖ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنتَ مَوْلَانَا فَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِيْنَ -
আ-মানার রাসূলু বিমা উনযিলা ইলাইহি মির রাবিবহী ওয়াল মুমিনূন, কুল্লুন আমানা বিল্লাহি ওয়া মালা-ইকাতিহী ওয়া কুতুবিহী ওয়া রুসুলিহ। লা নুফাররিক্কু বাইনা আহাদিম মিররুসূলিহ ওয়াক্বালু ছামি’না ওয়া আতা’না গুফরানাকা রাববানা ওয়া ইলাইকাল মাসীর। লা-ইয়ুকাল্লিফুল্লাহু নাফসান ইল্লা উসআহা লাহা মা কাসাবাত ওয়া আলাইহা মাকতাসাবাত, রববানা লা তুআ-খিযনা ইন নাসীনা আও আখতা’না রববানা ওয়ালা তাহমিল আলাইনা ইসরান কামা হামালতাহু আল্লাযীনা মিন কাবলিনা, রববানা ওয়ালা তুহাম্মিল না মা-লা-ত্বা-কাতা-লানা বিহ, ওয়া’ফু আন্না, ওয়াগফির লানা, ওয়ার হামনা আন্তা মাওলানা ফানসুরনা আলাল ক্বাওমিল কাফিরীন।
অর্থ : ‘‘রাসূল বিশ্বাস করেছেন যা তার রবের পক্ষ থেকে নাযিল হয়েছে এবং ঈমানদাররাও। প্রত্যেকেই আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা, তাঁর কিতাবসমূহ এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান এনেছে। আমরা তাঁর রাসূলদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না এবং তারা বলেছেন, আমরা শুনলাম এবং মেনে নিলাম। হে আমাদের রব! আমরা আপনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করি। আর আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তন স্থল। আল্লাহ সামর্থ্যের বাইরে কাউকে দায়িত্ব দেন না। সে যা ভাল করেছে তা তার কল্যাণে আসবে এবং যা মন্দ করেছে তা তার বিপক্ষে আসবে। হে আমাদের রব! আমাদের উপর এমন বোঝা চাপিয়ে দেবেন না যা আমাদের পূর্ববর্তীদের দিয়েছেন। আর আমাদের উপর এমন ভার দেবেন না যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই। আমাদেরকে মুক্তি দান করুন, ক্ষমা করুন এবং দয়া করুন। আপনি আমাদের অভিভাবক। সুতরাং আমাদেরকে কাফিরদের উপর সাহায্য করুন।’’
সূরা আলে ইমরানের ১৮ আয়াত :
شَهِدَ اللهُ أَنَّهٗ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ وَالْمَلَائِكَةُ وَأُولُو الْعِلْمِ قَائِمًا ۢبِالْقِسْطِ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
শাহিদাল্লা-হু আন্নাহু লা-ইলা-হা ইল্লা-হুওয়া ওয়াল মালাইকাতু ওয়া উলুলইল্মি ক্বা-ইমাম বিলক্বিস্তি লা-ইলা-হা ইল্লা- হুওয়াল আযীযুল হাকীম।
অর্থ : ‘‘আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, তিনি ছাড়া কোন মাবূদ নেই। (এ বিষয়ে আরো সাক্ষ্যদানকারী হচ্ছেন) ফেরেশতারা এবং জ্ঞানীরা। তিনি ন্যায়-নীতিতে প্রতিষ্ঠিত। তিনি ছাড়া কোন মাবূদ নেই। তিনি পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।’’
সূরা আলে ইমরানের ২৬, ২৭ আয়াত :
قُلِ اللّٰهُمَّ مَالِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِي الْمُلْكَ مَنْ تَشَاءُ وَتَنْزِعُ الْمُلْكَ مِمَّنْ تَشَاءُ وَتُعِزُّ مَنْ تَشَاءُ وَتُذِلُّ مَنْ تَشَاءُ بِيَدِكَ الْخَيْرُ إِنَّكَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ - تُولِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَتُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَتُخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ وَتُخْرِجُ الْمَيِّتَ مِنَ الْحَيِّ وَتَرْزُقُ مَنْ تَشَاءُ بِغَيْرِ حِسَابٍ
কুলিল্লা-হুম্মা মা-লিকাল মুলকি তু’তিল মুলকা মানতাশা-উ ওয়াতানযিউল মুলকা মিমমানতাশা-উ ওয়াতুইযযূ মানতাশা-উ ওয়াতুযিল্লু মানতাশা-উ বিয়াদিকাল খায়রু, ইন্নাকা আলা কুল্লি শায়ইন ক্বাদী-র। তু-লিযুল লায়লা ফিন্নাহারি ওয়াতু-লিযূন্নাহারা ফিল্লায়লি ওয়াতুখরিযুল হায়্যাই মিনাল মায়্যিতি ওয়া তুখরিযূল মায়্যিতা মিনাল হায়্যি, ওয়াতারযুকু মানতাশা-উ বিগাইরি হিসা-ব।
অর্থ : ‘‘বলুন, হে আল্লাহ! আপনিই রাজত্বের মালিক যাকে চান রাজত্ব দান করেন, আবার যার থেকে চান রাজত্ব কেড়ে নেন। আর যাকে চান সম্মানিত করেন আবার যাকে চান অপদস্থ করেন। আপনার হাতেই কল্যাণ। নিশ্চয় আপনি সর্ব বিষয়ে সর্ব শক্তিমান। আপনি রাতকে দিনের মধ্যে এবং দিনকে রাতের মধ্যে প্রবেশ করান এবং জীবিতকে মৃত হতে আর মৃতকে জীবিত হতে বের করেন। আর যাকে ইচ্ছা করেন অগণিত রিযিক দান করেন।’’
সূরা তওবার শেষ দুই আয়াত :
لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُوْلٌ مِّنْ أَنْفُسِكُمْ عَزِيْزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيْصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِيْنَ رَؤُوْفٌ رَّحِيْمٌ - فَإِنْ تَوَلَّوْا فَقُلْ حَسْبِيَ اللهُ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ
লাকাদ জা-আকুম্ রাসূলুম্ মিন আনফুসিকুম আযীযুন আলাইহি মা আনিত্তুম্ হারীসুন আলাইকুম্ বিল মু’মিনীনা রাউফুর রাহীম। ফাইন্ তাওয়াল্লাও ফাকুল হাসবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়া আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুয়া রববুল আরশিল আযীম্।
অর্থ : ‘‘অবশ্যই তোমাদের মধ্য হতেই তোমাদের নিকট একজন রাসূল এসেছে। তোমাদেরকে যা বিপন্ন করে সেটা তার জন্য কষ্টদায়ক। সে তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি সে দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু। অতঃপর তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে তুমি বলও, আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নেই। আমি তাঁরই উপর নির্ভর করি এবং তিনি মহান আরশের অধিপতি।’’
সূরা বনী ইসরাঈলের শেষ দুই আয়াত :
قُلِ ادْعُوا اللّٰهَ أَوِ ادْعُوا الرَّحْمٰنَ أَيًّا مَّا تَدْعُوا فَلَهُ الْاَسْمَاءُ الْحُسْنٰى وَلَا تَجْهَرْ بِصَلَاتِكَ وَلَا تُخَافِتْ بِهَا وَابْتَغِ بَيْنَ ذٰلِكَ سَبِيْلًا - وَقُلِ الْحَمْدُ للهِ الَّذِي لَمْ يَتَّخِذْ وَلَدًا وَّلَمْ يَكُنْ لَّهٗ شَرِيْكٌ فِي الْمُلْكِ وَلَمْ يَكُنْ لَّهٗ وَلِيٌّ مِّنَ الذُّلِّ وَكَبِّرْهُ تَكْبِيْرًا
কুলিদ উল্লা-হা আওভিদ উররহমা-না আইয়াম মা-তাদউ ফালাহুল আসমা-উল হুসনা- ওয়ালা তাজহার বিসালা-তিকা ওয়ালা তুখা-ফিত বিহা ওয়াবতাগি বাইনা যা-লিকা সাবীলা। ওয়া কুলিল হামদু লিল্লা-হিললাযি লাম ইয়াত্তাখিয ওয়ালাদাও ওয়া লাম ইয়াকুল লাহু শারীকুন ফীল মুলকি ওয়া লাম ইয়াকুল লাহু ওয়ালিয়্যুম মিনাযযুল্লি ওয়া কাবিবরহু তাকবীরা।
অর্থ : ‘‘বল, তোমরা ‘আল্লাহ’ নামে আহবান করো বা ‘রহ্মান’ নামে আহবান করো, সকল সুন্দর নামই তো তাঁর। তোমার সালাতে স্বর উচ্চ করো না এবং অতিশয় ক্ষীণও করো না; দু’য়ের মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা। বলো, ‘প্রশংসা আল্লাহরই যিনি কোন সমত্মান গ্রহণ করেননি, তার সার্বভৌমত্বে কোন অংশিদার নেই এবং যিনি দুর্দশাগ্রসত্ম হন না যে কারণে তাঁর অভিভাবকের প্রয়োজন হতে পারে। সুতরাং সম্ভ্রমে তাঁর মাহাত্ম্য ঘোষণা কর।’’
সূরা আম্বিয়ার ৮৭ আয়াত :
لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّيْ كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِيْن
লা ইলা-হা ইল্লা আনতা সুবহা-নাকা ইন্নী কুনতু মিনায্যো-লিমীন।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! আপনি ব্যতীত কোন মাবূদ নেই। আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করি। নিশ্চয় আমি অপরাধীদের অন্তর্ভুক্ত।’’
সূরা মু’মিনূনেরর শেষ ৪ আয়াত :
أَفَحَسِبْتُمْ أَنَّمَا خَلَقْنَاكُمْ عَبَثًا وَّأَنَّكُمْ إِلَيْنَا لَا تُرْجَعُوْنَ ---- فَتَعَالَى اللهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيْمِ - وَمَنْ يَّدْعُ مَعَ اللهِ إِلٰهًا آخَرَ لَا بُرْهَانَ لَهٗ بِهٖ فَإِنَّمَا حِسَابُهٗ عِنْدَ رَبِّهٖ إِنَّهٗ لَا يُفْلِحُ الْكَافِرُوْنَ - وَقُلْ رَّبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِيْنَ
আফাহাসিবতুম আন্নামা খালাকনা-কুম আবাসাওঁ ওয়া আন্নাকুম ইলাইনা লা তুরজাউন। ফাতা‘আলাল্লাহুল মালিকুল হাক্কু লা ইলাহা ইল্লা হুওয়া রববুল আরশিল কারীম। ওয়া মাই ইয়াদউ মা‘আল্লাহি ইলা-হান আ-খারা লা বুরহা-না লাহু বিহী ফাইন্নামা হিসা-বুহু ইন্দা রবিবহ, ইন্নাহু লা-ইউফলিহুল কা-ফিরু-ন। ওয়া কুররবিবগফির ওয়ারহাম ওয়া আনতা খাইরুর রা-হিমীন।
অর্থ : ‘‘তোমরা কি মনে করেছিলে যে, আমি তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে না?’ মহিমান্বিত আল্লাহ যিনি প্রকৃত মালিক, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই; তিনি সম্মানিত ‘আর্শের অধিপতি। যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্য ইলাহ্কে ডাকে যে বিষয়ে তার নিকট কোন প্রমাণ নেই; তার হিসাব তার প্রতিপালকের নিকট আছে; নিশ্চয় কাফিরগণ সফলকাম হবে না। বলো, ‘হে আমার প্রতিপালক! ক্ষমা করো ও দয়া করো, তুমিই তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।’’
সূরা রূমের ১৭, ১৮ ও ১৯ আয়াত :
فَسُبْحَانَ اللهِ حِيْنَ تُمْسُوْنَ وَحِيْنَ تُصْبِحُوْنَ - وَلَهُ الْحَمْدُ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ وَعَشِيًّا وَّحِيْنَ تُظْهِرُوْنَ - يُخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ وَيُخْرِجُ الْمَيِّتَ مِنَ الْحَيِّ وَيُحْيِي الْاَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا وَكَذَالِكَ تُخْرَجُوْنَ
ফাসুবহা-নাল্লাহি হী-না তুমসু-না ওয়া হী-না তুসবিহুন। ওয়া লাহুল হামদু ফিস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি ওয়া আশিয়্যাও ওয়া হী-না তুযহিরুন। ইউখরিযুল হাইয়্যা মিনাল মায়্যিতি ওয়া ইউখরিযুল মায়্যিতা মিনাল হায়্যি ওয়া ইউহয়িল আরযা বা‘দা মাওতিহা ওয়া কাযা-লিকা তুখরাযু-ন।
অর্থ : ‘‘অতঃপর তোমরা আল্লাহর পবিত্র ও মহিমা ঘোষণা কর সন্ধ্যায় ও প্রতুষ্যে। এবং অপরা হ্ন ও যোহরের সময়; আর আসমানে ও যমীনে সকল প্রশংসা তো তাঁরই। তিনি জীবিতকে মৃত থেকে আর মৃতকে জীবিত থেকেবের করে আনেন, আর তিনিই যমীনকে তার মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত করেন। এভাবেই তোমাদেরকে (মৃত্যুর পর পুনরায়) বের করে আনা হবে।’’
সূরা মুমিন এর প্রথম ৩ আয়াত :
حٰم - تَنْزِيلُ الْكِتَابِ مِنَ اللهِ الْعَزِيْزِ الْعَلِيْمِ - غَافِرِ الذَّنْبِ وَقَابِلِ التَّوْبِ شَدِيْدِ الْعِقَابِ ذِي الطَّوْلِ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ إِلَيْهِ الْمَصِيْرُ
হা-মীম। তানযীলুল কিতা-বি মিনাল্লা-হিল আযীযিল আলীম। গা-ফিরিয যানবি ওয়া কা-বিলিত তাওবি শাদীদিল ইকা-বি যিত তাওলি লা ইলাহা ইল্লা- হুওয়া ইলাইহিল মাসীর।
অর্থ : ‘‘হা-মীম, এই কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর নিকট হতে- যিনি পাপ ক্ষমাকারী, তওবা কবুলকারী, যিনি শাস্তিদানে কঠোর এবং শক্তিশালী। তিনি ব্যতীত (সত্য) কোন মাবূদ নেই। তাঁরই নিকট প্রত্যাবর্তনস্থল।’’
সূরা জাসিয়ার শেষ ২ আয়াত :
فَلِلّهِ الْحَمْدُ رَبِّ السَّمَاوَاتِ وَرَبِّ الْاَرْضِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ - وَلَهُ الْكِبْرِيَاءُ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
ফালিল্লা-হিল হামদু রবিবস সামা-ওয়া-তি ওয়া রবিবল আরযি রবিবল আলামীন। ওয়ালাহুল কিবরিয়া-উ ফিস্সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি ওয়া হুওয়াল আযীযুল হাকীম।
অর্থ : ‘‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। যিনি আসমান-যমীন ও জগতসমূহের প্রতিপালক। আসমান ও যমীনে তাঁরই রাজত্ব এবং তিনি মহাপরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাবান।’’
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত :
هُوَ اللهُ الَّذِيْ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ هُوَ الرَّحْمٰنُ الرَّحِيْمُ - هُوَ اللهُ الَّذِيْ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوْسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيْزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ سُبْحَانَ اللهِ عَمَّا يُشْرِكُوْنَ - هُوَ اللهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ لَهُ الْاَسْمَاءُ الْحُسْنٰى يُسَبِّحُ لَهٗ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيْزُ الْحَكِيْمُ -
হুয়াল্লা-হুল্লাযী লা-ইলাহা ইল্লা-হুওয়া, ‘আলিমুল গাইবি ওয়াশ্ শাহা-দাতি হুয়ার রাহমানুর রাহীম। হুয়াল্লা-হুল্লাযী লা-ইলাহা ইল্লা হুওয়াল মালিকুল ক্কুদ্দٍূ-সুস সালা-মুল মু‘মিনুল মুহাইমিনুল আযীযুল জাববা-রুল মুতাক্কাবির, সুবহানাল্লা-হি আম্মা ইউশরিকু-ন। হুয়াল্লা-হুল খা-লিক্কুল বা-রিউল মুসাবিবরু লাহুল আসমা-উল হুসনা। ইউসাবিবহু লাহু মা- ফিসসামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি ওয়া হুয়াল আযীযুল হাকীম।
অর্থ : ‘‘তিনিই আল্লাহ, তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ্ নেই। গুপ্ত ও প্রকাশ্য সবই তিনি জানেন। তিনি পরম দয়ালু, পরম করুণাময়। তিনিই আল্লাহ, তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তিনিই মালিক, তিনি পবিত্র, তিনিই শান্তি, তিনিই নিরাপত্তাদাতা, তিনিই রক্ষক, তিনিই পরাক্রান্ত, তিনিই প্রবল, তিনিই মহান, আল্লাহই সর্ব প্রকার শিরক হতে পবিত্র মহান। তিনিই আল্লাহ, তিনিই স্রষ্টা, তিনিই উদ্ভাবনকারী, তিনিই আকৃতিদাতা, আর তাঁরই জন্য উত্তম নামসমূহ রয়েছে; আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে তার সবই তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করছে। তিনি মহা পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।’’
সূরা তাকাছুর :
﷽(1) --أَلْهَاكُمُ التَّكَاثُرُ (2) حَتّٰى زُرْتُمُ الْمَقَابِرَ (3) كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُونَ (4) ثُمَّ كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُوْنَ (5) كَلَّا لَوْ تَعْلَمُوْنَ عِلْمَ الْيَقِيْنِ (6) لَتَرَوُنَّ الْجَحِيْمَ (7) ثُمَّ لَتَرَوُنَّهَا عَيْنَ الْيَقِيْنِ (8) ثُمَّ لَتُسْأَلُنَّ يَوْمَئِذٍ عَنِ النَّعِيْمِ
আল হা-কুমুত্তাকা-সুর। হাত্তা যুরতুমুল মাকা-বির। কাল্লা- সাওফাতা‘লামু-ন। সুম্মা কাল্লা- সাওফাতা‘লামু-ন। কাল্লা- লাও তা‘লামু-না ‘ইল মালইয়াকীন। লাতারাভুন্নাল জাহীম। ছুম্মা লাতারাভু্ন্নাহা- আইনাল ইয়াকী-ন। ছুম্মা লাতুস আলুন্না ইয়াওমাইযিন ‘আনিন্নাইম।
অর্থ : ১. প্রাচুর্যের লালসা তোমাদেরকে গাফেল রাখে, ২. এমনকি তোমরা কবরস্থানে পৌঁছে যাও। ৩. এটা কখনও উচিত নয়। তোমরা অচিরেই জেনে নেবে, ৪. অতঃপর কখনও উচিত নয়। তোমরা অচিরেই জেনে নেবে। ৫. কখনই নয়; যদি তোমরা নিশ্চিত জানতে। ৬. তোমরা অবশ্যই জাহান্নাম দেখবে, ৭. অতঃপর তোমরা তা অবশ্যই দেখবে স্বচক্ষে, ৮. এরপর অবশ্যই সেদিন তোমরা নিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞেসিত হবে।
সূরা কাফিরুন :
﷽
(1) قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُوْنَ (2) لَا أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُوْنَ (3) وَلَا أَنْتُمْ عَابِدُوْنَ مَا أَعْبُدُ (4) وَلَا أَنَا عَابِدٌ مَّا عَبَدْتُمْ (5) وَلَا أَنْتُمْ عَابِدُوْنَ مَا أَعْبُدُ (6) لَكُمْ دِيْنُكُمْ وَلِيَ دِيْنِ
বিসমিল্লা-হির রাহমা-নির রাহীম- (১) কুল্ ইয়া আইয়ুহাল কা-ফিরূন, (২) লা- আ‘বুদু মা- তা‘বুদূন, (৩) ওয়ালা আন্তুম ‘আবিদূনা মা আ‘বুদ, (৪) ওয়ালা আনা ‘আবিদুমমা ‘আবাত্তুম, (৫) ওয়ালা আনতুম ‘আবিদূনা মা আ‘বুদ, (৬) লাকুম দ্বী-নুকুম ওয়ালিয়া দ্বীন।
অর্থ : ১. (হে নবী!) আপনি বলে দিন, হে কাফিররা! ২. আমি তাদের ইবাদাত করি না তোমরা যাদের ইবাদাত কর। ৩. আর তোমরা তার ইবাদাতকারী নও যার ইবাদাত আমি করি। ৪. এবং আমিও তাদের ইবাদাতকারী নই যাদের ইবাদাত তোমরা কর। ৫. আর তোমরা তার ইবাদাতকারী নও যার ইবাদাত আমি করি। ৬. (এ দ্বীনের মধ্যে কোন মিশ্রণ সম্ভব নয়, অতএব) তোমাদের পথ তোমাদের জন্য আর আমার পথ আমার জন্য।
সূরা নাসর :
﷽ (1) إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ (2) وَرَأَيْتَ النَّاسَ يَدْخُلُوْنَ فِي دِيْنِ اللهِ أَفْوَاجًا (3) فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُ إِنَّهٗ كَانَ تَوَّابًا
বিসমিল্লা-হির রাহমা-নির রাহীম- (১) ইযা জা-আ নাস্রুল্লাহি ওয়াল্ ফাত্হু, (২) ওয়ারা আইতান্নাসা ইয়াদ্খুলূনা ফী দ্বীনিল্লাহি আফ্ওয়াজা, (৩) ফাসাব্বিহ বিহাম্দি রাবিবকা ওয়াস্তাগ্ফিরহু ইন্নাহূ কা-না তাও্ওয়াবা।
অর্থ : ১. যখন আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য ও বিজয় আসবে। ২. তখন মানুষদেরকে তুমি দেখবে, তারা দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে দাখিল হচ্ছে। ৩. অতঃপর তুমি তোমার মালিকের প্রশংসা কর এবং তার কাছেই ক্ষমাপ্রার্থনা কর; অবশ্যই তিনি তওবা কবুলকারী।
সূরা লাহাব :
﷽ (1) تَبَّتْ يَدَا أَبِيْ لَهَبٍ وَّتَبَّ (2) مَا أَغْنٰى عَنْهُ مَالُهٗ وَمَا كَسَبَ (3) سَيَصْلٰى نَارًا ذَاتَ لَهَبٍ (4) وَّامْرَأَتُهٗ حَمَّالَةَ الْحَطَبِ (5) فِيْ جِيْدِهَا حَبْلٌ مِّنْ مَّسَدٍ
বিসমিল্লা-হির রাহমা-নির রাহীম- (১) তাব্বাত্ ইয়াদা আবী লাহাবিওঁ ওয়া তাববা, (২) মা আগ্না-আন্হু মা-লুহূ ওয়ামা-কাসাব, (৩) সাইয়াস্লা না-রান্ যা-তা লাহাব, (৪) ওয়াম্রাআতুহূ হাম্মা-লাতাল হাত্বাব, (৫) ফী জীদিহা হাব্লুম মিম্ মাসাদ।
অর্থ : ১. আবু লাহাবের (দুনিয়া-আখিরাতে) দু’হাতই ধ্বংস হয়ে যাক, ধ্বংস হয়ে যাক সে নিজেও। ২. তার ধন-সম্পদ ও আয়-উপার্জন তার কোন কাজে আসেনি। ৩. অচিরেই সে লেলিহান শিখা বিশিষ্ট আগুনে প্রবেশ করবে। ৪. সাথে থাকবে জ্বালানিকাঠের বোঝা বহনকারিণী তার স্ত্রীও। ৫. (অবস্থা দেখে মনে হবে) তার গলায় যেন খেজুরপাতার পাকানো শক্ত কোন রশি জড়িয়ে আছে।
সূরা ইখলাস :
﷽
(1) قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ (2) اَللهُ الصَّمَدُ (3) لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُوْلَدْ (4) وَلَمْ يَكُنْ لَّهٗ كُفُوًا أَحَدٌ
বিসমিল্লা-হির রাহমা-নির রাহীম- (১) কুল্ হুওয়াল্লা-হু আহাদ, (২) আল্লা-হুস্সামাদ, (৩) লাম্ ইয়ালিদ্ ওয়ালাম্ ইউলাদ্, (৪) ওয়ালাম্ ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান্ আহাদ।
অর্থ : ১. (হে মুহাম্মাদ) আপনি বলুন, তিনি আল্লাহ, তিনি এক ও একক। ২. তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। ৩. তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কারো থেকে জন্মগ্রহণও করেননি। ৪. আর তাঁর সমতুল্য দ্বিতীয় কেউ নেই।
সূরা ফালাক :
﷽ (1) قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ (2) مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ (3) وَمِنْ شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ (4) وَمِنْ شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ (5) وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ
বিসমিল্লা-হির রাহমা-নির রাহীম, (১) কুল আ‘উযু বিরাবিবল্ ফালাক্ব, (২) মিনশার্রিমা খালাক্ব, (৩) ওয়ামিন শার্রি গা-সিক্বিন ইযা-ওয়াক্বাব, (৪) ওয়ামিন শার্রিন্ নাফ্ফা-সা-তি ফিল্‘উক্বাদ, (৫) ওয়ামিন শার্রি হা-সিদিন্ ইযা-হাসাদ।
অর্থ : ১. (হে নবী) আপনি বলুন, আমি উজ্জ্বল প্রভাতের মালিকের কাছে আশ্রয় চাই। ২. (আশ্রয় চাই) তাঁর সৃষ্টি করা প্রতিটি জিনিসের অনিষ্ট থেকে ৩. আমি আশ্রয় চাই রাতের অন্ধকারে সংঘটিত অনিষ্ট থেকে, (বিশেষ করে) যখন রাত তার অন্ধকার বিছিয়ে দেয়। ৪. (আমি আশ্রয় চাই) গিরায় ফুঁক দিয়ে যাদুটোনাকারিণীদের অনিষ্ট থেকে। ৫. (আমি আশ্রয় চাই) হিংসুকের অনিষ্ট থেকেও যখন সে হিংসা করে।
সূরা সূরা নাস :
﷽ (1) قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ النَّاسِ (2) مَلِكِ النَّاسِ (3) إِلٰهِ النَّاسِ (4) مِنْ شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ (5) الَّذِيْ يُوَسْوِسُ فِيْ صُدُوْرِ النَّاسِ (6) مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ
বিসমিল্লা-হির রাহমা-নির রাহীম (১) কুল্ আ‘উযু বিরাবিবন্ না-স, (২) মালিকিন্ না-স, (৩) ইলা-হিন্ না-স, (৪) মিন শার্রিল্ ওয়াসওয়া-সিল্ খান্না-স, (৫) আল্লাযী ইউওয়াসওয়িসু ফী সুদূরিন্না-স, (৬) মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্না-স।
অর্থ : ১. (হে নবী) আপনি বলুন, আমি আশ্রয় চাই মানুষের মালিকের কাছে। ২. আশ্রয় চাই মানুষের প্রকৃত বাদশাহের কাছে। ৩. আশ্রয় চাই মানুষের একমাত্র মাবূদের কাছে। ৪. আশ্রয় চাই কুমন্ত্রণাকারীর অনিষ্ট থেকে, যে প্ররোচনা দিয়েই গা ঢাকা দেয়। ৫. যে মানুষের অন্তরে কুমন্ত্রণা দেয়। ৬. জ্বিনের মধ্য থেকে হোক বা মানুষের মধ্য থেকে হোক।
তাছাড়া সকালে সূরা ইয়াসীন ও সূরা আর রহমান এবং রাতে সূরা ওয়াকিয়া ও সূরা মূলক তেলাওয়াত করা উত্তম।
হেফাযতের ৫টি আয়াত :
فَاللهُ خَيْرٌ حَافِظًا وَّهُوَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِيْنَ
ফাল্লা-হু খাইরুন হা-ফিযাও ওয়া হুওয়া আরহামুর রাহিমী-ন।
‘‘আল্লাহই রক্ষণাবেক্ষণে শ্রেষ্ঠ এবং তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।’’ (সূরা ইউসূফ- ৬৪)
إِنْ كُلُّ نَفْسٍ لَّمَّا عَلَيْهَا حَافِظٌ
ইন কুল্লু নাফসিল লাম্মা- আলাইহা- হা-ফিয।
‘‘নিশ্চয় প্রত্যেক জীবের উপরই এক সংরক্ষক রয়েছে।’’ (সূরা আত-তারিক- ৪)
وَلَا يَئُودُهٗ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ
ওয়ালা- ইয়াউ-দুহূ হিফযুহুমা- ওয়া হুওয়াল আলিয়্যুল আযীম।
‘‘সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ তাঁকে মোটেই ক্লান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ ও সর্বাপেক্ষা মহান।’’ (সূরা বাকারা- ২৫৫)
وَحِفْظًا مِّنْ كُلِّ شَيْطَانٍ مَّارِدٍ
ওয়া হিফযাম মিন কুল্লি শাইতা-নিম মা-রিদ।
‘‘নিরাপদ করেছি প্রত্যেক অবাধ্য শয়তান থেকে।’’ (সূরা সফফাত- ৭)
وَحَفِظْنَاهَا مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ رَّجِيمٍ
ওয়াহিয না-হা- মিন কুল্লি শাইতা-নির রাজীম।
‘‘প্রত্যেক অভিশপ্ত শয়তান হতে আমি সেটাকে রক্ষা করে থাকি।’’ (সূরা হিজর- ১৭)
মনে প্রশান্তি দানকারী কয়েকটি আয়াত :
وَكَأَيِّنْ مِّنْ دَابَّةٍ لَّا تَحْمِلُ رِزْقَهَا ---. اَللهُ يَرْزُقُهَا وَإِيَّاكُمْ وَهُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ
ওয়াকাআইয়িম মিন দা-ববাতিল্লা- তাহমিলূ রিযিকাহা- আল্লাহু ইয়ার যুকুহা ওয়াইয়্যা-কুম ওয়াহুওয়াস সামি-উল-‘আলি-ম।
অর্থ : ‘‘এমন কত জীবজন্তু আছে যারা নিজেদের খাদ্য মওজুদ রাখে না। আল্লাহই তাদেরকে ও তোমাদেরকে রিযিক দান করেন এবং তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ।’’ (সূরা আনকাবুত- ৬০)
قُلْ لَّنْ يُّصِيْبَنَا إِلَّا مَا كَتَبَ اللهُ لَنَا هُوَ مَوْلَانَا وَعَلَى اللهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُوْنَ
কুল্লাই ইউসি-বানা- ইল্লা- মা-কাতাবাল্লা-হু লানা- হুওয়া মাওলা-না ওয়া ‘আলাল্লা-হি ফালইয়াতাওয়াক্কালীল মু‘মিনূ-ন।
অর্থ : ‘‘বল, আল্লাহ আমাদের জন্য যা নির্দিষ্ট করেছেন তা ব্যতীত আমাদের অন্যকিছু হবে না; তিনি আমাদের কর্মবিধায়ক এবং আল্লাহর উপরই মুমিনদের নির্ভর করা উচিত।’’ (সূরা তওবা- ৫১)
وَإِنْ يَّمْسَسْكَ اللهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ لَهٗ إِلَّا هُوَ وَإِنْ يُّرِدْكَ بِخَيْرٍ فَلَا رَادَّ لِفَضْلِهٖ يُصِيبُ بِهٖ مَنْ يَّشَاءُ مِنْ عِبَادِهٖ وَهُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ
ওয়া ইন ইয়াম-সাসকাল্লা-হু বিযুররিন ফালা-কা-শিফালাহু ইল্লা-হু, ওয়াইন-ইউরিদ-কা বিখাইরিন ফালা-রা-দ্দা- লিফাযলিহী- ইউসী-বু বিহি-মাইয়াশা-উ মিন-ইবা-দিহি ওয়াহুওয়াল-গাফু-রুর রাহী-ম।
অর্থ : ‘‘আল্লাহ তোমাকে ক্লেষ দিলে তিনি ব্যতীত এটা মোচনকারী আর কেউ নেই এবং আল্লাহ যদি তোমার মঙ্গল চান তবে তাঁর অনুগ্রহ রদ করারও কেউ নেই। তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা তিনি মঙ্গল দান করেন। তিনি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।’’ (সূরা ইউনুস- ১০৭)
إِنِّيْ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللهِ رَبِّي وَرَبِّكُمْ مَا مِنْ دَابَّةٍ إِلَّا هُوَ آخِذٌ ۢبِنَاصِيَتِهَا إِنَّ رَبِّي عَلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ
ইন্নি-তাওয়াক্কালতু আলাল্লা-হি রবিব- ওয়ারবিবকুম মা-মিন দা-ববাতিন ইল্লা-হুওয়া আ-খিযূমবিনা সিয়াতিহা- ইন্নারববী- আলা- সিরা-তিমমুস্তাকীম।
অর্থ : ‘‘আমি নির্ভর করি আমার ও তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহর উপর; এমন কোন জীবজন্তু নেই, যে তাঁর পূর্ণ আয়ত্তাধীন নয়; নিশ্চয় আমার প্রতিপালক সরল পথে আছেন। ’’ (সূরা হুদ- ৫৬)
مَا يَفْتَحِ اللهُ لِلنَّاسِ مِنْ رَّحْمَةٍ فَلَا مُمْسِكَ لَهَا وَمَا يُمْسِكْ فَلَا مُرْسِلَ لَهٗ مِنْۢ بَعْدِهٖ وَهُوَ الْعَزِيْزُ الْحَكِيْمُ
মা-ইয়াফতাহিললা-হু লিন্না-সি মিররাহমাতিন ফালা-মুমসিকা লাহা- ওয়ামা ইউমসিক ফালা-মুরসিলা-লাহু মিম-বা‘দিহি, ওয়াহুওয়ালা-আযীযুল-হাকীম।
অর্থ : ‘‘আল্লাহ মানুষের জন্য যে রহমত মুক্ত করে দেন তা কেউ প্রতিরোধ করতে পারে না; আর যা তিনি বন্ধ করে দেন তা বন্ধ করার পরে কেউ মুক্ত করতে পারে না। তিনি প্রতাপশালী ও পরম কৌশলী।’’ (সূরা ফাতির- ২)
وَلَئِنْ سَأَلْتَهُمْ مَّنْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضَ لَيَقُوْلُنَّ اللهُ قُلْ أَفَرَأَيْتُمْ مَّا تَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللهِ إِنْ أَرَادَنِيَ اللهُ بِضُرٍّ هَلْ هُنَّ كَاشِفَاتُ ضُرِّهٖ أَوْ أَرَادَنِي بِرَحْمَةٍ هَلْ هُنَّ مُمْسِكَاتُ رَحْمَتِهٖ - قُلْ حَسْبِيَ اللهُ عَلَيْهِ يَتَوَكَّلُ الْمُتَوَكِّلُوْنَ
ওয়ালাইন সাআলতাহুম মান খালাক্বাসসামা-ওয়া-তি ওয়াল-আরযা লাইয়াকু লুন্নাল্লা-হু কুল আফারাইতুম মা-তাদউনা মিনদু-নিল্লাহি ইন আ‘রা-দানিয়াল্লা-হু বিযুররিন হাল হুন্না কা-শিফা-তু যুররিহী আও ‘আরা-দানি-বিরাহমাতিন হাল হুন্না মুমসিকা-তু রাহমাতিহ। কুল হাসবিয়াল্লা-হু ‘আলাইহি ইয়াতা ওয়াক্কালুল মুতাওয়াক্কিলূন।
অর্থ : ‘‘তুমি যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস কর আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী কে সৃষ্টি করেছেন? তারা অবশ্যই বলবে আল্লাহ। বল তোমরা কি ভেবে দেখছো যে, আল্লাহ আমার অনিষ্ট চাইলে তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে ডাকো তারা কি সেই অনিষ্ট দূর করতে পারবে? অথবা তিনি আমার প্রতি অনুগ্রহ করতে চাইলে তারা কি সেই অনুগ্রহকে বন্ধ করতে পারবে? বল আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। নির্ভরকারীরা তাঁর উপরই নির্ভর করে।’’ (সূরা যুমার- ৩৮)
দরূদ পাঠের গুরুত্ব ও ফযীলত :
রাসূল ﷺ এর প্রতি ভালবাসার নিদর্শন সমূহের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি নিদর্শন হল রাসূল ﷺ এর প্রতি বেশি বেশি দরূদ পাঠ করা।
আল্লাহ তা‘আলা রাসূল ﷺ এর প্রতি দরূদ পাঠ করার নির্দেশ দিয়েছেন-
إنَّ اللهَ وَمَلَائِكَتَهٗ يُصَلُّوْنَ عَلَى النَّبيِّ يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا صَلُّوْا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوْا تَسْلِيْمًا
‘‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর ফেরেশতারা রহমত বর্ষণ করেন রাসূল ﷺ এর প্রতি। সুতরাং হে ঈমানদারগণ! তোমরা রাসূল ﷺ এর প্রতি দরূদ ও সালাম পাঠকর।’’ (সূরা আহযাব- ৫৬)
এখানে আল্লাহ তা‘আলা, মুমিনদেরকে এমন কাজের নিদের্শ দিয়েছেন। যার আরম্ভ তাঁর নিজের থেকে করেছেন, আর একাজ আল্লাহর ফেরেশতারাও করে থাকেন।
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল ﷺ বলেন-
مَنْ صَلَّى عَلَيَّ صَلَاةً ، صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ بِهَا عَشْرًا
‘‘যে লোক আমার উপর একবার দরূদ পাঠ করে, এর প্রতিদানে আল্লাহ তার উপর ১০ বার রহমত বর্ষণ করেন।’’ (মুসলিম হা: ৩৮৪, ৪০৮)
অন্য বর্ণনায় আছে, রাসূল ﷺ বলেন, ‘‘যে আমার উপর একবার দরূদ পঠ করবে আল্লাহ তার উপর ১০টি রহমত নাযিল করবেন, তার ১০টি গুনাহ মাফ করে দেবেন এবং তার জন্য ১০টি মর্যাদা বাড়িয়ে দেবেন।’’ (আহমাদ)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘নিশ্চয় কিয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে সে ব্যক্তি যে, আমার উপর বেশি দরূদ পাঠ করেছে।’’ (তিরমিযী)
ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘আল্লাহর তা‘আলার একদল ফেরেশতা রয়েছে যারা যমীনে চলফেরা করে আমার উম্মতের মধ্যে যারা দরূদ পাঠ করে তারা এ দরূদকে আমার কাছে পেঁŠছিয়ে দেয়।’’ (নাসাঈ)
সকাল-বিকাল ১০ বার দরূদ পড়লে নবীর শাফায়াত লাভ হয় :
আবু দারদা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি সকালে ১০ বার ও বিকালে ১০ বার আমার উপর দরূদ পড়বে তার জন্য কিয়ামতের দিন আমার শাফায়াত নসীব হবে।’’ (তাবরাণী)
কোন কিতাবের মধ্যে দরূদ লেখে দিলে ঐ কিতাব যতদিন থাকবে ততদিন লেখক সওয়াব পাবে।
রাসূলের প্রতি দরূদ না পড়ার ক্ষতি :
আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল ﷺ বলেন, ‘‘যে লোকের সামনে আমার নাম উচ্চারিত হয়েছে অথচ সে আমার প্রতি দরূদ পাঠ করেনি সে হচ্ছে কৃপণ।’’
(আল জামি’ হা: ২৮৭৮, তিরমিযী হা: ২৮১১, ৩৫৪৬)
কাব বিন উজরা (রাঃ) এর বর্ণিত হাদীসে এসেছে যে, জিবরাঈল দ্বিতীয় সিঁড়িতে পা রাখার সময় বললেন, ধ্বংস হউক ঐ ব্যক্তি যার সামনে আপনার নাম নেয়ার পরও আপনার উপর দরূদ পাঠ করল না, তখন রাসূল ﷺ বললেন, ‘আমীন’ অর্থাৎ তা-ই হোক।
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘কোন বৈঠক বা মজলিসে যদি আল্লাহর যিকির এবং রাসূল ﷺ এর প্রতি দরূদ পাঠ করা না হয়, তবে ঐ বৈঠক বা মজলিস কিয়ামতের দিন আফসোস ও পরিতাপের বিষয় হবে।’’ (আবু দাউদ)
জুম‘আর দিন বেশি বেশি দরূদ পড়ার তাকিদ :
আওস ইবনে আওস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমাদের দিনগুলোর মধ্যে জুম‘আর দিনটি হচ্ছে শ্রেষ্ঠতম। কাজেই তোমরা ঐ দিন আমার উপর বেশি বেশি করে দরূদ পাঠ কর। কারণ আমার নিকট তোমাদের দরূদগুলো উপস্থাপন করা হয়। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার নিকট আমাদের দরূদ কীভাবে উপস্থাপন করা হবে, আপনি তো তখন মাটির সাথে মিশে যাবেন? জবাবে তিনি বললেন, নবীদের শরীরকে যমীনের জন্য আল্লাহ অবশ্যই হারাম করে দিয়েছেন। অর্থাৎ মাটি নবীদের শরীর খেতে পারে না। (সহীহ আল-জামি’ হা: ২২১২, আবু দাঊদ হা: ৯২৫)
শেখ আবু সুলায়মান (রহ:) বলেন, প্রত্যেক ইবাদাত কবুল হওয়া বা না হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, কিন্তু দরূদ এমন একটি আমল যা সরাসরি কবুল হয়ে যায় এবং এর সওয়াব দরূদ পাঠকারীর দিকে ফিরে আসে।
দরূদ সম্পর্কে কিছু মাসআলা :
অধিকাংশ ইমাম এ বিষয়ে একমত যে, কেউ রাসূলের নাম উচ্চারণ করলে বা শুনলে তাঁর উপর দরূদ পাঠ করা ওয়াজিব হয়ে যায়।
একই মজলিসে বার বার নবীর নাম উচ্চারিত হলে একবার দরূদ পাঠ করলেই ওয়াজিব আদায় হয়ে যায়, তবে প্রত্যেকবার পাঠ করা মুস্তাহাব।
মুখে উচ্চারণের মত রাসূলের নাম কলমে লিখার সময়ও দরূদ লিখা ওয়াজিব এতে সংক্ষেপে বাংলায় এভাবে (সা:) লেখা যথেষ্ট নয়, বরং পূর্ণ দরূদ লেখা উচিত।
দরূদ পড়ার জন্য পবিত্রতা শর্ত নয়, ওযূবিহীন অবস্থায় এবং হায়েয ও নেফাসের সময়ও দরূদ পড়লে সওয়াব পাওয়া যাবে।
যেসব স্থানে দরূদ পড়া উত্তম :
১. জুম‘আর দিন।
২. আযানের পরে।
৩. মসজিদে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময়।
৪. সকালে ও বিকালে।
৫. ইল্ম শিক্ষা দেয়ার সময়।
৬. হাদীস পড়ার সময়।
৭. তেলাওয়াতের আগে ও পরে।
৮. ওয়াজ-নসীহত শুরু করার আগে।
৯. দো‘আ করার আগে ও পরে।
১০. তওবা করার সময়।
১১. ঘুমানোর সময়।
১২. ঈদ, জুম‘আ ও বিবাহের খুৎবায়।
১৩. কিতাব, ফতওয়া, ও ওসীয়ত লিখার সময়।
১৪. দো‘আয়ে কুনূত পড়ার সময়।
১৫. রাসূল ﷺএর রওযা যিয়ারতের সময়।
রাসূল ﷺ এর প্রতি ভালবাসার নিদর্শন সমূহের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি নিদর্শন হল রাসূল ﷺ এর প্রতি বেশি বেশি দরূদ পাঠ করা।
আল্লাহ তা‘আলা রাসূল ﷺ এর প্রতি দরূদ পাঠ করার নির্দেশ দিয়েছেন-
إنَّ اللهَ وَمَلَائِكَتَهٗ يُصَلُّوْنَ عَلَى النَّبيِّ يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا صَلُّوْا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوْا تَسْلِيْمًا
‘‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর ফেরেশতারা রহমত বর্ষণ করেন রাসূল ﷺ এর প্রতি। সুতরাং হে ঈমানদারগণ! তোমরা রাসূল ﷺ এর প্রতি দরূদ ও সালাম পাঠকর।’’ (সূরা আহযাব- ৫৬)
এখানে আল্লাহ তা‘আলা, মুমিনদেরকে এমন কাজের নিদের্শ দিয়েছেন। যার আরম্ভ তাঁর নিজের থেকে করেছেন, আর একাজ আল্লাহর ফেরেশতারাও করে থাকেন।
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল ﷺ বলেন-
مَنْ صَلَّى عَلَيَّ صَلَاةً ، صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ بِهَا عَشْرًا
‘‘যে লোক আমার উপর একবার দরূদ পাঠ করে, এর প্রতিদানে আল্লাহ তার উপর ১০ বার রহমত বর্ষণ করেন।’’ (মুসলিম হা: ৩৮৪, ৪০৮)
অন্য বর্ণনায় আছে, রাসূল ﷺ বলেন, ‘‘যে আমার উপর একবার দরূদ পঠ করবে আল্লাহ তার উপর ১০টি রহমত নাযিল করবেন, তার ১০টি গুনাহ মাফ করে দেবেন এবং তার জন্য ১০টি মর্যাদা বাড়িয়ে দেবেন।’’ (আহমাদ)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘নিশ্চয় কিয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে সে ব্যক্তি যে, আমার উপর বেশি দরূদ পাঠ করেছে।’’ (তিরমিযী)
ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘আল্লাহর তা‘আলার একদল ফেরেশতা রয়েছে যারা যমীনে চলফেরা করে আমার উম্মতের মধ্যে যারা দরূদ পাঠ করে তারা এ দরূদকে আমার কাছে পেঁŠছিয়ে দেয়।’’ (নাসাঈ)
সকাল-বিকাল ১০ বার দরূদ পড়লে নবীর শাফায়াত লাভ হয় :
আবু দারদা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি সকালে ১০ বার ও বিকালে ১০ বার আমার উপর দরূদ পড়বে তার জন্য কিয়ামতের দিন আমার শাফায়াত নসীব হবে।’’ (তাবরাণী)
কোন কিতাবের মধ্যে দরূদ লেখে দিলে ঐ কিতাব যতদিন থাকবে ততদিন লেখক সওয়াব পাবে।
রাসূলের প্রতি দরূদ না পড়ার ক্ষতি :
আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল ﷺ বলেন, ‘‘যে লোকের সামনে আমার নাম উচ্চারিত হয়েছে অথচ সে আমার প্রতি দরূদ পাঠ করেনি সে হচ্ছে কৃপণ।’’
(আল জামি’ হা: ২৮৭৮, তিরমিযী হা: ২৮১১, ৩৫৪৬)
কাব বিন উজরা (রাঃ) এর বর্ণিত হাদীসে এসেছে যে, জিবরাঈল দ্বিতীয় সিঁড়িতে পা রাখার সময় বললেন, ধ্বংস হউক ঐ ব্যক্তি যার সামনে আপনার নাম নেয়ার পরও আপনার উপর দরূদ পাঠ করল না, তখন রাসূল ﷺ বললেন, ‘আমীন’ অর্থাৎ তা-ই হোক।
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘কোন বৈঠক বা মজলিসে যদি আল্লাহর যিকির এবং রাসূল ﷺ এর প্রতি দরূদ পাঠ করা না হয়, তবে ঐ বৈঠক বা মজলিস কিয়ামতের দিন আফসোস ও পরিতাপের বিষয় হবে।’’ (আবু দাউদ)
জুম‘আর দিন বেশি বেশি দরূদ পড়ার তাকিদ :
আওস ইবনে আওস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমাদের দিনগুলোর মধ্যে জুম‘আর দিনটি হচ্ছে শ্রেষ্ঠতম। কাজেই তোমরা ঐ দিন আমার উপর বেশি বেশি করে দরূদ পাঠ কর। কারণ আমার নিকট তোমাদের দরূদগুলো উপস্থাপন করা হয়। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার নিকট আমাদের দরূদ কীভাবে উপস্থাপন করা হবে, আপনি তো তখন মাটির সাথে মিশে যাবেন? জবাবে তিনি বললেন, নবীদের শরীরকে যমীনের জন্য আল্লাহ অবশ্যই হারাম করে দিয়েছেন। অর্থাৎ মাটি নবীদের শরীর খেতে পারে না। (সহীহ আল-জামি’ হা: ২২১২, আবু দাঊদ হা: ৯২৫)
শেখ আবু সুলায়মান (রহ:) বলেন, প্রত্যেক ইবাদাত কবুল হওয়া বা না হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, কিন্তু দরূদ এমন একটি আমল যা সরাসরি কবুল হয়ে যায় এবং এর সওয়াব দরূদ পাঠকারীর দিকে ফিরে আসে।
দরূদ সম্পর্কে কিছু মাসআলা :
অধিকাংশ ইমাম এ বিষয়ে একমত যে, কেউ রাসূলের নাম উচ্চারণ করলে বা শুনলে তাঁর উপর দরূদ পাঠ করা ওয়াজিব হয়ে যায়।
একই মজলিসে বার বার নবীর নাম উচ্চারিত হলে একবার দরূদ পাঠ করলেই ওয়াজিব আদায় হয়ে যায়, তবে প্রত্যেকবার পাঠ করা মুস্তাহাব।
মুখে উচ্চারণের মত রাসূলের নাম কলমে লিখার সময়ও দরূদ লিখা ওয়াজিব এতে সংক্ষেপে বাংলায় এভাবে (সা:) লেখা যথেষ্ট নয়, বরং পূর্ণ দরূদ লেখা উচিত।
দরূদ পড়ার জন্য পবিত্রতা শর্ত নয়, ওযূবিহীন অবস্থায় এবং হায়েয ও নেফাসের সময়ও দরূদ পড়লে সওয়াব পাওয়া যাবে।
যেসব স্থানে দরূদ পড়া উত্তম :
১. জুম‘আর দিন।
২. আযানের পরে।
৩. মসজিদে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময়।
৪. সকালে ও বিকালে।
৫. ইল্ম শিক্ষা দেয়ার সময়।
৬. হাদীস পড়ার সময়।
৭. তেলাওয়াতের আগে ও পরে।
৮. ওয়াজ-নসীহত শুরু করার আগে।
৯. দো‘আ করার আগে ও পরে।
১০. তওবা করার সময়।
১১. ঘুমানোর সময়।
১২. ঈদ, জুম‘আ ও বিবাহের খুৎবায়।
১৩. কিতাব, ফতওয়া, ও ওসীয়ত লিখার সময়।
১৪. দো‘আয়ে কুনূত পড়ার সময়।
১৫. রাসূল ﷺএর রওযা যিয়ারতের সময়।
সাহাবীগণ নবী ﷺ কে প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! কীভাবে আমরা আপনার উপর দরূদ পাঠ করব? তখন নবী ﷺ বললেন, তোমরা বল :
(১) اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ، اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ
আল্লা-হুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিও ওয়া ‘আলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা ‘আলা ইবরা-হীমা ওয়া‘আলা আ-লি ইবরা-হীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। আল্লা-হুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়া ‘আলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা বা-রাকতা ‘আলা ইবরা-হীমা ওয়া‘আলা আ-লি ইবরা-হীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর রহমত বর্ষণ করুন। যেমনিভাবে আপনি রহমত বর্ষণ করেছেন ইবরাহীম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর, নিঃসন্দেহে আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর বরকত নাযিল করুন যেমনিভাবে বরকত নাযিল করেছেন ইবরাহীম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর। নিঃসন্দেহে আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত।’’ (বুখারী, মুসলিম)
এ দরূদটি আমরা নামাযের মধ্যে পাঠ করি। তাছাড়াও আরো যেসব সহীহ দরূদ হাদীসের বিভিন্ন কিতাবে উল্লেখ রয়েছে, সেগুলোর উপরও আমল করা যাবে।
কাব ইবনে উজরা (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার উপর কীভাবে সালাম পড়ব তা আল্লাহ আমাদেরকে জানিয়েছেন, এখন বলুন! কীভাবে আপনার উপর দরূদ পাঠ করব? তখন নবী ﷺ বললেন, তোমরা বল :
(২) اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى آلِ إبْرَاهِيْمَ ، إنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجيْدٌ . اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى آلِ إبْرَاهِيْمَ ، إنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ
আল্লা-হুম্মা সাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিও ওয়া‘আলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা ‘আলা আ-লি ইবরা-হীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। আল্লা-হুমা বা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদিও ওয়া‘আলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা বা-রাকতা ‘আলা আ-লি ইবরাহীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর রহমত বর্ষণ করুন যেমনিভাবে ইবরাহীমের পরিবারবর্গের উপর আপনি করেছিলেন; নিঃসন্দেহে আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর বরকত নাযিল করুন যেমনিভাবে আপনি ইবরাহীমের পরিবারবর্গের উপর বরকত দান করেছিলেন, নিঃসন্দেহে আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত।’’ (বুখারী, মুসলিম)
(৩) اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ ، اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلى مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ
আল্লা-হুম্মা সাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা ‘আলা আ-লি ইবরা-হীম। আল্লা-হুম্মা বা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদ, কামা বা-রকতা ‘আলা আ-লি ইবরাহীম।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! মুহাম্মাদের উপর রহমত বর্ষণ করুন যেমনটি ইবরাহীমের পরিবারবর্গের উপর আপনি করেছিলেন। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদের উপর বরকত নাযিল করুন যেমনটি আপনি ইবরাহীমের পরিবারবর্গের উপর করেছিলেন।’’ (নাসায়ী হা: ১২৮৬)
(৪) اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ، وَصَلِّ عَلَى الْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُؤْمِنَاتِ، وَالْمُسْلِمِيْنَ وَالْمُسْلِمَاتِ
আল্লা-হুম্মা সাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন ‘আবদিকা ওয়া রাসূলিক, ওয়া সাল্লি ‘আলাল মু’মিনীনা ওয়াল মু’মিনা-ত, ওয়াল মুসলিমীনা ওয়াল মুসলিমা-ত।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! আপনার বান্দা এবং রাসূল মুহাম্মাদের উপর রহমত বর্ষণ করুন। আর সকল মুমিন ও মুসলিম নর-নারীর উপরও রহমত বর্ষণ করুন।’’ (হাকেম ৪/১৩০১২৯)
(৫) اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ النَّبِىِّ الْأُمِّىِّ وَعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ
আল্লা-হুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদ।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! নিরক্ষর নবী মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবারবর্গের উপর রহমত বর্ষণ করুন।’’ (আবু দাউদ হা: ৯৮৩)
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ ، وَعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ (৬)
আল্ল-হুম্মা সাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিও ওয়া‘আলা আ-লি মুহাম্মাদ।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবারবর্গের উপর রহমত বর্ষণ করুন।’’ (নাসায়ী হা: ১২৯২)
(১) اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ، اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ
আল্লা-হুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিও ওয়া ‘আলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা ‘আলা ইবরা-হীমা ওয়া‘আলা আ-লি ইবরা-হীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। আল্লা-হুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়া ‘আলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা বা-রাকতা ‘আলা ইবরা-হীমা ওয়া‘আলা আ-লি ইবরা-হীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর রহমত বর্ষণ করুন। যেমনিভাবে আপনি রহমত বর্ষণ করেছেন ইবরাহীম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর, নিঃসন্দেহে আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর বরকত নাযিল করুন যেমনিভাবে বরকত নাযিল করেছেন ইবরাহীম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর। নিঃসন্দেহে আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত।’’ (বুখারী, মুসলিম)
এ দরূদটি আমরা নামাযের মধ্যে পাঠ করি। তাছাড়াও আরো যেসব সহীহ দরূদ হাদীসের বিভিন্ন কিতাবে উল্লেখ রয়েছে, সেগুলোর উপরও আমল করা যাবে।
কাব ইবনে উজরা (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার উপর কীভাবে সালাম পড়ব তা আল্লাহ আমাদেরকে জানিয়েছেন, এখন বলুন! কীভাবে আপনার উপর দরূদ পাঠ করব? তখন নবী ﷺ বললেন, তোমরা বল :
(২) اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى آلِ إبْرَاهِيْمَ ، إنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجيْدٌ . اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى آلِ إبْرَاهِيْمَ ، إنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ
আল্লা-হুম্মা সাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিও ওয়া‘আলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা ‘আলা আ-লি ইবরা-হীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। আল্লা-হুমা বা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদিও ওয়া‘আলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা বা-রাকতা ‘আলা আ-লি ইবরাহীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর রহমত বর্ষণ করুন যেমনিভাবে ইবরাহীমের পরিবারবর্গের উপর আপনি করেছিলেন; নিঃসন্দেহে আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর বরকত নাযিল করুন যেমনিভাবে আপনি ইবরাহীমের পরিবারবর্গের উপর বরকত দান করেছিলেন, নিঃসন্দেহে আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত।’’ (বুখারী, মুসলিম)
(৩) اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ ، اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلى مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ
আল্লা-হুম্মা সাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা ‘আলা আ-লি ইবরা-হীম। আল্লা-হুম্মা বা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদ, কামা বা-রকতা ‘আলা আ-লি ইবরাহীম।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! মুহাম্মাদের উপর রহমত বর্ষণ করুন যেমনটি ইবরাহীমের পরিবারবর্গের উপর আপনি করেছিলেন। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদের উপর বরকত নাযিল করুন যেমনটি আপনি ইবরাহীমের পরিবারবর্গের উপর করেছিলেন।’’ (নাসায়ী হা: ১২৮৬)
(৪) اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ، وَصَلِّ عَلَى الْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُؤْمِنَاتِ، وَالْمُسْلِمِيْنَ وَالْمُسْلِمَاتِ
আল্লা-হুম্মা সাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন ‘আবদিকা ওয়া রাসূলিক, ওয়া সাল্লি ‘আলাল মু’মিনীনা ওয়াল মু’মিনা-ত, ওয়াল মুসলিমীনা ওয়াল মুসলিমা-ত।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! আপনার বান্দা এবং রাসূল মুহাম্মাদের উপর রহমত বর্ষণ করুন। আর সকল মুমিন ও মুসলিম নর-নারীর উপরও রহমত বর্ষণ করুন।’’ (হাকেম ৪/১৩০১২৯)
(৫) اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ النَّبِىِّ الْأُمِّىِّ وَعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ
আল্লা-হুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদ।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! নিরক্ষর নবী মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবারবর্গের উপর রহমত বর্ষণ করুন।’’ (আবু দাউদ হা: ৯৮৩)
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ ، وَعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ (৬)
আল্ল-হুম্মা সাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিও ওয়া‘আলা আ-লি মুহাম্মাদ।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবারবর্গের উপর রহমত বর্ষণ করুন।’’ (নাসায়ী হা: ১২৯২)
মুমিন বান্দা শোয়ার আগে মুখ পরিষ্কার করে নেবে। ওযূ অবস্থায় শোয়ার চেষ্টা করবে। ডান কাতে শয়ন করবে। বেষ্টনী বা দেয়াল ছাড়া ছাদে শয়ন করবে না। চেরাগ বা বাতি জ্বলন্ত রেখে শয়ন করবে না। মন্দ স্বপ্ন দেখলে ‘আউযুবিল্লাহ’ তিনবার বলে বামদিকে থুথু ফেলবে। আর ভালো স্বপ্ন দেখলে ‘আলহামদু লিল্লাহ’ তিনবার পড়বে।
১. হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন ঘুমাতে যেতেন তখন এ দো‘আ পড়তেন :
أَموْتُ وَ أَحْيَا اَللّٰهُمَّ بِاسْمِكَ
আল্লা-হুম্মা বিস্মিকা আমূতু ওয়াআহ্ইয়া।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! আমি আপনার নামে মৃত্যুবরণ করি ও আপনার নামে জাগ্রত হই।’’ (বুখারী হা: ৫৯৫৫)
২. রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন ঘুমানোর ইচ্ছা করতেন তখন ডান গালের নিচে নিজের ডান হাত রাখতেন এবং এ দো‘আ বলতেন :
اَللّٰهُمَّ قِنِيْ عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ عِبَادَكَ
আল্লা-হুম্মা ক্বিনী আযা-বাকা ইয়াওমা তাব্আছু ইবা-দাক।
‘‘হে আল্লাহ! আমাকে আপনার শাস্তি থেকে রক্ষা করুন যেদিন আপনার বান্দাদেরকে পুনরায় জীবিত করবেন।’’ (আবু দাঊদ, মিশকাত হা: ২৪০০)
৩. রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ যখন নিজের বিছানায় আসে, তখন সে যেন নিজের বিছানা ঝেড়ে নেয়। কারণ সে জানে না তার অনুপস্থিতিতে তার বিছানার উপর কী এসে পড়েছে। তারপর (শুয়ে পড়ার সময়) সে যেন এ দো‘আ পাঠ করে :
بِاسْمِكَ رَبِّيْ وَضَعْتُ جَنْبِيْ ، وَبِكَ أَرْفَعُهٗ ، إِنْ أَمْسَكْتَ نَفْسِيْ فَارْحَمْهَا ، وَإنْ أَرْسَلْتَهَا ، فَاحْفَظْهَا بِمَا تَحْفَظُ بِهٖ عِبَادَكَ الصَّالِحِيْنَ
বিসমিকা রববী ওয়াযা‘তু জাম্বী, ওয়াবিকা আরফা‘উহু, ইন আমসাক্তা নাফ্সী ফারহামহা, ওয়া ইন আরসাল্তাহা ফাহ্ফায্হা বিমা তাহ্ফাযু বিহী ‘ইবা-দাকাস্ সা-লিহীন।
অর্থ : ‘‘হে আমার রব! তোমার নামে আমি পিঠ রাখলাম এবং তোমার সাহায্যেই তাকে উঠাব। যদি তুমি আমার জীবন নিয়ে নাও, তাহলে তার প্রতি রহম কর। আর যদি আমার জীবন ফিরিয়ে দাও, তাহলে তাকে হেফাযত কর সেই বস্তু থেকে যা থেকে তোমার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদেরকে তুমি হেফাযত করে থাক।’’ (বুখারী হা: ৫৯৬১, মেশকাত হা: ২৩৮৪)
৪. বারা ইবনে আযীব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাকে বললেন, তুমি যখন বিছানায় শয়ন করার ইচ্ছা করবে তখন নামাযের ওযূর মত ওযূ করবে, তারপর ডানকাতে শয়ন করে নিচের দো‘আ পড়বে, এতে তুমি যদি ঘুমের মধ্যে মারাও যাও তাহলে স্বভাবধর্ম (ইসলামের) উপর মারা যাবে। আর এ দো‘আটি তোমার শেষ বাক্যে পরিণত কর :
اَللّٰهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفْسِيْ إِلَيْكَ، وَوَجَّهْتُ وَجْهِيْ إِلَيْكَ، وَفَوَّضْتُ أَمْرِيْ إِلَيْكَ ، وَأَلْجَأْتُ ظَهرِيْ إلَيْكَ ، رَغْبَةً وَّرَهْبَةً إِلَيْكَ ، لَا مَلْجَأَ وَلَا مَنْجَا مِنْكَ إِلَّا إِلَيْكَ ، آمَنْتُ بِكِتابِكَ الَّذِيْ أنْزَلْتَ، وَبِنَبِيِّكَ الَّذِيْ أَرْسَلْتَ
আল্লা-হুম্মা আসলামতু নাফ্সী ইলাইকা, ওয়াওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজ্হী ইলাইকা, ওয়াফাওওয়ায্তু আমরী ইলাইকা, ওয়া আলজা‘তু যাহ্রী ইলাইকা, রাগ্বাতাও ওয়ারাহ্বাহান ইলাইকা, লা মালজাআ ওয়ালা মানজা মিন্কা ইল্লা ইলাইক। আ-মানতু বিকিতা-বিকাল্লাযী আনযালতা, ওয়া বি নাবিয়্যিকাল্লাযী আরসালতা।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! তোমার কাছে আমার জীবন সমর্পণ করলাম, তোমার দিকে আমার চেহারা নিবদ্ধ করলাম, তোমার উদ্দেশ্যে আমার কাজ-কর্ম নিবেদন করলাম। তোমার দিকে আমার পিঠ লাগিয়েছি অর্থাৎ তোমার আশ্রয় চাচ্ছি। তোমার প্রতি আগ্রহে ও শাস্তির ভয়ে এসব কাজই করছি। তোমার নিকট ছাড়া আর আশ্রয় পাওয়ার ও (নিজেকে) রক্ষা করার স্থান নেই। তুমি যে কিতাব অবতীর্ণ করেছ তার উপর এবং যে নবী পাঠিয়েছ তার উপর আমি ঈমান এনেছি।’’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত পৃঃ ২০৯)
৫. আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন ঘুমানোর জন্য নিজের বিছানায় যেতেন তখন দু’হাত মিলিয়ে তাতে ফুঁ দিতেন অতঃপর সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক্ব, ও সূরা নাস তেলাওয়াত করে মাথা থেকে আরম্ভ করে যতটুকু সম্ভব নিজের শরীরে হাত বুলাতেন। (বুখারী, মুসলিম, মেশকাত হা: ২১৩২)
৬. আবু হুরায়রা (রাঃ) কে নবী ﷺ বলেন, ‘‘তুমি শয়নকালে ‘আয়াতুল কুরসী’ পাঠ করবে, তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার সাথে একজন হেফাযতকারী (ফেরেশতা) থাকবে এবং সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমার নিকটবর্তী হবে না। (বুখারী, মুসলিম, মেশকাত ১৮৫ পৃঃ হা: ২১২৩)
৭. আবু মাস‘উদ আনসারী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে কেউ রাতে সূরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াত পাঠ করবে, তার জন্য তা যথেষ্ট হবে। অর্থাৎ ঐ ব্যক্তি সারা রাত বিপদমুক্ত থাকবে। (বুখারী, মুসলিম, মেশকাত হা: ২১২৫)
৮. আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন পার্শ্ব পরিবর্তন করতেন তখন নিচের দো‘আ পাঠ করতেন :
لَا إلٰهَ إِلَّا اللهُ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ رَبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا الْعَزِيْزُ الْغَفَّارُ
লা ইলা-হা ইললাল্লা-হুল ওয়া-হিদুল ক্বাহ্হা-র, রববুস্সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি ওয়ামা বাইনাহুমাল আযীযুল গাফ্ফা-র।
অর্থ : ‘‘আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবূদ নেই, তিনি একক ও শক্তিশালী। আসমান-যমীন এবং এ দু’য়ের মাঝে যা কিছু রয়েছে, সবকিছুর প্রতিপালক তিনি। তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।’’ (মুসতাদরাকে হাকেম হা: ১৯৮০)
৯. রাসূল ﷺ বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ ঘুমের মধ্যে ভয় পায় তখন সে যেন নিচের দো‘আ পাঠ করে :
بِسْمِ اللهِ أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ غَضَبِهٖ وَعِقَابِهٖ وَشَرِّ عِبَادِهٖ وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِيْنِ وَأَنْ يَّحْضُرُوْنِ
বিসমিল্লা-হি, আ‘ঊযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত্ তা-ম্মা-তি মিন গাযাবিহী ওয়া‘ইক্বা-বিহী ওয়া শার্রি ‘ইবা-দিহী ওয়া মিন হামাযা-তিশ শায়া-তী-নি ওয়াআই ইয়াহ্যুরূন।
অর্থ : ‘‘আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমাসমূহের আশ্রয় নিচ্ছি তাঁর ক্রোধ ও শাস্তি হতে, তাঁর বান্দার অনিষ্ট হতে এবং শয়তানের খটকা হতে, আর সে যেন আমার নিকট উপস্থিত হতে না পারে।’’ (আবু দাঊদ, মেশকাত, ২১৭ পৃ: হা: ২৪৭৭)
১. হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন ঘুমাতে যেতেন তখন এ দো‘আ পড়তেন :
أَموْتُ وَ أَحْيَا اَللّٰهُمَّ بِاسْمِكَ
আল্লা-হুম্মা বিস্মিকা আমূতু ওয়াআহ্ইয়া।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! আমি আপনার নামে মৃত্যুবরণ করি ও আপনার নামে জাগ্রত হই।’’ (বুখারী হা: ৫৯৫৫)
২. রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন ঘুমানোর ইচ্ছা করতেন তখন ডান গালের নিচে নিজের ডান হাত রাখতেন এবং এ দো‘আ বলতেন :
اَللّٰهُمَّ قِنِيْ عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ عِبَادَكَ
আল্লা-হুম্মা ক্বিনী আযা-বাকা ইয়াওমা তাব্আছু ইবা-দাক।
‘‘হে আল্লাহ! আমাকে আপনার শাস্তি থেকে রক্ষা করুন যেদিন আপনার বান্দাদেরকে পুনরায় জীবিত করবেন।’’ (আবু দাঊদ, মিশকাত হা: ২৪০০)
৩. রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ যখন নিজের বিছানায় আসে, তখন সে যেন নিজের বিছানা ঝেড়ে নেয়। কারণ সে জানে না তার অনুপস্থিতিতে তার বিছানার উপর কী এসে পড়েছে। তারপর (শুয়ে পড়ার সময়) সে যেন এ দো‘আ পাঠ করে :
بِاسْمِكَ رَبِّيْ وَضَعْتُ جَنْبِيْ ، وَبِكَ أَرْفَعُهٗ ، إِنْ أَمْسَكْتَ نَفْسِيْ فَارْحَمْهَا ، وَإنْ أَرْسَلْتَهَا ، فَاحْفَظْهَا بِمَا تَحْفَظُ بِهٖ عِبَادَكَ الصَّالِحِيْنَ
বিসমিকা রববী ওয়াযা‘তু জাম্বী, ওয়াবিকা আরফা‘উহু, ইন আমসাক্তা নাফ্সী ফারহামহা, ওয়া ইন আরসাল্তাহা ফাহ্ফায্হা বিমা তাহ্ফাযু বিহী ‘ইবা-দাকাস্ সা-লিহীন।
অর্থ : ‘‘হে আমার রব! তোমার নামে আমি পিঠ রাখলাম এবং তোমার সাহায্যেই তাকে উঠাব। যদি তুমি আমার জীবন নিয়ে নাও, তাহলে তার প্রতি রহম কর। আর যদি আমার জীবন ফিরিয়ে দাও, তাহলে তাকে হেফাযত কর সেই বস্তু থেকে যা থেকে তোমার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদেরকে তুমি হেফাযত করে থাক।’’ (বুখারী হা: ৫৯৬১, মেশকাত হা: ২৩৮৪)
৪. বারা ইবনে আযীব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাকে বললেন, তুমি যখন বিছানায় শয়ন করার ইচ্ছা করবে তখন নামাযের ওযূর মত ওযূ করবে, তারপর ডানকাতে শয়ন করে নিচের দো‘আ পড়বে, এতে তুমি যদি ঘুমের মধ্যে মারাও যাও তাহলে স্বভাবধর্ম (ইসলামের) উপর মারা যাবে। আর এ দো‘আটি তোমার শেষ বাক্যে পরিণত কর :
اَللّٰهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفْسِيْ إِلَيْكَ، وَوَجَّهْتُ وَجْهِيْ إِلَيْكَ، وَفَوَّضْتُ أَمْرِيْ إِلَيْكَ ، وَأَلْجَأْتُ ظَهرِيْ إلَيْكَ ، رَغْبَةً وَّرَهْبَةً إِلَيْكَ ، لَا مَلْجَأَ وَلَا مَنْجَا مِنْكَ إِلَّا إِلَيْكَ ، آمَنْتُ بِكِتابِكَ الَّذِيْ أنْزَلْتَ، وَبِنَبِيِّكَ الَّذِيْ أَرْسَلْتَ
আল্লা-হুম্মা আসলামতু নাফ্সী ইলাইকা, ওয়াওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজ্হী ইলাইকা, ওয়াফাওওয়ায্তু আমরী ইলাইকা, ওয়া আলজা‘তু যাহ্রী ইলাইকা, রাগ্বাতাও ওয়ারাহ্বাহান ইলাইকা, লা মালজাআ ওয়ালা মানজা মিন্কা ইল্লা ইলাইক। আ-মানতু বিকিতা-বিকাল্লাযী আনযালতা, ওয়া বি নাবিয়্যিকাল্লাযী আরসালতা।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! তোমার কাছে আমার জীবন সমর্পণ করলাম, তোমার দিকে আমার চেহারা নিবদ্ধ করলাম, তোমার উদ্দেশ্যে আমার কাজ-কর্ম নিবেদন করলাম। তোমার দিকে আমার পিঠ লাগিয়েছি অর্থাৎ তোমার আশ্রয় চাচ্ছি। তোমার প্রতি আগ্রহে ও শাস্তির ভয়ে এসব কাজই করছি। তোমার নিকট ছাড়া আর আশ্রয় পাওয়ার ও (নিজেকে) রক্ষা করার স্থান নেই। তুমি যে কিতাব অবতীর্ণ করেছ তার উপর এবং যে নবী পাঠিয়েছ তার উপর আমি ঈমান এনেছি।’’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত পৃঃ ২০৯)
৫. আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন ঘুমানোর জন্য নিজের বিছানায় যেতেন তখন দু’হাত মিলিয়ে তাতে ফুঁ দিতেন অতঃপর সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক্ব, ও সূরা নাস তেলাওয়াত করে মাথা থেকে আরম্ভ করে যতটুকু সম্ভব নিজের শরীরে হাত বুলাতেন। (বুখারী, মুসলিম, মেশকাত হা: ২১৩২)
৬. আবু হুরায়রা (রাঃ) কে নবী ﷺ বলেন, ‘‘তুমি শয়নকালে ‘আয়াতুল কুরসী’ পাঠ করবে, তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার সাথে একজন হেফাযতকারী (ফেরেশতা) থাকবে এবং সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমার নিকটবর্তী হবে না। (বুখারী, মুসলিম, মেশকাত ১৮৫ পৃঃ হা: ২১২৩)
৭. আবু মাস‘উদ আনসারী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে কেউ রাতে সূরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াত পাঠ করবে, তার জন্য তা যথেষ্ট হবে। অর্থাৎ ঐ ব্যক্তি সারা রাত বিপদমুক্ত থাকবে। (বুখারী, মুসলিম, মেশকাত হা: ২১২৫)
৮. আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন পার্শ্ব পরিবর্তন করতেন তখন নিচের দো‘আ পাঠ করতেন :
لَا إلٰهَ إِلَّا اللهُ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ رَبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا الْعَزِيْزُ الْغَفَّارُ
লা ইলা-হা ইললাল্লা-হুল ওয়া-হিদুল ক্বাহ্হা-র, রববুস্সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি ওয়ামা বাইনাহুমাল আযীযুল গাফ্ফা-র।
অর্থ : ‘‘আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবূদ নেই, তিনি একক ও শক্তিশালী। আসমান-যমীন এবং এ দু’য়ের মাঝে যা কিছু রয়েছে, সবকিছুর প্রতিপালক তিনি। তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।’’ (মুসতাদরাকে হাকেম হা: ১৯৮০)
৯. রাসূল ﷺ বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ ঘুমের মধ্যে ভয় পায় তখন সে যেন নিচের দো‘আ পাঠ করে :
بِسْمِ اللهِ أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ غَضَبِهٖ وَعِقَابِهٖ وَشَرِّ عِبَادِهٖ وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِيْنِ وَأَنْ يَّحْضُرُوْنِ
বিসমিল্লা-হি, আ‘ঊযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত্ তা-ম্মা-তি মিন গাযাবিহী ওয়া‘ইক্বা-বিহী ওয়া শার্রি ‘ইবা-দিহী ওয়া মিন হামাযা-তিশ শায়া-তী-নি ওয়াআই ইয়াহ্যুরূন।
অর্থ : ‘‘আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমাসমূহের আশ্রয় নিচ্ছি তাঁর ক্রোধ ও শাস্তি হতে, তাঁর বান্দার অনিষ্ট হতে এবং শয়তানের খটকা হতে, আর সে যেন আমার নিকট উপস্থিত হতে না পারে।’’ (আবু দাঊদ, মেশকাত, ২১৭ পৃ: হা: ২৪৭৭)
নোমান ইবনে বাশীর (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, ‘‘দো‘আই হচ্ছে ইবাদাত।’’ (আবু দাঊদ হা: ১৪৮১, তিরমিযী হা: ২৯৬৯)
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘আল্লাহর কাছে দো‘আর চেয়ে অধিক সম্মানজনক আর কোন জিনিস নেই।’’ (তিরমিযী হাঃ ৩৩৭০, মেশকাত)
দুনিয়াতে কোন মানুষের কাছে কিছু চাইলে সে নারাজ হয় অথচ আল্লাহর কাছে চাইলে আল্লাহ খুশি হন। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যে আল্লাহর কাছে চায় না আল্লাহ তার প্রতি রাগ করেন।’’
(তিরমিযী হা: ৩৩৭৩, মেশকাত)
কোন দো‘আই বিফলে যায় না :
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, কোন মুসলমানের দো‘আ যদি পাপ কাজ ও রক্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার না হয়, তবে তার দো‘আর কারণে নিচের তিনটির একটি ফল অবশ্যই আল্লাহ তাকে দান করবেন :
আর তা হল :
ক. হয় দুনিয়াতেই তার চাওয়া বস্তু তাকে দিয়ে দেবেন,
খ. নয়তো পরকালে তাকে এর প্রতিদান দেবেন,
গ. অথবা তার থেকে অনুরূপ কোন অমঙ্গল দূর করে দেবেন।
রাসূলুল্লাহ ﷺ এর বক্তব্য শুনে সাহাবীগণ বললেন, তাহলে আমরা বেশি বেশি দো‘আ করব। নবী করীম ﷺ বললেন, আল্লাহ আরো অধিক দান করবেন। (মুসনাদে আহমাদ হা: ১০৭৪৯, মেশকাত)
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘আল্লাহর কাছে দো‘আর চেয়ে অধিক সম্মানজনক আর কোন জিনিস নেই।’’ (তিরমিযী হাঃ ৩৩৭০, মেশকাত)
দুনিয়াতে কোন মানুষের কাছে কিছু চাইলে সে নারাজ হয় অথচ আল্লাহর কাছে চাইলে আল্লাহ খুশি হন। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যে আল্লাহর কাছে চায় না আল্লাহ তার প্রতি রাগ করেন।’’
(তিরমিযী হা: ৩৩৭৩, মেশকাত)
কোন দো‘আই বিফলে যায় না :
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, কোন মুসলমানের দো‘আ যদি পাপ কাজ ও রক্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার না হয়, তবে তার দো‘আর কারণে নিচের তিনটির একটি ফল অবশ্যই আল্লাহ তাকে দান করবেন :
আর তা হল :
ক. হয় দুনিয়াতেই তার চাওয়া বস্তু তাকে দিয়ে দেবেন,
খ. নয়তো পরকালে তাকে এর প্রতিদান দেবেন,
গ. অথবা তার থেকে অনুরূপ কোন অমঙ্গল দূর করে দেবেন।
রাসূলুল্লাহ ﷺ এর বক্তব্য শুনে সাহাবীগণ বললেন, তাহলে আমরা বেশি বেশি দো‘আ করব। নবী করীম ﷺ বললেন, আল্লাহ আরো অধিক দান করবেন। (মুসনাদে আহমাদ হা: ১০৭৪৯, মেশকাত)
রাতের শেষ ভাগে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদের প্রতি বিশেষভাবে মনোনিবেশ করেন। জান্নাতী বান্দাদের একটি বৈশিষ্ট হল তারা শেষ রাত্রে আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
اَلَّذِيْنَ يَقُوْلُوْنَ رَبَّنَا إِنَّنَا آَمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ --- اَلصَّابِرِيْنَ وَالصَّادِقِيْنَ وَالْقَانِتِيْنَ وَالْمُنْفِقِيْنَ وَالْمُسْتَغْفِرِيْنَ بِالْاَسْحَار
‘‘(জান্নাতী লোকদের গুণাবলী হচ্ছে) যারা বলে, হে আমাদের রব! আমরা ঈমান এনেছি, আপনি আমাদের পাপ ক্ষমা করুন এবং জাহান্নাম থেকে আমাদেরকে রক্ষা করুন। তারা ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, বিনয়ী, দানকারী এবং শেষ রাত্রে ক্ষমা প্রার্থনাকারী।’’ (সূরা আলে ইমরান- ১৬-১৭)
প্রতি রাতে আল্লাহ দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন :
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَنْزِلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالٰى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا حِيْنَ يَبْقٰى ثُلُثُ اللَّيْلِ الْاٰخِرُ فَيَقُوْلُ مَنْ يَدْعُونِىْ فَأَسْتَجِيْبَ لَهٗ وَمَنْ يَسْأَلُنِىْ فَأُعْطِيَهٗ وَمَنْ يَسْتَغْفِرُنِىْ فَأَغْفِرَ لَهٗ
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যখন রাতের একতৃতীয়াংশ বাকী থাকে তখন প্রতি রাতেই আমাদের মহান রব দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন। অতঃপর তিনি তাঁর বান্দাদেরকে ডেকে বলেন, কে আমাকে ডাকবে- আমি উত্তর দেব, কে আমার কাছে কিছু চাইবে- আমি তাকে দান করব। কে আমার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করবে- আমি তাকে ক্ষমা করে দেব।’’
(বুখারী, মুসলিম, মেশকাত হা: ১২২৩)
اَلَّذِيْنَ يَقُوْلُوْنَ رَبَّنَا إِنَّنَا آَمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ --- اَلصَّابِرِيْنَ وَالصَّادِقِيْنَ وَالْقَانِتِيْنَ وَالْمُنْفِقِيْنَ وَالْمُسْتَغْفِرِيْنَ بِالْاَسْحَار
‘‘(জান্নাতী লোকদের গুণাবলী হচ্ছে) যারা বলে, হে আমাদের রব! আমরা ঈমান এনেছি, আপনি আমাদের পাপ ক্ষমা করুন এবং জাহান্নাম থেকে আমাদেরকে রক্ষা করুন। তারা ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, বিনয়ী, দানকারী এবং শেষ রাত্রে ক্ষমা প্রার্থনাকারী।’’ (সূরা আলে ইমরান- ১৬-১৭)
প্রতি রাতে আল্লাহ দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন :
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَنْزِلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالٰى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا حِيْنَ يَبْقٰى ثُلُثُ اللَّيْلِ الْاٰخِرُ فَيَقُوْلُ مَنْ يَدْعُونِىْ فَأَسْتَجِيْبَ لَهٗ وَمَنْ يَسْأَلُنِىْ فَأُعْطِيَهٗ وَمَنْ يَسْتَغْفِرُنِىْ فَأَغْفِرَ لَهٗ
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যখন রাতের একতৃতীয়াংশ বাকী থাকে তখন প্রতি রাতেই আমাদের মহান রব দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন। অতঃপর তিনি তাঁর বান্দাদেরকে ডেকে বলেন, কে আমাকে ডাকবে- আমি উত্তর দেব, কে আমার কাছে কিছু চাইবে- আমি তাকে দান করব। কে আমার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করবে- আমি তাকে ক্ষমা করে দেব।’’
(বুখারী, মুসলিম, মেশকাত হা: ১২২৩)
যদি চোখের পানি ফেলে বান্দা আল্লাহর কাছে কিছু চায়, তাহলে আল্লাহ অবশ্যই তার দিকে মনোযোগ দেন। বান্দা যখন তার কোন প্রয়োজন পূরণের জন্য অথবা বিপদ থেকে মুক্তি লাভের জন্য কান্নাকাটি করে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করে, তখন আল্লাহর রহমত তার দিকে অগ্রসর হয়। নবী ﷺ এবং সাহাবীগণ বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে কান্না করতেন।
ইবনে মাসউদ (রাঃ) কে নবী ﷺ বললেন, আমাকে কুরআন পড়ে শোনাও। আমি বললাম, আপনাকে কুরআন শোনাবো? অথচ আপনার উপর কুরআন নাযিল হয়েছে। তখন রাসূল ﷺ বললেন, অন্যের কাছ থেকে কুরআন শুনতে আমি পছন্দ করি। অতঃপর আমি সূরা নিসা পাঠ করে তাঁকে শুনাতে থাকলাম। যখন আমি এ আয়াতে পৌঁছলাম-
فَكَيْفَ إِذَا جِئْنَا مِنْ كُلِّ أُمَّةٍ بِشَهِيْدٍ وَجِئْنَا بِكَ عَلٰى هٰؤُلَاءِ شَهِيْدًا
‘‘যখন আমি প্রত্যেক উম্মত থেকে একজন সাক্ষী নিয়ে আসব। আর আপনাকে তাদের সকলের উপর সাক্ষী হিসেবে দাঁড় করাব তখন কী অবস্থা হবে?’’(সূরা নিসা- ৪১)
তখন রাসূল ﷺ বললেন, যথেষ্ট হয়েছে। আর আমি তাকিয়ে দেখলাম যে, রাসূল ﷺএর চোখ দিয়ে পানি ঝরছে। (বুখারী হা: ৪৩০৬, মুসলিম হা: ১৯০৩)
রাসূল ﷺ বলেন, ‘‘সে ব্যক্তি জাহান্নামে প্রবেশ করবে না- যে আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করে, যেভাবে সম্ভব নয় দুধকে তার স্তনে পুনরায় ফিরিয়ে দেয়া। আর আল্লাহর রাস্তার ধূলা এবং জাহান্নামের ধূয়া কখন একত্রিত হবে না।’’
(তিরমিযী)
রাসূল ﷺ বলেন, ‘‘সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ছায়ায় স্থান দেবেন যেদিন তার ছায়া ব্যতীত অন্য কোনো ছায়া থাকবে না। তাদের মধ্যে এক ব্যক্তি হচ্ছে, যে নির্জনে আল্লাহ তা‘আলাকে স্মরণ করে এবং তার দু‘চোখ দিয়ে অশ্রু প্রবাহিত হয়।’’ (মুসলিম হা: ২৪২৭)
পাপের জন্য ক্রন্দন করার মধ্যে নাজাত নিহিত :
উকবা ইবনে আমের (রাঃ) বলেন, আমি একদা রাসূল ﷺ কে বললাম, নাজাতের পথ কী? তিনি বললেন, ‘‘তুমি তোমার জিহবাকে আয়ত্তে রাখবে, যেন তা তোমার বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হওয়ার সুযোগ না পায়, তোমার অবস্থান যেন তোমার গৃহে থাকে এবং তুমি তোমার পাপের জন্য কান্নাকাটি করতে থাক।’’ (আহমাদ ও তিরমিযী)
উকবা ইবনে আমের (রাঃ) রাসূল ﷺ এর নিকট নাজাত প্রদানকারী বস্তুসমূহ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি তিনটি নসীহত প্রদান করেছিলেন। এদের প্রত্যেকটিই মহামূল্যবান। তৃতীয় নসীহতে বলা হয়েছে যে, তুমি তোমার পাপের জন্য কান্নাকাটি করবে, এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নসীহত। পাপ সংঘটিত হলে কান্নাকাটি করা এটা লজ্জা ও পেরেশানীর কারণে হয়ে থাকে; আর লজ্জা তওবার গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, সে পাপের দরুন কান্নাকাটি করে এবং কাঁদতে কাঁদতে তা মার্জনা করানোর চেষ্টা করে। আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করা এবং তাঁর ভয়ে ক্রন্দন করা এটা আল্লাহ তা‘আলার নিকট অত্যন্ত মূল্যবান বিষয়।
আবদুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘দু’টি চক্ষু এমন যে, তাদেরকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না। একটি সেই চক্ষু যা আল্লাহ তা‘আলার ভয়ে ক্রন্দন করেছে এবং দ্বিতীয়টি সেই চক্ষু যা আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় পাহারা দিয়ে রাত্রি অতিবাহিত করেছে।’’ (তিরমিযী)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যদি কোন মুমিন বান্দার চক্ষুদ্বয় হতে আল্লাহর ভয়ে অশ্রু নির্গত হয় তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম করে দেবেন।’’
(ইবনে মাজাহ ও বায়হাকী)
ইবনে মাসউদ (রাঃ) কে নবী ﷺ বললেন, আমাকে কুরআন পড়ে শোনাও। আমি বললাম, আপনাকে কুরআন শোনাবো? অথচ আপনার উপর কুরআন নাযিল হয়েছে। তখন রাসূল ﷺ বললেন, অন্যের কাছ থেকে কুরআন শুনতে আমি পছন্দ করি। অতঃপর আমি সূরা নিসা পাঠ করে তাঁকে শুনাতে থাকলাম। যখন আমি এ আয়াতে পৌঁছলাম-
فَكَيْفَ إِذَا جِئْنَا مِنْ كُلِّ أُمَّةٍ بِشَهِيْدٍ وَجِئْنَا بِكَ عَلٰى هٰؤُلَاءِ شَهِيْدًا
‘‘যখন আমি প্রত্যেক উম্মত থেকে একজন সাক্ষী নিয়ে আসব। আর আপনাকে তাদের সকলের উপর সাক্ষী হিসেবে দাঁড় করাব তখন কী অবস্থা হবে?’’(সূরা নিসা- ৪১)
তখন রাসূল ﷺ বললেন, যথেষ্ট হয়েছে। আর আমি তাকিয়ে দেখলাম যে, রাসূল ﷺএর চোখ দিয়ে পানি ঝরছে। (বুখারী হা: ৪৩০৬, মুসলিম হা: ১৯০৩)
রাসূল ﷺ বলেন, ‘‘সে ব্যক্তি জাহান্নামে প্রবেশ করবে না- যে আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করে, যেভাবে সম্ভব নয় দুধকে তার স্তনে পুনরায় ফিরিয়ে দেয়া। আর আল্লাহর রাস্তার ধূলা এবং জাহান্নামের ধূয়া কখন একত্রিত হবে না।’’
(তিরমিযী)
রাসূল ﷺ বলেন, ‘‘সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ছায়ায় স্থান দেবেন যেদিন তার ছায়া ব্যতীত অন্য কোনো ছায়া থাকবে না। তাদের মধ্যে এক ব্যক্তি হচ্ছে, যে নির্জনে আল্লাহ তা‘আলাকে স্মরণ করে এবং তার দু‘চোখ দিয়ে অশ্রু প্রবাহিত হয়।’’ (মুসলিম হা: ২৪২৭)
পাপের জন্য ক্রন্দন করার মধ্যে নাজাত নিহিত :
উকবা ইবনে আমের (রাঃ) বলেন, আমি একদা রাসূল ﷺ কে বললাম, নাজাতের পথ কী? তিনি বললেন, ‘‘তুমি তোমার জিহবাকে আয়ত্তে রাখবে, যেন তা তোমার বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হওয়ার সুযোগ না পায়, তোমার অবস্থান যেন তোমার গৃহে থাকে এবং তুমি তোমার পাপের জন্য কান্নাকাটি করতে থাক।’’ (আহমাদ ও তিরমিযী)
উকবা ইবনে আমের (রাঃ) রাসূল ﷺ এর নিকট নাজাত প্রদানকারী বস্তুসমূহ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি তিনটি নসীহত প্রদান করেছিলেন। এদের প্রত্যেকটিই মহামূল্যবান। তৃতীয় নসীহতে বলা হয়েছে যে, তুমি তোমার পাপের জন্য কান্নাকাটি করবে, এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নসীহত। পাপ সংঘটিত হলে কান্নাকাটি করা এটা লজ্জা ও পেরেশানীর কারণে হয়ে থাকে; আর লজ্জা তওবার গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, সে পাপের দরুন কান্নাকাটি করে এবং কাঁদতে কাঁদতে তা মার্জনা করানোর চেষ্টা করে। আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করা এবং তাঁর ভয়ে ক্রন্দন করা এটা আল্লাহ তা‘আলার নিকট অত্যন্ত মূল্যবান বিষয়।
আবদুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘দু’টি চক্ষু এমন যে, তাদেরকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না। একটি সেই চক্ষু যা আল্লাহ তা‘আলার ভয়ে ক্রন্দন করেছে এবং দ্বিতীয়টি সেই চক্ষু যা আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় পাহারা দিয়ে রাত্রি অতিবাহিত করেছে।’’ (তিরমিযী)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যদি কোন মুমিন বান্দার চক্ষুদ্বয় হতে আল্লাহর ভয়ে অশ্রু নির্গত হয় তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম করে দেবেন।’’
(ইবনে মাজাহ ও বায়হাকী)
মেঝেতে দস্তরখানা বিছিয়ে খাওয়া সুন্নাত। খাওয়ার আগে হাত ধুয়ে নেবে। ডান হাত দিয়ে খাবে। পরিমিত খানা খাবে। ছোট ছোট লোকমা নিয়ে ভালভাবে চিবিয়ে খাবে। হাতের আঙ্গুল ও থালা চেটে খাবে। আহারের পর হাত ও মুখ ধুয়ে নেবে। খাবারের দোষ আলোচনা করবে না। নবী ﷺ কখনো খাবারের দোষ-ত্রুটি আলোচনা করতেন না। উপস্থিত খাবার পছন্দ হলে খেতেন আর পছন্দ না হলে খেতেন না। (মুসলিম)
খাওয়ার শুরুতে বলবে :
بِسْمِ اللهِ (বিসমিল্লাহ)। অর্থাৎ আল্লাহর নামে শুরু। (বুখারী, মুসলিম)
খাওয়ার শুরুতে বিসমিল্লাহ ভুলে গেলে স্মরণ হলেই বলবে :
بِسْمِ اللهِ أَوَّلَهٗ وَآخِرَهٗ
বিসমিল্লাহি আউওয়ালাহু ওয়া আ-খিরাহ।
‘‘খাওয়ার শুরু ও শেষ আল্লাহর নামে’’। (মেশকাত)
খাওয়ার পর পড়বে :
اَلْحَمْدُ للهِ الَّذِيْ أَطْعَمَنِيْ هٰذَا وَرَزَقَنِيْهِ مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِّنِّيْ وَلَا قُوَّةٍ
আলহামদু লিল্লাহিললাযী আত্‘আমানী হা-যা ওয়া রাযাকানীহি মিন গাইরি হাওলিম মিননী ওয়ালা কূওওয়াহ।
অর্থ : ‘‘সকল প্রশংসা সেই আল্লাহর জন্য যিনি আমাকে এ পানাহার করালেন এবং আমার সামর্থ্য ও উপায় না থাকা সত্ত্বেও তা আমাকে দান করেছেন।’’ (আবু দাউদ)
কেউ দাওয়াত খাওয়ালে বলবে :
اَللّٰهُمَّ أَطْعِمْ مَنْ أَطْعَمَنِىْ وَاسْقِ مَنْ سَقَانِىْ
আল্লা-হুম্মা আত্‘ইম মান আত্‘আমানী ওয়াস্ক্বি মান সাক্বা-নী।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! যে আমাকে আহার করালো তুমি তাকে আহার করাও, যে আমাকে পান করালো তুমি তাকে পান করাও।’’ (মুসলিম)
পানীয় দ্রব্য তিন নিঃশ্বাসে পান করা সুন্নাত। পান করার সময় গ্লাসের মধ্যে নিঃশ্বাস ছাড়া অনুচিত। পান করার শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ এবং শেষে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ পড়ে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা কর্তব্য।
খাওয়ার শুরুতে বলবে :
بِسْمِ اللهِ (বিসমিল্লাহ)। অর্থাৎ আল্লাহর নামে শুরু। (বুখারী, মুসলিম)
খাওয়ার শুরুতে বিসমিল্লাহ ভুলে গেলে স্মরণ হলেই বলবে :
بِسْمِ اللهِ أَوَّلَهٗ وَآخِرَهٗ
বিসমিল্লাহি আউওয়ালাহু ওয়া আ-খিরাহ।
‘‘খাওয়ার শুরু ও শেষ আল্লাহর নামে’’। (মেশকাত)
খাওয়ার পর পড়বে :
اَلْحَمْدُ للهِ الَّذِيْ أَطْعَمَنِيْ هٰذَا وَرَزَقَنِيْهِ مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِّنِّيْ وَلَا قُوَّةٍ
আলহামদু লিল্লাহিললাযী আত্‘আমানী হা-যা ওয়া রাযাকানীহি মিন গাইরি হাওলিম মিননী ওয়ালা কূওওয়াহ।
অর্থ : ‘‘সকল প্রশংসা সেই আল্লাহর জন্য যিনি আমাকে এ পানাহার করালেন এবং আমার সামর্থ্য ও উপায় না থাকা সত্ত্বেও তা আমাকে দান করেছেন।’’ (আবু দাউদ)
কেউ দাওয়াত খাওয়ালে বলবে :
اَللّٰهُمَّ أَطْعِمْ مَنْ أَطْعَمَنِىْ وَاسْقِ مَنْ سَقَانِىْ
আল্লা-হুম্মা আত্‘ইম মান আত্‘আমানী ওয়াস্ক্বি মান সাক্বা-নী।
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! যে আমাকে আহার করালো তুমি তাকে আহার করাও, যে আমাকে পান করালো তুমি তাকে পান করাও।’’ (মুসলিম)
পানীয় দ্রব্য তিন নিঃশ্বাসে পান করা সুন্নাত। পান করার সময় গ্লাসের মধ্যে নিঃশ্বাস ছাড়া অনুচিত। পান করার শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ এবং শেষে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ পড়ে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা কর্তব্য।
মুমিন বান্দা শালীন পোশাক পরিধান করবে। পোশাক পরিধানে অহংকার প্রকাশ করবে না। অহংকার প্রকাশের লক্ষ্যে নামী-দামী পোশাক পরা আবার ফকির সাজার লক্ষ্যে নিম্নমানের পোশাক পরা উভয়টিই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিজাতির অনুসরণে পোশাক পরিধান করবে না। এত পাতলা পোশাক পরবে না যাতে শরীরের অঙ্গ স্পষ্ট দেখা যায়। আবার এত টাইট পোশাকও পরিধান করবে না যাতে শরীরের ভাঁজ ফুটে উঠে এবং বসতে ও নামায পড়তে কষ্ট হয়। টাখনুর নিচে পোশাক পরবে না।
মুমিনা মহিলারাও শালীন পোশাক-পরিচ্ছদ ব্যবহার করবে। মাথায় স্কার্ফ ও ওড়না ব্যবহার করবে। এমনভাবে সাজসজ্জা করবে না যাতে দুস্কৃতিকারীদের কবলে পড়তে হয়। হাদীসে বর্ণিত আছে, নবী ﷺ বলেছেন, ‘‘মহিলাদের পর্দা করা কর্তব্য। কোন মেয়েলোক যখন বেপর্দা হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে তখন শয়তান তাকে কাবু করে নেয়।’’ (তিরমিযী)
‘‘মুমিন পুরুষরা তাদের দৃষ্টি নিম্নগামী রাখবে এবং নিজ নিজ যৌনাঙ্গের হেফাযত করবে; মুমিন নারীরাও তাদের দৃষ্টি নিম্নগামী রাখবে এবং নিজ নিজ যৌনাঙ্গের হেফাযত করে।’’ (সূরা নূর- ৩১)
মুমিনা মহিলারাও শালীন পোশাক-পরিচ্ছদ ব্যবহার করবে। মাথায় স্কার্ফ ও ওড়না ব্যবহার করবে। এমনভাবে সাজসজ্জা করবে না যাতে দুস্কৃতিকারীদের কবলে পড়তে হয়। হাদীসে বর্ণিত আছে, নবী ﷺ বলেছেন, ‘‘মহিলাদের পর্দা করা কর্তব্য। কোন মেয়েলোক যখন বেপর্দা হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে তখন শয়তান তাকে কাবু করে নেয়।’’ (তিরমিযী)
‘‘মুমিন পুরুষরা তাদের দৃষ্টি নিম্নগামী রাখবে এবং নিজ নিজ যৌনাঙ্গের হেফাযত করবে; মুমিন নারীরাও তাদের দৃষ্টি নিম্নগামী রাখবে এবং নিজ নিজ যৌনাঙ্গের হেফাযত করে।’’ (সূরা নূর- ৩১)
সফরে বের হওয়ার সময় কমপক্ষে একজন সঙ্গী নেওয়া উচিত। তবে সঙ্গী না থাকলে একাকী যাওয়াতে দোষ হবে না।
যানবাহনে পা রাখার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলবে। (তিরমিযী)
যানবাহনে ঠিকমত বসার পর তিনবার আল্লাহু আকবার বলবে এবং নিম্নোক্ত দো‘আটি পাঠ করবে,
سُبْحَانَ الَّذِىْ سَخَّرَ لَنَا هٰذَا وَمَا كُنَّا لَهٗ مُقْرِنِيْنَ وَإِنَّا إِلٰى رَبِّنَا لَمُنْقَلِبُوْنَ اَللّٰهُمَّ إِنَّا نَسْأَلُكَ فِىْ سَفَرِنَا هٰذَا الْبِرَّ وَالتَّقْوٰى وَمِنَ الْعَمَلِ مَا تَرْضٰى اَللّٰهُمَّ هَوِّنْ عَلَيْنَا سَفَرَنَا هٰذَا وَاطْوِ عَنَّا بُعْدَهٗ اَللّٰهُمَّ أَنْتَ الصَّاحِبُ فِى السَّفَرِ وَالْخَلِيْفَةُ فِى الْاَهْلِ اَللّٰهُمَّ إِنِّى أَعُوْذُ بِكَ مِنْ وَعْثَاءِ السَّفَرِ وَكَآبَةِ الْمَنْظَرِ وَسُوْءِ الْمُنْقَلَبِ فِى الْمَالِ وَالْاَهْلِ
সুবহা-নাল্লাযী সাখ্খারা লানা হা-যা ওয়ামা কুন্না লাহু মুক্বরিনীন, ওয়াইন্না ইলা রবিবনা লামুনক্বালিবূন, আল্লা-হুম্মা ইন্না নাসআলুকা ফী সাফারিনা হা-যাল বিররা ওয়াত্তাক্বওয়া, ওয়া মিনাল ‘আমালি মা তারযা, আল্লা-হুম্মা হাওভিন ‘আলাইনা সাফারানা হা-যা ওয়াত্বভি আন্না বু‘দাহু, আল্লা-হুম্মা আনতাস সা-হিবু ফিস সাফারি ওয়াল খালীফাতু ফিল আহল, আল্লা-হুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিন ওয়া‘ছা-ইস সাফারি ওয়া কাআবাতিল মানযারি ওয়া সূইল মুনক্বালাবি ফিল মালি ওয়াল আহল।
অর্থ : ঐ আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি, যিনি এ বাহনকে আমাদের জন্য অনুগত করে দিয়েছেন অথচ তাকে আমরা অনুগত করতে সক্ষম নই। অবশ্যই আমরা আমাদের রবের নিকট প্রত্যাবর্তন করব। হে আল্লাহ! আমরা এই সফরে তোমার নিকট নেকী ও তাক্বওয়া চাই। আর তোমার পছন্দমত আমল চাই। হে আল্লাহ! এ সফরকে আমাদের উপর সহজ করে দাও এবং তার দূরত্বকে কমিয়ে দাও। হে আল্লাহ! তুমিই আমাদের এই সফরের সাথি আর পরিবারের উপর রক্ষক। হে আল্লাহ! তোমার নিকট সফরের কষ্ট হতে আর সফরের কষ্টদায়ক দৃশ্য হতে এবং সফর হতে প্রত্যাবর্তনকালে সম্পদ ও পরিবারের ক্ষয়-ক্ষতি ও কষ্টদায়ক দর্শন হতে আশ্রয় চাই ।
রাসূল ﷺ যখন সফর হতে ফিরে আসতেন বলতেন,
آيِبُوْنَ تَائِبُوْنَ عَابِدُوْنَ لِرَبِّنَا حَامِدُوْنَ
আ-য়িবূনা তা-ইবূনা ‘আবিদূনা লিরবিবনা হা-মিদূন।
‘‘তওবা করতে করতে, ইবাদাতরত অবস্থায় এবং আমাদের রবের প্রশংসা করতে করতে আমরা প্রত্যাবর্তন করছি।’’ (মুসলিম হা: ৩৩৩৯, মেশকাত পৃ: ২১৩ হা: ২৪২০)
পথ চলতে গিয়ে যদি কোথাও যাত্রাবিরতি করতে হয় তাহলে রাস্তা ছেড়ে অবস্থান নেয়া সুন্নাত। যেন যাতায়াতকারীদের কোন অসুবিধার কারণ না হয় এবং তাদের কষ্ট না হয়। (মুসলিম, ২য় খন্ড)
সফর অবস্থায় যানবাহন যদি উঁচু স্থানে উঠতে থাকে তবে আল্লাহু আকবার বলবে। উপর থেকে নিচে নামার সময় ‘সুবহানাল্লাহ’ বলবে। (বুখারী)
মেশকাতের শরাহ মিরকাতে বলা হয়েছে, কেউ যখন নিজের বাড়িতে বা মসজিদে প্রবেশ করবে তখন সিঁড়িতে প্রথমে ডান পা রাখবে এবং ‘‘আল্লাহু আকবার’’ বলবে। অনুরূপ নিচে নামার সময় বাম পা আগে রেখে প্রতি পদক্ষেপে ‘সুবহানাল্লাহ’ বলা উচিত।
হাদীসের বিখ্যাত ভাষ্যকার মোল্লা আলী ক্বারী (রহ:) লিখেছেন, উপর দিকে উঠার সময় ‘আল্লাহু আকবার’ বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে- মনে মনে এরূপ একটা অভিব্যক্তি প্রকাশ করা যে, হে আল্লাহ! বাহ্যত যদিও আমি উপর দিকে উঠছি, কিন্তু সবকিছুর উপরে তো আপনার স্থান। আর নিচের দিকে নামার সময় ‘সুবহানাল্লাহ’ বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে এ কথা বলা যে, হে আল্লাহ! আমরা নিচে অবস্থান করি, কিন্তু আপনি এর থেকে পবিত্র।
যানবাহনে পা রাখার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলবে। (তিরমিযী)
যানবাহনে ঠিকমত বসার পর তিনবার আল্লাহু আকবার বলবে এবং নিম্নোক্ত দো‘আটি পাঠ করবে,
سُبْحَانَ الَّذِىْ سَخَّرَ لَنَا هٰذَا وَمَا كُنَّا لَهٗ مُقْرِنِيْنَ وَإِنَّا إِلٰى رَبِّنَا لَمُنْقَلِبُوْنَ اَللّٰهُمَّ إِنَّا نَسْأَلُكَ فِىْ سَفَرِنَا هٰذَا الْبِرَّ وَالتَّقْوٰى وَمِنَ الْعَمَلِ مَا تَرْضٰى اَللّٰهُمَّ هَوِّنْ عَلَيْنَا سَفَرَنَا هٰذَا وَاطْوِ عَنَّا بُعْدَهٗ اَللّٰهُمَّ أَنْتَ الصَّاحِبُ فِى السَّفَرِ وَالْخَلِيْفَةُ فِى الْاَهْلِ اَللّٰهُمَّ إِنِّى أَعُوْذُ بِكَ مِنْ وَعْثَاءِ السَّفَرِ وَكَآبَةِ الْمَنْظَرِ وَسُوْءِ الْمُنْقَلَبِ فِى الْمَالِ وَالْاَهْلِ
সুবহা-নাল্লাযী সাখ্খারা লানা হা-যা ওয়ামা কুন্না লাহু মুক্বরিনীন, ওয়াইন্না ইলা রবিবনা লামুনক্বালিবূন, আল্লা-হুম্মা ইন্না নাসআলুকা ফী সাফারিনা হা-যাল বিররা ওয়াত্তাক্বওয়া, ওয়া মিনাল ‘আমালি মা তারযা, আল্লা-হুম্মা হাওভিন ‘আলাইনা সাফারানা হা-যা ওয়াত্বভি আন্না বু‘দাহু, আল্লা-হুম্মা আনতাস সা-হিবু ফিস সাফারি ওয়াল খালীফাতু ফিল আহল, আল্লা-হুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিন ওয়া‘ছা-ইস সাফারি ওয়া কাআবাতিল মানযারি ওয়া সূইল মুনক্বালাবি ফিল মালি ওয়াল আহল।
অর্থ : ঐ আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি, যিনি এ বাহনকে আমাদের জন্য অনুগত করে দিয়েছেন অথচ তাকে আমরা অনুগত করতে সক্ষম নই। অবশ্যই আমরা আমাদের রবের নিকট প্রত্যাবর্তন করব। হে আল্লাহ! আমরা এই সফরে তোমার নিকট নেকী ও তাক্বওয়া চাই। আর তোমার পছন্দমত আমল চাই। হে আল্লাহ! এ সফরকে আমাদের উপর সহজ করে দাও এবং তার দূরত্বকে কমিয়ে দাও। হে আল্লাহ! তুমিই আমাদের এই সফরের সাথি আর পরিবারের উপর রক্ষক। হে আল্লাহ! তোমার নিকট সফরের কষ্ট হতে আর সফরের কষ্টদায়ক দৃশ্য হতে এবং সফর হতে প্রত্যাবর্তনকালে সম্পদ ও পরিবারের ক্ষয়-ক্ষতি ও কষ্টদায়ক দর্শন হতে আশ্রয় চাই ।
রাসূল ﷺ যখন সফর হতে ফিরে আসতেন বলতেন,
آيِبُوْنَ تَائِبُوْنَ عَابِدُوْنَ لِرَبِّنَا حَامِدُوْنَ
আ-য়িবূনা তা-ইবূনা ‘আবিদূনা লিরবিবনা হা-মিদূন।
‘‘তওবা করতে করতে, ইবাদাতরত অবস্থায় এবং আমাদের রবের প্রশংসা করতে করতে আমরা প্রত্যাবর্তন করছি।’’ (মুসলিম হা: ৩৩৩৯, মেশকাত পৃ: ২১৩ হা: ২৪২০)
পথ চলতে গিয়ে যদি কোথাও যাত্রাবিরতি করতে হয় তাহলে রাস্তা ছেড়ে অবস্থান নেয়া সুন্নাত। যেন যাতায়াতকারীদের কোন অসুবিধার কারণ না হয় এবং তাদের কষ্ট না হয়। (মুসলিম, ২য় খন্ড)
সফর অবস্থায় যানবাহন যদি উঁচু স্থানে উঠতে থাকে তবে আল্লাহু আকবার বলবে। উপর থেকে নিচে নামার সময় ‘সুবহানাল্লাহ’ বলবে। (বুখারী)
মেশকাতের শরাহ মিরকাতে বলা হয়েছে, কেউ যখন নিজের বাড়িতে বা মসজিদে প্রবেশ করবে তখন সিঁড়িতে প্রথমে ডান পা রাখবে এবং ‘‘আল্লাহু আকবার’’ বলবে। অনুরূপ নিচে নামার সময় বাম পা আগে রেখে প্রতি পদক্ষেপে ‘সুবহানাল্লাহ’ বলা উচিত।
হাদীসের বিখ্যাত ভাষ্যকার মোল্লা আলী ক্বারী (রহ:) লিখেছেন, উপর দিকে উঠার সময় ‘আল্লাহু আকবার’ বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে- মনে মনে এরূপ একটা অভিব্যক্তি প্রকাশ করা যে, হে আল্লাহ! বাহ্যত যদিও আমি উপর দিকে উঠছি, কিন্তু সবকিছুর উপরে তো আপনার স্থান। আর নিচের দিকে নামার সময় ‘সুবহানাল্লাহ’ বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে এ কথা বলা যে, হে আল্লাহ! আমরা নিচে অবস্থান করি, কিন্তু আপনি এর থেকে পবিত্র।
মুমিন সর্বত্র অত্যন্ত শালীন ও নমনীয়তার সাথে হাঁটাচলা করবে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
وَلَا تَمْشِ فِي الْاَرْضِ مَرَحًا إِنَّكَ لَنْ تَخْرِقَ الْاَرْضَ وَلَنْ تَبْلُغَ الْجِبَالَ طُوْلًا
‘‘মাটির বুকে গর্বের সাথে চলবে না। নিশ্চয় তুমি মাটিকে ফাটিয়ে দিতে পারবে না আর পাহাড়ের সমান উঁচুও হতে পারবে না।’’ (সূরা বনী ইসরাঈল- ৩৭)
وَلَا تُصَعِّرْ خَدَّكَ لِلنَّاسِ وَلَا تَمْشِ فِي الْاَرْضِ مَرَحًا إِنَّ اللهَ لَا يُحِبُّ كُلَّ مُخْتَالٍ فَخُوْرٍ - وَاقْصِدْ فِيْ مَشْيِكَ وَاغْضُضْ مِنْ صَوْتِكَ إِنَّ أَنْكَرَ الْاَصْوَاتِ لَصَوْتُ الْحَمِيْرِ
‘‘তুমি মানুষের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে রেখে কথা বলবে না এবং পৃথিবীতে গর্বের সাথে চলবে না। নিশ্চয় আল্লাহ কোন গর্বকারী ও অহংকারীকে পছন্দ করেন না। তোমার চালচলনে মধ্যমপন্থা গ্রহণ কর এবং আওয়াজকে নিচু কর। নিশ্চয় আওয়াজের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ আওয়াজ হচ্ছে গাধার আওয়াজ।’’ (সূরা লুকমান- ১৮-১৯)
সকলের সাথে ভাল ব্যবহার করবে :
ব্যবহার মানবজীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ দিক। সর্বোত্তম ব্যবহার, বিনয় প্রদর্শন, সুসম্পর্ক বজায় রাখা ইসলামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। মানুষের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলতে হবে। বিপদাপদে আশপাশের সবার খোঁজখবর নিতে হবে। রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ঐ ব্যক্তি, যে স্বভাবে উত্তম।’’ নবী ﷺ আচার-আচরণে অশালীন ছিলেন না এবং তিনি অশালীন উক্তিও করতেন না। (বুখারী)
وَلَا تَمْشِ فِي الْاَرْضِ مَرَحًا إِنَّكَ لَنْ تَخْرِقَ الْاَرْضَ وَلَنْ تَبْلُغَ الْجِبَالَ طُوْلًا
‘‘মাটির বুকে গর্বের সাথে চলবে না। নিশ্চয় তুমি মাটিকে ফাটিয়ে দিতে পারবে না আর পাহাড়ের সমান উঁচুও হতে পারবে না।’’ (সূরা বনী ইসরাঈল- ৩৭)
وَلَا تُصَعِّرْ خَدَّكَ لِلنَّاسِ وَلَا تَمْشِ فِي الْاَرْضِ مَرَحًا إِنَّ اللهَ لَا يُحِبُّ كُلَّ مُخْتَالٍ فَخُوْرٍ - وَاقْصِدْ فِيْ مَشْيِكَ وَاغْضُضْ مِنْ صَوْتِكَ إِنَّ أَنْكَرَ الْاَصْوَاتِ لَصَوْتُ الْحَمِيْرِ
‘‘তুমি মানুষের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে রেখে কথা বলবে না এবং পৃথিবীতে গর্বের সাথে চলবে না। নিশ্চয় আল্লাহ কোন গর্বকারী ও অহংকারীকে পছন্দ করেন না। তোমার চালচলনে মধ্যমপন্থা গ্রহণ কর এবং আওয়াজকে নিচু কর। নিশ্চয় আওয়াজের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ আওয়াজ হচ্ছে গাধার আওয়াজ।’’ (সূরা লুকমান- ১৮-১৯)
সকলের সাথে ভাল ব্যবহার করবে :
ব্যবহার মানবজীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ দিক। সর্বোত্তম ব্যবহার, বিনয় প্রদর্শন, সুসম্পর্ক বজায় রাখা ইসলামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। মানুষের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলতে হবে। বিপদাপদে আশপাশের সবার খোঁজখবর নিতে হবে। রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ঐ ব্যক্তি, যে স্বভাবে উত্তম।’’ নবী ﷺ আচার-আচরণে অশালীন ছিলেন না এবং তিনি অশালীন উক্তিও করতেন না। (বুখারী)
পরস্পরের সাক্ষাতের সময় সালাম আদান-প্রদান করা একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত। নবী করীম ﷺ এ সুন্নাতটির প্রতি বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেছেন। এর দ্বারা পরস্পরের মধ্যে মুহাববত সৃষ্টি হয়। পরিচিত-অপরিচিত সকল মুসলমানকেই সালাম দেয়া কর্তব্য। (বুখারী)
রাসূল ﷺ একদল শিশুর নিকট দিয়ে পথ অতিক্রম করছিলেন তখন তিনি তাদেরকে সালাম দিয়েছেন।
কাউকে সালাম দেয়ার মানে হচ্ছে তার জন্য শান্তি ও কল্যাণ কামনা করা। এটা এক মুসলমানের জন্য অপর মুসলমানের উপর একটি হক।
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, এক মুসলিমের উপর অপর মুসলিমের ৫টি হক রয়েছে। তা হল :
১. সাক্ষাত হলে সালাম দেবে।
২. অসুস্থ হলে সেবা করবে।
৩. মৃত্যুবরণ করলে জানাযায় অংশগ্রহণ করবে।
৪. দাওয়াত দিলে কবুল করবে।
৫. হাঁচিদাতার উত্তরে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলবে। (বুখারী, মুসলিম)
খুশি মনে সালামের জবাব দেয়া সবার কর্তব্য। সালামের উত্তরে শব্দ বাড়িয়ে বলা সুন্নাত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
وَإِذَا حُيِّيْتُمْ بِتَحِيَّةٍ فَحَيُّوْا بِأَحْسَنَ مِنْهَا أَوْ رُدُّوْهَا إِنَّ اللهَ كَانَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ حَسِيْبًا
‘‘কেউ যখন তোমাকে সৌজন্যমূলক সম্ভাষণ (সালাম) জানাবে, প্রতি উত্তরে তুমি তাকে তার চেয়ে উত্তম সম্ভাষণ জানাও, কিংবা অন্তত ততটুকুই জানাও। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে হিসাব গ্রহণকারী।’’ (সূরা নিসা- ৮৬)
রাসূল ﷺ একদল শিশুর নিকট দিয়ে পথ অতিক্রম করছিলেন তখন তিনি তাদেরকে সালাম দিয়েছেন।
কাউকে সালাম দেয়ার মানে হচ্ছে তার জন্য শান্তি ও কল্যাণ কামনা করা। এটা এক মুসলমানের জন্য অপর মুসলমানের উপর একটি হক।
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, এক মুসলিমের উপর অপর মুসলিমের ৫টি হক রয়েছে। তা হল :
১. সাক্ষাত হলে সালাম দেবে।
২. অসুস্থ হলে সেবা করবে।
৩. মৃত্যুবরণ করলে জানাযায় অংশগ্রহণ করবে।
৪. দাওয়াত দিলে কবুল করবে।
৫. হাঁচিদাতার উত্তরে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলবে। (বুখারী, মুসলিম)
খুশি মনে সালামের জবাব দেয়া সবার কর্তব্য। সালামের উত্তরে শব্দ বাড়িয়ে বলা সুন্নাত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
وَإِذَا حُيِّيْتُمْ بِتَحِيَّةٍ فَحَيُّوْا بِأَحْسَنَ مِنْهَا أَوْ رُدُّوْهَا إِنَّ اللهَ كَانَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ حَسِيْبًا
‘‘কেউ যখন তোমাকে সৌজন্যমূলক সম্ভাষণ (সালাম) জানাবে, প্রতি উত্তরে তুমি তাকে তার চেয়ে উত্তম সম্ভাষণ জানাও, কিংবা অন্তত ততটুকুই জানাও। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে হিসাব গ্রহণকারী।’’ (সূরা নিসা- ৮৬)
ফরজ ইবাদাত পালনের সাথে সাথে অবিরত নফল ইবাদাত পালন করতে থাকা আল্লাহর নৈকট্য ও বন্ধুত্বেও পথ। আর এভাবে অবিরত নফল ইবাদাত করতে করতে মানুষ আল্লাহর মাহবুব বা প্রিয় বান্দায় পরিণত হয়। বান্দার জীবনে এর চেয়ে বড় নিয়ামত ও তৃপ্তি আর কিছুতে নেই।
হাদীসে কুদসীতে উল্লেখ রয়েছে, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘নফল ইবাদাতের মাধ্যমে বান্দা আমার নিকটবর্তী হতে থাকে। এভাবে এক পর্যায়ে আমি তাকে ভালবাসতে শুরু করি। এমনকি আমি তার কান হয়ে যাই যা দ্বারা সে শুনতে পায়। আমি তার হাত হয়ে যাই যা দ্বারা সে স্পর্শ করে। আমি তার চোখ হয়ে যাই যা দ্বারা সে দেখতে পায়। আমি তার পা হয়ে যাই যা দ্বারা সে চলাফেরা করে। আর সে যদি আমার নিকট কিছু প্রার্থনা করে আমি তাকে অবশ্যই তা দান করি। আর সে যদি আমার নিকট কিছু থেকে আশ্রয় চায় তবে আমি তাকে আশ্রয় দিয়ে থাকি। (বুখারী)
মানুষের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিকাশ, তার স্রষ্টা মহান আল্লাহর সাথে সুগভীর সম্পর্ক স্থাপন, আল্লাহর দ্বীনের পথে অবিচল থেকে ব্যাপকভাবে তার প্রচার ও প্রসারের মানসিক শক্তি অর্জন এবং এ পথের প্রতিবন্ধকতা ও প্রতিকূলতার মুকাবেলা করে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের শক্তি অর্জনের জন্য দৈনন্দিন ফরজ ইবাদাতের সাথে নফল ইবাদাতের গুরুত্বও অপরিসীম। কুরআন মাজীদে বাধ্যতামূলক ইবাদাতের পাশাপাশি ঐচ্ছিক ইবাদাতে মগ্ন হওয়ার জন্যও উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে।
নফল ইবাদাত বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। যেমন- ইল্ম অর্জন করা এবং মানুষকে তা শিক্ষা দেয়া, নামায পড়া, রোযা রাখা, দান-খায়রাত করা, কুরআন তেলাওয়াত করা, আল্লাহর পথে দাওয়াত দেয়া ইত্যাদি। এসব ইবাদাতের প্রত্যেকটিরই ফরজ ও নফল পর্যায় রয়েছে। মুমিন বান্দা নিজের আগ্রহ ও সাধ্যানুসারে সহীহ সুন্নাতের আলোকে কিছু নফল ইবাদাত বেছে নিয়ে নিজের জন্য দৈনন্দিন, সাপ্তাহিক বা মাসিক একটি ওযীফা তৈরি করে নেবে। এখানে সহীহ হাদীসের আলোকে সহজে পালনীয় এবং অধিক সওয়াব অর্জনের কিছু নফল ইবাদাতের আলোচনা করা হল।
হাদীসে কুদসীতে উল্লেখ রয়েছে, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘নফল ইবাদাতের মাধ্যমে বান্দা আমার নিকটবর্তী হতে থাকে। এভাবে এক পর্যায়ে আমি তাকে ভালবাসতে শুরু করি। এমনকি আমি তার কান হয়ে যাই যা দ্বারা সে শুনতে পায়। আমি তার হাত হয়ে যাই যা দ্বারা সে স্পর্শ করে। আমি তার চোখ হয়ে যাই যা দ্বারা সে দেখতে পায়। আমি তার পা হয়ে যাই যা দ্বারা সে চলাফেরা করে। আর সে যদি আমার নিকট কিছু প্রার্থনা করে আমি তাকে অবশ্যই তা দান করি। আর সে যদি আমার নিকট কিছু থেকে আশ্রয় চায় তবে আমি তাকে আশ্রয় দিয়ে থাকি। (বুখারী)
মানুষের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিকাশ, তার স্রষ্টা মহান আল্লাহর সাথে সুগভীর সম্পর্ক স্থাপন, আল্লাহর দ্বীনের পথে অবিচল থেকে ব্যাপকভাবে তার প্রচার ও প্রসারের মানসিক শক্তি অর্জন এবং এ পথের প্রতিবন্ধকতা ও প্রতিকূলতার মুকাবেলা করে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের শক্তি অর্জনের জন্য দৈনন্দিন ফরজ ইবাদাতের সাথে নফল ইবাদাতের গুরুত্বও অপরিসীম। কুরআন মাজীদে বাধ্যতামূলক ইবাদাতের পাশাপাশি ঐচ্ছিক ইবাদাতে মগ্ন হওয়ার জন্যও উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে।
নফল ইবাদাত বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। যেমন- ইল্ম অর্জন করা এবং মানুষকে তা শিক্ষা দেয়া, নামায পড়া, রোযা রাখা, দান-খায়রাত করা, কুরআন তেলাওয়াত করা, আল্লাহর পথে দাওয়াত দেয়া ইত্যাদি। এসব ইবাদাতের প্রত্যেকটিরই ফরজ ও নফল পর্যায় রয়েছে। মুমিন বান্দা নিজের আগ্রহ ও সাধ্যানুসারে সহীহ সুন্নাতের আলোকে কিছু নফল ইবাদাত বেছে নিয়ে নিজের জন্য দৈনন্দিন, সাপ্তাহিক বা মাসিক একটি ওযীফা তৈরি করে নেবে। এখানে সহীহ হাদীসের আলোকে সহজে পালনীয় এবং অধিক সওয়াব অর্জনের কিছু নফল ইবাদাতের আলোচনা করা হল।
আল্লাহর নৈকট্যলাভের সর্বশ্রেষ্ঠ আমল নামায। ফরজ ইবাদাতগুলোর মধ্যে যেমন ফরজ নামায সর্বশ্রেষ্ঠ, নফল ইবাদাতের মধ্যেও নফল নামায সর্বশ্রেষ্ঠ। নামাযের মধ্যে কুরআন পাঠ, যিকির ও দো‘আ অন্য সময়ের কুরআন পাঠ, যিকির ও দো‘আর চেয়ে উত্তম। এজন্য মুমিনকে সর্বদা বেশি বেশি নফল নামায আদায়ের চেষ্টা করতে হবে।
এক সাহাবী প্রশ্ন করেন, আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় আমল কী? উত্তরে রাসূল ﷺ বলেন, তুমি আল্লাহর জন্য বেশি বেশি সিজদা করবে (বেশি বেশি নফল নামায আদায় করবে)। কারণ তুমি যখনই আল্লাহর জন্য একটি সিজদা করবে, তখনই তার বিনিময়ে আললাহ তোমার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন এবং তোমার একটি পাপ মোচন করবেন। (মুসলিম- ১/৩৫৩)
এক সাহাবী রাসূল ﷺ এর নিকট আবেদন করেন যে, তিনি জান্নাতে তাঁর সহচর্য চান। তিনি বলেন, তাহলে বেশি বেশি সিজদা করে (নফল নামায আদায় করে) তুমি আমাকে এ বিষয়ে সাহায্য কর। (মুসলিম- ১/৩৫৩)
এক সাহাবী প্রশ্ন করেন, আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় আমল কী? উত্তরে রাসূল ﷺ বলেন, তুমি আল্লাহর জন্য বেশি বেশি সিজদা করবে (বেশি বেশি নফল নামায আদায় করবে)। কারণ তুমি যখনই আল্লাহর জন্য একটি সিজদা করবে, তখনই তার বিনিময়ে আললাহ তোমার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন এবং তোমার একটি পাপ মোচন করবেন। (মুসলিম- ১/৩৫৩)
এক সাহাবী রাসূল ﷺ এর নিকট আবেদন করেন যে, তিনি জান্নাতে তাঁর সহচর্য চান। তিনি বলেন, তাহলে বেশি বেশি সিজদা করে (নফল নামায আদায় করে) তুমি আমাকে এ বিষয়ে সাহায্য কর। (মুসলিম- ১/৩৫৩)
রাতে কিছু সময় ঘুমিয়ে তারপর উঠে নামায আদায় করলে তাকে তাহাজ্জুদের নামায বলা হয়। এশার নামাযের পর থেকে ফজরের নামাযের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত যা কিছু নফল নামায আদায় করা হয় সব নামাযকেই ‘কিয়ামুল্লাইল’ বা ‘সালাতুল্লাইল’ বলা হয়। সুতরাং কেউ যদি এশার নামাযের পরে না ঘুমিয়ে রাত ১১/১২ টার দিকে বা তার পরে কিছু নফল নামায আদায় করে তবে তা ‘কিয়ামুল্লাইল’ বলে গণ্য হবে।
কিয়ামুল্লাইল ও তাহাজ্জুদের নামায ছাড়া অন্য কোন সুন্নাত বা নফল নামাযের কথা কুরআন মাজীদে উল্লেখ করা হয়নি। কেবল রাতের নফল নামাযের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বহুবার আলোচনা করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
وَمِنَ اللَّيْلِ فَتَهَجَّدْ بِهٖ نَافِلَةً لَّكَ عَسٰى أَنْ يَّبْعَثَكَ رَبُّكَ مَقَامًا مَّحْمُوْدًا
‘‘রাত্রির কিছু অংশে তাহাজ্জুদ কায়েম করবে, এটা তোমার এক অতিরিক্ত কর্তব্য। আশা করা যায় তোমার প্রতিপালক তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করবেন প্রশংসিত স্থানে।’’ (সূরা বনী ইসরাঈল- ৭৯)
وَمِنَ اللَّيْلِ فَاسْجُدْ لَهٗ وَسَبِّحْهُ لَيْلًا طَوِيْلًا
‘‘রাতে তাঁর জন্য সিজদায় নত হও এবং রাতে দীর্ঘ সময় তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা কর।’’ (সূরা দাহর- ২৬)
يَا أَيُّهَا الْمُزَّمِّلُ - قُمِ اللَّيْلَ إِلَّا قَلِيْلًا - نِصْفَهٗ أَوِ انْقُصْ مِنْهُ قَلِيْلًا - أَوْ زِدْ عَلَيْهِ وَرَتِّلِ الْقُرْآَنَ تَرْتِيْلًا
‘‘হে বস্ত্রাবৃত! রাত্রি জাগরণ (নামায আদায়) কর। কিছু অংশ, তার অর্ধেক কিংবা তদপেক্ষা কিছু কম অথবা তদপেক্ষা বেশি। আর কুরআন পাঠ কর ধীরে ধীরে, (থেমে থেমে সুন্দরভাবে)।’’ (সূরা মুয্যাম্মিল- ১-৪)
নবী ও সাহাবীগণ এ নামায আদায় করতেন :
إِنَّ رَبَّكَ يَعْلَمُ أَنَّكَ تَقُوْمُ أَدْنٰى مِنْ ثُلُثَيِ اللَّيْلِ وَنِصْفَهٗ وَثُلُثَهٗ وَطَائِفَةٌ مِّنَ الَّذِيْنَ مَعَكَ
‘‘তোমার প্রতিপালক তো জানেন যে, তুমি জাগরণ কর কখনো রাত্রির প্রায় দুই তৃতীয়াংশ, কখনো অর্ধাংশ এবং কখনো এক তৃতীয়াংশ এবং তোমার সাথে যারা আছে তাদের একটি দলও জাগরণ করে।’’ (সূরা মুয্যাম্মিল- ২০)
আল্লাহর নেক বান্দারা সিজদায় রাত কাটায় :
وَعِبَادُ الرَّحْمٰنِ الَّذِيْنَ يَمْشُوْنَ عَلَى الْاَرْضِ هَوْنًا وَإِذَا خَاطَبَهُمُ الْجَاهِلُوْنَ قَالُوْا سَلَامًا -- وَالَّذِيْنَ يَبِيْتُوْنَ لِرَبِّهِمْ سُجَّدًا وَّقِيَامًا
‘‘রহমান-এর বান্দা তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদেরকে যখন অজ্ঞ ব্যক্তিরা সম্বোধন করে তখন তারা বলে, ‘সালাম’ এবং তারা রাত্রি অতিবাহিত করে তাদের প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সিজ্দারত হয়ে ও দন্ডায়মান অবস্থায়।’’ (সূরা ফুরকান- ৬৩, ৬৪)
আহলে কিতাবের কিছু লোকও আল্লাহর ইবাদাতে রাত কাটায় :
لَيْسُوْا سَوَاءً مِّنْ أَهْلِ الْكِتَابِ أُمَّةٌ قَائِمَةٌ يَّتْلُوْنَ اٰيَاتِ اللهِ آَنَاءَ اللَّيْلِ وَهُمْ يَسْجُدُوْنَ
‘‘তারা সবাই সমান নয়। আহলে কিতাবদের মধ্যে একটি দল রয়েছে অটল। তারা রাতের বেলা আল্লাহর আয়াত তেলাওয়াত করে এবং সিজদা করে।’’ (সূরা আলে ইমরান- ১১৩)
শেষ রাতে ইবাদাত করা জান্নাতীদের বিশেষ বৈশিষ্ট :
إِنَّمَا يُؤْمِنُ بِاٰيَاتِنَا الَّذِيْنَ إِذَا ذُكِّرُوْا بِهَا خَرُوْا سُجَّدًا وَّسَبَّحُوا بِحَمْدِ رَبِّهِمْ وَهُمْ لَا يَسْتَكْبِرُوْنَ- - تَتَجَافىٰ جُنُوْبُهُمْ عَنِ الْمَضَاجِعِ يَدْعُوْنَ رَبَّهُمْ خَوْفًا وَّطَمَعًا وَّمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنْفِقُوْنَ -- فَلَا تَعْلَمُ نَفْسٌ مَّا أُخْفِيَ لَهُمْ مِّنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ جَزَاءً ۢبِمَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ
‘‘কেবল তারাই আমার নিদর্শনগুলোর প্রতি ঈমান রাখে, যাদেরকে আমার আয়াতসমূহ যখন স্মরণ করিয়ে দেয়া হয় তখনই তারা সিজদায় লুটিয়ে পড়ে এবং স্বীয় প্রতিপালকের প্রশংসা, পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে, আর তারা অহংকার করে না। তাদের দেহ-পার্শ বিছানা থেকে এমনভাবে আলাদা হয়ে যায় যে, তারা তাদের প্রতিপালককে আহবান করতে থাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে তারা ব্যয় করে। কেউই জানে না তাদের জন্য নয়ন জুড়ানো কী কী সামগ্রী লুকিয়ে রাখা হয়েছে তাদের কৃতকর্মের প্রতিদানস্বরূপ?’’ (সূরা সিজদা- ১৫-১৭)
إِنَّ الْمُتَّقِيْنَ فِي جَنَّاتٍ وَّعُيُوْنٍ -- آَخِذِيْنَ مَا آَتَاهُمْ رَبُّهُمْ إِنَّهُمْ كَانُوْا قَبْلَ ذٰلِكَ مُحْسِنِيْنَ - كَانُوْا قَلِيْلًا مِّنَ اللَّيْلِ مَا يَهْجَعُوْنَ - وَبِالْاَسْحَارِ هُمْ يَسْتَغْفِرُوْنَ
‘‘সেদিন মুত্তাকীরা বাগান ও ঝর্ণার মধ্যে থাকবে। যা তাদের প্রতিপালক তাদেরকে প্রদান করবেন; তা তারা গ্রহণ করবে। নিশ্চয় তারা ইতোপূর্বে সৎকর্মপরায়ণ ছিল। তারা রাত্রির সামান্য অংশই নিদ্রাবস্থায় অতিবাহিত করত। রাত্রির শেষ প্রহরে তারা ক্ষমাপ্রার্থনা করত।’’ (সূরা যারিয়াত : ১৫-১৮)
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘‘ফরজ নামাযের পর সর্বত্তোম নামায হচ্ছে রাতের (নফল) নামায।’’(তিরমিযী হা: ৪৩৮, মুসলিম হা: ১৮৪৭)
আমর ইবনে আমবাসা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেন, ‘‘মহান প্রতিপালক তাঁর বান্দার সবচেয়ে নিকটবর্তী হন রাতের শেষ অংশে। কাজেই তুমি যদি সে সময়ে আল্লাহর যিকিরকারীদের অন্তর্ভুক্ত হতে পার তবে হও।’’
(তিরমিযী হা: ৩৫৭৯, ইবনে খুযাইমা- ২/১৮২)
অন্য হাদীসে আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘হে মানুষেরা! তোমরা সালাম প্রচলন কর, খাদ্য প্রদান কর, আত্মীয়তা রক্ষা কর এবং মানুষ যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন নামায আদায় কর, তাহলে তোমরা নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।’’ (তিরমিযী- ৪/৬৫১)
রাসূল ﷺ বলেছেন,
عَلَيْكُمْ بِقِيَامِ اللَّيْلِ فَإِنَّهٗ دَأْبُ الصَّالِحِيْنَ قَبْلَكُمْ وَقُرْبَةٌ إلٰى رَبِّكُمْ وَمَكْفَرَةٌ لِلسَّيِّئَاتِ وَمَنْهَاةٌ عَنِ الْإِثْمِ
‘‘তোমরা অবশ্যই তাহাজ্জুদের নামায আদায় করবে। কেননা তা তোমাদের পূর্ববর্তী সকল নেক বান্দাদের বৈশিষ্ট ছিল। আর এটা তোমাদের প্রতিপালকের নৈকট্যলাভের মাধ্যম, পাপ মোচনের সহায়ক এবং গুনাহ থেকে নিষেধকারী।’’ (তিরমিযী হা: ৩৫৪৯)
কিয়ামুল্লাইল ও তাহাজ্জুদের নামায ছাড়া অন্য কোন সুন্নাত বা নফল নামাযের কথা কুরআন মাজীদে উল্লেখ করা হয়নি। কেবল রাতের নফল নামাযের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বহুবার আলোচনা করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
وَمِنَ اللَّيْلِ فَتَهَجَّدْ بِهٖ نَافِلَةً لَّكَ عَسٰى أَنْ يَّبْعَثَكَ رَبُّكَ مَقَامًا مَّحْمُوْدًا
‘‘রাত্রির কিছু অংশে তাহাজ্জুদ কায়েম করবে, এটা তোমার এক অতিরিক্ত কর্তব্য। আশা করা যায় তোমার প্রতিপালক তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করবেন প্রশংসিত স্থানে।’’ (সূরা বনী ইসরাঈল- ৭৯)
وَمِنَ اللَّيْلِ فَاسْجُدْ لَهٗ وَسَبِّحْهُ لَيْلًا طَوِيْلًا
‘‘রাতে তাঁর জন্য সিজদায় নত হও এবং রাতে দীর্ঘ সময় তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা কর।’’ (সূরা দাহর- ২৬)
يَا أَيُّهَا الْمُزَّمِّلُ - قُمِ اللَّيْلَ إِلَّا قَلِيْلًا - نِصْفَهٗ أَوِ انْقُصْ مِنْهُ قَلِيْلًا - أَوْ زِدْ عَلَيْهِ وَرَتِّلِ الْقُرْآَنَ تَرْتِيْلًا
‘‘হে বস্ত্রাবৃত! রাত্রি জাগরণ (নামায আদায়) কর। কিছু অংশ, তার অর্ধেক কিংবা তদপেক্ষা কিছু কম অথবা তদপেক্ষা বেশি। আর কুরআন পাঠ কর ধীরে ধীরে, (থেমে থেমে সুন্দরভাবে)।’’ (সূরা মুয্যাম্মিল- ১-৪)
নবী ও সাহাবীগণ এ নামায আদায় করতেন :
إِنَّ رَبَّكَ يَعْلَمُ أَنَّكَ تَقُوْمُ أَدْنٰى مِنْ ثُلُثَيِ اللَّيْلِ وَنِصْفَهٗ وَثُلُثَهٗ وَطَائِفَةٌ مِّنَ الَّذِيْنَ مَعَكَ
‘‘তোমার প্রতিপালক তো জানেন যে, তুমি জাগরণ কর কখনো রাত্রির প্রায় দুই তৃতীয়াংশ, কখনো অর্ধাংশ এবং কখনো এক তৃতীয়াংশ এবং তোমার সাথে যারা আছে তাদের একটি দলও জাগরণ করে।’’ (সূরা মুয্যাম্মিল- ২০)
আল্লাহর নেক বান্দারা সিজদায় রাত কাটায় :
وَعِبَادُ الرَّحْمٰنِ الَّذِيْنَ يَمْشُوْنَ عَلَى الْاَرْضِ هَوْنًا وَإِذَا خَاطَبَهُمُ الْجَاهِلُوْنَ قَالُوْا سَلَامًا -- وَالَّذِيْنَ يَبِيْتُوْنَ لِرَبِّهِمْ سُجَّدًا وَّقِيَامًا
‘‘রহমান-এর বান্দা তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদেরকে যখন অজ্ঞ ব্যক্তিরা সম্বোধন করে তখন তারা বলে, ‘সালাম’ এবং তারা রাত্রি অতিবাহিত করে তাদের প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সিজ্দারত হয়ে ও দন্ডায়মান অবস্থায়।’’ (সূরা ফুরকান- ৬৩, ৬৪)
আহলে কিতাবের কিছু লোকও আল্লাহর ইবাদাতে রাত কাটায় :
لَيْسُوْا سَوَاءً مِّنْ أَهْلِ الْكِتَابِ أُمَّةٌ قَائِمَةٌ يَّتْلُوْنَ اٰيَاتِ اللهِ آَنَاءَ اللَّيْلِ وَهُمْ يَسْجُدُوْنَ
‘‘তারা সবাই সমান নয়। আহলে কিতাবদের মধ্যে একটি দল রয়েছে অটল। তারা রাতের বেলা আল্লাহর আয়াত তেলাওয়াত করে এবং সিজদা করে।’’ (সূরা আলে ইমরান- ১১৩)
শেষ রাতে ইবাদাত করা জান্নাতীদের বিশেষ বৈশিষ্ট :
إِنَّمَا يُؤْمِنُ بِاٰيَاتِنَا الَّذِيْنَ إِذَا ذُكِّرُوْا بِهَا خَرُوْا سُجَّدًا وَّسَبَّحُوا بِحَمْدِ رَبِّهِمْ وَهُمْ لَا يَسْتَكْبِرُوْنَ- - تَتَجَافىٰ جُنُوْبُهُمْ عَنِ الْمَضَاجِعِ يَدْعُوْنَ رَبَّهُمْ خَوْفًا وَّطَمَعًا وَّمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنْفِقُوْنَ -- فَلَا تَعْلَمُ نَفْسٌ مَّا أُخْفِيَ لَهُمْ مِّنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ جَزَاءً ۢبِمَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ
‘‘কেবল তারাই আমার নিদর্শনগুলোর প্রতি ঈমান রাখে, যাদেরকে আমার আয়াতসমূহ যখন স্মরণ করিয়ে দেয়া হয় তখনই তারা সিজদায় লুটিয়ে পড়ে এবং স্বীয় প্রতিপালকের প্রশংসা, পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে, আর তারা অহংকার করে না। তাদের দেহ-পার্শ বিছানা থেকে এমনভাবে আলাদা হয়ে যায় যে, তারা তাদের প্রতিপালককে আহবান করতে থাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে তারা ব্যয় করে। কেউই জানে না তাদের জন্য নয়ন জুড়ানো কী কী সামগ্রী লুকিয়ে রাখা হয়েছে তাদের কৃতকর্মের প্রতিদানস্বরূপ?’’ (সূরা সিজদা- ১৫-১৭)
إِنَّ الْمُتَّقِيْنَ فِي جَنَّاتٍ وَّعُيُوْنٍ -- آَخِذِيْنَ مَا آَتَاهُمْ رَبُّهُمْ إِنَّهُمْ كَانُوْا قَبْلَ ذٰلِكَ مُحْسِنِيْنَ - كَانُوْا قَلِيْلًا مِّنَ اللَّيْلِ مَا يَهْجَعُوْنَ - وَبِالْاَسْحَارِ هُمْ يَسْتَغْفِرُوْنَ
‘‘সেদিন মুত্তাকীরা বাগান ও ঝর্ণার মধ্যে থাকবে। যা তাদের প্রতিপালক তাদেরকে প্রদান করবেন; তা তারা গ্রহণ করবে। নিশ্চয় তারা ইতোপূর্বে সৎকর্মপরায়ণ ছিল। তারা রাত্রির সামান্য অংশই নিদ্রাবস্থায় অতিবাহিত করত। রাত্রির শেষ প্রহরে তারা ক্ষমাপ্রার্থনা করত।’’ (সূরা যারিয়াত : ১৫-১৮)
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘‘ফরজ নামাযের পর সর্বত্তোম নামায হচ্ছে রাতের (নফল) নামায।’’(তিরমিযী হা: ৪৩৮, মুসলিম হা: ১৮৪৭)
আমর ইবনে আমবাসা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেন, ‘‘মহান প্রতিপালক তাঁর বান্দার সবচেয়ে নিকটবর্তী হন রাতের শেষ অংশে। কাজেই তুমি যদি সে সময়ে আল্লাহর যিকিরকারীদের অন্তর্ভুক্ত হতে পার তবে হও।’’
(তিরমিযী হা: ৩৫৭৯, ইবনে খুযাইমা- ২/১৮২)
অন্য হাদীসে আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘হে মানুষেরা! তোমরা সালাম প্রচলন কর, খাদ্য প্রদান কর, আত্মীয়তা রক্ষা কর এবং মানুষ যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন নামায আদায় কর, তাহলে তোমরা নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।’’ (তিরমিযী- ৪/৬৫১)
রাসূল ﷺ বলেছেন,
عَلَيْكُمْ بِقِيَامِ اللَّيْلِ فَإِنَّهٗ دَأْبُ الصَّالِحِيْنَ قَبْلَكُمْ وَقُرْبَةٌ إلٰى رَبِّكُمْ وَمَكْفَرَةٌ لِلسَّيِّئَاتِ وَمَنْهَاةٌ عَنِ الْإِثْمِ
‘‘তোমরা অবশ্যই তাহাজ্জুদের নামায আদায় করবে। কেননা তা তোমাদের পূর্ববর্তী সকল নেক বান্দাদের বৈশিষ্ট ছিল। আর এটা তোমাদের প্রতিপালকের নৈকট্যলাভের মাধ্যম, পাপ মোচনের সহায়ক এবং গুনাহ থেকে নিষেধকারী।’’ (তিরমিযী হা: ৩৫৪৯)
ফরজ নামায ব্যতীত অন্যান্য (ওয়াজিব, সুন্নাত, নফল) নামায প্রতি রাকাতে সূরা-ফাতিহা পড়ার পর যে কোন সূরা বা সূরার অংশবিশেষ পড়া ওয়াজিব। নফল নামাযের জন্য কোন সূরা নির্দিষ্ট নেই। কুরআন মাজীদের যে স্থান থেকে পড়া নামাযী ব্যক্তি নিজের জন্য সহজ মনে করবে সেখান থেকে পড়বে।
নফল নামায দুই রাকাত করে পড়া উত্তম :
দিনে অথবা রাতে নফল নামায এক সালামে দুই রাকাত করে পড়াই উত্তম, যদিও চার রাকাত, এমনকি আট রাকাতও এক সালামে পড়া যায়।
ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ বলেন, ‘‘রাতের ও দিনের নফল নামায দুই রাকাত করে পড়তে হয়।’’ (সুনান আবু দাউদ হা: ১২৯৫)
নবী ﷺ তাহাজ্জুদের নামায ধীরস্থিরভাবে পড়তেন :
আয়েশা (রাঃ) আবু সালামা (রাঃ) কে বললেন, রাসূল ﷺ (তাহাজ্জুদের) চার রাকাত নামায পড়তেন। তুমি সেগুলোর সৌন্দর্য ও দৈর্ঘ্য সম্পর্কে আর জিজ্ঞেস করো না। তারপর তিনি চার রাকাত নামায পড়তেন। তুমি সেগুলোর সৌন্দর্য ও দৌর্ঘ্য সম্পর্কে আর জিজ্ঞেস করো না। (বুখারী হা: ১১৪৭)
নফল নামায দুই রাকাত করে পড়া উত্তম :
দিনে অথবা রাতে নফল নামায এক সালামে দুই রাকাত করে পড়াই উত্তম, যদিও চার রাকাত, এমনকি আট রাকাতও এক সালামে পড়া যায়।
ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ বলেন, ‘‘রাতের ও দিনের নফল নামায দুই রাকাত করে পড়তে হয়।’’ (সুনান আবু দাউদ হা: ১২৯৫)
নবী ﷺ তাহাজ্জুদের নামায ধীরস্থিরভাবে পড়তেন :
আয়েশা (রাঃ) আবু সালামা (রাঃ) কে বললেন, রাসূল ﷺ (তাহাজ্জুদের) চার রাকাত নামায পড়তেন। তুমি সেগুলোর সৌন্দর্য ও দৈর্ঘ্য সম্পর্কে আর জিজ্ঞেস করো না। তারপর তিনি চার রাকাত নামায পড়তেন। তুমি সেগুলোর সৌন্দর্য ও দৌর্ঘ্য সম্পর্কে আর জিজ্ঞেস করো না। (বুখারী হা: ১১৪৭)
‘দোহা’ আরবি শব্দ। এর অর্থ পূর্বাহ্ন বা দিনের প্রথম অংশ। ফারসি ভাষায় একে চাশত বলা হয়। সূর্যোদয়ের পর থেকে মধ্যাহ্ন বা দুপুরের পূর্ব পর্যন্ত সময়কে আরবিতে দোহা বলা হয়।
সূর্য পরিপূর্ণ রূপে উদিত হওয়ার পর অর্থাৎ সূর্যোদয়ের মুহুর্ত থেকে প্রায় ২৫ মিনিট পর দোহা বা চাশতের নামাযের সময় শুরু হয়। এ সময় থেকে শুরু করে দ্বিপ্রহরের পূর্ব পর্যন্ত দীর্ঘ্য সময়ের মধ্যে যে কোনো সময়ে এ নামায আদায় করা যায়। দোহার নামায দুই রাকাত থেকে বার রাকাত আদায় করা যায়। তাহাজ্জুদ নামাযের পরে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাসনূন নফল নামায হচ্ছে দোহার নামায। বিভিন্ন সহীহ হাদীসে এ নামাযকে সালাতুল আওয়াবীন অর্থাৎ অধিক তওবাকারীদের নামায বা আল্লাহওয়ালাগণের নামায বলে অভিহিত করা হয়েছে। আমাদের দেশে এ নামায ইশরাকের নামায বা সূর্যোদয়ের নামায হিসেবে পরিচিত।
অনেকে সূর্যোদয়ের পরের নামাযকে ইশরাকের নামায এবং পরবর্তী সময়ের নামাযকে দোহা বা চাশতের নামায বলেন। তবে হাদীস অনুযায়ী সূর্যোদয় থেকে দুপুরের পূর্ব পর্যন্ত যে কোনো সময় নফল নামায আদায় করলে তা সালাতুদ্দোহা বা দোহার নামায বলে গণ্য হবে।
সালাতুদ্দোহার ফযীলত :
রাসূল ﷺ বলেন,
مَنْ صَلَّى الْغَدَاةَ فِي جَمَاعَةٍ ثُمَّ قَعَدَ يَذْكُرُ اللهَ حَتّٰى تَطْلُعَ الشَّمْسُ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ كَانَتْ لَهٗ كَأَجْرِ حَجَّةٍ وَعُمْرَةٍ
‘‘যে ব্যক্তি জাম’আতের সাথে ফজরের নামায আদায় করার পর সূর্য উদয় হওয়া পর্যন্ত যিকিরে লিপ্ত থাকবে এবং সূর্য আলোকিত হলে দু’রাকাত নামায আদায় করবে, আল্লাহ তাকে একটি পরিপূর্ণ হজ্জ ও উমরার সওয়াব দান করবেন।’’ (তিরমিযী হা: ৫৮৬, তিনি হাদীটিকে হাসান বলেছেন)
ফজরের নামাযের পর কিছু হাটাহাটি করে অথবা কোন কাজ-কর্ম করে অথবা মসজিদ থেকে বাড়ি ফিরে এসেও এ নামায পড়া যায়। কোন মুসলিম, ফজরের জামাআতের পরে মসজিদে বসুক বা না বসুক, সূর্যোদয়ের পর থেকে দ্বি-প্রহরের মধ্যে দুই বা চার রাক‘আত দোহার নামায আদায় করলেই অশেষ সওয়াব ও বরকতের আশা করতে পরবে।
আবু দরদা (রাঃ) বলেন,
أَوْصَانِى حَبِيْبِى -صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- بِثَلَاثٍ لَنْ أَدَعَهُنَّ مَا عِشْتُ بِصِيَامِ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ وَصَلَاةِ الضُّحٰى وَبِأَنْ لَا أَنَامَ حَتّٰى أُوْتِرَ
আমার প্রিয়তম বন্ধু রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাকে তিনটি বিষয়ের উপদেশ দিয়েছেন যেগুলো আমি কখনোই পরিত্যাগ করি না।
(১) ঘুমানোর আগে বেতরের নামায আদায় করতে,
(২) দুই রাকাত দোহার বা চাশাতের নামায কখনো পরিত্যাগ না করতে, কারণ তা সালাতুল আওয়াবীন (তওবাকারীগণের নামায) এবং
(৩) প্রতি মাসে ৩ দিন রোযা রাখতে। (মুসলিম হা: ১৭০৮)
আবু যর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘‘তোমাদের প্রত্যেকের শরীরের প্রতিটি জোড়ার উপর সদকা ওয়াজিব। আর প্রত্যেকবার ‘সুবহা-নাল্লা-হ’ বলা একটি সদকা, প্রত্যেকবার ‘আল-হাম্দুলিল্লা-হ’ বলা একটি সদকা, প্রত্যেকবার ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ বলা একটি সদকা, প্রত্যেকবার ‘আল্লা-হু আকবার’ বলা একটি সদকা, উত্তম কাজের নির্দেশ দেয়া একটি সদকা এবং মন্দ কাজ থেকে বারণ করাও একটি সদকা। আর এই সবকিছুর জন্য চাশ্তের দুই রাকাত নামাযই যথেষ্ঠ হবে।’’ (মুসলিম হা: ১৭০৪)
হাদীসে কুদসীতে বর্ণিত আছে, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
يَا بْنَ آدَمَ صَلِّ لِيْ أَرْبَعًا فِي أَوَّلِ النَّهَارِ أَكْفِكَ آخِرَهٗ
‘‘হে আদম সন্তান! তুমি দিনের শুরুতে আমার জন্য চার রাকাত নামায আদায় কর, আমি তোমার সারাদিনের জন্য যথেষ্ট হয়ে যাব।’’
(মুসনাদে আহমাদ হা: ২৫৫২৫, ইবনে হিববান)
সূর্য পরিপূর্ণ রূপে উদিত হওয়ার পর অর্থাৎ সূর্যোদয়ের মুহুর্ত থেকে প্রায় ২৫ মিনিট পর দোহা বা চাশতের নামাযের সময় শুরু হয়। এ সময় থেকে শুরু করে দ্বিপ্রহরের পূর্ব পর্যন্ত দীর্ঘ্য সময়ের মধ্যে যে কোনো সময়ে এ নামায আদায় করা যায়। দোহার নামায দুই রাকাত থেকে বার রাকাত আদায় করা যায়। তাহাজ্জুদ নামাযের পরে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাসনূন নফল নামায হচ্ছে দোহার নামায। বিভিন্ন সহীহ হাদীসে এ নামাযকে সালাতুল আওয়াবীন অর্থাৎ অধিক তওবাকারীদের নামায বা আল্লাহওয়ালাগণের নামায বলে অভিহিত করা হয়েছে। আমাদের দেশে এ নামায ইশরাকের নামায বা সূর্যোদয়ের নামায হিসেবে পরিচিত।
অনেকে সূর্যোদয়ের পরের নামাযকে ইশরাকের নামায এবং পরবর্তী সময়ের নামাযকে দোহা বা চাশতের নামায বলেন। তবে হাদীস অনুযায়ী সূর্যোদয় থেকে দুপুরের পূর্ব পর্যন্ত যে কোনো সময় নফল নামায আদায় করলে তা সালাতুদ্দোহা বা দোহার নামায বলে গণ্য হবে।
সালাতুদ্দোহার ফযীলত :
রাসূল ﷺ বলেন,
مَنْ صَلَّى الْغَدَاةَ فِي جَمَاعَةٍ ثُمَّ قَعَدَ يَذْكُرُ اللهَ حَتّٰى تَطْلُعَ الشَّمْسُ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ كَانَتْ لَهٗ كَأَجْرِ حَجَّةٍ وَعُمْرَةٍ
‘‘যে ব্যক্তি জাম’আতের সাথে ফজরের নামায আদায় করার পর সূর্য উদয় হওয়া পর্যন্ত যিকিরে লিপ্ত থাকবে এবং সূর্য আলোকিত হলে দু’রাকাত নামায আদায় করবে, আল্লাহ তাকে একটি পরিপূর্ণ হজ্জ ও উমরার সওয়াব দান করবেন।’’ (তিরমিযী হা: ৫৮৬, তিনি হাদীটিকে হাসান বলেছেন)
ফজরের নামাযের পর কিছু হাটাহাটি করে অথবা কোন কাজ-কর্ম করে অথবা মসজিদ থেকে বাড়ি ফিরে এসেও এ নামায পড়া যায়। কোন মুসলিম, ফজরের জামাআতের পরে মসজিদে বসুক বা না বসুক, সূর্যোদয়ের পর থেকে দ্বি-প্রহরের মধ্যে দুই বা চার রাক‘আত দোহার নামায আদায় করলেই অশেষ সওয়াব ও বরকতের আশা করতে পরবে।
আবু দরদা (রাঃ) বলেন,
أَوْصَانِى حَبِيْبِى -صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- بِثَلَاثٍ لَنْ أَدَعَهُنَّ مَا عِشْتُ بِصِيَامِ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ وَصَلَاةِ الضُّحٰى وَبِأَنْ لَا أَنَامَ حَتّٰى أُوْتِرَ
আমার প্রিয়তম বন্ধু রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাকে তিনটি বিষয়ের উপদেশ দিয়েছেন যেগুলো আমি কখনোই পরিত্যাগ করি না।
(১) ঘুমানোর আগে বেতরের নামায আদায় করতে,
(২) দুই রাকাত দোহার বা চাশাতের নামায কখনো পরিত্যাগ না করতে, কারণ তা সালাতুল আওয়াবীন (তওবাকারীগণের নামায) এবং
(৩) প্রতি মাসে ৩ দিন রোযা রাখতে। (মুসলিম হা: ১৭০৮)
আবু যর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘‘তোমাদের প্রত্যেকের শরীরের প্রতিটি জোড়ার উপর সদকা ওয়াজিব। আর প্রত্যেকবার ‘সুবহা-নাল্লা-হ’ বলা একটি সদকা, প্রত্যেকবার ‘আল-হাম্দুলিল্লা-হ’ বলা একটি সদকা, প্রত্যেকবার ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ বলা একটি সদকা, প্রত্যেকবার ‘আল্লা-হু আকবার’ বলা একটি সদকা, উত্তম কাজের নির্দেশ দেয়া একটি সদকা এবং মন্দ কাজ থেকে বারণ করাও একটি সদকা। আর এই সবকিছুর জন্য চাশ্তের দুই রাকাত নামাযই যথেষ্ঠ হবে।’’ (মুসলিম হা: ১৭০৪)
হাদীসে কুদসীতে বর্ণিত আছে, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
يَا بْنَ آدَمَ صَلِّ لِيْ أَرْبَعًا فِي أَوَّلِ النَّهَارِ أَكْفِكَ آخِرَهٗ
‘‘হে আদম সন্তান! তুমি দিনের শুরুতে আমার জন্য চার রাকাত নামায আদায় কর, আমি তোমার সারাদিনের জন্য যথেষ্ট হয়ে যাব।’’
(মুসনাদে আহমাদ হা: ২৫৫২৫, ইবনে হিববান)
দিনে বা রাতে যে কোন সময়ে ওযূ করার পরেই দু’রাকাত নামায আদায় করার অতুলনীয় ফযীলত বিভিন্ন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِبِلَالٍ عِنْدَ صَلَاةِ الْفَجْرِ يَا بِلَالُ حَدِّثْنِيْ بِأَرْجٰى عَمَلٍ عَمِلْتَهٗ فِي الْإِسْلَامِ فَإِنِّي سَمِعْتُ دَفَّ نَعْلَيْكَ بَيْنَ يَدَيَّ فِي الْجَنَّةِ - قَالَ مَا عَمِلْتُ عَمَلًا أَرْجٰى عِنْدِيْ أَنِّي لَمْ أَتَطَهَّرْ طَهُورًا فِيْ سَاعَةِ لَيْلٍ أَوْ نَهَارٍ إِلَّا صَلَّيْتُ بِذٰلِكَ الطُّهُورِ مَا كُتِبَ لِي أَنْ أُصَلِّيَ
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺএকদিন ফজরের নামাযের পর বেলাল (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলেন, হে বেলাল! ইসলাম গ্রহণের পর তুমি এমন কী আমল করেছ যার বিনিময়ে তুমি পুরস্কৃত হওয়ার আশা রাখ? কেননা আজ রাতে আমি জান্নাতে আমার সামনে তোমার জুতার (চলাচলের) শব্দ পেয়েছি। বেলাল (রাঃ) বললেন, আমি তেমন কোন আমল করিনি যার আশা করতে পারি; তবে দিনে বা রাতে যখনই ওযূ করি তখনই যতটুকু আল্লাহ তাওফীক দেন নফল নামায আদায় করি। (বুখারী হা: ১১৪৯)
উকবা ইবনে আমির (রাঃ) এর বর্ণিত হাদীসে রাসূল ﷺ আরো বলেছেন,
مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوَضُوْءَ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ يُقْبِلُ عَلَيْهِمَا بِقَلْبِهٖ وَوَجْهِهٖ وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةَ
‘‘যে ব্যক্তি সুন্দর করে ওযূ করবে এবং তার চেহারা ও অন্তর উভয়কে আল্লাহমুখী করে দু’রাকাত নামায পড়বে, তার উপর জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে।’’ (নাসায়ী হা: ১৫১)
عَنْ زَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِىِّ أَنَّ النَّبِىَّ -صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- قَالَ مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ وُضُوءَهٗ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ لَا يَسْهُوْ فِيْهِمَا غُفِرَ لَهٗ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهٖ
যায়েদ ইবনে খালিদ আল-জুহানী (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে ওযূ করবে এবং দু‘রাকাত নামায আদায় করবে তাতে কোন ভুল-ত্রুটি করবে না তার পূর্বের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।
(আবু দাউদ হা: ৯০৫)
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِبِلَالٍ عِنْدَ صَلَاةِ الْفَجْرِ يَا بِلَالُ حَدِّثْنِيْ بِأَرْجٰى عَمَلٍ عَمِلْتَهٗ فِي الْإِسْلَامِ فَإِنِّي سَمِعْتُ دَفَّ نَعْلَيْكَ بَيْنَ يَدَيَّ فِي الْجَنَّةِ - قَالَ مَا عَمِلْتُ عَمَلًا أَرْجٰى عِنْدِيْ أَنِّي لَمْ أَتَطَهَّرْ طَهُورًا فِيْ سَاعَةِ لَيْلٍ أَوْ نَهَارٍ إِلَّا صَلَّيْتُ بِذٰلِكَ الطُّهُورِ مَا كُتِبَ لِي أَنْ أُصَلِّيَ
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺএকদিন ফজরের নামাযের পর বেলাল (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলেন, হে বেলাল! ইসলাম গ্রহণের পর তুমি এমন কী আমল করেছ যার বিনিময়ে তুমি পুরস্কৃত হওয়ার আশা রাখ? কেননা আজ রাতে আমি জান্নাতে আমার সামনে তোমার জুতার (চলাচলের) শব্দ পেয়েছি। বেলাল (রাঃ) বললেন, আমি তেমন কোন আমল করিনি যার আশা করতে পারি; তবে দিনে বা রাতে যখনই ওযূ করি তখনই যতটুকু আল্লাহ তাওফীক দেন নফল নামায আদায় করি। (বুখারী হা: ১১৪৯)
উকবা ইবনে আমির (রাঃ) এর বর্ণিত হাদীসে রাসূল ﷺ আরো বলেছেন,
مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوَضُوْءَ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ يُقْبِلُ عَلَيْهِمَا بِقَلْبِهٖ وَوَجْهِهٖ وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةَ
‘‘যে ব্যক্তি সুন্দর করে ওযূ করবে এবং তার চেহারা ও অন্তর উভয়কে আল্লাহমুখী করে দু’রাকাত নামায পড়বে, তার উপর জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে।’’ (নাসায়ী হা: ১৫১)
عَنْ زَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِىِّ أَنَّ النَّبِىَّ -صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- قَالَ مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ وُضُوءَهٗ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ لَا يَسْهُوْ فِيْهِمَا غُفِرَ لَهٗ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهٖ
যায়েদ ইবনে খালিদ আল-জুহানী (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে ওযূ করবে এবং দু‘রাকাত নামায আদায় করবে তাতে কোন ভুল-ত্রুটি করবে না তার পূর্বের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।
(আবু দাউদ হা: ৯০৫)
মসজিদে প্রবেশ করে বসার আগে যে নামায আদায় করা হয় তা তাহিয়্যাতুল মসজিদ বা মসজিদে প্রবেশের নামায নামে পরিচিত। মসজিদের পাওনা যে, মুমিন মসজিদে প্রবেশ করলে বসার আগে অন্তত কিছু নামায আদায় করবে। বিভিন্ন হাদীসে রাসূল ﷺ বারংবার নির্দেশ দিয়েছেন যে, মসজিদে প্রবেশ করলে দু’রাকাত নামায আদায় না করে কখনোই বসবে না। মসজিদে প্রবেশ করে বসার আগেই সুন্নাত নামায আদায় করলে বা জামাআতে দাঁড়িয়ে গেলেও এতে ‘তাহিয়্যাতুল মসজিদ’ আদায় হবে। নতুবা মাকরূহ ওয়াক্ত ছাড়া অন্য সময়ে অন্তত দু’রাকাত নফল নামায আদায় করে বসতে হবে।
রাসূল ﷺ এর সাথি আবু কাতাদা (রাঃ) বলেন, আমি মসজিদে প্রবেশ করলাম, আর রাসূল ﷺ মানুষের সাথে বসা ছিলেন। রাবী বলেন, আমি বসে পড়লাম। তখন রাসূল ﷺ বললেন, কিসে তোমাকে বসার পূর্বে দুই রাকাত নামায পড়তে নিষেধ করল? তখন আমি বললাম, আমি আপনাকে ও লোকদেরকে বসে থাকতে দেখেছি (তাই আমিও বসে পড়লাম)। তখন রাসূল ﷺ বললেন, যখন তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করবে তখন সে যেন দু’রাকাত নামায পড়ে নেয়। (মুসলিম হা: ১৬৮৮)
عَنْ أَبِى قَتَادَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- قَالَ إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ فَلْيَرْكَعْ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يَجْلِسَ
আবু কাতাদা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যখনই তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করবে তখন বসার পূর্বে যেন দু’রাকাত নামায পড়ে নেয়।’’
(মুসলিম হা: ১৬৮৭)
রাসূল ﷺ এর সাথি আবু কাতাদা (রাঃ) বলেন, আমি মসজিদে প্রবেশ করলাম, আর রাসূল ﷺ মানুষের সাথে বসা ছিলেন। রাবী বলেন, আমি বসে পড়লাম। তখন রাসূল ﷺ বললেন, কিসে তোমাকে বসার পূর্বে দুই রাকাত নামায পড়তে নিষেধ করল? তখন আমি বললাম, আমি আপনাকে ও লোকদেরকে বসে থাকতে দেখেছি (তাই আমিও বসে পড়লাম)। তখন রাসূল ﷺ বললেন, যখন তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করবে তখন সে যেন দু’রাকাত নামায পড়ে নেয়। (মুসলিম হা: ১৬৮৮)
عَنْ أَبِى قَتَادَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- قَالَ إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ فَلْيَرْكَعْ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يَجْلِسَ
আবু কাতাদা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যখনই তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করবে তখন বসার পূর্বে যেন দু’রাকাত নামায পড়ে নেয়।’’
(মুসলিম হা: ১৬৮৭)
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ خَرَجْتُ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ - صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - فِى غَزَاةٍ فَأَبْطَأَ بِىْ جَمَلِى وَأَعْيَى ثُمَّ قَدِمَ رَسُولُ اللهِ - صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - قَبْلِى وَقَدِمْتُ بِالْغَدَاةِ فَجِئْتُ الْمَسْجِدَ فَوَجَدْتُهٗ عَلٰى بَابِ الْمَسْجِدِ قَالَ « اَلْآنَ حِينَ قَدِمْتَ » . قُلْتُ نَعَمْ . قَالَ « فَدَعْ جَمَلَكَ وَادْخُلْ فَصَلِّ رَكْعَتَيْنِ » . قَالَ فَدَخَلْتُ فَصَلَّيْتُ ثُمَّ رَجَعْتُ .
জাবির (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল ﷺএর সাথে যুদ্ধে বের হলাম এবং ফেরার সময় আমার উট আমাকে নিয়ে আসতে দেরী করলো এবং সে অক্ষম হয়ে পড়ল। আমি সকালে এসে রাসূল ﷺ কে মসজিদের দরজায় পেলাম। তখন তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি এখন এসেছ? আমি বললাম, জ্বী হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহলে মসজিদে প্রবেশ কর এবং দু’রাকাত নামায পড়। তারপর আমি দু’রাকাত নামায পড়লাম অতপর ফিরে আসলাম।
(মুসলিম হা: ১৬৯১)
عَنْ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ - صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - كَانَ لَا يَقْدَمُ مِنْ سَفَرٍ إِلَّا نَهَارًا فِى الضُّحٰى فَإِذَا قَدِمَ بَدَأَ بِالْمَسْجِدِ فَصَلَّى فِيْهِ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ جَلَسَ فِيْهِ .
কা‘ব ইবনে মালেক (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ যখনই সফর থেকে ফিরতেন দিনের প্রথম দিকে ফিরতেন এবং প্রথমে মসজিদে যেতেন এবং দু’রাকাত নামায পড়তেন এবং সেখানে বসতেন। (মুসলিম হা: ১৬৯২)
জাবির (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল ﷺএর সাথে যুদ্ধে বের হলাম এবং ফেরার সময় আমার উট আমাকে নিয়ে আসতে দেরী করলো এবং সে অক্ষম হয়ে পড়ল। আমি সকালে এসে রাসূল ﷺ কে মসজিদের দরজায় পেলাম। তখন তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি এখন এসেছ? আমি বললাম, জ্বী হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহলে মসজিদে প্রবেশ কর এবং দু’রাকাত নামায পড়। তারপর আমি দু’রাকাত নামায পড়লাম অতপর ফিরে আসলাম।
(মুসলিম হা: ১৬৯১)
عَنْ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ - صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - كَانَ لَا يَقْدَمُ مِنْ سَفَرٍ إِلَّا نَهَارًا فِى الضُّحٰى فَإِذَا قَدِمَ بَدَأَ بِالْمَسْجِدِ فَصَلَّى فِيْهِ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ جَلَسَ فِيْهِ .
কা‘ব ইবনে মালেক (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ যখনই সফর থেকে ফিরতেন দিনের প্রথম দিকে ফিরতেন এবং প্রথমে মসজিদে যেতেন এবং দু’রাকাত নামায পড়তেন এবং সেখানে বসতেন। (মুসলিম হা: ১৬৯২)
যিকিরের মূল চারটি বাক্য অর্থাৎ তাসবীহ তথা ‘সুবহানাল্লাহ’ তাহমীদ তথা ‘আল-হামদুলিল্লাহ’, তাহলীল তথা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এবং তাকবীর তথা ‘আল্লাহু আকবার’ সহকারে নামায আদায় করাকে সালতুত তাসবীহ বলে। চার রাকাত নামাযে প্রতি রাকাতে ৭৫ বার করে চার রাকাতে মোট ৩০০ বার উক্ত যিকিরগুলো আদায় করতে হয়। হাদীসে সালাতুত তাসবীহের অনেক ফযীলত বর্ণিত হয়েছে।
আবদুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) কে লক্ষ্য করে রাসূল ﷺ বললেন, হে আববাস! আমি কি তোমাকে কিছু দান করব? আমি কি তোমার প্রতি অনুগ্রহ করব? আমি কি তোমাকে দশটি উত্তম বৈশিষ্টের কথা বলব? যখন তুমি তা সম্পাদন করবে আল্লাহ তা‘আলা তোমার পূর্বের-পরের, নতুন-পুরাতন, ইচ্ছাকৃত-অনিচ্ছাকৃত, ছোট-বড়, প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। আর সে কাজটি হল সালাতুত তাসবীহ আদায় করা। এ নামায সম্ভব হলে তুমি প্রতিদিন পড়বে, না পারলে সপ্তাহে একদিন পড়বে, না পারলে মাসে একদিন পড়বে, তাও না পারলে বছরে একদিন পড়বে, এটাও সম্ভব না হলে জীবনে একবার হলেও এ নামায আদায় করবে। (আবু দাউদ হা: ১২৯৯)
সালাতুত তাসবীহ আদায় করার নিয়ম :
চার রাকাত নামায পড়তে হবে, প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতেহার পর একটি সূরা মিলাতে হবে, প্রথম রাকাতে সানা পড়ার পর সূরা ফাতেহা পড়ার আগে নিচের তাসবীহটি ১৫ বার পড়বে :
سُبْحَانَ اللهِ ، وَالْحَمْدُ للهِ ، وَلَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ ، وَاللهُ أكْبَرُ .
‘‘সুবহা-নাল্লা-হি ওয়ালহাম্দুলিল্লা-হি ওয়ালা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াল্লা-হু আকবার’’
রুকূতে গিয়ে ১০ বার পড়বে।
রুকূ থেকে দাঁড়িয়ে ১০ বার।
সিজদায় গিয়ে ১০ বার।
সিজদা থেকে বসে ১০ বার।
দ্বিতীয় সিজদায় ১০ বার।
দ্বিতীয় সিজদা থেকে উঠে বসে ১০ বার পড়বে। এ হল মোট ৭৫ বার।
তারপর দাঁড়িয়ে পুনরায় এভাবে বাকি তিন রাকাত নামায আদায় করবে।
আবদুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) কে লক্ষ্য করে রাসূল ﷺ বললেন, হে আববাস! আমি কি তোমাকে কিছু দান করব? আমি কি তোমার প্রতি অনুগ্রহ করব? আমি কি তোমাকে দশটি উত্তম বৈশিষ্টের কথা বলব? যখন তুমি তা সম্পাদন করবে আল্লাহ তা‘আলা তোমার পূর্বের-পরের, নতুন-পুরাতন, ইচ্ছাকৃত-অনিচ্ছাকৃত, ছোট-বড়, প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। আর সে কাজটি হল সালাতুত তাসবীহ আদায় করা। এ নামায সম্ভব হলে তুমি প্রতিদিন পড়বে, না পারলে সপ্তাহে একদিন পড়বে, না পারলে মাসে একদিন পড়বে, তাও না পারলে বছরে একদিন পড়বে, এটাও সম্ভব না হলে জীবনে একবার হলেও এ নামায আদায় করবে। (আবু দাউদ হা: ১২৯৯)
সালাতুত তাসবীহ আদায় করার নিয়ম :
চার রাকাত নামায পড়তে হবে, প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতেহার পর একটি সূরা মিলাতে হবে, প্রথম রাকাতে সানা পড়ার পর সূরা ফাতেহা পড়ার আগে নিচের তাসবীহটি ১৫ বার পড়বে :
سُبْحَانَ اللهِ ، وَالْحَمْدُ للهِ ، وَلَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ ، وَاللهُ أكْبَرُ .
‘‘সুবহা-নাল্লা-হি ওয়ালহাম্দুলিল্লা-হি ওয়ালা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াল্লা-হু আকবার’’
রুকূতে গিয়ে ১০ বার পড়বে।
রুকূ থেকে দাঁড়িয়ে ১০ বার।
সিজদায় গিয়ে ১০ বার।
সিজদা থেকে বসে ১০ বার।
দ্বিতীয় সিজদায় ১০ বার।
দ্বিতীয় সিজদা থেকে উঠে বসে ১০ বার পড়বে। এ হল মোট ৭৫ বার।
তারপর দাঁড়িয়ে পুনরায় এভাবে বাকি তিন রাকাত নামায আদায় করবে।
قَالَ أَبُوْبَكْرٍ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ يَقُوْلُ مَا مِنْ رَجُلٍ يَذْنُبُ ذَنْبًا ثُمَّ يَقُوْمُ فَيَتَطَهَّرُ ثُمَّ يُصَلِّيْ ثُمَّ يَسْتَغْفِرِ اللهَ إِلَّا غُفِرَ لَهٗ
আবু বকর (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল ﷺ কে বলতে শুনেছি, ‘‘কোন বান্দা যদি কোন গুনাহের কাজ করে সাথে সাথে ওযূ করে দুই রাকাত নামায আদায় করে, অতঃপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তাকে অবশ্যই ক্ষমা করে দেবেন।’’ এরপর তিনি নিচের আয়াতটি পাঠ করলেন।
وَالَّذِيْنَ إِذَا فَعَلُوْا فَاحِشَةً أَوْ ظَلَمُوْا أَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللهَ فَاسْتَغْفَرُوْا لِذُنُوْبِهِمْ وَمَنْ يَّغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلَّا اللهُ وَلَمْ يُصِرُّوْا عَلٰى مَا فَعَلُوْا وَهُمْ يَعْلَمُوْنَ
‘‘যখন কেউ অশ্লীল কাজ করে কিংবা নিজের উপর অত্যাচার করে, তারপর আল্লাহকে স্মরণ করে অপরাধসমূহের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করে; আর আল্লাহ ব্যতীত কে অপরাধসমূহ ক্ষমা করতে পারে? এবং তারা যা করেছে, তার উপর জেনে-শুনে অটল থাকে না।’’ (সূরা আলে ইমরান- ১৩৫, তিরমিযী হা: ৩০০৬)
আবু বকর (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল ﷺ কে বলতে শুনেছি, ‘‘কোন বান্দা যদি কোন গুনাহের কাজ করে সাথে সাথে ওযূ করে দুই রাকাত নামায আদায় করে, অতঃপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তাকে অবশ্যই ক্ষমা করে দেবেন।’’ এরপর তিনি নিচের আয়াতটি পাঠ করলেন।
وَالَّذِيْنَ إِذَا فَعَلُوْا فَاحِشَةً أَوْ ظَلَمُوْا أَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللهَ فَاسْتَغْفَرُوْا لِذُنُوْبِهِمْ وَمَنْ يَّغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلَّا اللهُ وَلَمْ يُصِرُّوْا عَلٰى مَا فَعَلُوْا وَهُمْ يَعْلَمُوْنَ
‘‘যখন কেউ অশ্লীল কাজ করে কিংবা নিজের উপর অত্যাচার করে, তারপর আল্লাহকে স্মরণ করে অপরাধসমূহের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করে; আর আল্লাহ ব্যতীত কে অপরাধসমূহ ক্ষমা করতে পারে? এবং তারা যা করেছে, তার উপর জেনে-শুনে অটল থাকে না।’’ (সূরা আলে ইমরান- ১৩৫, তিরমিযী হা: ৩০০৬)
বিপদে বা সমস্যায় নামায পড়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া মুমিনের দায়িত্ব। আল্লাহ বলেছেন, ধৈর্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রর্থনা কর। রাসূল ﷺ এর নিয়ম ছিল- কোন বিপদ, দুশ্চিন্তা বা সমস্যা দেখা দিলে তিনি নামায আদায় করতেন। এজন্য বিপদাপদে অধৈর্য না হয়ে সাধ্যমত নফল নামায আদায় করা উচিত। তাছাড়া কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রয়োজন হলে ‘সালাতুল ইস্তেখারা’ আদায় করা কর্তব্য।
ইস্তেখারা শব্দের অর্থ হল কল্যাণ কামনা করা। বান্দার জ্ঞান সীমিত, কোন্ বিষয়ে কল্যাণ নিহিত আছে বান্দা তা আগাম জানে না, তাই কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ আরম্ভ করার পূর্বে বা এ বিষয়ে চুড়ান্ত সিন্ধান্ত নেয়ার আগে আল্লাহর পক্ষ থেকে এর সিন্ধান্ত কামনা করাকে ইস্তেখারা বলে।
ইস্তেখারার নিয়ম :
প্রথমে সুন্দরভাবে নিয়মানুযীয় ওযূ করবে। তারপর স্বাভাবিক নিয়মে ইস্তেখারার নিয়তে ২ দু’রাকাত নামায পড়বে।
এ নামাযের বিশেষ কোন সূরা বা কিরাত নেই। ফিকহের কিতাবে ১ম রাকাতে সূরা কাফিরুন এবং ২য় রাকাতে সূরা ইখলাস পড়ার কথা উল্লেখ আছে।
কেবল নিষিদ্ধ সময় (সূর্যদয়, সূর্যাস্ত, ঠিক দুপুর) ছাড়া যে কোন সময়ে এ নামায পড়া যাবে। তবে নিষিদ্ধ সময় পার হওয়ার অপেক্ষায় থাকলে যদি ইস্তেখারার বিষয়ের সময় চলে যায়, তবে নিষিদ্ধ সময়েও ইস্তেখারার নামায পড়া যাবে। নামাযের সালাম ফিরানোর পর একাগ্রচিত্তে ইস্তেখারার দো‘আটি অর্থ বুঝে পড়বে।
দো‘আ পড়ার পর যে বিষয়ে ইস্তেখারা করছে সে বিষয়ে ভাবতে থাকবে, যে দিকে মন সায় দেয় সেটাই সিন্ধান্ত নেবে, আর যদি মন কোন দিকে সায় না দেয় তবে বার বার এভাবে ইস্তেখারা করতে থাকবে।
ইস্তেখারা করার পর এ বিষয়টি নিয়ে হিতাকাঙ্ক্ষী, জ্ঞানী-গুণী লোকদের সাথে পরার্মশ করবে, তারপর অধিকাংশের মতামত অনুযায়ী চুড়ান্ত সিন্ধান্ত নেবে।
জাবির (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ আমাদেরকে যেভাবে কুরআনের সূরা শিক্ষা দিতেন সেভাবে সকল কাজে ইস্তিখারা করার নিয়ম ও দো‘আ শিক্ষা দিতেন। তিনি বলতেন, ‘‘যখন তোমাদের কেউ কোন কাজ করতে ইচ্ছা করবে তখন সে যেন দু’রাকাত নামায আদায় করে এবং নিচের দো‘আ পড়ে।’’
ইস্তেখারা দো‘আ :
اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْتَخِيْرُكَ بِعِلْمِكَ وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ الْعَظِيْمِ فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلَا أَقْدِرُ وَتَعْلَمُ وَلَا أَعْلَمُ وَأَنْتَ عَلَّامُ الْغُيُوْبِ - اَللّٰهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هٰذَا الْاَمْرَ خَيْرٌ لِّيْ فِيْ دِيْنِيْ وَمَعَاشِيْ وَعَاقِبَةِ أَمْرِيْ فَاقْدُرْهُ لِيْ وَيَسِّرْهُ لِىْ ثُمَّ بَارِكْ لِيْ فِيْهِ اَللّٰهُمَّ وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هٰذَا الْاَمْرَ شَرُّ لِّيْ فِيْ دِيْنِيْ وَمَعَاشِيْ وَعَاقِبَةِ أَمْرِيْ فَاصْرِفْنِيْ عَنْهُ وَاصْرِفْهُ عَنِّيْ وَاقْدُرْ لِيَ الْخَيْرَ حَيْثُ كَانَ ثُمَّ اَرْضِنِيْ بِهٖ
আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসতাখীরুকা বি‘ইলমিকা ওয়াআসতাক্বদিরুকা বিকুদ্রাতিকা ওয়া আস্আলুকা মিন ফাযলিকাল আযীম। ফাইন্নাকা তাক্বদিরু ওয়ালা আক্বদিরু ওয়া তা‘লামু ওয়ালা আ‘লামু ওয়াআনতা আল্লা-মুল্গুয়ূব। আল্লা-হুম্মা ইনকুনতা তা‘লামু আন্না হা-যাল আমরা খাইরুল্লী ফীদ্বীনী ওয়া মা‘আ-শী ওয়া ‘আ-ক্বিবাতি আমরী ফাক্বদুরহু লী ওয়া ইয়াসসিরহু লী ছুম্মা বা-রিকলী ফীহ। আল্লা-হুম্মা ওয়া ইন কুনতা তা‘লামু আন্না হা-যাল আমরা শাররুল্লী ফীদ্বীনী ওয়ামা‘আ-শী ওয়া ‘আ-ক্বিবাতি আমরী ফাস্রিফ্নী ‘আনহু ওয়াস্রিফ্হু ‘আন্নী ওয়াক্বদুরলিয়াল খাইরা হাইছু কা-না, ছুম্মা আরযিনী বিহ।
দো‘আতে আন্না হা-যাল আমরা এর স্থলে ইস্তেখারার বিষয়ের নাম বসবে।
‘‘হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট তোমারই জ্ঞান ও কুদরতের সাহায্যে এই বিষয়ের ভাল দিক জ্ঞাত হওয়ার প্রার্থনা করছি এবং আমি তোমার নিকট অনুগ্রহ কামনা করছি। তুমি সক্ষম, আমি সক্ষম নই। তুমি জান, আমি জানি না। তুমি অদৃশ্যের খবর জান। হে আল্লাহ! তুমি যদি মনে কর এ বিষয়টি আমার দ্বীন, আমার জীবনধারণ ও পরিণামের ব্যাপারে আমার জন্য ভাল হবে, তাহলে তুমি আমার জন্য তা নির্ধারণ কর। আর যদি মনে কর বিষয়টি আমার জন্য আমার দ্বীন, আমার জীবনধারণ ও আমার পরিণামের ব্যাপারে অকল্যাণকর হবে, তাহলে তুমি আমার হতে তা ফিরিয়ে রাখ এবং আমাকেও তা হতে ফিরিয়ে রাখ। আর আমার জন্য নির্ধারণ কর কল্যাণ তা যেখানেই হোক এবং আমাকে তাতে সন্তুষ্ট রাখ।’’ (বুখারী, মেশকাত)
ইস্তেখারা শব্দের অর্থ হল কল্যাণ কামনা করা। বান্দার জ্ঞান সীমিত, কোন্ বিষয়ে কল্যাণ নিহিত আছে বান্দা তা আগাম জানে না, তাই কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ আরম্ভ করার পূর্বে বা এ বিষয়ে চুড়ান্ত সিন্ধান্ত নেয়ার আগে আল্লাহর পক্ষ থেকে এর সিন্ধান্ত কামনা করাকে ইস্তেখারা বলে।
ইস্তেখারার নিয়ম :
প্রথমে সুন্দরভাবে নিয়মানুযীয় ওযূ করবে। তারপর স্বাভাবিক নিয়মে ইস্তেখারার নিয়তে ২ দু’রাকাত নামায পড়বে।
এ নামাযের বিশেষ কোন সূরা বা কিরাত নেই। ফিকহের কিতাবে ১ম রাকাতে সূরা কাফিরুন এবং ২য় রাকাতে সূরা ইখলাস পড়ার কথা উল্লেখ আছে।
কেবল নিষিদ্ধ সময় (সূর্যদয়, সূর্যাস্ত, ঠিক দুপুর) ছাড়া যে কোন সময়ে এ নামায পড়া যাবে। তবে নিষিদ্ধ সময় পার হওয়ার অপেক্ষায় থাকলে যদি ইস্তেখারার বিষয়ের সময় চলে যায়, তবে নিষিদ্ধ সময়েও ইস্তেখারার নামায পড়া যাবে। নামাযের সালাম ফিরানোর পর একাগ্রচিত্তে ইস্তেখারার দো‘আটি অর্থ বুঝে পড়বে।
দো‘আ পড়ার পর যে বিষয়ে ইস্তেখারা করছে সে বিষয়ে ভাবতে থাকবে, যে দিকে মন সায় দেয় সেটাই সিন্ধান্ত নেবে, আর যদি মন কোন দিকে সায় না দেয় তবে বার বার এভাবে ইস্তেখারা করতে থাকবে।
ইস্তেখারা করার পর এ বিষয়টি নিয়ে হিতাকাঙ্ক্ষী, জ্ঞানী-গুণী লোকদের সাথে পরার্মশ করবে, তারপর অধিকাংশের মতামত অনুযায়ী চুড়ান্ত সিন্ধান্ত নেবে।
জাবির (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ আমাদেরকে যেভাবে কুরআনের সূরা শিক্ষা দিতেন সেভাবে সকল কাজে ইস্তিখারা করার নিয়ম ও দো‘আ শিক্ষা দিতেন। তিনি বলতেন, ‘‘যখন তোমাদের কেউ কোন কাজ করতে ইচ্ছা করবে তখন সে যেন দু’রাকাত নামায আদায় করে এবং নিচের দো‘আ পড়ে।’’
ইস্তেখারা দো‘আ :
اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْتَخِيْرُكَ بِعِلْمِكَ وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ الْعَظِيْمِ فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلَا أَقْدِرُ وَتَعْلَمُ وَلَا أَعْلَمُ وَأَنْتَ عَلَّامُ الْغُيُوْبِ - اَللّٰهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هٰذَا الْاَمْرَ خَيْرٌ لِّيْ فِيْ دِيْنِيْ وَمَعَاشِيْ وَعَاقِبَةِ أَمْرِيْ فَاقْدُرْهُ لِيْ وَيَسِّرْهُ لِىْ ثُمَّ بَارِكْ لِيْ فِيْهِ اَللّٰهُمَّ وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هٰذَا الْاَمْرَ شَرُّ لِّيْ فِيْ دِيْنِيْ وَمَعَاشِيْ وَعَاقِبَةِ أَمْرِيْ فَاصْرِفْنِيْ عَنْهُ وَاصْرِفْهُ عَنِّيْ وَاقْدُرْ لِيَ الْخَيْرَ حَيْثُ كَانَ ثُمَّ اَرْضِنِيْ بِهٖ
আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসতাখীরুকা বি‘ইলমিকা ওয়াআসতাক্বদিরুকা বিকুদ্রাতিকা ওয়া আস্আলুকা মিন ফাযলিকাল আযীম। ফাইন্নাকা তাক্বদিরু ওয়ালা আক্বদিরু ওয়া তা‘লামু ওয়ালা আ‘লামু ওয়াআনতা আল্লা-মুল্গুয়ূব। আল্লা-হুম্মা ইনকুনতা তা‘লামু আন্না হা-যাল আমরা খাইরুল্লী ফীদ্বীনী ওয়া মা‘আ-শী ওয়া ‘আ-ক্বিবাতি আমরী ফাক্বদুরহু লী ওয়া ইয়াসসিরহু লী ছুম্মা বা-রিকলী ফীহ। আল্লা-হুম্মা ওয়া ইন কুনতা তা‘লামু আন্না হা-যাল আমরা শাররুল্লী ফীদ্বীনী ওয়ামা‘আ-শী ওয়া ‘আ-ক্বিবাতি আমরী ফাস্রিফ্নী ‘আনহু ওয়াস্রিফ্হু ‘আন্নী ওয়াক্বদুরলিয়াল খাইরা হাইছু কা-না, ছুম্মা আরযিনী বিহ।
দো‘আতে আন্না হা-যাল আমরা এর স্থলে ইস্তেখারার বিষয়ের নাম বসবে।
‘‘হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট তোমারই জ্ঞান ও কুদরতের সাহায্যে এই বিষয়ের ভাল দিক জ্ঞাত হওয়ার প্রার্থনা করছি এবং আমি তোমার নিকট অনুগ্রহ কামনা করছি। তুমি সক্ষম, আমি সক্ষম নই। তুমি জান, আমি জানি না। তুমি অদৃশ্যের খবর জান। হে আল্লাহ! তুমি যদি মনে কর এ বিষয়টি আমার দ্বীন, আমার জীবনধারণ ও পরিণামের ব্যাপারে আমার জন্য ভাল হবে, তাহলে তুমি আমার জন্য তা নির্ধারণ কর। আর যদি মনে কর বিষয়টি আমার জন্য আমার দ্বীন, আমার জীবনধারণ ও আমার পরিণামের ব্যাপারে অকল্যাণকর হবে, তাহলে তুমি আমার হতে তা ফিরিয়ে রাখ এবং আমাকেও তা হতে ফিরিয়ে রাখ। আর আমার জন্য নির্ধারণ কর কল্যাণ তা যেখানেই হোক এবং আমাকে তাতে সন্তুষ্ট রাখ।’’ (বুখারী, মেশকাত)
সিয়াম বা রোযা মুমিনের জীবনে অন্যতম ইবাদাত। ফরজ রেযার পাশাপাশি বেশি বেশি নফল রোযা পালন করা রাসূল ﷺ ও সাহাবীগণের অন্যতম রীতি ছিল। তাঁরা নফল সিয়াম পালনের বিষয়ে খুবই গুরুত্ব আরোপ করতেন। তাঁরা নিয়মিত ও অনিয়মিত নফল সিয়াম পালন করতেন। রমাযান মাস ছাড়াও বছরের অন্যান্য সময়ে কিছু কিছু রোযা রাখার অভ্যাস থাকা খুবই ভাল এবং বিরাট সওয়াবের কাজ।
আবু উমামা (রাঃ) নবী ﷺকে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে কোন (ভাল) আমলের কথা বলে দিন। নবী ﷺ বললেন, ‘‘তুমি অবশ্যই রোযা রাখবে, কেননা এর সমতুল্য অন্য কিছু নেই।’’ (আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব)
রমাযান মাস ছাড়াও যে দিনগুলোতে রোযা রাখার বিশেষ ফযীলত রয়েছে হাদীসের প্রমাণসহ নিচে তা উল্লেখ করা হল :
আশুরার রোযা :
দশই মুহাররম রোযা রাখার ফযীলত সম্পর্কে রাসূল ﷺ বলেছেন,
أَفْضَلُ الصِّيَامِ بَعْدَ رَمَضَانَ شَهْرُ اللهِ الْمُحَرَّمُ
‘‘রমাযানের রোযার পর সর্বোত্তম রোযা হল মুহাররম মাসের রোযা।’’ (মুসলিম)
নবী ﷺ আরো বলেন,
صِيَامُ يَوْمِ عَاشُرَاءَ أَحْتَسِبُ عَلَى اللهِ أَنْ يَّكَفِّرَ السَّنَةَ اللَّتِىْ قَبْلَهٗ
‘‘আমি আল্লাহর নিকট আশা রাখি যে, আশুরার রোযা বিগত এক বছরের গুনাহের কাফফারা হয়ে যাবে।’’ (আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব)
আশুরার রোযা আগে বা পরে একদিন মিলিয়ে মোট দু’টি রাখা উত্তম।
শাওয়াল মাসের ছয়টি রোযা :
আবু আইয়ূব (রাঃ) এর বর্ণিত হাদীসে রাসূল ﷺ বলেন,
مَنْ صَامَ رَمَضَانَ ثُمَّ أَتْبَعَهٗ سِتًّا مِّنْ شَوَّالٍ كَانَ كَصِيَامِ الدَّهْرِ
‘‘যে ব্যক্তি রমাযান মাসে রোযা রাখল এবং শাওয়াল মাসে আরো ছয়টি রোযা রাখল সে যেন সারা বছর রোযা রাখল।’’ (মুসলিম)
সকলের উচিত এ হাদীসটির উপর আমল করা। একটি নেক আমলের সওয়বের বিনিময়ে সর্বনিম্ন দশটি সওয়াব দেয়া হয়। তাই রমাযানের ত্রিশ রোযা ৩০০ দিন আর শাওয়ালের ৬টি রোযা ৬০ দিনের সমান হয়। এতে ৩৬০ দিন পূর্ণ হয়ে যায়, যা একবছরের বেশি হয়, কারণ আরবি বছর ৩৫৪ দিনে হয়ে থাকে। এ রোযাগুলো পূর্ণ মাসের যেকোন সময়ে রাখা যায়, একসাথে না রেখে ভেঙ্গে ভেঙ্গেও রাখা যায়।
প্রতি চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোযা :
এ রোযার অনেক গুরুত্ব রয়েছে। এ রোযাকে আইয়্যামে বীজের রোযা বলা হয়। রাসূল ﷺ আবু যর (রাঃ) কে বললেন-
يَا أَبَا ذَرِّ إِذَا صُمْتَ مِنَ الشَّهْرِ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ فَصُمْ ثَلَاثَ عَشَرَةَ وَأَرْبَعَ عَشَرَةَ وَخَمْسَ عَشَرَةَ
‘‘হে আবু যর! তুমি যখন প্রতি মাসে তিনদিন রোযা রাখবে তখন ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোযা রাখ।’’ (তিরমিযী)
আবু যর (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি মাসে তিনদিন রোযা রাখল সে যেন সারা বছরই রোযা রাখল। এর সত্যতাস্বরূপ তিনি আল্লাহর কিতাবের এ আয়াতটি পাঠ করেন :
مَنْ جَاءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهٗ عَشْرُ أَمْثَالِهَا
‘‘যে ব্যক্তি একটি নেক আমল করবে এর বিনিময়ে সে দশটি নেকী পাবে।’’ (সূরা আনআম- ১৬০)
‘‘একদিন দশদিনের সমান এবং তিনদিন এক মাসের সমান। এভাবে প্রতি মাসে তিনটি রোযা রাখলে পূর্ণ বছর রোযা রাখার সওয়াব পাওয়া যায়।’’
(ইবনে মাজাহ)
আরাফার দিনের রোযা :
আরাফার দিন তথা যিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখের রোযার গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহ তা‘আলা আরাফার দিন মানুষকে জাহান্নাম থেকে সবচেয়ে বেশি মুক্তি দেন এবং ফেরেশতাগণের সামনে গৌরব করে বলেন, আরাফার মাঠে এসকল মানুষ কী চায়? অর্থাৎ যা চায় তাই দান করা হবে।
এ সম্পর্কে নবী ﷺ বলেন-
صِيَامُ يَوْمِ عَرَفَةَ إِنِّيْ أَحْتَسِبُ عَلَى اللهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِيْ قَبْلَهٗ وَالسَّنَةَ الَّتِيْ بَعْدَهٗ
‘‘আমি ধারণা করি যে, আরাফার দিনের রোযা গত বছর ও আগামী এক বছরের গুনাহের কাফফারা হয়ে যায়।’’ (মুসলিম হা: ২৮০৩)
প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবারের রোযা :
আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ সোমবার ও বৃহস্পতিবারের রোযাকে খুবই গুরুত্ব দিতেন। তিনি বলতেন-
تُعْرَضُ الْاَعْمَالُ يَوْمَ الْإِثْنَيْنِ وَالْخَمِيْسِ فَأُحِبُّ أَنْ يُّعْرَضَ عَمَلِيْ وَأَنَا صَائِمٌ
‘‘সোমবার ও বৃহস্পতিবার মানুষের আমলসমূহ আল্লাহর নিকট পেশ করা হয়। তাই আমি এটা পছন্দ করি যে, রোযা অবস্থায় আমার আমল আল্লাহর কাছে পেশ করা হোক।’’ (তিরমিযী)
আবু উমামা (রাঃ) নবী ﷺকে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে কোন (ভাল) আমলের কথা বলে দিন। নবী ﷺ বললেন, ‘‘তুমি অবশ্যই রোযা রাখবে, কেননা এর সমতুল্য অন্য কিছু নেই।’’ (আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব)
রমাযান মাস ছাড়াও যে দিনগুলোতে রোযা রাখার বিশেষ ফযীলত রয়েছে হাদীসের প্রমাণসহ নিচে তা উল্লেখ করা হল :
আশুরার রোযা :
দশই মুহাররম রোযা রাখার ফযীলত সম্পর্কে রাসূল ﷺ বলেছেন,
أَفْضَلُ الصِّيَامِ بَعْدَ رَمَضَانَ شَهْرُ اللهِ الْمُحَرَّمُ
‘‘রমাযানের রোযার পর সর্বোত্তম রোযা হল মুহাররম মাসের রোযা।’’ (মুসলিম)
নবী ﷺ আরো বলেন,
صِيَامُ يَوْمِ عَاشُرَاءَ أَحْتَسِبُ عَلَى اللهِ أَنْ يَّكَفِّرَ السَّنَةَ اللَّتِىْ قَبْلَهٗ
‘‘আমি আল্লাহর নিকট আশা রাখি যে, আশুরার রোযা বিগত এক বছরের গুনাহের কাফফারা হয়ে যাবে।’’ (আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব)
আশুরার রোযা আগে বা পরে একদিন মিলিয়ে মোট দু’টি রাখা উত্তম।
শাওয়াল মাসের ছয়টি রোযা :
আবু আইয়ূব (রাঃ) এর বর্ণিত হাদীসে রাসূল ﷺ বলেন,
مَنْ صَامَ رَمَضَانَ ثُمَّ أَتْبَعَهٗ سِتًّا مِّنْ شَوَّالٍ كَانَ كَصِيَامِ الدَّهْرِ
‘‘যে ব্যক্তি রমাযান মাসে রোযা রাখল এবং শাওয়াল মাসে আরো ছয়টি রোযা রাখল সে যেন সারা বছর রোযা রাখল।’’ (মুসলিম)
সকলের উচিত এ হাদীসটির উপর আমল করা। একটি নেক আমলের সওয়বের বিনিময়ে সর্বনিম্ন দশটি সওয়াব দেয়া হয়। তাই রমাযানের ত্রিশ রোযা ৩০০ দিন আর শাওয়ালের ৬টি রোযা ৬০ দিনের সমান হয়। এতে ৩৬০ দিন পূর্ণ হয়ে যায়, যা একবছরের বেশি হয়, কারণ আরবি বছর ৩৫৪ দিনে হয়ে থাকে। এ রোযাগুলো পূর্ণ মাসের যেকোন সময়ে রাখা যায়, একসাথে না রেখে ভেঙ্গে ভেঙ্গেও রাখা যায়।
প্রতি চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোযা :
এ রোযার অনেক গুরুত্ব রয়েছে। এ রোযাকে আইয়্যামে বীজের রোযা বলা হয়। রাসূল ﷺ আবু যর (রাঃ) কে বললেন-
يَا أَبَا ذَرِّ إِذَا صُمْتَ مِنَ الشَّهْرِ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ فَصُمْ ثَلَاثَ عَشَرَةَ وَأَرْبَعَ عَشَرَةَ وَخَمْسَ عَشَرَةَ
‘‘হে আবু যর! তুমি যখন প্রতি মাসে তিনদিন রোযা রাখবে তখন ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোযা রাখ।’’ (তিরমিযী)
আবু যর (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি মাসে তিনদিন রোযা রাখল সে যেন সারা বছরই রোযা রাখল। এর সত্যতাস্বরূপ তিনি আল্লাহর কিতাবের এ আয়াতটি পাঠ করেন :
مَنْ جَاءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهٗ عَشْرُ أَمْثَالِهَا
‘‘যে ব্যক্তি একটি নেক আমল করবে এর বিনিময়ে সে দশটি নেকী পাবে।’’ (সূরা আনআম- ১৬০)
‘‘একদিন দশদিনের সমান এবং তিনদিন এক মাসের সমান। এভাবে প্রতি মাসে তিনটি রোযা রাখলে পূর্ণ বছর রোযা রাখার সওয়াব পাওয়া যায়।’’
(ইবনে মাজাহ)
আরাফার দিনের রোযা :
আরাফার দিন তথা যিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখের রোযার গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহ তা‘আলা আরাফার দিন মানুষকে জাহান্নাম থেকে সবচেয়ে বেশি মুক্তি দেন এবং ফেরেশতাগণের সামনে গৌরব করে বলেন, আরাফার মাঠে এসকল মানুষ কী চায়? অর্থাৎ যা চায় তাই দান করা হবে।
এ সম্পর্কে নবী ﷺ বলেন-
صِيَامُ يَوْمِ عَرَفَةَ إِنِّيْ أَحْتَسِبُ عَلَى اللهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِيْ قَبْلَهٗ وَالسَّنَةَ الَّتِيْ بَعْدَهٗ
‘‘আমি ধারণা করি যে, আরাফার দিনের রোযা গত বছর ও আগামী এক বছরের গুনাহের কাফফারা হয়ে যায়।’’ (মুসলিম হা: ২৮০৩)
প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবারের রোযা :
আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ সোমবার ও বৃহস্পতিবারের রোযাকে খুবই গুরুত্ব দিতেন। তিনি বলতেন-
تُعْرَضُ الْاَعْمَالُ يَوْمَ الْإِثْنَيْنِ وَالْخَمِيْسِ فَأُحِبُّ أَنْ يُّعْرَضَ عَمَلِيْ وَأَنَا صَائِمٌ
‘‘সোমবার ও বৃহস্পতিবার মানুষের আমলসমূহ আল্লাহর নিকট পেশ করা হয়। তাই আমি এটা পছন্দ করি যে, রোযা অবস্থায় আমার আমল আল্লাহর কাছে পেশ করা হোক।’’ (তিরমিযী)
সকল মুসলিমের জন্য প্রয়োজনীয় ইলম অর্জন করা ফরজ এবং এটি একটি পৃথক ইবাদাত। নিজের ঈমান ও আমল বিশুদ্ধ করার জন্য মত ইলম অর্জন করা একান্ত আবশ্যক। এরপর ইলম অর্জন করা নফল ইবাদাত হিসেবে সর্বোত্তম ইবাদাত। অন্যান্য নেক আমল বেশি করার চেয়ে বেশি বেশি ইলম অর্জন করার সওয়াব বেশি। রাসূল ﷺ বলেন, ইবাদাতের মর্যাদার চেয়ে ইলমের মর্যাদা অধিকতর বেশি। (হাকিম আল-মুসতাদরাক ১/১৭১)
ইলমের মর্যাদার বিষয়ে কুরআন ও হাদীসে অনেক নির্দেশনা রয়েছে। অনেকে হয়ত মনে করেন যে, এ মহান মর্যাদা শুধুমাত্র যারা মাদরাসায় পড়েন অথবা যারা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ইলম শিক্ষা করেন তাদের জন্যই; তবে প্রকৃত বিষয় তা নয়। যেকোন বয়সের যেকোন মুমিন ওয়াজ-মাহফিলে, মসজিদে, শুক্রবারে খুতবার আলোচনায়, আলেমের নিকট প্রশ্ন করার মাধ্যমে, বই পড়ে বা অন্য যে কোন মাধ্যমে ইলম শিক্ষা করলেই এ মর্যাদা ও সওয়াব লাভ করবে।
রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘দুনিয়া অভিশপ্ত এবং এর মধ্যে যা কিছু আছে সবকিছুই অভিশপ্ত। তবে আল্লাহর যিকির ও যিকির সংশ্লিষ্ট যা কিছু আছে তা এবং আলিম ও ইলম অর্জনেরত ব্যক্তি ছাড়া।’’ (তিরমিযী- ৪/৫৬১;)
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি নিজে কুরআন শিক্ষা করে এবং অন্যকে শিক্ষা দেয় সে-ই সর্বর্র্শ্রেষ্ঠ।’’ (বুখারী)
ফরজ ইবাদাতের পর কুরআন চর্চা করা সর্বোত্তম ইবাদাত।
ইলমের মর্যাদার বিষয়ে কুরআন ও হাদীসে অনেক নির্দেশনা রয়েছে। অনেকে হয়ত মনে করেন যে, এ মহান মর্যাদা শুধুমাত্র যারা মাদরাসায় পড়েন অথবা যারা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ইলম শিক্ষা করেন তাদের জন্যই; তবে প্রকৃত বিষয় তা নয়। যেকোন বয়সের যেকোন মুমিন ওয়াজ-মাহফিলে, মসজিদে, শুক্রবারে খুতবার আলোচনায়, আলেমের নিকট প্রশ্ন করার মাধ্যমে, বই পড়ে বা অন্য যে কোন মাধ্যমে ইলম শিক্ষা করলেই এ মর্যাদা ও সওয়াব লাভ করবে।
রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘দুনিয়া অভিশপ্ত এবং এর মধ্যে যা কিছু আছে সবকিছুই অভিশপ্ত। তবে আল্লাহর যিকির ও যিকির সংশ্লিষ্ট যা কিছু আছে তা এবং আলিম ও ইলম অর্জনেরত ব্যক্তি ছাড়া।’’ (তিরমিযী- ৪/৫৬১;)
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি নিজে কুরআন শিক্ষা করে এবং অন্যকে শিক্ষা দেয় সে-ই সর্বর্র্শ্রেষ্ঠ।’’ (বুখারী)
ফরজ ইবাদাতের পর কুরআন চর্চা করা সর্বোত্তম ইবাদাত।
নিজের জীবনে ইসলাম প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি নিজের আশপাশে অবস্থানরত মানুষদের জীবনেও আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা মুমিনের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। এজন্য ‘আল-আমরু বিল মারূফ, ওয়ান নাহইউ আনিল মুনকার’ অর্থাৎ ‘সৎ কাজের নির্দেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করা’ প্রত্যেক মুমিনের কর্তব্য। ইকামতে দ্বীন বা দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা বা ‘আদ-দাওয়াতু ইলাললাহ’ অর্থাৎ আল্লাহর দিকে আহবান করা; এ দায়িত্ব কখনো ফরজ আবার কখনো নফল। তবে এর ফযীলত ও সওয়াব অপরিসীম। কুরআন-হাদীসে বার বার এ দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং এর গুরুত্ব বর্ণনা করা হয়েছে।
মুমিন বান্দা প্রতিদিন কিছু মানুষকে ভাল কাজের দিকে আহবান করার জন্য নিয়মিত রুটিন করে নেবে। এছাড়া সুযোগ পেলেই মানুষকে নম্রতা ও বিনয়ের সাথে ভাল কাজের প্রতি উৎসাহ দেবে এবং খারাপ কাজ থেকে নিষেধ করবে।
রাসূল ﷺ বলেন, ‘‘তোমাদের মধ্যে কেউ যখন কোন অন্যায় কাজ হতে দেখে তখন সে যেন স্বহস্তে তা প্রতিহত করে। যদি সে এতে সক্ষম না হয় তবে সে যেন মুখ দ্বারা যেন তার প্রতিবাদ করে। আর যদি সে এটাও না করতে পারে, তবে সে যেন অন্তর দিয়ে তা ঘৃণা করে। আর এটাই হল ইমানের দুর্বলতম স্তর।’’ (মুসলিম, মেশকাত হা: ৫১৩৭)
নবী ﷺ আরো বলেছেন-
بَلِّغُوْا عَنِّىْ وَلَوْ اٰيَةً
‘‘আমার পক্ষ থেকে একটি বাণী হলেও তা অন্যের নিকট পৌঁছে দাও।’’ (বুখারী, মেশকাত, পৃ: ৩২)
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন-
وَلْتَكُنْ مِّنْكُمْ أُمَّةٌ يَّدْعُوْنَ إِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَأُوْلٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ
‘‘তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকা আবশ্যক যারা মানুষকে কল্যাণের দিকে ডাকবে এবং সৎকাজের আদেশ দেবে ও খারাপ কাজ থেকে নিষেধ করবে। যারা এ কাজ করবে তারা-ই সাফলকাম হবে।’’ (সূরা আলে ইমরান- ১০৪)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِّمَّنْ دَعَا إِلَى اللهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِيْ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ
‘‘ঐ ব্যক্তির কথার চেয়ে উত্তম কথা আর কার হতে পারে? যে আল্লাহর দিকে মানুষকে দাওয়াত দেয় এবং নিজেও নেক আমল করে। আর সে বলে, আমি মুসলমানদের মধ্যে একজন।’’ (সূরা হামীম সিজদা- ৩৩)
পরকালে মুক্তির জন্য কেবল নিজের কর্ম সংশোধিত হওয়াই যথেষ্ট নয়। অপরের কল্যাণের চিন্তা করাও জরুরি। পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের কুকর্ম থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে রাখা নিজের মুক্তির পথ বন্ধ করার নামান্তর। যদিও নিজে পুরোপুরি সৎকর্মপরায়ণ হয়। এ কারণেই কুরআন ও হাদীসে প্রত্যেক মুসলমানের প্রতি সাধ্যমত সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ করাটা ফরজ করে দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সাধারণ মুসলমান এমনকি অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি পর্যন্তও উদাসীন। তারা নিজেদের আমলকেই যথেষ্ট মনে করে বসে আছে; সন্তান-সন্ততি কী করছে, সেদিকে তাদের ভ্রুক্ষেপও নেই। (তাফসীরে মা‘রেফুল কুরআন- ১৪৭৫ পৃঃ)
অতএব ঈমানদার ব্যক্তিবর্গ ও নায়েবে রাসূলদের উপর অবশ্য কর্তব্য হচ্ছে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ কাজে আত্মনিয়োগ করা এবং পরস্পর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আল্লাহর বার্তা তাঁর বান্দাদের নিকট পৌঁছে দেয়া।
মুমিন বান্দা প্রতিদিন কিছু মানুষকে ভাল কাজের দিকে আহবান করার জন্য নিয়মিত রুটিন করে নেবে। এছাড়া সুযোগ পেলেই মানুষকে নম্রতা ও বিনয়ের সাথে ভাল কাজের প্রতি উৎসাহ দেবে এবং খারাপ কাজ থেকে নিষেধ করবে।
রাসূল ﷺ বলেন, ‘‘তোমাদের মধ্যে কেউ যখন কোন অন্যায় কাজ হতে দেখে তখন সে যেন স্বহস্তে তা প্রতিহত করে। যদি সে এতে সক্ষম না হয় তবে সে যেন মুখ দ্বারা যেন তার প্রতিবাদ করে। আর যদি সে এটাও না করতে পারে, তবে সে যেন অন্তর দিয়ে তা ঘৃণা করে। আর এটাই হল ইমানের দুর্বলতম স্তর।’’ (মুসলিম, মেশকাত হা: ৫১৩৭)
নবী ﷺ আরো বলেছেন-
بَلِّغُوْا عَنِّىْ وَلَوْ اٰيَةً
‘‘আমার পক্ষ থেকে একটি বাণী হলেও তা অন্যের নিকট পৌঁছে দাও।’’ (বুখারী, মেশকাত, পৃ: ৩২)
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন-
وَلْتَكُنْ مِّنْكُمْ أُمَّةٌ يَّدْعُوْنَ إِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَأُوْلٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ
‘‘তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকা আবশ্যক যারা মানুষকে কল্যাণের দিকে ডাকবে এবং সৎকাজের আদেশ দেবে ও খারাপ কাজ থেকে নিষেধ করবে। যারা এ কাজ করবে তারা-ই সাফলকাম হবে।’’ (সূরা আলে ইমরান- ১০৪)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِّمَّنْ دَعَا إِلَى اللهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِيْ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ
‘‘ঐ ব্যক্তির কথার চেয়ে উত্তম কথা আর কার হতে পারে? যে আল্লাহর দিকে মানুষকে দাওয়াত দেয় এবং নিজেও নেক আমল করে। আর সে বলে, আমি মুসলমানদের মধ্যে একজন।’’ (সূরা হামীম সিজদা- ৩৩)
পরকালে মুক্তির জন্য কেবল নিজের কর্ম সংশোধিত হওয়াই যথেষ্ট নয়। অপরের কল্যাণের চিন্তা করাও জরুরি। পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের কুকর্ম থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে রাখা নিজের মুক্তির পথ বন্ধ করার নামান্তর। যদিও নিজে পুরোপুরি সৎকর্মপরায়ণ হয়। এ কারণেই কুরআন ও হাদীসে প্রত্যেক মুসলমানের প্রতি সাধ্যমত সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ করাটা ফরজ করে দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সাধারণ মুসলমান এমনকি অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি পর্যন্তও উদাসীন। তারা নিজেদের আমলকেই যথেষ্ট মনে করে বসে আছে; সন্তান-সন্ততি কী করছে, সেদিকে তাদের ভ্রুক্ষেপও নেই। (তাফসীরে মা‘রেফুল কুরআন- ১৪৭৫ পৃঃ)
অতএব ঈমানদার ব্যক্তিবর্গ ও নায়েবে রাসূলদের উপর অবশ্য কর্তব্য হচ্ছে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ কাজে আত্মনিয়োগ করা এবং পরস্পর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আল্লাহর বার্তা তাঁর বান্দাদের নিকট পৌঁছে দেয়া।
আল্লাহর রহমত, বরকত ও সওয়াব অর্জনের সবচেয়ে সহজ ও সংক্ষিপ্ত উপায় হল তাঁর সৃষ্টির প্রতি বিশেষ করে মানুষের প্রতি কল্যাণ ও উপকারের হাত বাড়িয়ে দেয়া। সকল জাগতিক প্রয়োজনে সাহায্য করা সমাজের মানুষের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা, অসুস্থকে দেখতে যাওয়া ও সেবা করা, বিপদে পড়লে উদ্ধার করা, মাযলূম হলে সাহায্য করা, মৃত্যুবরণ করলে জানাযায় শরীক হওয়া ইত্যাদি সকল প্রকার মানব সেবামূলক কাজ করা এবং তার বিনিময়ে অকল্পনীয় সওয়াব ও মর্যাদার কথা হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।
যতক্ষণ পর্যন্ত একজন মানুষ অন্য কোন মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা তার কল্যাণে নিয়োজিত থাকবেন। আল্লাহ তা‘আলার নিকট সবচেয়ে প্রিয় নেক আমল হচ্ছে- কোন মুসলিমের হৃদয়ে আনন্দ প্রবেশ করানো, বিপদাপদে তাকে সাহায্য করা, তার কষ্ট ও উৎকণ্ঠা দূর করা, ঋণ আদায়ে তাকে সহযোগিতা করা ও তার ক্ষুধা নিবারণ করা। কেউ যদি তার ভাইয়ের অভাব মোচনের চেষ্টা করে সফল না হয় তবুও আল্লাহ তাকে সে কাজের সওয়াব দেবেন। পথের কাঁটা সরিয়ে দেয়াও ঈমানের অংশ। আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি যে দয়াশীল হয়, আল্লাহ তার প্রতি দয়ার হাত বাড়ান। মানুষের সেবা করলে আল্লাহরই সেবা করা হয়।
যতক্ষণ পর্যন্ত একজন মানুষ অন্য কোন মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা তার কল্যাণে নিয়োজিত থাকবেন। আল্লাহ তা‘আলার নিকট সবচেয়ে প্রিয় নেক আমল হচ্ছে- কোন মুসলিমের হৃদয়ে আনন্দ প্রবেশ করানো, বিপদাপদে তাকে সাহায্য করা, তার কষ্ট ও উৎকণ্ঠা দূর করা, ঋণ আদায়ে তাকে সহযোগিতা করা ও তার ক্ষুধা নিবারণ করা। কেউ যদি তার ভাইয়ের অভাব মোচনের চেষ্টা করে সফল না হয় তবুও আল্লাহ তাকে সে কাজের সওয়াব দেবেন। পথের কাঁটা সরিয়ে দেয়াও ঈমানের অংশ। আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি যে দয়াশীল হয়, আল্লাহ তার প্রতি দয়ার হাত বাড়ান। মানুষের সেবা করলে আল্লাহরই সেবা করা হয়।
মুমিন বান্দা সর্বদা পিতা-মাতার সাথে শ্রদ্ধার সাথে নম্রভাবে কথা বলবে। ইসলাম বিরোধী না হলে তাদের যেকোনো নির্দের্র্র্র্শ পালন করবে। তাদের ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা করবে, খেদমত করবে, ঋণ থাকলে তা পরিশোধ করে দেবে, তাদের বৈধ অসিয়ত পালন করবে; এমনকি তাদের বন্ধু-বান্ধবদের সাথেও সদ্ব্যবহার করবে। সবসময় তাদের জন্য দো‘আ করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
وَقَضٰى رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوْا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِنْدَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُلْ لَّهُمَا أُفٍّ وَّلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُلْ لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيْمًا- وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ - وَقُلْ رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِيْ صَغِيْرًا
‘‘তোমার রব নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা কেবল তাঁরই ইবাদাত করবে এবং তোমাদের পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করবে। যদি তাদের মধ্যে একজন অথবা উভয়েই তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয় তবে তুমি তাদের ক্ষেত্রে ‘উহ্’ শব্দটি পর্যন্ত বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না; বরং তাদের সাথে নম্রভাবে সম্মানসূচক কথা বল। মমতাবশে তাদের প্রতি বিনয়ী হও। আর এরূপ দো‘আ করতে থাক - رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِيْ صَغِيْرًا (রবিবর হামহুমা কামা রববায়া-নী সগীরা)।
অর্থ : ‘‘হে আমার রব! আমার পিতা-মাতা উভয়ের প্রতি দয়া করুন, যেভাবে তারা আমাকে শৈশবে লালনপালন করেছেন।’’ (সূরা বানী ইসরাঈল- ২৩, ২৪)
وَقَضٰى رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوْا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِنْدَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُلْ لَّهُمَا أُفٍّ وَّلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُلْ لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيْمًا- وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ - وَقُلْ رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِيْ صَغِيْرًا
‘‘তোমার রব নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা কেবল তাঁরই ইবাদাত করবে এবং তোমাদের পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করবে। যদি তাদের মধ্যে একজন অথবা উভয়েই তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয় তবে তুমি তাদের ক্ষেত্রে ‘উহ্’ শব্দটি পর্যন্ত বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না; বরং তাদের সাথে নম্রভাবে সম্মানসূচক কথা বল। মমতাবশে তাদের প্রতি বিনয়ী হও। আর এরূপ দো‘আ করতে থাক - رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِيْ صَغِيْرًا (রবিবর হামহুমা কামা রববায়া-নী সগীরা)।
অর্থ : ‘‘হে আমার রব! আমার পিতা-মাতা উভয়ের প্রতি দয়া করুন, যেভাবে তারা আমাকে শৈশবে লালনপালন করেছেন।’’ (সূরা বানী ইসরাঈল- ২৩, ২৪)
মহান আল্লাহর কাছে মনোনীত একমাত্র জীবনব্যবস্থা হচ্ছে ইসলাম। ইসলাম হচ্ছে শান্তি, নিরাপত্তা ও শৃংখলার ধর্ম।
ইসলাম এমন এক জীবনব্যবস্থা যার অনুসরণ করার জন্য আল্লাহ তা’আলা মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন। সর্বপ্রথম নবী আদম থেকে নিয়ে শেষ নবী মুহাম্মাদ ﷺ পর্যন্ত সকল নবীই ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন। ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সকল নবী-রাসূল পৃথিবীতে অনেক কষ্ট করেছেন, অনেক নির্যাতিত হয়েছেন, নিজেদের রক্তও ঝরিয়েছেন। এসবের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি ইসলাম। পৃথিবীতে মানুষ বিভিন্ন ধর্ম পালন করে থাকে; কিন্তু ইসলাম ছেড়ে সে যে ধর্মেরই অনুসরণ করুক না কেন তাতে কোন লাভ হবে না। কেননা ইসলামই হল একমাত্র পূর্ণাঙ্গ ও প্রকৃত জীবনবিধান। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
اَلْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِيْ وَرَضِيْتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِيْنًا
‘‘আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ পরিপূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন হিসেবে মনোনীত করে তোমাদের উপর সন্তুষ্ট হলাম।’’ (সূরা মায়েদা- ৩)
ইসলাম গ্রহণ না করা পর্যন্ত কারো কোন নেক আমলই আল্লাহর কাছে কবুল হবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
وَمَنْ يَّبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِيْنًا فَلَنْ يُّقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِيْنَ
‘‘আর যে ব্যক্তি ইসলামকে বাদ দিয়ে অন্য কোন জীবনব্যবস্থা তালাশ করবে তার কাছ থেকে কিছুই কবুল করা হবে না এবং সে আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’’ (সূরা আলে ইমরান- ৮৫)
মহান আল্লাহ বলেন-
وَمَا مَنَعَهُمْ أَنْ تُقْبَلَ مِنْهُمْ نَفَقَاتُهُمْ إِلَّا أَنَّهُمْ كَفَرُوْا بِاللهِ وَبِرَسُوْلِهِ
‘‘তাদের দান গ্রহণে বাধা কেবল এই ছিল যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অস্বীকার করত।’’ (সূরা তওবা- ৫৪)
যদি অমুসলিমের দানের মত জিনিসও কবুল না হয়, তাহলে অন্যান্য ইবাদাত কীভাবে কবুল হবে?
ইসলাম এমন এক জীবনব্যবস্থা যার অনুসরণ করার জন্য আল্লাহ তা’আলা মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন। সর্বপ্রথম নবী আদম থেকে নিয়ে শেষ নবী মুহাম্মাদ ﷺ পর্যন্ত সকল নবীই ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন। ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সকল নবী-রাসূল পৃথিবীতে অনেক কষ্ট করেছেন, অনেক নির্যাতিত হয়েছেন, নিজেদের রক্তও ঝরিয়েছেন। এসবের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি ইসলাম। পৃথিবীতে মানুষ বিভিন্ন ধর্ম পালন করে থাকে; কিন্তু ইসলাম ছেড়ে সে যে ধর্মেরই অনুসরণ করুক না কেন তাতে কোন লাভ হবে না। কেননা ইসলামই হল একমাত্র পূর্ণাঙ্গ ও প্রকৃত জীবনবিধান। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
اَلْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِيْ وَرَضِيْتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِيْنًا
‘‘আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ পরিপূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন হিসেবে মনোনীত করে তোমাদের উপর সন্তুষ্ট হলাম।’’ (সূরা মায়েদা- ৩)
ইসলাম গ্রহণ না করা পর্যন্ত কারো কোন নেক আমলই আল্লাহর কাছে কবুল হবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
وَمَنْ يَّبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِيْنًا فَلَنْ يُّقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِيْنَ
‘‘আর যে ব্যক্তি ইসলামকে বাদ দিয়ে অন্য কোন জীবনব্যবস্থা তালাশ করবে তার কাছ থেকে কিছুই কবুল করা হবে না এবং সে আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’’ (সূরা আলে ইমরান- ৮৫)
মহান আল্লাহ বলেন-
وَمَا مَنَعَهُمْ أَنْ تُقْبَلَ مِنْهُمْ نَفَقَاتُهُمْ إِلَّا أَنَّهُمْ كَفَرُوْا بِاللهِ وَبِرَسُوْلِهِ
‘‘তাদের দান গ্রহণে বাধা কেবল এই ছিল যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অস্বীকার করত।’’ (সূরা তওবা- ৫৪)
যদি অমুসলিমের দানের মত জিনিসও কবুল না হয়, তাহলে অন্যান্য ইবাদাত কীভাবে কবুল হবে?
কোন ব্যক্তি মুসলিম হওয়ার পরও তার কোন আমল কবুল হবে না যদি তাতে ইখলাস না থাকে।
কোন কাজ আল্লাহর দাসত্ব হিসেবে গণ্য হতে হলে কাজটি করার সময় আল্লাহর সন্তুষ্টিকে অবশ্যই সর্বক্ষণ সামনে রাখতে হবে। আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন এমন কোন কাজ করলে তা অবশ্যই তাঁর দাসত্ব হিসেবে গণ্য হবে না।
মহান আল্লাহ বলেন-
قُلْ إِنَّ صَلَاتِيْ وَنُسُكِيْ وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِيْ للهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ
বল, আমার নামায, কুরবানী, জীবন ও মৃত্যু শুধুমাত্র মহাবিশ্বের রব আল্লাহর (সন্তুষ্টির) জন্য। (সূরা আনআম- ১৬২)
মহান আল্লাহ এই অতীব গুরুত্বপূর্ণ আয়াতটির মাধ্যমে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, মানুষের জীবনের সকল কিছু করতে হবে তার সন্তুষ্টিকে সামনে রেখে বা তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। অর্থাৎ তিনি অসন্তুষ্ট হন এমন কোন কাজ করলে তা ইবাদাত হিসেবে গণ্য করা হবে না।
অন্য আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন-
فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّيْنَ- - الَّذِيْنَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُوْنَ - الَّذِيْنَ هُمْ يُرَاءُوْنَ - وَيَمْنَعُوْنَ الْمَاعُوْنَ
‘‘ওয়াইল (নামক জাহান্নাম) সেই নামাযীদের জন্য। যারা তাদের নামাযের ব্যাপারে উদাসীন। যারা লোক দেখানোর জন্য আমল করে এবং ছোট-খাটো জিনিসও কাউকে দিতে চায় না।’’ (সূরা মাউন- ৪-৬)
অর্থাৎ যারা লোক দেখানোর জন্য নামায বা অন্যান্য আমল করে, তাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম। কারণ তারা ঐ সকল কাজ করে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য নয় বরং মানুষকে দেখানোর জন্য। তাই তাদের ঐ সকল কাজ আল্লাহর দাসত্ব হিসেবে কবুল হবে না।
উমর ইবনে খাত্তাব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, নিশ্চয় সমস্ত আমল নিয়তের উপর নির্ভরশীল। প্রত্যেক ব্যক্তি কেবলমাত্র তা-ই পায় যা সে নিয়ত করে। সুতরাং যার হিজরত হবে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের জন্য তার হিজরত আল্লাহ এবং রাসূলের জন্যই হবে। আর যার হিজরত হবে দুনিয়া অর্জনের জন্য অথবা কোন মহিলাকে বিয়ে করার জন্য, তার হিজরত সেদিকেই বর্তাবে যে উদ্দেশ্যে সে হিজরত করেছে। (বুখারী, মুসলিম)
তাই আমরা প্রত্যেকটি কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে করব। যাতে দুনিয়াতে কল্যাণ এবং আখেরাতে জান্নাতের নিয়ামত লাভ করতে পারি।
আলী (রাঃ) বলেন, তুমি যা কিছু একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কর তাই ইখলাস। আর যা কিছু অন্যের সন্তুষ্টির জন্য কর সেটাই রিয়া বা লোক দেখানো আমল।
ইব্রাহীম তাইমী (রহ:) বলতেন, ‘‘ইখলাসের আলামত হচ্ছে, অন্যায়-অপরাধ যেভাবে গোপন করে রাখা হয়, ঠিক সেভাবেই নিজের নেক আমলগুলেকে গোপন করে রাখা।’’
সুফিয়ান সাওরী (রহ:) বলতেন, ‘‘আমার যে নেক আমল জনসম্মুখে প্রকাশ হয়ে পড়ে, আমি সেটাকে আর গণনা করি না। কেননা জনসম্মুখে আমল প্রকাশ হয়ে যাওয়ার পর আমাদের মত লোকের পক্ষে ইখলাস বজায় রাখা সম্ভব হয় না।’’
কোন কাজ আল্লাহর দাসত্ব হিসেবে গণ্য হতে হলে কাজটি করার সময় আল্লাহর সন্তুষ্টিকে অবশ্যই সর্বক্ষণ সামনে রাখতে হবে। আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন এমন কোন কাজ করলে তা অবশ্যই তাঁর দাসত্ব হিসেবে গণ্য হবে না।
মহান আল্লাহ বলেন-
قُلْ إِنَّ صَلَاتِيْ وَنُسُكِيْ وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِيْ للهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ
বল, আমার নামায, কুরবানী, জীবন ও মৃত্যু শুধুমাত্র মহাবিশ্বের রব আল্লাহর (সন্তুষ্টির) জন্য। (সূরা আনআম- ১৬২)
মহান আল্লাহ এই অতীব গুরুত্বপূর্ণ আয়াতটির মাধ্যমে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, মানুষের জীবনের সকল কিছু করতে হবে তার সন্তুষ্টিকে সামনে রেখে বা তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। অর্থাৎ তিনি অসন্তুষ্ট হন এমন কোন কাজ করলে তা ইবাদাত হিসেবে গণ্য করা হবে না।
অন্য আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন-
فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّيْنَ- - الَّذِيْنَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُوْنَ - الَّذِيْنَ هُمْ يُرَاءُوْنَ - وَيَمْنَعُوْنَ الْمَاعُوْنَ
‘‘ওয়াইল (নামক জাহান্নাম) সেই নামাযীদের জন্য। যারা তাদের নামাযের ব্যাপারে উদাসীন। যারা লোক দেখানোর জন্য আমল করে এবং ছোট-খাটো জিনিসও কাউকে দিতে চায় না।’’ (সূরা মাউন- ৪-৬)
অর্থাৎ যারা লোক দেখানোর জন্য নামায বা অন্যান্য আমল করে, তাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম। কারণ তারা ঐ সকল কাজ করে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য নয় বরং মানুষকে দেখানোর জন্য। তাই তাদের ঐ সকল কাজ আল্লাহর দাসত্ব হিসেবে কবুল হবে না।
উমর ইবনে খাত্তাব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, নিশ্চয় সমস্ত আমল নিয়তের উপর নির্ভরশীল। প্রত্যেক ব্যক্তি কেবলমাত্র তা-ই পায় যা সে নিয়ত করে। সুতরাং যার হিজরত হবে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের জন্য তার হিজরত আল্লাহ এবং রাসূলের জন্যই হবে। আর যার হিজরত হবে দুনিয়া অর্জনের জন্য অথবা কোন মহিলাকে বিয়ে করার জন্য, তার হিজরত সেদিকেই বর্তাবে যে উদ্দেশ্যে সে হিজরত করেছে। (বুখারী, মুসলিম)
তাই আমরা প্রত্যেকটি কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে করব। যাতে দুনিয়াতে কল্যাণ এবং আখেরাতে জান্নাতের নিয়ামত লাভ করতে পারি।
আলী (রাঃ) বলেন, তুমি যা কিছু একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কর তাই ইখলাস। আর যা কিছু অন্যের সন্তুষ্টির জন্য কর সেটাই রিয়া বা লোক দেখানো আমল।
ইব্রাহীম তাইমী (রহ:) বলতেন, ‘‘ইখলাসের আলামত হচ্ছে, অন্যায়-অপরাধ যেভাবে গোপন করে রাখা হয়, ঠিক সেভাবেই নিজের নেক আমলগুলেকে গোপন করে রাখা।’’
সুফিয়ান সাওরী (রহ:) বলতেন, ‘‘আমার যে নেক আমল জনসম্মুখে প্রকাশ হয়ে পড়ে, আমি সেটাকে আর গণনা করি না। কেননা জনসম্মুখে আমল প্রকাশ হয়ে যাওয়ার পর আমাদের মত লোকের পক্ষে ইখলাস বজায় রাখা সম্ভব হয় না।’’
ঈমান আছে ইখলাসও আছে তবুও আমল কবুল হবে না, যদি সে আমল রাসূল ﷺ এর শেখানো পদ্ধতি অনুযায়ী না হয়। কোন আমল আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার জন্য শর্ত হল তিনি ঐ আমলের যে নিয়ম বা পদ্ধতি শিখিয়েছেন সে অনুযায়ী আমল করা।
আল্লাহ তা‘আলা যত আমল নির্ধারণ করেছেন সকল আমলের পদ্ধতি তিনি রাসূল ﷺ এর মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে আল্লাহ তা‘আলা রাসূল ﷺএর অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا أَطِيْعُوا اللهَ وَأَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ وَلَا تُبْطِلُوْا أَعْمَالَكُمْ
‘‘হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য কর। আর নিজেদের আমল নষ্ট করো না।’’ (সূরা মুহাম্মাদ- ৩৩)
হাদীসেও রাসূল ﷺ এর অনুসরণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ كُلُّ أُمَّتِيْ يَدْخُلُوْنَ الْجَنَّةَ إِلَّا مَنْ أَبٰى قَالُوْا وَمَنْ يَّأْبٰى يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ مَنْ أَطَاعَنِيْ دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ عَصَانِيْ فَقَدْ أَبٰى
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘‘আমার সকল উম্মত জান্নাতে প্রবেশ করবে তবে যে অস্বীকার করবে সে ব্যতীত। সাহাবীগণ বললেন, কে অস্বীকার করবে হে আল্লাহর রাসূল? তিনি উত্তরে বললেন, যে আমার আনুগত্য করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে আমার অবাধ্য হবে সে-ই আমাকে অস্বীকার করবে।’’ (বুখারী)
আল্লাহ তা‘আলা যত আমল নির্ধারণ করেছেন সকল আমলের পদ্ধতি তিনি রাসূল ﷺ এর মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে আল্লাহ তা‘আলা রাসূল ﷺএর অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا أَطِيْعُوا اللهَ وَأَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ وَلَا تُبْطِلُوْا أَعْمَالَكُمْ
‘‘হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য কর। আর নিজেদের আমল নষ্ট করো না।’’ (সূরা মুহাম্মাদ- ৩৩)
হাদীসেও রাসূল ﷺ এর অনুসরণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ كُلُّ أُمَّتِيْ يَدْخُلُوْنَ الْجَنَّةَ إِلَّا مَنْ أَبٰى قَالُوْا وَمَنْ يَّأْبٰى يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ مَنْ أَطَاعَنِيْ دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ عَصَانِيْ فَقَدْ أَبٰى
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘‘আমার সকল উম্মত জান্নাতে প্রবেশ করবে তবে যে অস্বীকার করবে সে ব্যতীত। সাহাবীগণ বললেন, কে অস্বীকার করবে হে আল্লাহর রাসূল? তিনি উত্তরে বললেন, যে আমার আনুগত্য করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে আমার অবাধ্য হবে সে-ই আমাকে অস্বীকার করবে।’’ (বুখারী)
যে কাজগুলোকে আল্লাহ তা‘আলা মৌলিক বলে জানিয়ে দিয়েছেন তার একটিও বাদ দিলে বা বাদ গেলে আমলে ত্রুটি রয়ে যাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
أَفَتُؤْمِنُوْنَ بِبَعْضِ الْكِتَابِ وَتَكْفُرُوْنَ بِبَعْضٍ فَمَا جَزَاءُ مَنْ يَّفْعَلُ ذٰلِكَ مِنْكُمْ إِلَّا خِزْيٌ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ يُرَدُّوْنَ إِلٰى أَشَدِّ الْعَذَابِ وَمَا اللهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ
‘‘তবে কি তোমরা গ্রন্থের (কুরআনের) কিছু অংশ বিশ্বাস কর আর কিছু অংশ অস্বীকার কর? অতএব তোমাদের মধ্যে যারা এরূপ করবে তাদের পার্থিব জীবনে দুর্গতি ব্যতীত কিছুই নেই এবং কিয়ামত দিবসে তারা কঠোর শাস্তির দিকে নিক্ষিপ্ত হবে। আর তোমরা যা করছ আল্লাহ সে বিষয়ে অমনোযোগী নন।’’ (সূরা বাকারা- ৮৫)
কেউ কোন কিছু মনেপ্রাণে বিশ্বাস করলে তা তার কর্মে অবশ্যই প্রকাশ পাবে। অর্থাৎ কোন কিছু বিশ্বাস করা এবং সে বিশ্বাস অনুযায়ী কাজ করা বিষয় দু’টি একটি অপরটির সাথে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত। তাই মহান আল্লাহ এখানে জানিয়ে দিয়েছেন যে, কুরআনের কিছু অনুসরণ করলে আর কিছু অনুসরণ না করলে মানুষের দুনিয়া ও আখেরাতের জীবন পুরোপুরি ব্যর্থ হয়ে যাবে।
জীবনের কিছু কিছু ব্যাপারে আল্লাহর কিতাবকে অনুসরণ করা আর কিছু কিছু ব্যাপারে অন্যকিছুর অনুসরণ করা, এটা কোন প্রকৃত মুমিনের কাজ হতে পারে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
لَيْسَ الْبِرَّ أَنْ تُوَلُّوْا وُجُوْهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَلَكِنَّ الْبِرَّ مَنْ آمَنَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالْكِتَابِ وَالنَّبِيِّيْنَ وَآتَى الْمَالَ عَلٰى حُبِّهٖ ذَوِي الْقُرْبٰى وَالْيَتَامٰى وَالْمَسَاكِيْنَ وَابْنَ السَّبِيْلِ وَالسَّائِلِيْنَ وَفِي الرِّقَابِ وَأَقَامَ الصَّلَاةَ وَ اٰتَى الزَّكَاةَ وَالْمُوفُوْنَ بِعَهْدِهِمْ إِذَا عَاهَدُوْا وَالصَّابِرِيْنَ فِي الْبَأْسَاءِ وَالضَّرَّاءِ وَحِيْنَ الْبَأْسِ أُولٰئِكَ الَّذِيْنَ صَدَقُوْا وَأُولٰئِكَهُمُ الْمُتَّقُوْنَ
‘‘(নামাযের সময়) তোমাদের মুখ পশ্চিম দিকে ঘুরানো বা পূর্ব দিকে ঘুরানো এটি কোন কল্যাণের বা সওয়াবের কাজ নয়। বরং পুণ্য তার যে ব্যক্তি আল্লাহ, পরকাল, ফেরেশতাগণ, কিতাব ও নবীগণের প্রতি ঈমান আনে এবং তাঁরই ভালবাসা অর্জনের জন্য আত্মীয়-স্বজন, এতীম, দরিদ্র, পথিক ও ভিক্ষুকদেরকে এবং দাসত্ব মোচনের জন্য ধন-সম্পদ দান করে। আর নামায প্রতিষ্ঠা করে ও যাকাত প্রদান করে এবং অঙ্গীকার করলে যারা সেই অঙ্গীকার পূর্ণকারী, আর যারা অভাবে ও ক্লেশে এবং যুদ্ধকালে ধৈর্যধারণকারী, তারাই সত্যপরায়ণ এবং তারাই মুত্তাকী।’’ (সূরা বাকারা- ১৭৭)
এখানে আল্লাহ তা‘আলা স্পষ্ট করে বলেছেন, কেউ যদি মনে করে নামাযের সময় পূর্ব বা পশ্চিম দিকে মুখ ফিরানো বা রুকু, সিজদা, কিয়াম, কিরাত এসব অনুষ্ঠানগুলোকেই নেকীর কাজ মনে করে তবে তার এ ধারণা সঠিক নয় বরং আয়াতে উল্লেখিত সকল আমলই তাকে সম্পাদন করতে হবে।
জাবির (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, মহান আল্লাহ তা‘আলা জিবরাঈল কে নির্দেশ দিলেন অমুক অমুক শহরকে তার অধিবাসীসহ উল্টিয়ে দাও। জিবরাঈল বললেন, হে আমার রব! তাদের মধ্যে তো এমন এক ব্যক্তি আছেন যিনি মুহূর্তের জন্যও আপনার নাফরমানি করেননি। তখন আল্লাহ বললেন, তাকেসহই শহরটি উল্টিয়ে দাও। কারণ তার সম্মুখে পাপাচার হতে দেখে মুহূর্তের জন্যও তার চেহারা মলিন হয়নি। (বায়হাকী)
হাদীসটি থেকে সহজে বুঝা যায়, লোকটি সকল ইবাদাত পালন করেছিল কিন্তু তার সামনে পাপাচার হতে দেখেও তার চেহারা মলিন হতো না, অর্থাৎ এসব খারাপ কাজ দেখে সে দুঃখ প্রকাশ করত না এবং এর প্রতিকারেরও কোন চিন্তা করত না। এজন্য তার অন্যান্য সকল আমল ব্যর্থ করে দিয়ে আল্লাহ তা‘আলা তাকে শাস্তি দিলেন।
হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ঐ সত্ত্বার কসম! যার হাতে আমার জীবন তোমরা অবশ্যই সৎ কাজের আদেশ করবে ও অসৎ কাজ হতে নিষেধ করবে, নতুবা অচিরেই আল্লাহ তোমাদের উপর শাস্তি পাঠাবেন। অতঃপর তোমরা তাঁর কাছে দো‘আ করবে কিন্তু দো‘আ কবুল করা হবে না। (তিরমিযী, আহমাদ)
أَفَتُؤْمِنُوْنَ بِبَعْضِ الْكِتَابِ وَتَكْفُرُوْنَ بِبَعْضٍ فَمَا جَزَاءُ مَنْ يَّفْعَلُ ذٰلِكَ مِنْكُمْ إِلَّا خِزْيٌ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ يُرَدُّوْنَ إِلٰى أَشَدِّ الْعَذَابِ وَمَا اللهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ
‘‘তবে কি তোমরা গ্রন্থের (কুরআনের) কিছু অংশ বিশ্বাস কর আর কিছু অংশ অস্বীকার কর? অতএব তোমাদের মধ্যে যারা এরূপ করবে তাদের পার্থিব জীবনে দুর্গতি ব্যতীত কিছুই নেই এবং কিয়ামত দিবসে তারা কঠোর শাস্তির দিকে নিক্ষিপ্ত হবে। আর তোমরা যা করছ আল্লাহ সে বিষয়ে অমনোযোগী নন।’’ (সূরা বাকারা- ৮৫)
কেউ কোন কিছু মনেপ্রাণে বিশ্বাস করলে তা তার কর্মে অবশ্যই প্রকাশ পাবে। অর্থাৎ কোন কিছু বিশ্বাস করা এবং সে বিশ্বাস অনুযায়ী কাজ করা বিষয় দু’টি একটি অপরটির সাথে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত। তাই মহান আল্লাহ এখানে জানিয়ে দিয়েছেন যে, কুরআনের কিছু অনুসরণ করলে আর কিছু অনুসরণ না করলে মানুষের দুনিয়া ও আখেরাতের জীবন পুরোপুরি ব্যর্থ হয়ে যাবে।
জীবনের কিছু কিছু ব্যাপারে আল্লাহর কিতাবকে অনুসরণ করা আর কিছু কিছু ব্যাপারে অন্যকিছুর অনুসরণ করা, এটা কোন প্রকৃত মুমিনের কাজ হতে পারে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
لَيْسَ الْبِرَّ أَنْ تُوَلُّوْا وُجُوْهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَلَكِنَّ الْبِرَّ مَنْ آمَنَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالْكِتَابِ وَالنَّبِيِّيْنَ وَآتَى الْمَالَ عَلٰى حُبِّهٖ ذَوِي الْقُرْبٰى وَالْيَتَامٰى وَالْمَسَاكِيْنَ وَابْنَ السَّبِيْلِ وَالسَّائِلِيْنَ وَفِي الرِّقَابِ وَأَقَامَ الصَّلَاةَ وَ اٰتَى الزَّكَاةَ وَالْمُوفُوْنَ بِعَهْدِهِمْ إِذَا عَاهَدُوْا وَالصَّابِرِيْنَ فِي الْبَأْسَاءِ وَالضَّرَّاءِ وَحِيْنَ الْبَأْسِ أُولٰئِكَ الَّذِيْنَ صَدَقُوْا وَأُولٰئِكَهُمُ الْمُتَّقُوْنَ
‘‘(নামাযের সময়) তোমাদের মুখ পশ্চিম দিকে ঘুরানো বা পূর্ব দিকে ঘুরানো এটি কোন কল্যাণের বা সওয়াবের কাজ নয়। বরং পুণ্য তার যে ব্যক্তি আল্লাহ, পরকাল, ফেরেশতাগণ, কিতাব ও নবীগণের প্রতি ঈমান আনে এবং তাঁরই ভালবাসা অর্জনের জন্য আত্মীয়-স্বজন, এতীম, দরিদ্র, পথিক ও ভিক্ষুকদেরকে এবং দাসত্ব মোচনের জন্য ধন-সম্পদ দান করে। আর নামায প্রতিষ্ঠা করে ও যাকাত প্রদান করে এবং অঙ্গীকার করলে যারা সেই অঙ্গীকার পূর্ণকারী, আর যারা অভাবে ও ক্লেশে এবং যুদ্ধকালে ধৈর্যধারণকারী, তারাই সত্যপরায়ণ এবং তারাই মুত্তাকী।’’ (সূরা বাকারা- ১৭৭)
এখানে আল্লাহ তা‘আলা স্পষ্ট করে বলেছেন, কেউ যদি মনে করে নামাযের সময় পূর্ব বা পশ্চিম দিকে মুখ ফিরানো বা রুকু, সিজদা, কিয়াম, কিরাত এসব অনুষ্ঠানগুলোকেই নেকীর কাজ মনে করে তবে তার এ ধারণা সঠিক নয় বরং আয়াতে উল্লেখিত সকল আমলই তাকে সম্পাদন করতে হবে।
জাবির (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, মহান আল্লাহ তা‘আলা জিবরাঈল কে নির্দেশ দিলেন অমুক অমুক শহরকে তার অধিবাসীসহ উল্টিয়ে দাও। জিবরাঈল বললেন, হে আমার রব! তাদের মধ্যে তো এমন এক ব্যক্তি আছেন যিনি মুহূর্তের জন্যও আপনার নাফরমানি করেননি। তখন আল্লাহ বললেন, তাকেসহই শহরটি উল্টিয়ে দাও। কারণ তার সম্মুখে পাপাচার হতে দেখে মুহূর্তের জন্যও তার চেহারা মলিন হয়নি। (বায়হাকী)
হাদীসটি থেকে সহজে বুঝা যায়, লোকটি সকল ইবাদাত পালন করেছিল কিন্তু তার সামনে পাপাচার হতে দেখেও তার চেহারা মলিন হতো না, অর্থাৎ এসব খারাপ কাজ দেখে সে দুঃখ প্রকাশ করত না এবং এর প্রতিকারেরও কোন চিন্তা করত না। এজন্য তার অন্যান্য সকল আমল ব্যর্থ করে দিয়ে আল্লাহ তা‘আলা তাকে শাস্তি দিলেন।
হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ঐ সত্ত্বার কসম! যার হাতে আমার জীবন তোমরা অবশ্যই সৎ কাজের আদেশ করবে ও অসৎ কাজ হতে নিষেধ করবে, নতুবা অচিরেই আল্লাহ তোমাদের উপর শাস্তি পাঠাবেন। অতঃপর তোমরা তাঁর কাছে দো‘আ করবে কিন্তু দো‘আ কবুল করা হবে না। (তিরমিযী, আহমাদ)
আমল ইবাদাত হিসেবে গণ্য হওয়ার জন্য আমলগুলো আল্লাহর বলে দেয়া গুরুত্বানুযায়ী আগে বা পরে সম্পাদন করতে হবে। আগে ফরজকে গুরুত্ব দিতে হবে। ফরজ ইবাদাত আল্লাহর আনুগত্যের সর্বোত্তম বহিঃপ্রকাশ। যার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর সর্বাধিক নিকটবর্তী হয়। রাসূল ﷺ হাদীসে কুদসীতে উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
وَمَا تَقَرَّبَ إِلَيَّ عَبْدِيْ بِشَيْءٍ أَحَبَّ إِلَيَّ مِمَّا افْتَرَضْتُ عَلَيْهِ
‘‘আমি যা ফরজ করেছি তা ছাড়া অন্য কোন আমল দ্বারা বান্দা আমার অধিক প্রিয়তর হতে পারে না।’’ (বুখারী, মেশকাত হা: ২২৬৬)
তারপর পর্যায়ক্রমে ওয়াজিব, সুন্নাত ও নফলকে গুরুত্ব দিতে হবে।
وَمَا تَقَرَّبَ إِلَيَّ عَبْدِيْ بِشَيْءٍ أَحَبَّ إِلَيَّ مِمَّا افْتَرَضْتُ عَلَيْهِ
‘‘আমি যা ফরজ করেছি তা ছাড়া অন্য কোন আমল দ্বারা বান্দা আমার অধিক প্রিয়তর হতে পারে না।’’ (বুখারী, মেশকাত হা: ২২৬৬)
তারপর পর্যায়ক্রমে ওয়াজিব, সুন্নাত ও নফলকে গুরুত্ব দিতে হবে।
কোন কাজ আল্লাহর ইবাদাত হিসেবে কবুল হতে হলে কাজটির ব্যাপারে আল্লাহর বলে দেয়া উদ্দেশ্য অবশ্যই জানতে হবে এবং কাজটি করার সময় সে উদ্দেশ্য সাধন হচ্ছে কি না তা সর্বক্ষণ খেয়াল রাখতে হবে। প্রতিটি আমলের একটি বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে। যদি সে উদ্দেশ্য সাধন না হয়, তবে ঐ কাজ আল্লাহর দাসত্ব হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে না।
নামাযের উদ্দেশ্য :
পবিত্র কুরআনে নামাযের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهٰى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ
‘‘নিশ্চয় নামায মানুষকে অশ্লীল ও গর্হিত কাজ থেকে দূরে রাখে।’’
(সূরা আনকাবূত- ৪৫)
নামায আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার লক্ষণ হল পাপ কাজ থেকে দূরে থাকা। ইমাম জাফর সাদেক (রহ.) বলেছেন, ‘‘যদি কেউ জানতে চায় যে, তার নামায আল্লাহর দরবারে কবুল হয়েছে কি না, তাহলে তার লক্ষ্য করা উচিত যে, তার নামায তাকে কতটুকু পাপ কাজ থেকে দূরে রেখেছে। যদি দেখা যায় যে, সে নামায পড়ার ফলে পাপ কাজ থেকে দূরে থাকতে সক্ষম হয়েছে, তাহলে বুঝতে হবে তার নামায আল্লাহর দরবারে কবুল হয়েছে।’’ (রুহুল মা‘আনী)
মানুষের ব্যক্তি ও সমাজ জীবন থেকে ইসলামের দৃষ্টিতে যেসব কাজ অশ্লীল ও নিষিদ্ধ তা দূর করা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান। নামাযের অনুষ্ঠান হচ্ছে ঐ উদ্দেশ্য সাধনের পাথেয়। অর্থাৎ নামাযের অনুষ্ঠানটি এমনভাবে করতে হবে, যেন তা নামাযের উদ্দেশ্য সাধনের ব্যাপারে কোন না কোনভাবে ভূমিকা রাখে। কিন্তু কেউ যদি নামাযের অনুষ্ঠানকেই নামাযের সবকিছু মনে করে, তবে নামায তার জন্য কোন কল্যাণ বয়ে আনবে না।
রোযার উদ্দেশ্য :
পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, রোযার উদ্দেশ্য হচ্ছে ‘তাকওয়া’ অর্জন করা।
আমরা অনেকেই রোযা রাখি কিন্তু রোযার উদ্দেশ্য কি আমাদের মাঝে প্রতিফলিত হয়? নবী ﷺ বলেছেন-
كَمْ مِّنْ صَائِمٍ لَيْسَ لَهٗ مِنْ صِيَامِهٖ إِلَّا الظَّمَأُ وَكَمْ مِّنْ قَائِمٍ لَيْسَ لَهٗ مِنْ قِيَامِهٖ إِلَّا السَّهَرُ
এমন অনেক রোযাদার আছে কেবল ক্ষুধা আর পিপাসা ছাড়া তাদের ভাগ্যে আর কিছু জোটে না। আবার রাত্রিতে ইবাদাতকারী অনেক রয়েছে, কিন্তু রাত্রি জাগরণের কষ্ট ছাড়া তারা আর কিছুই লাভ করতে পারে না। (দারেমী)
এ হাদীস থেকে এটা পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে যে, শুধুমাত্র উপবাস থাকলেই রোযা ফলপ্রসূ হবে না।
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন-
مَنْ لَّمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّوْرِ وَالْعَمَلَ بِهٖ فَلَيْسَ للهِ حَاجَةٌ فِيْ أَنْ يَّدَعَ طَعَامَهٗ وَشَرَابَهٗ
‘‘যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা বা মিথ্যা আচরণ ছাড়েনি, তার খাওয়া বা পান করা ছেড়ে দেয়াতে (রোযা রাখাতে) আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।’’ (বুখারী)
মিথ্যা কথা বা মিথ্যা আচরণ না ছাড়ার অর্থ হচ্ছে তাকওয়া অর্জিত না হওয়া। তাই রাসূূূল ﷺ এখানে বলেছেন, যে রোযাদার মিথ্যা কথা বা মিথ্যা আচরণ ছাড়েনি অর্থাৎ যে ব্যক্তির রোযা দ্বারা রোযার উদ্দেশ্য অর্জিত হয় না, তার রোযা তার জন্য কল্যাণকর হবে না।
কুরবানীর উদ্দেশ্য :
আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
لَنْ يَّنَالَ اللهَ لُحُومُهَا وَلَا دِمَاؤُهَا وَلٰكِنْ يَّنَالُهُ التَّقْوٰى مِنْكُمْ
‘‘এগুলোর (কুরবাণীর পশুর) গোশত ও রক্ত আল্লাহর নিকট পৌঁছায় না; বরং তোমাদের তাকওয়াই তাঁর নিকট পৌছায়।’’ (সূরা হাজ্জ- ৩৭)
আল্লাহ তা‘আলা এখানে স্পষ্ট করে বলেছেন যে, কুরবানির পশুর রক্ত ও মাংস তাঁর নিকট পৌঁছায় না বরং তাঁর নিকট পৌঁছায় কুরবানীর মাধ্যমে যে তাকওয়া অর্জিত হয় সেই তাকওয়া। এ থেকে সহজে বুঝা যায় যে, কুরবানির অনুষ্ঠান থেকে কোন সওয়াব হবে না বা কুরবানী আল্লাহর দাসত্ব হিসেবে গণ্য হবে না, যদি তা থেকে তাকওয়া অর্জিত না হয়।
নামাযের উদ্দেশ্য :
পবিত্র কুরআনে নামাযের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهٰى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ
‘‘নিশ্চয় নামায মানুষকে অশ্লীল ও গর্হিত কাজ থেকে দূরে রাখে।’’
(সূরা আনকাবূত- ৪৫)
নামায আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার লক্ষণ হল পাপ কাজ থেকে দূরে থাকা। ইমাম জাফর সাদেক (রহ.) বলেছেন, ‘‘যদি কেউ জানতে চায় যে, তার নামায আল্লাহর দরবারে কবুল হয়েছে কি না, তাহলে তার লক্ষ্য করা উচিত যে, তার নামায তাকে কতটুকু পাপ কাজ থেকে দূরে রেখেছে। যদি দেখা যায় যে, সে নামায পড়ার ফলে পাপ কাজ থেকে দূরে থাকতে সক্ষম হয়েছে, তাহলে বুঝতে হবে তার নামায আল্লাহর দরবারে কবুল হয়েছে।’’ (রুহুল মা‘আনী)
মানুষের ব্যক্তি ও সমাজ জীবন থেকে ইসলামের দৃষ্টিতে যেসব কাজ অশ্লীল ও নিষিদ্ধ তা দূর করা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান। নামাযের অনুষ্ঠান হচ্ছে ঐ উদ্দেশ্য সাধনের পাথেয়। অর্থাৎ নামাযের অনুষ্ঠানটি এমনভাবে করতে হবে, যেন তা নামাযের উদ্দেশ্য সাধনের ব্যাপারে কোন না কোনভাবে ভূমিকা রাখে। কিন্তু কেউ যদি নামাযের অনুষ্ঠানকেই নামাযের সবকিছু মনে করে, তবে নামায তার জন্য কোন কল্যাণ বয়ে আনবে না।
রোযার উদ্দেশ্য :
পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, রোযার উদ্দেশ্য হচ্ছে ‘তাকওয়া’ অর্জন করা।
আমরা অনেকেই রোযা রাখি কিন্তু রোযার উদ্দেশ্য কি আমাদের মাঝে প্রতিফলিত হয়? নবী ﷺ বলেছেন-
كَمْ مِّنْ صَائِمٍ لَيْسَ لَهٗ مِنْ صِيَامِهٖ إِلَّا الظَّمَأُ وَكَمْ مِّنْ قَائِمٍ لَيْسَ لَهٗ مِنْ قِيَامِهٖ إِلَّا السَّهَرُ
এমন অনেক রোযাদার আছে কেবল ক্ষুধা আর পিপাসা ছাড়া তাদের ভাগ্যে আর কিছু জোটে না। আবার রাত্রিতে ইবাদাতকারী অনেক রয়েছে, কিন্তু রাত্রি জাগরণের কষ্ট ছাড়া তারা আর কিছুই লাভ করতে পারে না। (দারেমী)
এ হাদীস থেকে এটা পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে যে, শুধুমাত্র উপবাস থাকলেই রোযা ফলপ্রসূ হবে না।
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন-
مَنْ لَّمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّوْرِ وَالْعَمَلَ بِهٖ فَلَيْسَ للهِ حَاجَةٌ فِيْ أَنْ يَّدَعَ طَعَامَهٗ وَشَرَابَهٗ
‘‘যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা বা মিথ্যা আচরণ ছাড়েনি, তার খাওয়া বা পান করা ছেড়ে দেয়াতে (রোযা রাখাতে) আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।’’ (বুখারী)
মিথ্যা কথা বা মিথ্যা আচরণ না ছাড়ার অর্থ হচ্ছে তাকওয়া অর্জিত না হওয়া। তাই রাসূূূল ﷺ এখানে বলেছেন, যে রোযাদার মিথ্যা কথা বা মিথ্যা আচরণ ছাড়েনি অর্থাৎ যে ব্যক্তির রোযা দ্বারা রোযার উদ্দেশ্য অর্জিত হয় না, তার রোযা তার জন্য কল্যাণকর হবে না।
কুরবানীর উদ্দেশ্য :
আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
لَنْ يَّنَالَ اللهَ لُحُومُهَا وَلَا دِمَاؤُهَا وَلٰكِنْ يَّنَالُهُ التَّقْوٰى مِنْكُمْ
‘‘এগুলোর (কুরবাণীর পশুর) গোশত ও রক্ত আল্লাহর নিকট পৌঁছায় না; বরং তোমাদের তাকওয়াই তাঁর নিকট পৌছায়।’’ (সূরা হাজ্জ- ৩৭)
আল্লাহ তা‘আলা এখানে স্পষ্ট করে বলেছেন যে, কুরবানির পশুর রক্ত ও মাংস তাঁর নিকট পৌঁছায় না বরং তাঁর নিকট পৌঁছায় কুরবানীর মাধ্যমে যে তাকওয়া অর্জিত হয় সেই তাকওয়া। এ থেকে সহজে বুঝা যায় যে, কুরবানির অনুষ্ঠান থেকে কোন সওয়াব হবে না বা কুরবানী আল্লাহর দাসত্ব হিসেবে গণ্য হবে না, যদি তা থেকে তাকওয়া অর্জিত না হয়।
এমনকিছু বিষয় আছে যার কারণে মানুষের নেক আমলগুলো নষ্ট হয়ে যায়। নিচে এ বিষয়ে আলোচনা করা হল :
যারা কাফির তাদের আমল বরবাদ হয়ে যাবে :
কাফিরদের কোন ভাল কাজ পরকালে কাজে আসবে না এবং আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না। আল্লাহ তা‘আলা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন-
وَمَنْ يَّكْفُرْ بِالْإِيمَانِ فَقَدْ حَبِطَ عَمَلُهٗ وَهُوْ فِي الْاٰخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِيْنَ
‘‘কেউ ঈমান প্রত্যাখ্যান করলে তার কর্ম নিষ্ফল হয়ে যাবে এবং সে আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’’ (সূরা মায়িদা- ৫)
তিনি আরো বলেন-
اَلَّذِيْنَ كَفَرُوْا وَصَدُّوْا عَنْ سَبِيْلِ اللهِ أَضَلَّ أَعْمَالَهُمْ
‘‘যারা কুফরী করেছে ও আল্লাহর পথে (মানুষকে আসতে) বাধা দিয়েছে, আল্লাহ তাদের সকল আমল বরবাদ করে দিয়েছেন।’’ (সূরা মুহাম্মাদ- ১)
কাফিরদের আমলের তুলনা মরীচিকার সাথে :
وَالَّذِيْنَ كَفَرُوْا أَعْمَالُهُمْ كَسَرَابٍ ۢبِقِيْعَةٍ يَّحْسَبُهُ الظَّمْآنُ مَاءً حَتّٰى إِذَا جَاءَهُ لَمْ يَجِدْهُ شَيْئًا
‘‘যারা কুফরী করে তাদের কর্ম মরুভূমির মরীচিকার মত। পিপাসার্ত যাকে পানি মনে করে থাকে, কিন্তু সে তার নিকট উপস্থিত হলে দেখবে তা কিছুই নয় এবং সে সেথায় আল্লাহকে পাবে, অতঃপর তিনি তার কর্মফল পূর্ণ মাত্রায় দেবেন। আর আল্লাহ হিসাব গ্রহণে তৎপর।’’ (সূরা নূর- ৩৯)
তাদের আমলের তুলনা ছাইয়ের সাথে :
مَثَلُ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا بِرَبِّهِمْ أَعْمَالُهُمْ كَرَمَادِنِ اشْتَدَّتْ بِهِ الرِّيْحُ فِيْ يَوْمٍ عَاصِفٍ - لَا يَقْدِرُوْنَ مِمَّا كَسَبُوْا عَلٰى شَيْءٍ ذٰلِكَ هُوْ الضَّلَالُ الْبَعِيْدُ
‘‘যারা তাদের প্রতিপালককে অস্বীকার করে তাদের আমলসমূহের উপমা হচ্ছে ছাইয়ের মত, যা ঝড়ের দিনের বাতাশ প্রচন্ড বেগে উড়িয়ে নিয়ে যায়। যা তারা উপার্জন করে তার কিছুই তারা তাদের কাজে লাগাবে না। এটা তো ঘোর বিভ্রামিত্ম।’’ (সূরা ইবরাহীম- ১৮)
তাদের আমলের কোন ওজন থাকবে না :
أُولٰئِكَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا بِآيَاتِ رَبِّهِمْ وَلِقَائِهٖ فَحَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فَلَا نُقِيْمُ لَهُمْ يَوْمَ الْقِيْامَةِ وَزْنًا
‘‘তারা ঐসকল লোক, যারা অস্বীকার করে তাদের প্রতিপালকের নিদর্শনাবলী ও তাঁর সাথে তাদের সাক্ষাতের বিষয়। ফলে তাদের কর্ম নিষ্ফল হয়ে যায়। সুতরাং কিয়ামতের দিন তাদের জন্য ওজনের কোন ব্যবস্থা রাখব না।’’ (সূরা কাহ্ফ- ১০৩-১০৫)
এগুলো ধূলার মতো উড়িয়ে দেয়া হবে :
وَقَدِمْنَا إِلٰى مَا عَمِلُوْا مِنْ عَمَلٍ فَجَعَلْنَاهُ هَبَاءً مَّنْثُوْرًا
‘‘আমি তাদের কৃতকর্মের প্রতি লক্ষ্য করব, অতঃপর সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করব।’’ (সূরা ফুরকান- ২৩)
ইসলামের কোন বিধানকে অপছন্দ করলে আমল নিস্ফল হয়ে যাবে :
وَالَّذِيْنَ كَفَرُوْا فَتَعْسًا لَّهُمْ وَأَضَلَّ أَعْمَالَهُم - ذٰلِكَ بِأَنَّهُمْ كَرِهُوْا مَا أَنْزَلَ اللهُ فَأَحْبَطَ أَعْمَالَهُمْ
‘‘আর যারা কুফরী করেছে তাদের জন্য ধ্বংস এবং আল্লাহ তাদের আমল নিষ্ফল করে দিয়েছেন। কারণ আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তা তারা অপছন্দ করছে। তাই আল্লাহ তাদের আমল বরবাদ করে দিয়েছেন।’’ (সূরা মুহাম্মাদ- ৮-৯)
মুহাম্মাদ ﷺ এর আনীত শরঈ বিধানের কোনকিছুর প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যক্তি কাফির যদিও সে উক্ত বিধানের উপর আমল করে।
আখেরাতকে অস্বীকার করলে আমল বিফলে যাবে :
وَالَّذِيْنَ كَذَّبُوْا بِاٰيَاتِنَا وَلِقَاءِ الْاٰخِرَةِ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ هَلْ يُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ
‘‘যারা আমার নিদর্শন ও আখেরাতের সাক্ষাতকে অস্বীকার করে তাদের আমল নিষ্ফল হয়। তারা যা করে তদানুযায়ী তাদেরকে প্রতিফল দেয়া হবে। (সূরা আ‘রাফ- ১৪৭)
মুরতাদ (দ্বীনত্যাগী) হয়ে গেলে আমল বাতিল হয়ে যাবে :
وَمَنْ يَّرْتَدِدْ مِنْكُمْ عَنْ دِيْنِهٖ فَيَمُتْ وَهُوَ كَافِرٌ فَأُولٰئِكَ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فِي الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ وَأُولٰئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيْهَا خَالِدُوْنَ
‘‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি তার দ্বীনকে ত্যাগ করবে, অতঃপর কাফের অবস্থায় মারা যাবে। দুনিয়া ও আখেরাতে তাদের সকল আমল বরবাদ হয়ে যাবে। আর তারা হবে জাহান্নামের অধিবাসী। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে।’’ (সূরা বাকারা- ২১৭)
সত্যের বিরোধিতা করলে আমল বরবাদ হয়ে যাবে :
إِنَّ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا وَصَدُّوْا عَنْ سَبِيْلِ اللهِ وَشَاقُّوا الرَّسُوْلَ مِنْ ۢبَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمُ الْهُدٰى لَنْ يَّضُرُّوا اللهَ شَيْئًا وَّسَيُحْبِطُ أَعْمَالَهُمْ
‘‘যারা কুফরী করেছে ও আল্লাহর পথে (মানুষকে আসতে) বাধা দিয়েছে এবং হেদায়াতের পথ তাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পরও রাসূলের সাথে ঝগড়া করেছে, তারা বাস্তবে আল্লাহর কোনো ক্ষতি করতে পারবে না বরং আল্লাহ তাদের সব আমল বরবাদ করে দেবেন।’’ (সূরা মুহাম্মাদ- ৩২)
মুনাফিকদের আমল বরবাদ হয়ে যাবে :
ذٰلِكَ بِأَنَّهُمُ اتَّبَعُوْا مَا أَسْخَطَ اللهَ وَكَرِهُوْا رِضْوَانَهٗ فَأَحْبَطَ أَعْمَالَهُمْ
‘‘এটা এ কারণেই হবে যে, তারা (মুনাফিকরা) এমন পথে চলেছে, যা আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করেছে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টিকে তারা অপছন্দ করেছে। তাই তিনি তাদের সব আমলকে বরবাদ করে দিয়েছেন।’’ (সূরা মুহাম্মাদ- ২৮)
যারা খাঁটি মনে ঈমান এনে মুসলিম হয়েছে বটে কিন্তু শয়তানের ধোঁকায় পড়ে বা অসচেনতার কারণে কখনো ছোটখাট নিফাকের কাজ করে ফেলে। কিন্তু পরক্ষণেই লজ্জিত হয়ে আল্লাহর নিকট ক্ষমা চায় তারা উল্লেখিত আয়াতের বিধানে পড়বে না বরং এ বিধান এমন মুনাফিকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যারা প্রকৃত মুনাফিক। এদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হল : বাইরে ঈমান প্রকাশ করে ভেতরে কুফরীর ভিত্তি মজবুত করা, ঈমানদারদেরকে সহ্য করতে না পারা, দ্বীন প্রতিষ্ঠায় বাধা সৃষ্টি করা ইত্যাদি।
সত্য প্রচারকদেরকে হত্যা করলে আমল বরবাদ হবে :
إِنَّ الَّذِيْنَ يَكْفُرُوْنَ بِاٰيَاتِ اللهِ وَيَقْتُلُوْنَ النَّبِيِّيْنَ بِغَيْرِ حَقٍّ وَّيَقْتُلُوْنَ الَّذِيْنَ يَأْمُرُوْنَ بِالْقِسْطِ مِنَ النَّاسِ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ أَلِيْمٍ - أُولٰئِكَ الَّذِيْنَ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فِي الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ وَمَا لَهُمْ مِّنْ نَّاصِرِيْنَ
‘‘নিশ্চয় যারা আল্লাহর আয়াতকে অস্বীকার করেছে এবং অন্যায়ভাবে নবীদেরকে হত্যা করেছে, আরো হত্যা করেছে তাদেরকে যারা ইনসাফের নির্দেশ দেয়। তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সংবাদ শুনিয়ে দাও। এরা তো সেই সব লোক দুনিয়া ও আখেরাতে যাদের সকল আমল বরবাদ হয়ে গেছে। তাদের কোন সাহায্যকারীও থাকবে না।’’ (সূরা আলে ইমরান : ২১-২২)
শিরক করলে আমল বরবাদ হবে :
আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থাপন করা জঘন্য অপরাধ। যে ব্যক্তি ইবাদাতের ক্ষেত্রে বা আল্লাহর গুণাবলী ও ক্ষমতার সাথে অন্য কাউকে শরীক করবে সে ব্যক্তি মুশরিক বলে গণ্য হবে। এমন ব্যক্তির অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য এবং তার কোন প্রকার সৎকর্মই গ্রহণযোগ্য হবে না।
وَلَقَدْ أُوْحِيَ إِلَيْكَ وَإِلَى الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِكَ لَئِنْ أَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُوْنَنَّ مِنَ الْخَاسِرِيْنَ
‘‘নিশ্চয় তোমার প্রতি ও তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি ওহী করা হয়েছে যে, তুমি যদি আল্লাহর সাথে শরীক স্থাপন কর তবে নিঃসন্দেহে তোমার আমল নিষ্ফল হয়ে যাবে এবং তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’’ (সূরা যুমার- ৬৫)
مَا كَانَ لِلْمُشْرِكِيْنَ أَنْ يَّعْمُرُوْا مَسَاجِدَ اللهِ شَاهِدِيْنَ عَلٰى أَنْفُسِهِمْ بِالْكُفْرِ أُولٰئِكَ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ وَفِي النَّارِ هُمْ خَالِدُوْنَ
‘‘মুশরিকরা যেহেতু নিজেরাই নিজেদের কুফরী স্বীকার করে এমতাবস্থায় তারা আল্লাহর মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ করবে- এটা হতে পারে না। তারা এমন লোক যাদের সমস্ত আমল ব্যর্থ হয়ে গেছে এবং তারা জাহান্নামে স্থায়ীভাবে অবস্থান করবে।’’ (সূরা তওবা- ১৭)
وَلَوْ أَشْرَكُوْا لَحَبِطَ عَنْهُمْ مَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ
‘‘তারা যদি শিরক করত তবে তাদের কৃতকর্ম নিষ্ফল হয়ে যেত।’’
(সূরা আন‘আম- ৮৮)
কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, আমি শরীকদের থেকে উর্ধ্বে। যে ব্যক্তি কোন নেক আমল করে এবং আমার সাথে কাউকে শরীক করে আমি তার সেই আমলকে শরীকদের জন্য ছেড়ে দেই। (মুসলিম)
নিজের আমল দ্বারা আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির সাথে সৃষ্ট জীবের সন্তুষ্টি অথবা নিজের সুখ্যাতি এমনকি লোকমুখে নিজের প্রশংসা শুনে আমল আরো বাড়িয়ে দেয়া, এটা নিঃসন্দেহে রিয়া ও গোপন শিরক।
লোক দেখানো আমল বরবাদ হয়ে যাবে :
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমাদের জন্য যে বিষয়টিকে আমি সবচেয়ে বেশি ভয় করি তা হল ছোট শিরক। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! ছোট শিরক কী? উত্তরে রাসূল ﷺ বললেন, রিয়া অর্থাৎ লোক দেখানো আমল।
(আহমাদ, শারহু সুন্নাহ, বায়হাকী, সিলসিলা সহীহা হা: ৯৫১)
আবু উমামা আল-বাহিলী (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রাসূল! এক ব্যক্তি আল্লাহর কাছে সওয়াব এবং মানুষের কাছে সুনাম অর্জনের জন্য যুদ্ধ করেছে। তার প্রাপ্য কী? রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, সে কিছুই পাবে না। লোকটি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে তিনবার একই প্রশ্ন করলে তিনি তিনবারই বললেন, সে কিছুই পাবে না। অতঃপর রাসূলূল্লাহ ﷺ বললেন, আল্লাহ কেবল সেই আমলই কবুল করেন যা একনিষ্ঠভাবে তাঁর জন্যই করা হয় এবং এর মাধ্যমে শুধু তাঁর সন্তুষ্টিই কামনা করা হয়। (সুনান নাসায়ী, সহীহ আত-তরগীব, সিলসিলা সহীহা- হা: ৫)
কিয়ামতের দিন যখন আল্লাহ তা‘আলা মানুষদেরকে আমলের প্রতিদান দেবেন, তখন লোকদেখানো আমলকারীদেরকে বলবেন, তোমরা তোমাদের আমলের প্রতিদান নেয়ার জন্য তাদের কাছে যাও যাদেরকে দেখানোর উদ্দেশ্যে তোমরা আমল করেছিলে। তারপর দেখ, তোমাদের জন্য কোন প্রতিদান আছে কিনা। (বায়হাকী, শুয়াবুল ঈমান)
আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) রাসূল ﷺ কে বলতে শুনেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি সুখ্যাতি লাভের জন্য সৎকর্ম করবে, আল্লাহ তা‘আলাও তার সাথে এমন ব্যবহার করবেন যার ফলে সে ঘৃণিত ও লাঞ্ছিত হবে।’’
তাফসীরে কুরতুবীতে আছে, হাসান বসরী (রহ:) কে ইখলাস ও রিয়া সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বললেন, ইখলাস হচ্ছে ভাল কাজের গোপনীয়তা পছন্দ করা এবং মন্দ কাজের গোপনীয়তা পছন্দ না করা। এরপর যদি আল্লাহ তা‘আলা তোমার আমল মানুষের কাছে প্রকাশ করে দেন, তবে তুমি এ কথা বল, হে আল্লাহ! এটা আপনার অনুগ্রহ ও কৃপা; আমার কর্ম ও প্রচেষ্টার ফল নয়।
যে আমল খাঁটিভাবে আল্লাহর জন্যই হয়ে থাকে এবং লোকমুখে সুখ্যাতি ও প্রশংসার প্রতি কোন ভ্রুÿÿপ থাকে না, সে আমল যদি আল্লাহ তা‘আলা অনুগ্রহ করে লোকের মাঝে প্রসিদ্ধ করে দেন এবং মানুষের মুখ দিয়ে প্রশংসা করিয়ে দেন, তবে রিয়ার সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। এটা মুমিনের জন্য (আমল কবুল হওয়ার) অগ্রিম সুসংবাদ।
দান করে খোটা দিলে ঐ দান বিনষ্ট হয়ে যায় :
যদি কেউ কাউকে কিছু দান করার পর খোটা দেয় বা তিরস্কার করে তবে সে ব্যক্তির সে-ই দানটুকু বরবাদ হয়ে যাবে। সে যে সওয়াবটুকু লাভ করেছিল তিরস্কার করার ফলে সে উক্ত সওয়াব হতে বঞ্চিত হবে। এরূপ ব্যক্তির দান সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا لَا تُبْطِلُوْا صَدَقَاتِكُمْ بِالْمَنِّ وَالْاَذٰى كَالَّذِيْ يُنْفِقُ مَالَهٗ رِئَاءَ النَّاسِ
‘‘হে ঈমানদারগণ! খোটা দিয়ে এবং কষ্ট দিয়ে তোমাদের দানকে বরবাদ করো না, ঐ ব্যক্তির মত যে লোকদেখানোর জন্য তার মাল খরচ করে।’’
(সূরা বাকারা : ২৬৪)
তবে কেউ কারো বিবেককে জাগ্রত করার জন্য বা সঠিক পথ প্রদর্শনের জন্য কৃত উপকারের কথা স্মরণ করিয়ে দিলে তা খোটা বা তিরস্কার হিসেবে গণ্য হবে না। শর্ত হল, এতে নিজের বড়ত্ব প্রকাশ ও অন্যকে হেয় প্রতিপন্ন করার মত কোন উদ্দেশ্য থাকবে না।
আসরের নামায ছেড়ে দিলে আমল বরবাদ হয়ে যায় :
রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি আসরের নামায ছেড়ে দিল তার আমল বরবাদ হয়ে গেল।’’ (সহীহুল বুখারী, আহমাদ হা: ২২৯৫৭, ২২৯৫৯)
রাসূল ﷺ বলেছেন, কিয়ামতের দিন বান্দার কাছ থেকে সর্বপ্রথম নামাযের হিসাব নেয়া হবে। যদি নামাযের হিসাব ভাল হয় তাহলে তার সমস্ত আমল ঠিক থাকবে। আর যদি নামাযের হিসাব নষ্ট হয়ে যায় তাহলে সমস্ত আমল বরবাদ হয়ে যাবে। (সহীহ আত-তারগীব হা: ৩৬৯)
কিয়ামতের দিন বান্দার কাছ থেকে সর্বপ্রথম যে হিসাব নেয়া হবে তা হচ্ছে নামায। তার নামাযের দিকে তাকানো হবে; যদি তা ভাল হয় তবে সে সফল হয়ে গেলো আর যদি তা বিনষ্ট হয় তবে সে ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হল।
(সহীহ আত-তারগীব হা: ৩৭০)
যারা কাফির তাদের আমল বরবাদ হয়ে যাবে :
কাফিরদের কোন ভাল কাজ পরকালে কাজে আসবে না এবং আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না। আল্লাহ তা‘আলা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন-
وَمَنْ يَّكْفُرْ بِالْإِيمَانِ فَقَدْ حَبِطَ عَمَلُهٗ وَهُوْ فِي الْاٰخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِيْنَ
‘‘কেউ ঈমান প্রত্যাখ্যান করলে তার কর্ম নিষ্ফল হয়ে যাবে এবং সে আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’’ (সূরা মায়িদা- ৫)
তিনি আরো বলেন-
اَلَّذِيْنَ كَفَرُوْا وَصَدُّوْا عَنْ سَبِيْلِ اللهِ أَضَلَّ أَعْمَالَهُمْ
‘‘যারা কুফরী করেছে ও আল্লাহর পথে (মানুষকে আসতে) বাধা দিয়েছে, আল্লাহ তাদের সকল আমল বরবাদ করে দিয়েছেন।’’ (সূরা মুহাম্মাদ- ১)
কাফিরদের আমলের তুলনা মরীচিকার সাথে :
وَالَّذِيْنَ كَفَرُوْا أَعْمَالُهُمْ كَسَرَابٍ ۢبِقِيْعَةٍ يَّحْسَبُهُ الظَّمْآنُ مَاءً حَتّٰى إِذَا جَاءَهُ لَمْ يَجِدْهُ شَيْئًا
‘‘যারা কুফরী করে তাদের কর্ম মরুভূমির মরীচিকার মত। পিপাসার্ত যাকে পানি মনে করে থাকে, কিন্তু সে তার নিকট উপস্থিত হলে দেখবে তা কিছুই নয় এবং সে সেথায় আল্লাহকে পাবে, অতঃপর তিনি তার কর্মফল পূর্ণ মাত্রায় দেবেন। আর আল্লাহ হিসাব গ্রহণে তৎপর।’’ (সূরা নূর- ৩৯)
তাদের আমলের তুলনা ছাইয়ের সাথে :
مَثَلُ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا بِرَبِّهِمْ أَعْمَالُهُمْ كَرَمَادِنِ اشْتَدَّتْ بِهِ الرِّيْحُ فِيْ يَوْمٍ عَاصِفٍ - لَا يَقْدِرُوْنَ مِمَّا كَسَبُوْا عَلٰى شَيْءٍ ذٰلِكَ هُوْ الضَّلَالُ الْبَعِيْدُ
‘‘যারা তাদের প্রতিপালককে অস্বীকার করে তাদের আমলসমূহের উপমা হচ্ছে ছাইয়ের মত, যা ঝড়ের দিনের বাতাশ প্রচন্ড বেগে উড়িয়ে নিয়ে যায়। যা তারা উপার্জন করে তার কিছুই তারা তাদের কাজে লাগাবে না। এটা তো ঘোর বিভ্রামিত্ম।’’ (সূরা ইবরাহীম- ১৮)
তাদের আমলের কোন ওজন থাকবে না :
أُولٰئِكَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا بِآيَاتِ رَبِّهِمْ وَلِقَائِهٖ فَحَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فَلَا نُقِيْمُ لَهُمْ يَوْمَ الْقِيْامَةِ وَزْنًا
‘‘তারা ঐসকল লোক, যারা অস্বীকার করে তাদের প্রতিপালকের নিদর্শনাবলী ও তাঁর সাথে তাদের সাক্ষাতের বিষয়। ফলে তাদের কর্ম নিষ্ফল হয়ে যায়। সুতরাং কিয়ামতের দিন তাদের জন্য ওজনের কোন ব্যবস্থা রাখব না।’’ (সূরা কাহ্ফ- ১০৩-১০৫)
এগুলো ধূলার মতো উড়িয়ে দেয়া হবে :
وَقَدِمْنَا إِلٰى مَا عَمِلُوْا مِنْ عَمَلٍ فَجَعَلْنَاهُ هَبَاءً مَّنْثُوْرًا
‘‘আমি তাদের কৃতকর্মের প্রতি লক্ষ্য করব, অতঃপর সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করব।’’ (সূরা ফুরকান- ২৩)
ইসলামের কোন বিধানকে অপছন্দ করলে আমল নিস্ফল হয়ে যাবে :
وَالَّذِيْنَ كَفَرُوْا فَتَعْسًا لَّهُمْ وَأَضَلَّ أَعْمَالَهُم - ذٰلِكَ بِأَنَّهُمْ كَرِهُوْا مَا أَنْزَلَ اللهُ فَأَحْبَطَ أَعْمَالَهُمْ
‘‘আর যারা কুফরী করেছে তাদের জন্য ধ্বংস এবং আল্লাহ তাদের আমল নিষ্ফল করে দিয়েছেন। কারণ আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তা তারা অপছন্দ করছে। তাই আল্লাহ তাদের আমল বরবাদ করে দিয়েছেন।’’ (সূরা মুহাম্মাদ- ৮-৯)
মুহাম্মাদ ﷺ এর আনীত শরঈ বিধানের কোনকিছুর প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যক্তি কাফির যদিও সে উক্ত বিধানের উপর আমল করে।
আখেরাতকে অস্বীকার করলে আমল বিফলে যাবে :
وَالَّذِيْنَ كَذَّبُوْا بِاٰيَاتِنَا وَلِقَاءِ الْاٰخِرَةِ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ هَلْ يُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ
‘‘যারা আমার নিদর্শন ও আখেরাতের সাক্ষাতকে অস্বীকার করে তাদের আমল নিষ্ফল হয়। তারা যা করে তদানুযায়ী তাদেরকে প্রতিফল দেয়া হবে। (সূরা আ‘রাফ- ১৪৭)
মুরতাদ (দ্বীনত্যাগী) হয়ে গেলে আমল বাতিল হয়ে যাবে :
وَمَنْ يَّرْتَدِدْ مِنْكُمْ عَنْ دِيْنِهٖ فَيَمُتْ وَهُوَ كَافِرٌ فَأُولٰئِكَ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فِي الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ وَأُولٰئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيْهَا خَالِدُوْنَ
‘‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি তার দ্বীনকে ত্যাগ করবে, অতঃপর কাফের অবস্থায় মারা যাবে। দুনিয়া ও আখেরাতে তাদের সকল আমল বরবাদ হয়ে যাবে। আর তারা হবে জাহান্নামের অধিবাসী। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে।’’ (সূরা বাকারা- ২১৭)
সত্যের বিরোধিতা করলে আমল বরবাদ হয়ে যাবে :
إِنَّ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا وَصَدُّوْا عَنْ سَبِيْلِ اللهِ وَشَاقُّوا الرَّسُوْلَ مِنْ ۢبَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمُ الْهُدٰى لَنْ يَّضُرُّوا اللهَ شَيْئًا وَّسَيُحْبِطُ أَعْمَالَهُمْ
‘‘যারা কুফরী করেছে ও আল্লাহর পথে (মানুষকে আসতে) বাধা দিয়েছে এবং হেদায়াতের পথ তাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পরও রাসূলের সাথে ঝগড়া করেছে, তারা বাস্তবে আল্লাহর কোনো ক্ষতি করতে পারবে না বরং আল্লাহ তাদের সব আমল বরবাদ করে দেবেন।’’ (সূরা মুহাম্মাদ- ৩২)
মুনাফিকদের আমল বরবাদ হয়ে যাবে :
ذٰلِكَ بِأَنَّهُمُ اتَّبَعُوْا مَا أَسْخَطَ اللهَ وَكَرِهُوْا رِضْوَانَهٗ فَأَحْبَطَ أَعْمَالَهُمْ
‘‘এটা এ কারণেই হবে যে, তারা (মুনাফিকরা) এমন পথে চলেছে, যা আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করেছে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টিকে তারা অপছন্দ করেছে। তাই তিনি তাদের সব আমলকে বরবাদ করে দিয়েছেন।’’ (সূরা মুহাম্মাদ- ২৮)
যারা খাঁটি মনে ঈমান এনে মুসলিম হয়েছে বটে কিন্তু শয়তানের ধোঁকায় পড়ে বা অসচেনতার কারণে কখনো ছোটখাট নিফাকের কাজ করে ফেলে। কিন্তু পরক্ষণেই লজ্জিত হয়ে আল্লাহর নিকট ক্ষমা চায় তারা উল্লেখিত আয়াতের বিধানে পড়বে না বরং এ বিধান এমন মুনাফিকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যারা প্রকৃত মুনাফিক। এদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হল : বাইরে ঈমান প্রকাশ করে ভেতরে কুফরীর ভিত্তি মজবুত করা, ঈমানদারদেরকে সহ্য করতে না পারা, দ্বীন প্রতিষ্ঠায় বাধা সৃষ্টি করা ইত্যাদি।
সত্য প্রচারকদেরকে হত্যা করলে আমল বরবাদ হবে :
إِنَّ الَّذِيْنَ يَكْفُرُوْنَ بِاٰيَاتِ اللهِ وَيَقْتُلُوْنَ النَّبِيِّيْنَ بِغَيْرِ حَقٍّ وَّيَقْتُلُوْنَ الَّذِيْنَ يَأْمُرُوْنَ بِالْقِسْطِ مِنَ النَّاسِ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ أَلِيْمٍ - أُولٰئِكَ الَّذِيْنَ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فِي الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ وَمَا لَهُمْ مِّنْ نَّاصِرِيْنَ
‘‘নিশ্চয় যারা আল্লাহর আয়াতকে অস্বীকার করেছে এবং অন্যায়ভাবে নবীদেরকে হত্যা করেছে, আরো হত্যা করেছে তাদেরকে যারা ইনসাফের নির্দেশ দেয়। তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সংবাদ শুনিয়ে দাও। এরা তো সেই সব লোক দুনিয়া ও আখেরাতে যাদের সকল আমল বরবাদ হয়ে গেছে। তাদের কোন সাহায্যকারীও থাকবে না।’’ (সূরা আলে ইমরান : ২১-২২)
শিরক করলে আমল বরবাদ হবে :
আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থাপন করা জঘন্য অপরাধ। যে ব্যক্তি ইবাদাতের ক্ষেত্রে বা আল্লাহর গুণাবলী ও ক্ষমতার সাথে অন্য কাউকে শরীক করবে সে ব্যক্তি মুশরিক বলে গণ্য হবে। এমন ব্যক্তির অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য এবং তার কোন প্রকার সৎকর্মই গ্রহণযোগ্য হবে না।
وَلَقَدْ أُوْحِيَ إِلَيْكَ وَإِلَى الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِكَ لَئِنْ أَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُوْنَنَّ مِنَ الْخَاسِرِيْنَ
‘‘নিশ্চয় তোমার প্রতি ও তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি ওহী করা হয়েছে যে, তুমি যদি আল্লাহর সাথে শরীক স্থাপন কর তবে নিঃসন্দেহে তোমার আমল নিষ্ফল হয়ে যাবে এবং তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’’ (সূরা যুমার- ৬৫)
مَا كَانَ لِلْمُشْرِكِيْنَ أَنْ يَّعْمُرُوْا مَسَاجِدَ اللهِ شَاهِدِيْنَ عَلٰى أَنْفُسِهِمْ بِالْكُفْرِ أُولٰئِكَ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ وَفِي النَّارِ هُمْ خَالِدُوْنَ
‘‘মুশরিকরা যেহেতু নিজেরাই নিজেদের কুফরী স্বীকার করে এমতাবস্থায় তারা আল্লাহর মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ করবে- এটা হতে পারে না। তারা এমন লোক যাদের সমস্ত আমল ব্যর্থ হয়ে গেছে এবং তারা জাহান্নামে স্থায়ীভাবে অবস্থান করবে।’’ (সূরা তওবা- ১৭)
وَلَوْ أَشْرَكُوْا لَحَبِطَ عَنْهُمْ مَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ
‘‘তারা যদি শিরক করত তবে তাদের কৃতকর্ম নিষ্ফল হয়ে যেত।’’
(সূরা আন‘আম- ৮৮)
কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, আমি শরীকদের থেকে উর্ধ্বে। যে ব্যক্তি কোন নেক আমল করে এবং আমার সাথে কাউকে শরীক করে আমি তার সেই আমলকে শরীকদের জন্য ছেড়ে দেই। (মুসলিম)
নিজের আমল দ্বারা আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির সাথে সৃষ্ট জীবের সন্তুষ্টি অথবা নিজের সুখ্যাতি এমনকি লোকমুখে নিজের প্রশংসা শুনে আমল আরো বাড়িয়ে দেয়া, এটা নিঃসন্দেহে রিয়া ও গোপন শিরক।
লোক দেখানো আমল বরবাদ হয়ে যাবে :
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমাদের জন্য যে বিষয়টিকে আমি সবচেয়ে বেশি ভয় করি তা হল ছোট শিরক। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! ছোট শিরক কী? উত্তরে রাসূল ﷺ বললেন, রিয়া অর্থাৎ লোক দেখানো আমল।
(আহমাদ, শারহু সুন্নাহ, বায়হাকী, সিলসিলা সহীহা হা: ৯৫১)
আবু উমামা আল-বাহিলী (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রাসূল! এক ব্যক্তি আল্লাহর কাছে সওয়াব এবং মানুষের কাছে সুনাম অর্জনের জন্য যুদ্ধ করেছে। তার প্রাপ্য কী? রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, সে কিছুই পাবে না। লোকটি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে তিনবার একই প্রশ্ন করলে তিনি তিনবারই বললেন, সে কিছুই পাবে না। অতঃপর রাসূলূল্লাহ ﷺ বললেন, আল্লাহ কেবল সেই আমলই কবুল করেন যা একনিষ্ঠভাবে তাঁর জন্যই করা হয় এবং এর মাধ্যমে শুধু তাঁর সন্তুষ্টিই কামনা করা হয়। (সুনান নাসায়ী, সহীহ আত-তরগীব, সিলসিলা সহীহা- হা: ৫)
কিয়ামতের দিন যখন আল্লাহ তা‘আলা মানুষদেরকে আমলের প্রতিদান দেবেন, তখন লোকদেখানো আমলকারীদেরকে বলবেন, তোমরা তোমাদের আমলের প্রতিদান নেয়ার জন্য তাদের কাছে যাও যাদেরকে দেখানোর উদ্দেশ্যে তোমরা আমল করেছিলে। তারপর দেখ, তোমাদের জন্য কোন প্রতিদান আছে কিনা। (বায়হাকী, শুয়াবুল ঈমান)
আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) রাসূল ﷺ কে বলতে শুনেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি সুখ্যাতি লাভের জন্য সৎকর্ম করবে, আল্লাহ তা‘আলাও তার সাথে এমন ব্যবহার করবেন যার ফলে সে ঘৃণিত ও লাঞ্ছিত হবে।’’
তাফসীরে কুরতুবীতে আছে, হাসান বসরী (রহ:) কে ইখলাস ও রিয়া সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বললেন, ইখলাস হচ্ছে ভাল কাজের গোপনীয়তা পছন্দ করা এবং মন্দ কাজের গোপনীয়তা পছন্দ না করা। এরপর যদি আল্লাহ তা‘আলা তোমার আমল মানুষের কাছে প্রকাশ করে দেন, তবে তুমি এ কথা বল, হে আল্লাহ! এটা আপনার অনুগ্রহ ও কৃপা; আমার কর্ম ও প্রচেষ্টার ফল নয়।
যে আমল খাঁটিভাবে আল্লাহর জন্যই হয়ে থাকে এবং লোকমুখে সুখ্যাতি ও প্রশংসার প্রতি কোন ভ্রুÿÿপ থাকে না, সে আমল যদি আল্লাহ তা‘আলা অনুগ্রহ করে লোকের মাঝে প্রসিদ্ধ করে দেন এবং মানুষের মুখ দিয়ে প্রশংসা করিয়ে দেন, তবে রিয়ার সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। এটা মুমিনের জন্য (আমল কবুল হওয়ার) অগ্রিম সুসংবাদ।
দান করে খোটা দিলে ঐ দান বিনষ্ট হয়ে যায় :
যদি কেউ কাউকে কিছু দান করার পর খোটা দেয় বা তিরস্কার করে তবে সে ব্যক্তির সে-ই দানটুকু বরবাদ হয়ে যাবে। সে যে সওয়াবটুকু লাভ করেছিল তিরস্কার করার ফলে সে উক্ত সওয়াব হতে বঞ্চিত হবে। এরূপ ব্যক্তির দান সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا لَا تُبْطِلُوْا صَدَقَاتِكُمْ بِالْمَنِّ وَالْاَذٰى كَالَّذِيْ يُنْفِقُ مَالَهٗ رِئَاءَ النَّاسِ
‘‘হে ঈমানদারগণ! খোটা দিয়ে এবং কষ্ট দিয়ে তোমাদের দানকে বরবাদ করো না, ঐ ব্যক্তির মত যে লোকদেখানোর জন্য তার মাল খরচ করে।’’
(সূরা বাকারা : ২৬৪)
তবে কেউ কারো বিবেককে জাগ্রত করার জন্য বা সঠিক পথ প্রদর্শনের জন্য কৃত উপকারের কথা স্মরণ করিয়ে দিলে তা খোটা বা তিরস্কার হিসেবে গণ্য হবে না। শর্ত হল, এতে নিজের বড়ত্ব প্রকাশ ও অন্যকে হেয় প্রতিপন্ন করার মত কোন উদ্দেশ্য থাকবে না।
আসরের নামায ছেড়ে দিলে আমল বরবাদ হয়ে যায় :
রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি আসরের নামায ছেড়ে দিল তার আমল বরবাদ হয়ে গেল।’’ (সহীহুল বুখারী, আহমাদ হা: ২২৯৫৭, ২২৯৫৯)
রাসূল ﷺ বলেছেন, কিয়ামতের দিন বান্দার কাছ থেকে সর্বপ্রথম নামাযের হিসাব নেয়া হবে। যদি নামাযের হিসাব ভাল হয় তাহলে তার সমস্ত আমল ঠিক থাকবে। আর যদি নামাযের হিসাব নষ্ট হয়ে যায় তাহলে সমস্ত আমল বরবাদ হয়ে যাবে। (সহীহ আত-তারগীব হা: ৩৬৯)
কিয়ামতের দিন বান্দার কাছ থেকে সর্বপ্রথম যে হিসাব নেয়া হবে তা হচ্ছে নামায। তার নামাযের দিকে তাকানো হবে; যদি তা ভাল হয় তবে সে সফল হয়ে গেলো আর যদি তা বিনষ্ট হয় তবে সে ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হল।
(সহীহ আত-তারগীব হা: ৩৭০)
বিদআতীর আমল কবুল হয় না :
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছু আবিষ্কার করবে অথবা কোন বিদআতীকে আশ্রয় দেবে তার উপর আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতা এবং সমগ্র মানবকূলের অভিশাপ বর্ষিত হোক। তার কোন ফরজ ও নফল ইবাদাত কবুল হবে না।’’
(সহীহুল বুখারী, হা: ৩১৮০, মুসলিম, ত্বাবরানী)
বিদআত ও মনগড়া আমল যতই ভাল দেখা যাকনা কেন, তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
গণক ও জ্যোতিষীর কাছে গমনকারীর আমল কবুল হয় না :
জ্যোতিষ বা গণকের কথা বিশ্বাস করলে আমল কবুল হবে না। রাসূল ﷺএর কতিপয় স্ত্রী হতে বর্ণিত আছে, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি গণকের নিকট আসবে এবং সে যা বলে তা বিশ্বাস করবে, সে ব্যক্তির চল্লিশ রাত (দিনের) নামায কবুল হবে না।’’ (মুসলিম হা: ৫৯৫৭)
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি (জ্যোতিষী) গণকের নিকট আসবে এবং সে যা বলে তার কথায় বিশ্বাস করবে, সে মুহাম্মাদ ﷺ এর প্রতি নাযিলকৃত দ্বীনকে অস্বীকার করলো।’’
(সুনান বায়হকী হা: ১৬৯৩৮)
গনকরা ভবিষ্যতের খবর দেয়, অথচ ভবিষ্যতের খবর একমাত্র আল্লাহই জানেন, তাই এদের কথা বিশ্বাস করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত।
মদ্য পানকারীর আমল কবুল হয় না :
রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘আমার উম্মাতের মধ্যে যে ব্যক্তি মদ্যপান করবে, তার ৪০ দিনের নামায কবুল হবে না।’’ (সিলসিলা সহীহা হা: ১৮৫৪)
আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘মদ হচ্ছে খবীসের মা। যে মদ পান করে তার ৪০ দিনের নামায কবুল হবে না। তার পেটে মদ থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হলে সে জাহিলিয়্যাতের মৃত্যুবরণ করল।’’ (নাসাঈ হা: ৭০৯)
উল্লেখ্য যে, সহীহ হাদীসে রাসূল ﷺ প্রত্যেকটি নেশা জাতীয় দ্রব্যকে মদ বলেছেন। তাই হেরোইন, ফেনসিডিল, গাজা, আফীম, হুইসকি, ইয়াবা, পেস্টিং ও তামাকজাত দ্রব্য ইত্যাদি মাদকের অন্তর্ভুক্ত। তাই এসব নেশাজাতীয় জিনিস থেকে দূরে থাকা সকলের কর্তব্য।
মাতা-পিতার অবাধ্য, খোটাদানকারী, তাকদীর অস্বীকারকারী- এদের আমল কবুল হয় না :
রাসূল ﷺ বললেন, আল্লাহ তা‘আলা তিন প্রকার লোকের ফরজ ও নফল ইবাদাত কবুল করেন না :
(১) মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান।
(২) দান করে খোটাদানকারী ও
(৩) তাকদীর অস্বীকারকারী। (ত্বাবারানী, সিলসিলা সহীহা হা: ১৭৮৫)
মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করা, তাদের কথা শুনা, সেবা-যত্ন করা, তাদের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করা এসবের প্রতি ইসলাম অত্যধিক গুরুত্ব দিয়েছে। স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলা মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করার জন্য বহুবার নির্দেশ দিয়েছেন। রাসূল ﷺও হাদীসের মাধ্যমে মাতা-পিতার আনুগত্য করার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্বারূপ করেছেন। তবে হ্যাঁ, মাতা-পিতা যদি কোন কুফরী বা আল্লাহর নাফমানী হয় এমন কাজের আদেশ করে সেক্ষেত্রে তাদের আনুগত্য করা যাবে না এবং তাদেরকে উত্তম কথার মাধ্যমে বুঝাতে হবে যে, এমনটি করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। (সূরা লুকমান- ১৫)
মুমিন ব্যক্তিকে হত্যা করলে আমল কবুল হয় না :
উবাদা ইবনে সামিত (রাঃ) রাসূল ﷺ থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন মুমিন ব্যক্তিকে ইচ্ছা করে হত্যা করবে এবং তাকে হত্যা করে খুশি হবে, তার কোন ফরজ ও নফল ইবাদাত আল্লাহ কবুল করবেন না। (আবু দাউদ হা: ৪২৭২)
কেউ কোন সাধারণ মুসলিমের নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটালে তার উপর আল্লাহর অভিশাপ এবং ফেরেশতাকূল ও মানবকূল সকলের অভিশাপ বর্ষিত হবে। তার কোন ফরজ ও নফল ইবাদাত কবুল করা হবে না।
পক্ষবাদী নেতার আমল কবুল হবে না :
যে নেতা নেতৃত্ব পরিচালনার ক্ষেত্রে অসৎ উদ্দেশ্য সাধনের লক্ষ্যে কারো পক্ষ অবলম্বন করে চলে তার সম্পর্কে রাসূল ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি মুসলিমদের কোন কিছুর নেতৃত্ব পায় এবং তাদের উপর কারোর পক্ষপাতিত্ব করে নেতৃত্ব পরিচালনা করে, তার উপর আল্লাহর লানাত রয়েছে। আল্লাহ এমন ব্যক্তির কোন প্রকার ফরজ ও নফল ইবাদাত কবুল করবেন না, সে জাহান্নামে প্রবেশ করে। (আহমাদ হা: ২১)
অপবিত্র অবস্থায় নামায কবুল হয় না :
ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল ﷺ বলেছেন, পবিত্রতা ছাড়া নামায কবুল হয় না। (মুসলিম, আহমাদ হা: ৮২০৬)
রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের করো নামায কবুল করবেন না যতক্ষণ না তোমরা অপবিত্রতা থেকে পবিত্রতা অর্জন করো।’’
(বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, হা: ৭৬)
সূরা ফাতিহা না পড়লে নামায কবুল হয় না :
রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যে সালাতে সূরা ফাতিহা পাঠ করা হয় না ঐ নামায কবুল করা হয় না।’’ (মুসনাদ আহমাদ হা: ২০৬১৯)
বেপর্দা হয়ে নামায পড়লে কবুল হয় না :
আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘ওড়না ছাড়া প্রাপ্তবয়স্কা মেয়েদের নামায কবুল হয় না।’’
পর্দা এমন এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা ঈমানকে মজবুত ও ইবাদাতকে স্বার্থক করে তুলতে সাহায্য করে। এজন্য ইসলাম প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্কা নর-নারীর জন্য পর্দা ফরজ করে দিয়েছে। এ বিধান ঘরে-বাইরে এমনকি নামায আদায়ের সময়ও যথাযথভাবে পালন করতে হবে। বিশেষ করে মহিলাদের জন্য পর্দার বিষয়টি আরো গুরুত্বপূর্ণ। কেননা রাসূল ﷺ বলেছেন, নামাযের সময় ওড়না পরিধান করে না এমন প্রাপ্তবয়স্কা মেয়ের নামায কবুল হবে না।
আল্লাহর বিধান অনুযায়ী বিচার না করলে নামায কবুল হয় না :
রাসূল ﷺ বললেন, ‘‘যে বিচারক আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অনুযায়ী ফায়সালা করবে না আল্লাহ তার নামায কবুল করবেন না।’’ (হাকিম)
মহিলা খুশবু লাগিয়ে মসজিদে গেলে নামায কবুল হয় না :
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, একদা আমার সাথে এক মহিলার দেখা হল, যার শরীর থেকে সুগন্ধি বের হচ্ছিল এবং তার (পাতলা) কাপড়ও বাতাসে উড়ছিল। তখন আমি তাকে বললাম, হে বেহায়া মহিলা! তুমি কি মসজিদ থেকে আসেছো? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বলেন, তুমি কি খুশবু ব্যবহার করেছো? সে বলল, হ্যাঁ। তখন আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল ﷺ কে বলতে শুনেছি, যে মহিলা খুশবু লাগিয়ে মসজিদে আসে তার নামায কবুল হয় না, যতক্ষণ না সে ফিরে গিয়ে ফরজ গোসলের ন্যায় গোসল করে। (এমন উত্তমরূপে গোসল করে যাতে তার দেহে কোন সুগন্ধি না থাকে)। (মুসলিম, আবু দাউদ হা: ৩৬৪৩)
উল্লেখ্য যে, স্বামীকে খুশি করার জন্য স্ত্রী ঘরে রং ও খুশবু ব্যবহার করতে পারবে।
মসজিদ ব্যতীত মসজিদের প্রতিবেশীর নামায কবুল হয় না :
রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি আযান শুনেছে আর তার অনুসরণ করতে তাকে কোন ওজর বাধা দেয়নি তবুও সে জামাআতে উপস্থিত হয়নি। তার সে নামায কবূল করা হবে না যা সে একা পড়েছে। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, ওজর কী? তিনি বললেন, শত্রুর ভয় বা রোগ।’’ (আবু দাউদ হা: ৫৫১)
স্বৈরাচার ইমাম, স্বামীকে অসন্তুষ্টকারী স্ত্রী, অনুমতি ছাড়া জানাযার নামাযে ইমামতকারী- এদের নামায কবুল হয় না :
রাসূল ﷺ বলেছেন, তিন ব্যক্তির নামায কবুল করা হয় না, তা আকাশে উঠিয়ে নেয়া হয় না এবং তা তাদের মাথাকেও অতিক্রম করে না।
(১) ঐ ব্যক্তি, যে কোন সম্প্রদায়ের ইমামতী করে অথচ সম্প্রদায়ের লোকেরা (তার অনাচারের কারণে) তাকে অপছন্দ করে।
(২) ঐ ব্যক্তি, যে কারো জানাযার নামায আদায় করে অথচ তাকে এর নির্দেশ দেয়া হয়নি।
(৩) ঐ মহিলা, যাকে তার স্বামী রাত্রিতে আহবান করেছে অথচ সে তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। (সহীহ ইবনে খুযাইমা হা: ১৫১৮)
মুসলিম ভাইয়ের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে আল্লাহর ক্ষমা পাওয়া যায় না :
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বললেন, সোমবার ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়। যেসব অপরাধী আল্লাহর সাথে শিরক করেনি তাদেরকে ক্ষমা করা হয়। কিন্তু পরস্পর সম্পর্ক ছিন্নকারী ব্যক্তি সম্পর্কে বলা হয় যে, এদেরকে ফিরিয়ে দাও যতক্ষণ না এরা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা স্থাপন করে। (সহীহ মুসলিম)
তবে কেউ যদি ঈমান রক্ষার জন্য কারো সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে তবে তাতে গুনাহ হবে না। আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বললেন, ‘‘ঈমানের প্রকৃত স্বাদ সেই পাবে যে আল্লাহর জন্যই কাউকে ভালবাসে এবং সম্পর্ক ছিন্ন করে।’’ (বুখারী, মুসলিম)
হারাম পন্থায় উপার্জনকারীর দান কবুল হয় না :
রাসূল ﷺ বলেছেন, হারাম পন্থায় উপার্জিত মালের সদাক্বা কবুল হয় না।
(সহীহ মুসলিম, মুসনাদ আহমাদ হা: ৫২০৫)
আবদুল্লাহ ইবনে মাস‘উদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূল ﷺ বলেছেন, কোন বান্দা হারাম বা অবৈধ উপায়ে উপার্জিত অর্থ থেকে খরচ করলে তাতে বরকত হবে না। যদি সে তা থেকে দান করে তবে তা কবুল হবে না। তার ঐ ধন-সম্পদ তার উত্তরাধিকারীদের জন্য রেখে গেলে তা তার জন্য জাহান্নামের পুঁজি হবে। মন্দের দ্বারা মন্দ কাটে না (অর্থাৎ হারাম মাল দান করলে গুনাহ মাফ হয় না)। কিন্তু ভাল দ্বারা মন্দ কেটে যায় (অর্থা হালাল মাল দান করলে গুনাহ মাফ করা হয়। (ত্বাবারানী কাবীর হা: ১০৪০১)
আনাস (রাঃ) বলেন, আমি একদা রাসূল ﷺ কে বললাম, আপনি আল্লাহর নিকট দো‘আ করুন তিনি যেন আমার দো‘আ কবুল করেন। রাসূল ﷺ বললেন, হে আনাস! তুমি হালাল রোজগার কর, তোমার দো‘আ কবুল হবে। কোন ব্যক্তি যখন হারাম লোকমা মুখে রাখেবে তখন ৪০ দিন তার দো‘আ কবুল হয় না। (ত্বাবারানী) নিচের হাদীসটি যয়ীফ।
ইবনে উমর (রাঃ) বর্ণনা করেন : ‘‘যে ব্যক্তি দশ মুদ্রায় একটি কাপড় কিনেছে আর তাতে একটি মুদ্রা হারাম থাকে এ কাপড়টি যতক্ষণ পর্যন্ত তার পরনে থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত তার নামায কবুল হবে না।’’ ইবনে উমর (রাঃ) এ বর্ণনা পর তার উভয় কানে আঙ্গুল দিয়ে বললেন, আমার কর্ণদ্বয় বধির হয়ে যাবে যদি এ বর্ণনা আমি রাসূল ﷺ কে বলতে শুনে না থাকি। (আহমাদ হা: ৫৭৩২)
উপার্জন হালাল না হলে দো‘আ কবুল হয় না :
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ -صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- « أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا وَّإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِيْنَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِيْنَ فَقَالَ ( يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوْا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوْا صَالِحًا إِنِّى بِمَا تَعْمَلُوْنَ عَلِيْمٌ ) وَقَالَ ( يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا كُلُوْا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ ) » . ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيْلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ يَا رَبِّ يَا رَبِّ وَمَطْعَمُهٗ حَرَامٌ وَّمَشْرَبُهٗ حَرَامٌ وَّمَلْبَسُهٗ حَرَامٌ وَّغُذِىَ بِالْحَرَامِ فَأَنّٰى يُسْتَجَابُ لِذٰلِكَ
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘হে লোকসকল! নিশ্চয় আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্র ছাড়া কোন কিছু গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা‘আলা নবীদেরকে যে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুমিনদেরকেও একই নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেছেন, ‘হে রাসূলগণ! তোমরা পবিত্র জিনিস খাও এবং নেক আমল কর। নিশ্চয় তোমরা যা কর সে বিষয়ে আমি অবগত আছি।’ আল্লাহ আরো বলেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! আমি তোমাদেরকে যে রিযিক দান করেছি তা থেকে তোমরা পবিত্র জিনিস খাও।’
অতঃপর তিনি এমন এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন যে দীর্ঘ সফর করে, এলোমেলো কেশবিশিষ্ট, ধূলোমলিন শরীর, সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, হে আমার রব! হে আমার রব! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং হারামের দ্বারা সে প্রতিপালিত হচ্ছে, সুতরাং কিভাবে তার দো‘আ কবুল হবে? (মুসলিম হাঃ : ২৩৯৩, মেশকাত হা: ২৭৬০)
উল্লেখ্য, যে সকল দেশে ইসলামী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত নেই সেখানে সরকারী-বেসরকারীভাবে সুদভিত্তিক ব্যাংকিং ও ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রয়েছে বিধায় সেখানে বসবাসরত মুসলিমরা কমবেশি সুদের সাথে জড়িয়ে পড়তে বাধ্য। এমতাবস্থায় এর কুফল হতে বাঁচার জন্য করণীয় হল :
ক. সুদের পৃষ্ঠপোষকদের কোনরূপ সমর্থন না করা।
খ. যথাসম্ভব হালাল উপার্জন করা এবং হারাম থেকে দূরে থাকা।
গ. ইসলামী আইন বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা, যাতে হারামের সকল পথই বন্ধ হয়ে যায়।
ঘ. আল্লাহ তা‘আলা যেন এই অনিচ্ছাকৃত হারামের কারণে ইবাদাতকে বরবাদ না করেন সেজন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া।
ঙ. ইসলামী ব্যাংকিং চালু করা এবং একে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করা।
চ. সর্বাবস্থায় আল্লাহর সাহায্য কামনা করা, যাতে পরিবেশ অনুকূলে এসে যায়।
যারা উপরোক্ত কাজগুলো না করে সুদ ও অন্যান্য হারামের পৃষ্ঠপোষকদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে, নিজেকে দায়িত্বমুক্ত ভেবে নীরব ভূমিকা পালন করবে, অর্থাৎ যেসব হারাম তাকে বিচলিত করছে না, সে আল্লাহর দরবারে আসামী সাব্যস্ত হবে। কারণ সে হারাম থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার প্রয়োজন মনে করেনি এবং চেষ্টাও করেনি।
সৎকাজের আদেশ এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ না করলে দো‘আ কবুল হয় না :
আয়েশা (রাঃ) হতে মারফু সূত্রে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘‘হে লোকসকল! আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে বলেছেন, তোমরা সৎকাজের আদেশ কর এবং অসৎ কাজের নিষেধ কর। নতুবা তোমরা আমার কাছে দো‘আ করবে আমি তা কবুল করব না, আমার কাছে চাইবে কিন্তু আমি দেব না, আমার কাছে সাহায্য চাইবে কিন্তু আমি সাহায্য করব না’’। (আহমাদ)
এ হাদীসটিতে খুব গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা রয়েছে। আমরা অনেকেই নিজেদের আমল ভাল করার চেষ্টা করি অথচ নিজ পরিবার ও সমাজ সম্পর্কে উদাসীন থাকি। নিজের স্ত্রী ও সন্তানরা দ্বীনের পথে আছে কি না সে দিকে মনোযোগ দেই না। তাই আল্লাহর দরবারে আমাদের দো‘আ কবুল হওয়ার জন্য পরিবার ও সমাজকেও দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে।
তাকওয়া বা আল্লাহভীতি হচ্ছে আমল কবুলের মূল ভিত্তি :
আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
وَاتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ ابْنَيْ آدَمَ بِالْحَقِّ إِذْ قَرَّبَا قُرْبَانًا فَتُقُبِّلَ مِنْ أَحَدِهِمَا وَلَمْ يُتَقَبَّلْ مِنَ الْآخَرِ قَالَ لَاَقْتُلَنَّكَ قَالَ إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللهُ مِنَ الْمُتَّقِيْنَ
‘‘তুমি তাদের সঠিকভাবে শুনাও আদমের দুই পুত্রের বিবরণ। যখন তারা কুরবানী করেছিল তখন তাদের একজনের কুরবানী কবুল করা হয়েছিল এবং অপরজনের কুরবানী কবুল করা হয়নি। সে বলল, ‘‘অবশ্যই আমি তোমাকে হত্যা করব।’’ অপরজন বলল, ‘‘আল্লাহ শুধুমাত্র পরহেযগারদের কুরবানীই কবুল করেন।’’ (সূরা মায়িদা- ২৭)
আদম এর দুই পুত্র হাবিল ও কাবিল উভয়ই কুরবানী করেছিল। হাবিলের কুরবানী কবুল করা হল কিন্তু কাবিলেরটা কবুল করা হয়নি। কারণ হাবিলের কুরবানীর ভিত্তি ছিল তাকওয়া তথা আল্লাহভীতি আর কাবিলের কুরবানীতে তা ছিল না।
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছু আবিষ্কার করবে অথবা কোন বিদআতীকে আশ্রয় দেবে তার উপর আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতা এবং সমগ্র মানবকূলের অভিশাপ বর্ষিত হোক। তার কোন ফরজ ও নফল ইবাদাত কবুল হবে না।’’
(সহীহুল বুখারী, হা: ৩১৮০, মুসলিম, ত্বাবরানী)
বিদআত ও মনগড়া আমল যতই ভাল দেখা যাকনা কেন, তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
গণক ও জ্যোতিষীর কাছে গমনকারীর আমল কবুল হয় না :
জ্যোতিষ বা গণকের কথা বিশ্বাস করলে আমল কবুল হবে না। রাসূল ﷺএর কতিপয় স্ত্রী হতে বর্ণিত আছে, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি গণকের নিকট আসবে এবং সে যা বলে তা বিশ্বাস করবে, সে ব্যক্তির চল্লিশ রাত (দিনের) নামায কবুল হবে না।’’ (মুসলিম হা: ৫৯৫৭)
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি (জ্যোতিষী) গণকের নিকট আসবে এবং সে যা বলে তার কথায় বিশ্বাস করবে, সে মুহাম্মাদ ﷺ এর প্রতি নাযিলকৃত দ্বীনকে অস্বীকার করলো।’’
(সুনান বায়হকী হা: ১৬৯৩৮)
গনকরা ভবিষ্যতের খবর দেয়, অথচ ভবিষ্যতের খবর একমাত্র আল্লাহই জানেন, তাই এদের কথা বিশ্বাস করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত।
মদ্য পানকারীর আমল কবুল হয় না :
রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘আমার উম্মাতের মধ্যে যে ব্যক্তি মদ্যপান করবে, তার ৪০ দিনের নামায কবুল হবে না।’’ (সিলসিলা সহীহা হা: ১৮৫৪)
আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘মদ হচ্ছে খবীসের মা। যে মদ পান করে তার ৪০ দিনের নামায কবুল হবে না। তার পেটে মদ থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হলে সে জাহিলিয়্যাতের মৃত্যুবরণ করল।’’ (নাসাঈ হা: ৭০৯)
উল্লেখ্য যে, সহীহ হাদীসে রাসূল ﷺ প্রত্যেকটি নেশা জাতীয় দ্রব্যকে মদ বলেছেন। তাই হেরোইন, ফেনসিডিল, গাজা, আফীম, হুইসকি, ইয়াবা, পেস্টিং ও তামাকজাত দ্রব্য ইত্যাদি মাদকের অন্তর্ভুক্ত। তাই এসব নেশাজাতীয় জিনিস থেকে দূরে থাকা সকলের কর্তব্য।
মাতা-পিতার অবাধ্য, খোটাদানকারী, তাকদীর অস্বীকারকারী- এদের আমল কবুল হয় না :
রাসূল ﷺ বললেন, আল্লাহ তা‘আলা তিন প্রকার লোকের ফরজ ও নফল ইবাদাত কবুল করেন না :
(১) মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান।
(২) দান করে খোটাদানকারী ও
(৩) তাকদীর অস্বীকারকারী। (ত্বাবারানী, সিলসিলা সহীহা হা: ১৭৮৫)
মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করা, তাদের কথা শুনা, সেবা-যত্ন করা, তাদের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করা এসবের প্রতি ইসলাম অত্যধিক গুরুত্ব দিয়েছে। স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলা মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করার জন্য বহুবার নির্দেশ দিয়েছেন। রাসূল ﷺও হাদীসের মাধ্যমে মাতা-পিতার আনুগত্য করার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্বারূপ করেছেন। তবে হ্যাঁ, মাতা-পিতা যদি কোন কুফরী বা আল্লাহর নাফমানী হয় এমন কাজের আদেশ করে সেক্ষেত্রে তাদের আনুগত্য করা যাবে না এবং তাদেরকে উত্তম কথার মাধ্যমে বুঝাতে হবে যে, এমনটি করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। (সূরা লুকমান- ১৫)
মুমিন ব্যক্তিকে হত্যা করলে আমল কবুল হয় না :
উবাদা ইবনে সামিত (রাঃ) রাসূল ﷺ থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন মুমিন ব্যক্তিকে ইচ্ছা করে হত্যা করবে এবং তাকে হত্যা করে খুশি হবে, তার কোন ফরজ ও নফল ইবাদাত আল্লাহ কবুল করবেন না। (আবু দাউদ হা: ৪২৭২)
কেউ কোন সাধারণ মুসলিমের নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটালে তার উপর আল্লাহর অভিশাপ এবং ফেরেশতাকূল ও মানবকূল সকলের অভিশাপ বর্ষিত হবে। তার কোন ফরজ ও নফল ইবাদাত কবুল করা হবে না।
পক্ষবাদী নেতার আমল কবুল হবে না :
যে নেতা নেতৃত্ব পরিচালনার ক্ষেত্রে অসৎ উদ্দেশ্য সাধনের লক্ষ্যে কারো পক্ষ অবলম্বন করে চলে তার সম্পর্কে রাসূল ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি মুসলিমদের কোন কিছুর নেতৃত্ব পায় এবং তাদের উপর কারোর পক্ষপাতিত্ব করে নেতৃত্ব পরিচালনা করে, তার উপর আল্লাহর লানাত রয়েছে। আল্লাহ এমন ব্যক্তির কোন প্রকার ফরজ ও নফল ইবাদাত কবুল করবেন না, সে জাহান্নামে প্রবেশ করে। (আহমাদ হা: ২১)
অপবিত্র অবস্থায় নামায কবুল হয় না :
ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল ﷺ বলেছেন, পবিত্রতা ছাড়া নামায কবুল হয় না। (মুসলিম, আহমাদ হা: ৮২০৬)
রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের করো নামায কবুল করবেন না যতক্ষণ না তোমরা অপবিত্রতা থেকে পবিত্রতা অর্জন করো।’’
(বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, হা: ৭৬)
সূরা ফাতিহা না পড়লে নামায কবুল হয় না :
রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যে সালাতে সূরা ফাতিহা পাঠ করা হয় না ঐ নামায কবুল করা হয় না।’’ (মুসনাদ আহমাদ হা: ২০৬১৯)
বেপর্দা হয়ে নামায পড়লে কবুল হয় না :
আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘ওড়না ছাড়া প্রাপ্তবয়স্কা মেয়েদের নামায কবুল হয় না।’’
পর্দা এমন এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা ঈমানকে মজবুত ও ইবাদাতকে স্বার্থক করে তুলতে সাহায্য করে। এজন্য ইসলাম প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্কা নর-নারীর জন্য পর্দা ফরজ করে দিয়েছে। এ বিধান ঘরে-বাইরে এমনকি নামায আদায়ের সময়ও যথাযথভাবে পালন করতে হবে। বিশেষ করে মহিলাদের জন্য পর্দার বিষয়টি আরো গুরুত্বপূর্ণ। কেননা রাসূল ﷺ বলেছেন, নামাযের সময় ওড়না পরিধান করে না এমন প্রাপ্তবয়স্কা মেয়ের নামায কবুল হবে না।
আল্লাহর বিধান অনুযায়ী বিচার না করলে নামায কবুল হয় না :
রাসূল ﷺ বললেন, ‘‘যে বিচারক আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অনুযায়ী ফায়সালা করবে না আল্লাহ তার নামায কবুল করবেন না।’’ (হাকিম)
মহিলা খুশবু লাগিয়ে মসজিদে গেলে নামায কবুল হয় না :
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, একদা আমার সাথে এক মহিলার দেখা হল, যার শরীর থেকে সুগন্ধি বের হচ্ছিল এবং তার (পাতলা) কাপড়ও বাতাসে উড়ছিল। তখন আমি তাকে বললাম, হে বেহায়া মহিলা! তুমি কি মসজিদ থেকে আসেছো? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বলেন, তুমি কি খুশবু ব্যবহার করেছো? সে বলল, হ্যাঁ। তখন আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল ﷺ কে বলতে শুনেছি, যে মহিলা খুশবু লাগিয়ে মসজিদে আসে তার নামায কবুল হয় না, যতক্ষণ না সে ফিরে গিয়ে ফরজ গোসলের ন্যায় গোসল করে। (এমন উত্তমরূপে গোসল করে যাতে তার দেহে কোন সুগন্ধি না থাকে)। (মুসলিম, আবু দাউদ হা: ৩৬৪৩)
উল্লেখ্য যে, স্বামীকে খুশি করার জন্য স্ত্রী ঘরে রং ও খুশবু ব্যবহার করতে পারবে।
মসজিদ ব্যতীত মসজিদের প্রতিবেশীর নামায কবুল হয় না :
রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি আযান শুনেছে আর তার অনুসরণ করতে তাকে কোন ওজর বাধা দেয়নি তবুও সে জামাআতে উপস্থিত হয়নি। তার সে নামায কবূল করা হবে না যা সে একা পড়েছে। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, ওজর কী? তিনি বললেন, শত্রুর ভয় বা রোগ।’’ (আবু দাউদ হা: ৫৫১)
স্বৈরাচার ইমাম, স্বামীকে অসন্তুষ্টকারী স্ত্রী, অনুমতি ছাড়া জানাযার নামাযে ইমামতকারী- এদের নামায কবুল হয় না :
রাসূল ﷺ বলেছেন, তিন ব্যক্তির নামায কবুল করা হয় না, তা আকাশে উঠিয়ে নেয়া হয় না এবং তা তাদের মাথাকেও অতিক্রম করে না।
(১) ঐ ব্যক্তি, যে কোন সম্প্রদায়ের ইমামতী করে অথচ সম্প্রদায়ের লোকেরা (তার অনাচারের কারণে) তাকে অপছন্দ করে।
(২) ঐ ব্যক্তি, যে কারো জানাযার নামায আদায় করে অথচ তাকে এর নির্দেশ দেয়া হয়নি।
(৩) ঐ মহিলা, যাকে তার স্বামী রাত্রিতে আহবান করেছে অথচ সে তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। (সহীহ ইবনে খুযাইমা হা: ১৫১৮)
মুসলিম ভাইয়ের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে আল্লাহর ক্ষমা পাওয়া যায় না :
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বললেন, সোমবার ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়। যেসব অপরাধী আল্লাহর সাথে শিরক করেনি তাদেরকে ক্ষমা করা হয়। কিন্তু পরস্পর সম্পর্ক ছিন্নকারী ব্যক্তি সম্পর্কে বলা হয় যে, এদেরকে ফিরিয়ে দাও যতক্ষণ না এরা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা স্থাপন করে। (সহীহ মুসলিম)
তবে কেউ যদি ঈমান রক্ষার জন্য কারো সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে তবে তাতে গুনাহ হবে না। আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বললেন, ‘‘ঈমানের প্রকৃত স্বাদ সেই পাবে যে আল্লাহর জন্যই কাউকে ভালবাসে এবং সম্পর্ক ছিন্ন করে।’’ (বুখারী, মুসলিম)
হারাম পন্থায় উপার্জনকারীর দান কবুল হয় না :
রাসূল ﷺ বলেছেন, হারাম পন্থায় উপার্জিত মালের সদাক্বা কবুল হয় না।
(সহীহ মুসলিম, মুসনাদ আহমাদ হা: ৫২০৫)
আবদুল্লাহ ইবনে মাস‘উদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূল ﷺ বলেছেন, কোন বান্দা হারাম বা অবৈধ উপায়ে উপার্জিত অর্থ থেকে খরচ করলে তাতে বরকত হবে না। যদি সে তা থেকে দান করে তবে তা কবুল হবে না। তার ঐ ধন-সম্পদ তার উত্তরাধিকারীদের জন্য রেখে গেলে তা তার জন্য জাহান্নামের পুঁজি হবে। মন্দের দ্বারা মন্দ কাটে না (অর্থাৎ হারাম মাল দান করলে গুনাহ মাফ হয় না)। কিন্তু ভাল দ্বারা মন্দ কেটে যায় (অর্থা হালাল মাল দান করলে গুনাহ মাফ করা হয়। (ত্বাবারানী কাবীর হা: ১০৪০১)
আনাস (রাঃ) বলেন, আমি একদা রাসূল ﷺ কে বললাম, আপনি আল্লাহর নিকট দো‘আ করুন তিনি যেন আমার দো‘আ কবুল করেন। রাসূল ﷺ বললেন, হে আনাস! তুমি হালাল রোজগার কর, তোমার দো‘আ কবুল হবে। কোন ব্যক্তি যখন হারাম লোকমা মুখে রাখেবে তখন ৪০ দিন তার দো‘আ কবুল হয় না। (ত্বাবারানী) নিচের হাদীসটি যয়ীফ।
ইবনে উমর (রাঃ) বর্ণনা করেন : ‘‘যে ব্যক্তি দশ মুদ্রায় একটি কাপড় কিনেছে আর তাতে একটি মুদ্রা হারাম থাকে এ কাপড়টি যতক্ষণ পর্যন্ত তার পরনে থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত তার নামায কবুল হবে না।’’ ইবনে উমর (রাঃ) এ বর্ণনা পর তার উভয় কানে আঙ্গুল দিয়ে বললেন, আমার কর্ণদ্বয় বধির হয়ে যাবে যদি এ বর্ণনা আমি রাসূল ﷺ কে বলতে শুনে না থাকি। (আহমাদ হা: ৫৭৩২)
উপার্জন হালাল না হলে দো‘আ কবুল হয় না :
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ -صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- « أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا وَّإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِيْنَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِيْنَ فَقَالَ ( يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوْا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوْا صَالِحًا إِنِّى بِمَا تَعْمَلُوْنَ عَلِيْمٌ ) وَقَالَ ( يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا كُلُوْا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ ) » . ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيْلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ يَا رَبِّ يَا رَبِّ وَمَطْعَمُهٗ حَرَامٌ وَّمَشْرَبُهٗ حَرَامٌ وَّمَلْبَسُهٗ حَرَامٌ وَّغُذِىَ بِالْحَرَامِ فَأَنّٰى يُسْتَجَابُ لِذٰلِكَ
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘হে লোকসকল! নিশ্চয় আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্র ছাড়া কোন কিছু গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা‘আলা নবীদেরকে যে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুমিনদেরকেও একই নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেছেন, ‘হে রাসূলগণ! তোমরা পবিত্র জিনিস খাও এবং নেক আমল কর। নিশ্চয় তোমরা যা কর সে বিষয়ে আমি অবগত আছি।’ আল্লাহ আরো বলেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! আমি তোমাদেরকে যে রিযিক দান করেছি তা থেকে তোমরা পবিত্র জিনিস খাও।’
অতঃপর তিনি এমন এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন যে দীর্ঘ সফর করে, এলোমেলো কেশবিশিষ্ট, ধূলোমলিন শরীর, সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, হে আমার রব! হে আমার রব! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং হারামের দ্বারা সে প্রতিপালিত হচ্ছে, সুতরাং কিভাবে তার দো‘আ কবুল হবে? (মুসলিম হাঃ : ২৩৯৩, মেশকাত হা: ২৭৬০)
উল্লেখ্য, যে সকল দেশে ইসলামী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত নেই সেখানে সরকারী-বেসরকারীভাবে সুদভিত্তিক ব্যাংকিং ও ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রয়েছে বিধায় সেখানে বসবাসরত মুসলিমরা কমবেশি সুদের সাথে জড়িয়ে পড়তে বাধ্য। এমতাবস্থায় এর কুফল হতে বাঁচার জন্য করণীয় হল :
ক. সুদের পৃষ্ঠপোষকদের কোনরূপ সমর্থন না করা।
খ. যথাসম্ভব হালাল উপার্জন করা এবং হারাম থেকে দূরে থাকা।
গ. ইসলামী আইন বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা, যাতে হারামের সকল পথই বন্ধ হয়ে যায়।
ঘ. আল্লাহ তা‘আলা যেন এই অনিচ্ছাকৃত হারামের কারণে ইবাদাতকে বরবাদ না করেন সেজন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া।
ঙ. ইসলামী ব্যাংকিং চালু করা এবং একে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করা।
চ. সর্বাবস্থায় আল্লাহর সাহায্য কামনা করা, যাতে পরিবেশ অনুকূলে এসে যায়।
যারা উপরোক্ত কাজগুলো না করে সুদ ও অন্যান্য হারামের পৃষ্ঠপোষকদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে, নিজেকে দায়িত্বমুক্ত ভেবে নীরব ভূমিকা পালন করবে, অর্থাৎ যেসব হারাম তাকে বিচলিত করছে না, সে আল্লাহর দরবারে আসামী সাব্যস্ত হবে। কারণ সে হারাম থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার প্রয়োজন মনে করেনি এবং চেষ্টাও করেনি।
সৎকাজের আদেশ এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ না করলে দো‘আ কবুল হয় না :
আয়েশা (রাঃ) হতে মারফু সূত্রে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘‘হে লোকসকল! আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে বলেছেন, তোমরা সৎকাজের আদেশ কর এবং অসৎ কাজের নিষেধ কর। নতুবা তোমরা আমার কাছে দো‘আ করবে আমি তা কবুল করব না, আমার কাছে চাইবে কিন্তু আমি দেব না, আমার কাছে সাহায্য চাইবে কিন্তু আমি সাহায্য করব না’’। (আহমাদ)
এ হাদীসটিতে খুব গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা রয়েছে। আমরা অনেকেই নিজেদের আমল ভাল করার চেষ্টা করি অথচ নিজ পরিবার ও সমাজ সম্পর্কে উদাসীন থাকি। নিজের স্ত্রী ও সন্তানরা দ্বীনের পথে আছে কি না সে দিকে মনোযোগ দেই না। তাই আল্লাহর দরবারে আমাদের দো‘আ কবুল হওয়ার জন্য পরিবার ও সমাজকেও দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে।
তাকওয়া বা আল্লাহভীতি হচ্ছে আমল কবুলের মূল ভিত্তি :
আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
وَاتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ ابْنَيْ آدَمَ بِالْحَقِّ إِذْ قَرَّبَا قُرْبَانًا فَتُقُبِّلَ مِنْ أَحَدِهِمَا وَلَمْ يُتَقَبَّلْ مِنَ الْآخَرِ قَالَ لَاَقْتُلَنَّكَ قَالَ إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللهُ مِنَ الْمُتَّقِيْنَ
‘‘তুমি তাদের সঠিকভাবে শুনাও আদমের দুই পুত্রের বিবরণ। যখন তারা কুরবানী করেছিল তখন তাদের একজনের কুরবানী কবুল করা হয়েছিল এবং অপরজনের কুরবানী কবুল করা হয়নি। সে বলল, ‘‘অবশ্যই আমি তোমাকে হত্যা করব।’’ অপরজন বলল, ‘‘আল্লাহ শুধুমাত্র পরহেযগারদের কুরবানীই কবুল করেন।’’ (সূরা মায়িদা- ২৭)
আদম এর দুই পুত্র হাবিল ও কাবিল উভয়ই কুরবানী করেছিল। হাবিলের কুরবানী কবুল করা হল কিন্তু কাবিলেরটা কবুল করা হয়নি। কারণ হাবিলের কুরবানীর ভিত্তি ছিল তাকওয়া তথা আল্লাহভীতি আর কাবিলের কুরবানীতে তা ছিল না।
মুমিন বান্দা যেখানে যে পরিবেশই থাকুক না কেন সেখান থেকেই তার নেক আমল করে যাওয়া উচিত। কোন বিশেষ সুযোগের অপেক্ষায় থাকা উচিত নয়, কেননা সে সুযোগ হয়ত নাও আসতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে সে সুযোগ হাতে আসে না। আবার সেই সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকারও কোন নিশ্চয়তা বান্দার কাছে নেই।
আল্লাহ তা‘আলা সৎকর্মের দিকে দ্রুত অগ্রসর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন :
فَاسْتَبِقُوا الْخَيْرَاتِ أَيْنَ مَا تَكُوْنُوْا يَأْتِ بِكُمُ اللهُ جَمِيْعًا إِنَّ اللهَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ
‘‘তোমরা কল্যাণের দিকে ধাবিত হও; তোমরা যেখানেই থাক না কেন আল্লাহ তোমাদের সকলকেই একত্রিত করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে পূর্ণ ক্ষমতাবান।’’ (সূরা বাকারা- ১৪৮)
وَسَارِعُوْا إِلٰى مَغْفِرَةٍ مِّنْ رَّبِّكُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا السَّمَاوَاتُ وَالْاَرْضُ أُعِدَّتْ لِلْمُتَّقِيْنَ
‘‘তোমরা স্বীয় প্রতিপালকের ক্ষমা ও জান্নাতের দিকে দ্রুত ধাবিত হও, যার প্রসস্ততা ও বিস্তৃতি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সমান, ওটা মুত্তকীদের জন্য নির্মিত হয়েছে।’’ (সূরা আলে ইমরান- ১৩৩)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
أَلَمْ يَأْنِ لِلَّذِيْنَ آمَنُوْا أَنْ تَخْشَعَ قُلُوْبُهُمْ لِذِكْرِ اللهِ وَمَا نَزَلَ مِنَ الْحَقِّ
‘‘মুমিন লোকদের জন্য কি এখনও সময় আসেনি যে, তারা আল্লাহর স্মরণ এবং যে সত্য অবতীর্ণ হয়েছে তার সম্মুখে অবনত হবে?’’ (সূরা হাদীদ- ১৬)
মৃত্যু আসলে মানুষ সময় চাইবে কিন্তু সময় দেয়া হবে না :
لِكُل-ِّ أُمَّةٍ أَجَلٌ إِذَا جَاءَ أَجَلُهُمْ فَلَا يَسْتَأْخِرُوْنَ سَاعَةً وَّ لَا يَسْتَقْدِمُوْنَ
‘‘প্রত্যেক জাতির এক নির্দিষ্ট সময় আছে; যখন তাদের সময় আসবে তখন তারা মুহূর্তকালও বিলম্ব করতে পারবে না।’’ (সূরা ইউনুস- ৪৯)
حَتّٰى إِذَا جَاءَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ رَبِّ ارْجِعُوْنِ ---- لَعَلِّيْ أَعْمَلُ صَالِحًا فِيْمَا تَرَكْتُ كَلَّا إِنَّهَا كَلِمَةٌ هُوَ قَائِلُهَا وَمِنْ وَرَائِهِمْ بَرْزَخٌ إِلٰى يَوْمِ يُبْعَثُوْنَ
‘‘যখন তাদের কারও মৃত্যু আসবে তখন সে বলবে আমাকে ফিরিয়ে দিন যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি যা আমি পূর্বে করিনি।’ না, এটা হবার নয়। এটা তো তার একটি উক্তি মাত্র। তাদের সম্মুখে বার্যাখ (কবরের জীবন) থাকবে কিয়ামত দিবস পর্যমত্ম।’’ (সূরা মু’মিনূন- ১০০)
اِقْتَرَبَ لِلنَّاسِ حِسَابُهُمْ وَهُمْ فِي غَفْلَةٍ مُعْرِضُوْنَ
‘‘মানুষের হিসাব-নিকাশের সময় আসন্ন, কিন্তু তারা উদাসীনতায় মুখ ফিরিয়ে রয়েছে।’’ (সূরা আম্বিয়া- ১)
একদিনের ব্যবধানে সদকা গ্রহণের লোক পাওয়া যাবে না :
عَنْ حَارِثَةَ بْنَ وَهْبٍ قَالَ : سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ يَقُوْلُ : تَصَدَّقُوْا فَإِنَّهٗ يَأْتِي عَلَيْكُمْ زَمَانٌ يَمْشِي الرَّجُلُ بِصَدَقَتِهٖ، فَلَا يَجِدُ مَنْ يَّقْبَلُهَا يَقُوْلُ الرَّجُلُ لَوْ : جِئْتَ بِهَا بِالْاَمْسِ لَقَبِلْتُهَا، فَأَمَّا الْيَوْمَ فَلَاحَاجَةَ لِيْ بِهَا
হারিসা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আমি নবী ﷺ কে বলতে শুনেছি, ‘‘তোমরা (তাড়াতাড়ি) দান কর। কারণ তোমাদের উপর এমন এক সময় আসবে, যখন মানুষ যাকাত নিয়ে ঘুরতে থাকবে, অথচ এমন কাউকে খুঁজে পাবে না যে তা গ্রহণ করবে। মানুষ বলবে, তুমি যদি গতকাল তা নিয়ে আগমন করতে তবে অবশ্যই আমি তা গ্রহণ করতাম, কিন্তু আজ আমার প্রয়োজন নেই।’’ (বুখারী হা: ৪১১)
শয়তান মানুষকে অনর্থক আশার মধ্যে ব্যস্ত রাখে :
يَعِدُهُمْ وَيُمَنِّيْهِمْ وَمَا يَعِدُهُمُ الشَّيْطَانُ إِلَّا غُرُوْرًا
‘‘সে তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেয় এবং তাদের হৃদয়ে মিথ্যা বাসনা সৃষ্টি করে; আর শয়তান তাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয় তা ছলনা মাত্র।’’ (সূরা নিসা- ১২০)
মানুষের নফস কেবল এ প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে যে, আগামীকাল আমল শুরু করবে, তাই এটা পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে যে অতীতে যেহেতু আগামীকাল পার হয়ে গেছে তাই আজকের পরের আগামীকালও এরকম চলে যাবে।
কেহ কেহ মনের মধ্যে লুকিয়ে রাখে বয়স হলে আমল করব। এটাও শয়তানের ধোঁকা ছাড়া আর কিছু নয়।
শয়তান মানুষকে প্রথমে গুনাহ করার আদেশ করে। গুনাহে লিপ্ত করতে না পারলে আমল থেকে দূরে রাখতে চায় :
اَلشَّيْطَانُ يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ وَيَأْمُرُكُمْ بِالْفَحْشَاءِ وَاللهُ يَعِدُكُمْ مَّغْفِرَةً مِّنْهُ وَفَضْلًا وَّاللهُ وَاسِعٌ عَلِيْمٌ
‘‘শয়তান তোমাদেরকে অভাবের ভয় দেখায় এবং অশ্লীল কাজের আদেশ দেয়; অথচ আল্লাহ তোমাদেরকে তার পক্ষ থেকে ক্ষমা এবং অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন। আর আল্লাহ অসীম করুণাময় ও মহাজ্ঞানী।’’
(সূরা বাকারা- ২৬৮)
اِسْتَحْوَذَ عَلَيْهِمُ الشَّيْطَانُ فَأَنْسَاهُمْ ذِكْرَ اللهِ أُولٰئِكَ حِزْبُ الشَّيْطَانِ أَلَا إِنَّ حِزْبَ الشَّيْطَانِ هُمُ الْخَاسِرُوْنَ
‘‘শয়তান তাদের উপর পরিপূর্ণ আধিপত্য বিস্তার করে নিয়েছে আর সে তাদেরকে আল্লাহর স্মরণ ভুলিয়ে দিয়েছে। তারা তো শয়তানের দল। জেনে রেখ, শয়তানের দল নিশ্চয় ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’’ (সূরা মুজাদালা- ১৯)
আর কোন মানুষ যখন শয়তানের সাথে যুদ্ধ করে আমল শুরু করে দেয় তখন শয়তান আমল থেকে মনোযোগ নষ্ট করার কাজে লিপ্ত হয়। এজন্য অনেকক্ষেত্রে অর্থ জানা সত্বেও নামায বা অন্যান্য দো‘আ দরূদ যা আমরা পড়ি তার অর্থের দিকে খেয়াল রাখি না। মুখে কুরআন পড়ছি আর অন্তরে অন্য বিষয়ে চিন্তা করছি অথচ আল্লাহ বলেন, ‘‘আমার স্মরণেই নামায কায়েম কর।’’ (সূরা ত্বোহা- ১৪)
আমলে ব্যঘাত ঘটলেই সর্তক হতে হবে :
إِنَّ الَّذِيْنَ اتَّقَوْا إِذَا مَسَّهُمْ طَائِفٌ مِّنَ الشَّيْطَانِ تَذَكَّرُوْا فَإِذَا هُمْ مُبْصِرُوْنَ
‘‘যারা তাকওয়ার অধিকারী হয় তাদেরকে শয়তান যখন কুমন্ত্রণা দেয় তখন তারা আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তৎক্ষণাৎ তাদের চক্ষু খুলে যায়।’’ (সূরা আরাফ-২০১)
সুযোগ আসলে বা বয়স বাড়লে আমল করব, এ আশায় বসে থাকা এটা মানুষের একটা কুঅভ্যাস।
মানুষের একেকটা কুঅভ্যাস একেকটা গাছের ন্যায়। মানুষের বয়স যত বাড়ে তার কুঅভ্যাসগুলোও তত স্থায়ী ও শক্তিশালী হয়। ছোট চারা গাছকে সহজেই মাটি থেকে উঠানো যায়। কিন্তু গাছটা বড় হয়ে গেলে কোন জোয়ানও সেটাকে উঠাতে পারে না। এখন আমাদের মধ্যে যেসকল দোষ আছে তা যদি ছোট বেলা থেকে দূর না করি তাহলে বড় হয়ে দূর করা আরো কঠিন হয়ে পড়বে। আর বৃদ্ধ হয়ে গেলে তো আমরা আরো দূর্বল হয়ে পড়ব। মানুষের একেকটি কুঅভ্যাস আল্লাহর পথে একেকটি তালা। তাই আমাদের উচিত হবে আর অপেক্ষা না করে আজই একটি একটি করে নিজের দোষগুলো ধরা আর তা দূর করার চেষ্টা অভ্যাহত রাখা এবং সেই সাথে ভাল আমল করার অভ্যাস গড়ে তুলা। প্রতিদিনের আমল সে দিনেই করতে হবে আগামীকাল হয়ত আরও বড় কোন কাজ সামনে আসতে পারে। সুতরাং আজকের দিনই আমার আমলের সময়। কারণ অতীতকে ফিরিয়ে আনা যায় না আবার ভবিষ্যতেরও নিশ্চয়তা নেই।
আল্লাহ তা‘আলা সৎকর্মের দিকে দ্রুত অগ্রসর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন :
فَاسْتَبِقُوا الْخَيْرَاتِ أَيْنَ مَا تَكُوْنُوْا يَأْتِ بِكُمُ اللهُ جَمِيْعًا إِنَّ اللهَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ
‘‘তোমরা কল্যাণের দিকে ধাবিত হও; তোমরা যেখানেই থাক না কেন আল্লাহ তোমাদের সকলকেই একত্রিত করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে পূর্ণ ক্ষমতাবান।’’ (সূরা বাকারা- ১৪৮)
وَسَارِعُوْا إِلٰى مَغْفِرَةٍ مِّنْ رَّبِّكُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا السَّمَاوَاتُ وَالْاَرْضُ أُعِدَّتْ لِلْمُتَّقِيْنَ
‘‘তোমরা স্বীয় প্রতিপালকের ক্ষমা ও জান্নাতের দিকে দ্রুত ধাবিত হও, যার প্রসস্ততা ও বিস্তৃতি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সমান, ওটা মুত্তকীদের জন্য নির্মিত হয়েছে।’’ (সূরা আলে ইমরান- ১৩৩)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
أَلَمْ يَأْنِ لِلَّذِيْنَ آمَنُوْا أَنْ تَخْشَعَ قُلُوْبُهُمْ لِذِكْرِ اللهِ وَمَا نَزَلَ مِنَ الْحَقِّ
‘‘মুমিন লোকদের জন্য কি এখনও সময় আসেনি যে, তারা আল্লাহর স্মরণ এবং যে সত্য অবতীর্ণ হয়েছে তার সম্মুখে অবনত হবে?’’ (সূরা হাদীদ- ১৬)
মৃত্যু আসলে মানুষ সময় চাইবে কিন্তু সময় দেয়া হবে না :
لِكُل-ِّ أُمَّةٍ أَجَلٌ إِذَا جَاءَ أَجَلُهُمْ فَلَا يَسْتَأْخِرُوْنَ سَاعَةً وَّ لَا يَسْتَقْدِمُوْنَ
‘‘প্রত্যেক জাতির এক নির্দিষ্ট সময় আছে; যখন তাদের সময় আসবে তখন তারা মুহূর্তকালও বিলম্ব করতে পারবে না।’’ (সূরা ইউনুস- ৪৯)
حَتّٰى إِذَا جَاءَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ رَبِّ ارْجِعُوْنِ ---- لَعَلِّيْ أَعْمَلُ صَالِحًا فِيْمَا تَرَكْتُ كَلَّا إِنَّهَا كَلِمَةٌ هُوَ قَائِلُهَا وَمِنْ وَرَائِهِمْ بَرْزَخٌ إِلٰى يَوْمِ يُبْعَثُوْنَ
‘‘যখন তাদের কারও মৃত্যু আসবে তখন সে বলবে আমাকে ফিরিয়ে দিন যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি যা আমি পূর্বে করিনি।’ না, এটা হবার নয়। এটা তো তার একটি উক্তি মাত্র। তাদের সম্মুখে বার্যাখ (কবরের জীবন) থাকবে কিয়ামত দিবস পর্যমত্ম।’’ (সূরা মু’মিনূন- ১০০)
اِقْتَرَبَ لِلنَّاسِ حِسَابُهُمْ وَهُمْ فِي غَفْلَةٍ مُعْرِضُوْنَ
‘‘মানুষের হিসাব-নিকাশের সময় আসন্ন, কিন্তু তারা উদাসীনতায় মুখ ফিরিয়ে রয়েছে।’’ (সূরা আম্বিয়া- ১)
একদিনের ব্যবধানে সদকা গ্রহণের লোক পাওয়া যাবে না :
عَنْ حَارِثَةَ بْنَ وَهْبٍ قَالَ : سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ يَقُوْلُ : تَصَدَّقُوْا فَإِنَّهٗ يَأْتِي عَلَيْكُمْ زَمَانٌ يَمْشِي الرَّجُلُ بِصَدَقَتِهٖ، فَلَا يَجِدُ مَنْ يَّقْبَلُهَا يَقُوْلُ الرَّجُلُ لَوْ : جِئْتَ بِهَا بِالْاَمْسِ لَقَبِلْتُهَا، فَأَمَّا الْيَوْمَ فَلَاحَاجَةَ لِيْ بِهَا
হারিসা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আমি নবী ﷺ কে বলতে শুনেছি, ‘‘তোমরা (তাড়াতাড়ি) দান কর। কারণ তোমাদের উপর এমন এক সময় আসবে, যখন মানুষ যাকাত নিয়ে ঘুরতে থাকবে, অথচ এমন কাউকে খুঁজে পাবে না যে তা গ্রহণ করবে। মানুষ বলবে, তুমি যদি গতকাল তা নিয়ে আগমন করতে তবে অবশ্যই আমি তা গ্রহণ করতাম, কিন্তু আজ আমার প্রয়োজন নেই।’’ (বুখারী হা: ৪১১)
শয়তান মানুষকে অনর্থক আশার মধ্যে ব্যস্ত রাখে :
يَعِدُهُمْ وَيُمَنِّيْهِمْ وَمَا يَعِدُهُمُ الشَّيْطَانُ إِلَّا غُرُوْرًا
‘‘সে তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেয় এবং তাদের হৃদয়ে মিথ্যা বাসনা সৃষ্টি করে; আর শয়তান তাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয় তা ছলনা মাত্র।’’ (সূরা নিসা- ১২০)
মানুষের নফস কেবল এ প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে যে, আগামীকাল আমল শুরু করবে, তাই এটা পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে যে অতীতে যেহেতু আগামীকাল পার হয়ে গেছে তাই আজকের পরের আগামীকালও এরকম চলে যাবে।
কেহ কেহ মনের মধ্যে লুকিয়ে রাখে বয়স হলে আমল করব। এটাও শয়তানের ধোঁকা ছাড়া আর কিছু নয়।
শয়তান মানুষকে প্রথমে গুনাহ করার আদেশ করে। গুনাহে লিপ্ত করতে না পারলে আমল থেকে দূরে রাখতে চায় :
اَلشَّيْطَانُ يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ وَيَأْمُرُكُمْ بِالْفَحْشَاءِ وَاللهُ يَعِدُكُمْ مَّغْفِرَةً مِّنْهُ وَفَضْلًا وَّاللهُ وَاسِعٌ عَلِيْمٌ
‘‘শয়তান তোমাদেরকে অভাবের ভয় দেখায় এবং অশ্লীল কাজের আদেশ দেয়; অথচ আল্লাহ তোমাদেরকে তার পক্ষ থেকে ক্ষমা এবং অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন। আর আল্লাহ অসীম করুণাময় ও মহাজ্ঞানী।’’
(সূরা বাকারা- ২৬৮)
اِسْتَحْوَذَ عَلَيْهِمُ الشَّيْطَانُ فَأَنْسَاهُمْ ذِكْرَ اللهِ أُولٰئِكَ حِزْبُ الشَّيْطَانِ أَلَا إِنَّ حِزْبَ الشَّيْطَانِ هُمُ الْخَاسِرُوْنَ
‘‘শয়তান তাদের উপর পরিপূর্ণ আধিপত্য বিস্তার করে নিয়েছে আর সে তাদেরকে আল্লাহর স্মরণ ভুলিয়ে দিয়েছে। তারা তো শয়তানের দল। জেনে রেখ, শয়তানের দল নিশ্চয় ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’’ (সূরা মুজাদালা- ১৯)
আর কোন মানুষ যখন শয়তানের সাথে যুদ্ধ করে আমল শুরু করে দেয় তখন শয়তান আমল থেকে মনোযোগ নষ্ট করার কাজে লিপ্ত হয়। এজন্য অনেকক্ষেত্রে অর্থ জানা সত্বেও নামায বা অন্যান্য দো‘আ দরূদ যা আমরা পড়ি তার অর্থের দিকে খেয়াল রাখি না। মুখে কুরআন পড়ছি আর অন্তরে অন্য বিষয়ে চিন্তা করছি অথচ আল্লাহ বলেন, ‘‘আমার স্মরণেই নামায কায়েম কর।’’ (সূরা ত্বোহা- ১৪)
আমলে ব্যঘাত ঘটলেই সর্তক হতে হবে :
إِنَّ الَّذِيْنَ اتَّقَوْا إِذَا مَسَّهُمْ طَائِفٌ مِّنَ الشَّيْطَانِ تَذَكَّرُوْا فَإِذَا هُمْ مُبْصِرُوْنَ
‘‘যারা তাকওয়ার অধিকারী হয় তাদেরকে শয়তান যখন কুমন্ত্রণা দেয় তখন তারা আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তৎক্ষণাৎ তাদের চক্ষু খুলে যায়।’’ (সূরা আরাফ-২০১)
সুযোগ আসলে বা বয়স বাড়লে আমল করব, এ আশায় বসে থাকা এটা মানুষের একটা কুঅভ্যাস।
মানুষের একেকটা কুঅভ্যাস একেকটা গাছের ন্যায়। মানুষের বয়স যত বাড়ে তার কুঅভ্যাসগুলোও তত স্থায়ী ও শক্তিশালী হয়। ছোট চারা গাছকে সহজেই মাটি থেকে উঠানো যায়। কিন্তু গাছটা বড় হয়ে গেলে কোন জোয়ানও সেটাকে উঠাতে পারে না। এখন আমাদের মধ্যে যেসকল দোষ আছে তা যদি ছোট বেলা থেকে দূর না করি তাহলে বড় হয়ে দূর করা আরো কঠিন হয়ে পড়বে। আর বৃদ্ধ হয়ে গেলে তো আমরা আরো দূর্বল হয়ে পড়ব। মানুষের একেকটি কুঅভ্যাস আল্লাহর পথে একেকটি তালা। তাই আমাদের উচিত হবে আর অপেক্ষা না করে আজই একটি একটি করে নিজের দোষগুলো ধরা আর তা দূর করার চেষ্টা অভ্যাহত রাখা এবং সেই সাথে ভাল আমল করার অভ্যাস গড়ে তুলা। প্রতিদিনের আমল সে দিনেই করতে হবে আগামীকাল হয়ত আরও বড় কোন কাজ সামনে আসতে পারে। সুতরাং আজকের দিনই আমার আমলের সময়। কারণ অতীতকে ফিরিয়ে আনা যায় না আবার ভবিষ্যতেরও নিশ্চয়তা নেই।
প্রতিটি মুমিনের কর্তব্য হচ্ছে আমলের ক্ষেত্রে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা। রাসূল ﷺবলেছেন-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ قَالَ " إِنَّ الدِّيْنَ يُسْرٌ، وَلَنْ يُشَادَّ الدِّيْنَ أحَدٌ إِلَّا غَلَبَهٗ، فَسَدِّدُوْا وَقَارِبُوْا وَأَبْشِرُوْا، وَاسْتَعِيْنُوْا بِالْغَدْوَةِ وَالرَّوْحَةِ وَشَىْءٍ مِّنَ الدُّلْجَةِ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী ﷺ বলেন, ‘‘দ্বীন খুব সহজ, কেউ দ্বীনের ব্যাপারে কঠোরতা অবলম্বন করলে সে অবশ্যই পরাজিত হবে। সর্বদা মধ্যমপন্থা অবলম্বন কর ও তার নিকটে থাক এবং সুসংবাদ গ্রহণ কর। আর সকাল-সন্ধ্যা ও শেষ রাতের আমল দ্বারা স্বীয় কাজে সাহায্য চাও।’’
(বুখারী হা: ৩৯)
عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَدَخَلَ عَلَيْهَا وَعِنْدَهَا امْرَأَةٌ فَقَالَ : مَنْ هٰذِهٖ؟ قَالَتْ : فُلَانَةُ . تَذْكُرُ مِنْ صَلَاتِهَا . قَالَ مَهْ، عَلَيْكُمْ بِمَا تُطِيْقُوْنَ، فَوَاللهِ لَا يَمَلُّ اللهُ حَتّٰى تَمَلُّوْا . وَكَانَ أَحَبُّ الدِّيْنِ إِلَيْهِ مَا دَاوَمَ عَلَيْهِ صَاحِبُهٗ .
আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর হুজরায় আসলে এক মহিলাকে দেখতে পেলেন। তিনি বললেন এ মহিলা কে? আয়েশা (রাঃ) বললেন, ইনি অমুক মহিলা (যার নাম ‘খাওলা’)। আয়েশা (রাঃ) তার নামাযের কথাও উল্লেখ করলেন। তখন নবী ﷺ বললেন, থাম! তোমরা ঐ আমলই করতে থাক যা তোমাদের সামর্থ্যের মধ্যে হয়। আল্লাহর শপথ! আল্লাহ কখনো ক্লান্ত হন না (পারিশ্রমিক দিতে) যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা ক্লান্ত না হয়ে যাও। আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় আমল তাই যা কোন ব্যক্তি সর্বদা করে থাকে। (বুখারী হা: ৪৩)
عَنْ عَائِشَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ : إِذَا نَعَسَ أَحَدُكُمْ وَهُوَ يُصَلِّيْ فَلْيَرْقُدْ حَتّٰى يَذْهَبَ عَنْهُ النَّوْمُ، فَإِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا صَلَّى وَهُوَ نَاعِسٌ لَا يَدْرِيْ لَعَلَّهٗ يَسْتَغْفِرُ فَيَسُبَّ نَفْسَهٗ
আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছে
ন, ‘‘তোমাদের কেউ যদি নামাযে ঝিমাতে থাকে, তখন সে যেন শুয়ে পড়ে, যাতে তার নিদ্রার ভাব কেটে যায়। কারণ নামায অবস্থায় কেউ যদি ঝিমাতে থাকে তখন সে হয়ত ক্ষমাপার্থনা করার ইচ্ছা করবে অথচ নিজের জন্য বদদো‘আ করে ফেলবে।’’
(বুখারী হা: ২১২)
নবী ﷺ সালমান ও আবু দারদা (রাঃ) এর মাধে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক স্থাপন করে দিলেন। এক সময় সালমান (রাঃ) আবু দারদার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য গেলেন এবং আবু দারদার মাকে খুব ময়লা কাপড় পরিহিতা দেখতে পেলেন। তিনি তাকে প্রশ্ন করলেন, আপনার কি হয়েছে? তিনি বললেন, আপনার ভাই আবু দারদার দুনিয়ার সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই। ইতোমধ্যে আবু দারদা (রাঃ) এসে হাজির হলেন। সালমানের জন্য তিনি খাবার তৈরি করে তাঁকে বললেন, আমি তো রোযা রেখেছি, আপনি খেয়ে নিন। সালমান (রাঃ) বললেন, আপনি না খেলে আমি খাব না। সুতরাং তিনি তাঁর সঙ্গে খেলেন। রাত হলে আবু দারদা নামাযে দাঁড়ালে সালমান তাকে বললেন, শুয়ে পড়ুন। তিনি তখন শুয়ে পড়লেন। পরে আবার নামাযে দাঁড়ালে এবারও সালমান বললেন, শুয়ে পড়ুন। পরে শেষ রাতের দিকে সালমান তাঁকে বললেন, এখন উঠে পড়ুন। অতপর দু’জনেই নামায পড়লেন। তারপর সালমান তাঁকে বললেন, আপনার উপর আপনার প্রতিপালকের হক আছে, আপনার নিজের আত্মার হক আছে এবং আপনার পরিবার-পরিজনেরও হক আছে। তাই প্রত্যেক হকদারকে তার প্রাপ্য দান করুন। এরপর আবু দারদা নবী ﷺ-এর নিকট এসে এসব কথা বললে নবী ﷺ বললেন সালমান ঠিকই বলেছে। (বুখারী হা: ১৯৬৮)
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ الله عَنْهُ يَقُولُ : جَاءَ ثَلَاثَةُ رَهْطٍ إِلٰى بُيُوْتِ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ يَسْأَلُوْنَ عَنْ عِبَادَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ فَلَمَّا أُخْبِرُوْا كَأَنَّهُمْ تَقَالُّوْهَا فَقَالُوْا : وَأَيْنَ نَحْنُ مِنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ ؟ قَدْ غُفِرَ لَهٗ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهٖ وَمَا تَأَخَّرَ . قَالَ أَحَدُهُمْ : أَمَّا أَنَا فَإِنِّيْ أُصَلِّي اللَّيْلَ أَبَدًا . وَقَالَ آخَرُ أَنَا أَصُوْمُ الدَّهْرَ وَلَا أُفْطِرُ . وَقَالَ آخَرُ أَنَا أَعْتَزِلُ النِّسَاءَ فَلَا أَتَزَوَّجُ أَبَدًا . فَجَاءَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ فَقَالَ : " أَنْتُمُ الَّذِيْنَ قُلْتُمْ كَذَا وَكَذَا؟ أَمَا وَاللهِ إِنِّي لَاَخْشَاكُمْ للهِ وَأَتْقَاكُمْ لَهٗ، لَكِنِّي أَصُومُ وَأُفْطِرُ، وَأُصَلِّيْ وَأَرْقُدُ وَأَتَزَوَّجُ النِّسَاءَ، فَمَنْ رَغِبَ عَنْ سُنَّتِيْ فَلَيْسَ مِنِّيْ " .
আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) বলেন, কোন একসময় তিনটি দল রাসূলুল্লাহ ﷺ এর স্ত্রীগণের কাছে তাঁর ইবাদাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য আসেন। নবী ﷺ এর ইবাদাত সম্পর্কে খবর দেয়া হলে তারা যেন তার পরিমাণ খুব কম মনে করলেন এবং বললেন, আমরা নবী ﷺ- এর সমকক্ষ হই কী করে? যাঁর আগের ও পরের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে।
অতঃপর তাদের একজন বললেন, আমি আজীবন রাতভর নামায পড়ব।
দ্বিতীয় জন বললেন, আমি সারাবছর রোযা রাখব, কখনো বিরতি দেব না। তৃতীয় জন বললেন, আমি সর্বদা নারী বিবর্জিত থাকব, কখনো বিয়ে করব না।
এসময় রাসূলুল্লাহ ﷺ তাদের নিকট এসে বললেন, তোমরা কি সেসব ব্যক্তি যারা এমন এমন কথা বলেছ? সাবধান, শুনে রাখো! আল্লাহর শপথ! আমি আল্লাহর প্রতি তোমাদের চেয়ে বেশি অনুগত এবং তাঁকে তোমাদের চেয়ে বেশি ভয় করি। তা সত্ত্বেও আমি রোযা রাখি আবার বিরতিও দেই। রাত্রে নামায পড়ি আবার নিদ্রাও যাই এবং মহিলাদেরকে বিয়েও করি। সুতরাং যারা আমার সুন্নাতের প্রতি অনীহা প্রকাশ করবে, তারা আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়। (বুখারী হা: ৫০৬৩)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ قَالَ " إِنَّ الدِّيْنَ يُسْرٌ، وَلَنْ يُشَادَّ الدِّيْنَ أحَدٌ إِلَّا غَلَبَهٗ، فَسَدِّدُوْا وَقَارِبُوْا وَأَبْشِرُوْا، وَاسْتَعِيْنُوْا بِالْغَدْوَةِ وَالرَّوْحَةِ وَشَىْءٍ مِّنَ الدُّلْجَةِ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী ﷺ বলেন, ‘‘দ্বীন খুব সহজ, কেউ দ্বীনের ব্যাপারে কঠোরতা অবলম্বন করলে সে অবশ্যই পরাজিত হবে। সর্বদা মধ্যমপন্থা অবলম্বন কর ও তার নিকটে থাক এবং সুসংবাদ গ্রহণ কর। আর সকাল-সন্ধ্যা ও শেষ রাতের আমল দ্বারা স্বীয় কাজে সাহায্য চাও।’’
(বুখারী হা: ৩৯)
عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَدَخَلَ عَلَيْهَا وَعِنْدَهَا امْرَأَةٌ فَقَالَ : مَنْ هٰذِهٖ؟ قَالَتْ : فُلَانَةُ . تَذْكُرُ مِنْ صَلَاتِهَا . قَالَ مَهْ، عَلَيْكُمْ بِمَا تُطِيْقُوْنَ، فَوَاللهِ لَا يَمَلُّ اللهُ حَتّٰى تَمَلُّوْا . وَكَانَ أَحَبُّ الدِّيْنِ إِلَيْهِ مَا دَاوَمَ عَلَيْهِ صَاحِبُهٗ .
আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর হুজরায় আসলে এক মহিলাকে দেখতে পেলেন। তিনি বললেন এ মহিলা কে? আয়েশা (রাঃ) বললেন, ইনি অমুক মহিলা (যার নাম ‘খাওলা’)। আয়েশা (রাঃ) তার নামাযের কথাও উল্লেখ করলেন। তখন নবী ﷺ বললেন, থাম! তোমরা ঐ আমলই করতে থাক যা তোমাদের সামর্থ্যের মধ্যে হয়। আল্লাহর শপথ! আল্লাহ কখনো ক্লান্ত হন না (পারিশ্রমিক দিতে) যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা ক্লান্ত না হয়ে যাও। আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় আমল তাই যা কোন ব্যক্তি সর্বদা করে থাকে। (বুখারী হা: ৪৩)
عَنْ عَائِشَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ : إِذَا نَعَسَ أَحَدُكُمْ وَهُوَ يُصَلِّيْ فَلْيَرْقُدْ حَتّٰى يَذْهَبَ عَنْهُ النَّوْمُ، فَإِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا صَلَّى وَهُوَ نَاعِسٌ لَا يَدْرِيْ لَعَلَّهٗ يَسْتَغْفِرُ فَيَسُبَّ نَفْسَهٗ
আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছে
ন, ‘‘তোমাদের কেউ যদি নামাযে ঝিমাতে থাকে, তখন সে যেন শুয়ে পড়ে, যাতে তার নিদ্রার ভাব কেটে যায়। কারণ নামায অবস্থায় কেউ যদি ঝিমাতে থাকে তখন সে হয়ত ক্ষমাপার্থনা করার ইচ্ছা করবে অথচ নিজের জন্য বদদো‘আ করে ফেলবে।’’
(বুখারী হা: ২১২)
নবী ﷺ সালমান ও আবু দারদা (রাঃ) এর মাধে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক স্থাপন করে দিলেন। এক সময় সালমান (রাঃ) আবু দারদার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য গেলেন এবং আবু দারদার মাকে খুব ময়লা কাপড় পরিহিতা দেখতে পেলেন। তিনি তাকে প্রশ্ন করলেন, আপনার কি হয়েছে? তিনি বললেন, আপনার ভাই আবু দারদার দুনিয়ার সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই। ইতোমধ্যে আবু দারদা (রাঃ) এসে হাজির হলেন। সালমানের জন্য তিনি খাবার তৈরি করে তাঁকে বললেন, আমি তো রোযা রেখেছি, আপনি খেয়ে নিন। সালমান (রাঃ) বললেন, আপনি না খেলে আমি খাব না। সুতরাং তিনি তাঁর সঙ্গে খেলেন। রাত হলে আবু দারদা নামাযে দাঁড়ালে সালমান তাকে বললেন, শুয়ে পড়ুন। তিনি তখন শুয়ে পড়লেন। পরে আবার নামাযে দাঁড়ালে এবারও সালমান বললেন, শুয়ে পড়ুন। পরে শেষ রাতের দিকে সালমান তাঁকে বললেন, এখন উঠে পড়ুন। অতপর দু’জনেই নামায পড়লেন। তারপর সালমান তাঁকে বললেন, আপনার উপর আপনার প্রতিপালকের হক আছে, আপনার নিজের আত্মার হক আছে এবং আপনার পরিবার-পরিজনেরও হক আছে। তাই প্রত্যেক হকদারকে তার প্রাপ্য দান করুন। এরপর আবু দারদা নবী ﷺ-এর নিকট এসে এসব কথা বললে নবী ﷺ বললেন সালমান ঠিকই বলেছে। (বুখারী হা: ১৯৬৮)
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ الله عَنْهُ يَقُولُ : جَاءَ ثَلَاثَةُ رَهْطٍ إِلٰى بُيُوْتِ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ يَسْأَلُوْنَ عَنْ عِبَادَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ فَلَمَّا أُخْبِرُوْا كَأَنَّهُمْ تَقَالُّوْهَا فَقَالُوْا : وَأَيْنَ نَحْنُ مِنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ ؟ قَدْ غُفِرَ لَهٗ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهٖ وَمَا تَأَخَّرَ . قَالَ أَحَدُهُمْ : أَمَّا أَنَا فَإِنِّيْ أُصَلِّي اللَّيْلَ أَبَدًا . وَقَالَ آخَرُ أَنَا أَصُوْمُ الدَّهْرَ وَلَا أُفْطِرُ . وَقَالَ آخَرُ أَنَا أَعْتَزِلُ النِّسَاءَ فَلَا أَتَزَوَّجُ أَبَدًا . فَجَاءَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ فَقَالَ : " أَنْتُمُ الَّذِيْنَ قُلْتُمْ كَذَا وَكَذَا؟ أَمَا وَاللهِ إِنِّي لَاَخْشَاكُمْ للهِ وَأَتْقَاكُمْ لَهٗ، لَكِنِّي أَصُومُ وَأُفْطِرُ، وَأُصَلِّيْ وَأَرْقُدُ وَأَتَزَوَّجُ النِّسَاءَ، فَمَنْ رَغِبَ عَنْ سُنَّتِيْ فَلَيْسَ مِنِّيْ " .
আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) বলেন, কোন একসময় তিনটি দল রাসূলুল্লাহ ﷺ এর স্ত্রীগণের কাছে তাঁর ইবাদাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য আসেন। নবী ﷺ এর ইবাদাত সম্পর্কে খবর দেয়া হলে তারা যেন তার পরিমাণ খুব কম মনে করলেন এবং বললেন, আমরা নবী ﷺ- এর সমকক্ষ হই কী করে? যাঁর আগের ও পরের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে।
অতঃপর তাদের একজন বললেন, আমি আজীবন রাতভর নামায পড়ব।
দ্বিতীয় জন বললেন, আমি সারাবছর রোযা রাখব, কখনো বিরতি দেব না। তৃতীয় জন বললেন, আমি সর্বদা নারী বিবর্জিত থাকব, কখনো বিয়ে করব না।
এসময় রাসূলুল্লাহ ﷺ তাদের নিকট এসে বললেন, তোমরা কি সেসব ব্যক্তি যারা এমন এমন কথা বলেছ? সাবধান, শুনে রাখো! আল্লাহর শপথ! আমি আল্লাহর প্রতি তোমাদের চেয়ে বেশি অনুগত এবং তাঁকে তোমাদের চেয়ে বেশি ভয় করি। তা সত্ত্বেও আমি রোযা রাখি আবার বিরতিও দেই। রাত্রে নামায পড়ি আবার নিদ্রাও যাই এবং মহিলাদেরকে বিয়েও করি। সুতরাং যারা আমার সুন্নাতের প্রতি অনীহা প্রকাশ করবে, তারা আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়। (বুখারী হা: ৫০৬৩)
প্রতিটি ইবাদাত তার নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী হওয়া উচিত। তাছাড়া এক ইবাদাতের সময় অন্য ইবাদাতে মশগুল থাকাও সমীচিন নয়।
যে কোন আমল ফরজ হোক বা নফল হোক নিয়মিত করতে হবে, যে আমল নিয়মিত করা হয় না, সে আমলের কোন গুরুত্ব থাকে না।
বালেগ হওয়ার পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত টানা আমল করে যেতে হবে এটাই আল্লাহর নির্দেশ।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
وَاعْبُدْ رَبَّكَ حَتّٰى يَأْتِيَكَ الْيَقِيْنُ
‘‘তোমার মৃত্যু উপস্থিত হওয়া পর্যমত্ম তুমি তোমার প্রতিপালকের ইবাদাত কর।’’ (সূরা হিজর- ৯৯)
যদি কেউ নামায এক ওয়াক্ত পড়লে আরেক ওয়াক্ত পড়ে না তবে ঐ নামায সুফল বয়ে আনবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
اَلَّذِيْنَ هُمْ عَلٰى صَلَاتِهِمْ دَائِمُوْنَ
‘‘যারা তাদের নামাযে সদা নিয়মানুবর্তিতা অবলম্বনকারী।’’ (সূরা মা‘আরিজ- ২৩)
যে ব্যক্তি তাহাজ্জুদের নামায শুরু করে ছেড়ে দেয় তার সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল ﷺ বলেন-
" يَا عَبْدَ اللهِ، لَا تَكُنْ مِّثْلَ فُلَانٍ، كَانَ يَقُوْمُ اللَّيْلَ فَتَرَكَ قِيَامَ اللَّيْلِ
‘‘হে আবদুল্লাহ! তুমি অমুক লোকের মত হয়ো না, যে রাত জেগে ইবাদাত করত, পরে রাত জেগে ইবাদাত করা বাদ দিয়েছে।’’ (বুখারী হা: ১১৫২)
স্থায়ী আমল আল্লাহর নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় :
রাসূল ﷺ বলেছেন-
أَحَبُّ الْاَعْمَالِ إِلَى اللهِ تَعَالٰى أَدْوَمُهَا وَإِنْ قَلَّ
‘‘আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমল তা-ই যা কোন ব্যক্তি সর্বদা পালন করে থাকে যদিও তা পরিমাণে কম হয়।’’ (মুসলিম হা: ১৮৬৬)
রাসূল ﷺ যে আমলই করতেন তা নিয়মিত করতেন। সহীহ মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে রাসূল ﷺ কোন কারণে রাতে তাহাজ্জুদ পড়তে না পারলে দিনের বেলায় ১২ রাকাত নামায পড়ে নিতেন, তাও ঐ আমল ছাড়তেন না।
উমর (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি ঘুমের কারণে তার রাতের নির্ধারিত আমল বা তার কিছু অংশ আদায় করতে পারবে না, সে যেন ফজরের পর থেকে জোহর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে তা পূর্ণ করে। তাহলে সে তা রাতে আদায় করার সমান সওয়াব পেয়ে যাবে।’’ (মুসলিম)
বান্দার প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ :
কোন রোগ অথবা সফরের কারণে যদি বান্দা সময়মত কোন আমল করতে না পারে, তাহলে তাকে ঐ আমলের সওয়াব থেকে বঞ্চিত করা হয় না।
قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ: إِذَا مَرِضَ الْعَبْدُ أَوْ سَافَرَ كُتِبَ لَهٗ مِثْلُ مَا كَانَ يَعْمَلُ مُقِيْمًا صَحِيْحًا
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘‘বান্দা কোন সময় অসুস্থ হয়ে পড়লে অথবা সফরে বের হলে তার জন্য ততটুকু আমলের সওয়াব নির্দিষ্ট করা হয় যতটুকু আমল সুস্থ এবং বাড়িতে অবস্থানকালীন সময়ে সে করে থাকে।’’ (বুখারী হা: ২৯৯৬)
বান্দার প্রতি আল্লাহর কত যে অনুগ্রহ ও দয়া আছে তা ভাবতেও অবাক লাগে। বান্দা নিয়মিত কোন আমল করে যায়, কিন্তু অসুস্থতা বা সফরের কারণে সে তা করতে পারে না, আল্লাহ তা‘আলা নিজের পক্ষ থেকে ঐ বান্দার আমলনামায় ঐ দিনের আমলের সওয়াবটা পূর্ণ করে দেন। আল্লাহু আকবার- সুবহানাল্লাহ!
যে কোন আমল ফরজ হোক বা নফল হোক নিয়মিত করতে হবে, যে আমল নিয়মিত করা হয় না, সে আমলের কোন গুরুত্ব থাকে না।
বালেগ হওয়ার পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত টানা আমল করে যেতে হবে এটাই আল্লাহর নির্দেশ।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
وَاعْبُدْ رَبَّكَ حَتّٰى يَأْتِيَكَ الْيَقِيْنُ
‘‘তোমার মৃত্যু উপস্থিত হওয়া পর্যমত্ম তুমি তোমার প্রতিপালকের ইবাদাত কর।’’ (সূরা হিজর- ৯৯)
যদি কেউ নামায এক ওয়াক্ত পড়লে আরেক ওয়াক্ত পড়ে না তবে ঐ নামায সুফল বয়ে আনবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
اَلَّذِيْنَ هُمْ عَلٰى صَلَاتِهِمْ دَائِمُوْنَ
‘‘যারা তাদের নামাযে সদা নিয়মানুবর্তিতা অবলম্বনকারী।’’ (সূরা মা‘আরিজ- ২৩)
যে ব্যক্তি তাহাজ্জুদের নামায শুরু করে ছেড়ে দেয় তার সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল ﷺ বলেন-
" يَا عَبْدَ اللهِ، لَا تَكُنْ مِّثْلَ فُلَانٍ، كَانَ يَقُوْمُ اللَّيْلَ فَتَرَكَ قِيَامَ اللَّيْلِ
‘‘হে আবদুল্লাহ! তুমি অমুক লোকের মত হয়ো না, যে রাত জেগে ইবাদাত করত, পরে রাত জেগে ইবাদাত করা বাদ দিয়েছে।’’ (বুখারী হা: ১১৫২)
স্থায়ী আমল আল্লাহর নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় :
রাসূল ﷺ বলেছেন-
أَحَبُّ الْاَعْمَالِ إِلَى اللهِ تَعَالٰى أَدْوَمُهَا وَإِنْ قَلَّ
‘‘আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমল তা-ই যা কোন ব্যক্তি সর্বদা পালন করে থাকে যদিও তা পরিমাণে কম হয়।’’ (মুসলিম হা: ১৮৬৬)
রাসূল ﷺ যে আমলই করতেন তা নিয়মিত করতেন। সহীহ মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে রাসূল ﷺ কোন কারণে রাতে তাহাজ্জুদ পড়তে না পারলে দিনের বেলায় ১২ রাকাত নামায পড়ে নিতেন, তাও ঐ আমল ছাড়তেন না।
উমর (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি ঘুমের কারণে তার রাতের নির্ধারিত আমল বা তার কিছু অংশ আদায় করতে পারবে না, সে যেন ফজরের পর থেকে জোহর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে তা পূর্ণ করে। তাহলে সে তা রাতে আদায় করার সমান সওয়াব পেয়ে যাবে।’’ (মুসলিম)
বান্দার প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ :
কোন রোগ অথবা সফরের কারণে যদি বান্দা সময়মত কোন আমল করতে না পারে, তাহলে তাকে ঐ আমলের সওয়াব থেকে বঞ্চিত করা হয় না।
قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ: إِذَا مَرِضَ الْعَبْدُ أَوْ سَافَرَ كُتِبَ لَهٗ مِثْلُ مَا كَانَ يَعْمَلُ مُقِيْمًا صَحِيْحًا
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘‘বান্দা কোন সময় অসুস্থ হয়ে পড়লে অথবা সফরে বের হলে তার জন্য ততটুকু আমলের সওয়াব নির্দিষ্ট করা হয় যতটুকু আমল সুস্থ এবং বাড়িতে অবস্থানকালীন সময়ে সে করে থাকে।’’ (বুখারী হা: ২৯৯৬)
বান্দার প্রতি আল্লাহর কত যে অনুগ্রহ ও দয়া আছে তা ভাবতেও অবাক লাগে। বান্দা নিয়মিত কোন আমল করে যায়, কিন্তু অসুস্থতা বা সফরের কারণে সে তা করতে পারে না, আল্লাহ তা‘আলা নিজের পক্ষ থেকে ঐ বান্দার আমলনামায় ঐ দিনের আমলের সওয়াবটা পূর্ণ করে দেন। আল্লাহু আকবার- সুবহানাল্লাহ!
মুরাকাবা হচ্ছে কোন নেক আমল করার সময় সর্বদা আল্লাহর তত্ত্বাবধান ও তাঁর উপস্থিতির ধ্যান করে তা সম্পাদন করা যাতে আমলটি সহীহ ও সুন্দরভাবে আদায় হয়। আবার কোন গুনাহের চিন্তা মনে আসলে আল্লাহর উপস্থিতি ও তাঁর আযাবের কথা চিন্তা করে সে পাপ হতে বিরত থাকা।
বান্দা যে কোন কাজ করার সময় আল্লাহ তা পর্যবেক্ষণ করেন। বান্দা যখন নামাযের জন্য দাঁড়ায় এবং রুকু সিজ্দায় উঠাবসা করে তখন আল্লাহ তাকে দেখেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
اَلَّذِيْ يَرَاكَ حِيْنَ تَقُوْمُ ---. - وَتَقَلُّبَكَ فِي السَّاجِدِيْنَ
‘‘তিনি তোমাকে দেখেন যখন তুমি দন্ডায়মান হও এবং দেখেন সিজদাকারীদের সাথে তোমার উঠাবসা।’’ (সূরা শুয়ারা- ২১৮, ২১৯)
বান্দা যেখানেই থাকুকনা কেন আল্লাহ তাকে দেখেন :
وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنْتُمْ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِيْرٌ
‘‘তোমরা যেখানেই থাকো না কেন তিনি (জানার দিক দিয়ে) তোমাদের সঙ্গে আছেন, তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ তা দেখেন।’’ (সূরা হাদীদ- ৪)
وَاصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ فَإِنَّكَ بِأَعْيُنِنَا وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ حِيْنَ تَقُوْمُ
‘‘আল্লাহ বলেন, তুমি তোমার প্রতিপালকের নির্দেশের উপর ধৈর্য্যধারণ কর; তুমি আমার চোখের সামনেই রয়েছ। তুমি প্রশংসার সহিত তোমার প্রতিপালকের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর যখন তুমি শয্যা ত্যাগ কর।’’
(সূরা তুর- ৪৮)
বান্দা যে কাজই করুক, কুরআনের যে কোন অংশই পাঠ করুক, আল্লাহ তার প্রতিটি কাজকর্মর্ পর্যবেক্ষণ করেন :
وَمَا تَكُوْنُ فِيْ شَأْنٍ وَّمَا تَتْلُو مِنْهُ مِنْ قُرْآنٍ وَّلَا تَعْمَلُوْنَ مِنْ عَمَلٍ إِلَّا كُنَّا عَلَيْكُمْ شُهُوْدًا إِذْ تُفِيْضُوْنَ فِيْهِ
‘‘তুমি যে কোন অবস্থায় থাকো এবং তুমি কুরআন হতে যা কিছুই তেলাওয়াত করো এবং তোমরা যে কোন কাজই করো, আমি তোমাদের পরিদর্শক- যখন তোমরা তাতে মাশগুল হও।’’ (সূরা ইউনুস- ৬১)
রাসূল ﷺ এহসানের পরিচয় দিতে গিয়ে বলেন, ‘‘তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদাত কর, যেন তুমি তাকে দেখতে পাচ্ছ। আর যদি তাকে দেখতে না পাও (সেই স্তরে তুমি পৌঁছতে না পার) তবে অন্তত মনে মনে এ ধারণা রাখ যে, আল্লাহ তা‘আলা তোমাকে দেখছেন।’’ (বুখারী, মুসলিম)
يَعْلَمُ خَائِنَةَ الْاَعْيُنِ وَمَا تُخْفِي الصُّدُوْرُ
‘‘চোখের খেয়ানত ও অন্তরের লুকায়িত বিষয় সম্পর্কেও আল্লাহ তা‘আলা জ্ঞান রাখেন।’’ (সূরা মু‘মিন- ১৯)
তিরমিযীর হাদীসে এসেছে রাসূল ﷺ বলেন, ‘‘তুমি যেখানেই থাকনা কেন আল্লাহকে ভয় কর।’’
আবু হাফসা আবু উসমানকে বললেন, যখন তুমি ওয়াজ করতে বস তখন আগে নিজেকে নসীহত কর, মানুষের উপস্থিতি দেখে ধোঁকায় পড়ে যেও না। কারণ তারা তোমার বাহ্যিক অবস্থা দেখছে আর আল্লাহ তা‘আলা তোমার অন্তরের দিকে তাকিয়ে আছেন।
এক ব্যক্তি জুনায়েদকে বললেন, চক্ষুর হেফাযত করার জন্য আমি কিসের সাহায্য নিতে পারি? তিনি উত্তর দিলেন, কোন হারাম জিনিসের উপর তোমার দৃষ্টি পড়ার আগেই তোমার উপর তোমার রবের দৃষ্টি পড়বে এটা মাথায় রেখো।
বান্দা যে কোন কাজ করার সময় আল্লাহ তা পর্যবেক্ষণ করেন। বান্দা যখন নামাযের জন্য দাঁড়ায় এবং রুকু সিজ্দায় উঠাবসা করে তখন আল্লাহ তাকে দেখেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
اَلَّذِيْ يَرَاكَ حِيْنَ تَقُوْمُ ---. - وَتَقَلُّبَكَ فِي السَّاجِدِيْنَ
‘‘তিনি তোমাকে দেখেন যখন তুমি দন্ডায়মান হও এবং দেখেন সিজদাকারীদের সাথে তোমার উঠাবসা।’’ (সূরা শুয়ারা- ২১৮, ২১৯)
বান্দা যেখানেই থাকুকনা কেন আল্লাহ তাকে দেখেন :
وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنْتُمْ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِيْرٌ
‘‘তোমরা যেখানেই থাকো না কেন তিনি (জানার দিক দিয়ে) তোমাদের সঙ্গে আছেন, তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ তা দেখেন।’’ (সূরা হাদীদ- ৪)
وَاصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ فَإِنَّكَ بِأَعْيُنِنَا وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ حِيْنَ تَقُوْمُ
‘‘আল্লাহ বলেন, তুমি তোমার প্রতিপালকের নির্দেশের উপর ধৈর্য্যধারণ কর; তুমি আমার চোখের সামনেই রয়েছ। তুমি প্রশংসার সহিত তোমার প্রতিপালকের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর যখন তুমি শয্যা ত্যাগ কর।’’
(সূরা তুর- ৪৮)
বান্দা যে কাজই করুক, কুরআনের যে কোন অংশই পাঠ করুক, আল্লাহ তার প্রতিটি কাজকর্মর্ পর্যবেক্ষণ করেন :
وَمَا تَكُوْنُ فِيْ شَأْنٍ وَّمَا تَتْلُو مِنْهُ مِنْ قُرْآنٍ وَّلَا تَعْمَلُوْنَ مِنْ عَمَلٍ إِلَّا كُنَّا عَلَيْكُمْ شُهُوْدًا إِذْ تُفِيْضُوْنَ فِيْهِ
‘‘তুমি যে কোন অবস্থায় থাকো এবং তুমি কুরআন হতে যা কিছুই তেলাওয়াত করো এবং তোমরা যে কোন কাজই করো, আমি তোমাদের পরিদর্শক- যখন তোমরা তাতে মাশগুল হও।’’ (সূরা ইউনুস- ৬১)
রাসূল ﷺ এহসানের পরিচয় দিতে গিয়ে বলেন, ‘‘তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদাত কর, যেন তুমি তাকে দেখতে পাচ্ছ। আর যদি তাকে দেখতে না পাও (সেই স্তরে তুমি পৌঁছতে না পার) তবে অন্তত মনে মনে এ ধারণা রাখ যে, আল্লাহ তা‘আলা তোমাকে দেখছেন।’’ (বুখারী, মুসলিম)
يَعْلَمُ خَائِنَةَ الْاَعْيُنِ وَمَا تُخْفِي الصُّدُوْرُ
‘‘চোখের খেয়ানত ও অন্তরের লুকায়িত বিষয় সম্পর্কেও আল্লাহ তা‘আলা জ্ঞান রাখেন।’’ (সূরা মু‘মিন- ১৯)
তিরমিযীর হাদীসে এসেছে রাসূল ﷺ বলেন, ‘‘তুমি যেখানেই থাকনা কেন আল্লাহকে ভয় কর।’’
আবু হাফসা আবু উসমানকে বললেন, যখন তুমি ওয়াজ করতে বস তখন আগে নিজেকে নসীহত কর, মানুষের উপস্থিতি দেখে ধোঁকায় পড়ে যেও না। কারণ তারা তোমার বাহ্যিক অবস্থা দেখছে আর আল্লাহ তা‘আলা তোমার অন্তরের দিকে তাকিয়ে আছেন।
এক ব্যক্তি জুনায়েদকে বললেন, চক্ষুর হেফাযত করার জন্য আমি কিসের সাহায্য নিতে পারি? তিনি উত্তর দিলেন, কোন হারাম জিনিসের উপর তোমার দৃষ্টি পড়ার আগেই তোমার উপর তোমার রবের দৃষ্টি পড়বে এটা মাথায় রেখো।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
وَالَّذِيْنَ يُؤْتُوْنَ مَا آتَوْا وَقُلُوْبُهُمْ وَجِلَةٌ أَنَّهُمْ إِلٰى رَبِّهِمْ رَاجِعُوْنَ
‘‘যারা তাদের প্রতিপালকের নিকট প্রত্যাবর্তন করবে এ বিশ্বাসে তাদের যা দান করার তা দান করে ভীত-কম্পিত হৃদয়ে।’’ (সূরা মু‘মিনূন- ৬০)
হাসান বসরী (রহঃ) বলেন, তারা নেক আমল করে আর ভয় করে যে এ আমল তাদের মুক্তি দিতে পারবে কি না।
এ আয়াতে ‘যা আমল করার তা আমল করে’ এর মধ্যে দান-খায়রাত নামায-রোযা ও সকল প্রকার সৎকর্মই শামিল রয়েছে।
এক হাদীসে আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল ﷺকে এই আয়াতের মর্ম জিজ্ঞেস করলাম যে, এ কাজ করে লোকেরা ভীত-কম্পিত হবে কেন? তারা কি মদ্যপান করে কিংবা চুরি করে? রাসূল ﷺ বললেন, হে সিদ্দীক তনয়া! বিষয়টি এরূপ নয় বরং এরা তারা যারা রোযা রাখে, নামায পড়ে এবং দান-খায়রাতও করে; এতদ্বসত্ত্বেও তারা ভীত থাকে যে, সম্ভবত আমাদের এ কাজ আল্লাহর কাছে (আমাদের কোন ত্রুটির কারণে) কবুল হবে না, এ ধরণের লোকরাই সৎকাজ দ্রুত সম্পাদন করে এবং তাতে অগ্রগামী থাকে।
(আহমাদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, মাজহারী)
হাসান বসরী (রহ:) বলেন, ‘‘আমি অনেক লোককে এমন দেখেছি যে, যারা নেক আমল করে এতটুকু ভীত হয় যে, তোমরা গুনাহের কাজ করেও ততটুকু ভীত হও না।’’
وَالَّذِيْنَ يُؤْتُوْنَ مَا آتَوْا وَقُلُوْبُهُمْ وَجِلَةٌ أَنَّهُمْ إِلٰى رَبِّهِمْ رَاجِعُوْنَ
‘‘যারা তাদের প্রতিপালকের নিকট প্রত্যাবর্তন করবে এ বিশ্বাসে তাদের যা দান করার তা দান করে ভীত-কম্পিত হৃদয়ে।’’ (সূরা মু‘মিনূন- ৬০)
হাসান বসরী (রহঃ) বলেন, তারা নেক আমল করে আর ভয় করে যে এ আমল তাদের মুক্তি দিতে পারবে কি না।
এ আয়াতে ‘যা আমল করার তা আমল করে’ এর মধ্যে দান-খায়রাত নামায-রোযা ও সকল প্রকার সৎকর্মই শামিল রয়েছে।
এক হাদীসে আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল ﷺকে এই আয়াতের মর্ম জিজ্ঞেস করলাম যে, এ কাজ করে লোকেরা ভীত-কম্পিত হবে কেন? তারা কি মদ্যপান করে কিংবা চুরি করে? রাসূল ﷺ বললেন, হে সিদ্দীক তনয়া! বিষয়টি এরূপ নয় বরং এরা তারা যারা রোযা রাখে, নামায পড়ে এবং দান-খায়রাতও করে; এতদ্বসত্ত্বেও তারা ভীত থাকে যে, সম্ভবত আমাদের এ কাজ আল্লাহর কাছে (আমাদের কোন ত্রুটির কারণে) কবুল হবে না, এ ধরণের লোকরাই সৎকাজ দ্রুত সম্পাদন করে এবং তাতে অগ্রগামী থাকে।
(আহমাদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, মাজহারী)
হাসান বসরী (রহ:) বলেন, ‘‘আমি অনেক লোককে এমন দেখেছি যে, যারা নেক আমল করে এতটুকু ভীত হয় যে, তোমরা গুনাহের কাজ করেও ততটুকু ভীত হও না।’’
নিজের আমলের পরিমাণ, বৃদ্ধি এবং ত্রুটি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার নাম মুহাসাবা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوا اتَّقُوا اللهَ وَلْتَنْظُرْ نَفْسٌ مَا قَدَّمَتْ لِغَدٍ وَّاتَّقُوا اللهَ إِنَّ اللهَ خَبِيْرٌ ۢبِمَا تَعْمَلُوْنَ
‘‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, প্রত্যেকেই ভেবে দেখুক যে, আগামীকালের (কিয়ামতের) জন্য সে কী পাঠিয়েছে? আর আল্লাহকে ভয় কর। তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে সর্বাধিক জ্ঞাত।’’ (সূরা হাশর -১৮)
উমর (রাঃ) বলেন, ‘‘আল্লাহর কাছে হিসাব দেয়ার আগে তোমরা নিজেরা নিজেদের হিসাব নাও এবং হাশরের ময়দানে ওজন হওয়ার পূর্বে নিজের আমল ওজন কর।’’
উমর (রাঃ) নিজের করে হিসাব নিতেন, রাত আসলে নিজেকে বলতেন আজ কী আমল করেছ?
মায়মুনা ইবনে মিহরান (রহঃ) বলেন, ‘‘কোন বান্দা মুত্তাকির কাতারে দাঁড়াতে পারবে না যতক্ষণ না সে তার শরীকের কাছ থেকে যেভাবে হিসাব বুঝে নেয় তার চেয়ে বেশি নিজের আমলের হিসাব না নেবে।’’
আহনাফ (রহঃ) এর কোন এক সাথি বর্ণনা করেন, আমি একদিন তার সঙ্গী হয়েছিলাম। দেখলাম তার রাতের অধিকাংশ সময়ই কাটত নামায এবং দো‘আর মাধ্যমে। তিনি আগুনের কাছে গিয়ে তার আঙ্গুল আগুনে দিয়ে আগুনের তাপ অনুভব করতেন এবং (কোন পাপের কথা স্মরণ করে) নিজেকে সম্বোধন করে বলতেন, হে আহনাফ! অমুক দিন এই পাপটি করার জন্য তোমাকে কিসে উৎসাহিত করেছিল?
উমর ইবনে আব্দুল আজিজ (রহঃ) সূরা শুয়ারার- ২০৫ নং আয়াতটি পড়ে প্রতিদিন ভোরে দাঁড়িতে ধরে কাঁদতেন আর নিজেকে বলতেন, কিয়ামতের দিন যখন অমুক পাপীদের বলা হবে- ‘‘উঠো’’ তখন তোমাকে উঠতে হবে, কারণ তুমি সব গুনাহই করেছ।
যেকোন জ্ঞানী ব্যক্তির জন্য এ চারটি কাজের ব্যাপারে অবশ্যই সময় নির্ধারণ করা উচিত :
১. আল্লাহর সাথে নির্জনে মুনাজাতের সময়।
২. আল্লাহর কুদরত ও সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার সময়।
৩. খাদ্য ও পানীয় গ্রহণের সময়।
৪. নিজের কাজ-কর্মের হিসাব নেয়ার সময়।
মুহাসাবার সময় :
নিজের হিসাব গ্রহণের জন্য দু’টি সময় উপযুক্ত। তা হল :
(১) ফজরের পরে ও (২) এশার পরে।
ফজরের পরে নফসের সাথে এ মর্মে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া যে, হে নফস! তুমি মরে গিয়েছিলে, তোমার রব দয়া করে তোমাকে আজকের দিনটি উপহার দিয়েছেন। এটা হল তোমার পুঁজি আর অঙ্গ হল কর্মচারী, তাই দিনটা কাজে লাগাও।
প্রত্যেক নতুন দিন মানুষকে বলে আমি তোমার জন্য নতুন দিন, আমি এমন এক সম্পদ চলে গেলে আর ফিরে আসি না। হে আদম সন্তান! তুমি আজ যা করবে পরকালে আমি এর সাক্ষী দেব, তাই তুমি অপরাধ না করে কিছু নেকী সঞ্চয় করে নাও।
তারপর পাপ না করার জন্য অঙ্গে-প্রতঙ্গের সাথে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবে। কারণ সব গুনাহই অঙ্গ-প্রতঙ্গের মাধ্যেমেই সম্পাদিত হয়ে থাকে। হাত, পা, চক্ষু, কান, লজ্জাস্থান, পেট ও মুখ এ সাতটি অঙ্গ দিয়ে অপরাধ করা হয় আর জাহান্নামের দরজাও রয়েছে সাতটি।
لَهَا سَبْعَةُ أَبْوَابٍ لِكُلِّ بَابٍ مِنْهُمْ جُزْءٌ مَّقْسُوْمٌ
‘‘তার সাতটি দরজা আছে, প্রত্যেক দরজার জন্য পৃথক পৃথক শ্রেণী আছে।’’ (সূরা হিজর- ৪৪)
কোন গুনাহের কাজ করার চিন্তা মনে আসলে অন্তর হতে সে চিন্তা দূর করে দিতে হবে। দূর না করলে এর প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়, আর আগ্রহ হয়ে গেলে এটা সম্পাদনের চিন্তায় লিপ্ত হতে হয়। এরপর কাজের দৃঢ় ইচ্ছা তৈরি হয় আর তখন গুনাহ সম্পাদিত হয়ে যায়। এরপর থেকে শুরু হয় মনের অশান্তি ও শাস্তি।
এশার নামাযের পর দিনের আমলের হিসাব নিতে হবে :
প্রথমে ফরজ ইবাদাতসমূহের হিসাব নিতে হবে। যদি সকল ফরজ সুন্দরভাবে আদায় হয় তবে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে হবে। আর যদি অসম্পূর্ণভাবে আদায় হয়, তবে নফলের মাধ্যমে এর ক্ষতিপূরণ করতে হবে। আর যদি ফরজ কাজা হয়ে যায়, তবে অবশ্যই কাজা আদায় করতে হবে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
তারপর পর্যায়ক্রমে ওয়াজিব, সুন্নাত ও নফলের হিসাব নিতে হবে।
এরপর সকালে অঙ্গ-প্রতঙ্গগুলোকে যেভাবে শর্ত দেয়া হয়েছিল সেভাবে দিন অতিবাহিত হয়েছে কি না তার হিসাব নিতে হবে। যদি কোন গুনাহ ধরা পড়ে তবে খালিস নিয়তে তওবা করতে হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরণের গুনাহ না করার জন্য দৃৃৃঢ় প্রতিজ্ঞা করতে হবে। আর যদি সেই গুনাহ বান্দার হক সংক্রান্ত হয় তবে সেই হক আদায় করে দিতে হবে অথবা হকদারের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।
মাঝে মধ্যে সারাজীবনের হিসাব নিতে হবে। সবসময় নিজের গুনাহগুলোর কথা স্মরণ রাখতে হবে।
রোজ যদি একটি পাপও কেউ করে তবে সপ্তাহে ৭টি, মাসে ৩০টি, বছরে ৩৬৫টি। এভাবে পাপের স্তুপ জমা হতে থাকে, কিন্তু বান্দা তা অনুভব করতে পারে না।
যেমন কেউ যদি রোজ একটি পাথর তার ঘরের কোনায় জমা করে, তবে ১০ বছর পর ৩৬৫০টি পাথরের একটি বিরাট স্তুপ দেখতে পাবে।
বান্দা যখন নিজ থেকে গুনাহের হিসাব নেবে তখন অবশ্যই তার কাছে নিজের গুনাহ ধরা পড়বে। মানুষ সাধারণত গুনাহের কথা ভুলে যায়, অথচ আল্লাহ তার গুনাহের হিসাব রাখেন, আল্লাহর ফেরেশতারা তা লিখে রাখে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
يَوْمَ يَبْعَثُهُمُ اللهُ جَمِيْعًا فَيُنَبِّئُهُمْ بِمَا عَمِلُوْا أَحْصَاهُ اللهُ وَنَسُوْهُ وَاللهُ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ شَهِيْدٌ
‘‘যেদিন আল্লাহ সকলকে পুনর্জীবিত করবেন, অতঃপর তারা যা কিছু করেছে তা তাদেরকে জানিয়ে দেবেন। আল্লাহ তা সংরক্ষিত করে রেখেছেন, আর তারা তা ভুলে গেছে। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক দ্রষ্টা।’’ (সূরা মুজাদালা- ৬)
إِذْ يَتَلَقَّى الْمُتَلَقِّيَانِ عَنِ الْيَمِيْنِ وَعَنِ الشِّمَالِ قَعِيْدٌ - مَا يَلْفِظُ مِنْ قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيْبٌ عَتِيْدٌ
‘‘স্মরণ রেখো! দুই ফেরেশতা তার ডানে ও বামে বসে তার কর্ম লিপিবদ্ধ করে। মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তৎপর প্রহরী তার নিকটেই রয়েছে।’’ (সূরা কাফ- ১৭, ১৮)
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوا اتَّقُوا اللهَ وَلْتَنْظُرْ نَفْسٌ مَا قَدَّمَتْ لِغَدٍ وَّاتَّقُوا اللهَ إِنَّ اللهَ خَبِيْرٌ ۢبِمَا تَعْمَلُوْنَ
‘‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, প্রত্যেকেই ভেবে দেখুক যে, আগামীকালের (কিয়ামতের) জন্য সে কী পাঠিয়েছে? আর আল্লাহকে ভয় কর। তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে সর্বাধিক জ্ঞাত।’’ (সূরা হাশর -১৮)
উমর (রাঃ) বলেন, ‘‘আল্লাহর কাছে হিসাব দেয়ার আগে তোমরা নিজেরা নিজেদের হিসাব নাও এবং হাশরের ময়দানে ওজন হওয়ার পূর্বে নিজের আমল ওজন কর।’’
উমর (রাঃ) নিজের করে হিসাব নিতেন, রাত আসলে নিজেকে বলতেন আজ কী আমল করেছ?
মায়মুনা ইবনে মিহরান (রহঃ) বলেন, ‘‘কোন বান্দা মুত্তাকির কাতারে দাঁড়াতে পারবে না যতক্ষণ না সে তার শরীকের কাছ থেকে যেভাবে হিসাব বুঝে নেয় তার চেয়ে বেশি নিজের আমলের হিসাব না নেবে।’’
আহনাফ (রহঃ) এর কোন এক সাথি বর্ণনা করেন, আমি একদিন তার সঙ্গী হয়েছিলাম। দেখলাম তার রাতের অধিকাংশ সময়ই কাটত নামায এবং দো‘আর মাধ্যমে। তিনি আগুনের কাছে গিয়ে তার আঙ্গুল আগুনে দিয়ে আগুনের তাপ অনুভব করতেন এবং (কোন পাপের কথা স্মরণ করে) নিজেকে সম্বোধন করে বলতেন, হে আহনাফ! অমুক দিন এই পাপটি করার জন্য তোমাকে কিসে উৎসাহিত করেছিল?
উমর ইবনে আব্দুল আজিজ (রহঃ) সূরা শুয়ারার- ২০৫ নং আয়াতটি পড়ে প্রতিদিন ভোরে দাঁড়িতে ধরে কাঁদতেন আর নিজেকে বলতেন, কিয়ামতের দিন যখন অমুক পাপীদের বলা হবে- ‘‘উঠো’’ তখন তোমাকে উঠতে হবে, কারণ তুমি সব গুনাহই করেছ।
যেকোন জ্ঞানী ব্যক্তির জন্য এ চারটি কাজের ব্যাপারে অবশ্যই সময় নির্ধারণ করা উচিত :
১. আল্লাহর সাথে নির্জনে মুনাজাতের সময়।
২. আল্লাহর কুদরত ও সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার সময়।
৩. খাদ্য ও পানীয় গ্রহণের সময়।
৪. নিজের কাজ-কর্মের হিসাব নেয়ার সময়।
মুহাসাবার সময় :
নিজের হিসাব গ্রহণের জন্য দু’টি সময় উপযুক্ত। তা হল :
(১) ফজরের পরে ও (২) এশার পরে।
ফজরের পরে নফসের সাথে এ মর্মে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া যে, হে নফস! তুমি মরে গিয়েছিলে, তোমার রব দয়া করে তোমাকে আজকের দিনটি উপহার দিয়েছেন। এটা হল তোমার পুঁজি আর অঙ্গ হল কর্মচারী, তাই দিনটা কাজে লাগাও।
প্রত্যেক নতুন দিন মানুষকে বলে আমি তোমার জন্য নতুন দিন, আমি এমন এক সম্পদ চলে গেলে আর ফিরে আসি না। হে আদম সন্তান! তুমি আজ যা করবে পরকালে আমি এর সাক্ষী দেব, তাই তুমি অপরাধ না করে কিছু নেকী সঞ্চয় করে নাও।
তারপর পাপ না করার জন্য অঙ্গে-প্রতঙ্গের সাথে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবে। কারণ সব গুনাহই অঙ্গ-প্রতঙ্গের মাধ্যেমেই সম্পাদিত হয়ে থাকে। হাত, পা, চক্ষু, কান, লজ্জাস্থান, পেট ও মুখ এ সাতটি অঙ্গ দিয়ে অপরাধ করা হয় আর জাহান্নামের দরজাও রয়েছে সাতটি।
لَهَا سَبْعَةُ أَبْوَابٍ لِكُلِّ بَابٍ مِنْهُمْ جُزْءٌ مَّقْسُوْمٌ
‘‘তার সাতটি দরজা আছে, প্রত্যেক দরজার জন্য পৃথক পৃথক শ্রেণী আছে।’’ (সূরা হিজর- ৪৪)
কোন গুনাহের কাজ করার চিন্তা মনে আসলে অন্তর হতে সে চিন্তা দূর করে দিতে হবে। দূর না করলে এর প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়, আর আগ্রহ হয়ে গেলে এটা সম্পাদনের চিন্তায় লিপ্ত হতে হয়। এরপর কাজের দৃঢ় ইচ্ছা তৈরি হয় আর তখন গুনাহ সম্পাদিত হয়ে যায়। এরপর থেকে শুরু হয় মনের অশান্তি ও শাস্তি।
এশার নামাযের পর দিনের আমলের হিসাব নিতে হবে :
প্রথমে ফরজ ইবাদাতসমূহের হিসাব নিতে হবে। যদি সকল ফরজ সুন্দরভাবে আদায় হয় তবে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে হবে। আর যদি অসম্পূর্ণভাবে আদায় হয়, তবে নফলের মাধ্যমে এর ক্ষতিপূরণ করতে হবে। আর যদি ফরজ কাজা হয়ে যায়, তবে অবশ্যই কাজা আদায় করতে হবে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
তারপর পর্যায়ক্রমে ওয়াজিব, সুন্নাত ও নফলের হিসাব নিতে হবে।
এরপর সকালে অঙ্গ-প্রতঙ্গগুলোকে যেভাবে শর্ত দেয়া হয়েছিল সেভাবে দিন অতিবাহিত হয়েছে কি না তার হিসাব নিতে হবে। যদি কোন গুনাহ ধরা পড়ে তবে খালিস নিয়তে তওবা করতে হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরণের গুনাহ না করার জন্য দৃৃৃঢ় প্রতিজ্ঞা করতে হবে। আর যদি সেই গুনাহ বান্দার হক সংক্রান্ত হয় তবে সেই হক আদায় করে দিতে হবে অথবা হকদারের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।
মাঝে মধ্যে সারাজীবনের হিসাব নিতে হবে। সবসময় নিজের গুনাহগুলোর কথা স্মরণ রাখতে হবে।
রোজ যদি একটি পাপও কেউ করে তবে সপ্তাহে ৭টি, মাসে ৩০টি, বছরে ৩৬৫টি। এভাবে পাপের স্তুপ জমা হতে থাকে, কিন্তু বান্দা তা অনুভব করতে পারে না।
যেমন কেউ যদি রোজ একটি পাথর তার ঘরের কোনায় জমা করে, তবে ১০ বছর পর ৩৬৫০টি পাথরের একটি বিরাট স্তুপ দেখতে পাবে।
বান্দা যখন নিজ থেকে গুনাহের হিসাব নেবে তখন অবশ্যই তার কাছে নিজের গুনাহ ধরা পড়বে। মানুষ সাধারণত গুনাহের কথা ভুলে যায়, অথচ আল্লাহ তার গুনাহের হিসাব রাখেন, আল্লাহর ফেরেশতারা তা লিখে রাখে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
يَوْمَ يَبْعَثُهُمُ اللهُ جَمِيْعًا فَيُنَبِّئُهُمْ بِمَا عَمِلُوْا أَحْصَاهُ اللهُ وَنَسُوْهُ وَاللهُ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ شَهِيْدٌ
‘‘যেদিন আল্লাহ সকলকে পুনর্জীবিত করবেন, অতঃপর তারা যা কিছু করেছে তা তাদেরকে জানিয়ে দেবেন। আল্লাহ তা সংরক্ষিত করে রেখেছেন, আর তারা তা ভুলে গেছে। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক দ্রষ্টা।’’ (সূরা মুজাদালা- ৬)
إِذْ يَتَلَقَّى الْمُتَلَقِّيَانِ عَنِ الْيَمِيْنِ وَعَنِ الشِّمَالِ قَعِيْدٌ - مَا يَلْفِظُ مِنْ قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيْبٌ عَتِيْدٌ
‘‘স্মরণ রেখো! দুই ফেরেশতা তার ডানে ও বামে বসে তার কর্ম লিপিবদ্ধ করে। মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তৎপর প্রহরী তার নিকটেই রয়েছে।’’ (সূরা কাফ- ১৭, ১৮)
কোন ভালো কাজের অভ্যাস গড়ে তুলার জন্য কোন কোন সময় নিজের উপর শাস্তি নির্ধারণ করা যায়।
হাদীসে বর্ণিত আছে, একবার আবু জুহায়ম (রাঃ) নবী ﷺ কে একটি চাদর উপহার দেন। সেটা কারুকার্যখচিত ছিল। তিনি তা পরে নামায পড়লেন। পরে এসে আয়েশাকে বললেন- চাদরটি আবু জুহায়মকে ফিরিয়ে দাও, কারণ নামাযে আমার দৃষ্টি এর কারুকর্যের উপর পড়েছিল। এতে করে আমার নামাযে মনোনিবেশে বিপর্যয় সৃষ্টি হওয়ার উপক্রম হয়েছিল।
তবে এÿÿত্রে কোন বৈধ সম্পদকে নষ্ট করা ঠিক নয়।
অপরাধ করার কারণে নিজেকে শাস্তি প্রদান করা যায়। যেমন হারাম খেয়ে থাকলে ক্ষুধা দ্বারা এর প্রতিকার করবে।
হারাম জিনিসের দিকে তাকালে চক্ষু নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এর প্রতিকার করবে।
যদি অলসতার কারণে কোন আমল বাদ পড়ে যায় তবে আরো বেশি আমল করে এর প্রতিকার করবে।
আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে এমন অনেক বান্দা ছিলেন, যারা ফরজ আমল তো দূরের কথা নফল আমলেও কোন ত্রুটি হয়ে গেলে অনেক আফসোস করতেন এবং আরো অধিক পরিমাণে নেক আমল বাড়িয়ে দিতেন। কখনো কখনো আমল ছুটে যাওয়ার কারণে নিজের উপর কিছু দুনিয়াবী শাস্তিও প্রয়োগ করতেন। এক ওয়াক্ত জামা‘আত ছুটে গেলে অনেক দিন পর্যন্ত আফসোস করতেন।
হাদীসে বর্ণিত আছে, একবার আবু জুহায়ম (রাঃ) নবী ﷺ কে একটি চাদর উপহার দেন। সেটা কারুকার্যখচিত ছিল। তিনি তা পরে নামায পড়লেন। পরে এসে আয়েশাকে বললেন- চাদরটি আবু জুহায়মকে ফিরিয়ে দাও, কারণ নামাযে আমার দৃষ্টি এর কারুকর্যের উপর পড়েছিল। এতে করে আমার নামাযে মনোনিবেশে বিপর্যয় সৃষ্টি হওয়ার উপক্রম হয়েছিল।
তবে এÿÿত্রে কোন বৈধ সম্পদকে নষ্ট করা ঠিক নয়।
অপরাধ করার কারণে নিজেকে শাস্তি প্রদান করা যায়। যেমন হারাম খেয়ে থাকলে ক্ষুধা দ্বারা এর প্রতিকার করবে।
হারাম জিনিসের দিকে তাকালে চক্ষু নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এর প্রতিকার করবে।
যদি অলসতার কারণে কোন আমল বাদ পড়ে যায় তবে আরো বেশি আমল করে এর প্রতিকার করবে।
আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে এমন অনেক বান্দা ছিলেন, যারা ফরজ আমল তো দূরের কথা নফল আমলেও কোন ত্রুটি হয়ে গেলে অনেক আফসোস করতেন এবং আরো অধিক পরিমাণে নেক আমল বাড়িয়ে দিতেন। কখনো কখনো আমল ছুটে যাওয়ার কারণে নিজের উপর কিছু দুনিয়াবী শাস্তিও প্রয়োগ করতেন। এক ওয়াক্ত জামা‘আত ছুটে গেলে অনেক দিন পর্যন্ত আফসোস করতেন।
আমলকে পরিশুদ্ধ করতে হলে নিয়মিত প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে এবং এজন্য শক্তি ব্যয় করতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
وَالَّذِيْنَ جَاهَدُوْا فِيْنَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا وَإِنَّ اللهَ لَمَعَ الْمُحْسِنِيْنَ
‘‘যারা আমার উদ্দেশ্যে পরিশ্রম করে আমি তাদেরকে অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আল্লাহ অবশ্যই সৎকর্মপরায়ণদের সঙ্গে থাকেন।’’
(সুরা আনকাবুত- ৬৯)
لِمِثْلِ هٰذَا فَلْيَعْمَلِ الْعَامِلُوْنَ
‘‘এরূপ সফলতার জন্যই আমলকারীদের আমল করা উচিত।’’ (সুরা সাফফাত- ৬১)
رَبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا فَاعْبُدْهُ وَاصْطَبِرْ لِعِبَادَتِهٖ هَلْ تَعْلَمُ لَهٗ سَمِيًّا
‘‘তিনি আসমান-যমীন ও এর মধ্যবর্তী যা কিছু আছে তার প্রতিপালক। সুতরাং তোমরা তাঁরই ইবাদাত করো এবং তাঁর ইবাদাতে ধৈর্যশীল হও। তুমি কি তাঁর সমগুণ সম্পন্ন কাউকেও জান?’’ (সুরা মারিয়াম- ৬৫)
عَنْ الْمُغِيْرَةِ رَضِىَ الله عَنْهُ يَقُوْلُ : إِنْ كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ لَيَقُوْمُ أوْ لَيُصَلِّيَ حَتّٰى تَرِمَ قَدَمَاهُ أَوْ سَاقَاهُ : فَيُقَالُ لَهٗ فَيَقُوْلُ : " أَفَلَا أَكُوْنُ عَبْدًا شَكُوْرًا "
মুগীরা ইবনে শুবা (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ রাতে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়ানোর ফলে (অথবা) নামায পড়ার কারণে তাঁর পদদ্বয় অথবা পায়ের গোছাদ্বয় ফুলে যেত। তাঁকে প্রশ্ন করা হল (আপনি এত দীর্ঘক্ষণ কেন নামাযে দাঁড়িয়ে থাকেন?) তিনি বললেন, আমি কি আল্লাহর একজন শুকরিয়া আদায়কারী বান্দা হব না? (বুখারী হা: ১১৩০)
সুতরাং আমাদের কর্তব্য হচ্ছে নিয়মিত নেক আমল করে যাওয়া এবং সকল গুনাহ থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করা। তারপরও কোন গুনাহ হয়ে গেলে সাথে সাথে তওবা করে আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নেয়া।
وَالَّذِيْنَ جَاهَدُوْا فِيْنَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا وَإِنَّ اللهَ لَمَعَ الْمُحْسِنِيْنَ
‘‘যারা আমার উদ্দেশ্যে পরিশ্রম করে আমি তাদেরকে অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আল্লাহ অবশ্যই সৎকর্মপরায়ণদের সঙ্গে থাকেন।’’
(সুরা আনকাবুত- ৬৯)
لِمِثْلِ هٰذَا فَلْيَعْمَلِ الْعَامِلُوْنَ
‘‘এরূপ সফলতার জন্যই আমলকারীদের আমল করা উচিত।’’ (সুরা সাফফাত- ৬১)
رَبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا فَاعْبُدْهُ وَاصْطَبِرْ لِعِبَادَتِهٖ هَلْ تَعْلَمُ لَهٗ سَمِيًّا
‘‘তিনি আসমান-যমীন ও এর মধ্যবর্তী যা কিছু আছে তার প্রতিপালক। সুতরাং তোমরা তাঁরই ইবাদাত করো এবং তাঁর ইবাদাতে ধৈর্যশীল হও। তুমি কি তাঁর সমগুণ সম্পন্ন কাউকেও জান?’’ (সুরা মারিয়াম- ৬৫)
عَنْ الْمُغِيْرَةِ رَضِىَ الله عَنْهُ يَقُوْلُ : إِنْ كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ لَيَقُوْمُ أوْ لَيُصَلِّيَ حَتّٰى تَرِمَ قَدَمَاهُ أَوْ سَاقَاهُ : فَيُقَالُ لَهٗ فَيَقُوْلُ : " أَفَلَا أَكُوْنُ عَبْدًا شَكُوْرًا "
মুগীরা ইবনে শুবা (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ রাতে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়ানোর ফলে (অথবা) নামায পড়ার কারণে তাঁর পদদ্বয় অথবা পায়ের গোছাদ্বয় ফুলে যেত। তাঁকে প্রশ্ন করা হল (আপনি এত দীর্ঘক্ষণ কেন নামাযে দাঁড়িয়ে থাকেন?) তিনি বললেন, আমি কি আল্লাহর একজন শুকরিয়া আদায়কারী বান্দা হব না? (বুখারী হা: ১১৩০)
সুতরাং আমাদের কর্তব্য হচ্ছে নিয়মিত নেক আমল করে যাওয়া এবং সকল গুনাহ থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করা। তারপরও কোন গুনাহ হয়ে গেলে সাথে সাথে তওবা করে আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নেয়া।
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, সাত শ্রেণীর লোককে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ছায়ায় স্থান দেবেন যেদিন তাঁর ছায়া ব্যতীত কোন ছায়া থাকবে না :
১। ন্যায়পরায়ণ শাসক।
২। সেই যুবক যে আল্লাহর ইবাদাতের মধ্য দিয়ে বড় হয়।
৩। সেই ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত থাকে। যখন সে বেরিয়ে আসে তখন পুনরায় মসজিদে ফিরে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকে।
৪। সেই দুইব্যক্তি যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একে অপরকে ভালবাসে। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই তারা একত্রিত হয় এবং পৃথক হয়।
৫। সেই ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং দু’চোখে অশ্রু বিসর্জন দেয় অর্থাৎ কান্না করে।
৬। সেই ব্যক্তি যাকে কোন সম্ভ্রান্ত সুন্দরী নারী (খারাপ কাজের জন্য) আহবান করে; কিন্তু সে বলে ‘‘আমি আল্লাহকে ভয় করি’’।
৭। সেই ব্যক্তি যে গোপনে এমনভাবে দান করে যে, বাম হাত জানতে পারে না যে, তার ডান হাত কী দান করেছে। (বুখারী, মুসলিম)
যৌবনকালের হিসাব পৃথকভাবে দিতে হবে :
عَنِ ابْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا تَزُوْلُ قَدَمَا ابْنِ اٰدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حَتّٰى يُسْأَلَ عَنْ خَمْسٍ عَنْ عُمُرِهٖ فِيْمَ أَفْنَاهُ وَعَنْ شَبَابِهٖ فِيْمَ أَبْلَاهُ وَمَالِهٖ مِنْ أَيْنَ اِكْتَسَبَهٗ وَفِيْمَ أَنْفَقَهٗ وَمَاذَا عَمِلَ فِيْمَا عَلِمَ
ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, কিয়ামতের দিন পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর না দেয়া পর্যন্ত কোন আদম সন্তান পা নাড়াতে পারবে না :
১. তার বয়স কীভাবে অতিবাহিত করেছে?
২. যৌবনকাল কীভাবে কাটিয়েছে?
৩. সম্পদ কীভাবে অর্জন করেছে?
৪. সম্পদ কোথায় ব্যয় করেছে?
৫. তার জ্ঞান অনুযায়ী সে কতটুকু আমল করেছে? (তিরমিযী)
সুযোগ থাকতে সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে :
عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُوْنٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِرَجُلٍ : اِغْتَنِمْ خَمْسًا قَبْلَ خَمْسٍ : حَيَاتَكَ قَبْلَ مَوْتِكَ ، وَفَرَاغَكَ قَبْلَ شُغْلِكَ ، وَغِنَاكَ قَبْلَ فَقْرِكَ ، وَشَبَابَكَ قَبْلَ هَرَمِكَ وَصِحَّتَكَ قَبْلَ سَقَمِكَ
আমর বিন মায়মুনা (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, পাঁচটি জিনিস আসার পূর্বে পাঁচটি বিষয়কে গনীমত মনে কর :
১. মৃত্যুর পূর্বে জীবনের।
২. ব্যস্ততার পূর্বে অবসরের।
৩. দারিদ্রতার পূর্বে সচ্ছলতার।
৪. বার্ধক্যের পূর্বে যৌবনের।
৫. অসুস্থতার পূর্বে সুস্থতার। (তিরমিযী)
১। ন্যায়পরায়ণ শাসক।
২। সেই যুবক যে আল্লাহর ইবাদাতের মধ্য দিয়ে বড় হয়।
৩। সেই ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত থাকে। যখন সে বেরিয়ে আসে তখন পুনরায় মসজিদে ফিরে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকে।
৪। সেই দুইব্যক্তি যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একে অপরকে ভালবাসে। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই তারা একত্রিত হয় এবং পৃথক হয়।
৫। সেই ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং দু’চোখে অশ্রু বিসর্জন দেয় অর্থাৎ কান্না করে।
৬। সেই ব্যক্তি যাকে কোন সম্ভ্রান্ত সুন্দরী নারী (খারাপ কাজের জন্য) আহবান করে; কিন্তু সে বলে ‘‘আমি আল্লাহকে ভয় করি’’।
৭। সেই ব্যক্তি যে গোপনে এমনভাবে দান করে যে, বাম হাত জানতে পারে না যে, তার ডান হাত কী দান করেছে। (বুখারী, মুসলিম)
যৌবনকালের হিসাব পৃথকভাবে দিতে হবে :
عَنِ ابْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا تَزُوْلُ قَدَمَا ابْنِ اٰدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حَتّٰى يُسْأَلَ عَنْ خَمْسٍ عَنْ عُمُرِهٖ فِيْمَ أَفْنَاهُ وَعَنْ شَبَابِهٖ فِيْمَ أَبْلَاهُ وَمَالِهٖ مِنْ أَيْنَ اِكْتَسَبَهٗ وَفِيْمَ أَنْفَقَهٗ وَمَاذَا عَمِلَ فِيْمَا عَلِمَ
ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, কিয়ামতের দিন পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর না দেয়া পর্যন্ত কোন আদম সন্তান পা নাড়াতে পারবে না :
১. তার বয়স কীভাবে অতিবাহিত করেছে?
২. যৌবনকাল কীভাবে কাটিয়েছে?
৩. সম্পদ কীভাবে অর্জন করেছে?
৪. সম্পদ কোথায় ব্যয় করেছে?
৫. তার জ্ঞান অনুযায়ী সে কতটুকু আমল করেছে? (তিরমিযী)
সুযোগ থাকতে সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে :
عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُوْنٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِرَجُلٍ : اِغْتَنِمْ خَمْسًا قَبْلَ خَمْسٍ : حَيَاتَكَ قَبْلَ مَوْتِكَ ، وَفَرَاغَكَ قَبْلَ شُغْلِكَ ، وَغِنَاكَ قَبْلَ فَقْرِكَ ، وَشَبَابَكَ قَبْلَ هَرَمِكَ وَصِحَّتَكَ قَبْلَ سَقَمِكَ
আমর বিন মায়মুনা (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, পাঁচটি জিনিস আসার পূর্বে পাঁচটি বিষয়কে গনীমত মনে কর :
১. মৃত্যুর পূর্বে জীবনের।
২. ব্যস্ততার পূর্বে অবসরের।
৩. দারিদ্রতার পূর্বে সচ্ছলতার।
৪. বার্ধক্যের পূর্বে যৌবনের।
৫. অসুস্থতার পূর্বে সুস্থতার। (তিরমিযী)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
أَوَلَمْ نُعَمِّرْكُمْ مَا يَتَذَكَّرُ فِيْهِ مَنْ تَذَكَّرَ وَجَاءَكُمُ النَّذِيْرُ
‘‘আমি তোমাদেরকে কি পর্যাপ্ত বয়স দেইনি? এর মধ্যে যে শিক্ষা নিতে চাইবে, সে ঠিকই উপদেশ গ্রহণ করবে। আর তোমাদের নিকট ভীতি প্রদর্শনকারীও এসেছিল।’’
قَالَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " أَعْذَرَ اللهُ إِلَى امْرِئٍ أَخَّرَ أَجَلَهٗ حَتّٰى بَلَّغَهٗ سِتِّيْنَ سَنَةً
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, ‘‘আল্লাহ তা’আলা সে ব্যক্তির ওজর কবুল করবেন না, যার জীবনের মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছেন, এমন কি ৬০ বছরের কোঠায় পৌঁছে দিয়েছেন।’’ (বুখারী হা: ৬৪১৯)
আফসোস! মানুষ বৃদ্ধ হলেও দুনিয়ার লোভ সামলাতে পারে না :
قَالَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " لَا يَزَالُ قَلْبُ الْكَبِيْرِ شَابًّا فِي اثْنَتَيْنِ فِي حُبِّ الدُّنْيَا وَطُولِ الْاَمَلِ
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, বৃদ্ধ লোকের অন্তর দু’টি কারণে যৌবনদৃপ্ত থাকে :
১. দুনিয়ার মুহাববত (অর্থাৎ ভোগ-বিলাস ও ধন-সম্পদের মুহাববত)
২. উচ্চাকাঙ্ক্ষা। (বুখারী হা : ৬৪২০)
قَالَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " يَكْبَرُ ابْنُ آدَمَ وَيَكْبَرُ مَعَهُ اثْنَانِ حُبُّ الْمَالِ، وَطُولُ الْعُمُرِ
আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলূল্লাহ ﷺ বলেছেন, আদম সন্তানের বয়স বাড়ার সাথে সাথে দু’টি জিনিস বেড়ে যায়।
১. সম্পদের মোহ ও
২. দীর্ঘ জীবনের আকাঙ্ক্ষা। (বুখারী হা: ৬৪২১)
أَوَلَمْ نُعَمِّرْكُمْ مَا يَتَذَكَّرُ فِيْهِ مَنْ تَذَكَّرَ وَجَاءَكُمُ النَّذِيْرُ
‘‘আমি তোমাদেরকে কি পর্যাপ্ত বয়স দেইনি? এর মধ্যে যে শিক্ষা নিতে চাইবে, সে ঠিকই উপদেশ গ্রহণ করবে। আর তোমাদের নিকট ভীতি প্রদর্শনকারীও এসেছিল।’’
قَالَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " أَعْذَرَ اللهُ إِلَى امْرِئٍ أَخَّرَ أَجَلَهٗ حَتّٰى بَلَّغَهٗ سِتِّيْنَ سَنَةً
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, ‘‘আল্লাহ তা’আলা সে ব্যক্তির ওজর কবুল করবেন না, যার জীবনের মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছেন, এমন কি ৬০ বছরের কোঠায় পৌঁছে দিয়েছেন।’’ (বুখারী হা: ৬৪১৯)
আফসোস! মানুষ বৃদ্ধ হলেও দুনিয়ার লোভ সামলাতে পারে না :
قَالَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " لَا يَزَالُ قَلْبُ الْكَبِيْرِ شَابًّا فِي اثْنَتَيْنِ فِي حُبِّ الدُّنْيَا وَطُولِ الْاَمَلِ
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, বৃদ্ধ লোকের অন্তর দু’টি কারণে যৌবনদৃপ্ত থাকে :
১. দুনিয়ার মুহাববত (অর্থাৎ ভোগ-বিলাস ও ধন-সম্পদের মুহাববত)
২. উচ্চাকাঙ্ক্ষা। (বুখারী হা : ৬৪২০)
قَالَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " يَكْبَرُ ابْنُ آدَمَ وَيَكْبَرُ مَعَهُ اثْنَانِ حُبُّ الْمَالِ، وَطُولُ الْعُمُرِ
আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলূল্লাহ ﷺ বলেছেন, আদম সন্তানের বয়স বাড়ার সাথে সাথে দু’টি জিনিস বেড়ে যায়।
১. সম্পদের মোহ ও
২. দীর্ঘ জীবনের আকাঙ্ক্ষা। (বুখারী হা: ৬৪২১)
মুসলিম জাতির জন্য বিশ্বনবী মুহাম্মাদ ﷺ হলেন সবচেয়ে উত্তম আদর্শ। জীবনের সর্বক্ষেত্রে তাঁর নীতি ও আদর্শের অনুসরণ করা আমাদের একান্ত কর্তব্য। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِيْ رَسُوْلِ اللهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَنْ كَانَ يَرْجُو اللهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللهَ كَثِيْرًا
‘‘তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ (তাঁর সন্তুষ্টি) ও কিয়ামতের দিনের (মুক্তি) কামনা করে এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করে- তাদের জন্য অবশ্যই উত্তম আদর্শ রয়েছে আল্লাহর রাসূলের মধ্যে।’’ (সূরা আহযাব- ২১)
৫টি সুন্নাত কাজ :
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ফিতরাত অর্থাৎ মানুষের স্বভাবধর্ম ৫ টি :
১. খাতনা (মুসলমানি) করা। ২. ক্ষুর দ্বারা নাভীর নিচ পরিষ্কার করা। ৩. বগলের পশম তুলে ফেলা। ৪. নখ কাটা। ৫. গোঁফ ছোট করা। (বুখারী)
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِيْ رَسُوْلِ اللهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَنْ كَانَ يَرْجُو اللهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللهَ كَثِيْرًا
‘‘তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ (তাঁর সন্তুষ্টি) ও কিয়ামতের দিনের (মুক্তি) কামনা করে এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করে- তাদের জন্য অবশ্যই উত্তম আদর্শ রয়েছে আল্লাহর রাসূলের মধ্যে।’’ (সূরা আহযাব- ২১)
৫টি সুন্নাত কাজ :
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, ফিতরাত অর্থাৎ মানুষের স্বভাবধর্ম ৫ টি :
১. খাতনা (মুসলমানি) করা। ২. ক্ষুর দ্বারা নাভীর নিচ পরিষ্কার করা। ৩. বগলের পশম তুলে ফেলা। ৪. নখ কাটা। ৫. গোঁফ ছোট করা। (বুখারী)
প্রত্যেক মুসলমানের উচিত বিশ্বনবীর চরিত্রে চরিত্রবান হওয়া। মুহাম্মাদ ﷺ এরচেয়ে উত্তম চরিত্রের দৃষ্টান্ত দ্বিতীয় আর কেউ হতে পারে না। কারণ তিনিই ছিলেন একমাত্র উন্নত চরিত্রের অধিকারী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
وَإِنَّكَ لَعَلٰى خُلُقٍ عَظِيْمٍ
‘‘হে নবী আপনিই মহান উন্নত চরিত্রের অধিকারী’’। (সূরা ক্বালাম- ৪)
তাছাড়া আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে রাসূল ﷺ এর চরিত্রে চরিত্রবান হওয়ার নিদের্শও দিয়েছেন।
যে ব্যক্তি রাসূল ﷺএর সুন্নাত অনুযায়ী চলার অভ্যাস করবে আল্লাহ তা‘আলা তার অন্তরকে নুরান্বিত করে দেবেন এবং ইল্মে মারিফাত দ্বারা তার অন্তর ভরপূর করে দেবেন। সুতরাং আমরা রাসূলের আখলাক ও গুণাবলী পড়ব, শুনব এবং নিজেরাও ঐরূপ গুণের অধিকারী হওয়ার চেষ্টা করব, তাহলে আমরা দুনিয়া ও আখেরাতে সম্মান ও সফলতার অধিকারী হতে পারব, ইনশা-আল্লাহ।
وَإِنَّكَ لَعَلٰى خُلُقٍ عَظِيْمٍ
‘‘হে নবী আপনিই মহান উন্নত চরিত্রের অধিকারী’’। (সূরা ক্বালাম- ৪)
তাছাড়া আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে রাসূল ﷺ এর চরিত্রে চরিত্রবান হওয়ার নিদের্শও দিয়েছেন।
যে ব্যক্তি রাসূল ﷺএর সুন্নাত অনুযায়ী চলার অভ্যাস করবে আল্লাহ তা‘আলা তার অন্তরকে নুরান্বিত করে দেবেন এবং ইল্মে মারিফাত দ্বারা তার অন্তর ভরপূর করে দেবেন। সুতরাং আমরা রাসূলের আখলাক ও গুণাবলী পড়ব, শুনব এবং নিজেরাও ঐরূপ গুণের অধিকারী হওয়ার চেষ্টা করব, তাহলে আমরা দুনিয়া ও আখেরাতে সম্মান ও সফলতার অধিকারী হতে পারব, ইনশা-আল্লাহ।
উলামায়ে কেরাম হাদীস থেকে বিশ্বনবী মুহাম্মাদ ﷺ এর যে সকল চারিত্রিক বৈশিষ্ট একত্র করেছেন তার একটি অপূর্ব সমাহার নিচে উপস্থাপন করা হল :
রাসূল ﷺ ছিলেন অধিক ধৈর্যশীল। কোন ব্যতিক্রম ঘটলে বা ক্ষতি হয়ে গেলে মাথা গরম করতেন না। তিনি ছিলেন খুবই সাহসী ও বীর। আল্লাহ ছাড়া কাউকে তিনি ভয় করতেন না। তিনি ছিলেন মানুষের মধ্যে ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠাকারী। কোন ব্যাপারে তিনি পক্ষপাতিত্ব করতেন না। আপন-পর, ধনী-গরীব সবার সাথে তিনি সমান ব্যবহার করতেন। তিনি ছিলেন ক্ষমাশীল, কেউ অন্যায় করলেও ক্ষমা করে দিতেন। মহিলাদের মধ্যে মুহরিমাত, নিজ দাসী ও স্ত্রীদের ছাড়া অন্য কোন মহিলার হাত স্পর্শ করেননি। তিনি নিজের জুতা নিজেই সেলাই করতেন। কাপড়ে তালি লাগাতেন। ঘরে থাকলে স্ত্রীদের সাথে কাজে শরীক হতেন, গোশত কাটতেন। নামাযের সময় উপস্থিত হলে মসজিদে চলে যেতেন। তিনি বড়ই লজ্জাশীল ছিলেন, কারও চোখ বরাবর চেয়ে থাকতেন না। আযাদ বা দাস সকলের দাওয়াত তিনি কবুল করতেন। সামান্য গোশত বা এক ঢোক দুধও কেউ হাদিয়া দিলে তিনি তা স্বাদরে গ্রহণ করতেন।
তিনি যাকাতের মাল খেতেন না। বান্দি বা মিসকিনের দাওয়াতও তিনি গ্রহণ করতেন, অহংকার করে বাদ দিতেন না। নিজের কোন স্বার্থের জন্য কারও উপর রাগ করতেন না। তবে দ্বীনের ব্যাপারে কেউ আঘাত হানলে রাগ করতেন। হক্ককে সর্বদা বাস্তবায়িত করতেন, যদিও এর ক্ষতি নিজের বা সাহাবীদের দিকে ফিরে আসে। তিনি কাউকে দিয়ে কোন সাহায্য চাইতেন না। সামনে যা উপস্থিত পেতেন তাই খেতেন। কোন খাবার ফেরত দিতেন না। হালাল কোন জিনিস পরিত্যাগ করতেন না। তিনি হেলান দিয়ে খেতেন না এবং টেবিলের উপরে রেখেও খেতেন না। তিনি আহার করে পায়ের নিচে হাত মুছতেন। মৃত্যু পযর্ন্ত একাধারে তিন দিন পেটভরে আহার করেননি। এটা দারিদ্র্যতার কারণে নয় বরং নফসকে দমন রেখে আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য।
বিবাহ অনুষ্ঠানে দাওয়াত আসলে তিনি যেতেন। কেউ মারা গেলে জানাযায় শরীক হতেন। কোন প্রহরী ছাড়াই দুশমনের মধ্যে একা চলাফেরা করতেন, কারণ স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলা তার হেফাযতের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তিনি মানুষের মধ্যে সবচেয়ে নরম স্বভাবের ছিলেন, তাঁর মধ্যে কোন অহংকার ছিল না। বাহ্যিক দিক থেকে তিনি খুবই সুন্দর ছিলেন। দুনিয়ার কোন ব্যাপারে তাকে কেউ ভয় দেখাতে পারত না।
তিনি সুগন্ধি ভালবাসতেন এবং দুর্গন্ধযুক্ত জিনিসকে অপছন্দ করতেন। মিসকিনদের সঙ্গে খাবার খেতেন, সম্মানিত লোকদেরকে তিনি সম্মান করতেন। মর্যাদাবান লোকদের সাথেও তিনি বন্ধুত্ব গড়ে তুলতেন এবং তাদের সাথে সদাচারণ করতেন। সকল আত্মীয়কে তিনি সমানভাবে দেখতেন ও তাদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখতেন। কারও উপর কঠোরতা করতেন না, কেউ কোন দোষ করে ওজর পেশ করলে তিনি ক্ষমা করে দিতেন। কোন কোন সময় সত্য কথা দ্বারা কৌতুক করতেন। জায়েয কোন খেলা হলে তা অপছন্দ করতেন না। তাঁর দুধবিশিষ্ট উটনী ও বকরী ছিল, এগুলোর দুধ পরিবারের সবাই মিলে খেতেন। তাঁর দাস-দাসী ছিল, কিন্তু খাওয়া পরায় তাদের সাথে সমতা বজায় রাখতেন। তিনি যা খেতেন ও পরতেন দাস-দাসীদেরকেও তাই দিতেন। তাদেরকে কাজের জন্য কোন সময় নির্ধারণ করতেন না। তবে আল্লাহর ইবাদাতের জন্য বা নিজের বিশেষ প্রয়োজনে সময় নির্ধারণ করতেন। তিনি তাঁর সাহাবীদের বাগানে যাতায়াত করতেন। তিনি কোন মিসকিনকে তার গরীবি বা দুর্দশার কারণে হেয় প্রতিপন্ন করতেন না। আবার কোন বাদশাকে তার বাদশাহীর কারণে ভয়ও করতেন না। সকলকে সমানভাবে আল্লাহর দিকে ডাকতেন। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর মাঝে সকল উত্তম গুণাবলী একত্র করে দিয়েছেন। অথচ তিনি নিজে লেখাপড়া জানতেন না। জন্মগ্রহণ করেছেন এতীম অবস্থায়, বাল্যকাল কাটিয়েছেন ছাগল চরিয়ে।
রাসূল ﷺ ছিলেন অধিক ধৈর্যশীল। কোন ব্যতিক্রম ঘটলে বা ক্ষতি হয়ে গেলে মাথা গরম করতেন না। তিনি ছিলেন খুবই সাহসী ও বীর। আল্লাহ ছাড়া কাউকে তিনি ভয় করতেন না। তিনি ছিলেন মানুষের মধ্যে ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠাকারী। কোন ব্যাপারে তিনি পক্ষপাতিত্ব করতেন না। আপন-পর, ধনী-গরীব সবার সাথে তিনি সমান ব্যবহার করতেন। তিনি ছিলেন ক্ষমাশীল, কেউ অন্যায় করলেও ক্ষমা করে দিতেন। মহিলাদের মধ্যে মুহরিমাত, নিজ দাসী ও স্ত্রীদের ছাড়া অন্য কোন মহিলার হাত স্পর্শ করেননি। তিনি নিজের জুতা নিজেই সেলাই করতেন। কাপড়ে তালি লাগাতেন। ঘরে থাকলে স্ত্রীদের সাথে কাজে শরীক হতেন, গোশত কাটতেন। নামাযের সময় উপস্থিত হলে মসজিদে চলে যেতেন। তিনি বড়ই লজ্জাশীল ছিলেন, কারও চোখ বরাবর চেয়ে থাকতেন না। আযাদ বা দাস সকলের দাওয়াত তিনি কবুল করতেন। সামান্য গোশত বা এক ঢোক দুধও কেউ হাদিয়া দিলে তিনি তা স্বাদরে গ্রহণ করতেন।
তিনি যাকাতের মাল খেতেন না। বান্দি বা মিসকিনের দাওয়াতও তিনি গ্রহণ করতেন, অহংকার করে বাদ দিতেন না। নিজের কোন স্বার্থের জন্য কারও উপর রাগ করতেন না। তবে দ্বীনের ব্যাপারে কেউ আঘাত হানলে রাগ করতেন। হক্ককে সর্বদা বাস্তবায়িত করতেন, যদিও এর ক্ষতি নিজের বা সাহাবীদের দিকে ফিরে আসে। তিনি কাউকে দিয়ে কোন সাহায্য চাইতেন না। সামনে যা উপস্থিত পেতেন তাই খেতেন। কোন খাবার ফেরত দিতেন না। হালাল কোন জিনিস পরিত্যাগ করতেন না। তিনি হেলান দিয়ে খেতেন না এবং টেবিলের উপরে রেখেও খেতেন না। তিনি আহার করে পায়ের নিচে হাত মুছতেন। মৃত্যু পযর্ন্ত একাধারে তিন দিন পেটভরে আহার করেননি। এটা দারিদ্র্যতার কারণে নয় বরং নফসকে দমন রেখে আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য।
বিবাহ অনুষ্ঠানে দাওয়াত আসলে তিনি যেতেন। কেউ মারা গেলে জানাযায় শরীক হতেন। কোন প্রহরী ছাড়াই দুশমনের মধ্যে একা চলাফেরা করতেন, কারণ স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলা তার হেফাযতের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তিনি মানুষের মধ্যে সবচেয়ে নরম স্বভাবের ছিলেন, তাঁর মধ্যে কোন অহংকার ছিল না। বাহ্যিক দিক থেকে তিনি খুবই সুন্দর ছিলেন। দুনিয়ার কোন ব্যাপারে তাকে কেউ ভয় দেখাতে পারত না।
তিনি সুগন্ধি ভালবাসতেন এবং দুর্গন্ধযুক্ত জিনিসকে অপছন্দ করতেন। মিসকিনদের সঙ্গে খাবার খেতেন, সম্মানিত লোকদেরকে তিনি সম্মান করতেন। মর্যাদাবান লোকদের সাথেও তিনি বন্ধুত্ব গড়ে তুলতেন এবং তাদের সাথে সদাচারণ করতেন। সকল আত্মীয়কে তিনি সমানভাবে দেখতেন ও তাদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখতেন। কারও উপর কঠোরতা করতেন না, কেউ কোন দোষ করে ওজর পেশ করলে তিনি ক্ষমা করে দিতেন। কোন কোন সময় সত্য কথা দ্বারা কৌতুক করতেন। জায়েয কোন খেলা হলে তা অপছন্দ করতেন না। তাঁর দুধবিশিষ্ট উটনী ও বকরী ছিল, এগুলোর দুধ পরিবারের সবাই মিলে খেতেন। তাঁর দাস-দাসী ছিল, কিন্তু খাওয়া পরায় তাদের সাথে সমতা বজায় রাখতেন। তিনি যা খেতেন ও পরতেন দাস-দাসীদেরকেও তাই দিতেন। তাদেরকে কাজের জন্য কোন সময় নির্ধারণ করতেন না। তবে আল্লাহর ইবাদাতের জন্য বা নিজের বিশেষ প্রয়োজনে সময় নির্ধারণ করতেন। তিনি তাঁর সাহাবীদের বাগানে যাতায়াত করতেন। তিনি কোন মিসকিনকে তার গরীবি বা দুর্দশার কারণে হেয় প্রতিপন্ন করতেন না। আবার কোন বাদশাকে তার বাদশাহীর কারণে ভয়ও করতেন না। সকলকে সমানভাবে আল্লাহর দিকে ডাকতেন। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর মাঝে সকল উত্তম গুণাবলী একত্র করে দিয়েছেন। অথচ তিনি নিজে লেখাপড়া জানতেন না। জন্মগ্রহণ করেছেন এতীম অবস্থায়, বাল্যকাল কাটিয়েছেন ছাগল চরিয়ে।
রাসূল ﷺ কোন মুমিনকে কখনো গালি দেননি। কোন স্ত্রীকে বা খাদেমকে তিরস্কার বা লানত করেননি। যুদ্ধের ময়দানে তাকে বলা হত আপনি কাফেরদের প্রতি লানত করুন, তিনি বলতেন আমি লানতকারী হিসেবে প্রেরিত হয়নি বরং রহমত হিসেবে প্রেরিত হয়েছি। আল্লাহর পথে জিহাদ ছাড়া তিনি কোনদিন কাউকে প্রহার করেননি। আল্লাহর হক ছাড়া তিনি কারও কাছ থেকে প্রতিশোধ নেননি। দু’টি কাজের মধ্যে এখতিয়ার দেয়া হলে তিনি সহজটি গ্রহণ করতেন। গুনাহ বা আত্মীয়তার সম্পর্ক নষ্ট হয় এমন কাজ থেকে তিনি দূরে থাকতেন। আযাদ বা দাস তাঁর কাছে যেই আসত তার প্রয়োজন মিটানোর জন্য রাসূল ﷺ নিজে শরীক হতেন।
আনাস বিন মালিক (রাঃ) রাসূল ﷺ এর খাদেম ছিলেন। তিনি বলেন, ঐ সত্ত্বার কসম! যিনি রাসূলকে সত্য বিধানসহ পাঠিয়েছেন, আমার কোন কাজ রাসূল ﷺএর নিকট অপছন্দনীয় হলে তিনি কোনদিন আমাকে বলেননি এটা কেন করেছ? বরং তিনি বলতেন, আল্লাহ যা হুকুম করেছেন, তা-ই হয়েছে। রাসূল ﷺ কোন বিছানাকে মন্দ বলতেন না, বিছানা থাকলে বিছানায় শুইতেন আর বিছানা না থাকলে মাটিতে শুইতেন।
রাসূল ﷺ কে পাঠানোর আগে আল্লাহ তা‘আলা তাওরাত কিতাবে তাঁর গুণাগুণ বর্ণনা করেছেন যে, মুহাম্মাদ আমার মনোনীত বান্দা। তিনি কর্কষভাষী নন এবং কঠোর হৃদয়ের অধিকারীও নন, তিনি বাজারে গোলমালকারী নন। তিনি মন্দের বদলা মন্দ দিয়ে দেন না বরং ক্ষমা করে দেন। তাঁর জন্ম হবে মক্কায়, হিজরত হবে মদিনায়। যারা তাঁর সঙ্গী হবে তারাই হবে কুরআন ও ইল্মের ধারক-বাহক।
রাসূল ﷺ এর চরিত্রের মধ্যে রয়েছে যে, তিনি কারো সাথে সাক্ষাত করলে প্রথমে তাকে সালাম দিতেন। কারো প্রয়োজনে দাঁড়ালে সে সরে না যাওয়া পর্যন্ত তিনি ধৈর্য ধরতেন। কেউ তাঁর হাত ধরলে ধারক হাত না সরানো পর্যন্ত তিনি হাত সরাতেন না। তিনি তাঁর সাহাবীদের সাথে সাক্ষাত করলে মুসাফাহার জন্য নিজে হাত বাড়িয়ে দিতেন। তিনি যখনই কোথাও বসতেন বা উঠতেন তখনই আল্লাহর যিকির করতেন। নামাযে থাকাকালীন কেউ আসলে তিনি নামায সংক্ষিপ্ত করে তার সাথে সাক্ষাত করতেন। লোক চলে যাওয়ার পর, আবার নামাযে মশুগুল হয়ে যেতেন।
আনাস বিন মালিক (রাঃ) রাসূল ﷺ এর খাদেম ছিলেন। তিনি বলেন, ঐ সত্ত্বার কসম! যিনি রাসূলকে সত্য বিধানসহ পাঠিয়েছেন, আমার কোন কাজ রাসূল ﷺএর নিকট অপছন্দনীয় হলে তিনি কোনদিন আমাকে বলেননি এটা কেন করেছ? বরং তিনি বলতেন, আল্লাহ যা হুকুম করেছেন, তা-ই হয়েছে। রাসূল ﷺ কোন বিছানাকে মন্দ বলতেন না, বিছানা থাকলে বিছানায় শুইতেন আর বিছানা না থাকলে মাটিতে শুইতেন।
রাসূল ﷺ কে পাঠানোর আগে আল্লাহ তা‘আলা তাওরাত কিতাবে তাঁর গুণাগুণ বর্ণনা করেছেন যে, মুহাম্মাদ আমার মনোনীত বান্দা। তিনি কর্কষভাষী নন এবং কঠোর হৃদয়ের অধিকারীও নন, তিনি বাজারে গোলমালকারী নন। তিনি মন্দের বদলা মন্দ দিয়ে দেন না বরং ক্ষমা করে দেন। তাঁর জন্ম হবে মক্কায়, হিজরত হবে মদিনায়। যারা তাঁর সঙ্গী হবে তারাই হবে কুরআন ও ইল্মের ধারক-বাহক।
রাসূল ﷺ এর চরিত্রের মধ্যে রয়েছে যে, তিনি কারো সাথে সাক্ষাত করলে প্রথমে তাকে সালাম দিতেন। কারো প্রয়োজনে দাঁড়ালে সে সরে না যাওয়া পর্যন্ত তিনি ধৈর্য ধরতেন। কেউ তাঁর হাত ধরলে ধারক হাত না সরানো পর্যন্ত তিনি হাত সরাতেন না। তিনি তাঁর সাহাবীদের সাথে সাক্ষাত করলে মুসাফাহার জন্য নিজে হাত বাড়িয়ে দিতেন। তিনি যখনই কোথাও বসতেন বা উঠতেন তখনই আল্লাহর যিকির করতেন। নামাযে থাকাকালীন কেউ আসলে তিনি নামায সংক্ষিপ্ত করে তার সাথে সাক্ষাত করতেন। লোক চলে যাওয়ার পর, আবার নামাযে মশুগুল হয়ে যেতেন।
রাসূল ﷺ অধিকাংশ সময় দু’হাঁটু খাড়া করে হাত দিয়ে ভর করে বসতেন। তিনি বসার জন্য কোন জায়গা নির্দিষ্ট করতেন না। যেখানে তিনি বসার জায়গা পেতেন বসতেন। অধিকাংশ সময় রাসূল ﷺ কিবলার দিকে মুখ করে বসতেন। তিনি সাহাবীদের সামনে পা লম্বা করে বসতেন না। তবে জায়গা বেশি হলে ভিন্ন কথা। কেউ রাসূল ﷺ এর কাছে আগমন করলে তিনি তাকে খুব সম্মান দিতেন, এমনকি কোন সময় বসার জন্য নিজের কাপড় দিয়ে দিতেন, অথচ সে রাসূলের কোন আত্মীয় নয়। তার সামনে যারা বসতেন তাদের দিকে তিনি সমানভাবে তাকাতেন। রাসূল ﷺএর মজলিস ছিল বিনয় ও নম্রতায় পরিপূর্ণ। আর তিনি ছিলেন কোমল হৃদয়ের অধিকারী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
فَبِمَا رَحْمَةٍ مِّنَ اللهِ لِنْتَ لَهُمْ وَلَوْ كُنْتَ فَظًّا غَلِيْظَ الْقَلْبِ لَانْفَضُّوْا مِنْ حَوْلِكَ
‘‘যদি আপনি কর্কষ ও কঠোর মনের অধিকারী হতেন তবে আপনার সাথিরা আপনার কাছ থেকে সরে যেত।’’ (সূরা আলে ইমরান- ১৫৯)
রাসূল ﷺ সাহাবীদেরকে অনেক সময় কুনিয়াত দিয়ে ডাকতেন তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও মন আকৃষ্ট করার জন্য। তিনি রাগ থেকে দূরে থাকতেন এবং সকলের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করতেন। তিনি মানুষের প্রতি সবচেয়ে বেশি মমতা প্রকাশ করতেন, সবচেয়ে বেশি অন্যের মঙ্গল কামনা করতেন, অন্যের উপকারের জন্য সবসময় এগিয়ে থাকতেন। রাসূল ﷺএর মজলিসে কেউ বড় আওয়াজে কথা বলত না। যখন তিনি মজলিস থেকে উঠতেন তখন বলতেন :
سُبْحَانَكَ اللّٰهُمَّ وَبِحَمْدِكَ أَشْهَدُ أَنْ لَّا إلٰهَ إِلَّا أَنْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوْبُ إِلَيْكَ
সুবহা-নাকাল্লা-হুম্মা ওয়াবিহামদিকা আশহাদু আল্লা ইলা-হা ইল্লা আনতা আসতাগফিরুকা ওয়া আতূবু ইলাইক।
‘‘হে আল্লাহ! তোমার প্রশংসার সাথে তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি আর আমি সাক্ষ্য দিচিছ যে, তুমি ছাড়া কোন মাবূদ নেই। আমি তোমার নিকট ক্ষমা চাই এবং তোমার দিকে ফিরে আসি।’’ (তিরমিযী, বায়হাকী, মেশকাত হা: ২৪৩৩)
فَبِمَا رَحْمَةٍ مِّنَ اللهِ لِنْتَ لَهُمْ وَلَوْ كُنْتَ فَظًّا غَلِيْظَ الْقَلْبِ لَانْفَضُّوْا مِنْ حَوْلِكَ
‘‘যদি আপনি কর্কষ ও কঠোর মনের অধিকারী হতেন তবে আপনার সাথিরা আপনার কাছ থেকে সরে যেত।’’ (সূরা আলে ইমরান- ১৫৯)
রাসূল ﷺ সাহাবীদেরকে অনেক সময় কুনিয়াত দিয়ে ডাকতেন তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও মন আকৃষ্ট করার জন্য। তিনি রাগ থেকে দূরে থাকতেন এবং সকলের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করতেন। তিনি মানুষের প্রতি সবচেয়ে বেশি মমতা প্রকাশ করতেন, সবচেয়ে বেশি অন্যের মঙ্গল কামনা করতেন, অন্যের উপকারের জন্য সবসময় এগিয়ে থাকতেন। রাসূল ﷺএর মজলিসে কেউ বড় আওয়াজে কথা বলত না। যখন তিনি মজলিস থেকে উঠতেন তখন বলতেন :
سُبْحَانَكَ اللّٰهُمَّ وَبِحَمْدِكَ أَشْهَدُ أَنْ لَّا إلٰهَ إِلَّا أَنْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوْبُ إِلَيْكَ
সুবহা-নাকাল্লা-হুম্মা ওয়াবিহামদিকা আশহাদু আল্লা ইলা-হা ইল্লা আনতা আসতাগফিরুকা ওয়া আতূবু ইলাইক।
‘‘হে আল্লাহ! তোমার প্রশংসার সাথে তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি আর আমি সাক্ষ্য দিচিছ যে, তুমি ছাড়া কোন মাবূদ নেই। আমি তোমার নিকট ক্ষমা চাই এবং তোমার দিকে ফিরে আসি।’’ (তিরমিযী, বায়হাকী, মেশকাত হা: ২৪৩৩)
রাসূল ﷺ সবচেয়ে বিশুদ্ধভাবে কথা বলতেন। তাঁর যবান ছিল খুবই মিষ্ট, তিনি বলতেন আমি আরবের সবচেয়ে স্পষ্টভাষী। আর জান্নাতবাসীরা রাসূল ﷺএর ভাষায় কথা বলবে। মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ তোমাদের ন্যায় অনর্গল কথা বলতেন না। তিনি থেমে থেমে কথা বলতেন, শ্রোতাদের বুঝার জন্য তিনি কোন কোন কথা তিন বার করেও বলতেন।
রাসূল ﷺ সংক্ষেপে কথা বলতেন। কিন্তু তাঁর সংক্ষিপ্ত কথার মধ্যে অনেক ভাব প্রকাশ পেত। এজন্য তাকে ‘জাওয়ামিউল কিলাম’ বলা হত। তিনি যতটুকু কথা বলার দরকার ঠিক ততটুকুই বলতেন। কমও বলতেন না আবার বাড়িয়েও বলতেন না। যারা শ্রবণ করত তারা সকলেই তাঁর কথা মনে রাখতে পারত। তিনি বেহুদা বা অনর্থক কথা-বার্তা থেকে বিরত থাকতেন। বেশি সময় নীরব থাকতেন, প্রয়োজন হলে কথা বলতেন। তাঁর মুখ থেকে খারাপ কোন কথা বের হত না। রাগ ও সন্তুষ্টি সকল অবস্থায় তিনি সত্য কথা বলতেন। কেউ অসঙ্গত কথা বললে তিনি সে দিকে কর্ণপাত করতেন না। রাসূল ﷺ যখন নীরব থাকতেন তখন তার সাথিরা কথা বলত, তবে তারা কথা কাটা-কাটি করত না।
রাসূল ﷺ সংক্ষেপে কথা বলতেন। কিন্তু তাঁর সংক্ষিপ্ত কথার মধ্যে অনেক ভাব প্রকাশ পেত। এজন্য তাকে ‘জাওয়ামিউল কিলাম’ বলা হত। তিনি যতটুকু কথা বলার দরকার ঠিক ততটুকুই বলতেন। কমও বলতেন না আবার বাড়িয়েও বলতেন না। যারা শ্রবণ করত তারা সকলেই তাঁর কথা মনে রাখতে পারত। তিনি বেহুদা বা অনর্থক কথা-বার্তা থেকে বিরত থাকতেন। বেশি সময় নীরব থাকতেন, প্রয়োজন হলে কথা বলতেন। তাঁর মুখ থেকে খারাপ কোন কথা বের হত না। রাগ ও সন্তুষ্টি সকল অবস্থায় তিনি সত্য কথা বলতেন। কেউ অসঙ্গত কথা বললে তিনি সে দিকে কর্ণপাত করতেন না। রাসূল ﷺ যখন নীরব থাকতেন তখন তার সাথিরা কথা বলত, তবে তারা কথা কাটা-কাটি করত না।
রাসূল ﷺ যা সামনে পেতেন তা-ই খেতেন। তাঁর কাছে ঐ খাদ্য সবচেয়ে প্রিয় ছিল যাতে হাত বেশি পড়ত অর্থাৎ বেশি লোক একত্রে আহার করত। খেতে বসলে তিনি অধিকাংশ সময় নামাযে বসার ন্যায় বসতেন। তবে এ সময়ে এক পা অপর পায়ের উপরে থাকত। তিনি বলতেন আমি একজন গোলাম আর আমি গোলামের মতই আহার করি, আর গোলামের মতই বসি। তিনি গরম খেতেন না, বলতেন গরম খানায় বরকত হয় না। তিনি প্লেটের নিকটবর্তী স্থান হতে খেতেন, আঙ্গুল চেটে খেতেন। তিনি দুই আঙ্গুল দিয়ে খেতেন না, বলতেন এটা শয়তানের খাবার। রাসূল ﷺ কোন খাদ্যের দোষ বের করতেন না, ভাল লাগলে খেতেন আর ভাল না লাগলে খেতেন না। খানা শেষে রাসূল ﷺ বর্তন খুব ভাল করে চেটে খেতেন আর বলতেন খাদ্যের শেষ দিকে বরকত বেশি হয়। রাসূল ﷺ তিন বারে পানি পান করতেন, শুরুতে বিসমিল্লাহ বলতেন এবং শেষে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলতেন। রাসূল ﷺ পান করার পর অবশিষ্ট অংশ তাঁর ডান দিকের লোকদেরকে দিতেন। একবার রাসূল ﷺএর সামনে দুধ ও মধু একত্র করে আনা হল, এরপর তিনি বললেন দু’টি পানীয় দ্বারা একটি করেছে? আমি একে হারাম মনে করি না, তবে হিসাব এবং অহংকারের ভয়ে আমি এটা পছন্দ করলাম না। আমি নম্রতা পছন্দ করি। কারণ যে আল্লাহর জন্য নম্রতা প্রকাশ করে অর্থাৎ নিজেকে ছোট মনে করে আল্লাহ তার মান-মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। রাসূল ﷺ ঘরের মধ্যে নতুন বিবাহিতা মহিলার চেয়ে বেশি লজ্জাশীল ছিলেন।
রাসূল ﷺ স্বাভাবিক অবস্থায় যে সকল পোশাক পেতেন তা-ই পরতেন। যেমন লুঙ্গি, চাদর, কুর্তা ইত্যাদি। তিনি সবুজ রঙ্গের পোশাক পছন্দ করতেন। রাসূল ﷺএর অধিকাংশ পোশাকই ছিল সাদা রঙ্গের। তিনি বলতেন, তোমরা সাদা পোশাক পর এবং এর দ্বারা মৃতদের কাফন দাও। রাসূল ﷺ পাগড়ীর নিচে টুপি পরতেন। কাপড় পরার সময় ডান দিক থেকে শুরু করতেন, আর খোলার সময় বাম দিক থেকে খুলতেন।
রাসূল ﷺ বলেন, যদি কোন মুসলমান অন্য কোন মুসলমানকে আল্লাহর ওয়াস্তে কাপড় পরায়, তবে আল্লাহ তা‘আলা তাকে দুনিয়া ও আখেরাতে কাপড় পরানোর যিম্মাদারী নেন। রাসূল ﷺ এর একটি চামড়ার বিছানা ছিল যার ভেতরে খেজুরের ছুলা ভরা থাকত। রাসূল ﷺ এর একটি পানির পাত্র ছিল, সেখান থেকে তিনি পানি খেতেন এবং ওযূ করতেন।
রাসূল ﷺ বলেন, যদি কোন মুসলমান অন্য কোন মুসলমানকে আল্লাহর ওয়াস্তে কাপড় পরায়, তবে আল্লাহ তা‘আলা তাকে দুনিয়া ও আখেরাতে কাপড় পরানোর যিম্মাদারী নেন। রাসূল ﷺ এর একটি চামড়ার বিছানা ছিল যার ভেতরে খেজুরের ছুলা ভরা থাকত। রাসূল ﷺ এর একটি পানির পাত্র ছিল, সেখান থেকে তিনি পানি খেতেন এবং ওযূ করতেন।
রাসূল ﷺ সকল মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল ছিলেন। রমাযান মাসে তাঁর দানশীলতা মুক্ত বাতাসের ন্যায় ব্যাপক আকারে বৃদ্ধি পেত। নিজের হাতে কিছুই রাখতেন না। নবী হওয়ার পর থেকে কেউ কোনকিছু চাইলে তিনি কখনো না বলতেন না।
একবার তিনি এক অমুসলিমকে অনেক বকরী দিলেন। এতে সে লোকটি খুশি হয়ে তার কওমের নিকট গিয়ে বলল, হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা ইসলাম কবুল কর। কারণ মুহাম্মাদ ﷺ এমনভাবে দান করেন যে তিনি গরীব হওয়াকে মোটেই ভয় করেন না।
এক ব্যক্তি রাসূল ﷺএর কাছে এসে কিছু চাইল, তখন রাসূল ﷺএর কাছে কিছুই ছিল না। রাসূল ﷺ তাকে বলেলন, তুমি পরে আমার কাছে এসো আমি তোমাকে দেব। তখন উমর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ তা‘আলা তো আপনাকে সার্মথ্যের বাইরে কষ্ট দিতে চান না। রাসূল ﷺ এর কাছে একথা পছন্দ হল না। এমন সময় এক ব্যক্তি বলে উঠল- হে আল্লাহর রাসূল! আপনি দান করতে থাকুন। আরশের মালিকের কাছে কমে যাওয়ার ভয় করবেন না। এ কথা শুনে রাসূল ﷺ এর মুখে হাসি ফুটে উঠল এমন কি তাঁর চেহারা উজ্জল হয়ে গেল। রাসূল ﷺ অকাতরে দান করতেন আর বলতেন, তোমরা আমাকে কৃপণ, মিথ্যুক, ও কাপুরুষ হিসেবে পাবে না। তিনি প্রয়োজন মিটানোর পর অতিরিক্ত কোনকিছু থাকলে সবই আল্লাহর রাস্তায় দান করে দিতেন।
একবার তিনি এক অমুসলিমকে অনেক বকরী দিলেন। এতে সে লোকটি খুশি হয়ে তার কওমের নিকট গিয়ে বলল, হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা ইসলাম কবুল কর। কারণ মুহাম্মাদ ﷺ এমনভাবে দান করেন যে তিনি গরীব হওয়াকে মোটেই ভয় করেন না।
এক ব্যক্তি রাসূল ﷺএর কাছে এসে কিছু চাইল, তখন রাসূল ﷺএর কাছে কিছুই ছিল না। রাসূল ﷺ তাকে বলেলন, তুমি পরে আমার কাছে এসো আমি তোমাকে দেব। তখন উমর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ তা‘আলা তো আপনাকে সার্মথ্যের বাইরে কষ্ট দিতে চান না। রাসূল ﷺ এর কাছে একথা পছন্দ হল না। এমন সময় এক ব্যক্তি বলে উঠল- হে আল্লাহর রাসূল! আপনি দান করতে থাকুন। আরশের মালিকের কাছে কমে যাওয়ার ভয় করবেন না। এ কথা শুনে রাসূল ﷺ এর মুখে হাসি ফুটে উঠল এমন কি তাঁর চেহারা উজ্জল হয়ে গেল। রাসূল ﷺ অকাতরে দান করতেন আর বলতেন, তোমরা আমাকে কৃপণ, মিথ্যুক, ও কাপুরুষ হিসেবে পাবে না। তিনি প্রয়োজন মিটানোর পর অতিরিক্ত কোনকিছু থাকলে সবই আল্লাহর রাস্তায় দান করে দিতেন।
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল ﷺ বলেছেন-
فَوَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهٖ لَا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتّٰى أَكُوْنَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ وَالِدِهٖ وَوَلَدِهٖ
‘‘আল্লাহর কসম! তোমাদের কেউ মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার কাছে তার পিতা-মাতা, তার নিজ সত্ত্বা ও সকল মানুষ হতে অধিক ভালবাসর পাত্র না হব।’’ (বুখারী)
আলী (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ আমাদের কাছে আমাদের ধন-সম্পদ সন্তান-সন্ততি, আমাদের মাতা-পিতা ও পিপাসার সময়ে ঠান্ডা পানি সবকিছু হতে অধিক ভালবাসার পাত্র ছিলেন।
আবু সুফিয়ান (রাঃ) বলেন, মুহাম্মাদ ﷺ কে তাঁর সাহাবীরা যেভাবে ভালবাসতেন এভাবে আমি অন্যকেউ কাউকে ভালবাসতে দেখিনি।
ত্বাবারাণীর এক রেওয়াতে বর্ণিত আছে যে, আয়েশা (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি রাসূল ﷺ এর কাছে হাজির হয়ে আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার প্রতি আমার ভালবাসা এত গভীর যে বাড়িতে গেলেও আপনাকেই স্মরণ করি এবং পুনরায় আপনার কাছে ফিরে না আসা পর্যন্ত আমি ধৈর্যধারণ করতে পারি না। কিন্তু আমি যখন আমার মৃত্যুর কথা স্মরণ করি, তখন হতাশ হয়ে পড়ি। কারণ আপনি তো মৃত্যুর পর নবীদের উচ্চ আসনে আসীন থাকবেন, আর আমি জান্নাতে গেলেও নিম্নস্তরেই থাকব। এখন আমার চিন্তা হল, আপনাকে আমি কীভাবে দেখতে পাব। রাসূল ﷺ লোকটির একথা শুনে কোন জবাব দিলেন না। অবশেষে জিবরাঈল নিচের আয়াতটি নিয়ে হাজির হলেন-
وَمَنْ يَّطِعِ اللهَ وَالرَّسُوْلَ فَأُولٰئِكَ مَعَ الَّذِيْنَ أَنْعَمَ اللهُ عَلَيْهِمْ مِّنَ النَّبِيِّيْنَ وَالصِّدِّيْقِيْنَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّالِحِيْنَ وَحَسُنَ أُولٰئِكَ رَفِيْقًا
‘‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দেয়া বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালিত করবে, তারা (কিয়ামতের দিন) আল্লাহর নিয়ামতপ্রাপ্ত নবী, সিদ্দিক, শহীদ ও নেককারদের মত লোকদের সঙ্গে থাকবে, আর তারা কতইনা উত্তম সঙ্গি।’’ (সূরা নিসা- ৬৯)
সুতরাং যারা আল্লাহ ও রাসূল ﷺকে মেনে চলবে তারা জান্নাতের নিম্নস্তরে থাকলেও আল্লাহ তা‘আলা নবীদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেবেন।
জেনে রাখা উচিত যে, আল্লাহর রাসূলের প্রতি মুহাববত বা ভালবাসা রাখা ও তাঁর সুন্নাতের অনুসরণ করা এবং তাঁর দেখানো হেদায়াতের উপর অটল থাকাই হল দ্বীনের মূল বিষয়। প্রতিযোগীরা এ ব্যাপারেই প্রতিযোগিতা করে থাকেন, সকল ইবাদাতকারীদের দৌড় এদিকেই গিয়ে থামে। ঈমান ও আমলের নূর হল রাসূল ﷺ এর সুন্নাতের অনুসরণ করা। এটা যে হারিয়ে ফেলে সে মৃত ব্যক্তির মত। তাই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ভালবাসা পাওয়ার জন্য রাসূল ﷺ এর অনুসরণ করাকে শর্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
আনাস বিন মালেক (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন-
وَمَنْ أَحْيَا سُنَّتِيْ فَقَدْ أَحَبَّنِيْ وَمَنْ أَحَبَّنِيْ كَانَ مَعِيْ فِي الْجَنَّةِ
‘‘যে ব্যক্তি আমার সুন্নাতকে জীবিত করল সে যেন আমাকেই ভালবাসল আর যে আমাকে ভালবাসল সে আমার সাথে জান্নাতে থাকবে।’’ (তিরমিযী)
ইবনে আতা (রহ:) বলেন, যে লোক প্রত্যেক কাজে রাসূল ﷺ এর সুন্নাতের অনুসরণ করার জন্য নিজেকে অভ্যস্ত করে নেবে আল্লাহ তার অন্তরকে মারিফাতের নূর দ্বারা নুরান্বিত্ব করে দেবেন।
আদেশ-নিষেধ কথা-কাজ ও চরিত্রের দিক দিয়ে রাসূল ﷺ এর অনুসারী হওয়ার চেয়ে সম্মান ও মর্যাদার আর কোন স্তর নেই।
فَوَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهٖ لَا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتّٰى أَكُوْنَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ وَالِدِهٖ وَوَلَدِهٖ
‘‘আল্লাহর কসম! তোমাদের কেউ মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার কাছে তার পিতা-মাতা, তার নিজ সত্ত্বা ও সকল মানুষ হতে অধিক ভালবাসর পাত্র না হব।’’ (বুখারী)
আলী (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ আমাদের কাছে আমাদের ধন-সম্পদ সন্তান-সন্ততি, আমাদের মাতা-পিতা ও পিপাসার সময়ে ঠান্ডা পানি সবকিছু হতে অধিক ভালবাসার পাত্র ছিলেন।
আবু সুফিয়ান (রাঃ) বলেন, মুহাম্মাদ ﷺ কে তাঁর সাহাবীরা যেভাবে ভালবাসতেন এভাবে আমি অন্যকেউ কাউকে ভালবাসতে দেখিনি।
ত্বাবারাণীর এক রেওয়াতে বর্ণিত আছে যে, আয়েশা (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি রাসূল ﷺ এর কাছে হাজির হয়ে আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার প্রতি আমার ভালবাসা এত গভীর যে বাড়িতে গেলেও আপনাকেই স্মরণ করি এবং পুনরায় আপনার কাছে ফিরে না আসা পর্যন্ত আমি ধৈর্যধারণ করতে পারি না। কিন্তু আমি যখন আমার মৃত্যুর কথা স্মরণ করি, তখন হতাশ হয়ে পড়ি। কারণ আপনি তো মৃত্যুর পর নবীদের উচ্চ আসনে আসীন থাকবেন, আর আমি জান্নাতে গেলেও নিম্নস্তরেই থাকব। এখন আমার চিন্তা হল, আপনাকে আমি কীভাবে দেখতে পাব। রাসূল ﷺ লোকটির একথা শুনে কোন জবাব দিলেন না। অবশেষে জিবরাঈল নিচের আয়াতটি নিয়ে হাজির হলেন-
وَمَنْ يَّطِعِ اللهَ وَالرَّسُوْلَ فَأُولٰئِكَ مَعَ الَّذِيْنَ أَنْعَمَ اللهُ عَلَيْهِمْ مِّنَ النَّبِيِّيْنَ وَالصِّدِّيْقِيْنَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّالِحِيْنَ وَحَسُنَ أُولٰئِكَ رَفِيْقًا
‘‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দেয়া বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালিত করবে, তারা (কিয়ামতের দিন) আল্লাহর নিয়ামতপ্রাপ্ত নবী, সিদ্দিক, শহীদ ও নেককারদের মত লোকদের সঙ্গে থাকবে, আর তারা কতইনা উত্তম সঙ্গি।’’ (সূরা নিসা- ৬৯)
সুতরাং যারা আল্লাহ ও রাসূল ﷺকে মেনে চলবে তারা জান্নাতের নিম্নস্তরে থাকলেও আল্লাহ তা‘আলা নবীদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেবেন।
জেনে রাখা উচিত যে, আল্লাহর রাসূলের প্রতি মুহাববত বা ভালবাসা রাখা ও তাঁর সুন্নাতের অনুসরণ করা এবং তাঁর দেখানো হেদায়াতের উপর অটল থাকাই হল দ্বীনের মূল বিষয়। প্রতিযোগীরা এ ব্যাপারেই প্রতিযোগিতা করে থাকেন, সকল ইবাদাতকারীদের দৌড় এদিকেই গিয়ে থামে। ঈমান ও আমলের নূর হল রাসূল ﷺ এর সুন্নাতের অনুসরণ করা। এটা যে হারিয়ে ফেলে সে মৃত ব্যক্তির মত। তাই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ভালবাসা পাওয়ার জন্য রাসূল ﷺ এর অনুসরণ করাকে শর্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
আনাস বিন মালেক (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন-
وَمَنْ أَحْيَا سُنَّتِيْ فَقَدْ أَحَبَّنِيْ وَمَنْ أَحَبَّنِيْ كَانَ مَعِيْ فِي الْجَنَّةِ
‘‘যে ব্যক্তি আমার সুন্নাতকে জীবিত করল সে যেন আমাকেই ভালবাসল আর যে আমাকে ভালবাসল সে আমার সাথে জান্নাতে থাকবে।’’ (তিরমিযী)
ইবনে আতা (রহ:) বলেন, যে লোক প্রত্যেক কাজে রাসূল ﷺ এর সুন্নাতের অনুসরণ করার জন্য নিজেকে অভ্যস্ত করে নেবে আল্লাহ তার অন্তরকে মারিফাতের নূর দ্বারা নুরান্বিত্ব করে দেবেন।
আদেশ-নিষেধ কথা-কাজ ও চরিত্রের দিক দিয়ে রাসূল ﷺ এর অনুসারী হওয়ার চেয়ে সম্মান ও মর্যাদার আর কোন স্তর নেই।
আল্লাহর রাসূল ﷺ এর প্রতি ভালবাসা আছে কি না তা জানার জন্য কিছু আলামত ও চিহ্ন রয়েছে, নিচের আলামতগুলো কারো মধ্যে থাকলে বুঝা যাবে যে, সে রাসূল ﷺ কে ভালবাসে।
১. রাসূল ﷺ এর ভালবাসার প্রথম নিদর্শন হল আল্লাহর রাসূল ﷺ যে শরীয়াত নিয়ে আগমন করেছেন, আর যে সকল বিধি-বিধান রেখে গেছেন সেগুলোকে মনেপ্রাণে মেনে নেয়া এবং এতেই সন্তুষ্ট থাকা। রাসূল ﷺ এর আদেশ ও নিষেধসমূহ পালন করতে মনের মধ্যে কোন সংকীর্ণতা না রাখা।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُوْنَ حَتّٰى يُحَكِّمُوْكَ فِيْمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوْا فِيْ أَنْفُسِهِمْ حَرَجًا مِّمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوْا تَسْلِيْمًا
(হে নবী) আপনার রবের কসম! কেউ মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের মধ্যে সংঘটিত বিষয়ের ফায়সালায় আপনার হুকুম না মানবে। তারপর আপনার দেয়া ফায়সালার উপর তাদের মনে কোন খটকা থাকবে না এবং তারা সম্পূর্ণরূপে আত্মসর্মপণ করবে। (সূরা নিসা- ৬৫)
তাজুদ্দীন আতা (রহ:) বলেন, প্রকৃত মুমিন হতে হলে সকল বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ﷺ এর নির্দেশ মেনে চলতে হবে, রাসূল ﷺ যা বলেছেন ও করেছেন, তা সবই আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে।
মহান আল্লাহ বলেন-
وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوٰى - إِنْ هُوَ إِلَّا وَحْيٌ يُّوْحٰى
মুহাম্মাদ ﷺ নিজের পক্ষ থেকে কিছুই বলেন না; বরং আল্লাহর পক্ষ থেকে যা অবর্তীণ হয় তাই তিনি বলেন। (সূরা নাজম- ৩, ৪)
২. রাসূল ﷺ এর প্রতি মুহাববতের দ্বিতীয় নিদর্শন হল- কথা ও কাজের দ্বারা তার দ্বীনের সাহায্য করা এবং শরীয়তবিরোধী কাজ হতে নিজে দূরে থাকা এবং অন্যকেও দূরে রাখা।
৩. রাসূল ﷺ এর মুহাববতের তৃতীয় নিদর্শন হল- রাসূল ﷺ এর চরিত্রে চরিত্রবান হওয়া, দানশীলতা, অন্যকে নিজের উপর প্রাধান্য দেয়া, ধৈর্যধারণ ও নম্রতা সবদিক দিয়ে রাসূলের মত হওয়ার চেষ্টা করা। যে সকল বদভ্যস থেকে তিনি দূরে থাকতেন ও অন্যকে নির্দেশ দিতেন তা হতে দূরে থাকা। অন্যকে গালি দেয়া, গীবত করা, মিথ্যা বলা, কৃপণতা করা, অন্যের প্রতি হিংসা করা, অন্যের দোষ বের করা ইত্যাদি হতে দূরে না থাকলে রাসূল ﷺ এর প্রতি ভালবাসার দাবী করা যায় না। আর যে ব্যক্তি রাসূল ﷺ এর মত চরিত্র গড়ার জন্য নিজের নফস তথা মনের সাথে জিহাদ করে সে ঈমানের মিষ্টতা লাভ করে। আর যে ঈমানের মিষ্টতা পায় সে ইবাদাত-বন্দেগী করতেও স্বাদ পায়। এতে যেসব কষ্ট স্বীকার করতে হয় তা সে খুশিতে বরণ করে নেয় এবং অস্থায়ী দুনিয়ার ভোগ-বিলাসকে পেছনে রেখে দ্বীনের কাজে আগ্রহী থাকে।
৪. রাসূল ﷺ এর মুহাববতের আলামত হল- যে কুরআন তাঁর উপর নাযিল হয়েছে সে কুরআনকে মুহাববত করা। কেউ যদি আল্লাহ ও রাসূল ﷺ এর মুহাববত দেখতে চায় তবে সে যেন অন্তর দিয়ে কুরআনকে মুহাববত করে।
১. রাসূল ﷺ এর ভালবাসার প্রথম নিদর্শন হল আল্লাহর রাসূল ﷺ যে শরীয়াত নিয়ে আগমন করেছেন, আর যে সকল বিধি-বিধান রেখে গেছেন সেগুলোকে মনেপ্রাণে মেনে নেয়া এবং এতেই সন্তুষ্ট থাকা। রাসূল ﷺ এর আদেশ ও নিষেধসমূহ পালন করতে মনের মধ্যে কোন সংকীর্ণতা না রাখা।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُوْنَ حَتّٰى يُحَكِّمُوْكَ فِيْمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوْا فِيْ أَنْفُسِهِمْ حَرَجًا مِّمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوْا تَسْلِيْمًا
(হে নবী) আপনার রবের কসম! কেউ মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের মধ্যে সংঘটিত বিষয়ের ফায়সালায় আপনার হুকুম না মানবে। তারপর আপনার দেয়া ফায়সালার উপর তাদের মনে কোন খটকা থাকবে না এবং তারা সম্পূর্ণরূপে আত্মসর্মপণ করবে। (সূরা নিসা- ৬৫)
তাজুদ্দীন আতা (রহ:) বলেন, প্রকৃত মুমিন হতে হলে সকল বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ﷺ এর নির্দেশ মেনে চলতে হবে, রাসূল ﷺ যা বলেছেন ও করেছেন, তা সবই আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে।
মহান আল্লাহ বলেন-
وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوٰى - إِنْ هُوَ إِلَّا وَحْيٌ يُّوْحٰى
মুহাম্মাদ ﷺ নিজের পক্ষ থেকে কিছুই বলেন না; বরং আল্লাহর পক্ষ থেকে যা অবর্তীণ হয় তাই তিনি বলেন। (সূরা নাজম- ৩, ৪)
২. রাসূল ﷺ এর প্রতি মুহাববতের দ্বিতীয় নিদর্শন হল- কথা ও কাজের দ্বারা তার দ্বীনের সাহায্য করা এবং শরীয়তবিরোধী কাজ হতে নিজে দূরে থাকা এবং অন্যকেও দূরে রাখা।
৩. রাসূল ﷺ এর মুহাববতের তৃতীয় নিদর্শন হল- রাসূল ﷺ এর চরিত্রে চরিত্রবান হওয়া, দানশীলতা, অন্যকে নিজের উপর প্রাধান্য দেয়া, ধৈর্যধারণ ও নম্রতা সবদিক দিয়ে রাসূলের মত হওয়ার চেষ্টা করা। যে সকল বদভ্যস থেকে তিনি দূরে থাকতেন ও অন্যকে নির্দেশ দিতেন তা হতে দূরে থাকা। অন্যকে গালি দেয়া, গীবত করা, মিথ্যা বলা, কৃপণতা করা, অন্যের প্রতি হিংসা করা, অন্যের দোষ বের করা ইত্যাদি হতে দূরে না থাকলে রাসূল ﷺ এর প্রতি ভালবাসার দাবী করা যায় না। আর যে ব্যক্তি রাসূল ﷺ এর মত চরিত্র গড়ার জন্য নিজের নফস তথা মনের সাথে জিহাদ করে সে ঈমানের মিষ্টতা লাভ করে। আর যে ঈমানের মিষ্টতা পায় সে ইবাদাত-বন্দেগী করতেও স্বাদ পায়। এতে যেসব কষ্ট স্বীকার করতে হয় তা সে খুশিতে বরণ করে নেয় এবং অস্থায়ী দুনিয়ার ভোগ-বিলাসকে পেছনে রেখে দ্বীনের কাজে আগ্রহী থাকে।
৪. রাসূল ﷺ এর মুহাববতের আলামত হল- যে কুরআন তাঁর উপর নাযিল হয়েছে সে কুরআনকে মুহাববত করা। কেউ যদি আল্লাহ ও রাসূল ﷺ এর মুহাববত দেখতে চায় তবে সে যেন অন্তর দিয়ে কুরআনকে মুহাববত করে।
রাসূল ﷺ বলেছেন-
وَمَنْ رَآنِيْ فِي الْمَنَامِ فَقَدْ رَآنِيْ فَإِنَّ الشَّيْطَانَ لَا يَتَمَثَّلُ صُوْرَتِيْ
‘‘যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখল সে যেন মূলত আমাকেই দেখল, কারণ শয়তান আমার রূপ ধারণ করতে পারে না।’’ (বুখারী হা: ৬১৯৭, মুসলিম হা: ৬০৫৭)
ইয়াযীদ ফারগী (রহ:) বলেন, আমি ইবনে আববাস (রাঃ) এর যমানায় একবার রাসূল ﷺকে স্বপ্নে দেখলাম, এরপর আমি ইবনে আববাসের কাছে গিয়ে বললাম, আমি রাসূল ﷺকে স্বপ্নে দেখেছি। তখন ইবনে আববাস (রাঃ) বললেন, রাসূল ﷺবলেছেন, কেউ আমাকে স্বপ্নে দেখলে সে যেন আমাকেই দেখল, কারণ শয়তান আমার রূপ ধারণ করতে পারে না।’’ তুমি যাকে স্বপ্নে দেখেছ তার কিছু বর্ণনা দিতে পারবে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ দিতে পারব। তিনি ছিলেন মধ্যম আকৃতির, গায়ের রং ছিল বাদামী, চোখ দু’টি যেন সুরমাযুক্ত, মুখটি সুন্দর হাস্যময়, চমৎকার গোলাকার চেহারা, এ থেকে এপর্যন্ত দাঁড়িতে ভরা, দাঁড়িগুলো কণ্ঠনালী পর্যন্ত লম্বা। এ বর্ণনা শুনার পর ইবনে আববাস বললেন, তুমি যদি জাগ্রত অবস্থায় রাসূলকে দেখতে তাহলেও এর বেশি বর্ণনা দিতে পারতে না। (শামাইলে তিরমিযী)
এক হাদীসে বর্ণিত আছে, রাসূলের দেহের আকৃতি ছিল মধ্যম, অতি লম্বাও নয় আবার অতি বেটেও নয়। তাঁর মাথার চুলগুলো খুব কোঁকড়ানো ছিল না আবার একদম সোজাও ছিল না। গায়ের রং ছিল বাদামী, তিনি হাঁটার সময় সামনের দিকে একটু ঝুঁকে হাঁটতেন। (শামায়েলে তিরমিযী)
وَمَنْ رَآنِيْ فِي الْمَنَامِ فَقَدْ رَآنِيْ فَإِنَّ الشَّيْطَانَ لَا يَتَمَثَّلُ صُوْرَتِيْ
‘‘যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখল সে যেন মূলত আমাকেই দেখল, কারণ শয়তান আমার রূপ ধারণ করতে পারে না।’’ (বুখারী হা: ৬১৯৭, মুসলিম হা: ৬০৫৭)
ইয়াযীদ ফারগী (রহ:) বলেন, আমি ইবনে আববাস (রাঃ) এর যমানায় একবার রাসূল ﷺকে স্বপ্নে দেখলাম, এরপর আমি ইবনে আববাসের কাছে গিয়ে বললাম, আমি রাসূল ﷺকে স্বপ্নে দেখেছি। তখন ইবনে আববাস (রাঃ) বললেন, রাসূল ﷺবলেছেন, কেউ আমাকে স্বপ্নে দেখলে সে যেন আমাকেই দেখল, কারণ শয়তান আমার রূপ ধারণ করতে পারে না।’’ তুমি যাকে স্বপ্নে দেখেছ তার কিছু বর্ণনা দিতে পারবে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ দিতে পারব। তিনি ছিলেন মধ্যম আকৃতির, গায়ের রং ছিল বাদামী, চোখ দু’টি যেন সুরমাযুক্ত, মুখটি সুন্দর হাস্যময়, চমৎকার গোলাকার চেহারা, এ থেকে এপর্যন্ত দাঁড়িতে ভরা, দাঁড়িগুলো কণ্ঠনালী পর্যন্ত লম্বা। এ বর্ণনা শুনার পর ইবনে আববাস বললেন, তুমি যদি জাগ্রত অবস্থায় রাসূলকে দেখতে তাহলেও এর বেশি বর্ণনা দিতে পারতে না। (শামাইলে তিরমিযী)
এক হাদীসে বর্ণিত আছে, রাসূলের দেহের আকৃতি ছিল মধ্যম, অতি লম্বাও নয় আবার অতি বেটেও নয়। তাঁর মাথার চুলগুলো খুব কোঁকড়ানো ছিল না আবার একদম সোজাও ছিল না। গায়ের রং ছিল বাদামী, তিনি হাঁটার সময় সামনের দিকে একটু ঝুঁকে হাঁটতেন। (শামায়েলে তিরমিযী)
মুমিন বান্দা শিরক করবে না। অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা করবে না। নামায কাজা করবে না। জ্যোতিষী ও গনকের কথা বিশ্বাস করবে না। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে প্রাণী যবাই করবে না। সত্যের বিরোধিতা করবে না। আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি মিথ্যাচার করবে না। আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হবে না। পিতা-মাতার অবাধ্য হবে না। আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে না। যাদু করবে না। যিনা-ব্যভিচার করবে না। সমকামিতায় লিপ্ত হবে না। সতী নারীর প্রতি অপবাদ দেবে না। সুদ অথবা ঘুষ দেবে না এবং নেবেও না। এতীমের সম্পদ আত্মসাৎ করবে না। গনীমতের মাল আত্মসাৎ করবে না। চুরি, ডাকাতি ও অপহরণ করবে না। চাঁদাবাজি করবে না। হারাম খাদ্য গ্রহণ করবে না। অহংকার করবে না। মদ্য পান করবে না। জুয়া খেলবে না। মিথ্যা কথা বলবে না। মিথ্যা সাক্ষ্য দেবে না। মিথ্যা শপথ করবে না। গালি দেবে না। কোনো মুমিনকে লানত (অভিশাপ) করবে না। যুলুম-অত্যাচার করবে না। পাওনাদারের প্রতি জুলুম করবে না। স্ত্রীর প্রতি যুলুম করবে না। শ্রমিক ও অধীনস্ত কর্মচারীদের প্রতি যুলুম করবে না। দাস-দাসী, দুর্বল শ্রেণীর মানুষ এবং জীব-জন্তুর সাথে নিষ্ঠুর আচরণ করবে না। স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের অধিকার খর্ব করবে না। প্রতিবেশীকে কষ্ট দেবে না। দান করে খোটা দেবে না। আমানতের খিয়ানত করবে না। আত্মহত্যা করবে না। অন্যায়ভাবে বিচার করবে না। পুরুষ মহিলার এবং মহিলা পুরুষের আকৃতি ধারণ করবে না। পরিবার ও সমাজে অশ্লীল কাজকে প্রশ্রয় দেবে না। দ্বীনি ইল্ম/জ্ঞান গোপন করবে না। কারো গোপন কথা শ্রবণ করবে না। গীবত করবে না। চোগলখোরী করবে না। ওয়াদা ভঙ্গ করবে না। প্রাণীর মূর্তি তৈরি করবে না। ঘরের দেয়ালে প্রাণীর ছবি ঝুলিয়ে রাখবে না। কেউ মারা গেলে বিলাপ করে ক্রন্দন করবে না। পুরুষরা টাখনুর নিচে পোশাক পরবে না। পুরুষরা স্বর্ণালঙ্কার ও রেশম ব্যবহার করবে না। মাপে ও ওজনে কম দেবে না। ধোঁকাবাজি ও প্রতারণা করবে না।
আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে এসব নিন্দনীয় কাজ থেকে সর্বক্ষণ দূরে থাকার তাওফীক দান করুন। আমীন!
আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে এসব নিন্দনীয় কাজ থেকে সর্বক্ষণ দূরে থাকার তাওফীক দান করুন। আমীন!
মুমিন বান্দা ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত ও মুস্তাহাবসমূহ নিয়মানুযায়ী পালন করবে। পিতা-মাতার হক আদায় করবে। আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখবে। গরীব, দুঃখী, এতীম, মিসকীন ও অসহায়দের সাহায্য করবে। প্রতিবেশীর সাথে সুসম্পর্ক রক্ষা করবে। বড়দের সম্মান করবে এবং ছোটদের স্নেহ করবে। প্রত্যেক কাজে সুন্নাতের অনুসরণ করবে। সত্যের উপর অটল থাকবে। হারাম কাজ বর্জন করবে, হালালের উপর অটল থাকবে। জীব-জন্তুর প্রতি দয়া করবে। সাধ্যমত দান-খয়রাত করবে। সাদাকায়ে জারিয়ার প্রতি গুরুত্ব দেবে। ওয়াদা পালন করবে। সঠিকভাবে লেনদেন করবে। দ্বীনি ইল্ম অর্জন করে তদানুযায়ী আমল করবে। সংসারে দ্বীনি পরিবেশ কায়েম রাখবে। নারীরা পর্দা করবে এবং স্বামীর হুকুম পালন করবে। স্বামীর খেদমত করবে এবং সন্তানের যত্ন নেবে। আচরণে বিনয়ী হবে। চাকুরী, ব্যবসা ও কর্মক্ষেত্রে দ্বীনি পরিবেশ বজায় রাখবে। অধীনস্তদের প্রতি দয়াপরবশ হবে। সুখে-দুঃখে সর্বদা আল্লাহকে স্মরণ করবে। দু’মুখো নীতি বর্জন করবে। অপর ভাই-বোনের ইজ্জত রক্ষা করবে। গুরুত্বপূর্ণ কাজে মশগুল থাকবে। কথায় ও কাজে মিল রাখবে। পরের দোষ কম দেখবে, নিজের দোষ বেশি দেখবে। নিজের উপর অন্যায় করা হলেও সে ইনসাফ (ন্যায়বিচার) করবে। কেউ ক্ষমা চাইলে ক্ষমা করে দেবে। ভাল কাজে আনন্দ পাবে, গুনাহ করলে ক্ষমা চাইবে। নেক কাজে আগে থাকবে, পাপ থেকে দূরে থাকবে। অভাব ও বিপদে পড়লেও শুকরিয়া আদায় করবে এবং ধৈর্যধারণ করবে। শরীয়তের হুকুমের উপর অটল থাকবে, অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করবে। হালাল রুজিতে সন্তুষ্ট থাকবে। চোখ দু’টিকে হারাম জিনিস হতে ফিরিয়ে রাখবে। লজ্জাস্থানের হেফাযত করবে। সত্য কথায় অটল থাকবে। অনর্থক কথা ও কাজ থেকে বিরত থাকবে। ওয়াদা পালন করবে। মেহমান ও প্রতিবেশীর সম্মান রক্ষা করবে।
রাসূল ﷺএর সাহাবীগণও এসব গুণের অধিকারী ছিলেন। পূর্ববর্তী নেককার মুসলমানরাও এরকম ছিলেন। আমাদেরও এসব গুণ অর্জন করা কর্তব্য। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে সে তাওফীক দান করুন। আমীন!
রাসূল ﷺএর সাহাবীগণও এসব গুণের অধিকারী ছিলেন। পূর্ববর্তী নেককার মুসলমানরাও এরকম ছিলেন। আমাদেরও এসব গুণ অর্জন করা কর্তব্য। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে সে তাওফীক দান করুন। আমীন!
মিথ্যা কথা বলে কাজ উদ্ধার করা, মিথ্যা কসম খাওয়া, ব্যভিচার করা, সর্বদা গুনাহের কাজে লিপ্ত থাকা, নামায না পড়া, অলসতা করে শেষ ওয়াক্তে নামায আদায় করা, নাভীর নিচের পশম চল্লিশ দিনের বেশি রাখা। লোকজনের সাথে সর্বদা ঝগড়া করা। বাজারে সবার আগে যাওয়া এবং শেষে আসা। ফকির মিসকিনকে তুচ্ছ মনে করে ধমক দেয়া, ভোরে বিছানা হতে উঠে নামায, দো‘আ-দরূদ না পড়ে দুনিয়ার কাজে লেগে যাওয়া। গান-বাদ্য শুনা। আত্মীয়-স্বজনের সাথে মিল না রাখা। একান্ত প্রয়োজন ব্যতীত যাকাত, ফেতরা ও কুরবানির চামড়া প্রভৃতির জন্য প্রার্থী হওয়া। আমানতের খেয়ানত করা, পিতা-মাতাকে অসন্তুষ্ট করা। ঘরে জুয়া,তাস এসব খেলার সামগ্রী রাখা ও খেলা। অযথা গল্পগুজারী করত হাসি-ঠাট্টা করে সময় কাটানো। এসব কাজ করলে দারিদ্র্যতার সম্মুখীন হতে হয় এমনকি আখেরাতের পুঁজিও নষ্ট হয়ে যায়।
ভোরে বিছানা হতে উঠা, সর্বদা আল্লাহর ইবাদাতে লিপ্ত থাকা, পরিবারের সকলকে ইবাদাতের জন্য শাসন করা, নামাযের ওয়াক্ত হওয়ার সাথে সাথে ওযূ করা। সর্বদা আল্লাহ তা‘আলার যিকির করা, বেশি পরিমাণে দরূদ পাঠ করা, পিতা-মাতাকে সবসময় সন্তুষ্ট রাখা, মসজিদ পরিষ্কার দেয়া, বড়কে সম্মান করা, হিসাব করে যাকাত দেয়া, সাধ্যমত দান-খায়রাত করা, ব্যবসা-বাণিজ্যে সততা রক্ষা করা, মাপে কম না দেয়া, ওয়াদা পূর্ণ করা, সক্ষম হলে হজ্জ করা, করজে হাসানা দেয়া, আমানত রক্ষা করা, নফল নামায পড়ে আল্লাহ কাছে রিযিক বৃদ্ধির জন্য দো‘আ করা, একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার উপর ভরসা করা, আল্লাহর কালাম পড়া, আলেমদের সম্মান করা, সত্য কথা বলা, বেগানা মেয়েলোকের দিকে কুনজরে দৃষ্টি না দেয়া, অসৎ উপায়ে রোজগার না করা, আল্লাহ তা‘আলার নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা, চাশতের নামায পড়া, আইয়ামে বীজের রোযা রাখা। উপরোল্লেখিত কাজগুলো আর্থিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধির সহায়ক।
গুনাহের কারণে জ্ঞান হতে বঞ্চিত হতে হয়। রুজিতে বরকত হয় না। ইবাদাত-বন্দেগীতে মন বসে না, নেক লোকের সাক্ষাত ভাল লাগে না। অনেক সময় কাজে বাধা-বিগ্ন এসে দাঁড়ায়, অন্তরে মরিচা পড়ে যায়, সাহস কমে যায়, মনের দূর্বলতার কারণে অনেক সময় শরীর নষ্ট হয়ে যায়, দুশ্চিন্তায় সর্বদা মন অস্থির থাকে। নেক আমল হতে বঞ্চিত হতে হয়, তওবা নসীব হয় না। গুনাহ করতে করতে একসময় গুনাহের কাজ আর চেনা যায় না, ভাল-মন্দ সমান হয়ে যায়। আল্লাহ তা‘আলার নিকট লজ্জিত হতে হয়। জ্ঞান-বুদ্ধি আস্তে আস্তে কমতে থাকে। ফেরেশতাদের দো‘আ থেকে বঞ্চিত হতে হয়। লজ্জা-শরম কমে যায় ও আল্লাহ তা‘আলার নিয়ামত আস্তে আস্তে কমে যায়। নানা প্রকার মসিবতে জড়িয়ে পড়তে হয়। একজনের পাপের কারণে অন্যান্য লোক এমনকি প্রাণীও কষ্টে পতিত হয়, ফলে তাদের বদ-দো‘আ ও অভিশাপ মাথায় নিয়ে কবরে যেতে হয়। ইবলিস শয়তান পাপীর উপর প্রাধান্য বিস্তার করে। মৃত্যুর সময় কালিমা নসীব হয় না। পরিশেষে বিনা তওবায় ইন্তেকাল করতে হয়।
তাই আল্লাহ তা‘আলা নিকট প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদের সকলের তওবা কবুল করেন এবং গুনাহ হতে বেঁচে থাকার তাওফীক দান করেন। আমীন!
তাই আল্লাহ তা‘আলা নিকট প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদের সকলের তওবা কবুল করেন এবং গুনাহ হতে বেঁচে থাকার তাওফীক দান করেন। আমীন!
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন-
إِنَّ للهِ تِسْعَةً وَّتِسْعِيْنَ اِسْمًا مِائَةً إِلَّا وَاحِدًا مَنْ أَحْصَاهَا دَخَلَ الْجَنَّةَ- إِنَّهٗ وِتْرٌ يُحِبُّ الْوِتْرَ
‘‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা‘আলার নিরানববইটি নাম রয়েছে। যে ব্যক্তি এ নামসমূহ গণনা করবে (এ নামসমূহের যিকির করবে) সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে। নিশ্চয় তিনি বেজোড়, তাই তিনি বেজোড়কে পছন্দ করেন।’’ (তিরমিযী)
নিচে আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ উল্লেখ করা হল :
هُوَ اللهُ الَّذِىْ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الرَّحْمٰنُ الرَّحِيْمُ الْمَلِكُ الْقُدُّوْسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيْزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ الْغَفَّارُ الْقَهَّارُ الْوَهَّابُ الرَّزَّاقُ الْفَتَّاحُ الْعَلِيْمُ الْقَابِضُ الْبَاسِطُ الْخَافِضُ الرَّافِعُ الْمُعِزُّ الْمُذِلُّ السَّمِيْعُ الْبَصِيْرُ الْحَكَمُ الْعَدْلُ اللَّطِيْفُ الْخَبِيْرُ الْحَلِيْمُ الْعَظِيْمُ الْغَفُوْرُ الشَّكُوْرُ الْعَلِىُّ الْكَبِيْرُ الْحَفِيْظُ الْمُقِيْتُ الْحَسِيْبُ الْجَلِيْلُ الْكَرِيْمُ الرَّقِيْبُ الْمُجِيْبُ الْوَاسِعُ الْحَكِيْمُ الْوَدُوْدُ الْمَجِيْدُ الْبَاعِثُ الشَّهِيْدُ الْحَقُّ الْوَكِيْلُ الْقَوِىُّ الْمَتِيْنُ الْوَلِىُّ الْحَمِيْدُ الْمُحْصِى الْمُبْدِئُ الْمُعِيْدُ الْمُحْيِى الْمُمِيْتُ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ الْوَاجِدُ الْمَاجِدُ الْوَاحِدُ الصَّمَدُ الْقَادِرُ الْمُقْتَدِرُ الْمُقَدِّمُ الْمُؤَخِّرُ الْاَوَّلُ الْاٰٰخِرُ الظَّاهِرُ الْبَاطِنُ الْوَالِى الْمُتَعَالِى الْبَرُّ التَّوَّابُ الْمُنْتَقِمُ الْعَفُوُّ الرَّءُوْفُ الْمُقْسِطُ الْجَامِعُ الْغَنِىُّ الْمُغْنِى الْمَانِعُ الضَّارُّ النَّافِعُ النُّوْرُ الْهَادِى الْبَدِيْعُ الْبَاقِى الْوَارِثُ الرَّشِيْدُ الصَّبُوْرُ -- مَالِكُ الْمُلْكِ ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ
إِنَّ للهِ تِسْعَةً وَّتِسْعِيْنَ اِسْمًا مِائَةً إِلَّا وَاحِدًا مَنْ أَحْصَاهَا دَخَلَ الْجَنَّةَ- إِنَّهٗ وِتْرٌ يُحِبُّ الْوِتْرَ
‘‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা‘আলার নিরানববইটি নাম রয়েছে। যে ব্যক্তি এ নামসমূহ গণনা করবে (এ নামসমূহের যিকির করবে) সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে। নিশ্চয় তিনি বেজোড়, তাই তিনি বেজোড়কে পছন্দ করেন।’’ (তিরমিযী)
নিচে আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ উল্লেখ করা হল :
هُوَ اللهُ الَّذِىْ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الرَّحْمٰنُ الرَّحِيْمُ الْمَلِكُ الْقُدُّوْسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيْزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ الْغَفَّارُ الْقَهَّارُ الْوَهَّابُ الرَّزَّاقُ الْفَتَّاحُ الْعَلِيْمُ الْقَابِضُ الْبَاسِطُ الْخَافِضُ الرَّافِعُ الْمُعِزُّ الْمُذِلُّ السَّمِيْعُ الْبَصِيْرُ الْحَكَمُ الْعَدْلُ اللَّطِيْفُ الْخَبِيْرُ الْحَلِيْمُ الْعَظِيْمُ الْغَفُوْرُ الشَّكُوْرُ الْعَلِىُّ الْكَبِيْرُ الْحَفِيْظُ الْمُقِيْتُ الْحَسِيْبُ الْجَلِيْلُ الْكَرِيْمُ الرَّقِيْبُ الْمُجِيْبُ الْوَاسِعُ الْحَكِيْمُ الْوَدُوْدُ الْمَجِيْدُ الْبَاعِثُ الشَّهِيْدُ الْحَقُّ الْوَكِيْلُ الْقَوِىُّ الْمَتِيْنُ الْوَلِىُّ الْحَمِيْدُ الْمُحْصِى الْمُبْدِئُ الْمُعِيْدُ الْمُحْيِى الْمُمِيْتُ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ الْوَاجِدُ الْمَاجِدُ الْوَاحِدُ الصَّمَدُ الْقَادِرُ الْمُقْتَدِرُ الْمُقَدِّمُ الْمُؤَخِّرُ الْاَوَّلُ الْاٰٰخِرُ الظَّاهِرُ الْبَاطِنُ الْوَالِى الْمُتَعَالِى الْبَرُّ التَّوَّابُ الْمُنْتَقِمُ الْعَفُوُّ الرَّءُوْفُ الْمُقْسِطُ الْجَامِعُ الْغَنِىُّ الْمُغْنِى الْمَانِعُ الضَّارُّ النَّافِعُ النُّوْرُ الْهَادِى الْبَدِيْعُ الْبَاقِى الْوَارِثُ الرَّشِيْدُ الصَّبُوْرُ -- مَالِكُ الْمُلْكِ ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ
﷽
يٰسۤ (1) وَالْقُرْآنِ الْحَكِيْمِ (2) إِنَّكَ لَمِنَ الْمُرْسَلِيْنَ (3) عَلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ (4) تَنْزِيْلَ الْعَزِيْزِ الرَّحِيْمِ (5) لِتُنْذِرَ قَوْمًا مَّا أُنْذِرَ آبَاؤُهُمْ فَهُمْ غَافِلُوْنَ (6) لَقَدْ حَقَّ الْقَوْلُ عَلٰى أَكْثَرِهِمْ فَهُمْ لَا يُؤْمِنُوْنَ (7) إِنَّا جَعَلْنَا فِي أَعْنَاقِهِمْ أَغْلَالًا فَهِيَ إِلَى الْاَذْقَانِ فَهُمْ مُقْمَحُوْنَ (8) وَجَعَلْنَا مِنْ بَيْنِ أَيْدِيْهِمْ سَدًّا وَّمِنْ خَلْفِهِمْ سَدًّا فَأَغْشَيْنَاهُمْ فَهُمْ لَا يُبْصِرُوْنَ (9) وَسَوَاءٌ عَلَيْهِمْ أَأَنْذَرْتَهُمْ أَمْ لَمْ تُنْذِرْهُمْ لَا يُؤْمِنُوْنَ (10) إِنَّمَا تُنْذِرُ مَنِ اتَّبَعَ الذِّكْرَ وَخَشِيَ الرَّحْمٰنَ بِالْغَيْبِ فَبَشِّرْهُ بِمَغْفِرَةٍ وَّأَجْرٍ كَرِيْمٍ (11) إِنَّا نَحْنُ نُحْيِي الْمَوْتٰى وَنَكْتُبُ مَا قَدَّمُوا وَآثَارَهُمْ وَكُلَّ شَيْءٍ أَحْصَيْنَاهُ فِي إِمَامٍ مُّبِيْنٍ (12) وَاضْرِبْ لَهُمْ مَثَلًا أَصْحَابَ الْقَرْيَةِ إِذْ جَاءَهَا الْمُرْسَلُونَ (13) إِذْ أَرْسَلْنَا إِلَيْهِمُ اثْنَيْنِ فَكَذَّبُوهُمَا فَعَزَّزْنَا بِثَالِثٍ فَقَالُوا إِنَّا إِلَيْكُمْ مُرْسَلُوْنَ (14) قَالُوا مَا أَنْتُمْ إِلَّا بَشَرٌ مِثْلُنَا وَمَا أَنْزَلَ الرَّحْمٰنُ مِنْ شَيْءٍ إِنْ أَنْتُمْ إِلَّا تَكْذِبُوْنَ (15) قَالُوا رَبُّنَا يَعْلَمُ إِنَّا إِلَيْكُمْ لَمُرْسَلُوْنَ (16) وَمَا عَلَيْنَا إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِيْنُ (17) قَالُوْا إِنَّا تَطَيَّرْنَا بِكُمْ لَئِنْ لَّمْ تَنْتَهُوْا لَنَرْجُمَنَّكُمْ وَلَيَمَسَّنَّكُمْ مِنَّا عَذَابٌ أَلِيْمٌ (18) قَالُوْا طَائِرُكُمْ مَعَكُمْ أَئِنْ ذُكِّرْتُمْ بَلْ أَنْتُمْ قَوْمٌ مُّسْرِفُوْنَ (19) وَجَاءَ مِنْ أَقْصَى الْمَدِيْنَةِ رَجُلٌ يَّسْعٰى قَالَ يَا قَوْمِ اتَّبِعُوا الْمُرْسَلِيْنَ (20) اِتَّبِعُوْا مَنْ لَّا يَسْأَلُكُمْ أَجْرًا وَّهُمْ مُهْتَدُوْنَ (21) وَمَا لِيَ لَا أَعْبُدُ الَّذِيْ فَطَرَنِيْ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُوْنَ (22) أَأَتَّخِذُ مِنْ دُوْنِه ̩̩ آلِهَةً إِنْ يُّرِدْنِ الرَّحْمٰنُ بِضُرٍّ لَّا تُغْنِ عَنِّيْ شَفَاعَتُهُمْ شَيْئًا وَّلَا يُنْقِذُوْنِ (23) إِنِّيْ إِذًا لَّفِيْ ضَلَالٍ مُّبِيْنٍ (24) إِنِّيْ آمَنْتُ بِرَبِّكُمْ فَاسْمَعُوْنِ (25) قِيْلَ ادْخُلِ الْجَنَّةَ قَالَ يَا لَيْتَ قَوْمِيْ يَعْلَمُوْنَ (26) بِمَا غَفَرَ لِيْ رَبِّيْ وَجَعَلَنِيْ مِنَ الْمُكْرَمِيْنَ (27) وَمَا أَنْزَلْنَا عَلٰى قَوْمِهٖ مِنْۢ بَعْدِهٖ مِنْ جُنْدٍ مِّنَ السَّمَاءِ وَمَا كُنَّا مُنْزِلِيْنَ (28) إِنْ كَانَتْ إِلَّا صَيْحَةً وَّاحِدَةً فَإِذَا هُمْ خَامِدُوْنَ (29) يَا حَسْرَةً عَلَى الْعِبَادِ مَا يَأْتِيْهِمْ مِّنْ رَّسُوْلٍ إِلَّا كَانُوْا بِهٖ يَسْتَهْزِئُوْنَ (30) أَلَمْ يَرَوْا كَمْ أَهْلَكْنَا قَبْلَهُمْ مِّنَ الْقُرُوْنِ أَنَّهُمْ إِلَيْهِمْ لَا يَرْجِعُوْنَ (31) وَإِنْ كُلٌّ لَّمَّا جَمِيْعٌ لَّدَيْنَا مُحْضَرُوْنَ (32) وَآيَةٌ لَّهُمُ الْاَرْضُ الْمَيْتَةُ أَحْيَيْنَاهَا وَأَخْرَجْنَا مِنْهَا حَبًّا فَمِنْهُ يَأْكُلُوْنَ (33) وَجَعَلْنَا فِيْهَا جَنَّاتٍ مِّنْ نَخِيْلٍ وَّأَعْنَابٍ وَّفَجَّرْنَا فِيْهَا مِنَ الْعُيُوْنِ (34) لِيَأْكُلُوْا مِنْ ثَمَرِهٖ وَمَا عَمِلَتْهُ أَيْدِيْهِمْ أَفَلَا يَشْكُرُوْنَ (35) سُبْحَانَ الَّذِيْ خَلَقَ الْاَزْوَاجَ كُلَّهَا مِمَّا تُنْبِتُ الْاَرْضُ وَمِنْ أَنْفُسِهِمْ وَمِمَّا لَا يَعْلَمُوْنَ (36) وَآيَةٌ لَّهُمُ اللَّيْلُ نَسْلَخُ مِنْهُ النَّهَارَ فَإِذَا هُمْ مُّظْلِمُوْنَ (37) وَالشَّمْسُ تَجْرِيْ لِمُسْتَقَرٍّ لَّهَا ذٰلِكَ تَقْدِيْرُ الْعَزِيْزِ الْعَلِيْمِ (38) وَالْقَمَرَ قَدَّرْنَاهُ مَنَازِلَ حَتّٰى عَادَ كَالْعُرْجُوْنِ الْقَدِيْمِ (39) لَا الشَّمْسُ يَنْبَغِيْ لَهَا أَنْ تُدْرِكَ الْقَمَرَ وَلَا اللَّيْلُ سَابِقُ النَّهَارِ وَكُلٌّ فِي فَلَكٍ يَّسْبَحُوْنَ (40) وَآيَةٌ لَّهُمْ أَنَّا حَمَلْنَا ذُرِّيَّتَهُمْ فِي الْفُلْكِ الْمَشْحُوْنِ (41) وَخَلَقْنَا لَهُمْ مِّنْ مِّثْلِهٖ مَا يَرْكَبُوْنَ (42) وَإِنْ نَّشَأْ نُغْرِقْهُمْ فَلَا صَرِيْخَ لَهُمْ وَلَا هُمْ يُنْقَذُوْنَ (43) إِلَّا رَحْمَةً مِّنَّا وَمَتَاعًا إِلٰى حِيْنٍ (44) وَإِذَا قِيْلَ لَهُمُ اتَّقُوْا مَا بَيْنَ أَيْدِيْكُمْ وَمَا خَلْفَكُمْ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ (45) وَمَا تَأْتِيْهِمْ مِّنْ آيَةٍ مِّنْ آيَاتِ رَبِّهِمْ إِلَّا كَانُوْا عَنْهَا مُعْرِضِيْنَ (46) وَإِذَا قِيْلَ لَهُمْ أَنْفِقُوْا مِمَّا رَزَقَكُمُ اللهُ قَالَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا لِلَّذِيْنَ آمَنُوْا أَنُطْعِمُ مَنْ لَّوْ يَشَاءُ اللهُ أَطْعَمَهٗ إِنْ أَنْتُمْ إِلَّا فِيْ ضَلَالٍ مُّبِيْنٍ (47) وَيَقُولُوْنَ مَتٰى هٰذَا الْوَعْدُ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِيْنَ (48) مَا يَنْظُرُوْنَ إِلَّا صَيْحَةً وَّاحِدَةً تَأْخُذُهُمْ وَهُمْ يَخِصِّمُوْنَ (49) فَلَا يَسْتَطِيْعُونَ تَوْصِيَةً وَّلَا إِلٰى أَهْلِهِمْ يَرْجِعُوْنَ (50) وَنُفِخَ فِي الصُّوْرِ فَإِذَا هُمْ مِّنَ الْاَجْدَاثِ إِلٰى رَبِّهِمْ يَنْسِلُوْنَ (51) قَالُوْا يَا وَيْلَنَا مَنْۢ بَعَثَنَا مِنْ مَّرْقَدِنَا هٰذَا مَا وَعَدَ الرَّحْمٰنُ وَصَدَقَ الْمُرْسَلُوْنَ (52) إِنْ كَانَتْ إِلَّا صَيْحَةً وَّاحِدَةً فَإِذَا هُمْ جَمِيْعٌ لَّدَيْنَا مُحْضَرُوْنَ (53) فَالْيَوْمَ لَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا وَّلَا تُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كُنْتُمْ تَعْمَلُوْنَ (54) إِنَّ أَصْحَابَ الْجَنَّةِ الْيَوْمَ فِي شُغُلٍ فَاكِهُوْنَ (55) هُمْ وَأَزْوَاجُهُمْ فِي ظِلَالٍ عَلَى الْاَرَائِكِ مُتَّكِئُوْنَ (56) لَهُمْ فِيْهَا فَاكِهَةٌ وَّلَهُمْ مَّا يَدَّعُوْنَ (57) سَلَامٌ قَوْلًا مِّنْ رَّبٍّ رَّحِيْمٍ (58) وَامْتَازُوْا الْيَوْمَ أَيُّهَا الْمُجْرِمُوْنَ (59) أَلَمْ أَعْهَدْ إِلَيْكُمْ يَا بَنِيْ آدَمَ أَنْ لَّا تَعْبُدُوْا الشَّيْطَانَ إِنَّهٗ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِيْنٌ (60) وَأَنِ اعْبُدُوْنِيْ هٰذَا صِرَاطٌ مُّسْتَقِيْمٌ (61) وَلَقَدْ أَضَلَّ مِنْكُمْ جِبِلًّا كَثِيرًا أَفَلَمْ تَكُوْنُوْا تَعْقِلُوْنَ (62) هٰذِهٖ جَهَنَّمُ الَّتِيْ كُنْتُمْ تُوْعَدُوْنَ (63) اِصْلَوْهَا الْيَوْمَ بِمَا كُنْتُمْ تَكْفُرُوْنَ (64) الْيَوْمَ نَخْتِمُ عَلٰى أَفْوَاهِهِمْ وَتُكَلِّمُنَا أَيْدِيْهِمْ وَتَشْهَدُ أَرْجُلُهُمْ بِمَا كَانُوا يَكْسِبُوْنَ (65) وَلَوْ نَشَاءُ لَطَمَسْنَا عَلٰى أَعْيُنِهِمْ فَاسْتَبَقُوْا الصِّرَاطَ فَأَنّٰى يُبْصِرُوْنَ (66) وَلَوْ نَشَاءُ لَمَسَخْنَاهُمْ عَلٰى مَكَانَتِهِمْ فَمَا اسْتَطَاعُوْا مُضِيًّا وَّلَا يَرْجِعُوْنَ (67) وَمَنْ نُعَمِّرْهُ نُنَكِّسْهُ فِي الْخَلْقِ أَفَلَا يَعْقِلُوْنَ (68) وَمَا عَلَّمْنَاهُ الشِّعْرَ وَمَا يَنْبَغِيْ لَهٗ إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ وَّقُرْآنٌ مُّبِيْنٌ (69) لِيُنْذِرَ مَنْ كَانَ حَيًّا وَّيَحِقَّ الْقَوْلُ عَلَى الْكَافِرِيْنَ (70) أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّا خَلَقْنَا لَهُمْ مِّمَّا عَمِلَتْ أَيْدِيْنَا أَنْعَامًا فَهُمْ لَهَا مَالِكُوْنَ (71) وَذَلَّلْنَاهَا لَهُمْ فَمِنْهَا رَكُوبُهُمْ وَمِنْهَا يَأْكُلُوْنَ (72) وَلَهُمْ فِيْهَا مَنَافِعُ وَمَشَارِبُ أَفَلَا يَشْكُرُوْنَ (73) وَاتَّخَذُوْا مِنْ دُوْنِ اللهِ آلِهَةً لَّعَلَّهُمْ يُنْصَرُوْنَ (74) لَا يَسْتَطِيْعُوْنَ نَصْرَهُمْ وَهُمْ لَهُمْ جُنْدٌ مُّحْضَرُوْنَ (75) فَلَا يَحْزُنْكَ قَوْلُهُمْ إِنَّا نَعْلَمُ مَا يُسِرُّوْنَ وَمَا يُعْلِنُوْنَ (76) أَوَلَمْ يَرَ الْإِنْسَانُ أَنَّا خَلَقْنَاهُ مِنْ نُّطْفَةٍ فَإِذَا هُوَ خَصِيْمٌ مُّبِيْنٌ (77) وَضَرَبَ لَنَا مَثَلًا وَّنَسِيَ خَلْقَهٗ قَالَ مَنْ يُّحْيِي الْعِظَامَ وَهِيَ رَمِيْمٌ (78) قُلْ يُحْيِيْهَا الَّذِيْ أَنْشَأَهَا أَوَّلَ مَرَّةٍ وَّهُوَ بِكُلِّ خَلْقٍ عَلِيْمٌ (79) الَّذِيْ جَعَلَ لَكُمْ مِّنَ الشَّجَرِ الْاَخْضَرِ نَارًا فَإِذَا أَنْتُمْ مِّنْهُ تُوْقِدُوْنَ (80) أَوَلَيْسَ الَّذِيْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضَ بِقَادِرٍ عَلٰى أَنْ يَّخْلُقَ مِثْلَهُمْ بَلٰى وَهُوَ الْخَلَّاقُ الْعَلِيْمُ (81) إِنَّمَا أَمْرُهٗ إِذَا أَرَادَ شَيْئًا أَنْ يَّقُوْلَ لَهٗ كُنْ فَيَكُوْنُ (82) فَسُبْحَانَ الَّذِيْ بِيَدِهٖ مَلَكُوْتُ كُلِّ شَيْءٍ وَّإِلَيْهِ تُرْجَعُوْنَ (83)
يٰسۤ (1) وَالْقُرْآنِ الْحَكِيْمِ (2) إِنَّكَ لَمِنَ الْمُرْسَلِيْنَ (3) عَلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ (4) تَنْزِيْلَ الْعَزِيْزِ الرَّحِيْمِ (5) لِتُنْذِرَ قَوْمًا مَّا أُنْذِرَ آبَاؤُهُمْ فَهُمْ غَافِلُوْنَ (6) لَقَدْ حَقَّ الْقَوْلُ عَلٰى أَكْثَرِهِمْ فَهُمْ لَا يُؤْمِنُوْنَ (7) إِنَّا جَعَلْنَا فِي أَعْنَاقِهِمْ أَغْلَالًا فَهِيَ إِلَى الْاَذْقَانِ فَهُمْ مُقْمَحُوْنَ (8) وَجَعَلْنَا مِنْ بَيْنِ أَيْدِيْهِمْ سَدًّا وَّمِنْ خَلْفِهِمْ سَدًّا فَأَغْشَيْنَاهُمْ فَهُمْ لَا يُبْصِرُوْنَ (9) وَسَوَاءٌ عَلَيْهِمْ أَأَنْذَرْتَهُمْ أَمْ لَمْ تُنْذِرْهُمْ لَا يُؤْمِنُوْنَ (10) إِنَّمَا تُنْذِرُ مَنِ اتَّبَعَ الذِّكْرَ وَخَشِيَ الرَّحْمٰنَ بِالْغَيْبِ فَبَشِّرْهُ بِمَغْفِرَةٍ وَّأَجْرٍ كَرِيْمٍ (11) إِنَّا نَحْنُ نُحْيِي الْمَوْتٰى وَنَكْتُبُ مَا قَدَّمُوا وَآثَارَهُمْ وَكُلَّ شَيْءٍ أَحْصَيْنَاهُ فِي إِمَامٍ مُّبِيْنٍ (12) وَاضْرِبْ لَهُمْ مَثَلًا أَصْحَابَ الْقَرْيَةِ إِذْ جَاءَهَا الْمُرْسَلُونَ (13) إِذْ أَرْسَلْنَا إِلَيْهِمُ اثْنَيْنِ فَكَذَّبُوهُمَا فَعَزَّزْنَا بِثَالِثٍ فَقَالُوا إِنَّا إِلَيْكُمْ مُرْسَلُوْنَ (14) قَالُوا مَا أَنْتُمْ إِلَّا بَشَرٌ مِثْلُنَا وَمَا أَنْزَلَ الرَّحْمٰنُ مِنْ شَيْءٍ إِنْ أَنْتُمْ إِلَّا تَكْذِبُوْنَ (15) قَالُوا رَبُّنَا يَعْلَمُ إِنَّا إِلَيْكُمْ لَمُرْسَلُوْنَ (16) وَمَا عَلَيْنَا إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِيْنُ (17) قَالُوْا إِنَّا تَطَيَّرْنَا بِكُمْ لَئِنْ لَّمْ تَنْتَهُوْا لَنَرْجُمَنَّكُمْ وَلَيَمَسَّنَّكُمْ مِنَّا عَذَابٌ أَلِيْمٌ (18) قَالُوْا طَائِرُكُمْ مَعَكُمْ أَئِنْ ذُكِّرْتُمْ بَلْ أَنْتُمْ قَوْمٌ مُّسْرِفُوْنَ (19) وَجَاءَ مِنْ أَقْصَى الْمَدِيْنَةِ رَجُلٌ يَّسْعٰى قَالَ يَا قَوْمِ اتَّبِعُوا الْمُرْسَلِيْنَ (20) اِتَّبِعُوْا مَنْ لَّا يَسْأَلُكُمْ أَجْرًا وَّهُمْ مُهْتَدُوْنَ (21) وَمَا لِيَ لَا أَعْبُدُ الَّذِيْ فَطَرَنِيْ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُوْنَ (22) أَأَتَّخِذُ مِنْ دُوْنِه ̩̩ آلِهَةً إِنْ يُّرِدْنِ الرَّحْمٰنُ بِضُرٍّ لَّا تُغْنِ عَنِّيْ شَفَاعَتُهُمْ شَيْئًا وَّلَا يُنْقِذُوْنِ (23) إِنِّيْ إِذًا لَّفِيْ ضَلَالٍ مُّبِيْنٍ (24) إِنِّيْ آمَنْتُ بِرَبِّكُمْ فَاسْمَعُوْنِ (25) قِيْلَ ادْخُلِ الْجَنَّةَ قَالَ يَا لَيْتَ قَوْمِيْ يَعْلَمُوْنَ (26) بِمَا غَفَرَ لِيْ رَبِّيْ وَجَعَلَنِيْ مِنَ الْمُكْرَمِيْنَ (27) وَمَا أَنْزَلْنَا عَلٰى قَوْمِهٖ مِنْۢ بَعْدِهٖ مِنْ جُنْدٍ مِّنَ السَّمَاءِ وَمَا كُنَّا مُنْزِلِيْنَ (28) إِنْ كَانَتْ إِلَّا صَيْحَةً وَّاحِدَةً فَإِذَا هُمْ خَامِدُوْنَ (29) يَا حَسْرَةً عَلَى الْعِبَادِ مَا يَأْتِيْهِمْ مِّنْ رَّسُوْلٍ إِلَّا كَانُوْا بِهٖ يَسْتَهْزِئُوْنَ (30) أَلَمْ يَرَوْا كَمْ أَهْلَكْنَا قَبْلَهُمْ مِّنَ الْقُرُوْنِ أَنَّهُمْ إِلَيْهِمْ لَا يَرْجِعُوْنَ (31) وَإِنْ كُلٌّ لَّمَّا جَمِيْعٌ لَّدَيْنَا مُحْضَرُوْنَ (32) وَآيَةٌ لَّهُمُ الْاَرْضُ الْمَيْتَةُ أَحْيَيْنَاهَا وَأَخْرَجْنَا مِنْهَا حَبًّا فَمِنْهُ يَأْكُلُوْنَ (33) وَجَعَلْنَا فِيْهَا جَنَّاتٍ مِّنْ نَخِيْلٍ وَّأَعْنَابٍ وَّفَجَّرْنَا فِيْهَا مِنَ الْعُيُوْنِ (34) لِيَأْكُلُوْا مِنْ ثَمَرِهٖ وَمَا عَمِلَتْهُ أَيْدِيْهِمْ أَفَلَا يَشْكُرُوْنَ (35) سُبْحَانَ الَّذِيْ خَلَقَ الْاَزْوَاجَ كُلَّهَا مِمَّا تُنْبِتُ الْاَرْضُ وَمِنْ أَنْفُسِهِمْ وَمِمَّا لَا يَعْلَمُوْنَ (36) وَآيَةٌ لَّهُمُ اللَّيْلُ نَسْلَخُ مِنْهُ النَّهَارَ فَإِذَا هُمْ مُّظْلِمُوْنَ (37) وَالشَّمْسُ تَجْرِيْ لِمُسْتَقَرٍّ لَّهَا ذٰلِكَ تَقْدِيْرُ الْعَزِيْزِ الْعَلِيْمِ (38) وَالْقَمَرَ قَدَّرْنَاهُ مَنَازِلَ حَتّٰى عَادَ كَالْعُرْجُوْنِ الْقَدِيْمِ (39) لَا الشَّمْسُ يَنْبَغِيْ لَهَا أَنْ تُدْرِكَ الْقَمَرَ وَلَا اللَّيْلُ سَابِقُ النَّهَارِ وَكُلٌّ فِي فَلَكٍ يَّسْبَحُوْنَ (40) وَآيَةٌ لَّهُمْ أَنَّا حَمَلْنَا ذُرِّيَّتَهُمْ فِي الْفُلْكِ الْمَشْحُوْنِ (41) وَخَلَقْنَا لَهُمْ مِّنْ مِّثْلِهٖ مَا يَرْكَبُوْنَ (42) وَإِنْ نَّشَأْ نُغْرِقْهُمْ فَلَا صَرِيْخَ لَهُمْ وَلَا هُمْ يُنْقَذُوْنَ (43) إِلَّا رَحْمَةً مِّنَّا وَمَتَاعًا إِلٰى حِيْنٍ (44) وَإِذَا قِيْلَ لَهُمُ اتَّقُوْا مَا بَيْنَ أَيْدِيْكُمْ وَمَا خَلْفَكُمْ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ (45) وَمَا تَأْتِيْهِمْ مِّنْ آيَةٍ مِّنْ آيَاتِ رَبِّهِمْ إِلَّا كَانُوْا عَنْهَا مُعْرِضِيْنَ (46) وَإِذَا قِيْلَ لَهُمْ أَنْفِقُوْا مِمَّا رَزَقَكُمُ اللهُ قَالَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا لِلَّذِيْنَ آمَنُوْا أَنُطْعِمُ مَنْ لَّوْ يَشَاءُ اللهُ أَطْعَمَهٗ إِنْ أَنْتُمْ إِلَّا فِيْ ضَلَالٍ مُّبِيْنٍ (47) وَيَقُولُوْنَ مَتٰى هٰذَا الْوَعْدُ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِيْنَ (48) مَا يَنْظُرُوْنَ إِلَّا صَيْحَةً وَّاحِدَةً تَأْخُذُهُمْ وَهُمْ يَخِصِّمُوْنَ (49) فَلَا يَسْتَطِيْعُونَ تَوْصِيَةً وَّلَا إِلٰى أَهْلِهِمْ يَرْجِعُوْنَ (50) وَنُفِخَ فِي الصُّوْرِ فَإِذَا هُمْ مِّنَ الْاَجْدَاثِ إِلٰى رَبِّهِمْ يَنْسِلُوْنَ (51) قَالُوْا يَا وَيْلَنَا مَنْۢ بَعَثَنَا مِنْ مَّرْقَدِنَا هٰذَا مَا وَعَدَ الرَّحْمٰنُ وَصَدَقَ الْمُرْسَلُوْنَ (52) إِنْ كَانَتْ إِلَّا صَيْحَةً وَّاحِدَةً فَإِذَا هُمْ جَمِيْعٌ لَّدَيْنَا مُحْضَرُوْنَ (53) فَالْيَوْمَ لَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا وَّلَا تُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كُنْتُمْ تَعْمَلُوْنَ (54) إِنَّ أَصْحَابَ الْجَنَّةِ الْيَوْمَ فِي شُغُلٍ فَاكِهُوْنَ (55) هُمْ وَأَزْوَاجُهُمْ فِي ظِلَالٍ عَلَى الْاَرَائِكِ مُتَّكِئُوْنَ (56) لَهُمْ فِيْهَا فَاكِهَةٌ وَّلَهُمْ مَّا يَدَّعُوْنَ (57) سَلَامٌ قَوْلًا مِّنْ رَّبٍّ رَّحِيْمٍ (58) وَامْتَازُوْا الْيَوْمَ أَيُّهَا الْمُجْرِمُوْنَ (59) أَلَمْ أَعْهَدْ إِلَيْكُمْ يَا بَنِيْ آدَمَ أَنْ لَّا تَعْبُدُوْا الشَّيْطَانَ إِنَّهٗ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِيْنٌ (60) وَأَنِ اعْبُدُوْنِيْ هٰذَا صِرَاطٌ مُّسْتَقِيْمٌ (61) وَلَقَدْ أَضَلَّ مِنْكُمْ جِبِلًّا كَثِيرًا أَفَلَمْ تَكُوْنُوْا تَعْقِلُوْنَ (62) هٰذِهٖ جَهَنَّمُ الَّتِيْ كُنْتُمْ تُوْعَدُوْنَ (63) اِصْلَوْهَا الْيَوْمَ بِمَا كُنْتُمْ تَكْفُرُوْنَ (64) الْيَوْمَ نَخْتِمُ عَلٰى أَفْوَاهِهِمْ وَتُكَلِّمُنَا أَيْدِيْهِمْ وَتَشْهَدُ أَرْجُلُهُمْ بِمَا كَانُوا يَكْسِبُوْنَ (65) وَلَوْ نَشَاءُ لَطَمَسْنَا عَلٰى أَعْيُنِهِمْ فَاسْتَبَقُوْا الصِّرَاطَ فَأَنّٰى يُبْصِرُوْنَ (66) وَلَوْ نَشَاءُ لَمَسَخْنَاهُمْ عَلٰى مَكَانَتِهِمْ فَمَا اسْتَطَاعُوْا مُضِيًّا وَّلَا يَرْجِعُوْنَ (67) وَمَنْ نُعَمِّرْهُ نُنَكِّسْهُ فِي الْخَلْقِ أَفَلَا يَعْقِلُوْنَ (68) وَمَا عَلَّمْنَاهُ الشِّعْرَ وَمَا يَنْبَغِيْ لَهٗ إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ وَّقُرْآنٌ مُّبِيْنٌ (69) لِيُنْذِرَ مَنْ كَانَ حَيًّا وَّيَحِقَّ الْقَوْلُ عَلَى الْكَافِرِيْنَ (70) أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّا خَلَقْنَا لَهُمْ مِّمَّا عَمِلَتْ أَيْدِيْنَا أَنْعَامًا فَهُمْ لَهَا مَالِكُوْنَ (71) وَذَلَّلْنَاهَا لَهُمْ فَمِنْهَا رَكُوبُهُمْ وَمِنْهَا يَأْكُلُوْنَ (72) وَلَهُمْ فِيْهَا مَنَافِعُ وَمَشَارِبُ أَفَلَا يَشْكُرُوْنَ (73) وَاتَّخَذُوْا مِنْ دُوْنِ اللهِ آلِهَةً لَّعَلَّهُمْ يُنْصَرُوْنَ (74) لَا يَسْتَطِيْعُوْنَ نَصْرَهُمْ وَهُمْ لَهُمْ جُنْدٌ مُّحْضَرُوْنَ (75) فَلَا يَحْزُنْكَ قَوْلُهُمْ إِنَّا نَعْلَمُ مَا يُسِرُّوْنَ وَمَا يُعْلِنُوْنَ (76) أَوَلَمْ يَرَ الْإِنْسَانُ أَنَّا خَلَقْنَاهُ مِنْ نُّطْفَةٍ فَإِذَا هُوَ خَصِيْمٌ مُّبِيْنٌ (77) وَضَرَبَ لَنَا مَثَلًا وَّنَسِيَ خَلْقَهٗ قَالَ مَنْ يُّحْيِي الْعِظَامَ وَهِيَ رَمِيْمٌ (78) قُلْ يُحْيِيْهَا الَّذِيْ أَنْشَأَهَا أَوَّلَ مَرَّةٍ وَّهُوَ بِكُلِّ خَلْقٍ عَلِيْمٌ (79) الَّذِيْ جَعَلَ لَكُمْ مِّنَ الشَّجَرِ الْاَخْضَرِ نَارًا فَإِذَا أَنْتُمْ مِّنْهُ تُوْقِدُوْنَ (80) أَوَلَيْسَ الَّذِيْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضَ بِقَادِرٍ عَلٰى أَنْ يَّخْلُقَ مِثْلَهُمْ بَلٰى وَهُوَ الْخَلَّاقُ الْعَلِيْمُ (81) إِنَّمَا أَمْرُهٗ إِذَا أَرَادَ شَيْئًا أَنْ يَّقُوْلَ لَهٗ كُنْ فَيَكُوْنُ (82) فَسُبْحَانَ الَّذِيْ بِيَدِهٖ مَلَكُوْتُ كُلِّ شَيْءٍ وَّإِلَيْهِ تُرْجَعُوْنَ (83)
﷽
الرَّحْمٰنُ (1) عَلَّمَ الْقُرْآنَ (2) خَلَقَ الْإِنْسَانَ (3) عَلَّمَهُ الْبَيَانَ (4) الشَّمْسُ وَالْقَمَرُ بِحُسْبَانٍ (5) وَالنَّجْمُ وَالشَّجَرُ يَسْجُدَانِ (6) وَالسَّمَاءَ رَفَعَهَا وَوَضَعَ الْمِيْزَانَ (7) أَلَّا تَطْغَوْا فِي الْمِيْزَانِ (8) وَأَقِيْمُوا الْوَزْنَ بِالْقِسْطِ وَلَا تُخْسِرُوا الْمِيْزَانَ (9) وَالْأَرْضَ وَضَعَهَا لِلْأَنَامِ (10) فِيْهَا فَاكِهَةٌ وَالنَّخْلُ ذَاتُ الْأَكْمَامِ (11) وَالْحَبُّ ذُو الْعَصْفِ وَالرَّيْحَانُ (12) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (13) خَلَقَ الْإِنْسَانَ مِنْ صَلْصَالٍ كَالْفَخَّارِ (14) وَخَلَقَ الْجَانَّ مِنْ مَّارِجٍ مِّنْ نَارٍ (15) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (16) رَبُّ الْمَشْرِقَيْنِ وَرَبُّ الْمَغْرِبَيْنِ (17) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (18) مَرَجَ الْبَحْرَيْنِ يَلْتَقِيَانِ (19) بَيْنَهُمَا بَرْزَخٌ لَّا يَبْغِيَانِ (20) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (21) يَخْرُجُ مِنْهُمَا اللُّؤْلُؤُ وَالْمَرْجَانُ (22) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (23) وَلَهُ الْجَوَارِ الْمُنْشَآتُ فِي الْبَحْرِ كَالْأَعْلَامِ (24) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (25) كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ (26) وَيَبْقٰى وَجْهُ رَبِّكَ ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ (27) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (28) يَسْأَلُهٗ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ كُلَّ يَوْمٍ هُوَ فِي شَأْنٍ (29) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (30) سَنَفْرُغُ لَكُمْ أَيُّهَ الثَّقَلَانِ (31) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (32) يَا مَعْشَرَ الْجِنِّ وَالْإِنْسِ إِنِ اسْتَطَعْتُمْ أَنْ تَنْفُذُوْا مِنْ أَقْطَارِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ فَانْفُذُوْا لَا تَنْفُذُوْنَ إِلَّا بِسُلْطَانٍ (33) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (34) يُرْسَلُ عَلَيْكُمَا شُوَاظٌ مِّنْ نَّارٍ وَّنُحَاسٌ فَلَا تَنْتَصِرَانِ (35) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (36) فَإِذَا انْشَقَّتِ السَّمَاءُ فَكَانَتْ وَرْدَةً كَالدِّهَانِ (37) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (38) فَيَوْمَئِذٍ لَّا يُسْأَلُ عَنْ ذَنْبِهٖ إِنْسٌ وَّلَا جَانٌّ (39) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (40) يُعْرَفُ الْمُجْرِمُوْنَ بِسِيْمَاهُمْ فَيُؤْخَذُ بِالنَّوَاصِيْ وَالْاَقْدَامِ (41) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (42) هٰذِهٖ جَهَنَّمُ الَّتِيْ يُكَذِّبُ بِهَا الْمُجْرِمُوْنَ (43) يَطُوْفُوْنَ بَيْنَهَا وَبَيْنَ حَمِيْمٍ آنٍ (44) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (45) وَلِمَنْ خَافَ مَقَامَ رَبِّهٖ جَنَّتَانِ (46) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (47) ذَوَاتَا أَفْنَانٍ (48) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (49) فِيْهِمَا عَيْنَانِ تَجْرِيَانِ (50) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (51) فِيْهِمَا مِنْ كُلِّ فَاكِهَةٍ زَوْجَانِ (52) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (53) مُتَّكِئِيْنَ عَلٰى فُرُشٍۢ بَطَائِنُهَا مِنْ إِسْتَبْرَقٍ وَّجَنَى الْجَنَّتَيْنِ دَانٍ (54) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (55) فِيْهِنَّ قَاصِرَاتُ الطَّرْفِ لَمْ يَطْمِثْهُنَّ إِنْسٌ قَبْلَهُمْ وَلَا جَانٌّ (56) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (57) كَأَنَّهُنَّ الْيَاقُوْتُ وَالْمَرْجَانُ (58) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (59) هَلْ جَزَاءُ الْإِحْسَانِ إِلَّا الْإِحْسَانُ (60) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (61) وَمِنْ دُونِهِمَا جَنَّتَانِ (62) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (63) مُدْهَامَّتَانِ (64) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (65) فِيْهِمَا عَيْنَانِ نَضَّاخَتَانِ (66) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (67) فِيْهِمَا فَاكِهَةٌ وَّنَخْلٌ وَّرُمَّانٌ (68) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (69) فِيْهِنَّ خَيْرَاتٌ حِسَانٌ (70) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (71) حُورٌ مَقْصُوْرَاتٌ فِيْ الْخِيَامِ (72) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (73) لَمْ يَطْمِثْهُنَّ إِنْسٌ قَبْلَهُمْ وَلَا جَانٌّ (74) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (75) مُتَّكِئِيْنَ عَلٰى رَفْرَفٍ خُضْرٍ وَّعَبْقَرِيٍّ حِسَانٍ (76) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (77) تَبَارَكَ اسْمُ رَبِّكَ ذِي الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ (78)
الرَّحْمٰنُ (1) عَلَّمَ الْقُرْآنَ (2) خَلَقَ الْإِنْسَانَ (3) عَلَّمَهُ الْبَيَانَ (4) الشَّمْسُ وَالْقَمَرُ بِحُسْبَانٍ (5) وَالنَّجْمُ وَالشَّجَرُ يَسْجُدَانِ (6) وَالسَّمَاءَ رَفَعَهَا وَوَضَعَ الْمِيْزَانَ (7) أَلَّا تَطْغَوْا فِي الْمِيْزَانِ (8) وَأَقِيْمُوا الْوَزْنَ بِالْقِسْطِ وَلَا تُخْسِرُوا الْمِيْزَانَ (9) وَالْأَرْضَ وَضَعَهَا لِلْأَنَامِ (10) فِيْهَا فَاكِهَةٌ وَالنَّخْلُ ذَاتُ الْأَكْمَامِ (11) وَالْحَبُّ ذُو الْعَصْفِ وَالرَّيْحَانُ (12) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (13) خَلَقَ الْإِنْسَانَ مِنْ صَلْصَالٍ كَالْفَخَّارِ (14) وَخَلَقَ الْجَانَّ مِنْ مَّارِجٍ مِّنْ نَارٍ (15) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (16) رَبُّ الْمَشْرِقَيْنِ وَرَبُّ الْمَغْرِبَيْنِ (17) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (18) مَرَجَ الْبَحْرَيْنِ يَلْتَقِيَانِ (19) بَيْنَهُمَا بَرْزَخٌ لَّا يَبْغِيَانِ (20) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (21) يَخْرُجُ مِنْهُمَا اللُّؤْلُؤُ وَالْمَرْجَانُ (22) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (23) وَلَهُ الْجَوَارِ الْمُنْشَآتُ فِي الْبَحْرِ كَالْأَعْلَامِ (24) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (25) كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ (26) وَيَبْقٰى وَجْهُ رَبِّكَ ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ (27) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (28) يَسْأَلُهٗ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ كُلَّ يَوْمٍ هُوَ فِي شَأْنٍ (29) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (30) سَنَفْرُغُ لَكُمْ أَيُّهَ الثَّقَلَانِ (31) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (32) يَا مَعْشَرَ الْجِنِّ وَالْإِنْسِ إِنِ اسْتَطَعْتُمْ أَنْ تَنْفُذُوْا مِنْ أَقْطَارِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ فَانْفُذُوْا لَا تَنْفُذُوْنَ إِلَّا بِسُلْطَانٍ (33) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (34) يُرْسَلُ عَلَيْكُمَا شُوَاظٌ مِّنْ نَّارٍ وَّنُحَاسٌ فَلَا تَنْتَصِرَانِ (35) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (36) فَإِذَا انْشَقَّتِ السَّمَاءُ فَكَانَتْ وَرْدَةً كَالدِّهَانِ (37) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (38) فَيَوْمَئِذٍ لَّا يُسْأَلُ عَنْ ذَنْبِهٖ إِنْسٌ وَّلَا جَانٌّ (39) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (40) يُعْرَفُ الْمُجْرِمُوْنَ بِسِيْمَاهُمْ فَيُؤْخَذُ بِالنَّوَاصِيْ وَالْاَقْدَامِ (41) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (42) هٰذِهٖ جَهَنَّمُ الَّتِيْ يُكَذِّبُ بِهَا الْمُجْرِمُوْنَ (43) يَطُوْفُوْنَ بَيْنَهَا وَبَيْنَ حَمِيْمٍ آنٍ (44) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (45) وَلِمَنْ خَافَ مَقَامَ رَبِّهٖ جَنَّتَانِ (46) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (47) ذَوَاتَا أَفْنَانٍ (48) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (49) فِيْهِمَا عَيْنَانِ تَجْرِيَانِ (50) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (51) فِيْهِمَا مِنْ كُلِّ فَاكِهَةٍ زَوْجَانِ (52) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (53) مُتَّكِئِيْنَ عَلٰى فُرُشٍۢ بَطَائِنُهَا مِنْ إِسْتَبْرَقٍ وَّجَنَى الْجَنَّتَيْنِ دَانٍ (54) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (55) فِيْهِنَّ قَاصِرَاتُ الطَّرْفِ لَمْ يَطْمِثْهُنَّ إِنْسٌ قَبْلَهُمْ وَلَا جَانٌّ (56) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (57) كَأَنَّهُنَّ الْيَاقُوْتُ وَالْمَرْجَانُ (58) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (59) هَلْ جَزَاءُ الْإِحْسَانِ إِلَّا الْإِحْسَانُ (60) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (61) وَمِنْ دُونِهِمَا جَنَّتَانِ (62) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (63) مُدْهَامَّتَانِ (64) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (65) فِيْهِمَا عَيْنَانِ نَضَّاخَتَانِ (66) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (67) فِيْهِمَا فَاكِهَةٌ وَّنَخْلٌ وَّرُمَّانٌ (68) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (69) فِيْهِنَّ خَيْرَاتٌ حِسَانٌ (70) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (71) حُورٌ مَقْصُوْرَاتٌ فِيْ الْخِيَامِ (72) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (73) لَمْ يَطْمِثْهُنَّ إِنْسٌ قَبْلَهُمْ وَلَا جَانٌّ (74) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (75) مُتَّكِئِيْنَ عَلٰى رَفْرَفٍ خُضْرٍ وَّعَبْقَرِيٍّ حِسَانٍ (76) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ (77) تَبَارَكَ اسْمُ رَبِّكَ ذِي الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ (78)
﷽
إِذَا وَقَعَتِ الْوَاقِعَةُ (1) لَيْسَ لِوَقْعَتِهَا كَاذِبَةٌ (2) خَافِضَةٌ رَّافِعَةٌ (3) إِذَا رُجَّتِ الْاَرْضُ رَجًّا (4) وَبُسَّتِ الْجِبَالُ بَسًّا (5) فَكَانَتْ هَبَاءً مُّنْبَثًّا (6) وَكُنْتُمْ أَزْوَاجًا ثَلَاثَةً (7) فَأَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ مَا أَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ (8) وَأَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ مَا أَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ (9) وَالسَّابِقُوْنَ السَّابِقُوْنَ (10) أُولٰئِكَ الْمُقَرَّبُوْنَ (11) فِيْ جَنَّاتِ النَّعِيْمِ (12) ثُلَّةٌ مِّنَ الْاَوَّلِيْنَ (13) وَقَلِيْلٌ مِّنَ الْآخِرِيْنَ (14) عَلٰى سُرُرٍ مَّوْضُوْنَةٍ (15) مُتَّكِئِيْنَ عَلَيْهَا مُتَقَابِلِيْنَ (16) يَطُوْفُ عَلَيْهِمْ وِلْدَانٌ مُّخَلَّدُوْنَ (17) بِأَكْوَابٍ وَّأَبَارِيْقَ وَكَأْسٍ مِّنْ مَّعِيْنٍ (18) لَا يُصَدَّعُوْنَ عَنْهَا وَلَا يُنْزِفُوْنَ (19) وَفَاكِهَةٍ مِّمَّا يَتَخَيَّرُوْنَ (20)
وَلَحْمِ طَيْرٍ مِّمَّا يَشْتَهُوْنَ (21) وَحُورٌ عِيْنٌ (22) كَأَمْثَالِ اللُّؤْلُؤِ الْمَكْنُوْنِ (23) جَزَاءً ۢبِمَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ (24) لَا يَسْمَعُوْنَ فِيْهَا لَغْوًا وَّلَا تَأْثِيْمًا (25) إِلَّا قِيْلًا سَلَامًا سَلَامًا (26) وَأَصْحَابُ الْيَمِيْنِ مَا أَصْحَابُ الْيَمِيْنِ (27) فِيْ سِدْرٍ مَّخْضُوْدٍ (28) وَطَلْحٍ مَّنْضُوْدٍ (29) وَظِلٍّ مَّمْدُوْدٍ (30) وَمَاءٍ مَّسْكُوْبٍ (31) وَفَاكِهَةٍ كَثِيْرَةٍ (32) لَا مَقْطُوْعَةٍ وَّلَا مَمْنُوْعَةٍ (33) وَفُرُشٍ مَّرْفُوْعَةٍ (34) إِنَّا أَنْشَأْنَاهُنَّ إِنْشَاءً (35) فَجَعَلْنَاهُنَّ أَبْكَارًا (36) عُرُبًا أَتْرَابًا (37) لِّاَصْحَابِ الْيَمِيْنِ (38) ثُلَّةٌ مِّنَ الْاَوَّلِيْنَ (39) وَثُلَّةٌ مِّنَ الْآخِرِيْنَ (40) وَأَصْحَابُ الشِّمَالِ مَا أَصْحَابُ الشِّمَالِ (41) فِيْ سَمُوْمٍ وَّحَمِيْمٍ (42) وَظِلٍّ مِّنْ يَّحْمُوْمٍ (43) لَا بَارِدٍ وَّلَا كَرِيْمٍ (44) إِنَّهُمْ كَانُوْا قَبْلَ ذٰلِكَ مُتْرَفِيْنَ (45) وَكَانُوْا يُصِرُّوْنَ عَلَى الْحِنْثِ الْعَظِيْمِ (46) وَكَانُوْا يَقُوْلُوْنَ أَئِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًا وَّعِظَامًا أَإِنَّا لَمَبْعُوْثُوْنَ (47) أَوَآبَاؤُنَا الْاَوَّلُوْنَ (48) قُلْ إِنَّ الْاَوَّلِيْنَ وَالْآخِرِيْنَ (49) لَمَجْمُوْعُوْنَ إِلٰى مِيْقَاتِ يَوْمٍ مَّعْلُوْمٍ (50) ثُمَّ إِنَّكُمْ أَيُّهَا الضَّالُّوْنَ الْمُكَذِّبُوْنَ (51) لَآكِلُوْنَ مِنْ شَجَرٍ مِّنْ زَقُّوْمٍ (52) فَمَالِئُوْنَ مِنْهَا الْبُطُوْنَ (53) فَشَارِبُوْنَ عَلَيْهِ مِنَ الْحَمِيْمِ (54) فَشَارِبُوْنَ شُرْبَ الْهِيْمِ (55) هٰذَا نُزُلُهُمْ يَوْمَ الدِّيْنِ (56) نَحْنُ خَلَقْنَاكُمْ فَلَوْلَا تُصَدِّقُوْنَ (57) أَفَرَأَيْتُمْ مَّا تُمْنُوْنَ (58) أَأَنْتُمْ تَخْلُقُوْنَهٗ أَمْ نَحْنُ الْخَالِقُوْنَ (59) نَحْنُ قَدَّرْنَا بَيْنَكُمُ الْمَوْتَ وَمَا نَحْنُ بِمَسْبُوْقِيْنَ (60) عَلٰى أَنْ نُّبَدِّلَ أَمْثَالَكُمْ وَنُنْشِئَكُمْ فِيْ مَا لَا تَعْلَمُوْنَ (61) وَلَقَدْ عَلِمْتُمُ النَّشْأَةَ الْأُوْلٰى فَلَوْلَا تَذَكَّرُوْنَ (62) أَفَرَأَيْتُمْ مَّا تَحْرُثُوْنَ (63) أَأَنْتُمْ تَزْرَعُوْنَهٗ أَمْ نَحْنُ الزَّارِعُوْنَ (64) لَوْ نَشَاءُ لَجَعَلْنَاهُ حُطَامًا فَظَلْتُمْ تَفَكَّهُوْنَ (65) إِنَّا لَمُغْرَمُوْنَ (66) بَلْ نَحْنُ مَحْرُوْمُوْنَ (67) أَفَرَأَيْتُمُ الْمَاءَ الَّذِيْ تَشْرَبُوْنَ (68) أَأَنْتُمْ أَنْزَلْتُمُوْهُ مِنَ الْمُزْنِ أَمْ نَحْنُ الْمُنْزِلُوْنَ (69) لَوْ نَشَاءُ جَعَلْنَاهُ أُجَاجًا فَلَوْلَا تَشْكُرُوْنَ (70) أَفَرَأَيْتُمُ النَّارَ الَّتِيْ تُوْرُوْنَ (71) أَأَنْتُمْ أَنْشَأْتُمْ شَجَرَتَهَا أَمْ نَحْنُ الْمُنْشِئُوْنَ (72) نَحْنُ جَعَلْنَاهَا تَذْكِرَةً وَّمَتَاعًا لِّلْمُقْوِيْنَ (73) فَسَبِّحْ بِاسْمِ رَبِّكَ الْعَظِيْمِ (74) فَلَا أُقْسِمُ بِمَوَاقِعِ النُّجُوْمِ (75) وَإِنَّهٗ لَقَسَمٌ لَوْ تَعْلَمُوْنَ عَظِيْمٌ (76) إِنَّهٗ لَقُرْآنٌ كَرِيْمٌ (77) فِيْ كِتَابٍ مَّكْنُونٍ (78) لَا يَمَسُّهٗ إِلَّا الْمُطَهَّرُوْنَ (79) تَنْزِيْلٌ مِّنْ رَّبِّ الْعَالَمِيْنَ (80) أَفَبِهٰذَا الْحَدِيْثِ أَنْتُمْ مُدْهِنُوْنَ (81) وَتَجْعَلُوْنَ رِزْقَكُمْ أَنَّكُمْ تُكَذِّبُوْنَ (82) فَلَوْلَا إِذَا بَلَغَتِ الْحُلْقُوْمَ (83) وَأَنْتُمْ حِيْنَئِذٍ تَنْظُرُوْنَ (84) وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْكُمْ وَلٰكِنْ لَّا تُبْصِرُوْنَ (85) فَلَوْلَا إِنْ كُنْتُمْ غَيْرَ مَدِيْنِيْنَ (86) تَرْجِعُوْنَهَا إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِيْنَ (87) فَأَمَّا إِنْ كَانَ مِنَ الْمُقَرَّبِيْنَ (88) فَرَوْحٌ وَّرَيْحَانٌ وَّجَنَّتُ نَّعِيْمٍ (89) وَأَمَّا إِنْ كَانَ مِنْ أَصْحَابِ الْيَمِيْنِ (90) فَسَلَامٌ لَكَ مِنْ أَصْحَابِ الْيَمِيْنِ (91) وَأَمَّا إِنْ كَانَ مِنَ الْمُكَذِّبِيْنَ الضَّالِّيْنَ (92) فَنُزُلٌ مِّنْ حَمِيْمٍ (93) وَتَصْلِيَةُ جَحِيْمٍ (94) إِنَّ هٰذَا لَهُوَ حَقُّ الْيَقِيْنِ (95) فَسَبِّحْ بِاسْمِ رَبِّكَ الْعَظِيْمِ
إِذَا وَقَعَتِ الْوَاقِعَةُ (1) لَيْسَ لِوَقْعَتِهَا كَاذِبَةٌ (2) خَافِضَةٌ رَّافِعَةٌ (3) إِذَا رُجَّتِ الْاَرْضُ رَجًّا (4) وَبُسَّتِ الْجِبَالُ بَسًّا (5) فَكَانَتْ هَبَاءً مُّنْبَثًّا (6) وَكُنْتُمْ أَزْوَاجًا ثَلَاثَةً (7) فَأَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ مَا أَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ (8) وَأَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ مَا أَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ (9) وَالسَّابِقُوْنَ السَّابِقُوْنَ (10) أُولٰئِكَ الْمُقَرَّبُوْنَ (11) فِيْ جَنَّاتِ النَّعِيْمِ (12) ثُلَّةٌ مِّنَ الْاَوَّلِيْنَ (13) وَقَلِيْلٌ مِّنَ الْآخِرِيْنَ (14) عَلٰى سُرُرٍ مَّوْضُوْنَةٍ (15) مُتَّكِئِيْنَ عَلَيْهَا مُتَقَابِلِيْنَ (16) يَطُوْفُ عَلَيْهِمْ وِلْدَانٌ مُّخَلَّدُوْنَ (17) بِأَكْوَابٍ وَّأَبَارِيْقَ وَكَأْسٍ مِّنْ مَّعِيْنٍ (18) لَا يُصَدَّعُوْنَ عَنْهَا وَلَا يُنْزِفُوْنَ (19) وَفَاكِهَةٍ مِّمَّا يَتَخَيَّرُوْنَ (20)
وَلَحْمِ طَيْرٍ مِّمَّا يَشْتَهُوْنَ (21) وَحُورٌ عِيْنٌ (22) كَأَمْثَالِ اللُّؤْلُؤِ الْمَكْنُوْنِ (23) جَزَاءً ۢبِمَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ (24) لَا يَسْمَعُوْنَ فِيْهَا لَغْوًا وَّلَا تَأْثِيْمًا (25) إِلَّا قِيْلًا سَلَامًا سَلَامًا (26) وَأَصْحَابُ الْيَمِيْنِ مَا أَصْحَابُ الْيَمِيْنِ (27) فِيْ سِدْرٍ مَّخْضُوْدٍ (28) وَطَلْحٍ مَّنْضُوْدٍ (29) وَظِلٍّ مَّمْدُوْدٍ (30) وَمَاءٍ مَّسْكُوْبٍ (31) وَفَاكِهَةٍ كَثِيْرَةٍ (32) لَا مَقْطُوْعَةٍ وَّلَا مَمْنُوْعَةٍ (33) وَفُرُشٍ مَّرْفُوْعَةٍ (34) إِنَّا أَنْشَأْنَاهُنَّ إِنْشَاءً (35) فَجَعَلْنَاهُنَّ أَبْكَارًا (36) عُرُبًا أَتْرَابًا (37) لِّاَصْحَابِ الْيَمِيْنِ (38) ثُلَّةٌ مِّنَ الْاَوَّلِيْنَ (39) وَثُلَّةٌ مِّنَ الْآخِرِيْنَ (40) وَأَصْحَابُ الشِّمَالِ مَا أَصْحَابُ الشِّمَالِ (41) فِيْ سَمُوْمٍ وَّحَمِيْمٍ (42) وَظِلٍّ مِّنْ يَّحْمُوْمٍ (43) لَا بَارِدٍ وَّلَا كَرِيْمٍ (44) إِنَّهُمْ كَانُوْا قَبْلَ ذٰلِكَ مُتْرَفِيْنَ (45) وَكَانُوْا يُصِرُّوْنَ عَلَى الْحِنْثِ الْعَظِيْمِ (46) وَكَانُوْا يَقُوْلُوْنَ أَئِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًا وَّعِظَامًا أَإِنَّا لَمَبْعُوْثُوْنَ (47) أَوَآبَاؤُنَا الْاَوَّلُوْنَ (48) قُلْ إِنَّ الْاَوَّلِيْنَ وَالْآخِرِيْنَ (49) لَمَجْمُوْعُوْنَ إِلٰى مِيْقَاتِ يَوْمٍ مَّعْلُوْمٍ (50) ثُمَّ إِنَّكُمْ أَيُّهَا الضَّالُّوْنَ الْمُكَذِّبُوْنَ (51) لَآكِلُوْنَ مِنْ شَجَرٍ مِّنْ زَقُّوْمٍ (52) فَمَالِئُوْنَ مِنْهَا الْبُطُوْنَ (53) فَشَارِبُوْنَ عَلَيْهِ مِنَ الْحَمِيْمِ (54) فَشَارِبُوْنَ شُرْبَ الْهِيْمِ (55) هٰذَا نُزُلُهُمْ يَوْمَ الدِّيْنِ (56) نَحْنُ خَلَقْنَاكُمْ فَلَوْلَا تُصَدِّقُوْنَ (57) أَفَرَأَيْتُمْ مَّا تُمْنُوْنَ (58) أَأَنْتُمْ تَخْلُقُوْنَهٗ أَمْ نَحْنُ الْخَالِقُوْنَ (59) نَحْنُ قَدَّرْنَا بَيْنَكُمُ الْمَوْتَ وَمَا نَحْنُ بِمَسْبُوْقِيْنَ (60) عَلٰى أَنْ نُّبَدِّلَ أَمْثَالَكُمْ وَنُنْشِئَكُمْ فِيْ مَا لَا تَعْلَمُوْنَ (61) وَلَقَدْ عَلِمْتُمُ النَّشْأَةَ الْأُوْلٰى فَلَوْلَا تَذَكَّرُوْنَ (62) أَفَرَأَيْتُمْ مَّا تَحْرُثُوْنَ (63) أَأَنْتُمْ تَزْرَعُوْنَهٗ أَمْ نَحْنُ الزَّارِعُوْنَ (64) لَوْ نَشَاءُ لَجَعَلْنَاهُ حُطَامًا فَظَلْتُمْ تَفَكَّهُوْنَ (65) إِنَّا لَمُغْرَمُوْنَ (66) بَلْ نَحْنُ مَحْرُوْمُوْنَ (67) أَفَرَأَيْتُمُ الْمَاءَ الَّذِيْ تَشْرَبُوْنَ (68) أَأَنْتُمْ أَنْزَلْتُمُوْهُ مِنَ الْمُزْنِ أَمْ نَحْنُ الْمُنْزِلُوْنَ (69) لَوْ نَشَاءُ جَعَلْنَاهُ أُجَاجًا فَلَوْلَا تَشْكُرُوْنَ (70) أَفَرَأَيْتُمُ النَّارَ الَّتِيْ تُوْرُوْنَ (71) أَأَنْتُمْ أَنْشَأْتُمْ شَجَرَتَهَا أَمْ نَحْنُ الْمُنْشِئُوْنَ (72) نَحْنُ جَعَلْنَاهَا تَذْكِرَةً وَّمَتَاعًا لِّلْمُقْوِيْنَ (73) فَسَبِّحْ بِاسْمِ رَبِّكَ الْعَظِيْمِ (74) فَلَا أُقْسِمُ بِمَوَاقِعِ النُّجُوْمِ (75) وَإِنَّهٗ لَقَسَمٌ لَوْ تَعْلَمُوْنَ عَظِيْمٌ (76) إِنَّهٗ لَقُرْآنٌ كَرِيْمٌ (77) فِيْ كِتَابٍ مَّكْنُونٍ (78) لَا يَمَسُّهٗ إِلَّا الْمُطَهَّرُوْنَ (79) تَنْزِيْلٌ مِّنْ رَّبِّ الْعَالَمِيْنَ (80) أَفَبِهٰذَا الْحَدِيْثِ أَنْتُمْ مُدْهِنُوْنَ (81) وَتَجْعَلُوْنَ رِزْقَكُمْ أَنَّكُمْ تُكَذِّبُوْنَ (82) فَلَوْلَا إِذَا بَلَغَتِ الْحُلْقُوْمَ (83) وَأَنْتُمْ حِيْنَئِذٍ تَنْظُرُوْنَ (84) وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْكُمْ وَلٰكِنْ لَّا تُبْصِرُوْنَ (85) فَلَوْلَا إِنْ كُنْتُمْ غَيْرَ مَدِيْنِيْنَ (86) تَرْجِعُوْنَهَا إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِيْنَ (87) فَأَمَّا إِنْ كَانَ مِنَ الْمُقَرَّبِيْنَ (88) فَرَوْحٌ وَّرَيْحَانٌ وَّجَنَّتُ نَّعِيْمٍ (89) وَأَمَّا إِنْ كَانَ مِنْ أَصْحَابِ الْيَمِيْنِ (90) فَسَلَامٌ لَكَ مِنْ أَصْحَابِ الْيَمِيْنِ (91) وَأَمَّا إِنْ كَانَ مِنَ الْمُكَذِّبِيْنَ الضَّالِّيْنَ (92) فَنُزُلٌ مِّنْ حَمِيْمٍ (93) وَتَصْلِيَةُ جَحِيْمٍ (94) إِنَّ هٰذَا لَهُوَ حَقُّ الْيَقِيْنِ (95) فَسَبِّحْ بِاسْمِ رَبِّكَ الْعَظِيْمِ
﷽
تَبَارَكَ الَّذِيْ بِيَدِهِ الْمُلْكُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ (1) اَلَّذِيْ خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَيَاةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا وَّ هُوَ الْعَزِيْزُ الْغَفُوْرُ (2) اَلَّذِيْ خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقًا مَّا تَرٰى فِيْ خَلْقِ الرَّحْمٰنِ مِّنْ تَفَاوُتٍ فَارْجِعِ الْبَصَرَ هَلْ تَرٰى مِنْ فُطُوْرٍ (3) ثُمَّ ارْجِعِ الْبَصَرَ كَرَّتَيْنِ يَنْقَلِبْ إِلَيْكَ الْبَصَرُ خَاسِئًا وَّ هُوَ حَسِيْرٌ (4) وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيْحَ وَجَعَلْنَاهَا رُجُوْمًا لِّلشَّيَاطِيْنِ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيْرِ (5) وَلِلَّذِيْنَ كَفَرُوْا بِرَبِّهِمْ عَذَابُ جَهَنَّمَ وَبِئْسَ الْمَصِيْرُ (6) إِذَا أُلْقُوْا فِيْهَا سَمِعُوْا لَهَا شَهِيْقًا وَّ هِيَ تَفُوْرُ (7) تَكَادُ تَمَيَّزُ مِنَ الْغَيْظِ كُلَّمَا أُلْقِيَ فِيْهَا فَوْجٌ سَأَلَهُمْ خَزَنَتُهَا أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَذِيْرٌ (8) قَالُوْا بَلٰى قَدْ جَاءَنَا نَذِيْرٌ فَكَذَّبْنَا وَقُلْنَا مَا نَزَّلَ اللهُ مِنْ شَيْءٍ إِنْ أَنْتُمْ إِلَّا فِيْ ضَلَالٍ كَبِيْرٍ (9) وَقَالُوْا لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِيْ أَصْحَابِ السَّعِيْرِ (10) فَاعْتَرَفُوْا بِذَۢ نْبِهِمْ فَسُحْقًا لِّاَصْحَابِ السَّعِيْرِ (11) إِنَّ الَّذِيْنَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُمْ بِالْغَيْبِ لَهُمْ مَغْفِرَةٌ وَّ أَجْرٌ كَبِيْرٌ (12) وَأَسِرُّوْا قَوْلَكُمْ أَوِ اجْهَرُوْا بِهٖ إِنَّهٗ عَلِيْمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوْرِ (13) أَلَا يَعْلَمُ مَنْ خَلَقَ وَهُوَ اللَّطِيْفُ الْخَبِيْرُ (14) هُوَ الَّذِيْ جَعَلَ لَكُمُ الْاَرْضَ ذَلُوْلًا فَامْشُوْا فِيْ مَنَاكِبِهَا وَكُلُوْا مِنْ رِّزْقِهٖ وَإِلَيْهِ النُّشُوْرُ (15) أَأَمِنْتُمْ مَّنْ فِيْ السَّمَاءِ أَنْ يَّخْسِفَ بِكُمُ الْاَرْضَ فَإِذَا هِيَ تَمُوْرُ (16) أَمْ أَمِنْتُمْ مَنْ فِيْ السَّمَاءِ أَنْ يُّرْسِلَ عَلَيْكُمْ حَاصِبًا فَسَتَعْلَمُوْنَ كَيْفَ نَذِيْرِ (17) وَلَقَدْ كَذَّبَ الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ فَكَيْفَ كَانَ نَكِيْرِ (18) أَوَلَمْ يَرَوْا إِلَى الطَّيْرِ فَوْقَهُمْ صَافَّاتٍ وَّيَقْبِضْنَ مَا يُمْسِكُهُنَّ إِلَّا الرَّحْمٰنُ إِنَّهٗ بِكُلِّ شَيْءٍۢ بَصِيْرٌ (19) أَمَّنْ هٰذَا الَّذِيْ هُوَ جُنْدٌ لَّكُمْ يَنْصُرُكُمْ مِّنْ دُوْنِ الرَّحْمٰنِ إِنِ الْكَافِرُوْنَ إِلَّا فِيْ غُرُوْرٍ (20) أَمَّنْ هٰذَا الَّذِيْ يَرْزُقُكُمْ إِنْ أَمْسَكَ رِزْقَهٗ بَلْ لَّجُّوْا فِيْ عُتُوٍّ وَّنُفُوْرٍ (21) أَفَمَنْ يَّمْشِيْ مُكِبًّا عَلٰى وَجْهِهٖ أَهْدٰى أَمَّنْ يَّمْشِيْ سَوِيًّا عَلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ (22) قُلْ هُوَ الَّذِيْ أَنْشَأَكُمْ وَجَعَلَ لَكُمُ السَّمْعَ وَالْاَبْصَارَ وَالْاَفْئِدَةَ قَلِيْلًا مَّا تَشْكُرُوْنَ (23) قُلْ هُوَ الَّذِيْ ذَرَأَكُمْ فِيْ الْاَرْضِ وَإِلَيْهِ تُحْشَرُوْنَ (24) وَيَقُوْلُوْنَ مَتٰى هٰذَا الْوَعْدُ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِيْنَ (25) قُلْ إِنَّمَا الْعِلْمُ عِنْدَ اللهِ وَإِنَّمَا أَنَا نَذِيْرٌ مُّبِيْنٌ (26) فَلَمَّا رَأَوْهُ زُلْفَةً سِيْئَتْ وُجُوْهُ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا وَقِيْلَ هٰذَا الَّذِيْ كُنْتُمْ بِهٖ تَدَّعُوْنَ (27) قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَهْلَكَنِيَ اللهُ وَمَنْ مَّعِيَ أَوْ رَحِمَنَا فَمَنْ يُّجِيْرُ الْكَافِرِيْنَ مِنْ عَذَابٍ أَلِيْمٍ (28) قُلْ هُوَ الرَّحْمٰنُ آمَنَّا بِهٖ وَعَلَيْهِ تَوَكَّلْنَا فَسَتَعْلَمُوْنَ مَنْ هُوَ فِيْ ضَلَالٍ مُّبِيْنٍ (29) قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَصْبَحَ مَاؤُكُمْ غَوْرًا فَمَنْ يَّأْتِيْكُمْ بِمَاءٍ مَّعِيْنٍ (30)
تَبَارَكَ الَّذِيْ بِيَدِهِ الْمُلْكُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ (1) اَلَّذِيْ خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَيَاةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا وَّ هُوَ الْعَزِيْزُ الْغَفُوْرُ (2) اَلَّذِيْ خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقًا مَّا تَرٰى فِيْ خَلْقِ الرَّحْمٰنِ مِّنْ تَفَاوُتٍ فَارْجِعِ الْبَصَرَ هَلْ تَرٰى مِنْ فُطُوْرٍ (3) ثُمَّ ارْجِعِ الْبَصَرَ كَرَّتَيْنِ يَنْقَلِبْ إِلَيْكَ الْبَصَرُ خَاسِئًا وَّ هُوَ حَسِيْرٌ (4) وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيْحَ وَجَعَلْنَاهَا رُجُوْمًا لِّلشَّيَاطِيْنِ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيْرِ (5) وَلِلَّذِيْنَ كَفَرُوْا بِرَبِّهِمْ عَذَابُ جَهَنَّمَ وَبِئْسَ الْمَصِيْرُ (6) إِذَا أُلْقُوْا فِيْهَا سَمِعُوْا لَهَا شَهِيْقًا وَّ هِيَ تَفُوْرُ (7) تَكَادُ تَمَيَّزُ مِنَ الْغَيْظِ كُلَّمَا أُلْقِيَ فِيْهَا فَوْجٌ سَأَلَهُمْ خَزَنَتُهَا أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَذِيْرٌ (8) قَالُوْا بَلٰى قَدْ جَاءَنَا نَذِيْرٌ فَكَذَّبْنَا وَقُلْنَا مَا نَزَّلَ اللهُ مِنْ شَيْءٍ إِنْ أَنْتُمْ إِلَّا فِيْ ضَلَالٍ كَبِيْرٍ (9) وَقَالُوْا لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِيْ أَصْحَابِ السَّعِيْرِ (10) فَاعْتَرَفُوْا بِذَۢ نْبِهِمْ فَسُحْقًا لِّاَصْحَابِ السَّعِيْرِ (11) إِنَّ الَّذِيْنَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُمْ بِالْغَيْبِ لَهُمْ مَغْفِرَةٌ وَّ أَجْرٌ كَبِيْرٌ (12) وَأَسِرُّوْا قَوْلَكُمْ أَوِ اجْهَرُوْا بِهٖ إِنَّهٗ عَلِيْمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوْرِ (13) أَلَا يَعْلَمُ مَنْ خَلَقَ وَهُوَ اللَّطِيْفُ الْخَبِيْرُ (14) هُوَ الَّذِيْ جَعَلَ لَكُمُ الْاَرْضَ ذَلُوْلًا فَامْشُوْا فِيْ مَنَاكِبِهَا وَكُلُوْا مِنْ رِّزْقِهٖ وَإِلَيْهِ النُّشُوْرُ (15) أَأَمِنْتُمْ مَّنْ فِيْ السَّمَاءِ أَنْ يَّخْسِفَ بِكُمُ الْاَرْضَ فَإِذَا هِيَ تَمُوْرُ (16) أَمْ أَمِنْتُمْ مَنْ فِيْ السَّمَاءِ أَنْ يُّرْسِلَ عَلَيْكُمْ حَاصِبًا فَسَتَعْلَمُوْنَ كَيْفَ نَذِيْرِ (17) وَلَقَدْ كَذَّبَ الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ فَكَيْفَ كَانَ نَكِيْرِ (18) أَوَلَمْ يَرَوْا إِلَى الطَّيْرِ فَوْقَهُمْ صَافَّاتٍ وَّيَقْبِضْنَ مَا يُمْسِكُهُنَّ إِلَّا الرَّحْمٰنُ إِنَّهٗ بِكُلِّ شَيْءٍۢ بَصِيْرٌ (19) أَمَّنْ هٰذَا الَّذِيْ هُوَ جُنْدٌ لَّكُمْ يَنْصُرُكُمْ مِّنْ دُوْنِ الرَّحْمٰنِ إِنِ الْكَافِرُوْنَ إِلَّا فِيْ غُرُوْرٍ (20) أَمَّنْ هٰذَا الَّذِيْ يَرْزُقُكُمْ إِنْ أَمْسَكَ رِزْقَهٗ بَلْ لَّجُّوْا فِيْ عُتُوٍّ وَّنُفُوْرٍ (21) أَفَمَنْ يَّمْشِيْ مُكِبًّا عَلٰى وَجْهِهٖ أَهْدٰى أَمَّنْ يَّمْشِيْ سَوِيًّا عَلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ (22) قُلْ هُوَ الَّذِيْ أَنْشَأَكُمْ وَجَعَلَ لَكُمُ السَّمْعَ وَالْاَبْصَارَ وَالْاَفْئِدَةَ قَلِيْلًا مَّا تَشْكُرُوْنَ (23) قُلْ هُوَ الَّذِيْ ذَرَأَكُمْ فِيْ الْاَرْضِ وَإِلَيْهِ تُحْشَرُوْنَ (24) وَيَقُوْلُوْنَ مَتٰى هٰذَا الْوَعْدُ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِيْنَ (25) قُلْ إِنَّمَا الْعِلْمُ عِنْدَ اللهِ وَإِنَّمَا أَنَا نَذِيْرٌ مُّبِيْنٌ (26) فَلَمَّا رَأَوْهُ زُلْفَةً سِيْئَتْ وُجُوْهُ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا وَقِيْلَ هٰذَا الَّذِيْ كُنْتُمْ بِهٖ تَدَّعُوْنَ (27) قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَهْلَكَنِيَ اللهُ وَمَنْ مَّعِيَ أَوْ رَحِمَنَا فَمَنْ يُّجِيْرُ الْكَافِرِيْنَ مِنْ عَذَابٍ أَلِيْمٍ (28) قُلْ هُوَ الرَّحْمٰنُ آمَنَّا بِهٖ وَعَلَيْهِ تَوَكَّلْنَا فَسَتَعْلَمُوْنَ مَنْ هُوَ فِيْ ضَلَالٍ مُّبِيْنٍ (29) قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَصْبَحَ مَاؤُكُمْ غَوْرًا فَمَنْ يَّأْتِيْكُمْ بِمَاءٍ مَّعِيْنٍ (30)
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন