hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিক্ষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

৪৪
আল–কুরআনের শিক্ষা দর্শন
মুসলিম সমাজের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের দিক দিয়ে কুরআনই হচ্ছে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কিতাব, এ কথা অনেকের নিকটই বিস্ময়কর মনে হয়। কেননা এ দৃষ্টিতে খুব কম লোকই চিন্তা-ভাবনা করেছেন আর এই দৃষ্টিতে কুরআন মজীদ অধ্যয়ন করেছেন, এমন লোকও খুব বেশী পাওয়া যায় না। আমাদের তথাকথিত চিন্তাবিদদের অনেকেই কুরআন মজীদ পাঠ করেন নি আর করে থাকলেও তা না বুঝে-শুনেই পাঠ করেনে। অথচ প্রকৃত ব্যাপার হচ্ছে, কুরআন মজীদ মানবতার জন্যে শিক্ষা ও সংস্কৃতির এক তুলনাহীন আকর বিশেষ। সাধারণভাবে গোটা মানব জাতির জন্যে এই কিতাবখানি জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিক্ষা-সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রথম গ্রন্থ রূপে গণ্য হতে পারে এবং বিশেষভাবে সামাজিক ও সামষ্টিক এবং নৈতিক ও আধ্যাত্মিক প্রেরণার উৎস হতে পারে।

সমস্ত বিষয়ের শুরু ও শেষ এবং মানুষ ও বিশ্বলোক তথা মানুষ ও সৃষ্টিকর্তার পারস্পরিক সম্পর্ক সম্বন্ধে আলোচনা ও পর্যালোচনাই যদি দর্শনের বিষয়বস্তু হয়ে থাকে, তাহলে কুরআন মজিদই হচ্ছে সেই দর্শনের উৎসমূল। আর ব্যক্তির অন্তর্নিহিত শক্তি-সামর্থ্যের লালন ও উৎকর্ষ সাধন এবং মানব প্রজাতি হিসেবে তাকে গড়ে তোলাই যদি প্রশিক্ষণের লক্ষ্য হয়, তাহলে কুরআন মজীদই এই লক্ষ্য অর্জনের প্রধান সহায়ক। কেননা মানুষ ও সৃষ্টলোকের লালন ও প্রশিক্ষণের কথা কুরআন মজীদই বলেছে অত্যন্ত বলিষ্ঠ ভাষায়। আমরা যখনই বলিঃ ‘আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন’ তখনই আমরা বলি, সমগ্র বিশ্বলোকের প্রভূ ও প্রতিপালক হচ্ছেন মহান আল্লাহ তা’আলা। তিনি কেবল মানুষেরই নন, সমস্ত সৃষ্টিলোকেরই প্রতিপালক। সৃষ্টিলোকের অস্তিত্ব ও ক্রমবিকাশ লাভ এবং মানুষের লালন-পালন, ক্রমবৃদ্ধি ও মানবীয় প্রকৃতি সম্পর্কে কুরআন স্পষ্টত কথা বলে। গোটা প্রকৃতি ও সমাজ-সমষ্টির মধ্যে মানুষের অস্তিত্বের কথা কুরআনই বিশ্লেষণ করে। সেই সঙ্গে প্রশিক্ষণের লক্ষ্য অর্জনের জন্যে সে মানুষকে তাগিদ দেয়। মানুষের মন-মানস পরিচ্ছন্নকরণ ও তার আচার-আচরণ সুসংবদ্ধকরণে কুরআনের অবদান তুলনাহীন। কুরআনের প্রশিক্ষণ-দর্শনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, সাধারণভাবে সব কিছুর প্রশিক্ষণ দান। আলাদা আলাদাভাবে প্রতিটি সত্তার স্বতন্ত্র প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সার্বিক জ্ঞান অর্জনের ব্যবস্থা কুরআন গ্রহণ করেছে। পরিবর্তন, বিবর্তন ও বিকাশ লাভে কথাও কুরআনে বাদ পড়েনি।

কুরআনের প্রশিক্ষণ সমগ্র বিশ্ব-ভূমণ্ডল, আকাশলোক, বস্তুলোক, আত্মার জগত ইত্যাদি সব কিছুতেই পরিব্যাপ্ত; সব কিছুর শুরু ও শেষ, বাহির ও ভিতর এবং স্থান ও কাল পর্যায়ের সব কিছুতেই তা শামিল করেছে। কুরআনের প্রথম ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা হচ্ছে, এই বিশ্বলোকের সৃষ্টিকর্তা আছেন এবং তিনি বহু নন, এক ও একক। কুরআন-উপস্থাপিত ‘তওহীদ’-এ আবেদন সর্বাত্মক ও সব কিছুর সাথে সামঞ্জস্যশীল। কুরআন বস্তু ও আত্মার সমন্বয় সাধন করেছে-ঈমান ও বিবেকের মধ্যে সামঞ্জস্য স্থাপন করেছে। তা দ্বীন দুনিয়াকে অভিন্ন করে দিয়েছে এবং চিন্তা ও কর্মের ঐক্য বিধান করেছে। তা স্বাদ ও কষ্ট, চেষ্টা ও ইবাদত, আদর্শ ও বাস্তব, মানুষ ও বিশ্বলোক এবং বিশ্বলোক ও বিশ্বস্রষ্টার মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ করে দিয়েছে সুস্পষ্টভাষায়।

কুরআন মানুষকে এক অবিভাজ্য ‘একক’ রূপে পেশ করেছে। বস্তু ও আত্মার মাঝে বিরোধ ও পার্থক্যকারী দর্শনকে কুরআন বাতিল করে দিয়েছে। কেবল আধ্যাত্মিক জীবন নিয়ে মশগুল থাকা এবং বৈষয়িক জীবন পরিহার কিংবা উপেক্ষা করার সাথে কুরআনের কোন সম্পর্ক নেই। দ্বীন ও রাষ্ট্রের মধ্যে পার্থক্যকারী দর্শনকে ইসলাম সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করেছে। একই মানব সত্তাকে তাকওয়া ও ফাসিকী এ দ্বিমুখী ধারায় গড়ে তোলাকে এবং একই সমাজ-সমষ্টিকে বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্তকরণকে কুরআন বাতিল করে দিয়েছে। মানুষ মসজিদে ‘মুত্তাকী’ হবে আর নিজেদের পারস্পরিক লেন-দেনে প্রতারণা করবে, বাহ্যত নিজেকে বড় পরহেযগার হিসেবে জাহির করবে আর গোপনে সে মাদক দ্রব্য ব্যবহার করবে কিংবা জুয়া খেলবে- কুরআন তা মেনে নিতে আদৌ প্রস্তুত নয়। সমাজের কিছু লোক মহা সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে লিপ্ত হবে আর অবশিষ্ট লোক নিজেদের দেহ ও আত্মার সম্পর্ক রক্ষার মত খাদ্যও পাবে না-কুরআন এই নীতি সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করেছে। এক কথায় বলা যায়, কুরআনের দর্শন মানব সত্ত্বার পরম ঐক্য ও একত্বের দর্শন। বিবেক-বুদ্ধি, দয়া-মায়া, সহানুভূতি ও বাস্তব কাজ পরস্পর অবিচ্ছিন্ন। কুরআনের দর্শন ঐক্য ও শৃংখলার দর্শন। ব্যক্তি ও সমাজ, ব্যক্তি এবং মানুষ ও বিশ্বলোক ও বিশ্বস্রষ্টার পারস্পরিক সম্পর্ক রচনা হচ্ছে কুরআনের দর্শন। কুরআনের ব্যাপকতা ও সর্বাত্মকতা, তথা তওহীদ বলতে আমরা এটাই বুঝি।

বিকাশ, ক্রমবৃদ্ধি ও উন্নয়ন কুরআনী প্রশিক্ষণের সাথে পুরোপুরি সামঞ্জস্যশীল। কুরআনের উন্নয়ন উচ্চতর আদর্শের দিকে-উচ্চতর আদর্শিক জীবনের দিকে মানুষের অব্যাহত অগ্রগতি। মহত্ত ও পূর্ণত্বের দিকে কুরআনের অগ্রসরতাই কল্যাণকর উন্নয়্ন। যে উন্নয়ন মানুষকে মনুষ্যত্ব থেকে দুরে সরিয়ে নেয়, তাকে পশুত্ব ও পাশবিকতার নিকটে পৌঁছে দেয়, কুরআনের নিকট তা সমর্থনযোগ্য নয়। অতএব আত্মিক, নৈতিক ও সামষ্টিক উন্নয়নের জন্যে কাজ করাই কুরআনী প্রশিক্ষণের সার কথা।

কুরআনী প্রশিক্ষণের লক্ষ্য, প্রশিক্ষণের পথ ও পন্থা এবং সর্বশেষে কুরআনী প্রশিক্ষণ-পদ্ধতি ও নিয়ম জানাই প্রকৃত প্রশিক্ষণের আসল উদ্দেশ্য।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন