hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিক্ষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

১৩১
সিনেমা, টেলিভিশন ও নাট্যাভিনয়
বর্তমান কালে সিনেমা বা চলচ্চিত্রকে এক সস্তা চিত্তবিনোদন মাধ্যম রূপে ব্যাপকভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। সিনেমার মূল উপকরণ হল ফিল্ম। ফিল্ম বিদ্যুতের ন্যায়ই এক প্রাকৃতির ও নৈসর্গিক শক্তি। কিন্তু এ নৈসর্গিক শক্তিকে বর্তমানে যে অন্যায় ও অশোভন পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হচ্ছে, তা কোনক্রমেই সমর্থনযোগ্য হতে পারে না। একটা শক্তিশালী প্রচার-মাধ্যম হিসেবে সিনেমা সম্পর্কে কিছু না বললেও ইদানিং সিনেমায় যা কিছু দেখানো হয় সে সম্পর্কে একথা পুরোপুরি প্রযোজ্য। ফিল্মকে বর্তমানে অশ্লীল, নির্লজ্জ ও নৈতিকতা-বিবর্জিত দৃশ্যাবলীর প্রদর্শনীর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাতে যে কাহিনী বা গল্প চিত্রায়িত হয়, তা অবৈধ ভালবাসা ও প্রণয়াসক্তির বিচিত্র গতি-প্রকৃতি ও রোমান্টিক ঘটনা-পরম্পরার আবর্তনে উদ্বেলিত। তা দর্শকদের, বিশেষত তরুণ-তরুণীদের মন-মগজ ও চরিত্রের ওপর অত্যন্ত খারাপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। রূপালী পর্দায় আলো-ছায়ার বিচিত্র ও রহস্যময় খেলায় যা কিছু দেখানো হয়, হুবহু তারই প্রতিফলন ঘটে দর্শকদের চরিত্রে। যা থাকে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে, তাকেই ধরতে ছুঁতে ও কল্পনাকে বাস্তবে রূপদান করার জন্যে পাগল-পারা হয়ে ওঠে দর্শকবৃন্দ। এটা যে একান্তই স্বাভাবিক তাতে কারোর এতটুকু সন্দেহ থাকতে পারেনা এবং কেউ এর বিপরীত মতও প্রকাশ করতে পারে বলে ধারণা করা যায় না। [আধুনিক টিভি নাটক, টেলিফিল্ম ও ভিডিও ক্যাসেট সম্পর্কেও একথা সমানভাবে প্রযোজ্য। ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার এসব অনুষ্ঠান বহুতর ক্ষেত্রে সিনেমার চেয়েও মারাত্মকভাবে দর্শক চিত্তের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করছে। বিশেষত স্যাটেলাইট চ্যানেলের বদৌলতে আকাশ–সংস্কৃতির ব্যাপক বিস্তৃতি এবং ইন্টারনেট প্রোগ্রামের দ্রুত সম্প্রসারণের কারণে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এখন মানবীয় চরিত্র ও নৈতিকতার পক্ষে এক ভয়ংকর ঘাতকে পরিণত হয়েছে। –সম্পাদক]। এ ধরণের দৃশ্যাবলী প্রত্যক্ষ করায় দর্শকদের মধ্যে তাৎক্ষণিক যৌন উন্মাদনা ও দুর্দমনীয় আবেগ-উচ্ছ্বাস সৃষ্টি হওয়াও কিছুমাত্র অস্বাভাবিক নয়। এ ধরণের কাহিনীকে চিত্রায়িত করার জন্যে প্রথমেই নারী-পুরুষ তথা উদ্ভিন্ন-যৌবন যুবক-যুবতীদের অবাধ মেলামেশা, নগ্নতা-উচ্ছৃংখলতা, অমুহাররম নারী-পুরুষের মধ্যে অন্যায় ও অসত্য সম্পর্ক স্থাপন, নির্লজ্জ অঙ্গভঙ্গি এবং তার পরিণামে পাশবিক আচার-আচরণে অভ্যস্ত হওয়া অবধারিত। কেননা এসব উপাদান ছাড়া কোন ‘রোমান্টিক’ কাহিনীই চিত্রায়িত হতে পারেনা। শুধু তা-ই নয় এক্ষেত্রে নির্লজ্জতা ও পাশবিকতার মাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি করার দাবি তীব্র হতেও তীব্রতর হয়ে ওঠে। আর দাবি এ দাবি পূরণ নাহলে সিনেমার দর্শকদের সংখ্যাও কমে যায়। যে সিনেমায় এ দাবি পূরণ করার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি, তাকে যে কোন অজুহাতে উপেক্ষা করা হয়। তাছাড়া দর্শকদের যৌন পিপাসা নিবৃত্ত করার জন্যে সিনেমায় নায়ক-নায়িকার আবেগ উচ্ছ্বসিত আলিঙ্গন ও চুম্বন-এমনকি (বিশেষ করে পাশ্চাত্য দেশে) যৌন মিলনের বাস্তব দৃশ্যের অবতারণা করাও আবশ্যক হয়ে দেখা দেয়। কিন্তু এসব অশ্লীল, গর্হিত ক্রিয়া কর্ম ইসলাম আদৌ সমর্থন করেনা; শুধু তা-ই নয়, কোন সুস্থ বিবেক-বুদ্ধি ও রুচিশীল মানুষই তা বরদাশত করতে পারেনা। এগুলো যে মনুষ্যত্বের চরম লাঞ্ছনা ও অবমাননা, তা কি বলবার অপেক্ষা রাখে?

সিনেমা ও নাট্যাভিনয়ে অভিনেতা-অভিনেত্রীকে বারে বারে ও ঘনঘন নিজেদের ভূমিকা বদলাতে হয়। বহু রূপে রূপান্তরিত করতে হয় নিজ নিজ ব্যক্তিত্বকে- ব্যক্তি-চরিত্রকে আর তার ফলে তাদের চরিত্র নিজস্ব স্বকীয়তা ও বিশেষত্ব হারিয়ে ফেলে। অতঃপর কেউ আর নিজস্ব কোন চারিত্রিক রূপ আছে বলে দাবি করতে পারেনা। এর ফলে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের চরিত্র পুরোপুরি বহুরূপী হয়ে দাঁড়ায়। স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা যখন প্রতিটি মানুষকে তার আয়ুষ্কালের প্রতিটি মুহূর্তের জন্যে দায়ী করেছেন এবং কোন মানুষকে তার ব্যক্তি-সত্তার স্বাতন্ত্র্যকে কুরবান করার নির্দেশ দেননি, তখন এ ধরণের কোন কাজ যে তাঁর নিকট পসন্দনীয় হতে পারে না, তা বলাই বাহুল্য। অনেক ক্ষেত্রে সৎ লোককে অসৎ লোকের ভূমিকায় ও অসৎ লোককে সৎ লোকের ভূমিকায় অভিনয় করতে হয় এবং নিজেকে অনুরূপ সাজসজ্জায় ভূষিত করে দর্শকদের সামনে আত্মপ্রকাশ করতে হয়। এর ফলে তাদের চরিত্রে এক ধরণের কৃত্রিম গুণ-বৈশিষ্ট্যের প্রতিফলন ঘটে অনিবার্যভাবে। এটা মানবতার পক্ষে খুবই মারাত্মক। কেননা এতে মহান স্রষ্টার স্বাভাবিক নিয়মের প্রতি চরম অবজ্ঞা ও উপহাস করা হয়। একারণে ফিল্মের বর্তমান অন্যায় ব্যবহার বন্ধ করা ছাড়া মানবতার মর্যাদা রক্ষার আর কোন উপায় নেই।

মূলত সিনেমা ও ফটোগ্রাফী গৃহীত হয় নিষ্প্রাণ প্লাষ্টিক ফিতার (Negative Film) ওপর। একে যদি ইতিবাচক শিক্ষা ও জ্ঞান বিস্তারের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয় তাহলে মানব সমাজের প্রভূত কল্যাণ সাধিত হতে পারে। সেটা করা হলে চলচ্চিত্র এমন একটা শক্তি হয়ে উঠতে পারে, যার দ্বারা অল্প সময়ের মধ্যে কোটি কোটি নিরক্ষর মানুষকে শুধু অক্ষর জ্ঞানসম্পন্নই নয়, অশিক্ষিত ও অল্প শিক্ষিতদেরকেও উচ্চতর আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানে সুসমৃদ্ধ করা কিছুমাত্র কঠিন নয়। বহু মানুষকে দুনিয়ার সাধারণ জ্ঞান (General Knowledge) এবং নিত্য-নব বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার-উদ্ভাবনী সম্পর্কে পূর্ণ অবহিতি দিয়ে ধন্য করা যেতে পারে। [সিনেমা বা চলচ্চিত্রকে যে কত চমৎকারভাবে সৃজনশীল ও গঠনমূলক কাজে ব্যবহার করা যায়, ইসলামী বিপ্লবোত্তর ইরানী চলচ্চিত্রই তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ। আল্লাহর দেয়া স্বভাব–নিয়মকে কিছুমাত্র বিকৃত না করে এবং ইসলামী শরী’আতের চৌহদ্দীর মধ্যে থেকেই ইসলামী ইরান তার চলচ্চিত্র শিল্পেও এক ইতিবাচক বিপ্লব ঘটিয়েছে, যা মানবতার কল্যাণে অসামান্য অবদান রাখছে।– সম্পাদক]। ইসলামী শরী’আতের দৃষ্টিতে এতে অন্যায় কিছু থাকেনা। এতেও হয়ত প্রাণীর ছবি পর্দায় ভেসে উঠবে; কিন্তু তা দর্পনে প্রতিফলিত প্রতিবিম্বের মতই ক্ষণস্থায়ী। আর দর্পনে প্রতিফলিত ছবি যে নিষিদ্ধ নয় তা সকলেরই জানা কথা। তা সেই ছবি নয়, যা শরী’আতে নিষিদ্ধ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন