hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিক্ষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

৪০
ইসলামের দৃষ্টিতে ইহকাল ও পরকাল
এই দুনিয়া ও প্রাকৃতিক জগত যে কিছুমাত্র নিরর্থক নয়-নিষ্ফল ও মূল্যহীন নয়, কুরআন মজীদের বার বার সে কথা উদাত্ত কণ্ঠে ঘোষিত হয়েছেঃ

وَمَا خَلَقْنَا السَّمَاءَ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا لَاعِبِينَ

‘‘আমরা আকাশমণ্ডল ও ভূমণ্ডল এবং এসবের মাঝে যা কিছু আছে, নিছক খেলার ছলে সৃষ্টি করি নি।’’ (সূরা আম্বিয়াঃ ১৬)

এ দুনিয়ার সৃষ্টি-রহস্য যারা জানতে পারে তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবেই ঘোষণা করতে বাধ্য হয়ঃ

رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هَٰذَا بَاطِلًا

“হে আমাদের প্রতিপালক, তুমি এই সৃষ্টিকুল-আসমান, জমিন ও এদের মধ্যবর্তী সবকিছু-নিরর্থক ও উদ্দেশ্যহীন সৃষ্টি করনি।“(আলে ইমরানঃ ১৯১)

বস্তুত এ পৃথিবী কিছুমাত্র নিরর্থক নয়-উদ্দেশ্যহীন নয়। উদ্দেশ্যহীন কোন বস্তু সৃষ্টি করা আল্লাহর পক্ষে অশোভনীয়-অসম্ভব; বরং এর একটা ইতিবাচক উদ্দেশ্য অবশ্যই রয়েছে। সে উদ্দেশ্যকে সম্মুখে রেখেই এ পৃথিবীর, এ বিশ্বলোকের এবং এখানকার জীবন কালের মূল্যায়ন করতে হবে। বস্তুত উদ্দেশ্যের গুরুত্ব ও জীবনের জন্যে তার অপরিহার্যতা কিছুমাত্র উপেক্ষণীয় নয়, এটা আমাদের গভীরভাবে অনুধাবন করতে হবে।

ইসলাম ও পার্থিব জীবনের যথাযথ মূল্য ও গুরুত্ব স্বীকার করেছে এবং একে উপেক্ষা বা ত্যাগ করার প্রবণতা এবং যে ধরণের মতবাদ দুনিয়া ত্যাগের প্রেরণা দেয়, তার প্রতিবাদ করেছে তীব্র ভাষায়। কুরআনে নেতিবাচক ভাষায় বলা হয়েছেঃ

وَرَهْبَانِيَّةً ابْتَدَعُوهَا مَا كَتَبْنَاهَا عَلَيْهِمْ

“বৈরাগ্যবাদ-দুনিয়া ত্যাগের প্রবণতা-তারা নিজেরা ইচ্ছামত রচনা করে নিয়েছে। আমরা তাদের জন্যে এ ব্যবস্থা দেইনি।“(সূরা হাদীদঃ ২৭)

আর ইতিবাচক ভাষায় ইহকাল ও পরকালের ব্যাপারে পূর্ণ ভারসাম্য রক্ষার জন্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছেঃ

وَابْتَغِ فِيمَا آتَاكَ اللَّهُ الدَّارَ الْآخِرَةَ ۖ وَلَا تَنسَ نَصِيبَكَ مِنَ الدُّنْيَا

‘‘আর আল্লাহ তোমাকে এই জীবনে যা-কিছু দিয়েছেন-জীবন, বিবেক-বুদ্ধি, চিন্তাশক্তি, ধন-সম্পদ ও প্রাকৃতিক বস্তু-সামগ্রী ইত্যাদি-সেই সবকিছু ব্যয় ও ব্যবহার করে তুমি পরকালীন কল্যাণ লাভে আকাঙ্ক্ষী ও যত্নবান হবে। আর তা করতে গিয়ে তোমার বৈষয়িক জীবনের অংশ ও প্রাপ্য তুমি কিছুতেই ভুলে যাবে না।’’ (সূরা কাসাসঃ ৭৭)

রাসূলে করীম ((ﷺ)) ইরশাদ করেছেনঃ

“তুমি দুনিয়ার জন্যে কাজ করবে এমনভাবে যেন তুমি চিরকালই এখানে থাকবে-বসবাস করবে। আর পরকালের জন্য কাজ করবে এরূপ মনোভাব নিয়ে যেন কালই তোমার মৃত্যু হবে।“

অর্থাৎ এ জীবন ও জীবনের যাবতীয় উপায়-উপকরণ, সময়-অবসর, ধন-সম্পদ, যোগ্যতা-কর্মক্ষমতা, মেধা-প্রতিভা, বিবেক-বুদ্ধি ও শক্তি-সামর্থ্য ব্যবহার করবে-কর্মে নিয়োজিত করবে এক সঙ্গে দুটি উদ্দেশ্যে। একটি হল পরকালীন কল্যাণ আর দ্বিতীয়টি ইহকালীন অর্থাৎ এই বৈষয়িক জীবনের কল্যাণ। ক্ষণস্থায়ী বৈষয়িক কল্যাণের পরিবর্তে চিরস্থায়ী পরকালীন কল্যাণই হবে তোমার চূড়ান্ত লক্ষ্য। কিন্তু তাই বলে বৈষয়িক জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের, তৃপ্তি-সাফল্যের, উন্নতি-সার্থকতার স্বাদ-আস্বাদনের ব্যাপারটি কিছুমাত্র উপেক্ষিত ও পরিত্যক্ত হতে পারবে না। এক সঙ্গে ও একই কাজের মাধ্যমে উভয় কালের কল্যাণ লাভই হবে তোমার চরম লক্ষ্য এবং একটির জন্যে অপরটির কিছুমাত্র উপেক্ষ করা হবে অমার্জনীয় অপরাধ। ইসলাম তা আদৌ সমর্থন করে না; বরং একই কাজের মধ্যে ইহকাল ও পরকাল উভয়কে সমন্বিত করা কেবলমাত্র ইসলামেরই অবদান।

বৈষয়িক জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ও চাকচিক্য সম্পূর্ণ বর্জন করাই আল্লাহর উপাসনার মাপকাঠি-দুনিয়ার বৈরাগ্যবাদী লোকদের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে কুরআন মজীদের নেতিবাচক ভাষায় প্রশ্ন করা হয়েছেঃ

قُلْ مَنْ حَرَّمَ زِينَةَ اللَّهِ الَّتِي أَخْرَجَ لِعِبَادِهِ وَالطَّيِّبَاتِ مِنَ الرِّزْقِ

‘‘বল, দুনিয়ার চাকচিক্য ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিকর এবং সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বিধানকারী দ্রব্যাদি ও পবিত্র-উৎকৃষ্ট খাদ্য-পানীয় তো আল্লাহ তা’আলা তাঁর বান্দাহদের কল্যাণে ব্যবহারের উদ্দেশ্যেই সৃষ্টি করেছেন; সে সবকে হারাম ও নিষিদ্ধ করে দিতে পারে কে?’’ (সূরা আ’রাফঃ ৩২)

অর্থাৎ এই পৃথিবীর জাঁকজমক, স্বাদ আস্বাদন ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের জিনিস ভোগ ও ব্যবহার করা আল্লাহর বন্দেগীর পরিপন্থী নয় এবং আল্লাহর ইবাদত করতে হলে এগুলো বর্জন করতে হবে এরূপ মনে করা একেবারেই ভিত্তিহীন। ইসলাম দুনিয়া ত্যাগের এই বৈরাগ্যবাদী মানসিকতাকে আদৌ সমর্থন করে না। উক্ত আয়াতের পরবর্তী অংশে বলা হয়েছেঃ

قُلْ هِيَ لِلَّذِينَ آمَنُوا فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا

“জানিয়ে দাও, এই সব কিছুই এ দুনিয়ার জীবনে ঈমানদার লোকদের ব্যয়-ব্যবহার ও ভোগ-সম্ভোগের জন্যে সৃষ্ট হয়েছে।“(সূরা আ’রাফঃ ৩২)

অর্থাৎ এসব বর্জন করে চলায় ঈমানদারী নেই। ঈমানদারীর দায়িত্ব পালনের জন্যে এই সবকিছু যে উদ্দেশ্যে ও যে কাজে লাগাবার জন্যে সৃষ্ট হয়েছে, সেই উদ্দেশ্যে ও সেই কাজেই ব্যবহার করা আবশ্যক এবং এ ব্যাপারে অন্যান্যের তুলনায় ঈমানদার লোকদের দায়িত্ব সর্বাধিক।

কুরআন ও হাদীসে ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণ ও সৌন্দর্য তথা সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্য লাভের জন্যে একসঙ্গে প্রার্থনা করার শিক্ষা দেয়া হয়েছে। এমনকি, এই প্রার্থনায় বিশেষ একটা কালের ওপর গুরুত্ব আরোপ করতেও নিষেধ করা হয়েছেঃ

فَمِنَ النَّاسِ مَن يَقُولُ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا وَمَا لَهُ فِي الْآخِرَةِ مِنْ خَلَاق- وَمِنْهُم مَّن يَقُولُ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ- أُولَٰئِكَ لَهُمْ نَصِيبٌ مِّمَّا كَسَبُوا ۚ وَاللَّهُ سَرِيعُ الْحِسَابِ

“লোকদের মধ্যে কেউ কেউ বলেঃ হে আমাদের প্রভূ! আমাদেরকে এই দুনিয়ার জীবনেই দাও…..; এদের জন্যে পরকালে কিছুই প্রাপ্য নেই। আবার এ লোকদের মধ্যে অনেকেই দো’আ করে এই বলেঃ ‘হে আমাদের প্রভূ! আমাদেরকে দুনিয়ায়ও কল্যাণ ও সুন্দর দান কর-সুন্দর ও কল্যাণ দান কর পরকালেও’। এ লোকেরাই তাদের উপার্জনের অংশ পাবে। আর আল্লাহ খুব দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।“ (সূরা বাকারাঃ ২০০–২০২)

অর্থাৎ ইসলামের দৃষ্টিতে ইহকাল ও পরকাল অবিভাজ্য। যারা এর একটিমাত্র কালকে চাইবে, তারা শুধু অপরটি থেকেই নয় দুটি থেকেই বঞ্চিত হবে। যারা কেবলমাত্র দুনিয়ার সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য চাইবে, তারা েএখানেও তা পাবে না এমন কথা বলা হয়নি, বলা হয়েছে-‘পরকালে তারা কিছুই পাবে না।’

বস্তুত মানুষের বৈষয়িক ও জাগতিক জীবনের প্রয়োজনাবলী পূরণ করা এবং স্বীয় অস্তিত্ব রক্ষ ও দ্বীন ইসলাম সংরক্ষণের জন্যে যথাসাধ্য উপায়-উপকরণ, অস্ত্রশস্ত্র ও দ্রব্য-সামগ্রী সংগ্রহ করার আবশ্যকতা ইসলাম শুধু স্বীকার করে নি, তার সুস্পষ্ট নির্দেশও দিয়েছে। একটি আয়াতে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় নির্দেশ দেয়া হয়েছেঃ

وَأَعِدُّوا لَهُم مَّا اسْتَطَعْتُم مِّن قُوَّةٍ وَمِن رِّبَاطِ الْخَيْلِ تُرْهِبُونَ بِهِ عَدُوَّ اللَّهِ وَعَدُوَّكُمْ وَآخَرِينَ مِن دُونِهِمْ لَا تَعْلَمُونَهُمُ اللَّهُ يَعْلَمُهُمْ

‘‘আর তোমরা শত্রুদের মুকাবিলা করার জন্যে যতদূর সম্ভব শক্তি-সামর্থ্য ও সজ্জিত ঘোড়া (বাহন) প্রস্তুত করে রাখ। তার দ্বারা তোমরা ভয় দেখাবে আল্লাহর শত্রুদের আর তোমাদের শত্রুদেরও। এদের ছাড়া আরো আরো ভয় দেখাবে সে সব শত্রুকে যাদের কথা তোমরা জাননা, আল্লাহ তাদের জানেন।’’ (সূরা আনফালঃ ৬০)

এ আয়াতের দুটি কথা বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য। প্রথম কথা, এ আয়াতে সাধারণ বস্তুগত শক্তি সংগ্রহের নির্দেশ দেয়া হয়নি; বরং তার এমন একটা মান ও পরিমাণ সংগ্রহের নির্দেশ দেয়া হয়েছে যদ্দারা সাম্প্রতিক শত্রুদের ভীত-সন্ত্রস্ত করে তোলা যায়। এর ফলে তারা ভয় ও ত্রাসে এতটা দিশেহারা হয়ে পড়বে যে, মুসলিম শিবিরের দিকে চোখ তুলে তাকাতেও সাহস পাবে না। আর দ্বিতীয়, বস্তুগত সরঞ্জাম ছাড়াও একটি জিনিস সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে, তা হল ‘কুওয়াৎ’। এ শব্দটি সাধারণ অর্থবোধক। এতে বস্তুগত শক্তি তথা অস্ত্রশস্ত্র ছাড়াও আরো একটি শক্তি বুঝায়, যা নির্বস্তুক এবং ভিন্নতর। এ দ্বারা যেমন নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শক্তি বুঝায়, তেমনি প্রত্যেক যুগের উপযোগী শক্তি-সামর্থ্য ও অস্ত্রশস্ত্রও বুঝায়। সাধারণ সামরিক শক্তির সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক শক্তিও এর অন্তর্ভুক্ত। সাধারণ জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ যু্দ্ধ-কৌশল (Strategy) এবং গণ-সমর্থনও এর মধ্যে গণ্য। মোটকথা, শত্রুদমনে ও যুদ্ধজয়ে আদর্শবাদী জনশক্তির সক্রিয় ও সাগ্রহ সহযোগিতা এবং প্রতিটি ব্যাপারে বাস্তব আনুকূল্যের গুরুত্বও অনস্বীকার্য। বস্তুত এ এক সর্বাত্মক ও সর্বমুখী প্রস্তুতি। এর জন্যে যা কিছু দরকার, তা সবই করার জন্যে ইসলামের রয়েছে এক অনমনীয় ও অবশ্য পালনীয় নির্দেশ।

ইসলাম জীবন জীবিকার সুষ্ঠু সন্ধান ও সংগ্রহকে ওয়াজিব করে দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি। তাকে ‘আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান’ নামে অভিহিত করেছে। কেননা, ইহকালের সঙ্গে সঙ্গে পরকালীন সুখ-সুবিধা বিধান এবং ব্যক্তির সঙ্গে সঙ্গে সমাজ ও সমষ্টির সার্বিক কল্যাণ বিধানের জন্যেই ইসলাম এক সর্বাত্মক ও পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। এ জন্যে জীবনের কোন একটা দিকও তার আওতার বাইরে থাকেনি। কুরআন মজীদের এই সব কিছুরই মৌলিক বিধান বলিষ্ঠ ভাষায় ও ভঙ্গিতে উল্লেখিত রয়েছে। কৃষি কাজ, বাগান রচনা, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-সৌকর্য প্রভৃতি কোন কিছুই তাতে বাদ পড়েনি। রাসূলে করীম (ﷺ)-এর বাণী সম্পদে (হাদীসে) হস্তশিল্প, ব্যবসা ও জীবিকার্জনের বিভিন্ন পন্থা ও উপায়ের নির্দেশ করার সঙ্গে সঙ্গে পরকালীন মূল্যায়নও ভাস্বর হয়ে রয়েছে।

কিন্তু এতৎসত্ত্বেও অর্থোৎপাদনের সব উপায় ও পন্থা এবং রাষ্ট্র ও দেশ শাসনের সমস্ত পদ্ধতিসহ দুনিয়ার জীবন ইসলামের দৃষ্টিতে পরকালের শাশ্বত ও চিরন্তন জীবনের তুলনায় এক অস্থায়ী ও ক্ষয়িষ্ণু মাধ্যম ছাড়া আর কিছুই নয়। এ দুনিয়ার জীবন একটা পথ মাত্র, চূড়ান্ত মন্‌যিল নয়। দুনিয়া এবং দুনিয়ার সব কিছুই উপায়-উপকরণ মাত্র-লক্ষ্যস্থল নয়। আসল ও চিরন্তন লক্ষ্যস্থল হল পরকাল। মানুষের প্রকৃতির সাথে এর ধারণার পূর্ণ সঙ্গতি বিদ্যমান।

দুনিয়ায় শুধু ধন-সম্পদের প্রাচুর্যই ইসলামের কাম্য নয়, বৈষয়িক উন্নতিও উন্নতির আসল মানদণ্ড নয়। ইসলামের চূড়ান্ত লক্ষ্য পরকালীন কল্যাণ-সেই কল্যাণের দৃষ্টিতেই এই সব কিছুর মূল্যায়ন অবশ্যম্ভাবী।

‘‘তোমরা তো কেবল বৈষয়িক জীবনকেই অধিক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে কর। অথচ পরকালীন জীবনটাই আসল কল্যাণের প্রকৃত ক্ষেত্র এবং সেটাই চিরস্থায়ী।’’

تُرِيدُونَ عَرَضَ الدُّنْيَا وَاللَّهُ يُرِيدُ الْآخِرَةَ ۗ وَاللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ

‘‘তোমরা তো দুনিয়ার অস্থায়ী ও ক্ষয়িষ্ণু দ্রব্যাদি লাভ করতে চাও; কিন্তু আল্লাহ (তোমাদের জন্যে) চান পরকাল। আর আল্লাহ্ সর্বজয়ী ও সুবিজ্ঞানী।’’ (সূরা আনফালঃ ৬৭)

أَرَضِيتُم بِالْحَيَاةِ الدُّنْيَا مِنَ الْآخِرَةِ ۚ فَمَا مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فِي الْآخِرَةِ إِلَّا قَلِيلٌ

‘‘তোমরা পরকাল বাদ দিয়ে কেবল দুনিয়ার জীবন পেয়েই খুশীতে বাগ বাগ হয়ে গেলে? ……. কিন্তু আসলে পরকালের তুলনায় দুনিয়ার জীবনের সমস্ত সামগ্রী নিতান্তই স্বল্প-অপর্যাপ্ত। (এ কথা তোমরা ভুলে যেতে পার কেমন করে?)।’’ (সূরা তওবাঃ ৩৮)

এই প্রেক্ষিতে পরকালকে উপেক্ষা করে কেবল বৈষয়িক জীবনের উন্নতি-উৎকর্ষ ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য অর্জনের জ্ঞানলাভ কখনো যথার্থ ও কল্যাণকর শিক্ষা-নীতি হতে পারে না। মানুষের জন্যে একমাত্র কল্যাণবহ শিক্ষা নীতি তা-ই যা ইহকাল ও পরকাল উভয়ের সার্বিক কল্যাণ-দৃষ্টিতে রচিত। কেননা, ইহকাল-পরকাল সমন্বয়ে মানুষ এক অখণ্ড জীবন-সত্তা। এর এক অংশ উপেক্ষিত হলে অপর অংশ উপেক্ষার আঘাতে পঙ্গু হয়ে যায় অবশ্যম্ভাবীরূপে। দুনিয়ার কোন শিক্ষা দর্শনই মানুষের এই দু পর্যায় সমন্বিত জীবন-সত্তা সম্পর্কে কোন ধারণা লাভ করতে পারেনি। তাই পারেনি এমন শিক্ষা-দর্শন রচনা করতে, যা এই অখণ্ড জীবন সত্তার সার্বিক কল্যাণের বাস্তব দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করতে সমর্থ। ইসলাম-কেবলমাত্র ইসলামই এই ধরণের শিক্ষাদর্শন তথা শিক্ষানীতির উদ্ভাবক।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন