hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিক্ষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

৬৭
স্রষ্টা সম্পর্কে কুরআনের ভাষ্য
কুরআন সর্বপ্রথম সর্বাধিক গুরুত্ব সহকারে যে কাজটি করে, তা হচ্ছে স্রষ্টা ও সৃষ্টির মাঝে প্রকৃত সম্পর্ক নিরূপন ও নির্ধারণ করা। এই মহাগ্রন্থ মানুষের পরিচিতি প্রসঙ্গে বলেছে, মানুষ ও সৃষ্টিলোকের অস্তিত্ব শেষ পর্যন্ত মহান সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের দিকে, তাঁর নবোদ্ভাবন নীতির দিকে এবং তাঁর সুষ্ঠু সৃজনশীলতা ও অপার দয়া-মায়ার অসীম সমুদ্রের দিকে প্রত্যাবর্তন করবে। অতএব জীবন পরিশীলিত ও পরিচ্ছন্ন করে গড়ে তোলার জন্যে মহান স্রষ্টার সঠিক পরিচিতি লাভ এবং তাঁর প্রতি আনুগত্য ও ভয়ভীতির অনুভূতি অর্জনই উচ্চতর প্রশিক্ষণের লক্ষ্য আর ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামষ্টিক জীবনের তাঁর আদেশাবলী ও নিষেধসমূহ কার্যকর করণই হচ্ছে তাঁর ইবাদতের মর্মার্থ। কুরআন আল্লাহর মহান গুণাবলীর মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করেছে তাওহীদী সিফাতের ওপর। তাতে মহান আল্লাহকে সর্বতোভাবে এক ও একক বলে মেনে নেয়া এবং সর্বপ্রকার শিরক থেকে তাঁর মুক্ত ও পবিত্র থাকার কথা স্বীকার করে নেয়ার প্রবল আহ্বান জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, আল্লাহর স্থান কালের সীমার মধ্যে আবদ্ধ নয়। তিনি অপরিবর্তনশীল। তাঁর শরীক বা সদৃশ কেউ নেই-নেই কেউ সমতুল্য, প্রতীক বা দৃষ্টান্ত কেউ নেই, প্রতিদ্বন্দী কেউ নেই; তিনি কারো জাত নন, তাঁর জাতও কেউ নেই। তিনি চিরঞ্জীব, শাশ্বত, অক্ষয়; তিনি এক ও একক, স্বতন্ত্র, অনন্য-নিরপেক্ষ; তিনি অমুখাপেক্ষী, সবই তাঁর মুখাপেক্ষী; তিনি যা চান তা-ই করতে সক্ষম, করতে পারার অধিকারী; তাঁর ক্ষমতা অপ্রতিরোধ্য, তাঁর কর্মকুশলতা তুলনাহীন, জ্ঞান সীমাহীন, শেষহীন ও সর্বব্যাপী। সত্য, কল্যাণ ও সৌন্দর্যে তিনি অতুলনীয়। এসব কথা প্রমাণকারী কতিপরয় আয়াত এখানে উদ্ধৃত করা যাচ্ছেঃ

ذَٰلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ ۖ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ۖ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ فَاعْبُدُوهُ ۚ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ وَكِيلٌ لَّا تُدْرِكُهُ الْأَبْصَارُ وَهُوَ يُدْرِكُ الْأَبْصَارَ ۖ وَهُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ

‘‘এই হচ্ছেন তোমাদের আল্লাহ। তিনি ছাড়া কেহ ইলাহ নাই। তিনি প্রতিটি জিনিসেরই স্রষ্টা, তিনি প্রতিটি জিনিসেরই দায়িত্বশীল; অতএব, তাঁর দাসত্ব কবুল কর। দৃষ্টিসমূহ তাঁকে দেখতে পারেনা, তিনিই বরং দৃষ্টিসমূহকে আয়ত্ব করেন। তিনি খুবই সূক্ষ্ণদর্শী ও সর্ববিষয়ে অবহিত।’’ (সূরা আন’আমঃ ১০২–১০৩)

فَاطِرُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ جَعَلَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا وَمِنَ الْأَنْعَامِ أَزْوَاجًا ۖ يَذْرَؤُكُمْ فِيهِ ۚ لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ ۖ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ

‘‘আকাশমণ্ডল ও ভূমণ্ডল সৃষ্টিকারী; তিনি তোমাদের প্রজাতির মধ্য থেকেই তোমাদের জন্যে জুড়ি বানিয়েছেন; জন্তুদের মধ্য থেকেও জুড়ি বানিয়ে দিয়েছেন। এভাবে তিনি তোমাদের মধ্যে বংশবৃদ্ধি করে থাকেন। বিশ্বলোকে তাঁর সদৃশ কোন জিনিসই নেই। তিনিই সর্বশ্রোতা ও সর্ব স্রষ্টা।’’ (সূরা শুরাঃ ১১)

سَبَّحَ لِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ يُحْيِي وَيُمِيتُ ۖ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ هُوَ الْأَوَّلُ وَالْآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ ۖ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ

‘‘আকাশমণ্ডল ও ভূমণ্ডলে যা কিছুই আছে সবই তাঁর তসবীহ-পবিত্রতা বর্ণনা করে। তিনিই মহাপরাক্রান্ত ও মহাবিজ্ঞানী। আকাশমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের রাজত্ব ও সার্বভৌমত্বের নিরংকুশ কর্তৃত্ব তাঁরই। তিনিই জীবন দান করেন এবং মৃত্যু দেন। তিনিই সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান। তিনিই প্রথম এবং তিনিই শেষ। তিনিই প্রকাশমান এবং তিনিই অপ্রকাশিত। তিনিই প্রতিটি বিষয়ে অবহিত।’’ (সূরা হাদীদঃ ১–৩)

وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنتُمْ ۚ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ

‘‘তোমরা যেখানেই থাক তিনি তোমাদের সঙ্গেই রয়েছেন। তোমরা যা কিছুই কর, তিনি তা দেখেন।’’ (সূরা হাদীদঃ ৪)

لَوْ كَانَ فِيهِمَا آلِهَةٌ إِلَّا اللَّهُ لَفَسَدَتَا ۚ فَسُبْحَانَ اللَّهِ رَبِّ الْعَرْشِ عَمَّا يَصِفُونَ

‘‘যদি আকাশ ও পৃথিবীতে এক আল্লাহ ছাড়া আরও বহু ইলাহ হতো তাহলে এ দুয়ের শৃংখলা ব্যবস্থাই চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যেত। অতএব আরশ অধিপতি মহান আল্লহ পবিত্র, সেই সব থেকে যা এই লোকেরা যা বলে।’’ (সূরা আম্বিয়াঃ ২২)

قُل لَّوْ كَانَ مَعَهُ آلِهَةٌ كَمَا يَقُولُونَ إِذًا لَّابْتَغَوْا إِلَىٰ ذِي الْعَرْشِ سَبِيلًا سُبْحَانَهُ وَتَعَالَىٰ عَمَّا يَقُولُونَ عُلُوًّا كَبِيرًا

‘‘লোকদেরকে বল, আল্লাহর সাথে আরও যদি মা’বুদ বা উপাস্য থাকত, তাহলে তারা আরশ-অধিপতির নিকট পর্যন্ত পৌঁছতে অবশ্যই চেষ্টা করত; অতএব আল্লাহ মহান ও পবিত্র, সেই সব বড়বড় কথাবার্তা থেকে যা এই লোকেরা বলে।’’ (সূরা বনী ইসরাঈলঃ ৪২–৪৩)

مَا اتَّخَذَ اللَّهُ مِن وَلَدٍ وَمَا كَانَ مَعَهُ مِنْ إِلَٰهٍ ۚ إِذًا لَّذَهَبَ كُلُّ إِلَٰهٍ بِمَا خَلَقَ وَلَعَلَا بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ ۚ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يَصِفُونَ

‘‘আল্লাহ কোন সন্তান গ্রহণ করেননি এবং তাঁর সাথে অন্য কোন মা’বুদ বা উপাস্যও নেই। যদি থাকত, তাহলে প্রত্যেক উপাস্যই তার সৃষ্টদের নিয়ে আলাদা হয়ে যেত এবং তাদের কতিপয় অপর কতিপয়ের ওপর চড়াও হয়ে বসত। আল্লাহ মহান পবিত্র সে সব পরিচিতি থেকে যা এই লোকেরা তার প্রসঙ্গে বলে।’’ (সূরা মুমিনুনঃ ৯১)

قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَد اللَّهُ الصَّمَدُ لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ .

‘‘বল তিনি আল্লাহ এক ও একক। তিনি কারোর মুখাপেক্ষী নন, বরং সবই তাঁর মুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি, তাঁকেও কেউ জন্ম দেয়নি। তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই।” (সূরা ইখলাস)

اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ ۚ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ ۚ لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۗ مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِندَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۚ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ ۖ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا ۚ وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ

‘‘আল্লাহ ছাড়া আর কেউ ইলাহ নেই। তিনি চিরঞ্জীব ও শাশ্বত সত্তা। সমগ্র বিশ্বলোককে তিনি দুঢ়ভাবে ধারণ করে আছেন। তাঁকে নিদ্রা বা তন্দ্রা কখনো স্পর্শ করেনা। আকাশমণ্ডল ও ভূমণ্ডলে যা কিছু আছে সব তাঁরই। তাঁর অনুমতি ব্যতিরেকে তাঁর নিকট কে সুপারিশ করতে পারে? তিনি জানেন যা লোকদের সামনে আছে আর যা আছে তাদের পিছনে সে বিষয়েও তিনি অবহিত। তারা কেউ তাঁর জ্ঞান থেকে কোন কিছুই আয়ত্ত করে নিতে পারেনা- তবে তিনি নিজে যদি চান। তাঁর আসন সমগ্র নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলে পরিব্যপ্ত হয়ে আছে। এ দুটির সংরক্ষণ তাঁকে ক্লান্ত করে না। তিনি মহান সুউচ্চ-বিরাট।’’ (সূরা বাকারাঃ ২৫৫)

কুরআন মজীদ উপস্থাপিত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের চরম লক্ষ্য কি? সংক্ষেপে বললে তা হচ্ছে, মানুষের নিজেকে নিজের চেনা-জানা, অনুধাবন ও উপলব্ধি করা, ইসলামের সামাজিক ও সামষ্টিক ব্যবস্থা জেনে নেয়া, মানুষের সামষ্টিক দায়-দায়িত্ব ও জবাবদিহির বিষয়ে জানা ও তদনুসারে কাজ করার যেগ্যতা অর্জন করা, বিশ্বলোকের অবস্থান ও সৃজন পদ্ধতি সম্পর্কে অবহিতি লাভ করা এবং তাকে মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করার প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি জানা। সর্বোপরি বিশ্বস্রষ্টার সঠিক ও নির্ভুল পরিচিতি লাভ, তাঁর সম্পর্কে যথাসাধ্য জ্ঞান অর্জন এবং তাঁর বন্দেগী দাসত্ব বা উপাসনা করা, তাঁর আদেশাবলী পালন ও অনুসরণ এবং তাঁর সব নিষিদ্ধ কার্যাবলী পরিহার করা ও সেসব থেকে বিরত থাকা।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন