hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিক্ষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

৪২
মানবীয় একত্ব ও ব্যাপকতা
আধুনিক শিক্ষাদর্শন ও শিক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় মতাদর্শ খৃস্টবাদের ক্রোড়ে ভূমিষ্ট ও লালিত-পালিত। এ কারণেই এ শিক্ষা ব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে দ্বীন ও দুনিয়া তথা ধর্ম ও সমাজ এবং ইহকাল ও পরকালেরর দ্বৈততার ওপর। এরই ফলে খৃষ্ট ধর্ম কয়েকটি আকীদা-বিশ্বাস, নৈতিক আচার-আচরণ ও উপাসনা সংক্রান্ত কতিপয় অনুষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ। সমাজ, রাজনীতি, রাষ্ট্রব্যবস্থা ও অর্থনীতির সাথে এ ধর্মের দূরতম কোন সম্পর্কও নেই। তাই ধর্ম সম্পর্কে ব্যাপক কোন ধারণা এ শিক্ষাব্যবস্থায় খুঁজে পাওয়া যায় না। মানুষের ঐক্য, একতা ও অভিন্নতা পর্যায়ে বিন্দুমাত্র ধারণাও এ ব্যবস্থায় ‘শিক্ষাপ্রাপ্ত’ লোকদের মনে-মগজে স্থান পায়নি।

পক্ষান্তরে ইসলাম এক পূর্ণাঙ্গ ও সর্বব্যাপক জীবন-বিধান। মানুষের ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত জীবনের সমস্ত ক্ষেত্র ও ব্যাপার সম্পর্কে ইসলামের শিক্ষা অত্যন্ত সমুজ্জ্বল। মানুষের বাস্তব জীবনধারাকে বিশ্লেষণ করা হলে তিনটি পর্যায় সুস্পষ্ট হয়ে ওঠেঃ

ক. ব্যক্তির সম্পর্ক তার স্রষ্টার সঙ্গে-আনুষ্ঠনিক ইবাদতসমূহই হল এ সম্পর্কের বাস্তব রূপ।

খ. ব্যক্তির সম্পর্ক দুনিয়ার অন্যান্য মানুষ ও সৃষ্টিকুলের সঙ্গে- সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন এই সম্পর্কের অভিব্যক্তি।

গ. ব্যক্তির সম্পর্ক স্বয়ং তার নিজের সঙ্গে- এ সম্পর্কেরই অপর নাম চরিত্র বা নৈতিকতা।

ইসলাম এই সবকটি দিক ও বিভাগেই মানুষকে সুস্পষ্ট বিধান দিয়েছে। এই সব ক’টি বিভাগ সম্পর্কে ইসলাম ‘আঙ্গিক একত্ব ও অবিচ্ছিন্নতার’ ব্যাপক ধারণা পেশ করেছে। দুনিয়ার অন্যান্য ধর্ম ও মতাদর্শ তথা সমাজব্যবস্থার তুলনায় ইসলামের বৈশিষ্ট্য, বিশেষত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব এখানেই অনুধাবনীয়। এতে ঈমান আমলের সমস্ত ভাবধারা এতই সুসংবদ্ধ ও অবিচ্ছিন্ন যে, এই সব ক’টি ক্ষেত্রে ইসলামী আদর্শ কার্যকর না হলে মানুষের ধর্মীয় জীবন ও পূর্ণাঙ্গ রূপ লাভে ব্যর্থ হতে বাধ্য। তাই ইসলামী শিক্ষা-দর্শনেও এই সামগ্রিক রূপ প্রতিভাত হওয়া একান্তই অপরিহার্য। কিন্তু পাশ্চাত্য শিক্ষা-দর্শন এই সামগ্রিকতার চেতনা থেকে সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত।

ইসলাম মানুষেকে শুধু অধিকারের (Rights) কথাই শিখায় না। সেই সঙ্গে তার কর্তব্যের (Obligations) কথাও বলিষ্ঠভাবে ও বিশেষ গুরুত্ব সহকারে শিক্ষা দেয়। যে শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা এক সঙ্গে তাদের কর্তব্য ও অধিকার উভয় দিকে পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান অর্জন করার সুযোগ পায় এবং উভয় দিকের দায়িত্ব এক সঙ্গে পালন করার অদম্য প্রেরণা লাভ করে, তা-ই মানুষের জন্যে ভারসাম্যপূর্ণ (Well-balanced) শিক্ষা ব্যবস্থা। ইসলাম মানুষকে প্রথমে আত্মচেতনায় বলিষ্ঠ করে তোলে। সেই সঙ্গে স্রষ্টা ও সৃষ্টি উভয় দিকের কর্তব্য এবং উভয় দিক সম্পর্কে নিজের দায়িত্বের কথা বিশদভাবে জানিয়ে দেয়। ইমাম আবূ হানীফা র. ইসলামী ব্যবহার শাস্ত্রের সংজ্ঞা দিয়েছেন এই ভাষায়ঃ

‘‘নিজেকে চেনা, সেই সঙ্গে নিজের কি অধিকার এবং অন্যের (স্রষ্টা ও সৃষ্টির) প্রতি তার কি কি দায়িত্ব ও কর্তব্য, তা বিশদভাবে জানতে পারাই ইসলামের ব্যবহারিক শাস্ত্র বা বিধান।’’

মানুষ নিজের ক্ষমতা বা ইচ্ছায় এই জগতে আসতে পারেনি। সে স্রষ্টার সৃষ্টি। স্রষ্টা তাকে বিশেষ ক্ষমতা, যোগ্যতা ও প্রতিভা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন তাঁর বন্দেগী ও মানুষের কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে। ইসলামী শিক্ষা-দর্শনের মৌলিক ভাবধারা এখানেই বিধৃত। নামায-রোযা, হজ্জ-যাকাত, বিয়ে-তালাক, সন্তান প্রজনন, সন্তান পালন, সামাজিক সদাচার, সুবিচার-ইনসাফ, বিচার-সালিশ ও ন্যায়পরায়ণতা থেকে শুরু করে শিক্ষা-সভ্যতা-সংস্কৃতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, লেন-দেন, নৈতিকতা ও আধ্যাত্মবাদ, কৃষি-শিল্প, রাজনীতি, রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও রাষ্ট্র-শাসন, আইন ও বিচার, অর্থনীতি, অর্থোপার্জন ও ব্যয়-বণ্টন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক-সম্বন্ধ, যুদ্ধ-সন্ধি ও জোটগঠন-এসব কিছুই ইসলামী ব্যবহার শাস্ত্রের আওতাভুক্ত। এতেই রয়েছে মানুষের বস্তুগত, মানসিক, নৈতিক আধ্যাত্মিক-সর্বদিকের লালন-পালন, বিকাশ সাধন ও উন্নয়নের বিপুল প্রেরণা। ইসলামী শিক্ষা-ব্যবস্থা এই ব্যাপক ও অখণ্ড ভিত্তির ওপর সংস্থাপিত ও প্রতিফলিত। একটি মাত্র দিক সম্পর্কিত শিক্ষা মানুষ গড়ার শিক্ষা হতে পারে না। তাই ইসলামী শিক্ষার বাস্তব রূপ বিশ্বনবীর দরবারে লক্ষণীয়। অন্য কোথাও তার ভাবমূর্তি খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। ইসলাম স্রষ্টার আরাধনা-উপাসনার কয়েকটি অনুষ্ঠানের শিক্ষা দিয়ে শিক্ষা দানের দায়িত্ব এড়াতে সম্পূর্ণ নারাজ। পক্ষান্তরে কেবলমাত্র বৈষয়িক সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য লাভের উপায় সংক্রান্ত জ্ঞান দিয়েই ইসলাম মনে করে না যে, মানুষের প্রয়োজনীয় শিক্ষা সম্পূর্ণ হয়ে গেল। দুনিয়ার প্রয়োজনীয় জ্ঞান-বিজ্ঞান শিক্ষা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীর অন্তর ও হৃদয় পরিচ্ছন্ন ও পবিত্র করে তোলার দায়িত্ব এক সঙ্গে পালন করার সংকল্পে ইসলামের দৃঢ়তা অপরিবর্তনীয়। কুরআনের বিশ্ব নবীর শিক্ষাদান পদ্ধতি বর্ণনায়ও তা ধ্বনিত ও ঝংকৃত।

يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ

‘‘তিনি (রাসূল) লোকদের সামনে আল্লাহর নিদর্শনাদি পেশ করেন, তাদের পবিত্র, পরিচ্ছন্ন ও পরিশুদ্ধ করেন। আর তাদের সামগ্রিক বিধানসম্পন্ন কিতাবের শিক্ষাদান করেন এবং শেখান বুদ্ধি-প্রজ্ঞা ও বিবেচনা পদ্ধতি।’’ (সূরা জুম’আঃ ২)

কুরআনের নির্দেশ হলঃ

‘‘বাহ্যিক দিক দিয়ে যা পাপ তাও পরিহার কর-পরিহার কর যা পাপ ভিতরের দিক থেকে।’’

তাই ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থায় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পূণ্যময় কাজের নির্দেশনার সাথে সাথে যাবতীয় বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ পাপ জানিয়ে দেয়া এবং তা থেকে নিজেকে রক্ষা করার প্রবণতা তীব্র করে তোলা অপরিহার্য। পূর্ণাঙ্গ ইসলামী শিক্ষায় জীবনের কোন একটি দিকও অজ্ঞানতার অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকতে পারে না। সকল দিকের সব তত্ত্ব, তথ্য ও বিধান উজ্জ্বল ও উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে শিক্ষার্থীর জ্ঞান-দৃষ্টির পরিধিতে ও পরিমণ্ডলে। এ-ই হচ্ছে ইসলামী শিক্ষার সুফল।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন