hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিক্ষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

শিক্ষা শিক্ষার মৌলিক উদ্দেশ্য
মানুষের মন নিস্পন্দ বা অনুভূতিহীন দর্পন নয়। দর্পনে প্রতিমুহূর্তের পরিবর্তনশীল অবস্থা, অনুভূতি ও প্রকৃতির রঙ-বেরঙের বহিঃপ্রকাশ যথাযথভাবে প্রতিবিম্বিত হয়। কিন্তু মানুষের মন সেরূপ নয়। মানব মন কখনই নিষ্ক্রিয় থাকে না। তা প্রতিমুহূর্ত সচেতন ও সক্রিয়ভাবে বিভিন্ন ভাবধারা ও উপাদান-মিশ্রিত অবস্থা ও ঘটনাবলীর একটা বিশেষ প্রতিক্রিয়া গ্রহণ করে।

এখন প্রশ্ন এই যে, আমাদের চেতনায় অবস্থাসমূহের এই প্রতিবিম্ব বা প্রকৃতির চিত্র কি স্বতঃই গড়ে ওঠতে থাকে এবং চেতনা নিজ থেকেই কি তাতে যেমন ইচ্ছা রঙ লাগায় কিংবা চেতনা তার এই সুসজ্জিত ও অলংকারিত হওয়ার জন্যে বাইরের প্রেরণার মুখাপেক্ষী? দুনিয়ার বিশেষজ্ঞদের নিকট একথা সুস্পষ্ট যে, নিছক চেতনার নিজস্বভাবে এ ধরণের কোন শক্তি বা ক্ষমতা নেই। মানব মন প্রভূত শক্তি ও প্রতিভার উৎস, সন্দেহ নেই। যাচাই-বাছাই, গ্রহণ-বর্জন, বিন্যস্তকরণ ও রূপায়নের বিপুল শক্তি নিহিত রয়েছে মানুষের মনে। তার হৃদয়ানুভূতিকে যতোই Objective বলা হোক এবং বিভিন্ন অবস্থা, ঘটনাবলী ও পর্যবেক্ষণ থেকে আহরিত ফল তার পটভূমি প্রতিচ্ছায়া থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত ও সুরক্ষিত বলে যতো দাবিই করা হোকনা কেন, সে দাবি নিরর্থক অহমিকা ও অন্তঃসারশূণ্য আত্মম্ভরিতা ছাড়া আর কিছুই না, এটা বলাই বাহুল্য।

কোন জীবন্ত সত্ত্বা মহাশূণ্যে শ্বাস গ্রহণ করতে পারে না, এ যেমন সত্য, অনুরূপভাবে এ-ও সত্য যে, মানুষের মন আদর্শিক শূণ্যতার মধ্যে কাজ করতে পারে না; এ ক্ষেত্রে বিশ্বাস ও প্রত্যয় হচ্ছে তার একমাত্র অবলম্বন। তারই সাহায্যে তাকে অগ্রসর হতে হয় জ্ঞানান্বেষণের বিশাল বিস্তীর্ণ ক্ষেত্রে। যেসব সুধী নিজেদের চিন্তা-গবেষণায় Objective-এর ওপর গৌরববোধ করেন এবং যাঁরা দাবি করেন যে, তাঁরা অবরোহী চিন্তা-পদ্ধতির (Deductive) আদিম ও প্রচীন পন্থা পরিত্যাগ করে আরোহী চিন্তা-পদ্ধতির (Inductive) আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত পন্থা অবলম্বন করেছেন তাঁদের জ্ঞান-তথ্য ও গবেষণালব্ধ ফলগুলো গভীর সূক্ষ্ণ দৃষ্টিতে অধ্যয়ন ও বিশ্লেষণ করা হলে নিঃসন্দেহে জানা যায় যে, তাঁরাও হৃদয়ের মণিকোঠায় প্রচ্ছন্ন বিশ্বাস ও প্রত্যয়ের দীপ জ্বালিয়েই পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের বিশাল ও বিস্তীর্ণ প্রান্তরে পদক্ষেপ গ্রহণের দুঃসাহস করেছেন। এ এমন এক মহাসত্য, দুনিয়ার বড় বড় চিন্তাবিদরাও তা মেনে নিতে একান্তভাবে বাধ্য। এ পর্যায়ে John Gaird লিখিত ‘‘An Introduction to Philosophy of Religion’’ নামক গ্রন্থ থেকে একটি অংশ উদ্ধৃত করা যেতে পারে। তিনি বলেছেনঃ

‘‘চিন্তা-গবেষণার প্রতিটি পদক্ষেপে আমাদের মনের নিভৃত গহনে প্রচ্ছন্ন ধারণাসমূহ থেকেই পথ-নির্দেশ লাভ করতে হয়। কেননা আমরা যা কিছুর সন্ধান করি, তার মূল্য ও গুরুত্ব সে সব ধারণা-বিশ্বাসের নিক্তিতে ওজন করেই অনুমান করা যায় আর সে সব ধারণার ভিত্তিতে রচিত মানদণ্ডেই সে সবের সত্যতা ও যথার্থতা পরীক্ষা ও যাচাই করা সম্ভব হতে পারে। কোন চিন্তা-গবেষণাই নিজস্ব ধারণা-বিশ্বাস ও লক্ষ্য-উদ্দেশ্য থেকে বিচ্ছিন্ন, নিঃসম্পর্ক ও নিরপেক্ষ হয়ে পরিচালিত করা কারোর পক্ষেই সম্ভবপর নয়। নিজের ছায়া থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া যেমন কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়, তেমনি চিন্তা-গবেষণার ফল গ্রহণ না করাও কারোর সাধ্য নেই।’’

প্রখ্যাত গ্রন্থকার Beven তাঁর Symbolism of Belief গন্থে এ ধরণের মনোভাব প্রকাশ করে লিখেছেনঃ

‘‘আমরা শুধুমাত্র বাস্তবতার মধ্যে জড়িয়ে থাকতে পারিনা। আমরা যখন কোন বাস্তব জীবনের দিকে পদক্ষেপ গ্রহণ করি, তখন আমরা আমাদের কর্ম-ক্ষমতা ও তৎপরতা যাচাই করার জন্যে আমাদের নিজস্ব মৌলিক ধারণা-বিশ্বাসসমূহের দিকে প্রত্যাবর্তন করতে বাধ্য হই। বস্তুত এ এমন একটা সত্য যার স্বপক্ষে বহু চিন্তাবিদের সমর্থন উদ্ধৃত করা যেতে পারে। এ থেকে এ সত্য অতি সহজেই উপলব্ধি করা যেতে পারে যে, মূলত অবস্থা ও ঘটনাবলীর সুসংবদ্ধ অধ্যয়নই হচ্ছে শিক্ষা ও তাকে কোন ব্যক্তি ও জাতির মৌলিক চিন্তা-ভাবনা ও মতাদর্শ থেকে কোন অবস্থায়ই বিচ্ছিন্ন করা যেতে পারেনা। এ কারণেই মৌলিক বিশ্বাসের দিক দিয়ে মানুষে মানুষে যে পার্থক্য ধর্ম-বিশ্বাসের পার্থক্যের দরুন, তাকে স্বীকার করেই বিভিন্ন বিশ্বাস-অনুসারীদের শিক্ষাও বিভিন্ন হতে বাধ্য। এ সত্যকে অস্বীকার করা হলে সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে এবং তার জন্যে বিভিন্ন মৌলিক বিশ্বাসসম্পন্ন মানুষের অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হবে।’’

জ্ঞান-বিজ্ঞানের জগতে অন্যান্য সব রকমের জ্ঞান-শাখাকে বাদ দিয়ে কেবলমাত্র জীব-বিজ্ঞান, প্রকৃতি-বিজ্ঞান, পদার্থ বিজ্ঞান ও ইতিহাস সম্পর্কেই বলা যেতে পারে, এগুলোর Objectivity সম্পর্কে অনেক দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে ডারউইনের ক্রমবিকাশবাদ বিজ্ঞানীদের নিকট সর্ব-সমর্থিত মহাসত্য বলে গৃহীত। কিন্তু সকল প্রকার বিদ্বেষ, হৃদয়াবেগ ও আসক্তির আবিলতা থেকে সম্পুর্ণ মুক্ত হয়ে অধ্যয়ন করলে নিঃসন্দেহে প্রতীয়মান হবে যে, এই মতবাদটি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষণের ফসল নয়। এর অনেকগুলো ধারাই ইউরোপীয়দের নিজস্ব অন্ধ বিশ্বাস ও কুসংস্কারপ্রসূত। ধর্মবিমুখ ইউরোপীয়রা একবার যখন নিজেদের মন মগজে এই ধারণা বদ্ধমূল করে নিয়েছে যে, এই বিশ্বলোক স্বয়ম্ভু-এর স্রষ্টা বলে কেউ নেই, এ জগত একটি ধরাবাঁধা ও শাশ্বত নিয়মের অধীনের স্বতঃই চলমান ও প্রবহমান, এর কোন পরিচালকও নেই, এই ক্রমবৃদ্ধি, ইচ্ছামূলক গতিশীলতা, অনুভূতি, চেতনা, মন-মানসের উন্মেষ, স্বজ্ঞা (intuition) সব কিছু বস্তুরই উন্নতিলব্ধ বিশেষত্ব, তখন ক্রমবিকাশ সংক্রান্ত ডারউইনী মতবাদ তাদের নিকট হারানো স্বর্গের পুনঃপ্রাপ্তিরূপে বিবেচিত না হওয়ার কোন কারণই থাকতে পারে না। কেননা এই মতবাদেই তারা বিশ্বলোক সম্পর্কিত তাদের বিশেষ ধারণা ও দৃষ্টিকোণের বাস্তব ব্যাখ্যা পেয়ে গেছে। বহু প্রখ্যাত বিজ্ঞানীই এই সত্যকে অকপটে স্বীকার করেছেন। এখানে মাত্র একজন বিজ্ঞানীর অভিমতই উদ্ধৃত করা যথেষ্ট হবে।

Arnold Lunn তাঁর Revolt against Reason গ্রন্থে উদ্ধৃত করেছেনঃ ডারউইনবাদ বিজ্ঞান নয়। তা একটি পুরোপুরি ধর্মমত, তাতে যুক্তিসঙ্গত সুসংবদ্ধতার দাবি যতই করা হোক না কেন। আর মানুষের নিজেদের রচিত এই ধর্মমতে যুক্তি-প্রমাণের তুলনায় অন্ধ বিশ্বাস ও ভাবাবেগ অধিক প্রবল হয়ে রয়েছে। (পৃষ্ঠা ১৬৭)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন