মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
এতক্ষণে আমরা স্ত্রী গ্রহণের বৈধতা, প্রয়োজনীয়তা ও অপরিহার্যতা সম্পর্কে আলোচনা করেছি এবং এ ব্যবস্থা চালুন না থাকার কারণে দুনিয়ার বিভিন্ন সমাজে কি পরিণতি ঘটেছে আর সে সব কি সামাজিক ও নৈতিক সমস্যার সম্মুখীন, তাও আমরা দেখেছি এবং তারও পরিপ্রেক্ষিতে একাধিক স্ত্রী গ্রহণের আবশ্যকতা প্রমাণ করেছি। কিন্তু এ প্রসঙ্গে ইনসাফের তাগিদ হচ্ছে –এর খারাপ দিকটি সম্পর্কেও দুটো কথা বলে দেয়া। কেননা এরও যে একটা খারাপ দিক রয়েছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই।
ক. এ পর্যায়ে সবচেয়ে খারাপ দিক যেটা মারাত্মক হয়ে ওঠে পারিবারিক জীবনে, তা হচ্ছে স্ত্রীদের পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ, মন-কষাকষি ও ঝগড়া-বিবাদ। এ যে অনিবার্য তাতে কোনো সন্দেহ নেই এবং এর ফলে যে পারিবারিক জীবন তিক্ত বিষ জর্জরিত হয়ে ওঠে তাও অনস্বীকার্য। এ রকম অবস্থায় স্বামী বেচারার দিন-রাত বচ্চিশ ঘন্টা চলে যায় স্ত্রীদের মধ্যে ঝগড়া মেটাবার কাজে। এতেও তার জীবন জাহান্নামে পরিণত হয়। এমন সময়ও আসে, যখন সে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে এবং একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করার জন্যে নিজেকে রীতিমত অপরাধী মনে করতে শুরু করে।
দ্বিতীয়ত, স্বামী যেহেতু স্বাভাবিক কারণেই একজন স্ত্রীর প্রতি বেশি টান ও বেশি ভালোবাসা পোষণ করে, ফলে স্ত্রীদের মধ্যে জ্বলে ওঠে হিংসার আগুন, যা দমন করতে পারে কেবল স্বামীর বুদ্ধিমত্তা আর এ আগুন থেকে বাঁচতে পারলে কেবল সে, যে নারীর আদর্শ চরিত্রকে অবলম্বন হিসাবে গ্রহণ করতে পেরেছে।
খ. হিংসার আগুন স্ত্রীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, তা স্ত্রীদের সন্তানদের মধ্যেও সংক্রমিত হয়। তারাও বিভিন্ন মায়ের সন্তান হওয়ার কারণে পরস্পরের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করতে থাকে। ভ্রাতৃত্ব পারস্পরিক পরিণত হয়ে যায়। ফলে গোটা পরিবারই হিংসা-বিদ্বেষের আগুনে জ্বলতে থাকে। এরূপ অবস্থায় বিশেষ করে পিতার পক্ষে –একাধিক স্ত্রীদের স্বামীর পক্ষে –হয়ে পড়ে অত্যন্ত মারাত্মক। পরিবারের স্থিতি বিনষ্ট হয়, শান্তি ও সৌভাগ্য থেকে হয় বঞ্চিত।
গ. ভালোবাসার দিক দিয়ে স্ত্রীদের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।যে স্ত্রী নিজকে স্বামীর ভালোবাসা বঞ্চিতা বলে মনে করে, সতীনদের প্রতি তার স্বামীর মনের ঝোঁক-আকর্ষণ ও টান লক্ষ্য করে, তখন সে স্বাভাবিকভাবেই মনে করে যে, তারও একদিন ছিল, যখন সে স্বামীর হৃদয়ভরা ভালোবাসা লাভ করেছিল। তখন তার মনে জাগে হতাশা। স্বামীর ভালোবাসায় পরবর্তী শরীককে তখন সে নিজের শত্রু বলে মনে করতে শুরু করে। আর তখন তার মনে যে ব্যর্থতার বেদনা জাগ্রত হয়, তা অনেক সময় তার নিজের জীবনকেও নষ্ট করে দিতে পারে, সে সতীনকে অপসারিত করার উপায় উদ্ভাবনের তৎপরতাও কিছুমাত্র বিচিত্র নয়।
ঘ. অনেকের মতে একাধিক স্ত্রীসম্পন্ন পরিবারের ছেলে মেয়েরা উচ্ছৃঙ্খল ও বিদ্রোহী হয়ে পড়ে। ঘরে যখন দেখতে পায় মায়েদের পরস্পরের মধ্যে ঝগড়া-ঝাটি দিন-রাত লেগেই আছে আর তার সামনে বাবা নিতান্ত অষহায় হয়ে হয় চুপচাপ নির্বাক থাকে, না হয় স্ত্রীদের ওপর চালায় অত্যাচার, নিষ্টেষণ, নির্যাতন, তখন পরিবারের শৃঙ্খলা ও শাসন-বাঁধন শিথিল হয়ে পড়ে। ছেলেমেয়েরা ঘরে শান্তি-সম্প্রীতির লেশমাত্র না পেলে ঘরের বাইরে এসে পড়ে আর শান্তির সন্ধানে যত্রতত্র ঘুরে মরে।
একাধিক স্ত্রী গ্রহণের পরিণামে উপরোক্ত অবস্থা দেখা দেয়া কিছুমাত্র বিচিত্র নয়। আর পারিবারিক জীবনে এ যেন একটি অকল্যাণের দিক, তাও অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে মানব সমাজের জন্যে এমন কোনো ব্যবস্থা রয়েছে, যা বাস্তবে জমিনে রূপায়িত হলে তাতে কোনো দোষ –কোনো ক্রটিই দেখা দেবে না? মানুষ যা কল্পনা করে, আশা করে, বাস্তবে তার কয়টি সম্ভব হয়ে ওঠে? ইসলামের একাধিক স্ত্রী গ্রহণ সম্পর্কিত অনুমতি বা অবকাশেও যে বাস্তব ক্ষেত্রে এমনি ধরনের কিছু দোষ-ত্রুটি দেখা দেবে কিংবা বলা যায়, এ অনুমতির সুযোগে কিছু লোক যে দুষণীয় কাজ করবে, তা আর বিচিত্র কি। তবে ইসলামের একাধিক স্ত্রী গ্রহণের অনুমতিই একমাত্র জিনিস নয়, সে সঙ্গে রয়েছে প্রকৃত দ্বীনদারী ও পবিত্র চরিত্র গ্রহণের আদর্শ –আদেশ, উপদেশ ও প্রশিক্ষণ পদ্ধতি। তা যদি পুরাপুরি অবলম্বিত হয়, তাহলে উপরোক্ত ধরনের অনেক খারাবী থেকেই পরিবারকে রক্ষা করা যেতে পারে, একথা জোরের সাথেই বলা যায়।
একথা মনে রাখতে হবে যে, ইসলামে একাধিক স্ত্রী গ্রহণের কোনো নির্দেশ দেয়া হয় নি, তা ফরযও করে দেয়া হয়নি মুসলিম পুরুষদের ওপর। বরং তা হচ্ছে প্রয়োজনের সময়কালীন এক ব্যবস্থা মাত্র, তা হচ্ছে নিরুপায়ের উপায়, অগতির গতি। বস্তুত এক সঙ্গে একাধিক স্ত্রী গ্রহণের প্রয়োজন যে দেখা দিতে পারে, অনেক সময় তা একান্ত অপরিহার্য হয়ে পড়ে তা পূর্বে আমরা দেখেছি। এখন কথা হলো, নিরুপায় হয়ে পড়লে দ্বিতীয়, তৃতীয় বা চতুর্থ স্ত্রী গ্রহণ করা যাবে কিনা! আর নিতান্ত প্রয়োজনে পড়ে গৃহীত এ ব্যবস্থায় যদি কিছু কষ্টের কারণ দেখা দেয় তাহলেও তা অবলীলাক্রমে বরদাশত করা হবে কিনা! একটি বৃহত্তর খারাবী থেকে বাঁচবার জন্যে ক্ষুদ্রতর খারাবীকে বরদাশত করা মানব জীবনের স্থায়ী রীতি, যা আমরা দিনরাত সমাজে দেখতে পাই। কিন্তু ক্ষুদ্রতর খারাবী দেখিয়ে একথা বলা কিছুতেই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে না যে, এ গোটা ব্যবস্থাই ঠিক নয়। কাজেই ব্যাপারটি সম্পর্কে উদার ও ব্যাপকতর দৃষ্টিতেই বিচার করতে হবে ও চূড়ান্ত রায় দিতে হবে।
পরন্তু সতীনের কারণে কোনো স্ত্রীর মনোকষ্ট হওয়া কেবলমাত্র একাধিক স্ত্রী গ্রহণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। স্ত্রী যদি দেখতে পায় তার বর্তমান থাকা সত্ত্বেও তার স্বামী অপর নারীর প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে, তখনো কি তার মনে হতাশা জাগবে না? দাম্পত্য জীবনের ব্যর্থতার আঘাত কি তার কলিজাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেবে না? …..তাহলে তার স্বামীকে অবৈধ পন্থায় কিংবা গোপনে চুরি করে অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে দেয়ার চাইতে বৈধভাবে তাকে বিয়ে করে ঘরে আনতে দেয়া কি অধিকতর পবিত্র ব্যবস্থা নয়? ……যে লোক একজন মাত্র স্ত্রী গ্রহণ করেও তার একমাত্র স্ত্রীকে ভালোবাসেন না, সেই স্ত্রীর মানসিক অবস্তা কি এবং সেজন্যে দায়ী কে?
আর এ ধরনের পরিবারের সন্তানদের উচ্ছৃঙ্খল হওয়া সম্পর্কে যে কথা বলা হয়েছে, সূক্ষ্মভাবে চিন্তা করলেই বোঝা যাবে যে, এর জন্যে একাধিক স্ত্রী বর্তমান থাকাই দায়ী নয়। এক স্ত্রীর সন্তানদেরও অবস্থা এমনি হতে পারে, হয়ে থাকে। আরব জাহানে ‘রীফ’ গোত্রের লোকেরা সাধারণভাবেই একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করে থাকে। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে অধিক সন্তান লাভ, যেন কৃষিকাজে তারা তাদের সাহায্য করতে পারে, তারা খুবই সচ্ছল অবস্থার লোক। কিন্তু ‘রীফ’ সন্তানদের মধ্যে পারিবারিক বিদ্রোহের নামচিহ্ন পর্যন্ত দেখা যায় না। বরং তা দেখা যায় বড় বড় শহরে নগরে, বিশেষত গরীব পর্যায়ের পরিবারের সন্তানদের মধ্যে খুব বেশির ভাগ। বর্তমানে অল্প বয়সের ছেলেমেয়েদের মধ্যে যে পারিবারিক বিদ্রোহের ভাব প্রবল হতে দেখা যাচ্ছে তার কারণ নিশ্চয়ই একাধিক স্ত্রী গ্রহণ নয়, বরং তার কারণ নিহিত রয়েছে শিক্ষা বিষয়ক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার মধ্যে।
পূর্বের আলোচনা থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, ইসলামে একাধিক স্ত্রী গ্রহণের ব্যবস্থা একটি নৈতিক ও মানবিক ব্যবস্থা। নৈতিক চরিত্রের পবিত্রতা রক্সা এবং মানবতার স্বাভাবিক ও প্রকৃতিগত দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই এ ব্যবস্থা বিশ্বস্রষ্টা কর্তৃক প্রদত্ত হয়েছে। নৈতিক ব্যবস্থা এজন্যে যে, একজন পুরুষ নিজ ইচ্ছামতো যে কোনো মেয়েলোককে যে কোনো সময়ে নিজের অঙ্গশায়িনী করে নিতে পারে না, পারে না বিয়ের বাইরে যাকে তাকে দিয়ে তার যৌন লালসা চরিতার্থ করে নিতে। আর তার স্ত্রীর বর্তমানে তিনজনের অধিক স্ত্রীলোকের সঙ্গে যৌন মিলন সম্প্ন করতে পারে না।
তাছাড়া কারো সঙ্গে গোপনে, অবৈধভাবে কেনো মেয়েলোকের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারা যায় না। বরং রীতিমত বিয়ে সম্পন্ন হওয়া আবশ্যক, যার পিছনে ছেলে ও মেয়ের অলী-গার্জিয়ান তথা সমাজের লোকদের থাকবে পূর্ণ সমর্থন, যার দরুন নৈতিক চরিত্রের পবিত্রতা বিনষ্ট হওয়ার কোনো কারণ ঘটবে না সেখানে।
আর সে ব্যবস্থা মানবিক এজন্যে যে, একজন স্ত্রী বর্তমান থাকা সত্ত্বেও যে পুরুষ অপর স্ত্রীর প্রয়োজন তীব্রভাবে বোধ করে, সে বাধ্য হয় বিয়ে ছাড়াই অবৈধভঅবে বান্ধবী আর প্রণয়ী যোগাড় করতে। সে তাদের সাথে যৌন সম্পর্ক রাখবে, তাদের মধু লুটবে অথচ সে তাদের স্বামী হবে না, গ্রহণ করবে না কোনো সামাজিক ও অর্থনৈতিক দায়িত্ব কিংবা সে বাধ্য হবে হাটে-বাজারে, শহরে-নগরে, কোঠাবাড়িতে অবস্থিত দেহপসারিণীদের দ্বারে দ্বারে লজ্জাস্করভাবে ঘুরে বেড়াতে। এতে করে তার মনুষ্যত্ব বিনষ্ট হয়ে যাবে, লাঞ্ছিত হবে, কলংকিত হবে তার ভিতরকার মানুষ।
উপরন্তু সে দেহপসারিণী কিংবা বান্ধবী-প্রণয়িনীদের জন্যে যৌন মিলনের বিনিময়ে যে বিপুল অর্থ-সম্পদ ব্যয় করবে, তাতে তার অর্থনৈতিক ধ্বংস টেনে আনবে, অথচ তা দ্বারা মানুষের সামাজিক কোনো কল্যাণই সাধিত হবে না। এ যৌন মিলনের পরিণামে গড়ে উঠবে না নতুন কোনো মানব-সমাজ।
একাধিক স্ত্রী গ্রহণের আইনসম্মত অবকাশ থাকলে এসব ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি কখনো দেখা দিতে পারে না। এ কারণে একাধিক স্ত্রী গ্রহণের ইসলামী বিধানযে কত নির্ভুল, কত স্বভাবসম্মত ও যুক্তিপূর্ণ ব্যবস্থা, তা সহজেই অনুধাবন করা যায়।
কিন্তু পাশ্চাত্য সমাজে যেখানে একাধিক স্ত্রী গ্রহণ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ, সেকানে কার্যত বহু স্ত্রী ভোগরে বীভৎস নৃত্য সর্বত্র পরিলক্ষিত হয়। সেজন্যে আইনে কোনো বাধা নেই, বরং আইনের অধীন-আইনের চোখের সামনেই অনুষ্ঠিত হয় এ জঘন্য কাজ।
-যদিও সেসব স্ত্রীলোককে বিয়ে করতে রীতিমত স্ত্রীত্বের মর্যাদায় গ্রহণ করা হয় না, তারা হয় বান্ধবী আর প্রণয়িনী মাত্র।
সে সমাজের পুরুষরাও চারজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে থাকে না, সেখানে যৌন সম্পর্ক চলে যথেষ্ট বাধা-বন্ধনহীন এবং সীমা-সংখ্যাহীন।
এরূপ অবাধ যৌন চর্চায় না গড়ে ওঠে গোপনে, সমাজ সমর্থনের বাইরে। এর ধ্বংসকারিতা আজকে পাশ্চাত্য সমাজকে গ্রাস করে ফেলেছে।
এক কথায় বলা যায়, ইউরোপেও বহু স্ত্রী গ্রহণের রেওয়াজ কার্যথ চালু রয়েছে। যদিও তা অবৈধভাবে। আর ইসলামেও একাধিক স্ত্রী গ্রহণের রেওয়াজ সমর্থিত, কিন্তু আইনের সামায্যে এবং চার সংখ্যার সীমার মধ্যে। এ দুয়ের মধ্যে কোনটি যে ভালো ব্যবস্থা, তা যেনো কোনো সুস্থ বিবেকসম্পন্ন ব্যক্তি সহজেই নির্ণয় করতে পারে।
বস্তুত এ পর্যায়ে ইউরোপীয় সমাজ আর ইসলামী সমাজে যে পার্থক্য দেখা যায়, তা এক স্ত্রী গ্রহণ আর বহু স্ত্রী গ্রহণের ব্যাপারে নয়, আসল পার্থক্য হচ্ছে সীমিত সংখ্যার বৈধ স্ত্রী গ্রহণ আর সীমা-সংখ্যাহীন স্ত্রী ভোগের দায়িত্বহীন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে। একটি করে মানুষকে শালিনতাপূর্ণ, দায়িত্বশীল আর অপরটি করে দেয় যেন লালসার দাস, দায়িত্বহীন, উচ্ছৃঙ্খল।
শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) কর্তৃক ইসলামের প্রতিষ্ঠা লাভেল পূর্বে আরব সমাজেও সীমা-সংখ্যাহীন বহু স্ত্রী ভোগ করার নানাবিধ উপায় কার্যকর ছিল। ইসলাম এ স্বাভাকি প্রবণতার সংশোধন করেছে। সীমা-সংখ্যাহীন স্ত্রী ভোগ করার পথ বন্ধ করে চারজন পর্যন্ত সীমা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। দ্বিতীয়, বিয়ের বাইরে নারী-পুরষের যৌন সম্পর্ককে চিরতরে হারাম করে দিয়েছে এবং তৃতীয়, স্ত্রীদের মধ্যে আদল ও ইনসাফ কায়েম করার কঠোর নির্দেশ দিয়েছে। একাধিক স্ত্রী গ্রহণের জন্যে একে জরুরী শর্তরূপে নির্ধারিত করে দিয়েছে। আর চতুর্থ, এ ব্যাপারে স্বামীদেরম নে আল্লাহর আযাবের ভয় জাগিয়ে দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এ যে কত বড় সংশোধণী কাজ তা সেই সমাজের অবস্থাকে সামনে রেখে চিন্তা করলেই বুঝতে পারা যাবে। রাসূলে করীমের এ সংশোধনী কাজ বাস্তবায়িত হওয়ার পর সমাজের মূল গ্রন্থিতে যে পরিবর্তন সূচিত হয়েছিল তা সত্যিই বিস্ময়কর এবং তা পারিবারিক ইতিহাসে চিরদিন উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।
রাসূলে করীমের গঠিত সমাজে একাধিক স্ত্রী গ্রহণের রেওয়াজ ছিল, কিন্তু সেখানে তার খারাপ দিক কখনো প্রবল হয়ে উঠতে পারে নি। কোনো নারীর কিংবা স্বামীর জীবন সেখানে তিক্ত-বিষাক্তও হয়ে ওঠেনি, স্ত্রীদের পরস্পরের মধ্যে হিংসা দ্বেষের আগুন জ্বলে ওঠেনি আর তাদের সন্তানরাও হয়নি পরস্পরের শত্রু। ইসলাম যুগের প্রেম-ভালোবাসা, সম্প্রীতি-সদ্ভাবের পূত ভাবধারায় পরিপূর্ণ ছিল, ছিল অকৃত্রিম স্বামী-ভক্তি, ঐকান্তিক নিষ্ঠা। সেখানে এক স্ত্রীসম্পন্ন পরিবার আর একাধিক স্ত্রী সম্পন্ন পরিবারের মধ্যে বিশেষ কোনো পার্থক্য ছিল না।
আর এ কারণেই ইসলামী সমাজে নারীর সংখ্যাধিক্য কখনো সমস্যা হয়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেনি। ইহজগতের পর থেকেই ইসলামী যুদ্ধ-জিহাদের সূচনা হয়, তারপরে প্রায় দু’শতাব্দীকাল পর্যন্ত তা চলতে থাকে। এসব যুদ্ধ-জিহাদে হাজার হাজার পুরুষ শহীদ হয়েছে, হাজার হাজার নারী হয়েছে বিধবা, স্বামীহারা কিংবা অবিবাহিত যুবকদের শহীদ হওয়ায় অবিবাহিতা যুবতীদের সংখ্যা পেয়েছে বৃদ্ধি। কিন্তু কোনো দিন যুদ্ধ করতে সমর্থ যুবকশক্তির অভাবও দেখা দেয়নি, তেমনি অভাব ঘটেনি মেয়েদের জন্যে স্বামীর। অথচ আধুনিক ইউরোপ মাত্র দুটো মহাযুদ্ধের ফলেই পুরুষদের সংখ্যাল্পতা ও নারীর সংখ্যাধিক্যের বিরাট সমস্যার সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। অভাব পড়েছে যুদ্ধযোগ্য যুবশক্তি।
এসব দৃষ্টিতে বিচার করলেও একাধিক স্ত্রী গ্রহণের ইসলামী ব্যবস্থার সৌন্দর্য ও যথার্থতা সহজেই অনুধাবন করা যায়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/505/93
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।