মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
ইসলামে নারী-পুরুষের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের জন্যে বিয়েই হচ্ছে একমাত্র বৈধ উপায়, একমাত্র বিধিবদ্ধ ব্যবস্থা। বিয়ে ছাড়া অন্য কোনো ভাবে –অন্য পথে –নারী-পুরুষের মিলন ও সম্পর্ক স্থাপন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিয়ে হচ্ছে পুরুষ ও নারীর মাঝে সামাজিক পরিবেশে ও সমর্থনে শরীয়ত মুতাবেক অনুষ্ঠিত এমন এক সম্পর্ক স্থাপন, যার ফলে দুজনের একত্র বসবাস ও পরস্পরে যৌন সম্পর্ক স্থাপন সম্পূর্ণরূপে বৈধ হয়ে যায়। যার দরুন পরস্পরের ওপর অধিকার আরোপিত হয় এবং পরস্পরের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য অবশ্য পালনীয় হয়ে দাঁড়ায়।
(আরবী)
বস্তুত এ বিয়েই হচ্ছে ইসলামী সমাজে পরিবার গঠনের প্রথম প্রস্তর। একজন পুরুষ ও এক বা একাধিক স্ত্রী যখন বিধিসম্মতভাবে বিবাহিত হয়ে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে একত্রে বসবাস ও স্থায়ী যৌন সম্পর্ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত করে, তখনই একটি পরিবারের ভিত্তি স্থাপিত হয় –হয় পারিবারিক জীবন যাপনের শুভ সূচনা।
কুরআন মজীদে এই বিয়ে ও স্ত্রী গ্রহণের ব্যবস্থাকে নবী ও রাসূলগণের প্রতি আল্লাহ তা’আলার এক বিশেষ দান বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সূরা ‘আর-রায়াদ’-এ বলা হয়েছেঃ
(আরবী)
হে নবী! তোমার পূর্বেও আমি অনেক নবী-রাসূল পাঠিয়েছি এবং তাদের জন্যে স্ত্রী ও সন্তানের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
সূরা আন নূর এ বয়স্ক ছেলেমেয়ে ও দাস-দাসীদের বিয়ের ব্যবস্থা করার জন্যে আল্লাহ তা’আলা নির্দেশ দিয়েছেন নিম্নোক্ত ভাষায়ঃ
(আরবী)
এবং বিয়ে দাও তোমাদের এমন সব ছেলে-মেয়েদের, যাদের স্বামী বা স্ত্রী নেই, বিয়ে দাও তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যে যারা বিয়ের যোগ্য হয়েছে।
প্রথমোক্ত আয়াতে নবী ও রাসূলগণের জন্যে স্ত্রী গ্রহণ ও সন্তান লাভের সুযোগ করে দেয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তার মানে, বিয়ে করা ও সন্তান-সন্ততি লাভ করা নবী-রাসূলগণের পক্ষে কোনো অস্বাভাবিক বা অবাঞ্ছনীয় কাজ নয়। কেননা তাঁরাও মানুষ আর মানুষ হওয়ার কারণেই তাঁদের স্ত্রী গ্রহণ করার প্রয়োজন রয়েছে এবং বিয়ে করলে বা স্ত্রী গ্রহণ করা হলে তাদের সন্তান-সন্ততিও হতে পারে। আবার জাহিলিয়াতের সময়কার লোকদের বদ্ধমূল ধারণা ছিল যে, আল্লাহর নবী বা রাসূল হলে তাঁর আর বিয়ে-শাদী ও সন্তান হওয়া প্রভৃতি ধরনের কোনো বৈষয়িক বা জৈবিক কাজ করা অবাঞ্ছনীয় এবং অন্যায়। এ কারণে হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)-কে তারা উপযুক্ত বা সঠিক নবী বলে মানত না। এরই প্রতিবাদ করে আল্লাহ তা’আলা প্রথমোক্ত আয়াতে বলেছেনঃ বিয়ে করা, স্ত্রী গ্রহণ করা, আর সন্তান-সন্ততি হওয়া হযরত মুহাম্মদের বেলায় নতুন কোনো ব্যাপার নয়। তাঁর পূর্বেও বহু নবী ও রাসূল দুনিয়ায় প্রেরিত হয়েছিলেন এবং তাঁদের প্রায় সকলেই বিবাহিত ছিলেন, তাঁদের স্ত্রী ছিল আর ছিল সন্তান-সন্ততি –যেমন হযরত মুহাম্মাদের রয়েছে। শুধু তাই নয়, বিয়ে করা, স্ত্রী গ্রহণ করা ও সন্তান লাভ হওয়ার ব্যবস্থা করা –আল্লাহ তা’আলার এক বিশেষ অনুগ্রহ। আল্লাহ তাঁর নবী ও রাসূলগণের প্রতি এ নেয়ামত দিয়েছিলেন বিপুলভাবে। শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)-ও আল্লাহর এ বিশেষ নেয়ামতের দান থেকে বঞ্চিত থেকে যান নি।
নবী করীম (ﷺ) এরশাদ করেছেনঃ
(আরবী)
চারটি কাজ নবীগণের সুন্নাতের মধ্যে গণ্য; তা হচ্ছেঃ সুগন্ধি ব্যবহার করা, বিয়ে করা, মিসওয়াক করা এবং খাতনা করানো।
উপরে উদ্ধৃত দ্বিতীয় আয়াতটিতে বিয়ের ব্যবস্থা করার জন্যে ছেলেমেয়ের অভিভাবক মুরুব্বীদের প্রতি স্পষ্ট নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ আয়াতের আরবী তরজমা আল্লামা জামালুদ্দীন আল-কাশেমীর ভাষায় এরূপঃ
(আরবী)
তোমাদের স্বাধীন ছেলেমেয়েদের মধ্যে যার যার স্বামী বা স্ত্রী নেই, তাদেরকে বিয়ে দাও। আর তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যেও যাদের বিয়ের যোগ্যতা রয়েছে, তাদেরও বিয়ে দাও।
‘যার স্বামী বা স্তী নেই’ মানে যাকে আদৌ বিয়ে দেয়া হয়নি –যারা কুমার বা কুমারী, তাদের সকলেরই বিয়ের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তার মানে, একবারও যাদের বিয়ে হয়নি তাদের জন্য বিয়ের ব্যবস্থা তো করতেই হবে; তেমনি যাদের একবার বিয়ে হয়েছে, কিন্তু তালাক কিংবা মৃত্যু যে-কোন কারণে এখন জুড়িহারা তাদেরও বিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। একবার বিয়ে হলে পরে কোনো কারণে স্বামীহারা বা স্ত্রীহারা হলে পুনরায় তার বিয়ের ব্যবস্থা না করা কিংবা বিয়ে করতে রাজি না হওয়া আল্লাহর নির্দেশের পরিপন্থী। আমাদের সমাজে এরূপ প্রায়ই দেখা যায় যে, কোনো মেয়ে হয়ত একবার স্বামী কর্তৃক পরিত্যক্ত হয়েছে অথবা স্বামীর মৃত্যুতে বিধবা হয়ে গিয়েছে, অনুরূপভাবে কোনো ছেলের স্ত্রী মরে গেছে কিংবা তালাক দিতে বাধ্য হয়েছে, এরূপ অবস্থায় তারা পূনর্বিবাহে প্রস্তুত হয় না। সমাজের শালীনতা ও পবিত্রতা এবং মানুষের জৈব প্রবণতা ও ভাবধারার দৃষ্টিতে এরূপ কাজ কল্যাণকর হতে পারে না।
মোটকথা, বিয়ের যোগ্য হয়েও কেউ যাতে অবিবাহিত ও অকৃতদায় হয়ে থাকতে না পারে, তার ব্যবস্থা করাই ইসলামের লক্ষ্য। কেননা অকৃতদার জীবন কখনই পবিত্র ও পরিতৃপ্ত জীবন হতে পারে না। অবশ্য যে লোক বিয়ে করতে সমর্থ নয়, তার কথা স্বতন্ত্র।
একবার কিছু সংখ্যক সাহাবী সারা রাতদিন ধরে ইবাদত করার, সারা রাত জেগে থেকে নামায পড়ার, সারা বছর ধরে রোযা রাখার এবং বিয়ে না করার সংকল্প গ্রহণ করেন। নবী করীম (ﷺ) এসব কথা শুনতে পেয়ে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হন এবং রাগত স্বরে বলেনঃ
(আরবী)
তোমরাই কি এ ধরনের কথাবার্তা বলনি? আল্লাহর শপথ, একি সত্যি নয় যে, আমিই তোমাদের তুলনায় আল্লাহকে বেশি ভয় করি, আমিই তোমাদের চেয়ে বেশি আল্লাহর নাফরমানী থেকে বেঁচে থাকি? …..কিন্তু তা সত্ত্বেও আমি রোযা থাকি, রোযা ভঙ্গও করি, নামায পড়ি, শুয়ে নিদ্রাও যাই এবং রমণীদের পানিও গ্রহণ করি। এই হচ্ছে আমার নীতি-আদর্শ; অতএব যে লোক আমার এই নীতি ও আদর্শ থেকে বিচ্যুত হবে, সে আমার উম্মতের মধ্যে গণ্য নয়। (বুখারী, মুসলিম)
এ হাদসের ব্যাখ্যায় আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী লিখেছেনঃ
(আরবী)
এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, বিয়ে করা নবীর সুন্নাত বিশেষ। মনীষী মহলাব বলেছেনঃ বিয়ে ইসলামের অন্যতম রীতি ও বিধান। আর ইসলামে বৈরাগ্যবাদের কোনো অবকাশ নেই। যে লোক রাসূলের সুন্নাতের প্রতি অনাস্থা ও অবিশ্বাসের কারণে বিয়ে পরিত্যাগ করবে, সে অবশ্যই ভৎসনার যোগ্য বিদয়াতী। তবে যদি কেউ এজন্যেবিয়ে না করে যে, তাহলে তার নিরিবিলি জীবন ইবাদতে কাটিয়ে দেয়া সহজ হবে, তবে তাকে দোষ দেয়া যাবে না। ইমাম দায়ূদ জাহেরী এবং তার অনুসারীদের মতে বিয়ে করা ওয়াজিব।
রাসূলের বাণী ‘সে আমার উম্মতের মধ্যেই গণ্য নয়’-এর প্রকৃত অর্থ হচ্ছে এই যে, যে লোক রাসূলের আদর্শের অনুসরণ না করবে, সে ইসলামেরসহজ ঋজু ও একনিষ্ঠ পথের পথিক হতে পারে না, বরং রাসূলের আদর্শ অনুসরণ না করবে, সে ইসলামে সহজ ঋজু ও একনিষ্ঠ পথের পথিক হতে পারে না, বরং রাসূলের আদর্শের সত্যিকার অনুসারী হবে সে ব্যক্তিঃ
(আরবী)
যে লোক নির্দিষ্টভাবে ইফতার করবে (রোযা ভঙ্গ করবে) রোযা পালনের সামর্থ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে, নিদ্রা যাবে রাতে ইবাদতের জন্যে দাঁড়াবার শক্তি লাভের উদ্দেশ্যে এবং বিয়ে করবে দৃষ্টি ও যৌন-অঙ্গকে কলুষমুক্ত রাখার উদ্দেশ্যে।
প্রসঙ্গত বলা যায়, যদি কেউ রাসূলের এ আদর্শের বিরোধিতা করে এই ভেবে যে, রাসূলের আদর্শ অপেক্ষা অন্য আদর্শ উত্তম ও অগ্রাধিকার পাওয়ার যোগ্য, তাহলে রাসূলের এ বাক্যাংশের অর্থ হবেঃ
(আরবী_
সে আমার মিল্লাত ও জাতির মধ্যে গণ্য নয়।
অন্য কথায় সে পূর্ণ অর্থে মুসলিম নয়। কেননা এরূপ ধারণা পোষণ করা সুস্পষ্ট কুফরী।
হযরত আনাস (রা) বলেনঃ
(আরবী)
নবী করীম (ﷺ) আমাদেরকে বিয়ে করতে আদেশ করতেন, আর অবিবাহি নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করা থেকে খুব কঠোর ভাষায় নিষেধ করতেন।
হযরত ইবনে আব্বাস (রা) নবী করীমের নিম্নোক্ত বাণী বর্ণনা করেছেনঃ
(আরবী)
কুমারিত্ব ও অবিবাহিত নিঃসঙ্গ জীবন যাপনের কোনো নিয়ম ইসলামে নেই।
নবী করীম (ﷺ) বলেছেনঃ
(আরবী)
যে লোক য়ে করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বিয়ে করে না, সে আমার উম্মতের মধ্যে শামিল নয়।
রাসূলে করীম (ﷺ) বলেছেন, বিয়ে করা আমার আদর্শ ও স্থায়ী নীতি, যে লোক আমার এ সুন্নাত অনুযায়ী আমল করবে না, সে আমার দলভুক্ত নয়।
বস্তুত বিয়ে স্বভাবের দাবি, মানব প্রকৃতির নিহিত প্রবণতার স্বাভাবিক প্রকাশ, মানব সমাজের দৃষ্টিতেও অত্যন্ত জরুরী। এজন্যে রাসূলে করীম (ﷺ) সমাজের যুবক-যুবতীদের সম্বোধন করে বলেছেনঃ
(আরবী)
হে যুব সমাজ! তোমাদের মধ্যে যারা বিয়ের সামর্থ্য রাখে, তাদের বিয়ে করা কর্তব্য। কেননা বিয়ে দৃষ্টির নিয়ন্ত্রণকারী, যৌন অঙ্গের পবিত্রতা রক্ষাকারী। আর যার সামর্থ্য নেই সে যেন রোযা রাখে, যেহেতু রোযা হবে তার ঢাল স্বরূপ।
ইসলামে বিয়ের গুরুত্ব যে কতখানি, তা উপরিউক্ত আলোচনা থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণিত হচ্ছে। কিন্তু দুনিয়ার অন্যান্য ধর্মে ও সমাজে বিয়ের তেমন কোনো গুরুত্ব স্বীকার করা হয়নি। বর্তমানে প্রাচীন কালের মানব সমাজের যে ইতিহাস প্রচলিত রয়েছে –আমার মতে তার প্রায় সম্পূর্ণটাই কল্পিত। তাতে ধারণা দেয়া হয়েছে যে, আদিম সমাজে বিয়ের প্রচলন ছিল না, বিয়ে হচ্ছে পরবর্তীকালের বিকাশমান সভ্যতার অবদান। খ্রিষ্টধর্মে বিয়েকে একভাবে নিষেধই করে দেয়া হয়েছিল। ক্রীনথিওনের নামে লিখিত চিঠিতে উল্লিখিত রয়েছেঃ
আমি অবিবাহিত ও বিধবাদের সম্বন্ধে মনে রি যে, তাদের এরকমই থাকা উচিত। কিন্তু যদি সংযম রক্ষা করতে না পারে, তবেই বিয়ে করবে।
উক্ত চিঠির অন্যত্র বলা হয়েছেঃ
তোমার স্ত্রী না থাকলে তুমি স্ত্রীর সন্ধান করো না। আর যদি বিয়ে করই তবু তাতে গুনাহ নেই।
মার্টিন লূথার সর্বপ্রথম বিয়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তাঁর দৃষ্টিতে বিয়ে হচ্ছে সম্পূর্ণ দুনিয়াদারীর কাজ। প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মমতের নেতৃস্থানীয় লোকেরাও একে ধর্ম সম্পর্কহীন একটি কাজ মনে করতেন। বিয়ের স্বপক্ষে তারা কোন স্পষ্ট রায় দেন নি। কিন্তু বিয়ে করা যে মানুষের –স্ত্রী ও পুরুষ উভয়েরই –স্বভাবের এক প্রচণ্ড ও অনমনীয় দাবি, তা দুনিয়ার সব বিজ্ঞানীই স্বীকার করেছেন। গ্রীক-বিজ্ঞানী জালিনুস বলেছেনঃ
প্রজনন ক্ষমতার ওপর আগুন ও বায়ুর প্রভাব রয়েছে, তার স্বভাব উষ্ণ ও সিক্ত। এর অধিকাংই যদি অবরুদ্ধ হয় এবং দীর্ঘদিন পর্যন্ত অবরুদ্ধ হয়ে থাকে, তাহলে নানা ধরনের মারাত্মক রোগ জান্মিতে পারে। কখনো মনে ভীতি ও সন্ত্রাসের ভাব সৃষ্টি হয়, কখনো হয় পাগলামীর রোগ। আবার মৃগী রোগও হতে পারে। তবে প্রজনন ক্ষমতার সুস্থ বহিষ্কৃতি ভালো স্বাস্থ্যের কারণ নয়। বহু প্রকারের রোগ থেকেও সে সুরক্ষিত থাকতে পারে।
প্রখ্যাত চিকিৎসাবিদ আল্লামা নফীসী বলেছেনঃ
(আরবী)
শুক্র প্রবল হয়ে পড়লে অনেক সময় তা অত্যন্ত বিষাক্ত প্রকৃতি ধারণ করে বসে। দিল ও মগজের দিকে তা এক প্রকার অত্যন্ত খারাপ বিষাক্ত বাষ্প উত্থিত করে দেয়, যার ফলে বেহুঁশ হয়ে পড়া বা মৃগী রোগ প্রভৃতি ধরনের ব্যাধির সৃষ্টি হয়।
শাহ ওয়ালীউল্লাহ দিহলভী বিয়ে না করার অনিষ্টাকারিতা সম্পর্কে লিখেছেনঃ
(আরবী)
জেনে রাখো, শুক্রের প্রজনন ক্ষমতা যখন দেহে খুব বেশী হয়ে যায়, তখন তা বের হতে না পারলে মগজে তার বাষ্প উত্থিত হয়।
কিন্তু বর্তমান পাশ্চাত্য সভ্যতা বিয়ের গুরুত্বকে নষ্ট করে দিয়েছে। পারিবারিক জীবনকে চূর্ণ-বিচূর্ণ ও ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে। পাশ্চাত্য মনীষীদের বিচারে ইউরোপীয় সমাজে বিয়ে ও পারিবারিক জীবনের ব্যর্থতার কতগুলো কারণ রয়েছে। কারণগুলোকে নিম্নোক্তভাবে আট-নয়টি পর্যায়ে ভাগ করা যেতে পারেঃ
১. বিয়ে এবং পারিবারিক জীবন সম্পর্কে খ্রিষ্টধর্মের অননুকূল দৃষ্টিভঙ্গি;
২. আধুনিক সভ্যতার চোখ জলসানো চাকচিক্য ও ব্যাপক কৃত্রিমতা;
৩. শিল্প বিপ্লবোত্তর নারী স্বাধীনতার আন্দোলন;
৪. নারী স্বাধীনতা সম্পর্কে ভুল ধারণা;
৫. নারী-পুরুষের সাম্য ও সমানাধিকারের অবৈজ্ঞানিক দাবি;
৬. স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক অধিকার রক্ষার দায়িত্ববোধ না থাকা;
৭. পাশ্চাত্যের বস্তুবাদী ভাবধারা এবং নৈতিকতা ও মানবিকতা ও মানবিকতার পতন;
৮. পারিবারিক জীবনে সুষ্ঠুতা, সুস্থতা ও সফলতা লাভের জন্যে অপরিহার্য নিয়ম বিধানের অভাব; এবং
৯. সাধারণভাবে জনগণের ধর্মবিমুখতা, ধর্মহীনতা ও ধর্মদ্রোহিতা।
পরিবার ও পারিবারিক জীবনে আধুনিক ইউরোপে যে ব্যর্থতা এসেছে, তার অন্তর্নিহিত কারণসমূহ ইউরোপীয় চিন্তাবিদদের আলোচনার দৃষ্টিতেই এখানে উল্লেখ করা হলো। এই পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামের বিধান এই গ্রন্থে বিস্তারিতভাবে আলোচিত হবে। তার ফলে উভয় সমাজ ব্যবস্থা ও আদর্শের মৌলিক পার্থক্য যেমন সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে, তেমনি বিশ্বমানবতার পক্ষে কোন ব্যবস্থাটি কল্যাণময় –মানবোপযোগী, তাও প্রতিভাত হবে।
ইসলামের দৃষ্টিতে বিয়ে ও পরিবার সম্পূর্ণরূপে একটি দেওয়ানী চুক্তির ফল। নারীর নিজেকে বিয়ের জন্যে উপস্থিত করা এবং পুরুষের তা গ্রহণ করা –এই ‘ঈজাব’ ও ‘কবুল’ দ্বারাই বিয়ে সম্পন্ন হয়ে থাকে। এরই ফলে স্বামী ও স্ত্রীর পরস্পরের প্রতি পরস্পরের কতগুলো অধিকার নির্দিষ্ট হয়। দু’হাজার বছরের ধারাবাহিক ও ক্রমাগত চেষ্টা সাধনা সত্ত্বেও ইউরোপীয় সমাজ বিয়ে ও পরিবারকে অতখানি স্থান ও মর্যাদা দিতে পারেনি, যতখানি চৌদ্দশ বছর আগে ইসলাম দিয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/505/35
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।