hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিক্ষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

৬৯
জাতীয় জীবনে ইসলামী শিক্ষার ভূমিকা
শিক্ষার তাৎপর্য

শিক্ষা অর্থঃ জানা, বোঝা, শেখা; যা জানা নেই-অজানা অথচ জানা দরকার, তা জানা, শেখা ও বোঝা-ই হল শিক্ষার লক্ষ্য।

শিক্ষার প্রশ্ন কেবল মানুষের বেলায় প্রযোজ্য; মানুষ ছাড়া অন্য কারোর ক্ষেত্রে তার প্রয়োগ নেই, প্রয়োজনও নেই। জীব-জন্তু অন্ধকারেও দেখতে পারে। কিন্তু মানুষ তার দৃষ্টিশক্তি থাকা সত্ত্বেও বাইরের আলোর প্রতিফলন না হলে কিছুই দেখতে পায় না। তাই মানুষকে বাইরে থেকে জ্ঞানের আলো দান একান্তই প্রয়োজন।

মানুষ ছাড়া অন্যান্য জীব-জন্তুর জীবন যেহেতু নিতান্ত জৈবিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ, তাই তাদের যা কিছু শিক্ষার প্রয়োজন তা স্বাভাবিকতা বা প্রাকৃতিক পরিবেষ্টনীর মধ্যেই অর্জিত হয়ে থাকে। যেমন মুরগীর বাচ্চার কুটকুট করে খাদ্য আহরণ কিংবা হাঁসের বাচ্চার পানিতে সাঁতার কাটা শেখার ব্যাপার মায়ের পথ পদর্শনেই সমাপ্ত হয়। অতঃপর এদের আর কোন শিক্ষার প্রয়োজন হয় না।

জন্তুর ক্ষেত্রে ঘাস খাওয়া বা অন্য জীব ধরে খাওয়ার শিক্ষাটাও স্বাভাবিভাবেই অর্জিত হয়ে থাকে। কিন্তু মানুষের শিক্ষা নিছক স্বাভাবিকতার মধ্যেই সীমিত থাকতে পারেনা। স্বাভাবিকতার সীমা অতিক্রম করে বাইরের অনেক কিছুই শেখা-জানা-বোঝা তার জন্যে একান্ত প্রয়োজন। অন্যথায় তার জীবন জৈবিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে বাধ্য। কিন্তু মানুষ তো শুধু জীবমাত্র নয়। জীবের ঊর্ধ্বে তার জীবন সম্প্রসারিত। জীবের জগত তার চতুঃপার্শ্বের মধ্যেই সীমিত। কিন্তু মানুষের জগত পৃথিবী ও গোটা বিশ্বলোক। তা জল-স্থল ও অন্তরীক্ষ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ। তাই মানুষ শুধু নিজেকে জেনেই ক্ষান্ত হতে পারে না। তাকে জানতে হয় নিজেকে, এই পৃথিবীসহ গোটা বিশ্বলোক এবং এই সবের স্রষ্টাকেও। মানুষের জ্ঞান শুধু বাহ্যিক প্রপঞ্চ (Phenomenon) পর্যন্ত সীমিত থাকলেই চলবেনা, তাকে জানতে হবে অন্তর্নিহিত সত্তাকে, বাহ্য লোকের অন্তরালে অবস্থিত মহাসত্যকে তথা Absolute reality এবং Absolute truth- কে।

মানুষের আছে মন, যা জীবদের নেই। সে ‘মনে’র আছে নানা জিজ্ঞাসা, কৌতুহল, আশা-আকাংক্ষা, চিন্তা-ভাবনা এবং ভালো-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় ও বৈধ-অবৈধের বোধ। পাশ্চাত্য বিজ্ঞানের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মানুষ পশু; কিন্তু শুধুমাত্র জন্তুর ক্রিয়া সম্পন্ন করাই তো আর মানব ধর্ম হতে পারে না। সে দিক দিয়েও নৈতিকতার প্রশ্ন অনপেক্ষণীয়।

মানব মনের মৌলিক জিজ্ঞাসা তিনটি পর্যায়ে বিভক্তঃ

১. প্রথম জিজ্ঞাসা তার নিজের সম্পর্কে, তার গোটা পারিপার্শ্বিকতা তথা পিতামাতা, ভাইবোন সম্পর্কে-যাদের সে নিজের চারপাশে দেখতে পায় জন্মের পর থেকেই। এরা কারা, এদের সাথে তার কি সম্পর্ক এবং সে সম্পর্ক কিভাবে রক্ষা করতে হবে।

২. জিজ্ঞাসা আছে এই পৃথিবী, সূর্য-চন্দ্র, পানি, বাতাস, বৃক্ষ-গুল্ম ইত্যাদি সম্পর্কে; এগুলোর প্রকৃত অবস্থান কোথায় এবং তার সাথে এগুলোর সম্পর্ক কি? সে সম্পর্ক রক্ষার নিয়ম পদ্ধতিইবা কি?

৩. জিজ্ঞাসা আছে তার নিজের জীবন প্রণালী, দায়িত্ব-কর্তব্য ও ভবিষ্যত সম্পর্কে-এই সব জিজ্ঞাসার জবাব তার জানা নেই। অথচ এগুলো না জানতে পারলে তার মনের কৌতুহল যেমন মিটেনা, তেমনি তার জীবনও সঠিক রূপে চলতে পারে না।

কিন্তু অন্যান্য জীব বা উদ্ভিদের স্তরে এসব জিজ্ঞাসা কিংবা কৌতুহলের কোন প্রশ্ন ওঠে না।

আর এটাই হচ্ছে মানুষ ও জীব-জন্তু তথা অন্যান্য সৃষ্টিকুলের মধ্যে পার্থক্যের ভিত্তি।

অতএব মানুষের জন্যে একটি শিক্ষা ব্যবস্থা একান্ত প্রয়োজন, যা তাকে এই সব বিষয়ে অবহিত করবে এবং এ ক্ষেত্রে জেগে-ওঠা সব সন্দেহ-সংশয় দূর করে দেবে। এতে যেমন জানার প্রশ্ন আছে, তেমনি আছে অনুধাবন ও হৃদয়ঙ্গম করার এবং শেখারও প্রশ্ন।

শিক্ষার মাধ্যমে কেবল জ্ঞান আহরণই কোন কল্যাণ সাধন করে না; সে জ্ঞানের বাস্তব ও সুষ্ঠু প্রয়োগও দরকার। তাই জানা ও বুঝা দরকার সে জ্ঞান প্রয়োগ করার সঠিক পদ্ধতি কি।

তাই A.N. Whitehead তাঁর The Aims of Education and other Essay’s গ্রন্থের ৬ নম্বর পৃষ্ঠায় লিখেছেনঃ Education is the acquisition of the art of the utilization of knowledge. অর্থাৎ শিক্ষা হল জ্ঞানের প্রয়োগ কৌশল আয়ত্ত করা।

ইসলামী চিন্তাবিদ ইমাম রাগেব লিখেছেনঃ

‘‘জ্ঞান হচ্ছে কোন বস্তুর অন্তর্নিহিত সত্তাকে যথার্থভাবে অনুধাবন করা।’’

এই আহরণ বা অনুধাবন (Allainment-reaching-understanding) দুই পর্যায়ের। একটি হচ্ছেঃ ‘‘কোন বিষয়ের বা জিনিসের অন্তর্নিহিত সত্তাটি জানা বুঝা বা অনুভব করা।

আর দ্বিতীয় হচ্ছেঃ ‘একটি জিনিস সম্পর্কে অপর জিনিসের সাহায্যে সেই জিনিসের থাকা বা না থাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ।’

ইমাম রাগেবের দৃষ্টিতে ‘আলাম’ এর আর একটি বিভক্তি হচ্ছে তা ‘নাঝরি’ বা Theoritical এবং ‘আমালি’ Practical.

‘নাঝরি মাজা ইলমি ফাক্বাদ কামালা’- নীতিগত জ্ঞান যখন অর্জিত হল তখন তা পূর্ণত্ব পেল।

আর ‘আমালি মা লা ইয়াতিম্মুল আবিনা ইয়াঅ’মাল’- বাস্তব জ্ঞান সম্পূর্ণতা পায়না যতক্ষণ তা কাজে পরিণত করা না হবে।

প্রথমটির দৃষ্টান্তঃ এই বিশ্বলোকের অস্তিত্ব বা অবস্থিতি সম্পর্কিত জ্ঞান বা জানা। তা জানা হয়ে গেলে এ সংক্রান্ত দায়-দায়িত্ব সম্পূর্ণ হয়ে যায়। সেখানে তার করার কিছু থাকেনা।

কিন্তু দ্বিতীয়টি হলঃ ইবাদাত সংক্রান্ত ইলম। তা শুধু জানলেই হবে না, তা বাস্তবে প্রয়োগও করতে হবে। ইমাম রাগেবের দৃষ্টিতে এর আরও একটি বিভক্তি রয়েছেঃ বিবেক-বুদ্ধিগত ও ঐতিহ্যগত। বিবেক-বুদ্ধিগত বলতে বুঝায় সেই জ্ঞান যা মানুষ চিন্তা-গবেষণা ও অনুমিতির (Inference)- মাধ্যমে অর্জন করে। আর ঐতিহ্যগত জ্ঞান বলতে বুঝায়, মানুষ যা জানতে পারে পূর্ববর্তী লোকদের নিকট থেকে। আল্লাহর কুরআন, রাসূলে সুন্নাত এবং ইমাম, মুজতাহিদ ও চিন্তাবিদদের নিকট থেকে লাভ করা জ্ঞানও এর অন্তর্ভুক্ত। আধুনিক শিক্ষাবিদদের দৃষ্টিতেও শিক্ষা দু’ধরণের অর্থাৎ দুটি সূত্র থেকে লব্ধ। একটি Formal বা আনুষ্ঠানিক আর অপরটি Informal বা অনানুষ্ঠানিক।

বালক-বালিকারা নিজেদের পরিবেশ থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যা শেখে তা Informal- এ জ্ঞান স্বতঃই অর্জিত হতে থাকে; এর জন্যে কোন চেষ্টা বা ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন হয়না। আর যা বই-পুস্তক পড়ে ও শিক্ষালয় থেকে তারা শিক্ষকদের মাধ্যমে শেখে তা Formal বা আনুষ্ঠানিক।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন