hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিক্ষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

১৪
শিক্ষার মাধ্যম সমস্যা
শিক্ষার ব্যাপারে দ্বিতীয় যে বিষয়টিকে অতি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হিসেবে গণ্য করতে হবে তা হল শিক্ষার মাধ্যম (Medium of Instruction) সমস্যা। শিক্ষা পর্যায়ে দুটো প্রশ্ন মৌলিক এবং সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। একটি হল, কি শেখান হবে? আর দ্বিতীয়টি হল, কোন্ ভাষায় শেখান হবে? কি শেখানো হবে। এ পর্যায়ে আমরা এ দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে যা বলতে চেয়েছি, তা হলঃ শেখান হবে স্বাধীন দেশের সেই সব জ্ঞান-বিজ্ঞান, যা উন্নত, সুসভ্য ও আধুনিক মানুষ হিসেবে বসবাস করার জন্যে একান্ত জরুরী; কিন্তু তা সবই শেখান হবে ইসলামী জীবন-দর্শন ও জীবন-ব্যবস্থার ভিত্তিতে। আর দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাবে আমার বক্তব্য হলঃ জনগণকে এ জ্ঞান শেখাতে হবে জনগণেরই নিজস্ব ভাষায়- আমরা যাকে বলি মাতৃভাষা। মানুষ যে ভাষায় কথা বলে, যে ভাষায় চিন্তা করে- করে মত-বিনিময় ও চিন্তার আদান-প্রদান, তাকেই হতে হবে তার শিক্ষার মাধ্যম; তাকে জ্ঞান ও বিজ্ঞান শেখাতে হবে সেই ভাষায়। অন্যথায় তা আর যা-ই হোক প্রকৃত শিক্ষা হবে না। তা এমন শিক্ষা কিছুতেই হতে পারেনা, যা শিক্ষার্থীদের অন্তর্নিহিত প্রতিভা ও চিন্তাশক্তিকে বিকশিত করবে, যা তাদের মাঝে আত্মসচেতন ব্যক্তিত্বের সৃস্টি করবে। আর শিক্ষা যদি তা-ই করতে না পারল তাহলে তা গলায় উচ্চতর ডিগ্রীর তকমা ঝোলাতে পারে বটে; কিন্তু ‘শিক্ষিত মানুষ’ গড়তে পারে না। দুনিয়ায় এমন কোন সভ্য দেশের কথা আমার জানা নেই, যেখানে জাতির সন্তান-সন্ততিকে তার মাতৃভাষায় শিক্ষা দেয়া হয়না; শিক্ষা দেয়া হয় বিদেশী- বিজাতীয় ভাষায়। বর্তমানে দুনিয়ায় যত উন্নত জাতি রয়েছে, তাদের সবক’টি সম্পর্কেই একথা বলা যায় যে, তাদের উন্নতির মূলে রয়েছে জাতীয় আদর্শমূলক শিক্ষা এবং মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষা। মাতৃভাষা ছাড়া অন্য ভাষায় শিক্ষা দেয়ার রেওয়াজ কেবল সে জাতির মধ্যেই হতে পারে- হয়ে থাকে, যে জাতি অপর কোন জাতির গোলাম। যেমন, বৃটিশ ভারতের প্রভু-জাতি তাদের নিজস্ব ভাষায়ই শিক্ষা দিয়েছে এ গোলাম দেশের শিক্ষার্থীদেরকে, বাধ্য করেছে ইংরেজীর মাধ্যমে শিক্ষালাভ করতে। কিন্তু প্রশ্ন হল, আজো কি ইংরেজ এ দেশের প্রভূ?… তা অবশ্য নয়। কিন্তু তা না হলে কি হবে, ইংরেজের গোলামদের কুক্ষিগত হয়ে আছে এদেশের শাসন ব্যবস্থা ও শিক্ষার নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা। ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটার সুদীর্ঘ কাল পরও এ জাতির মাথার ওপর সওয়ার হয়ে আছে ইংরেজের প্রেতাত্মা। তাই এ জাতি যতোই কামনা করুক না কেন মাতৃভাষার মাধ্যমে লেখাপড়া করতে, ইংরেজের এ গোলামরা এবং তাদের প্রেতাত্মারা ইংরেজী ভাষার গোলামী ছাড়তে রাজী নয় একবিন্দুও। মনে হচ্ছে, ইংরেজের এ প্রেতাত্মারা যদ্দিন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকবে, ততদিন এ দেশবাসীর বুকের ওপর থেকে সরে যাবে না বিজাতীয় শিক্ষা-দর্শন ও শিক্ষার বৈদেশিক মাধ্যমের এ জগদ্দল পাথর। [বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের ব্যাপারে অনেক গালভরা বুলি কপচানো হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণে কোন সরকারই আন্তরিকতার সাথে এগিয়ে আসেনি। তার ফলে স্বাধীনতার দুই যুগ পরেও বিষয়টি এখন পর্যন্ত অমীমাংসিতই রয়েছে। শুধু তাই নয়, জীবনের সর্বক্ষেত্রে ইংরেজী ভাষার প্রচারকে অব্যাহত রাখারই প্রয়াস চলছে সর্বপ্রযত্নে।– সম্পাদক]

দুর্ভাগ্য কেবল এখানেই নয়, দুর্ভাগ্য এখানেও যে, এ দেশের মাদ্রাসাগুলোতে- বিশেষত দেওবন্দ ধারার মাদ্রাসাগুলোতে প্রায় প্রাথমিক স্তর থেকে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত শিক্ষার মাধ্যম হল উর্দু। [ইদানীং এ অবস্থায় কিছু কিছু পরিবর্তন ঘটছে এবং বাংলাকে মাধ্যম রূপে গ্রহণ করার একটা নীরব প্রয়াস চলছে।– সম্পাদক] অথচ উর্দু এখানকার লোকদের মাতৃভাষা নয়। তার ফলে আরবী কিতাবকে উর্দুতে তরজমা করে শিক্ষা দেয়া হয় এ মাদ্রাসাগুলোতে। এভাবে প্রতি বছর এসব মাদ্রাসা থেকে শত শত লোক সর্বোচ্চ ডিগ্রী অর্জন করে বের হয়েও আসে; কিন্তু সত্যি কথা এই যে, প্রকৃত জ্ঞান এবং শিক্ষা নিয়ে খুব কম লোকই বের হতে পারছে; খুব কম লোকের জ্ঞানই এ দেশবাসীর কোন কাজে লাগছে। ফলে এক-একজন হয়তো ‘বিদ্যার জাহাজ’ হয়ে আছেন, কিন্তু সে জাহাজ মাল খালাস করার বন্দর খুঁজে পাচ্ছে না কোথাও; সে মাল বিলি-বন্টন করার স্থানীয় মাধ্যমও নেই কারোর হাতে। এভাবে ব্যর্থতায় গুমরে মরছে এ জাতির সব শিক্ষা- কুরআন-হাদীসের ইলমা। গুদামের মাল গুদামেই পচে যাচ্ছে।

ইংরেজের এ দেশী গোলামদের মুখে প্রায়শ শোনা যায়, ইংরেজীকে মাধ্যম না বানালে জ্ঞান অর্জন বা শিক্ষাদানের কাজই সমাধা হতে পারেনা। তারা বোধ হয় মনে করে, দুনিয়ার সব উন্নত দেশেই বুঝি শিক্ষার মাধ্যম রূপে ইংরেজীকেই চালু করা হয়েছে; ইংরেজী ছাড়া অন্য কোন ভাষার মাধ্যমে বুঝি আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান কিছুই শেখা বা শেখানো যায়না। কিন্তু এটা যে চরম নির্বুদ্ধিতা ও নিকৃষ্ট গোলামী মনোবৃত্তির লজ্জাকর অভিব্যক্তি তাতে কোন সন্দেহ থাকতে পারেনা। রাশিয়া, চীন, জাপান প্রভৃতি দেশে কি ইংরেজীর মাধ্যমেই লেখাপড়া ও বিজ্ঞান চর্চা করা হচ্ছে? না এসব দেশ আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানে ইংরেজের চেয়ে কোন অংশেই পিছনে রয়েছে? বস্তুত চীন ও জাপান যে কেবল মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষা দানের ফলেই খুব অল্প সময়ের মধ্যে বৈজ্ঞানিক ও বৈষয়িক দিক দিয়ে দুনিয়ার সর্বোন্নত জাতিগুলোর পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, তা কি ইংরেজের এ দেশীয় গোলামদের জানা নেই? …. এ পর্যায়ে চূড়ান্ত কথা এই যে, আমাদের দেশের সমগ্র শিক্ষাই যদ্দিন মাতৃভাষার মাধ্যমে দেবার ব্যবস্থা চালু না হবে, তদ্দিন এদেশের কোন প্রকৃত উন্নতির ধারণাই করা যায়না। যদি কিছু হয়ও তবে তা হবে কৃত্রিম- তা হবে ভাসাভাসা ও ভিত্তিহীন। আর ভাসাভাসা ও ভিত্তিহীন উন্নতি কোন জাতিকেই যথার্থভাবে উন্নত করতে পারেনা। কাজেই শিক্ষার মাধ্যম হল এমন একটি সমস্যা, যার আশু সমাধান হওয়া একান্তই প্রয়োজন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন