hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিক্ষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

২৯
মুসলমানদের দায়িত্ব
মানুষের প্রাথমিক জ্ঞান-উৎস পঞ্চেন্দ্রিয়। মানুষের মধ্যে আল্লাহর সৃষ্ট মনই এই ইন্দ্রিয়নিচয়ের মাধ্যমে লব্ধ জ্ঞানসমূহকে পরস্পর সুসজ্জিত ও সুবিন্যস্ত করে, তারপর এই জ্ঞানসম্পদের ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করে এবং সেসবের সীমা নির্ধারণ ও পরিচিতি প্রকাশ করে, অতঃপর সেগুলোকে বিভিন্ন পর্যায়ে সাজিয়ে রাখে। তারপর এগুলোর কারণ ‘সন্ধান’ করে। অতঃপর এসবের কার্যকরতার সাদৃশ্য অনুসন্ধান করে। শেষ পর্যায়ে যে জ্ঞান মানুষের সামনে প্রতিভাত হয়, তা-ই হচ্ছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞানের এই পদ্ধতি হল জ্ঞান-বিজ্ঞান; কিন্তু এই জ্ঞান-মাধ্যমও সর্বোতভাবে নির্ভুল হয়না-নির্ভুল হয়না এর মাধ্যমে পাওয়া বিজ্ঞান-তত্ত্ব। কেবল মহান আল্লাহর দেয়া জ্ঞানই হতে পারে এই জ্ঞান ও বিজ্ঞানের ভুল-নির্ভুল পরখের মানদণ্ড। দুঃখের বিষয় সেই মানদণ্ড থেকে আজকের মানুষ বঞ্চিত। দুনিয়ার মুসলমানদের নিকট এই মানদণ্ড যথাযথভাবে বর্তমান থাকা সত্ত্বেও তারা এটিকে উপেক্ষা করে অকেজো করে রেখেছে। নিজেদের নিকট সংরক্ষিত এই মহামূল্য সম্পদকে তারা এক কানা কড়িও মূল্য দেয় না। ফলে তারাও মূল্য-জ্ঞান (Sense of values) হারিয়ে ফেলেছে। এই মূল্য-জ্ঞান পুনঃপ্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত মুসলিম সমাজও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে কোন উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে সক্ষম হবেনা। তাই আজকের মুসলমানদের নিকট এই প্রশ্ন নয় যে, তাদের শিক্ষায় ধর্মের কোন ভূমিকা আছে কিনা বা থাকবে কিনা। তাদের নিকট আজ একটি মাত্র কথা, তাদের ধর্মের ভিত্তিতে তাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে পুনর্গঠিত না করা হলে এই দুনিয়ায় তাদের টিকে থাকাই সম্পূর্ণ অসম্ভব হবে। যে মূল্যবোধের অবক্ষয় ও শূণ্যতা দেখে দুনিয়ার মানুষ, বিশেষত চিন্তাশীল মুসলমানরা হাহাকার করে উঠছে, তার পুনরুদ্ধার ও পুনঃপ্রতিষ্ঠা কেবলমাত্র দ্বীন-ভিত্তিক শিক্ষার মাধ্যমেই সম্ভব। এই শিক্ষা হতে হবে একেবারে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শিক্ষার সর্বোচ্চ ও সর্বশেষ পর্যায় অবধি। কেননা ছোট বয়স থেকেই দ্বীন-ভিত্তিক শিক্ষা না দিলে বড় হয়ে দ্বীন-ভিত্তিক শিক্ষার কোন গুরুত্বই শিক্ষার্থীর অনুধাবন করবে না। বস্তুত আমরা যদি চাই আমাদের পরবর্তী বংশধররাও দ্বীনদার হোক, দ্বীনী যিন্দেগী যাপনকারী মুসলিম রূপে গড়ে ওঠা অব্যাহত থাকুক, তাহলে এ ছাড়া কোন উপায় হতে পারেনা।

অতএব মুসলমানদের দায়িত্ব হচ্ছে দ্বীন-ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন করে বিশেষভাবে নিজেদের জনগণকে এবং সাধারণভাবে দুনিয়ার মানুষকে আসন্ন ধ্বংস থেকে রক্ষা করা।

সাধারণভাবে বিজ্ঞান ও নৈতিকতাকে দুটি ভিন্ন ভিন্ন ও পরস্পর-বিরোধী জিনিস মনে করা হয়। বলা হয়, নৈতিকতা মানুষের আচার-আচরণকে উন্নত করতে পারে বটে; কিন্তু এ্যাটম (আণবিক) বোমা ও হাইড্রোজেন বোমা বানাতে পারেনা। বর্তমান এ্যাটমিক (আণবিক) যুগে এ্যাটম বোমার প্রয়োজন, নৈতিকতার নয়। যুদ্ধক্ষেত্রে বোমা বর্ষণকারী বিমানের প্রয়োজন। নৈতিকতা তার প্রতিরোধ করতে পারেনা।

কিন্তু এ ধারণা ভিত্তিহীন। এ্যাটম যদি শক্তি হয়, তা হলে নৈতিকতাও একটি শক্তি। তবে এর মধ্যে কোন্‌টি অধিক প্রভাবশালী, তা নির্ভর করে একথার ওপর যে, এ দুটির মাঝে কোনটি স্থায়ী মূল্যমানের অধিকারী আর কোন্‌টি ক্ষয়িষ্ণু, ক্ষণস্থায়ী ও পরিবেশসৃষ্ট। আণবিক বোমার কথা শুনলেই ভয়ের সঞ্চার হয়; কিন্তু নৈতিকতার শক্তিকে অনুভব ও পরিমাপ করা হয়না। আসলে নৈতিকতাই এ্যাটম বোমা নির্মাণকারী ও বিস্ফোরণকারীদেরকে বদলে দিতে পারে। যে হিংস্র মনোভাব হাইড্রোজেন বোমা তৈরী করে, নৈতিকতা সেই মনোভাবকেই নিয়ন্ত্রিত করে। মানুষের মনোভাব বদলে দাও- এ্যাটম বোমা ও হাইড্রোজেন বোমার কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে, অন্তত তা মানব-বিধ্বংসী কর্মে ব্যবহত হবে না। বস্তুত নাস্তিকতা ও অনৈতিকতাই বিজ্ঞানের এই উন্নতি সাধন করে দেয়নি, এ্যাটমিক বোমাও বানিয়ে দেয়নি, বিজ্ঞানের এই উন্নতি ও অগ্রগতি মূলত জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার স্বাভাবিক গতিরই পরিণতি। তবে বিজ্ঞানকে মানব বিধ্বংসী কাজে ব্যবহার একান্তই ধর্মহীন ও নৈতিকতাহীন বিজ্ঞান চর্চার অনিবার্য পরিণতি।

নৈতিকতা এ্যাটম বোমা বানাতে পারে কিনা, প্রশ্ন তা নয়। আসল প্রশ্ন হচ্ছে, নৈতিক শিক্ষা এ্যাটম বোমা নির্মাণকারীদের আল্লাহ্‌নুগত বানাতে পারে কিনা? নৈতিক শিক্ষা পরিত্যক্ত হওয়ার কারণেই মানব-বিধ্বংসী অস্ত্রশস্ত্র নির্মাণ সম্ভব হয়েছে, এতে কি কোন সন্দেহ আছে? [নৈতিক শিক্ষা ছাড়া এ্যাটম বোমা তৈরী করা কিংবা আণবিক শক্তির অধিকারী হওয়ার পরিণাম কত ভয়াবহ, ১৯৪৫ সনে জাপানের নাগাসাকি ও হিরোশিমায় মার্কিনীদের আণবিক ধ্বংসলীলাই তার অকাট্য প্রমাণ।– সম্পাদক] এ্যাটম বোমা আদৌ নির্মাণ করা হবে কিনা সে প্রশ্ন না তুলে আমি বলব, এ্যাটমও বিশপ্রকৃতি নিহিত একটি শক্তি। তা মানুষের কল্যাণ ও জীবন-মান উন্নয়নে ব্যবহার করা হবে না কেন? যদি তা করতে হয়, তাহলে নৈতিক চেতনা-উদ্বোধক শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে। বস্তুগত ও প্রকৃতি-নিহিত শক্তিসমূহকে বানাতে হবে আল্লাহর বান্দাহ ও অনুগত। শরী’আতের কানুন (Ethical law) হচ্ছে আল্লাহর কথা আর প্রাকৃতিক বিধান (Natural law) আল্লাহর কাজ। আমরা মুসলমানরা যদি আল্লাহর কথাকে গ্রহণ করে থাকি, তাহলে আল্লাহর ‘কাজ’টাকে গ্রহণ করতে আমরা কুণ্ঠিত হবো কেন? যারা আল্লাহর কথাকে বুঝেছে, তাদেরই তো উচিত আল্লাহর কাজকেও অনুধাবন করা আর তা কার্যত সম্ভবপর হতে পারে দ্বীন-ভিত্তিক শিক্ষার মাধ্যমে। তারই ফলে সম্ভব হবে আল্লাহর দেয়া যাবতীয় শক্তি ও সম্পদকে সার্বিকভাবে মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করা। কাজেই আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এমন হতে হবে, যার ফলে তৈরী হবে দ্বীন-বিশ্বাসী দার্শনিক, বিজ্ঞানী, ইঞ্জনিয়ার, ডাক্তার চিকিৎসাবিদ, রাষ্ট্রনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, শিল্পোক্তা, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, কবি, লেখক তথা জাতীয় জীবনের সর্বদিকে প্রয়োজনীয় ও আদর্শস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ। দ্বীন-ভিত্তিক ব্যাপক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করে অবিলম্বে এ ধরনের লোক তৈরীর কাজ শুরু না করা হলে আমার খুবই আশংকা হচ্ছে, সেদিন দূরে নয়, যখন আধুনিক মানুষ ইসলামকে সম্পূর্ণ পরিহার করে ধ্বংসের পথে দ্রুত এগিয়ে যাবে।

এ একটি কঠিন ও দূরূহ কাজ, সন্দেহ নেই। কিন্তু সঠিক পন্থায় গভীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে এই কাজে অগ্রসর হলে এবং সব কটি ইসলামী দেশে ঐক্যবদ্ধভাবে এর প্রবর্তন করা হলে ব্যর্থতার কোন আশংকা আছে বলে আমি মনে করিনা।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন