hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

পরিবার ও পারিবারিক জীবন

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (র.)

৪০
দারিদ্র্য বিয়ের ব্যাপারে বাধা নয়
ওপরের আলোচনা থেকে একথা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, ইসলাম নির্বিশেষে সকল স্ত্রী-পুরুষকেই বিধিসঙ্গত নিয়মে ও শরীয়তসম্মত পন্থায় বিয়ে করার জন্যে উৎসাহ দিয়েছে। আর যৌন উত্তেনা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠলে তখন বিয়ে করা ফরযের পর্যায়ে পৌঁছে যায় বলে ঘোষণা দিয়েছে।

কিন্তু অনেক সময় যুবক-যুবতীগণ কেবলমাত্র দারিদ্র্য কিংবা অর্থাভাবের কারণে বিয়ে করতে প্রস্তুত হতে চায় না। তারা মনে করে, বিয়ে করলে আর্থিক দায়িত্ব বেড়ে যাবে, সেই অনুপাতেই রোজগার না হলে সে দায়িত্ব পালন করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। অথবা বিয়ে করলে যে আর্থিক দায়িত্ব বাড়বে, তদ্দরুন জীবন মান নিচু হয়ে যাবে।

এসব কারণে তারা বিয়েকে যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতেই চেষ্টা করে। কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে এ মনোভাব –চিন্তার এই ধারা ও প্রকৃতি –আদৌ সমর্থণযোগ্য নয়। একে তো মানুষের রুজি-রোজগারের পরিমাণ কোনো স্থায়ী ও অপরিবর্তনীয় জিনিস নয়। যে আল্লাহ আজ একজনকে পঞ্চাশ টাকা দিয়েছেন, সে আল্লাহই আগামীকাল তাকে একশত বা এক হাজার টাকা দিতে পারেন। তাই অর্থাভাব যেন কখনোই বিয়ের পথে বাধা হয়ে না দাঁড়াতে পারে, সেজন্যে আল্লাহ তা’আলা নিজেই ঘোষণা করেছেনঃ

(আরবী)

যদি তারা গরীব দরিদ্র হয়, তবে আল্লাহ তাঁর অনুগ্রহে তাদের ধনী করে দেবেন। বস্তুতই আল্লাহ প্রশস্ততাসম্পন্ন সর্বজ্ঞ।

ছেলে বা মেয়ে কিংবা তাদের অলী-গার্জিয়ানদের উভয়ের কিংবা কোনো এক পক্ষের দারিদ্র্য বিয়ের পথে বাধা হওয়ার আশংকা দূর করার জন্যে কুরআনের এ আয়াত স্পষ্ট ঘোষণা। এর অর্থঃ

(আরবী)

বিয়ের প্রস্তাব আসা ছেলে বা মেয়ের পারস্পরিক বিয়ের পথ দারিদ্র্য যেন বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। কেননা আল্লাহর মেহেরবানীতে রয়েছে অর্থবিমুখতা। এজন্যে যে, আল্লাহ সকাল-সন্ধ্যা যাকে চান অভাবিতপূর্ব উপায়ে রিযিক দান করেন। কিংবা এ আয়াতে আল্লাহ তা’আলা ওয়াদা করেছেন (দারিদ্রকে) ধনী করে দেয়ার। অবশ্য তা আল্লাহর ইচ্ছাধীন –আল্লাহ ইচ্ছার শর্তাধীন।

‘আল্লাহর ইচ্ছাধীন’ বলার কারণ এই যে, বিয়ে করলেই স্বামী-স্ত্রী ধনী হয়ে যাবে এমন কোনো কথা নেই। কাজেই আল্লাহ কোথাও ওয়াদা খেলাফী করেছেন –একথা বলা যাবে না। কেননা কত স্বামী বা স্ত্রীই তো দুনিয়ায় এমন রয়েছে, যারা দরিদ্র, বিয়ে করা সত্ত্বেও তাদের দারিদ্র্য দূর হয়ে যায় নি।

তাহলে এ আয়াতের ঘোষণার অর্থ কি? –কি এর প্রকৃত তাৎপর্য। বিয়ের সাথে আর্থিক সঙ্গতির সম্পর্ক কি? এর জবাবে বলা যায়, মানুষ সাধারণত কারণকেই বড় করে দেখে, কারণ বুঝেই নিশ্চিন্ত হয়। তারই ওপর নির্ভর করে। কিন্তু সে কারণের মূলে যে ব্যাপারটি রয়েছে, সে সম্পর্কে সম্পূর্ণ গাফিল হয়ে যায়। মানুষ মনে করে নিয়েছে যে, অধিক সন্তান হওয়াই বুঝি দারিদ্র্যের কারণ। আর কম সন্তান হলেই ধনের পরিমাণ বেড়ে যাবে। মানুষের এ অমূলক ধারণা বিদূরণের উদ্দেশ্যেই আল্লাহ তা’আলা উপরিউক্ত ঘোষণা প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, বিয়ে করলেই মানুষ আর্থিক দায়িত্ব-ভারে পর্যুদস্ত হবে –এমন কোনো কথা নেই; বরং এর উল্টোটারই সম্ভাবনা বেশি। আর তা হচ্ছে, অধিক সন্তান হলে অনেক সময় আল্লাহ তা’আলা তার ধন-মাল বাড়িয়ে দেন। এও দেখা গেছে যে, সন্তান সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে রোজগার বেশি হয়েছে, দারিদ্র্য দূরীভূত হয়ে গেছে! আসলে এ ব্যাপারটি আল্লাহর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। বিশেষত আল্লাহ তা’আলা নিজেই যখন বলে দিয়েছেন যে, বিয়ে করলেই দরিদ্র হয়ে যাওয়ার কোনো কারণ নেই, তখন বুদ্ধিমান ও জাগ্রতমনা নারী-পুরুষ বিয়েকে আদৌ ভয় করবে না, করা উচিত নয়। তাহলে আয়াতের সহজ অর্থ দাঁড়ালোঃ

(আরবী)

আল্লাহর অনুগ্রহে বিয়ে ধন-মালের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।

হযরত আবূ বকর সিদ্দিক (রা) বলেছেনঃ

(আরবী)

তোমরা বিয়ের ব্যাপারে আল্লাহর আদেশ পালনে তাঁর আনুগত্য করো। তা হলে ধনসম্পত্তি দানের যে ওয়াদা আল্লাহ তা’আলা করেছেন তা তোমাদের জন্যে পূরণ করবেন।

হযতর আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) বলেছেনঃ

(আরবী)

বিয়ে করে তোমরা ধনী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা করো।

এই পর্যায়ে স্মরণ করা যেতে পারে, একজন সাহাবী ছিলেন অত্যন্ত দরিদ্র, মোহরানা স্বরূপ দেবার মতো টাকা-পয়সা তো দূরের কথা –কোনো জিনিসই তাঁর কাছে ছিল না। একটি লোহার অঙ্গুরীয় দেবার মতো সামর্থ্যও তাঁর ছিল না। ছিল ছুধু তাঁর নিজের পরিধেয় একখানি বস্ত্র। তাকেও রাসূলে করীম (ﷺ) ‘মোহরানা’ স্বরূপ ধরে নিতে রাজি হলেন না। তা সত্ত্বেও সেই সাহাবীর বিয়ে সেই স্ত্রীলোকটির সাথেই করে দিলেন। আর ‘মোহরানা’র ব্যবস্থা করে দিলেন এভাবে যে, সাহাবী যতখানি কুরআন মজীদ শিখেছিলেন, তা-ই তাঁর স্ত্রীকে শিক্ষা দিবেন। আল্লামা ইবনে কাসীর এই ঘটনার উল্লেখ করে তার পরে লিখেছেনঃ

(আরবী)

আল্লাহ তা’আলার অপরিসীম দয়া-অনুগ্রহ সর্বজনবিদিত, তিনি তাঁকে এত পরিমাণ রিযিক দান করলেন যে, তার স্বামী-স্ত্রী উভয়ের জন্যে যথেষ্ট হয়ে গেল।

অতএব কোনো মুসলিম যুবকেরই আর্থিক অসচ্ছলতার দরুন অবিবাহিত কুমার জীবন যাপনে প্রস্তুত হওয়া উচিত নয়। বরং আল্লাহর রিযিকদাতা হওয়া –আল্লাহর অফুরন্ত দয়া-অনুগ্রহ ও দানের ওপর অবিচল বিশ্বাস রাখা উচিত। কেননা সকল প্রাণীরই রিযিকের দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ তা’আলা নিজের ওপরে গ্রহণ করে নিয়েছেন। বলেছেনঃ

(আরবী)

যমীনের উপর বিচরণশীল সব প্রাণীরই রিযিকের ভার একান্তভাবে আল্লাহর উপর।

আর্থিক অসচ্ছলতার দরুন বিয়ের দায়িত্ব গ্রহণে ভীত লোকদের উৎসাহ বর্ধনের উদ্দেশ্যে আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ

(আরবী)

আল্লাহ তাকে রিযিক দান করবেন এমন সব উপায়ে, যা সে ধারণা পর্যন্ত করতে পারে নি। আর বস্তুতই যে লোক আল্লাহর ওপর ভরসা করে কাজ করবে, সেই লোকের জন্যেই আল্লাহই যথেষ্ট হবেন।

উপস্থিত আর্থিক অনটন ও অসচ্ছলতা দর্শনে কোনো যুবক বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত করতে পারে, তেমনি কোনো গরীব যুবকের তরফ থেকে বিয়ের প্রস্তাব এলে মেয়ে পক্ষ তা শুধু এ কারণেই প্রত্যাখ্যান করতে পারে। অথবা মেয়ে পক্ষ গরীব বলে তার মেয়েকে বিয়ে করতে নারাযও হতে পারে। এসব দিকে লক্ষ্য রেখে আল্লাহ তা’আলা ঘোষণা করেছেনঃ

(আরবী)

তোমরা যদি দারিদ্যের ভয় করো, তাহলে জেনে রাখো, আল্লাহ অবশ্যই তাঁর অনুগ্রতে তোমাদের ধনী করে দেবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ বড়ই জ্ঞানী ও সুবিবেচক।

এ আয়াতের আর এক তরজমা হলোঃ ‘তোমরা যদি বিয়ের পরে অধিক সন্তানের বোঝা চেপে বসবে বলে ভয় করো, তাহলে আল্লাহ তাঁর অনুগ্রহে তোমাদের নিশ্চিন্ত করে দেবেন। আল্লাহ সবই জানেন, তিনি সুবিবেচক।

এ আয়াতের আর এক তরজমা হলোঃ ‘তোমরা যদি বিয়ের পরে অধিক সন্তানের বোঝা চেপে বসবে বলে ভয় করো, তাহলে আল্লাহ তাঁর অনুগ্রহে তোমাদের নিশ্চিন্ত করে দেবেন। আল্লাহ সবই জানেন, তিনি সুবিবেচক।

বস্তুত কোনো গরীব লোক যদি বিয়ে করে, তবে কামাই-রোজগারে তার বিপুল উৎসাহ ও উদ্যম সৃষ্টি হওয়া খুবই স্বাভাবিক। আর এ ব্যাপারে তার স্ত্রী তার ওপর বোঝা না হয়ে বরং হবে দরদী সাহায্যকারিণী। আর সন্তান হলে তারাও তার অর্থোপার্জনের কাজে সাহায্যকারী হতে পারে। অনেক সময় স্ত্রীর ধনী নিকটাত্মীয়ের কাছ থেকে যথেষ্ট আর্থিক সাহায্য লাভও হতে পারে। সদিচ্ছার ওপর ফলাফল নির্ভর করে। আল্লাহ তা’আলার কথার প্রতি যার বিশ্বাস, আস্থা ও সদিচ্ছার অভাব থাকে, সে ছাড়া অপর কেউ দুর্ভোগে পড়তে পারে না। দৃঢ় বিশ্বাসই তাক সফলতার পথে আল্লাহর সাহায্য লাভের উপযুক্ত করে দেবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন