hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিক্ষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

৯৫
সংস্কৃতির সূচনা ও নানা দৃষ্টিকোণ
সমাজবিজ্ঞানী ও ঐতিহাসিকগণ সংস্কৃতির সূচনা ও ক্রমবিকাশের বিভিন্ন পর্যায় সম্পর্কে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ পেশ করে তার বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

কারোর দৃষ্টিতে অর্থনৈতিক উপায়-উপকরণ অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ। যেসব অঞ্চলে জৈবিক ও অর্থনৈতিক উপকরণের অনটন প্রকট, সেখানে প্রয়োজনের প্রবল তাগিদে মানুষ পরিশ্রম ও চেষ্টা-সাধনায় লিপ্ত হতে বাধ্য হয়। দুনিয়ার দিকে দিকে ও দেশে দেশে তারা ছড়িয়ে পড়ে। ফলে নিত্য-নতুন আবিষ্কার ও উদ্ভাবন সংঘটিত হয়। এর ফলে নানা সংস্কৃতির পারস্পরিক মিশ্রণ ঘটে আর তার ফলে একটি নবতর সংমিশ্রিত রূপের উদ্ভব হয়।

অনুরূপভাবে যেসব দেশের আবহাওয়ায় আর্দ্রতার অংশ শতকরা ৭৫ ভাগ বা ততোধিক সেখানে ঝড়-ঝাপটা ও ঝঞ্ঝা-তুফান নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার। এর দরুণ সেখানকার জনজীবন কঠিনভাবে বিধ্বস্ত হয়। তাদের মন-মানসিকতার ওপর এর তীব্র প্রভাব প্রতিফলিত হওয়া অবধারিত। এই পরিমণ্ডলের লোকেরা বাধ্য হয়ে স্থানান্তরে গমন করে ও ভিন্নতর অনুকূল পরিবেশের সন্ধানে ছুটে যায় এবং নিজেদের চেষ্টায় এমন সব স্থানে গিয়ে বসবাস শুরু করে, যেখানে তাদের মনের আশা-আকাংক্ষা উজ্জীবিত হয়, চিন্তা-চেতনা, অনুভূতি ও বোধশক্তি পায় তীব্রতা-তীক্ষ্ণতা। প্রাচীনতম কালে পৃথিবীর বিশেষ কয়েকটি অঞ্চল সভ্যতা ও সংস্কৃতির লীলাকেন্দ্র ছিল। এশিয়ায় দজলা ও ফোরাত নদীর উপকূল, গঙ্গা ও সিন্ধু নদীর বেলাভূমি, আফ্রিকার নীল উপত্যকা, ইউরোপে টায়র উপত্যকা-যার উপকূলে রোম শহর অবস্থিত ইত্যাদি এ পর্যায়ে বিশেষভাবে উল্লেখ্য। অনুরূপভাবে আজ থেকে প্রায় পনেরো শো বছর পূর্বে মেক্সিকো (Mexico), হন্ডুরাস (Honduras) ও গুয়েতেমালায় (Guatemala) মায়েন (Mayan) সংস্কৃতি উৎকর্ষ লাভ করেছিল।

অতীতের মূল্যবান জাতীয় সম্পদের অবলুপ্তি, দাসপ্রথার ব্যাপক প্রসার এবং অবসাদ-অবজ্ঞায় অভ্যস্ত হওয়ার ফলেও জাতিসমূহের রীতি-নীতি গভীরভাবে প্রভাবিত হয়। গ্রীক ও ভারতীয় সংস্কৃতি উৎকর্ষ লাভ করেছিল তাদের দেশসমূহের ভৌগোলিক ধরণ-ধারণের কারণে। এসব দেশের নদ-নদীর বেলাভূমি এবং উপত্যকাসমূহে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা ব্যাপকভাবে প্রসার লাভ করে। মরুচারী জীবন পদ্ধতিতে দুগ্ঘ ও গোশত প্রচুর পরিমাণে সহজলভ্য হওয়ার দরুণ সেখানকার অধিবাসীরা শক্তি ও বীরত্ব-গুণে ধন্য হয়ে থাকে আর তার ফলেই তাদের মধ্যে কঠোরতা নির্মমতা ও স্বৈরাচারমূলক ভাবধারা তীব্রতর রূপে দেখা দেয়। এ শ্রেণীর লোকেরা দুনিয়ার দিকে দিকে বিজয়ী ও শাসক হিসেবে যথেষ্ট দক্ষতা দেখাতে সক্ষম হয়েছে। বেবিলনীয়, আসিরীয়, কালদানীয় এবং দজলা ও ফোরাত অঞ্চলের সংস্কৃতিসমূহের উৎকর্ষ ও প্রসার লাভের পিছনে এই কারণই নিহিত রয়েছে। তারা মধ্য এশিয়া থেকে উত্থিত হয়ে পারস্য ও ভারতীয় অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে এবং সভ্যতা ও সংস্কৃতির দিক দিয়ে আধুনিক ইউরোপের গুরুর মর্যাদা লাভ করে। এই মরুচারী লোকেরাই কাব্য-সাহিত্য ও নানা ধর্মমতের প্রবর্তন ও প্রতিষ্ঠাতা হয়ে দাঁড়ায়।

ইতিহাসবিদ-দার্শনিক ইবনে খালদুন এবং আধুনিক কালের বিশ্ব-বিশ্রুত ঐতিহাসিক আর্নল্ড টয়েনবি (Arnold Toyenbee) এ সম্পর্কে যে দৃষ্টিকোণ পেশ করেছে তা এখানে উল্লেখযোগ্য। তা হলঃ দারিদ্র্য ও অভাব-অনটনের কষাঘাতে জর্জরিত হয়ে মানুষ নিজেদের প্রাচীন জীবনধারা পরিত্যাগ করে এবং নবতর দিগন্তের সন্ধানে দিশেহারা হয়ে নানা দেশে ও নানা অঞ্চলে ঘুরে বেড়ায় আর এভাবেই সংস্কৃতির ভিত্তি স্থাপিত হয়।

এভাবে জনতার স্থানান্তর, মরু পরিক্রমা, যাযাবর জীবন-ধারা, চিন্তা-বিশ্বাস, আচার-অনুষ্ঠান, পারস্পরিক সম্পর্ক-সম্বন্ধের ধরণ প্রভৃতি সংস্কৃতির ওপর গভীর প্রভাব বিস্তার করে। ইতিহাস-পূর্ব কালের ব্যবসায়িক সড়ক, রোম্যান গীর্জা এবং বিভিন্ন ধরণের রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও শাসন পদ্ধতি একালের সংস্কৃতির ওপর খুব বেশী প্রভাব বিস্তার করেছে। কাল-পরিক্রমায় দক্ষিণ আমেরিকা, মধ্য আফ্রিকা, দূরপ্রাচ্য ও ভূমধ্যসাগরিয় এলাকার প্রাচীনতম সংস্কৃতিসমূহ সম্পূর্ণরূপে বিলীন হয়ে গিয়েছে। তার কারণ এই যে, স্পেন, পর্তুগাল, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও হল্যান্ডের অধিবাসীরা নিজেদের শিক্ষাগত, রাজনৈতিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক তৎপরতার সাহায্যে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে ঐসব অঞ্চলের প্রাচীন সভ্যতা ও সংস্কৃতির নাম-চিহ্ন ও প্রভাব-প্রতিপত্তি সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত ও নিঃশেষ করে দিয়েছে। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকার সংস্কৃতিসমূহ পশ্চাদপদ রয়ে গেছে ।কেননা উন্নতিশীল রাষ্ট্রগুলো থেকে এ অঞ্চলগুলো বহুদূরে অবস্থিত ছিল এবং উন্নতি ও বিকাশ লাভের কোন কারণ বা উদ্যোগই সেখানে ছিলনা। বৈদেশিক আক্রমণ থেকেও এদেশগুলো মুক্ত রয়েছে এবং দুনিয়ার অন্যান্য সভ্যতা-সংস্কৃতিরও কোন ছায়াপাত ঘটেনি এসব দেশের ওপর। নৈসর্গিক উপায়-উপকরণ দুনিয়ার সব দেশের মানুষের জন্যেই সমান। কিন্তু বংশীয় পার্থক্য-বৈষম্য, দৈহিক-মনস্তাত্বিক বিশেষত্ব, লিঙ্গগত প্রভেদ, সমাজের বিশেষ গঠন-প্রণালী ও নিয়মতন্ত্র একটি বিশেষ ধরণের অবয়ব গড়ে তোলে এবং এগুলোর পারস্পরিক দ্বন্দ্বও একটি নবতর বিজয়ী সংস্কৃতির অস্তিত্ব ও উৎকর্ষ দান করে। সংস্কৃতির উৎকর্ষে এমন একটা পর্যায়ও আসে, যখন অধিকতর উৎকর্ষ লাভ ও তার সম্ভবনা ম্লান হয়ে আসে। তবে বিভিন্ন বংশের সংমিশ্রণ, অর্থনৈতিক তৎপরতা ও গণতান্ত্রিক শাসন-পদ্ধতি সংস্কৃতির উৎকর্ষে যথেষ্ট সাহায্য করে থাকে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন