hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিক্ষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

৭৩
আমাদের জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা
আমাদের দেশে যে শিক্ষা ব্যবস্থা বর্তমানে চালু রয়েছে-বিশেষ করে ‘আধুনিক শিক্ষা’ নামে যা পরিচিত তা-ই হচ্ছে আমাদের জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা। এই শিক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি সাম্রাজ্যবাদী এবং আমাদের এককালের শাসক ইংরেজদের দ্বারা প্রণীত ও প্রবর্তিত। এ শিক্ষাব্যবস্থার প্রবর্তক লর্ড মেক্‌লে সুপারিশ করেছিলেন এমন এক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করার জন্যে যাতে শিক্ষাপ্রাপ্ত লোকেরা হবে Indian in blood and colour but English in taste, in opinion, in intellect. অর্থাৎ রক্ত ও বর্ণে ভারতীয়, কিন্তু রুচিবোধ মনোবৃত্তি ও বুদ্ধিমত্তায় ইংরেজ। এ সুপারিশ যে গ্রহীত হয়েছিল এবং এরই ভিত্তিতে উপমহাদেশের গোটা শিক্ষাব্যবস্থাই যে চালু করা হয়েছিল, তাতো আমরা প্রত্যক্ষ করছি। শুধু তা-ই নয়, সে আমলে তারা সকল স্তরে এই শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে বৈষয়িক, রাজনৈতিক ও সামজিক উন্নতি ও অগ্রগতি লাভের চাবিটিও এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দ্বার-দেশে ঝুলিয়ে রেখেছিল। তার বাস্তব অর্থ এই ছিল যে, বৃটিশ শাসনে যদি কেউ সামাজিক দিক দিয়ে মর্যাদা, রাজনৈতিক দিক দিয়ে নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব এবং অর্থনৈতিক দিক দিয়ে চাকুরী বা ব্যবসা করে সমৃদ্ধি লাভ করতে চায়, তবে তাকে অবশ্যই উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে সনদ লাভ করতে হবে। এই সনদই হবে তার উপরিউক্ত ক্ষেত্রসমূহে সর্ববিধ সুযোগ বা স্বীকৃতি লাভের একমাত্র হাতিয়ার।

বাস্তবে হয়েছেও তা-ই। এই শিক্ষা ব্যবস্থার অধীনের শিক্ষাপ্রাপ্ত লোকেরাই বৈষয়িক জীবনের সর্বক্ষেত্রে সর্ববিধ সুযোগ-সুবিধা লাভ করেছে। ফলে গোটা উপমহাদেশীয় জনতা স্বাভাবিকভাবেই এই শিক্ষা ব্যবস্থার অধীনে শিক্ষা লাভের জন্যে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তখন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত এই শিক্ষা ব্যবস্থাকেই এতদাঞ্চলের লোকেরা জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থা নামে চিহ্নিত ও অভিহিত করে আসছে। দুই দুই বারের ‘স্বাধীনতাও’ ইংরেজ শাসকদের প্রবর্তিত গোলাম তৈরীর এ শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে আমাদেরকে ‘স্বাধীন’ ও মুক্ত করতে পারেনি।

ইংরেজদের প্রবর্তিত এই ‘আধুনিক’ শিক্ষা ব্যবস্থার বাস্তব ফল অবিলম্বেই দেখা দিয়েছিল। তার গুরুতর ফল ছিল এই যে, বিশেষ করে মুসলমানদের সার্বিক জীবনে চরম বিকৃতি ও বিপর্যয় দেখা দিল।

এখানে স্মর্তব্য, ইংরেজরা যে সময়ে উপমহাদেশে এই শিক্ষাব্যবস্থা চালু করেছিল ইউরোপ তখন সর্বতোভাবে ধর্মনিরপেক্ষতার পর্যায় অতিক্রম করে ধর্মহীনতার পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। গীর্জার প্রভাব ও কর্তৃত্ব থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত হয়ে গেছে তাদের রাষ্ট্র রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, শিক্ষা, সংস্কৃতি, বৈদেশিক নীতি-এককথায় তাদের গোটা ব্যক্তি জীবন ও সামষ্টি জীবন। শুধু তা-ই নয়, গীর্জার এই প্রভাব-মুক্তির সাথে সাথে আল্লাহদ্রোহী চিন্তা-বিশ্বাস ও ভাবধারা সমন্বিত নানা মতবাদ তাদের গোটা জীবনকে পরিবেষ্টিত করে নিয়েছিল। ডারউইনীবিবর্তনবাদ তাদেরকে বানিয়ে দিয়েছিল, আল্লাহ-অবিশ্বাসী, মার্কসীয় দর্শন তাদেরকে বানিয়ে দিয়েছিল নবুয়্যাত, আখিরাত ও কিতাবের প্রতি চরম বিদ্রোহী। মেকিয়াভেলীর রাষ্ট্রদর্শন তাদেরকে বানিয়েছিল ধোঁকাবাজ-প্রতারক ও সুবিধাবাদী এবং ফ্রয়েডীয় নীতিদর্শন তাদের বানিয়ে দিয়েছিল যৌনতাবাদী ও ব্যভিচারী। মোটকথা, ধর্মবিবর্জিত মূল্যমান (Values) তখন তাদের সকল কাজের মানদণ্ড হয়ে গেছে এবং তাদের প্রবর্তিত এদেশীয় শিক্ষাব্যবস্থায়ও এই সকল ভাবধারা উদারভাবে প্রবেশ করেছে। ফলে কথিত শিক্ষাব্যবস্থা এদেশের ধর্মবিশ্বাসী মুসলিম-হিন্দু-বৌদ্ধদের কোন্ রসাতলে ঠেলে দিতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।

তারা এদেশে শিক্ষাব্যবস্থায় উপরিউক্ত চিন্তা-বিশ্বাস ও ভাবধারা সমন্বিত রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অথর্নীতি, সমাজবিদ্যা, মনস্তত্ববিদ্যা, রসায়নশাস্ত্র, পদাথর্বিদ্যা ও ভূগোলশাস্ত্রকে শামিল করেছিল। ফলে এই সব চিন্তা-দর্শন বিজ্ঞানের নামাবলী পরে এদেশে জ্ঞান-পিপাপু মুসিলম-হিন্দু-বৌদ্ধ ছেলে-মেয়েদের মনে-মগজে শক্তভাবে শিকড় গেড়ে বসার সুযোগ পেয়েছিল।

এর প্রত্যক্ষ প্রতিক্রিয়া এদেশের শিক্ষিত লোকদের মননে, জীবনে ও চরিত্রে অবিলম্বে দেখা দির। মুসলিম পরিবারের ঈমানদার ছেলে-মেয়েরা শিক্ষার নামে ঐসব শাস্ত্র গলধঃকরণ করে সম্পূর্ণরূপে বিগড়ে গেল। আল্লহ, রাসূল, কিতাব ও পরকালের প্রতি তারা ঈমান হারিয়ে ফেলল। ইসলামের হালাল-হারাম তাদের নিকট প্রথমে হল অস্বীকৃত এবং পরে উপহাসের বস্তু। অতঃপর এদেশে যে ধরণের বিদ্বানদের জন্ম হতে লাগল, তাদের সাক্ষাত নমুনা স্বরূপ একটি ব্যক্তিত্বের কলমি-চিত্র এখানে উদ্ধৃত করছি। কাজী আবদুল অদুদ প্রসঙ্গে অন্নদাশংকর রায় লিখেছেনঃ

‘‘কাজী আবদুল অদুদ ছিলেন জাতিতে ভারতীয়, ভাষায় বাঙালী, ধর্মে মুসলমান, জীবন দর্শনে মানবতাবাদী, মতবাদে রামমোহনবাদী, সাহিত্যে গ্যেটে ও রবীন্দ্রপন্থী, রাজনীতিতে গান্ধী ও নেহেরুপন্থী, অর্থনৈতিক শ্রেণী বিচারে মধ্যবিত্ত ভদ্রলোক, সামাজিক ধ্যান-ধারণায় ভিক্টোরিয়ার লিবারল।’’ (বিচিত্রাঃ ২১ জানুয়ারী ৭৭)

বলুনতো এই ব্যক্তিটি আসলে কি?

কিছুই নয়; কোন সুনির্দিষ্ট পরিচয়ই তাঁর নেই। [অথচ এই ধরণের পরিচয়হীন লোকেরাই একালে বুদ্ধিজীবি নামে খ্যাত। এরাই জাতির কাণ্ডারীর ভূমিকায় অভিনয় করতে সদা প্রয়াসী।– সম্পাদক] এটাই হচ্ছে পাশ্চাত্য শিক্ষা পরিণতি। ইংরেজ প্রবর্তিত শিক্ষা লাভ করে এদেশর মুসলিম সন্তানরা আত্ম-পরিচিতিই হারিয়ে ফেলছে। এ শিক্ষার পরিকল্পনা রচনাকারীর মূল লক্ষ্যই ছিল এদেশের এইরূপ লোক তৈরী করা।

এ শিক্ষায় শিক্ষাপ্রাপ্ত লোকেরা শিক্ষা নামে স্বীয় ব্যক্তিত্ব, স্বাতন্ত্র্য আত্মপরিচিতি ও বিশেষত্ব সবই হারিয়ে ফেলছে। এরা প্রকৃত অর্থে শিক্ষিত নয়; বরং মূর্খ। এদেরকে শুধু মেরুদণ্ডহীন প্রাণীর সঙ্গেই তুলনা করা চলে। এরা হারিয়েছে নিজেদের ঈমান, মূল্যমান ও চরিত্র। তদুপরি ইংরেজ প্রবর্তিত সহশিক্ষা সোনায় সোহাগার কাজ করেছে। ছাত্র-ছাত্রী তথা যুবক-যুবতীর অবাধ মেলামেশার সুযোগ পেয়ে নারী-পুরুষের স্বাভাবিক লজ্জা-শরমও হারিয়ে ফেলেছে। ন্যায়-অন্যায় ও পাপ-পূণ্যের বোধ হারিয়ে এরা আসলে সর্বহারায় পরিণত হয়েছে। তাদের ইংরেজ প্রভুরা নিজেদের তৈরী পুতুলদেরই লাগিয়েছে এ দেশে তাদের নীতি চরিত্র, দৃষ্টিভঙ্গি ও মতাদশের্র ব্যাপক প্রচার কার্যে। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এরা চালু করেছে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ এবং অর্থনীতিতে চালু করেছে জুলুম-শোষণ, সুদ-ঘুষ ও লুটতরাজ। ইংরেজরা চলে যাওয়ার পর এরাই এইসব অপকর্ম চালিয়েছে অত্যন্ত উৎসাহের সাথে। এরা সরকারী ক্ষমতা ব্যবহার করে এদেশের মানুষের ওপর চালিয়েছে অমানুষিক নির্যাতন। এরা প্রভুত্ব ও কর্তৃত্বের অহমিকায় সাধারণ মানুষকে মনে করছে ছাগল বা ভেড়ার পাল। এরাই সর্বত্র চরিত্রহীনতার সয়লাব বইয়ে দিয়েছে; মদ্যপানকে ব্যাপক করেছে, ব্যভিচারে দেশটাকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে গেছে। এদেরই প্রভাবে জাতির নব্য যুবকরাও একই পথে এগিয়ে চলেছে। ফলে মানুষ বানাবার বড় বড় কারখানা তথা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জাতির ভবিষ্যত বংশধরকে ভেড়া ও গাধা বানিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে। বড় বড় শিক্ষাঙ্গনে আজ যা কিছু ঘটছে তা সেই শিক্ষা ও পরিবেশেরই অনিবার্য ফল। এ শিক্ষা থেকে প্রকৃত মানুষ তৈরী হতে পারেনা। মানুষকে গাধা-ভেড়া বা শিয়াল-কুমির বানানো যায় আর তা-ই চলছে বছরের পর বছর ধরে। বর্তমানে জনগণ যে চরম দুরবস্থার মধ্যে নিপতিত, তার মূলে রয়েছে এই শিক্ষাব্যবস্থার ধ্বংসাত্মক ভূমিকা; অথচ একেই আমরা জাতীয় শিক্ষা বলি আর এরই জন্যে জাতীয় বাজেটের এক বিরাট অংশ ব্যয় করি। আমাদের কর্তা ব্যক্তিরা এর সাথে যুক্ত করতে চান প্রাথমিক পর্যায়ে কিছুটা কুরআন শিক্ষা। অথচ কাকের পুচ্ছে সাথে ময়ুরের দুটি পালক জুড়ে দিলেই কাক কখনো ময়ুর হতে পারে না।

জাতীয় শিক্ষা নামে এদেশে বৃটিশ আমল থেকে চলে এসেছে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা। শিক্ষাব্যবস্থায় আদর্শিক পরিবর্তন সাধনের জন্য ১৯৪৭ পরবর্তীকালে দেশের আদর্শন-সচেতন জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে বার-বার দাবি উঠেছে। কোন কোন সময় সে দাবি এতটা প্রচণ্ড রূপ পরিগ্রহ করেছে যে শাসনদণ্ড ধারণকারী বৃটিশের অন্ধ গোলামরা পর্যন্ত তার কাছে নতি স্বীকার করে শিক্ষাব্যবস্থায় আদর্শিক পরিবর্তন আনার প্রকাশ্য ও বলিষ্ঠ ওয়াদা করতে বাধ্য হয়েছে। সে ওয়াদার পরিপ্রেক্ষিতে একে পর এক শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়েছে; সেসব কমিশন দীর্ঘ সময় ধরে চিন্তা-গবেষণা চালিয়ে একের পর এক রিপোর্ট তৈরী করেছে। কিন্তু সে সব রিপোর্টের শিক্ষাব্যবস্থার মৌলিক ও আদর্শিক পরিবর্তনের কোন প্রস্তাব আদপেই আসেনি অথবা কখনো কিছু পরিবর্তনের প্রস্তাব থাকলেও কার্যত তার দ্বারা সেই কাকের পুচ্ছে ময়ূরের দু-একটি পালক জুড়ে দিয়ে ‘সম্পূর্ণ ময়ূর’ নামে চালিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা হয়েছে মাত্র। কিন্তু এভাবে কাককে ময়ূরে পরিবর্তিত করা যে আদৌ সম্ভব নয়; বরং তা করতে চাওয়া যে নিতান্তই ধোঁকাবাজি, তা অনুধাবন করার মতো সাধারণ বুদ্ধিটুকুও দেখা যায়নি সে কমিশন সদস্যদের মধ্যে। ফলে এ পর্যায়ের সমস্ত অর্থ ও সময় ব্যয়ই সম্পূর্ণরূপে নিষ্ফল হয়ে গেছে। জাতীয় শিক্ষায় সত্যিকার অর্থে কোন আদর্শিক পরিবর্তনই আসেনি-আসা সম্ভব হয়নি।

কিন্তু কেন তা সম্ভব হয়নি, প্রশ্ন করা হলে তার একটিমাত্র জবাবই হতে পারে। আর তাহল, গঠিত শিক্ষা কমিশন বা কমিশনের সদস্যগণ প্রচলিত শিক্ষায়ই শিক্ষিত বলে তাঁরা শিক্ষা ক্ষেত্রে অন্য কোন আদর্শের কথা চিন্তাই করতে পারেন নি। জাতীয় আদর্শ সম্পর্কে তাঁরা কিছুমাত্র অবহিতও নন এবং ছিলেন না। জনগণের চিন্তা-ভাবনা ও দাবি-দাওয়ার সাথে তাঁদের কোন পরিচিতিও ঘটেনি। ফলে তারা শিক্ষার ক্ষেত্রে জাতীয় আশা-আকাঙ্ক্ষার কোন প্রতিফলনই ঘটাতে সক্ষম হননি। এই কথা কেবল যে বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষিতেই সত্য তা-ই নয়, এর পূর্বেও যতবারই এরূপ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, ততবারই এটা প্রমাণিত হয়েছে। বস্তুত আদর্শহীন শিক্ষাপ্রাপ্ত লোকেরা যেমন শিক্ষা সংক্রান্ত পরিকল্পনায় কোন রূপ আদর্শিক পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম নয়, তেমনি জনগণের চিন্তা-ভাবনা ও আশা-আকাঙ্ক্ষার সাথে সম্পূর্ণ অপরিচিত লোকদের পক্ষেও সম্ভব নয় শিক্ষা-পরিকল্পনায় তার কিছুমাত্র প্রতিফলন ঘটানো। বর্তমানেও দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে যে বড় বড় গালভরা বুলি কপচানো হচ্ছে তারও পরিণতি যে একইরূপ হবে, তা এ পর্যন্ত সংঘটিত ঘটনাবলী দ্বারা নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হয়েছে। একেতো যাঁরা জাতীয় শিক্ষা পর্যায়ে নতুন পরিকল্পনা বা পরিবর্তনের কথা বলেছেন, তাঁরা নিজেরাই কোন আদর্শ শিক্ষায় শিক্ষিত নন- তদুপরি শিক্ষা আদর্শ সম্পর্কেও তাদের আদৌ কোন ধারণা নেই। কাজেই এহেন ব্যক্তিরা শিক্ষায় কোন আদর্শিক পরিবর্তন আনতে সমর্থ হতে পারে না।

দ্বিতীয়ত তারা এ-ও জানেন না যে, শিক্ষা-ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার গণ-দাবির মূলে কোন্ আদর্শের প্রেরণা কাজ করছে এবং কিরূপ পরিবর্তন জনগণের কাম্য। তাঁরা যা পারবেন তা তো দেখাই গেছে- প্রাথমিক পর্যায়ে আরবী ও ইংরেজী বাধ্যতামূলক করার কথা বলে তাঁরা একদিকে সাধারণ মুসলিম জনতাকে ও অপরদিকে আধুনিক শিক্ষিত পাশ্চাত্যপন্থীদের তুষ্ট করতে চেয়েছেন। কিন্তু মুসলিম জনগণের দাবি যে প্রাথমিক পর্যায়ে কিছুটা আরবী পড়িয়ে দেয়া নয়, বরং নিম্নস্তর থেকে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত পরিপূর্ণ ইসলামী আদর্শ-ভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থাই যে একান্তভাবে কাম্য, তা এখনকার শিক্ষা কর্তৃপক্ষ আদৌ বুঝতে পারেন না। আসলে আরবী ভাষাই কেবল নয়, পুরোপুরি ইসলামী আদর্শ-ভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করাই হচ্ছে জনগণের দাবি। প্রাথমিক পর্যায়ে শুধু কুরআন-শিক্ষার ব্যবস্থা করলেই এ দাবি পূরণ হতে পারে না। গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাকেই নীচ থেকে ওপর এবং প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ঢেলে সাজানোর দাবি করে আসলে এদেশের মুসলিম জনতা। কিন্তু আগের কালের মতো এখনকার শিক্ষা বিভাগীয় কর্মকর্তা ও দেশের কর্তাব্যক্তিরা সেদিকে ভ্রুক্ষেপ মাত্র করছেন না। আর ভ্রুক্ষেপ করবেন-ই বা কি করে। ডারউইনী থিওরী মতে, মানবাকৃতি লাভের পর মগজের যত উৎকর্ষই হোকনা কেন ‘বানরত্ব’ থেকে তো মুক্তি ঘটেনি এই কর্তাদের। তাই তাঁদের নিকট থেকে ‘মানবত্ব’ তথা প্রকৃত মানবোপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা পাওয়ার আশা করাই বৃথা। তাঁরা পারে ঝগড়া বাঁধাতে, ঝগড়ার সৃষ্টি করতে এবং যাদের পক্ষ থেকে ঢিল-পাথর বেশী আসে তাদের নিকটই মাথানত করতে, যদিও দূরে বসে ভ্যাংচাতেও তারা ভোলেন না।

আসলে শিক্ষাব্যবস্থায় বৈপ্লবিক ও আদর্শিক পরিবর্তন আনা ছাড়া উপায়ন্তর নেই এবং তা সম্ভব এক সর্বাত্মক বিপ্লবী কার্যক্রমের মাধ্যম। তাই ইসলামী বিপ্লব একান্তই অপরিহার্য যা একই সাথে সমগ্র জীবনকে-জীবনের সব দিক ও বিভাগকে শুরু থেকেই ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে গড়ে তুলবে। 

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন