hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

পরিবার ও পারিবারিক জীবন

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (র.)

৭৩
স্ত্রী ঘরের রাণী
পুরুষ ও নারীর জ্ঞান-বুদ্ধি, কর্মক্ষমতা ও দৈহিক-আঙ্গিকের স্বাভাবিক পার্থক্যের কারণে পারিবারিক জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কর্মবণ্টনের নীতি পূর্ণমাত্রায় গ্রহণ করা হয়েছে। পুরুষকে করা হয়েছে কামাই-রোজগার ও শ্রম-মেহনতের জন্যে দায়িত্বশীল আর স্ত্রীকে করা হয়েছে ঘরের রাণী। পুরুষের জন্যে কর্মক্ষেত্র করা হয়েছে বাইরের জগত আর নারীর জন্যে ঘর। পুরুষ বাইরের জগতে নিজের কর্মক্ষমতা প্রয়োগ করে যেমন করবে কামাই-রোজগার, তেমনি গড়বে সমাজ-রাষ্ট্র, শিল্প ও সভ্যতা। আর নারী ঘরে থেকৈ একদিকে করবে ঘরের যাবতীয় ব্যবস্থাপনা, অপরদিকে করবে গর্ভ ধারণ, সন্তান প্রসব, লালন ও ভবিষ্যতের উপযুক্ত নাগরিক গড়ে তোলার কাজ। এজন্যে নারীর সম্পর্কে রাসূলে করীম (ﷺ) বলেছেনঃ

(আরবী)

এবং নারী-স্ত্রী –তার স্বামীর ঘরের পরিচালিকা, রক্ষণাবেক্ষণকারিণী, কর্ত্রী।

এ হাদীসের (আরবী) শব্দের ব্যাখ্যায় আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী লিখেছেনঃ

(আরবী)

(আরবী) হচ্ছে হেফাযতকারী, রক্ষণাবেক্ষণকারী, আমানতদার, দায়িত্বের অধীন সব জিনিসের কল্যাণ সাধনের জন্যে একান্ত বাধ্য। যে ব্যক্তির দায়িত্বেই যে কোনো জিনিস দেয়া হবে, এমন প্রত্যেকেরই তেমন প্রত্যেকটি জিনিসে সুবিচার ও ইনসাফ করা এবং তার দ্বীনী ও দুনিয়াবী কল্যাণ সাধন করাই বিশেষ লক্ষ্য। এখন যার ওপর যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সে যদি তা পুরোপুরি পালন কর, তবে সে পূর্ণ অংশই লাভ করল, অধিকারী হলো বিরাট পুরস্কার লাভের আর যদি তা না করে, তবে দায়িত্বের প্রত্যেকটি জিনিসই তার অধিকার দাবি করবে।

আর দীর্ঘ হাদীসের ওপরে উদ্ধৃত অংশের ব্যাখ্যায় তিনি লিখেছেনঃ

(আরবী)

আর ‘স্ত্রী স্বামীর ঘরের দায়িত্বশীলা’ হওয়ার মানে, স্বামীর ঘরের সুন্দর ও পূর্ণ ব্যবস্থাপনা করা, স্বামীর কল্যান কামনা ও তাকে ভালো কাজের পরামর্শ বা উপদেশ দেয়া এবং স্বামীর ধনমাল ও তার নিজের ব্যাপারে পূর্ণ আমানতদারী ও বিশ্বাসপরায়ণতা রক্ষঅ করাই স্ত্রীর কর্তব্য।

স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক অধিকার ও কর্তব্যের কথা নিম্নোক্ত হাদীসে আরো স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। নবী করীম (ﷺ) এরশাদ করেছেনঃ

(আরবী)

তোমাদের জন্যে তোমাদের স্ত্রীদের ওপর নিশ্চয়ই অধিকার রয়েছে, আর তোমাদের স্ত্রীদের জন্যেও রয়েছে তোমাদের ওপর অধিকার। তোমাদের স্ত্রীদের ওপর তোমাদের অধিকার হচ্ছে এই যে, তারা তোমাদের শয্যায় এমন লোককে স্থান দেবে না যাকে তোমরা পছন্দ করো না। তোমাদের ঘরে এমন লোককেও প্রবেশ করার অনুমতি দেবে না, যাদের তোমরা পছন্দ করো না বলে নিষেধ করো।

আর তোমাদের ওপর তাদের অধিকার হচ্ছে, তোমরা তাদের ভরণ-পোষণ খুবই উত্তমভাবে বহন করবে!

স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক অধিকার ও কর্তব্যসম্পন্না এ দাম্পত্য জীবন যে কতদূর গুরুত্বপূর্ণ এবং এ জীবনে স্ত্রীর যে কতখানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তা ব্যাখ্যা করে শাহ ওয়ালী উল্লাহ দেহলভী লিখেছেনঃ

(আরবী)

দাম্পত্য জীবনের সম্পর্ক, সম্বন্ধ ও মিলনই হচ্ছে পারিবারিক জীবনের বৃহত্তম সম্পর্ক। এ সম্পর্কের ফায়দা সর্বাধিক, প্রয়োজন পূরণের দৃষ্টিতে তা অধিকতর স্বয়ংসম্পূর্ণ। কেননা আরব অনারবের সকল পর্যায়ের লোকদের মধ্যে স্থায়ী নিয়ম হচ্ছে এই যে, স্ত্রী সকল কল্যাণময় কাজে-কর্মে স্বামীর সাহায্যকারী হবে, তার খানাপিনা প্রস্তুতকরণ ও কাপড়-চোপড় পরিস্কার ও পরিপাটি করে রাখার ব্যাপারে সে হবে স্বামীর ডান হাত, তার মাল-সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণ ও তার সন্তানদের লালন-পালন করবে এবং তার অনুপস্থিতিতে সে তার ঘরের স্থলাভিষিক্ত ও দায়িত্বশীলা।

ঘরের অভ্যন্তরে ভাগের যাবতীয় ব্যাপারের জন্যে প্রথমত ও প্রধানত স্ত্রীই দায়ী। তারই কর্তৃত্বে যাবতীয় ব্যপার সম্পন্ন হবে। এখানে তাকে দেয়া হয়েছে এক প্রকারের স্বাধীনতা। স্বামীর ঘর কার্যত তার নিজের ঘর, স্বামীর জিনিসপত্র ও ধন-সম্পদ স্ত্রীর হেফাযতে থাকবে। সে হবে আমানতদার, অতন্দ্র প্রহরী। কিন্তু স্বামীর ঘরের কাজকর্ম কি স্ত্রীকে তার নিজের হাতে সম্পন্ন করতে হবে? এ সম্পর্কে ইমাম ইবনে হাজমের একটি উক্তি দেখতে পাওয়া যায়। তিনি বলেছেনঃ

(আরবী)

স্বামীর খেদমত করা –কোনো প্রকারের কাজ করে দেয়া মূলত স্ত্রীর কর্তব্য নয়, না রান্না-বান্নার আয়োজন করার ব্যাপারে; না রান্না করার ব্যাপারে; না সূতা কাটা; কাপড় বোনার ব্যাপারে; না কোনো কাজে।

ফিকাহিবদগণ এর কারণস্বরূপ বলেছেনঃ

(আরবী)

কেননা বিয়ের আকদ হয়েছে স্ত্রীর সাথে যৌন ব্যবহারের সুখ ভোগ করার জন্যে। অতএব স্বামী তার কাছ থেকে অপর কোনো ফায়দা লাভ করার অধিকারী হতে পারে না।

অথচ আবূ সওর বলেছেনঃ

(আরবী)

সব ব্যাপারে স্বামীর খেদমত করাই স্ত্রীর কর্তব্য।

ইবনে হাজমের ‘মূলত কর্তব্য নয়’ কথাটি তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা কোনো কাজ মূরত কর্তব্যভুক্ত না হলেও অনেক সময় তা না করে উপায় থাকে না। এজন্য আমরা রাসূল (ﷺ)-এর সময়কার ইসলামী সমাজে দেখতে পাই –স্ত্রীরা ঘরের যাবতীয় কাজ-কর্ম রীতিমত করে যাচ্ছে। নিজেদের হাতেই সব কাজ আঞ্জাম দিচ্ছে, ঘরের কাজ-কর্ম করতে গিয়ে নিদারুণ কষ্ট স্বীকার করছে, তবু সে কাজ ত্যাগ করেনি, কাজ করতে অস্বীকৃতিও জানায়নি। বলেনি –আমি কোনো কাজ করতে পারব না। রাসূল-তনয়া হযরত ফাতিমা (রা) ঘরের যাবতীয় কাজ করতেন, চাক্কি বা যাঁতা চালিয়ে গম পিষতেন, নিজ হাতে রুটি পাকাতেন। এ কাজে তাঁর খুবই কষ্ট হতো। এজন্যে একদিন তিনি তাঁর স্নেহময় পিতার কাছে অভিযোগ নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন। হযরত আসমা (রা) তাঁর স্বামীর সব রকমের খেদমত করতেন। তিনি নিজেই বলেছেনঃ

(আরবী)

আমি আমার স্বামী জুবাইরের সব রকমের খেদমত করতাম।

রাসূলে করীম (ﷺ)-এর যুগে ইসলামী সমাজের স্ত্রীরা স্বামীর খেদমত করতেন –এ কথা ঠিক। হযরত ফাতিমাও যখন নিজ হাতে যাঁতা চালিয়ে আটা তৈরী করতেন, আটা পিষে রুটি তৈয়ার করতেন ও আগুনের তাপ সহ্যকরে রুটি পাকাতেন, তখন অপর যে কোনো স্ত্রীর পক্ষে তা অকরণীয় হতে পারে না। বরং সবার জন্যেই তা অনুসরণীয়। নিজের ঘরের কাজ করা কোনো স্ত্রীর পক্ষেই অপমান কিংবা লজ্জার কারণ হতে পারে না। ইমামা মালিক এতোদূর বলেছেন যে, স্বামী বিশেষ ধনী লোক না হলে স্ত্রীর কর্তব্য তার ঘরের যাবতীয় কাজ যতদূর সম্ভব নিজের হাতে আঞ্জাম দেয়া –সে স্ত্রী যতবড় ধনী বা অভিজাত ঘরের কন্যাই হোক না কেন।

কুরআনের আয়াতঃ

(আরবী)

স্ত্রীদের সেই সব অধিকারই রয়েছে স্বামীদের ওপর, যা স্বামীদের রয়েছে স্ত্রীদের ওপর।

প্রমাণ করে যে, স্বামী যেমন স্ত্রীর জন্যে প্রাণপাত করে, স্ত্রীরও কর্তব্য স্বামীর জন্যে কষ্ট স্বীকার করা। ইমাম ইবনে তাইমিয়াও এরূপে ফতোয়া দিয়েছেন। আবূ বকর ইবনে শায়বা ও আবূ ইসহাক জাওজেজানীর মতও তা-ই। হাদীসে আরো স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে এর স্বপক্ষে। বলা হয়েছেঃ

(আরবী)

নবী করীম (ﷺ) তাঁর কন্যা ফাতিমার ওপর তাঁর ঘরের মধ্যকার যাবতীয় কাজ আঞ্জাম দেয়ার দায়িত্ব দিয়েছিলেন এবং হযরত আলীর ওপর দিয়েছিলেন ঘরের বাইরের যাবতীয় কাজের দায়িত্ব।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন