hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিক্ষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

৬৬
বিশ্বলোক সম্পর্কে কুরআন
কুরআন মজীদ বারবার মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে বিশ্বচরাচর ও তার অন্তর্নিহিত ব্যবস্থাদির দিকে। বিশ্বলোক সম্পর্কে চিন্তা-বিবেচনা ও সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম গবেষণা চালিয়ে অতি সহজেই নিম্নোদ্ধৃত সত্যসমূহ লাভ করা যায়ঃ

ক. এই বিশ্বলোক এক মহাসত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত। এখানে একটা স্থায়ী প্রাকৃতিক বিধান সদা কার্যকর এবং তাতে নিহিত রয়েছে শাশ্বত দৃঢ়তা, অবিচলতা ও অকাট্য যৌক্তিকতা তথা কার্যকারণ পরম্পরা। এই বিশ্বলোকের একটা নিয়ম ও ব্যবস্থা রয়েছে; সুনির্দিষ্ট কার্যক্রমও আছে। এ কারণেই বলা যায়, এই বিশ্বলোক কিছুমাত্র অর্থহীন বা উদ্দেশ্যহীন নয় এবং এটি নিতান্তই খেলার ছলে সৃষ্টি করা হয় নি।

খ. সমগ্র বিশ্বলোক ও তার মধ্যে অবস্থিত সমস্ত জিনিস, ব্যবস্থাপনা, তত্ত্ব ও তথ্য যতদূর সম্ভব অধ্যয়ন করা মানুষের কর্তব্য। তাহলে প্রতিটি ক্ষেত্রেই মহান স্রষ্টার অত্যন্ত নিপূণ, কুশলী ও দয়ালু হস্ত ও কুদরতের সন্ধান লাভ করা মানুষের পক্ষে সম্ভবপর হবে।

গ. এই বিশ্বলোকে মানুষ ও সমগ্র সৃষ্টবস্তুর (Beings) মাঝে একট অটুট সম্পর্ক বিদ্যমান। আল্লাহ মানুষকে এই বিশ্বলোকের অনেক কিছুই নিজের আয়ত্তাধীন ও নিয়ন্ত্রণাধীন করার এবং প্রকৃতির বহু শক্তিকে নিজের কল্যাণে ব্যবহার করার শক্তি ও যোগ্যতা দিয়েছেন, যদিও এ ব্যবহারে কোনরূপ বাহুল্য ব্যয়ের অবকাশ থাকা উচিত নয়।

ঘ. বিশ্বপ্রকৃতির গভীর ও সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম অধ্যয়ন ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে মানুষ নিজের বিবেক-বুদ্ধি ও বিস্ময়াবিষ্টতা (Astonishment) প্রয়োগ করে মহান আল্লাহর প্রতি ঈমান গ্রহণের মন-মানসিকতা লাভ করবে।

ঙ. মানুষকে আহ্বান জানান হয়েছে, সে যেন সৃষ্টির দাসত্ব ও বন্দেগীতে নিমজ্জিত না হয়; বরং সে যেন মহান স্রষ্টার দাসত্ব গ্রহণ করে এবং তারই আরাধনা ও উপাসনায় ব্রতী হয়।

এ পর্যায়ে মনে রাখা আবশ্যক যে, কুরআন মজীদ কোন প্রকৃতি-বিজ্ঞানের (Natural Science) গ্রন্থ নয়। কেউ কেউ অবশ্য তা-ই মনে করে মারাত্মক বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে গেছে। কুরআন প্রাকৃতিক ও সমাজতাত্ত্বিক জ্ঞান-বিজ্ঞান অধ্যয়নের জন্যে প্রেরণা দেয়-উদ্বোধন সৃষ্টি করে। এই মহাগ্রন্থে জ্যোতির্বিদ্যা, অংকশাস্ত্র, জীব-জন্তু, প্রাণিবিদ্যা, উদ্ভিদ বিজ্ঞান, ইতিহাস, ভূগোল ও আইন শাস্ত্র অধ্যয়নের জন্যে তাগিদ দেয়া হয়েছে বটে; কিন্তু আসলে কুরআন এ সবেরও ঊর্ধ্বস্থ এক মর্যাদাসম্পন্ন মহাগ্রন্থ। কুরআন মানুষকে বস্তুলোকের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম অধ্যয়ন ও গবেষণার স্তর পেরিয়ে আরও ঊর্ধ্বে, আরো উচ্চতর স্তরে নিয়ে যায় এবং বাহ্যিক দৃশ্যমান জগতের অন্তরালে যে গভীর রহস্য প্রচ্ছন্ন রয়েছে তা মানুষের অবাক দৃষ্টির সম্মুখে উদঘাটিত করে দেয়। কুরআনে যেসব বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিক তত্ত্ব ও জ্ঞানের কথা উল্লেখিত হয়েছে তা স্বতঃই কোন লক্ষ্য নয়, তা মাধ্যম বা প্রসঙ্গত বলা কথা মাত্র। আসলে মানুষের আধ্যাত্মিক ও নৈতিক শিক্ষণ-প্রশিক্ষণের তুলনাহীন গ্রন্থ হচ্ছে এই কুরআন। বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ব যন্ত্র আবিষ্কারের প্রক্রিয়া শিখানোর উদ্দেশ্যে এই কিতাব নাযিল হয়নি। তবে বিশ্বলোক সৃষ্টি এবং এর মধ্যে নিহিত তত্ত্ব-রহস্য ও বিজ্ঞানসম্মত কথা-বার্তার উল্লেখ রয়েছে এর কোন কোন আয়াতে। আমরা এখানে সে পর্যায়ের কয়েকটি আয়াত তুলে দিচ্ছিঃ

خَلَقَ السَّمَاوَاتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا ۖ وَأَلْقَىٰ فِي الْأَرْضِ رَوَاسِيَ أَن تَمِيدَ بِكُمْ وَبَثَّ فِيهَا مِن كُلِّ دَابَّةٍ ۚ وَأَنزَلْنَا مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَأَنبَتْنَا فِيهَا مِن كُلِّ زَوْجٍ كَرِيمٍ

‘‘তিনি আকাশমণ্ডল সৃষ্টি করেছেন কোন দৃশ্যবান খুঁটি ছাড়াই এবং জমিনের বুকে পর্বতমালা শক্ত করে বসিয়ে দিয়েছেন যেন তোমাদেরকে নিয়ে তা হেলতে দুলতে না পারে। আর তাতে নানা প্রকার জীব-জন্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন। আমরা আকাশ থেকে পানি বর্ষন করিয়েছি ও তার সাহয্যে নানাপ্রকার সুন্দর ভাল জুড়ির উদ্ভিদ সৃষ্টি করেছি।’’ (সূরা লুকমানঃ ১০)

এ আয়াতটি অতি সংক্ষেপে আকাশমণ্ডল ও ভূমণ্ডল সৃষ্টি এবং সেই সঙ্গে অসংখ্য প্রকার জীব-জন্তু ও উদ্ভিদ সৃষ্টি ও এ দুয়ের পারস্পরিক সম্পর্কের দিকে ইঙ্গিত করছে।

خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِالْحَقِّ وَصَوَّرَكُمْ فَأَحْسَنَ صُوَرَكُمْ ۖ وَإِلَيْهِ الْمَصِيرُ

‘‘তিনি আকাশমমণ্ডল ও ভূমণ্ডলকে পরম সত্যতা সহকারে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদেরকে দৈহিক কাঠামো দান করেছেন অতীব উত্তম ও সুন্দর আকার-আকৃতিতে। শেষ পর্যন্ত তোমাদেরকে তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।’’ (সূরা তাগাবুনঃ ৩)

إِنَّ اللَّهَ فَالِقُ الْحَبِّ وَالنَّوَىٰ ۖ يُخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ وَمُخْرِجُ الْمَيِّتِ مِنَ الْحَيِّ ۚ ذَٰلِكُمُ اللَّهُ ۖ فَأَنَّىٰ تُؤْفَكُونَ فَالِقُ الْإِصْبَاحِ وَجَعَلَ اللَّيْلَ سَكَنًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ حُسْبَانًا ۚ ذَٰلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ وَهُوَ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ النُّجُومَ لِتَهْتَدُوا بِهَا فِي ظُلُمَاتِ الْبَرِّ وَالْبَحْرِ ۗ قَدْ فَصَّلْنَا الْآيَاتِ لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ وَهُوَ الَّذِي أَنشَأَكُم مِّن نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ فَمُسْتَقَرٌّ وَمُسْتَوْدَعٌ ۗ قَدْ فَصَّلْنَا الْآيَاتِ لِقَوْمٍ يَفْقَهُونَ وَهُوَ الَّذِي أَنزَلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَأَخْرَجْنَا بِهِ نَبَاتَ كُلِّ شَيْءٍ فَأَخْرَجْنَا مِنْهُ خَضِرًا نُّخْرِجُ مِنْهُ حَبًّا مُّتَرَاكِبًا وَمِنَ النَّخْلِ مِن طَلْعِهَا قِنْوَانٌ دَانِيَةٌ وَجَنَّاتٍ مِّنْ أَعْنَابٍ وَالزَّيْتُونَ وَالرُّمَّانَ مُشْتَبِهًا وَغَيْرَ مُتَشَابِهٍ ۗ انظُرُوا إِلَىٰ ثَمَرِهِ إِذَا أَثْمَرَ وَيَنْعِهِ ۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكُمْ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ

‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ জীব ও আঁটি থেকে অঙ্কুর সৃষ্টিকারী। তিনি মৃত থেকে জীবিতকে বের করেন এবং মৃতকে বের করেন জীবিত থেকে। …..এই সব কাজেরই আসল কর্তা হচ্ছেন তোমাদের আল্লাহ। তাহলে তোমরা কোথায় বিভ্রান্ত হচ্ছ? রাত্রির আবরণ দীর্ণ করে তিনি প্রভাত-রশ্মির উন্মেষ করেন। তিনি রাত্রিকালকে শান্তিময় বানিয়েছেন এবং সূর্য ও চন্দ্রের আবর্তনের হিসাব নির্দিষ্ট করেছেন। এ হচ্ছে পরাক্রমশালী ও মহাজ্ঞানী আল্লাহর নির্ধারিত পরিমাপ। তিনিই তোমাদের জন্যে নক্ষত্ররাজি সৃষ্টি করেছেন, যেন তোমরা সেসব দ্বারা স্থল ও জলভাগের পুঞ্জীভূত অন্ধকারে পথ বের করে নিতে পার। নিশ্চয়ই আমরা নিদর্শনাবলীকে খোলাখুলিভাবে বর্ণনা করেছি জ্ঞানী-গুণী লোকদের জন্য। তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন একটিমাত্র প্রাণী (ব্যক্তি) থেকে। অতঃপর প্রত্যেকের জন্যে একটি স্থিতি লাভের স্থান ও একটি গচ্ছি রাখার স্থান নির্দিষ্ট রয়েছে। আমরা সমঝদার লোকদের জন্যে এই নিদর্শনসমূহ ভিন্ন ভিন্ন ভাবে পেশ করলাম। তিনিই ঊর্ধ্বলোক থেকে পানি বর্ষণ করিয়েছেন। অতঃপর তার সাহায্যে আমরা প্রতিটি উদ্ভিদ সাজিয়েছি। অতঃপর তা থেকে বের করেছি সবুজ-শ্যামল ক্ষেত-খামার এবং তা থেকে বের করেছি নানা কোষসম্পন্ন দানা আর খেজুর মোচা থেকে তার ভারনত ছড়াগুচ্ছ বানিয়েছি এবং আঙ্গুর, জয়তুন ও আনারের বাগান সাজিয়ে দিয়েছি, যেখানে ফলসমূহ পরস্পর সদৃশ কিংবা পরস্পর বিভিন্ন। তোমরা এ সবের ফল লক্ষ্য করে দেখ যখন তা বাহির হবে ও পাকবে। নিশ্চয়ই এ সবের মধ্যে ঈমানদার লোকদের জন্যে নিদর্শনাদি রয়েছে।’’ (সূরা আল–আন’আমঃ ৯৫–৯৯)

وَمَا خَلَقْنَا السَّمَاءَ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا لَاعِبِين لَوْ أَرَدْنَا أَن نَّتَّخِذَ لَهْوًا لَّاتَّخَذْنَاهُ مِن لَّدُنَّا إِن كُنَّا فَاعِلِينَ بَلْ نَقْذِفُ بِالْحَقِّ عَلَى الْبَاطِلِ فَيَدْمَغُهُ فَإِذَا هُوَ زَاهِقٌ ۚ وَلَكُمُ الْوَيْلُ مِمَّا تَصِفُونَ

‘‘আকাশমণ্ডল ও ভূমণ্ডল এবং এ দুয়ের মাঝে যা কিছু রয়েছে তা আমরা নিতান্ত খেলার ছলেই সৃষ্টি করিনি। আমরা যদি এই সব খেলার সামগ্রীরূপে বানাতে চাইতাম, তাহলে আমরা তা-ই করতাম যদি তা করতে আমরা প্রস্তুত হতাম; বরং আমরা প্রকৃত সত্যকে দিয়ে বাতিলের ওপর আঘাত হানি, তা তার মস্তক চূর্ণ করে দেয় এবং চোখের সামনেই তা বিলীন ও নির্মূল হয়ে যায়। ….তোমরা যেসব কথা-বার্তা বলে বেড়াও সে জন্যে ধ্বংস তোমাদের জন্য অবশ্যম্ভাবী।’’ (সূরা আম্বিয়াঃ ১৬–১৮)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন