hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিক্ষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

২৫
মানুষের বৈশিষ্ট্য
আধুনিক শিক্ষা মানুষকে নিতান্ত একটি জীব হিসেবেই গড়ে তুলতে চাইছে। আর জীব-জন্তুর বেলায় কোন নৈতিকতার প্রশ্ন ওঠতে পারেনা বিধায় মানবীয় শিক্ষাকেও সম্পূর্ণ নৈতিকতা-বিবর্জিত করে রাখা হয়েছে। অথচ মানুষ সম্পর্কে পরম সত্য হচ্ছে, মানুষ নৈতিক জীব- নৈতিকতাই তার আসল সম্পদ। নৈতিক জীব বলেই মানুষ ‘আশরাফুল মাখলুকাত’। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেনঃ

وَلَقَدْ كَرَّمْنَا بَنِي آدَمَ وَحَمَلْنَاهُمْ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَرَزَقْنَاهُم مِّنَ الطَّيِّبَاتِ وَفَضَّلْنَاهُمْ عَلَىٰ كَثِيرٍ مِّمَّنْ خَلَقْنَا تَفْضِيلًا

‘‘নিশ্চয়ই আমরা মানব সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, আমরা তাকে স্থলে ও জলে চলাচলের বাহন দিয়েছি, তাদেরকে উত্তম জীবন-উপকরণ প্রদান করেছি এবং তাদেরকে অনেক সৃষ্ট বস্তুর ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি।’’ (সূরা বনী–ইসরাঈলঃ ৭০)

মানব-সত্তা এক সঙ্গে বস্তুগত ও নির্বস্তুক শক্তির সমন্বয়। একটি ছাড়া অন্যটির বাস্তবতা অসম্ভব-অকল্পণীয়। বস্তুগত দিক দিয়ে মানুষ ও পশুর মধ্যে আকার-আকৃতিগত বৈশিষ্ট্য ভিন্ন আর কোনই পার্থক্য নেই। বস্তুগত বিচারে অন্যান্য জীবের ওপর অধিক কোন মর্যাদাও তার নেই। কিন্তু এটাই তার একমাত্র পরিচয় নয়। সর্বোপরি তার মধ্যে রয়েছে নির্বস্তুক শক্তি ‘রুহ’। এদিক দিয়েই সে মানুষ আর এখানেই মানুষের নৈতিকতার প্রশ্ন। অতএব মানুষের এই নৈতিকতাকে বাদ দিয়ে তার জন্যে কোন শিক্ষা ব্যবস্থাই রচনা করা যেতে পারে না। মানব সত্তায় বস্তু জগতের প্রতিনিধিত্ব করে তার দেহ এবং বস্তু শক্তির প্রতিনিধি হচ্ছে তার মন। এই কারণে শিক্ষাদর্শনে মানসবৃত্তির পরিচ্ছন্নতা ও উৎকর্ষ সাধনের প্রশ্নটি বিশেষ গুরুত্ব সহকারে বিবেচিত। গ্রীক দার্শনিক প্লেটোর (Plato) মতেঃ শিক্ষার উদ্দেশ্য হল, সুস্থ শরীরে একটি সুস্থ মনকে (A sound mind in a sound body) বিকশিত করে তোলা। প্লেটোর মতে, ‘মনে জ্ঞানের সঞ্চার করাই শুধু শিক্ষার কাজ নয়। মনের মধ্যে সুপ্ত যে গুণগুলো আছে, তার বিকাশ সাধন করাই শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য।’ অ্যারিস্টটল (Aristotole)- এর মতেঃ শিক্ষার অর্থ মানুষের সহজ বৃত্তিকে, বিশেষ করে তার মনকে বিকশিত করে তোলা, যাতে সে মহত ও সুন্দরের ধারণাকে পূর্ণভাবে উপলব্ধি করতে পারে এবং এর মধ্যেই তার পূর্ণ সুখ নিহিত। বার্ট্রান্ড রাসেলের মতে মানব প্রকৃতির যে আদর্শ, তারই ওপর প্রতিষ্ঠিত হতে হবে শিক্ষাকে। [(Bertrand Russell: On Education, P-19)] এই প্রেক্ষিতেই উল্লেখ করতে হয় যে, নিতান্ত বস্তুবাদী শিক্ষা-দার্শনিকরা পর্যন্ত বলতে বাধ্য হয়েছেনঃ

‘‘Man is more than a hardworker or a skillful artisan; what is more he has wide duties to discharge and higher aspiration to fullfill.’’ [P, Gisbert; Fundamentals of Sociology, P-220]

‘‘মানুষ একজন পরিশ্রমী কর্মী বা একজন দক্ষ কারিগরের চেয়েও অনেক বেশী। এর থেকে বড় কথা তাকে বৃহত্তর কর্তব্য সম্পাদন করতে এবং উচ্চতর আশাকে পরিপূর্ণ করে তুলতে হবে।’’

দার্শনিক ডিউই (Dewey) সেই সব কর্মীদের মনোভাবকে ‘অনুদার ও নৈতিকতা-বিরোধী; (Illiberal and Immortal) বলে অভিহিত করেছেন, যারা কেবলমাত্র জৈবিক প্রয়োজন পূরণে রোজগার করে। তিনি বলেছেন, জীবনের বৃহত্তর অর্থ উদ্দেশ্যকে বিস্মৃত হওয়া হীন দাসত্বের লক্ষণ।

দার্শনিকদের এসব উক্তিতে যে ‘মনে’র কথা বলা হয়েছে, তাঁরা তার যে অর্থই করুন, সেই মনই যে মানব-সত্তার সার নির্যাস এবং সেই মনের খোরাক জোগানোর জন্যেই যে ধর্মের অপরিহার্য প্রয়োজন, তা কোনক্রমেই অস্বীকার করা যেতে পারেনা। মনের মধ্যে সুপ্ত গুণাবলীর উৎকর্ষ সাধন যে নিছক বস্তুনিষ্ঠ শিক্ষার মাধ্যমে সম্ভবপর নয় তাতেও কোন সন্দেহ নেই। কারিগরিত্বের চেয়েও অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ যে মানব সত্তা, তা এই ধর্ম-বিশ্বাসী মানুষ। নৈতিক আদর্শ তথা ধার্মিক জীবন যাপন করাই তার বৃহত্তর কর্তব্য। মহান স্রষ্টার সন্তুষ্টি বিধানের উদ্দেশ্যে নিজেকে সম্পূর্ণ নিবেদিত করা এবং পরকালে তাঁর সন্তুষ্টি লাভই যে তার উচ্চতর আশা এবং এ উদ্দেশ্য পূরণার্থে নিজের সমগ্র শক্তি নিয়োজিত করাই যে সে আশা পরিপূরণের একমাত্র উপায় তা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।

বস্তুত মানব মনের পিপাসা অপরিসীম। তার প্রসারতা বিপুল, ব্যাপক ও বিস্তীর্ণ। মহাশক্তিমান আল্লাহর প্রতি গভীরতর ও ঐকান্তিক বিশ্বাসমূলক ভাবধারায় পরিপূর্ণ হয়ে থাকে মানুষেরই মন। তিনি হচ্ছেন এমন সত্তা, যাঁর নিকট নিজেকে পুরোপুরি সোপর্দ করে দিয়েই মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়তে পারে এবং মানবজীবনের চরম ও পরম সাফল্য কেবলমাত্র এই উপায়েই অর্জিত হতে পারে। আর এ জন্যেই মানবীয় শিক্ষায় ধর্মের বিশেষ ভূমিকা অনিবার্যভাবে থাকতে হবে। শুধু তা-ই নয়, শিক্ষার মৌলিক প্রেরণা ও উৎসও হতে হবে এই ধর্মকে। ধর্মবিশ্বাস ও ধর্মমতের ভিত্তিতেই গড়তে হবে শিক্ষার পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা।

কিন্তু এটি কোন ধর্ম? যে ধর্ম মানুষের কেবলমাত্র ব্যক্তিজীবনের ক্ষুদ্র ও সংকীর্ণ পরিসরে গ্রহণ করা হচ্ছে, যে ধর্ম মানুষ ও স্রষ্টার মধ্যে একটা নামমাত্র সম্পর্ক স্থাপন করে এবং ব্যক্তিগতভাবে কিছু পূজা-পাঠের আয়োজন করেই কর্তব্য সমাধা করে, যে ধর্মকে লেনিন ‘আফিম’ বলে উপহাস করেছে, সেই ধর্ম আমাদের সামনে নেই। সে ধর্মের কথা আমরা এখানে বলছিনা। কেননা সে ধর্মের সাথে শিক্ষার দূরতম সম্পর্কও থাকার কথা নয়। এ ধরণের ধর্মে ‘পাঠ’ থাকতে পারে; কিন্তু ‘শিক্ষা’ থাকবার কোন প্রয়োজন পড়েনা। এই ধরণের ধর্ম মানব মনের মৌলিক জিজ্ঞাসার সঠিক জবাব দিতে পারেনা। এখানে বলা হচ্ছে সেই ‘ধর্মের’ কথা, যা একদিকে স্রষ্টার সঙ্গে এবং অপরদিকে সমগ্র সৃষ্টিলোকের সঙ্গে যুগপৎ মানুষের সম্পর্ক স্থাপন করে এবং সেই সম্পর্ককে বাস্তবভাবে রক্ষা ও লালন করার জন্যে মহান স্রষ্টা সুস্পষ্ট ও অকাট্য বিধান দিয়েছেন। তাঁর (আল্লাহর) নাযিল করা দ্বীন-ইসলামই সেই ধর্ম। এই ধর্মই মানব মনের প্রকৃতি-নিহিত ও উপরোদ্ধৃত প্রশ্নত্রয়ের সুস্পষ্ট জবাব দিয়েছে অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গতভাবে। আমরা বলব, এই ধর্মের ভিত্তিতেই গড়তে হবে মানবীয় শিক্ষা ও শিক্ষা ব্যবস্থা। এরূপ শিক্ষা ব্যতিরেকে মানুষ ধার্মিক হতে পারে না আর এহেন ধর্মের বাস্তব অনুসারী না হলে মানুষ পারেনা নিছক জীবত্বের পর্যায় থেকে মনুষ্যত্বের পর্যায়ে উন্নীত হতে। তাই যে মানুষ মনুষ্যত্বই পেলনা, তার সম্পর্কে শিক্ষার কথা বলে কোন লাভই হতে পারেনা।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন