hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিক্ষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

৭৫
ইসলামী শিক্ষা–দর্শনের বিশেষত্ব
ইসলামী শিক্ষা-দর্শনের দুটি বিশেষত্ব লক্ষ্যণীয় একটি তার সবর্জনীনতা (Universality) আর দ্বিতীয়টি তার নিরন্তর-নিরবচ্ছিন্ন সত্যানুসন্ধান প্রবণতা (Continuous search for Truth)।

সবর্জনীনতা বা সর্বাত্মকতার অর্থ- নারী-পুরুষ, শহরবাসী-গ্রামবাসী সকলেরই জন্যে শিক্ষা অবাধ ও নিরপেক্ষ ব্যবস্থা ও সুযোগ-সুবিধা বিধান, সকলকেই শিক্ষা-দীক্ষায় ভূষিত করে তার নিজের এবং গোটা সমাজ ও জাতির জন্যে কল্যাণকরর করে গড়ে তোলা। এ ব্যাপারে কোন রূপ শ্রেণী-বর্ণ-গোত্রের পার্থক্য বিন্দুমাত্র প্রতিবন্ধক হতে পারেনা।

ইসলামের দৃষ্টিতে শিক্ষাকে জীবনের সকল দিক ও বিভাগ সংক্রান্ত হতে হবে। এক্ষেত্রে দ্বীন ও দুনিয়া বা অন্য কোন দিক দিয়েও কোন ব্যবধান গ্রাহ্য হবেনা। জীবন ও জগতের সমগ্র দিককেই শিক্ষার আওতার মধ্যে আনতে হবে। তাকে বৈষয়িক ও নৈতিক জীবনের সর্বপ্রকার সমস্যার সমাধান সংক্রান্ত হতে হবে; সকল প্রশ্নের জবাব দেয়ার যোগ্যতাসম্বলিত হতে হবে। তাতে জীবনকে এক অবিভাজ্য একক (Unit) রূপে গ্রহণ করতে হবে। অবশ্য তাতে জাগতিক বিষয়াদির ওপর আধ্যাত্মিক দিককে-বস্তুগত দৃষ্টিকোণের ওপর নৈতিক দৃষ্টিকোণকে বিজয়ী ও প্রভাবশালী হতে হবে। কেননা ইসলামের ঘোষণা হচ্ছেঃ

‘‘ইহজীবন পরকালীন জীবনের জন্যে কর্মক্ষেত্র স্বরূপ।’’

এই ঘোষণার তাৎপর্য হল, শিক্ষাপ্রাপ্ত লোকদের পক্ষেই পরকালীন কল্যাণ ও সাফল্যকে লক্ষ্য হিসেবে রেখে সমস্ত বৈষয়িক ব্যাপারে পুরোমাত্রায় অংশ গ্রহণ সম্ভবপর, যেন এক্ষেত্রে কোনরূপ কূপমণ্ডুকতা, অবিমৃষ্যকারিতা এবং অবসাদ ও অসতর্কতা স্থান পেতে না পারে। ইসলামের দৃষ্টিতে সত্যানুসন্ধান ও তত্ত্বানুসন্ধানে গভীর চিন্তা-ভাবনা-গবেষণা ও সূক্ষ্ণ বিচার-বিশ্লেষণ প্রয়োগের প্রবল তাগিদ থাকতে হবে। উপরন্তু এখানে কোন একটা স্তর বা পর্যায়কে চূড়ান্ত মনে করা যাবে না। ইসলামের মৌলিক দর্শন হচ্ছে এই সমগ্র বিশ্বলোক এক মহান স্রষ্টার এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। এই বিস্ময়কর সৃষ্টির অন্তর্নিহিত মহাসত্য ও রূপ-সৌন্দর্য এখনো সম্যকভাবে লোকসমক্ষে উদ্ঘাটিত হয়ে ওঠেনি। বিশ্ব-প্রকৃতিতে নিহিত কল্যাণময় দ্রব্য-শক্তি-সম্ভার এখনো মানুষের কল্যাণে পূর্ণ মাত্রায় ব্যবহার ও প্রয়োগ করা সম্ভব হয়নি। সেই প্রচ্ছন্ন সত্য ও সৌন্দর্য এবং সেই অব্যবহৃত দ্রব্য ও শক্তি-সম্ভারকে উদ্ঘাটিত ও আবিষ্কৃত করে মানবতার কল্যাণে ব্যবহার ও প্রয়োগ করার যোগ্যতা সৃষ্টিকারী জ্ঞান-গবেষণায় নিয়োজিত করার মাধ্যমে মানুষকে ইহকালে সুখময় জীবন যাপনের সুযোগ করে দিতে হবে।

বস্তুত দুনিয়ার সবগুলো সমেুদ্রের পানি যদি মসি হয় আর সমস্ত বৃক্ষ যদি হয় কলম, তা হলেও বিশ্বলোকে বিরাজিত নিয়ম-কানুন ও শক্তি-সামগ্রীর বর্ণনা লিখে শেষ করা যাবে না। তাই তত্ত্ব-অনুসন্ধান ও চিন্তা-গবেষণার যোগ্যতা সৃষ্টিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ পদ্ধতি চালু করা ইসলামী শিক্ষার বিশেষ গুরুত্ববহ।

পাশ্চাত্য জ্ঞান-বিজ্ঞান আল্লাহ-অবিশ্বাস ও বস্তুবাদী ভাবধারার ওপর বিকাশ লাভ করেছে। বস্তুগত সভ্যতা ও সংস্কৃতিই এর প্রাণ। বৈষয়িক সুখ-সুবিধা ও স্বাদ আস্বাদনই এক একমাত্র লক্ষ্য এবং তাকেই মনে করা হয় একমাত্র চরম সাফল্য। তাতে আধ্যাত্মিকতা ও দ্বীনী মূল্যমান (Values) হচ্ছে নিছক ব্যক্তিগত ব্যাপার। সমাজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে তার কোন সম্পর্কই নেই। মুসলিম সমাজ নির্বিচারে এই শিক্ষা গ্রহণ করে তার দ্বীনী ভাবধারা হারিয়ে ফেলেছে। ফলে গোটা সমাজ বর্তমানে এক দুঃখজনক অবস্থার সম্মুখীন; তার জাতিসত্তা আজ সুসংবদ্ধতা, নৈতিক বিশেষত্ব ও উন্নত আদর্শবাদিতা থেকে বঞ্চিত হয়ে বিপর্যয়ের চরম সীমায় উপস্থিত। প্রকৃত উন্নতি ও উৎকর্ষ লাভের সব পথ তার জন্যে সম্পূর্ণ বন্ধ।

বলা বাহুল্য, আধুনিক পাশ্চাত্য জ্ঞান-বিজ্ঞান সম্পূর্ণ কি অসম্পূর্ণ- একথা বলা হচ্ছেনা। আমার বক্তব্য হল, বর্তমানে জীবন ও সমাজ পূর্বের তুলনায় অনেক বিস্তীর্ণ- সম্প্রসারিত আর এই জীবন সম্পূর্ণরূপে গ্রাস করে নিয়েছে পাশ্চাত্যের খোদাদ্রোহীমূলক দর্শন ও জীবন-বিধান। জীবনকে এ রাহু-গ্রাস থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত করে আল্লাহর বিশ্বাস ও আল্লাহ-প্রদত্ত জীবন বিধানের ভিত্তিতে পুনর্গঠন করা ইসলামী শিক্ষাদর্শনের লক্ষ্য। এই লক্ষ্য বাস্তবায়িত হলেই মুসলিম ব্যক্তি ও সমষ্টির জীবনকে প্রকৃত কল্যাণে ধন্য করা সম্ভব হবে। তারা বর্তমান পশ্চাদপদতার পরিবর্তে অত্যাধুনিক ও প্রাগ্রসর জাতিগুলোকেও অতিক্রম করে সম্মুখে অগ্রসর হতে পারবে- লাভ করতে পারবে প্রকৃত উন্নতি ও স্থায়ী অগ্রগতি। কেননা ইসলামী শিক্ষা-সূচীর কেন্দ্রীয় লক্ষ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীর মন ও মানসিকতার পরিশুদ্ধি, নির্মলতা ও স্বচ্ছতা বিধান এবং সর্বপ্রকার ত্রুটি-বিচ্যুতি, দুর্বলতা ও অক্ষমতা মুক্তকরণ, অব্যাহত ও নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টা-সাধনার ফলে কল্যান-প্রস্রবনের উৎস-মুখ উন্মোচন এবং সমগ্র মানুষকে সে কল্যাণের অংশীদার বানানো।

এ লক্ষ্যে গোটা শিক্ষা ব্যবস্থা, শিক্ষা পদ্ধতি, পাঠক্রম ও বিষয়-সূচী সম্পূর্ণ নতুনভাবে ঢেলে বিন্যাস করতে হবে। এ শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে যারাই তৈরী হবে, তারাই ভবিষ্যত মানব সমাজের নেতৃত্বের আসনে সমাসীন হবে এবং দ্রুত অগ্রসরমান মানব-বংশের যথার্থ নেতৃত্ব দান কেবল তাদের পক্ষেই সম্ভব হবে।

অতএব ইসলামী শিক্ষা দর্শনের মূল লক্ষ্য হল, আধুনিক কালের উপযোগী যাবতীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ ও পুরোপুরি ইসলামী আদশৃবাদী ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র তৈরী করা এবং সভ্যতা ও সংস্কৃতিকে নতুনভাবে গড়ে তোলঅ। অন্যকথায় বলা যায়, ইসলামী শিক্ষাদর্শনের দৃষ্টিতে শিক্ষার চরম লক্ষ্য হল ব্যক্তি ও সমষ্টির মধ্যে আল্লাহর প্রেম-ভালোবাসা এবং আল্লাহ্নুগত্যের প্রবল ভাবধারা জাগ্রত করে তোলা। এ পর্যায়ে বার্ট্রান্ড রাসেলের কথাটি যথার্থ। তিনি বলেছেনঃ ‘ইসলাম শুরু থেকেই এক রাজনৈতিক ধর্মমত’। আমরা বলবঃ ইসলাম এক পূর্ণাঙ্গ দ্বীন। জীবনের সমগ্র দিক ও বিভাগের ওপর তার প্রভাব ও প্রতিপত্তি বর্তমান থাকা অপরিহার্য। ব্যক্তিগতভাবে মুসলমানরা হবে উন্নত গুণসম্পন্ন মানুষ, আদর্শনিষ্ঠ, আদর্শবাদী ও আদর্শানুসারী মানুষ, জনদরদী ও সার্বিক কল্যাণকামী মানুষ এবং ইসলামী সমাজ ও রাষ্ট্রের উপযুক্ত নাগরিক- পরকালে যারা হবে মহান আল্লাহর চূড়ান্ত বিচারে সর্বতোভাবে উত্তীর্ণ, আল্লাহর সর্বাধিক সন্তুষ্টিতে ধন্য।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন