মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
তবুও ‘আজল’কে স্ত্রীর অনুমতি সাপেক্ষে কেউ কেউ জায়েয বলে ঘোষণা করেছেন। তাঁদের দলীল হচ্ছে কেবলমাত্র হযরত জাবির বর্ণিত হাদীস, যাতে বলা হয়েছে, “কুরআন নাযিল হচ্ছিল আর আমরা ‘আজল’ করছিলাম”। তার মানে কুরআনে এ সম্পর্কে কোনো নিষেধবাণী উচ্চারিত হয়নি। আর রাসূলে করীম (ﷺ)-ও তা জানতেন; কিন্তু তিনিও নিষেধ করেন নি। কিন্তু একথা যে হাদীসভিত্তিক আলোচনায়ও টেনে না, তা পূর্বেই বলেছি। সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার এই যে, সে কালের ‘আজল’কে জায়েয মনে করে একালের জন্ম নিয়ন্ত্রণ (Birth control)-কে কেউ কেউ জায়েয বলতে চান। তাঁরা বলেনঃ প্রাচীন কালের ‘আজল’ ছিল সেকালেরই উপযোগী জন্ম নিয়ন্ত্রণ পন্থা। একালে বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় যা করা হচ্ছে, ঠিক তাই করা হতো সেকালের এ অবৈজ্ঞানিক উপায়ে। কিন্তু এরূপ বলা যা কতখানি ধৃষ্টতা বরং নির্বুদ্ধিতা এবং আল্লাহর শরীয়তের সঙ্গে তামাসা করা, তা একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারা যায়।
প্রথমত দেখা দরকার, এ কালে জন্ম নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্য কি এবং ঠিক কোন কারণে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করতে লোকেরা প্রস্তুত হচ্ছে। এ কথা সর্বজনবিদিত যে, কেবলমাত্র অর্থনৈতিক কারণেই বর্তমান দুনিয়ার লোকেরা জন্ম নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্তা গ্রহণ করতে চাচ্ছে, অন্তত জোর গলায় তাই প্রচার করা হয়। কখনো কখনো পারিবারিক সুখ-শান্তি ও স্ত্রীর স্বাস্থ্যের দোহাই যে দেয়া হয়, তাও দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে এ এক ব্যাপক সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের আন্দোলনের রূপ পরিগ্রহ করেছে। কিন্তু ‘আজল’ কোনো দিহই এমন ছিল না। অর্থনৈতিক কারণে সেকালে আজল করা হতো না।
বড় জোর বলা যায়, সামাজিক ও সাময়িক জটিলতা এড়ানোর উদ্দেশ্যেই তা করা হতো। আর এ কারণের দিক দিয়ে এ দুটোকে কখনই অভিন্ন মনে করা যায় না। বিশেষত খাদ্যভাব ও অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ‘আজল’ করা সঙ্গত মনে করা হলে তার অর্থ হয়ঃ ‘আজল’কে জায়েয প্রমাণকারী হাদীসসমূহ আল্লাহর রিযিকদাতা হওয়ার বিশ্বাসকে ভিত্তিহীন করে দিচ্ছে। কুরআন মজীদে সন্তান হত্যা নিষেধ করে যে সব আয়াত উদ্ধৃত হয়েছে, তার ভিত্তিই হচ্ছে এ কথার ওপরঃ (আরবী) ‘আমিই তাদের রিযিক দেব, তোমাদেরকে আমিই রিযিক দিয়ে থাকি’।
এক্ষণে দারিদ্র্য ও অভাবের ভয়ে ‘আজল’ করা যদি সঙ্গত হয়, তাহলে তার মানে হবে, আল্লাহর রিযিকদাতা হওয়ার বিশ্বাসই খতম হয়ে গেছে এবং যে ভিত্তিতে সন্তান হত্যা নিষেধ করা হয়েছে, তাই চুরমার হয়ে যায় ‘আজল’-কে শরীয়তসম্মত মনে করলে।
আমার মনে হয়, এ ব্যাপারে লোকদের বিভ্রান্তি ও ভুল বোঝাবুঝিই হচ্ছে এরূপ ধারণার প্রধান কারণ। ‘আজল’-এর অনুমতিকে তার আসল পটভূমি ও পরিপ্রেক্ষিত থেকে বিচ্ছিন্ন করে এক স্বতন্ত্র ও স্বয়ংসম্পূর্ণ ব্যাপার মনে করে নিলে এ ভুল হওয়া খুবই স্বাভাবিক –এমন কোনো হাদীসই পাওয়া যাবে না, যাতে দারিদ্র্য ও অভাবের কারণে জন্ম নিয়ন্ত্রণকে ঘৃণা সহকারে হলেও বরদাশত করার কথা বলা হয়েছে। আর নবী করীম (ﷺ)-ই বা কেমন করে এমন কাজের অনুমতি দিতে পারেন, যে কাজকে স্বয়ং আল্লাহ তা’আলাই স্পষ্ট ভাষায় নিষেধ করে দিয়েছেন? কুরআন মজীদে এ সম্পর্কে স্পষ্ট নিষেধবাণী উচ্চারিত হয়েছে। সূরা ‘আল-আন আম’-এ বলা হয়েছেঃ
(আরবী)
এবং তোমরা তোমাদের সন্তানদের হত্যা করো না দারিদ্র্যের কারণে, আমিই তোমাদের রিযিক দান করি এবং তাদেরও আমিই করব।
এ আয়াত সুস্পষ্টভাবে উপস্থিত দারিদ্র্যের কারণে সন্তান ‘হত্যা’ করতে নিষেধ করছে। যারা বর্তমানে দারিদ্র্য, অভাবগ্রস্থ, নিজেরাও খাবে সন্তানদেরও খাওয়াবে এমন সম্বল যাদের নেই, তারা আরো সন্তান জন্মদান করতে রীতিমত ভয় পায়; মনে করে আরও সন্তান হলে মারাত্মক দারিদ্র্যে নিমজ্জিত হতে হবে, দেখা দেবে চরম খাদ্যাভাব। বোঝার উপর শাকের আঁটির মতো তা হবে একান্তই দুর্বহ। উপরোক্ত আয়াত কিন্তু তাদের সম্পর্কে স্পষ্ট নিষেধবাণী এবং রিযিক দানের নিশ্চয়তাসূচক ওয়াদার সুস্পষ্ট ঘোষণা।
সূরা বনী ইসরাইলে বলা হয়েছেঃ
(আরবী)
এবং তোমরা হত্যা করো না তোমাদের সন্তানদের দারিদ্র্যের ভয়ে। আমিই তাদের রিযিক দেব এবং তোমাদেরও; নিশ্চয়ই তাদের হত্যা করা বিরাট ভুল।
ভবিষ্যতে দারিদ্র্য ও অভাবগ্রস্ত হয়ে পড়ার আশংকায় যারা সন্তান জন্মনাদে ভয় পায়, যারা মনে করে আরো অধিক সন্তান হলে জীবনযাত্রার বর্তমান ‘মান’ (Standard) রক্ষা করা সম্ভব হবে না এবং এজন্যে জন্মনিরোধ বা নিয়ন্ত্রণের পন্থা গ্রহণ করে, উপরোক্ত আয়াতে তাদের সম্পর্কেই নিষেধবাণী উচ্চারণ করা হয়েছে। বলা হয়েছে –বর্তমানে তোমাদের যেমন আমিই রিযিক দিচ্ছি, তোমাদের সন্তান হলে ভবিষ্যতে আমিই তাদের রিযক দেব, ভয়ের কোনো কারণ নেই।
কেউ কেউ বলেন, কুরআনে তো সন্তান হত্যা (আরবী) করতে নিষেধ করা হয়েছে, নিরোধ বা নিয়ন্ত্রণ তো নিষিদ্ধ হয়নি, আর ‘আজল’ এবং জন্মনিরোধের আধুনিক প্রক্রিয়ায় গর্ভ সঞ্চার হওয়ার পথই বন্ধ বা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তাতে সন্তান হত্যার কোনো প্রশ্নই নেই। তাই কুরআনের এ নিষেধবাণী এ কাজকে নিষিদ্ধ করেনি এবং এ প্রসঙ্গে তা প্রযোজ্য নয়। কিন্তু একথা যে কতখানি ভ্রান্ত, দুর্বল ও অমূলক তা আয়াত দু’টি সম্পর্কে একটা সূক্ষ্ম বিবেচনা করলেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এ দুটো আয়াতে সর্বাবস্থায়ই সন্তান হত্যা নিষেধ করে দিয়েছে, প্রতিক্রিয়া তার যাই হোক না কেন। আর ‘কতল’ শব্দের অর্থও কোনো জীবন্ত মানুষকে তরবারির আঘাতে হত্যা করাই কেবল নয়। কুরআন অভিধানে এবং তাফসীরে এর বিভিন্ন অর্থ দেখা যায়। আরবী অভিধান ‘আল কামুস’-এ বলা হয়েছে (আরবী) মানে (আরবী) মেরে ফেল –যে কোনো উপায়েই হোক না কেন। তাফসীর ‘রুহুল বয়ান’-এ বলা হয়েছেঃ (আরবী) মানে (আরবী) হালাক করে দেয়া, ধ্বংস করা। রাগিব ইসফাহানীর আল মুফরাদাত-এ বলা হয়েছেঃ
(আরবী)
‘কতল’ শব্দের আসল অর্থ দেহ থেকে প্রাণ বের করে দেয়া –যেমন মৃত্যু।
আর উপরোক্ত আয়াদ দু’টোতে যা বলা হয়েছে, রাগিব ইসফাহানীর মতে তা হচ্ছেঃ
(আরবী)
আজল করে শুক্র বিনষ্ট করা এবং তাকে তার আসল স্থান ছাড়া অপর কোনো স্থানে নিক্ষেপ করা সম্পর্কে সুস্পষ্ট নিষেধ।
এ অর্থ বিশ্লেষণের ভিত্তিতে বলা যায়, কুরআন মজীদ কেবল আরব জাহিলিয়াতের ন্যায় জীবন্ত সন্তান হত্যা করতেই নিষেধ করেনি বরং যেকোন ভাবেই হত্যা করা হোক না কেন, তাকেই নিষেধ করেছে। শুধু তাই নয়, শুক্র নিষ্ক্রমিত হওয়ার পর তার জন্যে আসল আশ্রয় স্থান হচ্ছে স্ত্রীর জরায়ূ –গর্ভধারা। সেখানে তাকে প্রবেশ করতে না দিলে কিংবা কোনোভঅবে তাকে বিনষ্ট, ব্যর্থ ও নিস্ফল করে দিলেই তা এ নিষেধের আওতায় পড়বে এবং তা হবে সম্পূর্ণ ও সুস্পষ্ট হারাম কাজ। প্রাচীন কালের ‘আজল’ এবং একালের জন্ম নিরোধ বা জন্ম নিয়ন্ত্রণ –সবই এ দৃষ্টিতে হারাম কাজ হয়ে পড়ে। কেননা এ প্রক্রিয়ায় বাহ্যত প্রাণী হত্যা বা জীবন্ত সন্তান হত্যা না হলেও প্রথমত শুক্রকে বিনষ্ট করা হয় এবং দ্বিতীয়ত শুক্রকীট –যা আধুনিক বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে জীবন্ত তাকে তার আসল আশ্রয়স্থলে প্রবেশ করতে না দিয়ে পথিমধ্যেই খতম করে দেয়া হয়। ঠিক যে কারণে জীবিত সন্তান হত্যা নিষিদ্ধ, ঠিক সেই কারণেই জীবিত শুক্রকীট বিনষ্ট করাও নিষিদ্ধ। কেননা এ শুক্রকীটই তো সন্তান জন্মের মৌল উপাদান। তাফসীরে ‘রুহুল বয়ান’-এ একথাই বলা হয়েছেঃ
(আরবী)
সন্তান হত্যা করাকে হারাম করা হয়েছে এজন্যে যে, এর ফলে আল্লহার সংস্থাপিত মানব বংশের ভিত্তিই চূর্ণ হয়ে যায়, আর আল্লাহর সংস্থাপিত এ ভিত্তিকে যারা ধ্বংস করে, তারা অভিশপ্ত। কেননা এতে করে আল্লাহর বপিত বৃক্ষের ফল নষ্ট করা, তাকে কেটে নেয়া এবং মানুষের বংশকে শেষ করে দেয়া হয়।
শুধু তাই নয়, এ কাজ তারাই করতে পারে, যারা আল্লাহকে রিযিকদাতা বলে বিশ্বাস করে না, আল্লাহর ওপর নির্ভর করতে পারে না রিযিকের ব্যাপারে। তাফসীরে রুহুল বয়ান-এ এই বলা হয়েছেঃ
এ কাজে রিযিকের ব্যাপারে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল পরিহার করা হয় তার ফলে আল্লাহর ওয়াদাকে অবিশ্বাস করা হয় অথচ তিনি বলেছেনঃ জমিনে কোনো প্রাণীই নেই যার রিযিক সরবরাহের দায়িত্ব আল্লাহর ওপর অর্পিত নয়।
জন্ম নিয়ন্ত্রণ ও আজল –এ দুটোর মাঝে এদিক দিয়েও পার্থক্য আছে যে, ‘আজলে’ যেখানে শতকরা নব্বই ভাগই গর্ভ সঞ্চারনের সম্ভাবনা থেকে যায়, সেখানে জন্ম নিয়ন্ত্রণের আধুনকি প্রক্রিয়ায় সম্ভাবনাকে একেবারেই বিলুপ্ত করে দেয়া হয়। রাসূলে করীম (ﷺ) থেকে ‘আজল’ সম্পর্কে বর্ণিত প্রায় সব হাদীসেই এ ধরনের একটি কথা পাওয়া যায় যে, আল্লাহ যা সৃষ্টি করতে চান, তা বন্ধ করার ক্ষমতা কারো নেই –চেষ্টা করলেও তা সম্ভব নয়। ফলে ‘আজল’ ও জন্ম নিয়ন্ত্রণের মৌলিক পার্থক্য সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। কাজেই নিছক বোকা লোক ছাড়া এ দুটো প্রক্রিয়াকে এক ও অভিন্ন –আর বড়জোর সেকাল ও একালের পার্থক্য মাত্র বলে আত্মতৃপ্তি লাভ করতে পারে।
এ সম্পর্কে শেষ কথা এই যে, জন্ম নিয়ন্ত্রণের এমন কোনো প্রক্রিয়া অবলম্বন, যার ফলে সন্তান জন্মের সম্ভাবনা নিয়ন্ত্রিত কিংবা অবরুদ্ধ হয়ে যায় –কোনো দিক দিয়েই বিন্দুমাত্র কল্যাণকর হতে পারে না; না পারিবারিক জীবনে তার ফলে কোনো শান্তি সুখ আসতে পারে, না অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে।
কুরআন মজীদ এ সম্পর্কে স্পষ্টভাষী। বলা হয়েছেঃ
(আরবী)
যারা নিজেরা নিজেদের সন্তানদের হত্যা করে নির্বুদ্ধিতাবশত কোনো প্রকার জ্ঞান-তথ্যের ভিত্তি ছাড়াই এবং আল্লাহর দেয়া রিযিককে নিজেদের জন্যে হারাম করে নেয় –আল্লাহর ওপর সম্পূর্ন মিথ্যা কথা আরোপ করে –তারা সকলেই ভয়ানকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তারা নিশ্চতই পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং তারা কখনো সঠিক পথে আসবে না।
সন্তান হত্যা –আর আধুনিক পদ্ধতি –জন্ম নিয়ন্ত্রণ, জন্মনিরোধ কোনো বুদ্ধিসম্মত কাজ নয়, চরম নির্বুদ্ধিতার কাজ। কোনো অকাট্য বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও জ্ঞান-তথ্যের ওপর ভিত্তিশীল নয়, নিছক আবেগ উচ্ছাস মাত্র; এতে করে আল্লাহর দেয়া রিযিক –সন্তানকে –নিজের জন্যে হারাম করে নেয়া হয় –সন্তান হতে দিতে অস্বীকার করা হয় অথবা এ সন্তানের ফলে আল্লাহ যে অতিরিক্ত রিযিক দিতেন তা থেকেও নিজেকে বঞ্চিত করা হয়; আর তা করা হয় আল্লাহর সম্পর্কে সম্পূর্ণ মিথ্যা ধারণা পোষণ করে, আল্লাহর প্রতি মিথ্যা কথা আরোপ করে যে, আরো সন্তান হলে তিনি খাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারবেন না বা করবেন না। তার ফলে এ কাজ যারা করে তারা ভয়ানকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এ ক্ষতি কেবল নৈতিক নয়, বৈষয়িক ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিতেও তা অপূরণীয়; ইহকালীন ও পরকালীন সব দিক দিয়েই তার ক্ষতি ভয়াবহ। আর এ ক্ষতির সম্মুখীন তারা হচ্ছে শুধু এ কারণে যে, আল্লাহর দেয়া বিদানকে তারা মেনে চলতে অস্বীকার করছে, এ গুমরাহীর পথকে তারা অনায়াসেই সে পথে চল চিরকল্যাণের দাবিদার হতে পারত। আর সত্যি কথা এই যে, হেদায়েতের সুস্পষ্ট পথ সামনে দেখেও যারা নিজেদের ইচ্ছানুক্রমে সুস্পষ্ট গুমরাহীর পথে অগ্রসর হতে থাকে, তারা যে কোনো দিনই হেদায়েতের পথে একবিন্দু চলতে পারবে –এদিকে ফিরে আসবে, এমন কোনো সম্ভাবনাই নেই। এসব কথাই হচ্ছে উপরোক্ত আয়াতের ভাবধারা। বস্তুত জন্ম নিয়ন্ত্রণের আধুনিক প্রচেস্টা প্রায় সবই যে ব্যর্থতার পর্যবসিত হয় এবং এর জন্যে ব্যয় করা হয় কোটি কোটি টাকা যে একেবারে নিস্ফল হয়ে যায় তা আজকের দুনিয়ায় বিভিন্ন দেশের ব্যর্থ চেষ্টার কাহিনী থেকেই অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয়।
দ্বিতীয়ত এরূপ কাজের অর্থ দাঁড়ায় যে, আল্লাহর রিযিকদাতা হওয়ার কথায় কোনো বিশ্বাস নেই। এ কাজ ষোল আনাই বেঈমানী, নিতান্ত লোকদের দ্বারাই সম্ভব এ ধরনের কাজ, তাতে কোনো সন্দেহ থাকে না। সবচেয়ে বড় কথা, এ কাজ চরম নির্মমতার পরিচায়ক। মুনষ্যত্বের সুকোমল বৃত্তিসমূহ মানুষকে এ কাজ করতে কখনো রাজি হতে দেয় না। তাই কুরআন মজীদের ঘোষণার এ কাজ কেবল মুশরিকদের দ্বারাই সম্ভব বলা হয়েছেঃ
(আরবী)
এমনিভাবে বহু মুশরিকের জন্যে তাদের সন্তানকে হত্যা করার কাজকে তাদের শরীক –উপাস্য দেবতা ও শাসক নেতৃবৃন্দ খুবই চাকচিক্যময় ও আকর্ষণীয় কাজ হিসেবে প্রতিভাত করে দিয়েছে, যেন তারা তাদের ধ্বংস করে দিতে পারে এবং তাদের জীবন বিধানকে করে দিতে পারে তাদের নিকট অস্পষ্ট ভ্রান্তিপূর্ণ।
সন্তান হত্যা –জন্ম নিয়ন্ত্রণ ও নিরোধ যে একটা মন-ভুলানো ও চাকচিক্যময় কাজ। এ কাজের অনিবার্য ফল একটা জাতিকে নৈতিকতার দিক দিয়ে দেউলিয়া করে দেয়া, বংমের দিক দিয়ে নির্বংশ করে যুবশক্তির চরম অভাব ঘটিয়ে সর্বস্বান্ত করে দেয়া ছাড়া আর কিছুই নয়, দুনিয়ার জন্ম নিয়ন্ত্রণকারী জাতিসমূহের অবস্থা চিন্তা করলেই তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
এ পর্যায়ে সূরা আল-আন’আমের আয়াতটি পুনরায় বিবেচ্য। এ বিবেচনা আমাদের সামনে এও পেশ করছে যে, ‘সন্তান হত্যার’ যে কোনো ব্যবস্থারই পরিণতিতে সমাজে ব্যাপক নির্লজ্জতা, অশ্লীলতা ও নৈতিক অধঃপতন দেখা দেয়া অতীব স্বাভাবিক ও অনিবার্য। সম্পূর্ণ আয়াতটি এইঃ
(আরবী)
বলো হে নবী, তোমরা শোন, তোমাদের জন্যে কি হারাম করেছেন। তা হলোঃ তোমরা তাঁর সাথে এক বিন্দু শিরক করবে না, পিতামাতার সাথে ভালো ব্যবহার করবে। দারিদ্র্যের কারণে তোমরা তোমাদের সন্তানদের হত্যা করবে না। আমরাই তোমাদের রিযিক দিই, তাদেরও দেব। তোমরা নির্লজ্জতার কাছেও যেও না, তা প্রকাশ্যবাবে হোক, কি গোপনীয়। আর তোমরা মানুষ হত্যা করো না যা আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন এই আশায় যে, তোমরা তা অনুধাবন করতে সক্ষম হবে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/505/116
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।