hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিক্ষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

৭২
মুসলিম জাতি গঠনে ইসলামী শিক্ষার ভূমিকা
মানুষের ব্যক্তি জীবনে ইসলামী শিক্ষার যে ভূমিকা, জাতীয় জীবনেও ইসলামী শিক্ষার ঠিক সেই ভূমিকা। ইসলামী শিক্ষা প্রথমে ব্যক্তিকে আল্লাহর প্রকৃত দাস তথা অনুগত বান্দাহ বানায়। তারপর সেই অনুগত বান্দাহদের সামষ্টিক জীবনকে প্রকৃত বান্দাহ হিসেবে যাপন করতে অভ্যস্থ করে তোলে। ইসলামী শিক্ষা একটি জাতিকে সবর্তোভাবে-জাতীয় জীবনের সকল দিক ও বিভাগে এবং সকল শাখা ও প্রশাখায় সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালনের যোগ্য বানায়। তাকে সকল প্রকার পাশবিক চিন্তা-বিশ্বাস, আচার-আচরণ, স্বভাব-চরিত্র ও কাজ-কর্ম থেকে বিরত রাখে। এভাবে ইসলামী শিক্ষা মানব মনে বিশ্বলোকে নিহিত সকল শক্তি ও উপকরণ মানুষের কল্যাণে ব্যবহৃত হওয়ার জন্যে সৃষ্টি হয়েছে বলে বিশ্বাস জন্মায় এবং তা সন্ধান ও আহরণ করে সর্ব মানুষের কল্যাণে প্রয়োগ করতে উদ্বুদ্ধ করে। এই শিক্ষাই মানব মনের যাবতীয় জিজ্ঞাসার নিভুর্ল জবাব দিয়ে তার অন্তরে দৃঢ় প্রত্যয় সৃষ্টি করে যা অন্য কোন শিক্ষা দ্বারাই সম্ভব নয়।

ইসলামী শিক্ষা মানুষকে কেবল আইনই দেয় না, দেয় একটা শাশ্বত মূল্যমান (Parmanent value)-যা তার জীবনকে সকল পর্যায়ে ও অবস্থায় এক আল্লাহর আনুগত্যে উদ্বুদ্ধ করার সামর্থ্য দান করে।

‘‘এবং তাদের (রাসূলগণ) সাথে নাযিল করেছি কিতাব ও মানদণ্ড, যেন জনগণ ন্যায়পরায়নতা ও সুবিচার সহকারে বসবাস করতে পারে।’’

ইসলামী শিক্ষা ব্যক্তিকে আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ দাসে পরিণত করে এবং অন্য সব শক্তি ও ব্যক্তির দাসত্ব থেকে তাকে সম্পূর্ণ মুক্ত করে। এ শিক্ষা মানুষকে আল্লাহর একান্ত অনুগত বানায়, তাকে অন্য সব কিছুর প্রতি বিদ্রোহী করে তোলে; ফলে সে এক আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করতে, অন্য কারোর আনুগত্য করতে এবং অন্য কারোর সম্মুখে মাথা নত করতে স্পষ্টভাবে অস্বীকার করে। শুধু অস্বীকার করেই সে ক্ষান্ত থাকতে পারে না, বরং সে জনশক্তি সংগঠিত করে, প্রচলিত সব কিছুই উল্টিয়ে দিয়ে ও উৎপাটিত করে এক আল্লাহর সার্বভৌমত্ব-ভিত্তিক নতুন রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েম করতে উদ্বুদ্ধ করে। এই বিপ্লবী পদক্ষেপের লক্ষ্য সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছেঃ

‘‘যেন বিপর্যস্ত অবস্থার চূড়ান্ত অবসান ঘটে এবং সার্বভৌমত্ব ও জীবন বিধান কেবলমাত্র এক আল্লাহর জন্যেই প্রতিষ্ঠিত হয়।’’

আল্লাহর এই দাসত্ব স্বীকারকারী ব্যক্তিরা স্বভাবতই একটি সমষ্টি বা জাতিরূপে সংগঠিত হবে। কেননা আল্লাহতে বিশ্বাসী ও তাঁর অনুগত নয় এমন লোকদের সমন্বয়ে যে জাতি বা জাতীয়তা তাকে মেনে নিতে বা তাতে শামিল হতে তারা কখনেই প্রস্তুত হতে পারে না।

সামষ্টিক জীবনের একটি বড় প্রয়োজন হচ্ছে রাষ্ট্র। ইসলামী শিক্ষা আল্লাহর দাসত্ব স্বীকারকারী জাতিকে এমন রাষ্ট্র কায়েমে উদ্বুদ্ধ করে, যার সার্বভৌমত্ব (Sovereignty) কেবলমাত্র আল্লাহর জন্যে নির্দিষ্ট এবং যেকোন আইন মৌলিকভাবে আল্লাহর নাযিল করা বিধান এং যাবতীয় বাধ্যবাধকতা ও সীমা-নিয়ন্ত্রণ রাসূলে কারীম (ﷺ)-এর প্রবর্তিত শরী’আতের ভিত্তিতে কাযর্কর। যে রাষ্ট্র আল্লাহর সার্বভৌমত্বের ওপর স্থাপিত নয়-নয় রাসূলের নিকট থেকে পাওয়া শরী’আত দ্বারা চালিত, তা মেনে নিতে বা তার খেদমত করতে ইসলামী শিক্ষাপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও জাতি কখনই প্রস্তুত হতে পারে না।

ইসলামী শিক্ষায় উদ্ভাসিত ব্যক্তি ও জাতি হবে ইসলামের পূর্ণাঙ্গ আদর্শের বাস্তব প্রতীক-ইসলামী আদর্শের পতাকাবাহী। যেখানে ইসলামী আদর্শ বাস্তবায়িত নয়, জনগণ নয় ইসলামী আদর্শের অনুসারী, এই চেতনার অগ্রণী সৈনিকরা সেখানকার ব্যক্তি ও জাতিকে ইসলামী আদর্শে উদ্বুদ্ধ করবে-তাকে মুক্ত করবে সব অজ্ঞতা, মূর্খতা ও নির্যাতন থেকে।

যে-রাজনীতি ইসলামী আদর্শ ভিত্তিক নয়, যার লক্ষ্য নয় পূর্ণাঙ্গ ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও ইসলামী আইন প্রবর্তন, ইসলামী শিক্ষাপ্রাপ্ত ব্যক্তি সে রাজনীতি করতে কখনই রাজী হতে পারে না; সে এমন দলের সদস্য হতে বা কর্মী হতেও প্রস্তুত হতে পারে না, যে দল ইসলামী আদর্শ-ভিত্তিক রাজনীতি করে না, করে সেক্যুলার বা সমাজতন্ত্রী রাজনীতি।

ব্যক্তি পর্যায়ে এবং জাতীয় পর্যায়ে সে এমন কোন অর্থ ব্যবস্থা মেনে নিতে ও অনুসরণ করতেও প্রস্তুত হতে পারে না, যার ভিত্তি একান্তভাবে আল্লাহর মালিকানা ও মানুষের আমানতদারীর ধারণারও ওপর ভিত্তিশীল নয়, যা নিরংকুশ ব্যক্তি মালিকানার পুঁজিবাদ বা রাষ্ট্রীয় মালিকানার সমাজতান্ত্রিক আদর্শ-ভিত্তিক, যা শোষণ ও বঞ্চনা চালায় ব্যক্তি পর্যায়েও, সামষ্টিক ও জাতীয় পর্যায়েও; বরং সে ব্যক্তি ও জাতি এমন একটি অর্থ-ব্যবস্থা গড়ে তোলা কর্তব্য বলে মনে করে, যা মহান আল্লাহর নিরংকুশ মালিকানা ও মানুষের আমানতদারীর (খিলাফতের) আকীদা-ভিত্তিক ও সবর্প্রকার শোষণ ও বঞ্চনা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত।

বস্তুত এইরূপ এক শিক্ষা ব্যবস্থাই ইসলাম শিক্ষা ব্যবস্থা এবং এই শিক্ষা ব্যবস্থাই মানুষের জন্যে মুক্তির সনদ।নিম্নোদ্ধৃত আয়াতদ্বয়ে এই জাতির কথাই বলা হয়েছে আর এ জাতি সম্পর্কেই প্রযোজ্য হবে আল্লাহর ঘোষণাঃ

كُنتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ

‘‘তোমরাই হচ্ছ সর্বোত্তম জনসমষ্টি। সমগ্র মানুষের কল্যাণের লক্ষ্যেই তোমাদেরকে গড়ে তোলা হয়েছে। তোমরাই তো সকল ন্যায়ের আদেশ প্রতিষ্ঠা কর, সকল অন্যায়ের করো নিষেধ ও প্রতিরোধ আর সর্বাবস্থায়ই তোমরা ঈমানদার থাকো এক আল্লাহর প্রতি।’’ (সূরা আলে ইমরানঃ ১১০)

‘‘এমনিভাবে আমরা তোমাদেরকে এক মধ্যম নীতি অনুসরণকারী উত্তম জনসমষ্টি বানিয়েছি যেন তোমরা সমস্ত মানুষের সাক্ষী ও পথপ্রদর্শক হতে পার আর রাসূল হন তোমাদের পথ-প্রদশর্ক ও সাক্ষী।’’

বস্তুত মুসলিম জাতিকে সুউচ্চ মর্যাদায় আসীন ও এই সুমহান দায়িত্ব পালনে নিরত রাখতে হলে কিংবা জনগোষ্ঠিকে অনুরূপ আদর্শের অনুসারী বানাতে হলে ইসলামী শিক্ষাকে পূর্ণরূপে কার্যকর করা একান্তই কতর্ব্য।

এক কথায়, ইসলমী শিক্ষা ছাড়া ইসলামী জাতি অর্থাৎ মুসলিম জাতি গড়ে তোলা এবং মুসলিম জাতিরূপে তাকে রক্ষা করা কখনই সম্ভব নয়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন