hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিক্ষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

২৬
ধর্মের প্রকৃত রূপ
বস্তুত শিক্ষার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে সেই ধর্ম যা মানব-মনের উপরোদ্ধৃত প্রশ্নত্রয়ের সুস্পষ্ট ও অকাট্য জবাব দিতে এবং সেই জবাবের মৌলিক ভিত্তির ওপর একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান রচনা করতে সক্ষম; সেই সঙ্গে বাস্তবভাবে গড়ে তুলতে পারে মানুষের পূর্ণাঙ্গ জীবন- জীবনের সবদিক ও বিভাগ আর ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত জীবনের প্রতিটি সমস্যারই সুষ্ঠু সমাধান দিতে পারে উক্ত জবাবের ভিত্তিতে। সর্বোপরি সেই একই জবাবের বলিষ্ঠ ভাবধারা জীবনের সর্বদিকে সংক্রমিত করতে পারে। আধুনিক পাশ্চাত্য চিন্তা ও দর্শন এই সামগ্রিকতা হারিয়ে ফেলেছে। সেখানে প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে মারাত্মক ধরণের একদেশদর্শিতা। এরই ফলে উদ্ভব হয়েছে অসংখ্য বিশেষজ্ঞের (Specialist); এক-একজন বিশেষজ্ঞ এক-একটি বিষয়ের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করে তারই ভিত্তিতে গোটা জীবন-প্রাসাদ রচনা করতে চেয়েছে। ফলে জীবনে দেখা দিয়েছে চরম ভারসাম্যহীনতা। এসব বিশেষজ্ঞ মানব-জীবনের এক একটি দিকই শুধু দেখেছে; জীবনের অন্যান্য সব দিক রয়ে গেছে তাদের চোখের আড়ালে। এক-একজন বিশেষজ্ঞ কেবল নিজের বিষয়টিকেই আবশ্যকীয় জ্ঞান ও শিক্ষণীয় বিষয় বলে অভিহিত করেছে এবং সেই একটি দিক দিয়েই সমগ্র জীবনের যাবতীয় সমস্যার সমাধান করা সম্ভব বলে দাবি করেছে। ফলে জীবনের সব কিছুই হয়ে গেছে আপেক্ষিক। এক্ষণে রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি, নৈতিকতা, ধর্ম-বিশ্বাস, শিক্ষা-প্রশিক্ষণ ইত্যাদি সবকিছুই আপেক্ষিক। এ আপেক্ষিক তত্ত্ব-ভিত্তিক সমাজ দর্শন মানুষের জীবনে কোন কল্যাণই আনতে পারেনি; বরং তা জীবনের ভারসাম্যই চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিয়েছে। অথচ মানবজীবনে যে মতাদর্শ বিজয়ী ও প্রতিষ্ঠিত হতে পারে তা হচ্ছে এমন একটি পূর্ণাঙ্গ ও ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ-দর্শন, যাতে বিশ্ব-দর্শন থেকে শুরু করে মানব-প্রকৃতি, নৈতিকতা, সমাজ-জীবন, রাজনীতি, অর্থনীতি, মন-মানস সব কিছু সম্পর্কেই সুস্পষ্ট ধারণা থাকবে। মানুষের জীবনকে একটা অবিভক্ত ও অবিভাজ্য একক হিসেবে গ্রহণ করা ও বিবেচনা করা হবে। বিংশ শতকে সমাজতন্ত্র বা কমিউনিজম সাধারণ জনমনে স্থান পেয়েছিল শুধু এই কারণে যে, সে নিজেকে একটি পূর্ণাঙ্গ সমাজদর্শন ও জীবনব্যবস্থা হিসেবেই পেশ করেছে। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তার আবেদন দূর্বল ও আবেগহীন হয়ে পড়েছে শুধু এই কারণে যে, এই সময়ের মধ্যে তার অন্তর্নিহিত, জিঘাংসা সাধারণ্যে ব্যক্ত হয়ে পড়েছে এবং প্রমাণিত হয়েছে যে, তা ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ-দর্শন নয় আদপেই। কেননা তা মানব-মনের প্রকৃতিনিহিত প্রশ্নত্রয়ের জবাবটি নিতান্ত এলামেল করে নেতিবাচকভাবে দিয়েছে। মানব-প্রকৃতি সে জবাবে কিছুমাত্র পরিতৃপ্ত হতে পারেনি। তাতে মহান স্রষ্টা আল্লাহকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করা হয়েছে। অথচ প্রখ্যাত ইতিহাস-দার্শনিক টয়েনবি’র মতেঃ The greatest need of our times is a rebirth of the belief in the super-natural- অর্থাৎ ‘আমাদের একালের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হলো অতি-প্রাকৃত সত্তায় বিশ্বাসের পুনর্জীবন’। আধুনিক ইউরোপ ও আমেরিকা যে কঠিন মনস্তাত্ত্বিক রোগে আক্রান্ত ও জর্জরিত তার অধিকাংশই হচ্ছে ধর্মবিশ্বাস ও ধর্মবিশ্বাসভিত্তিক জীবন ব্যবস্থার অনুপস্থিতি থেকে উদ্ভূত। আধুনিক বিশ্ব চরমভাবে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক দেউলিয়াপনায় নিমজ্জিত। এই অবস্থায় একালের বিশ্বামানবের জন্যে একটি বিপ্লবী বিশ্বাস ও সেই বিশ্বাসভিত্তিক জীবন-বিধানের একান্তই আবশ্যক। তাই এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও তাঁর দেয়া জীবন-বিধান দ্বীন-ইসলামের পুনরুজ্জীবন অপরিহার্য হয়ে দেখা দিয়েছে। প্রখ্যাত মনোবিজ্ঞানী Jung বলেছেনঃ

‘আমি হাজার হাজার রোগীর চিকিৎসা করেছি। সকলের মধ্যেই আমি আল্লাহ ও ধর্মবিশ্বাসের আকুল পিপাসা লক্ষ্য করেছি।’

এই কারণে তিনি যে বই লিখেছেন তার নাম দিয়েছেন Modern Man is Search of Soul- ‘আধুনিক মানুষ তার আত্মার সন্ধানে আকুল’। একজন দুজন নয়, শত শত দার্শনিক ও বিজ্ঞানী আজ একই কথা বলছেন। তাই বলিষ্ঠ কণ্ঠে বলতে হচ্ছে বর্তমান বিশ্বের মানুষকে, যদি মানুষ হিসেবে জীবন যাপন করবার সুযোগ নিতে হয়, মুসলমানকে যদি বাস করতে হয় প্রকৃত মুসলিম হিসেবে, তাহলে মানুষকে সেই শিক্ষাই দিতে হবে, যার মাধ্যমে তারা তাদের আত্মাকে ফিরে পাবে। সেই সঙ্গে মহান আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস অর্জিত হবে, মানুষ জানতে পারবে মহান আল্লাহ সুষ্ঠু জীবন যাপনের জন্যে কি বিধান দিয়েছেন এবং সেই বিধান পুরামাত্রায় পালন করার ও সামষ্টিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রবল তাগিদও তা থেকে লাভ করতে সক্ষম হবে।

কিন্তু এরূপ শিক্ষা কে দিতে পারে? বর্তমান দুনিয়ায় ‘ধর্ম’ নামে পরিচিত খৃস্টান ইয়াহুদী বা হিন্দুধর্ম তা পারেনা; তা দিতে পারে একমাত্র দ্বীন-ইসলাম। এই দ্বীন ভিত্তিক শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত আজকের মানুষ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত হয়ে শুধু হাহাকার করে বেড়াচ্ছে। তারা এর সন্ধান পাচ্ছে না। এই সন্ধান দেয়ার দায়িত্ব ইসলামের বিশ্বাসী জন-সমাজ ও রাষ্ট্রসমূহের। দূর অতীতে এরাই যেমন একদিন বিশ্বের মানুষকে এইরূপ জ্ঞান-আলোকে ধন্য করেছিল, মূর্খতা ও অজ্ঞানতার পুঞ্জীভূত অন্ধকার থেকে মুক্তি দিয়েছিল তদানীন্তন ইউরোপকে, তেমনি আজকের মানুষকেও বিরাজমান দুরবস্থা থেকে মুক্তি দেয়া তাদের পক্ষেই সম্ভব। কিন্তু আফসোস! আজকের মুসলিম সমাজ, জাতি ও রাষ্ট্রসমূহ দুনিয়াকে সেই জ্ঞান-আলোকে উদ্ভাসিত করার পরিবর্তে এক্ষণে নিজেরাই শিক্ষা ও সংস্কৃতি থেকে বঞ্চিত হয়ে পাশ্চাত্য জাহিলিয়াতের অন্ধকারে হাতড়ে মরছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন