মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
স্বামী-স্ত্রীর মধে মন কষাকষি হওয়া খুবই স্বাভাবিক। আর এ সুযোগে শয়তা পরস্পরের মনে নানারূপ বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে কম চেষ্টা করে না। আর এরই ফলে স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সম্পর্কে ফাটল ধরতে কিছু বিলম্ব হয় না। বিশেষ করে এজন্যেও অনেক সময় জটিল পরিস্থিতির উদ্ভব হয় যে, মেয়েরা সাধারণই নাজুক স্বভাবের হয়ে থাকে। অল্পতেই রেগে যাওয়া, অভিমানে ক্ষুব্ধ হওয়া এবং স্বভাবগত অস্থিরতায় চঞ্চলা হয়ে ওঠা নারী চরিত্রের বিশেষ দিক। মেয়েদের এ স্বাভাবিক দুর্বলতা কিংবা বৈশিষ্ট্যই বলুন –আল্লাহর খুব ভালোভাবেই জানা ছিল। তাই তিনি স্বামীদের নির্দেশ দিয়েছেনঃ
(আরবী)
তোমরা স্ত্রীদের সাথে খুব ভালোভাবে ব্যবহার ও বসবাস করো। তোমরা যদি তাদের অপছন্দ করো তাহলে এ হতে পারে যে, তোমরা একটা জিনিসকে অপছন্দ করছ, অথচ আল্লাহ তার মধ্যে বিপুল কল্যাণ নিহিত রেখে দেবেন।
মওলানা সানাউল্লাহ পানিপত্তী এ আয়াতের তাফসীরে লিখেছেনঃ
স্ত্রীদের সাথে ভালো ব্যবহার ও তাকে নিয়ে ভালোভাবে বসবাস করার মানে হচ্ছে কার্যত তাদের প্রতি ইনসাফ করা, তাদের হক-হকুক রীতিমত আদায় করা এবং কথাবার্তায় ও আলাপ-ব্যবহারে তাদের প্রতি সহানুভূতি ও শুভেচ্ছা প্রদর্শন। আর তারা তাদের কুশ্রীতা কিংবা খারাপ স্বভাব-চরিত্রের কারণে যদি তোমাদের অপছন্দনীয় হয়ে পড়ে, তাহলে তাদের জন্যে ধৈর্য ধারণ করো, তাদের না বিচ্ছিন্ন করে দেবে, না তাদের কষ্ট দেবে, না তাদের কোনো ক্ষতি করবে। (আরবী)….
স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, এ আয়াতে স্বামীদেরকে এক ব্যাপক হেদায়েত দেয়া হয়েছে। স্বামীদের প্রতি আল্লাহর প্রথম নির্দেশ হচ্ছেঃ তোমরা যাকে বিয়ে করে ঘরে তুলে নিলে, যাকে নিয়ে ঘর বাঁধলে তার প্রতি সব সময়ই খুব ভালো ব্যবহার করবে, তাদের অধিকার পূর্ণ মাত্রায় আদায় করবে। আর প্রথমেই যদি এমন কিছু যদি এমন কিছু দেখতে পাও যার দরুন তোমার স্ত্রী তোমার কাছে ঘৃণার্হ হয়ে পড়ে এবং যার কারণে তার প্রতি তোমার মনে প্রেম-ভালোবাসা জাগার বদলে ঘৃণা জেগে ওঠে, তাহলেই তুমি তার প্রতি খারাপ ব্যবহার করতে শুরু করো না। বুদ্ধির স্থিরতা ও সজাগ বিচক্ষণতা সহকারে শান্ত থাকতে ও পরিস্থিতিকে আয়ত্তে আনতে চেষ্টিত হবে। তোমাকে বুঝতে হবে যে, কোনো বিশেষ কারণে তোমার স্ত্রীর প্রতি যদি তোমার মনে ঘৃণা জেগে থাকে, তবে এখানেই চূড়ান্ত নৈরাশ্যের ও চিরবিচ্ছেদের কারণ হয়ে গেলো না। কেননা হতে পারে, প্রথমবারের হঠাৎ এক অপরিচিতা মেয়েকে তোমার সমগ্র মন দিয়ে তুমি গ্রহণ করতে পারো নি। তার ফলেই এই ঘৃণার সৃষ্টি হয়েছে কিংবা তুমি হয়তো একটি দিক দিয়েই তাকে বিচার করেছ এবং সেদিক দিয়ে তাকে মনমতো না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছ। অথচ তোমার বোঝা উচিত যে, সেই বিশেষ দিক ছাড়া আরো সহস্র দিক এমন থাকতে পারে, যার জন্যে তোমার মনের আকাশ থেকে ঘৃণতর এ পুঞ্জিত ঘনঘটা দূরীভূত হয়ে যাবে এবং তুমি তোমার সমগ্র অন্তর দিয়ে তাকে আপনার করে নিতে পারবে। সেই সঙ্গে একথাও বোঝা উচিত যে, কোনো নারীই সমগ্রভাবে ঘৃণার্হ হয় না। যার একটি দিক ঘৃণার্হ, তার এমন আরো সহস্র গুণ থাকতে পারে, যা এখনো তোমার সামনে উদঘাটিত হতে পারে নি। তার বিকাশ লাভের জন্যে একান্তই কর্তব্য। এ কারণেই নবী করীম (ﷺ) বলেছেনঃ
(আরবী)
কোনো মুসলিম পুরুষ যেন কোনো মুসলিম মহিলাকে তার কোনো একটি অভ্যাসের কারণে ঘৃণা না করে। কেননা একটি অপছন্দ হলে অন্য আরো অভ্যাস দেখে সে খুশীও হয়ে যেতে পারে।
কেননা, কোনো নারীই সম্পূর্ণরূপে খারাবীর প্রতিমূর্তি না হয়। কিছু দোষ থাকলে অনেকগুলো গুণও তার থাকতে পারে। সেই কারণে কোনো কিছু খারাপ লাগবে অমনি অস্থির, চঞ্চল ও দিশেহারা হয়ে যাওয়া উচিত নয়। তার অপরাপর ভালে দিকের উন্মেষ ও বিকাশ লাভের সুযোগ দেয়া এবং সেজন্যে অপেক্ষা করা স্বামীর কর্তব্য। আল্লামা আহমাদুল বান্না এ হাদীসের ব্যাখ্যায় লিখেছেনঃ
(আরবী)
এ হাদীসের মানে হচ্ছে এই যে, কোনো মু’মিনের উতি নয় অপর কোনো মু’মিন স্ত্রীলোক সম্পর্কে পূর্ণ মাত্রায় ঘৃণা পোষণ করা, যার ফলে চূড়ান্ত বিচ্ছেদের কারণ দেখা দিতে পারে। বরং তার কর্তব্য হচ্ছে মেয়েলোকটির ভালো গুণের খাতিরে তার দোষ ও খারাবী ক্ষমা করে দেয়া আর তার মধ্যে ঘৃণার্হ যা আছে, সেদিকে ভ্রূক্ষেপ না করা; বরং তার প্রতি ভালোবাসা জাগাতে চেষ্টা করা। হতে পারে তার স্বভাব-অভ্যাস খারাপ; কিন্তু সে বড় দ্বীনদার কিংবা সুন্দরী রূপসী বা নৈতিক পবিত্রতা ও সতীত্ব সম্পন্না অথবা স্বামীর জন্যে জীবন সঙ্গিনী।
আল্লাম শাওকানী এ হাদীস সম্পর্কে লিখেছেনঃ
(আরবী)
এ হাদীসে স্ত্রীদের সাথে খুব ভালো ব্যবহার ও ভালোভাবে বসবাস করার নির্দেশ যেমন আছে, তেমনি তার কোনো এক অভ্যাস স্বভাবের কারণেই তার প্রতি ঘৃণা পোষণ করতে নিষেধও করা হয়েছে। কেননা তার মধ্যে অবশ্যই এমন কোনো গুণ থাকবে, যার দরুন সে তার প্রতি খুশী হতে পারবে।
এজন্যে নবী করীম (ﷺ) স্বামীদের স্পষ্ট নসীহত করেছেন। বলেছেনঃ
(আরবী)
তোমরা স্ত্রীদের সাথে সব সময় কল্যাণময় ব্যবহার করার জন্যে আমার এ নসীহত কবুল করো। কেননা নারীরা জন্মগতভাবেই বাঁকা স্বভাবের হয়ে থাকে। তুমি যদি জোরপূর্বক তাকে সোজা করতে যাও, তবে তুমি তাকে চূর্ণ করে দেবে। আর যদি অমনি ছেড়ে দাও তবে সে সব সময় বাঁকা থেকে যাবে। অতএব বুঝে-শুনে তাদের সাথে ব্যবহার করার আমার এ উপদেশ অবশ্যই গ্রহণ করবে।
এ হাদীসের মানে বদরুদ্দীন আইনীর ভাষায় নিম্নরূপঃ
(আরবী)
আমি মেয়েলোকদের প্রতি ভালো ব্যবহার করার জন্যে তোমাদের উপদেশ দিচ্ছি, তোমরা তাদের সম্পপের্ক আমার দেয়া এ নসীহত অবশ্যই কবুল করবে। কেননা তাদের সৃষ্টিই করা হয়েছে পাঁজরের হাঁড় থেকে।
মেয়েলোকদের ‘হাড়’ থেকে সৃষ্টি করার মানে কি? –বদরুদ্দীন আইনী লিখেছেনঃ
(আরবী)
‘পাঁজর থেকে সৃষ্টি’ কথাটা বক্রতা বোঝার জন্যে রূপক অর্থে বলা হয়েছে। তার অর্থ হচ্ছে যে, মেয়েদের এমন এক ধরনের স্বভাব দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে যে, সে সৃষ্টির মধ্যেই রয়েছে বক্রতা –বাঁকা হওয়া অর্থাৎ মেয়েদের এক বাঁকা মূল থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। অতএব তাদের দ্বারা কোনোরূপ উপকারিতা লাভ করা সম্ভব কেবল তখনি, যদি তাদের মেজাজ স্বভাবের প্রতি পূর্ণরূপে সহানুভূতি সহকারে লক্ষ্য রেখে কাজ করা হয় এবং তাদের বাঁকা স্বভাবের দরুন কখনো ধৈর্য হারানো না হয়। (ঐ)
হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত এক হাদীসে বলা হয়েছেঃ
(আরবী)
মেয়েলোক পাঁজরের হাড়ের মতো। তাকে সোজা করতে চাইবে তো তাকে চূর্ণ করে ফেলবে, আর তাকে ব্যবহার করতে প্রস্তুত হলে তার স্বাভাবিক বক্রতা রেখেই ব্যবহার করবে।
এ হাদীস থেকে অকাট্যভাবে প্রমাণিত হলো যে, নারীদের স্বভাবে বক্রতা স্বভাবগত ও জন্মগত। এ বক্রতা স্মপূর্ণরূপে দূর করা কখনো সম্ভব হবে না। তবে তাদের আসল প্রকৃতিকে বজায় রেখেই এবং তাদের স্বভাবকে যথাযথভাবে থাকতে দিয়েই তাদেরকে নিয়ে সুমধুর পারিবারিক জীবন গড়ে তোলা যেতে পারে, সম্ভব তাদের সহযোগিতায় কল্যাণময় সমাজ গড়া। আর তা হচ্ছে, তাদের প্রতি ভালোবাসা পোষণ করা, তাদের সাথে অত্যন্ত নম্রতা ও সদিচ্ছাপূর্ণ ব্যবহার করা এবং তাদের মন রক্ষা করতে শেষ সীমা পর্যন্ত যাওয়া ও যেতে রাজি থাকা।
আল্লামা শাওকানী এ হাদীসের পরিপ্রেক্ষিতে লিখেছেনঃ
মেয়েলোকদের পাঁজরের বাঁকা হাড়ের সাথে তুলনা করার উদ্দেশ্য হচ্ছে এ কথা বোঝানো যে, (আরবী) মেয়েরা স্বভাবতই বাঁকা,তাদের সোজা ও ঋজু করা সম্ভব নয়। যদি কেউ তাকে ঠিক করতে চেষ্টা করে, তবে সে তাকে ভেঙে-চুরে ফেলবে, নষ্ট করবে। আর যে তাকে যেমন আছে তেমনিই থাকতে দেবে, সে তার দ্বারা অশেষ কল্যাণকর কাজ করাতে পারবে, ঠিক যেমন পাঁজবের হাড়। তাকে বানানেই হয়েছে বাঁকা, তাকে সোজা করতে যাওয়ার মানে তাকে ভেঙে ফেলা –চূর্ণ করা। আর যদি তাকে বাঁকাই থাকতে দেয়া হয়, তবে তা দেহকে সঠিক কাজে সাহায্য করতে পারে। শেষ পর্যন্ত তিনি লিখেছেনঃ
(আরবী)
এ হাদীসে নির্দেশ করা হয়েছে, মেয়েলোকদের সাথে সব সময়ই ভালো ও আন্তরিকতাপূর্ণ ব্যবহার করতে হবে। তাদের স্বভাব-চরিত্রে বক্রতা থাকলে (সেজন্যে) অসীম ধৈর্য অবলম্বন করতে হবে। আর সাবধান করে দেয়া হয়েছে যে, মেয়েরা এমন এক স্বভাবের সৃষ্টি, যাকে আদব-কায়দা শিখিয়ে অন্যরকম কিছু বানানো সম্ভব নয়। স্বভাব-বিরোধী নসীহত উপদেশও সেখানে ব্যর্থ হতে বাধ্য। কাজেই ধৈর্য ধারণ করে তার সাথে ভালো ব্যবহার করা, তাকে ভৎসনা করা এবং তার সাথে রূঢ় ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বর্জন করা ছাড়া পুরুষদের গত্যন্তর নেই।
নারীদের স্বভাব ও প্রকৃতি সম্পর্কে রাসূলে করীম (ﷺ)-এর এ উক্তিতে তাদের অসন্তুষ্ট বা ক্রুব্ধ হওয়ার কোনো কারণ নেই। এই কথা বলে তাদের অপমান করা হয়নি, না এতে তাদের প্রতি কোনো খারাপ কটাক্ষ করা হয়েছে। এ ধরনের কথার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে নারী সমাজের জটিল ও নাজুক মনস্তত্ত্ব সম্পর্কে পুরুষ সমাজকে অত্যধিক সতর্ক ও সাবধান করে তোলা। এ কথার ফলে পুরুষরা নারীদের সমীহ করে চলবে, তাদের মনস্তত্ত্বের প্রতি নিয়ত খেয়াল রেখেই তাদের সাথে আচার-ব্যবহার করতে উদ্ধুদ্ধ হবে। এ কারণে পুরুষদের কাছে নারীরা অধিকতর আদরণীয়া হবে। এতে তাদের দাম বাড়ল বৈ কমল না একটুকুও।
আল্লামা ইবনে হাজার আল-আসকালানী এ হাদীসের ব্যাখ্যায় লিখেছেনঃ নারীদের এ বাঁকা স্বভাব দেখে তাদের এমনি ছেড়ে দেয়া উচিত নয়, বরং ভালো ব্যবহার ও অনুকূল পরিবেশ দিয়ে তাদের সংশোধন করতে চেষ্টা পাওয়াই পুরুষদের কর্তব্য। দ্বিতীয়ত, নারীদের প্রতি ভালো ব্যবহার করা সব সময়ই প্রয়োজন, তাহলেই স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক প্রেম-ভালোবাসার বন্ধন দৃঢ় হবে। সেই সঙ্গে মেয়েদের অনেক ‘দোষ’ ক্ষমা করে দেয়ার গুণও অর্জন করতে হবে স্বামীদের। খুটিনাটি ও ছোটখাটো দোষ দেখেই চটে যাওয়া কোনো স্বামীরই উচিত নয়।
নারী সাধারণত একটু জেদী হয়ে থাকে। নিজের কতার ওপর অটল হয়ে থাকা ও একবার জেদ উঠলে সবকিছু বরদাশত করা নারী-স্বভাবের একটি বৈশিষ্ট্য। অনেক ক্ষেত্রে মেয়েরা খুঁতখুতে মেজাজেরও হয়ে থাকে। কাজেই পুরুষ যদি কথায় কথায় দোষ ধরে, আর একবার কোনো দোষ পাওয়াগেলে তা শক্ত করে ধরে রাখে- কোনোদিন তা ভুলে যেতে রাজি না হয়, তাহলে দাম্পত্য জীবনের মাধুর্যটুকুই শুধু নষ্ট হবে না –তার স্থিতিও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
তার কারণ, নারীদের এই স্বভাবগত দোসের দিক ছাড়া তার ভালো ও মহৎ গুণের দিকও অনেক রয়েছে। তারা খুব কষ্টসহিষ্ণু, অল্পে সন্তুষ্ট, স্বামীর জন্যে জীবন-প্রাণ উৎসর্গ করতে সতত প্রস্তুত। সন্তান গর্ভে ধারণ, সন্তান প্রসব ও সন্তান লালন-পালনের কাজ নারীরা –মায়েরা যে কতখানি কষ্ট সহ্য করে সম্পন্ন করে থাকে, পুরুষদের পক্ষে তার অনুমান পর্যন্ত করা সহজ নয়। এ কাজ একমাত্র তাদের পক্ষেই করা সম্ভব। ঘর-সংসারের কাজ করায় ও ব্যবস্থাপনায় তারা অত্যন্ত সিদ্ধহস্ত, একান্ত বিশ্বাসভাজন ও একনিষ্ঠ। তাইবলা যায়, তাদের মধ্যে দোষের দিকের তুলনায় গুণের দিক অনেক গুণ বেশি।
একজন ইউরোপীয় চিন্তাবিদ পুরুষদের লক্ষ্য করে বলেছেনঃ
গর্ভ ধারণ ও সন্তান প্রসবজনিত কঠিন ও দুঃসহ যন্ত্রণার কথা একবার চিন্তা করো। দেখো, নারী জাতি দুনিয়ায় কত শত কষ্ট ব্যথা-বেদনা ও বিপদের ঝুঁকি নিজেদের মাথায় নিয়ে বেঁচে থাকে। তারা যদি পুরুষের ন্যায় ধৈর্যহীনা হতো, তাহলে এতো সব কষ্ট তারা কি করে বরদাশত করতে পারত? প্রকৃত পক্ষে বিশ্বমানবতার এ এক বিরাট সৌভাগ্য যে, মায়ের জাতি স্বভাবতই কষ্টসহিষ্ণু, তাদের অনুভূতি পুরুষদের মতো নাজুক ও স্পর্শকাতর নয়। অন্যথায় মানুষের এসব নাজুক ও কঠিন কষ্টকর কাজের দায়িত্ব পালন করা সম্পূর্ণ অসম্ভব ছিল।
স্ত্রীর প্রতি স্বামীর ক্ষমাশীলতা দাম্পত্য জীবনের মাধুর্য ও স্থায়িত্বের জন্যে একান্তই অপরিহার্য। যে স্বামী স্ত্রীকে ক্ষমা করতে পারে না, ক্ষমা করতে জানে না, কথায় কথায় দোষ ধরাই যে স্বামীর স্বভাব, শাসন ও ভীতি প্রদর্শনই যার কথার ধরন, তার পক্ষে কোনো নারীকে স্ত্রী হিসেবে সঙ্গে নিয়ে স্থায়ীভাবে জীবন যাপন করা সম্ভব হতে পারে না। স্ত্রীদের সম্পর্কে সাবধান বাণী উচ্চারণ করার সঙ্গে সঙ্গে তাদের প্রতি ক্ষমাসহিষ্ণুতা প্রয়োগেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে কুরআন মজীদের নিম্নোদ্ধৃত আয়াতেঃ
(আরবী)
হে ঈমানদার লোকেরা, তোমাদের স্ত্রীদের ও সন্তানদের মধ্যে অনেকেই তোমাদের শত্রু। অতএব তাদের সম্পর্কে সাবধান! তবে তোমরা যদি তাদের ক্ষমা করো, তাদের ওপর বেশি চাপ প্রয়োগ না করো বা জোরজবরদস্তি না করো এবং তাদের দোষ-ত্রুটিও ক্ষমা করে দাও, তাহলে জেনে রাখবে, আল্লাহ নিজেই বড় ক্ষমাশীল ও দয়াবান।
নবী করীম (ﷺ) তাঁর স্ত্রীদের অনেক বাড়াবাড়িই মাফ করে দিতেন। হযরত উমর ফারূকের বর্ণিত একদিনের ঘটনা থেকে তা বাস্তববাবে প্রমাণিত হয়।
হযতর উমর (রা) একদিন খবর পেলেন, নবী করীম (ﷺ) তাঁর বেগমগণকে তাঁদের অতিরিক্ত বাড়াবাড়ির কারণে তালাক দিয়েছেন। তিনি এ খবর শুনে খুব ভীত হয়ে রাসূলের নিকট উপস্থিত হলেন। জিজ্ঞেস করলেনঃ আপনি আপনার বেগমদের তালাক দিয়েছেন? রাসূল (ﷺ) বললেনঃ না। পরে রাসূল (ﷺ) তাঁর সাথে হাসিমুখে কথাবার্তা বলেছেন। -বুখারী।
এ হাদীসকে ভিত্তি করে আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী লিখেছেনঃ
(আরবী)
এ ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা থেকে প্রমাণিত হয় যে, স্ত্রীদের পীড়ন ও বাড়াবাড়িতে ধৈর্য ধারণ করা, তাদের দোষ-ত্রুটির প্রতি বেশি গুরুত্ব না দেয়া এবং স্বামীর অধিকারের পর্যায়ে তাদের যা কিছু অপরাধ বা পদঙ্খলন হয়, তা ক্ষমা করে দেয়া স্বামীর একান্ত কর্তব্য। তবে আল্লাহর হক আদায় না করলে সেখানে ক্ষমা করা যেতে পারে না।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/505/61
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।