hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিক্ষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

৩৭
ইসলামের জীবন দৃষ্টি
ইসলামের জীবন দৃষ্টি সংক্রান্ত আলোচনায় সর্বপ্রথম উল্লেখ করতে হয় এই বিশ্বলোকে মানুষের স্থান সম্পর্কে। ইসলামের ঘোষণানুযায়ী বিশ্বলোকে মানুষের স্থান সর্বোচ্চে। মানুষের কল্যাণে ও তার ব্যবহারে আসার জন্যে সদাপ্রস্তুত এই গোটা বিশ্বলোক। বাহ্যিক অবয়বের দিক দিয়ে মানুষকে সর্বোত্তম আকার-আকৃতি এবং দেহ কাঠামো ও দেহ-সংস্থা দান করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে মানুষকে দেয়া হয়েছে খিলাফতের মর্যাদা-প্রতিনিধিত্বের দায়িত্ব। মানুষ এ দুনিয়ায় প্রথমে আল্লাহর বান্দাহ। আল্লাহর বন্দেগী, দাসত্ব ও হুকুমবরদারী করাই মানুষের আসল দায়িত্ব ও কর্তব্য। দ্বিতীয়ত, মানুষ এখানে আল্লাহর খলীফা-তার প্রতিনিধি। মানুষকে এই মার্যাদা ও দায়িত্ব দিয়েছে কেবলমাত্র ইসলাম। দুনিয়ার সমাজ ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে অপর কোন একটিতেও মানুষকে এই মর্যাদা দেয়া হয় নি- দেয়া হয়নি তাদেরকে এই সুমহান দায়িত্ব। এ ব্যাপারে ইসলাম একক ও অনন্য ব্যবস্থা-এর কোন তুলনা নেই। আল্লাহর নিকটতম ও অতি সম্মানার্হ সৃষ্টি হল ফেরেশতা। এই ফেরেশতাদেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে মানুষকে সিজদা করার জন্যে। এ-ই যখন অবস্থা, তখন মানুষ আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সিজদা করতে-অন্য কারোর সামনে মাথানত করতে পারে কিভাবে? মানুষের সেবায় বাধ্য করা হয়েছে সমস্ত সৃষ্টিলোককে-বিশ্বলোকের সমস্ত শক্তিকে। সব কিছুকেই মানুষের ব্যবহারাধীন বানিয়ে দেয়া হয়েছে। কুরআনের ঘোষণা হলঃ

وَسَخَّرَ لَكُم مَّا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا مِّنْهُ ۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ

‘‘আকাশমণ্ডলে যা-কিছু আছে আর যা-কিছু রয়েছে পৃথিবীতে, সেই সব কিছুকেই আল্লাহ তা’আলা (হে মানুষ! কেবল) তোমাদেরই কল্যাণে ও ব্যবহারে দৃঢ়ভাবে নিয়োজিত করে দিয়েছেন। আল্লাহর এই ব্যবস্থাপনায় চিন্তাশীল বিবেকবান লোকদের জন্যে অনেক চিন্তা-ভাবনার বিষয় নিহিত রয়েছে, তাতে কোন সন্দেহ নেই।’’ (সূরা যাসিয়াহঃ ১৩)

আল্লাহ তা’আলা মানুষের সম্মান ও মর্যাদা সম্পর্কে ঘোষণা করেছেনঃ

وَلَقَدْ كَرَّمْنَا بَنِي آدَمَ وَحَمَلْنَاهُمْ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَرَزَقْنَاهُم مِّنَ الطَّيِّبَاتِ وَفَضَّلْنَاهُمْ عَلَىٰ كَثِيرٍ مِّمَّنْ خَلَقْنَا تَفْضِيلًا

‘‘নিঃসন্দেহে মানবজাতিকে আমরা বহু সম্মান ও মর্যাদা দান করেছি এবং তাদের বহন করে নিয়েছি স্থলভাগে ও নদীসমুদ্রে আর তাদের রিযিকের ব্যবস্থা করেছি অতীব পবিত্র ও উত্তম উৎকৃষ্ট জিনিস দিয়ে। আর আমার সৃষ্টিকুলের অনেকেরই ওপরে তাদেরকে উচ্চমর্যাদায় অভিষিক্ত করেছি।’’ (সূরা বনী ইসরাঈলঃ ৭০)

সৃষ্টিকুলে মানুষের এই উচ্চতর মর্যাদার পরিপ্রেক্ষিতেই তাদেরকে অতীব উত্তম আকার-আকৃতি দান করা হয়েছে। কুরআন মজিদে বলা হয়েছেঃ

لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنسَانَ فِي أَحْسَنِ تَقْوِيمٍ

“নিশ্চিতই আমরা মানুষকে অতীব উত্তম কাঠামো ও আকার-আকৃতিতে সৃষ্টি করেছি”। (সূরা ত্বীনঃ ৪)

অতঃপর মানুষকে এই ভুবনে আল্লাহ খলীফা নিযুক্ত করা হয়েছে। মানবসৃষ্টির পূর্বেই তার সৃষ্টির উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা ঘোষণা করেছিলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি দুনিয়ার বুকে খলীফা বানাব’। অর্থাৎ দুনিয়ায় মানুষকে খিলাফতের মর্যাদা দিয়ে- খিলাফতের দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করা হয়েছে। মানুষকে চিন্তা-শক্তি, বিবেক-বুদ্ধি ও ন্যায়-অন্যায় বোধ দেয়া হয়েছে জন্মগতভাবেই। এসব বৈশিষ্ট্য অন্য কোন সৃষ্টিকে দেয়া হয়নি। এর উদ্দেশ্য হল মানুষ এখানে আল্লাহর ‘নায়েব’ বা প্রতিনিধি হয়ে সেই সমস্ত কাজই সুসম্পন্ন করবে, যেগুলো সম্পাদনের জন্যে স্বয়ং আল্লাহ তা’আলা তাকে নির্দেশ করেছেন। এজন্যে মানুষকে কর্মক্ষমতা দেয়া হয়েছে, সেই সঙ্গে দেয়া হয়েছে কর্ম-বিধান। মানুষকে এখানে বুদ্ধি-বিবেচনা প্রয়োগের অধিকার দেয়া হয়েছে, স্বেচ্ছাচারিতার নয়। তাকে দৈহিক সৌন্দর্য ও শক্তিমত্তার সঙ্গে সঙ্গে আধ্যাত্মিক শক্তি-সামর্থেও বলীয়ান করা হয়েছে। আল্লাহ তা’আলা ঘোষণা করেছেন, “আমি তাদের দেহে আমারই রূহ ফুঁকে দিয়েছি।“

মানবদেহে যে রূহ বিরাজমান, তা সৃষ্টিকুলের অন্যান্য জীব-জন্তু থেকে সম্পূর্ণ ভিন্নতর। আল্লাহ তাকে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে মণ্ডিত করেছেন-যেমন মানুষ জীব-জন্তু ও ইতর-প্রাণীকুলের ন্যায় নিছক প্রকৃতি ও প্রবৃত্তি দ্বারা চালিত না হয়, যেন সাধারণ জীব-জন্তু ও পোকা-মাকড়ের ন্যায় নিছক জৈব কার্যাদি সম্পন্ন করেই সে মাটির সাথে মিশে না যায়; বরং তারও ঊর্ধ্বস্থিত খোদায়ী খিলাফতের দায়িত্বও যেন সে পালন করতে পারে। বিশ্বলোকের পরতে পরতে লুক্কায়িত সব সম্পদ ও শক্তি যেন পূর্ণ মাত্রায় ব্যয়িত হতে পারে মানুষের এই খিলাফতের মহান দায়িত্ব পালনে। আর এই সব কাজ করতে গিয়ে মানুষ যেন মুহূর্তের তরেও বিস্মৃত না হয় আল্লাহর সম্মুখে তার আসল মর্যাদার কথা-সে একমাত্র আল্লাহর বান্দাহ্-দাসানুদাস, একমাত্র আল্লাহই তার মা’বুদ। তার হৃদয়ে যেন সর্বদা জাগ্রত থাকে আল্লাহর এই ঘোষণাঃ

وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ

‘‘আমি জিন ও মানুষকে কেবলমাত্র আমারই বন্দেগী করার উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছি।’’ (সূরা যারিয়াতঃ ৫৬)

জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে আল্লাহর বন্দেগী করা-আল্লাহর দেয়া বিধান অনুযায়ী দুনিয়ায় সমাজ ও সভ্যতা গড়ে তুলে খিলাফতের দায়িত্ব পালন করাই মানুষের একমাত্র জীবন-উদ্দেশ্য। এ জন্যেই তাকে একটা নির্দিষ্ট মেয়াদের জীবনকাল এবং দুনিয়ার এই বিশাল কর্মক্ষেত্র দান করা হয়েছে। এরূপ সমুচ্চ ও সমুন্নত মর্যাদার অধিকারী মানুষ এক আল্লাহ ছাড়া আর কার সামনে নতি স্বীকার করতে পারে-আনুগত্য স্বীকার করতে পারে আর কোন্ সার্বভৌম শক্তির?

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন