hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

পরিবার ও পারিবারিক জীবন

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (র.)

১৩৪
ইসলাম ও তালাক
তালাক (আরবী) শব্দের আভিধানিক অর্থঃ (আরবী)

বন্ধন খুলে দেয়া। আর শরীয়তের পরিভাষায় ‘তালাক’ মানে (আরবী) বিয়ের বন্ধন খুলে দেয়া।

ইমামুল হারামাইন বলেছেনঃ

(আরবী)

এ শব্দটি ইসলাম-পূর্ব জাহিলী যুগে ব্যবহৃত পরিভাষা। ইসলামও এক্ষেত্রে এ শব্দটিই ব্যবহার করেছে।

এ যুগের মিসরীয় পণ্ডিত আল-খাওলী বলেছেনঃ

(আরবী)

স্বামী তার স্ত্রীর সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয়া।

অথবা

(আরবী)

আল্লাহর বিধান অনুযায়ী একত্রিত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার সম্পর্ক-রশি ছিন্ন করা।

ফিকাহ শাস্ত্রের দৃষ্টিতে তালাক মানে-

(আরবী)

বিয়ের বাধনকে তুলে ফেলা আর বাধন তুলে ফেলার মানে বিয়ের বাধ্যবাধকতা খতম করে দেয়া।

ইসলামে তালাকের উদ্দেশ্য হচ্ছে –স্বামী স্ত্ররি পারস্পরিক সম্পর্ক যখন এতদূর খারাপ হয়ে যাবে যে, তারা পরস্পর মিলেমিশে ও ঐক্য সৌহার্দ্য সহকারে জীবন যাপন করার কোনো সম্ভবানাই দেখতে পায় না, এমনকি এরূপ অবস্থার সংশোধন বা পরিবর্তনের শেষ আশাও বিলীন হয়ে গেছে। -যার ফলে বিয়ের উদ্দেশ্যই সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়ে যা, তখন উভয়ের ভবিষ্যৎ দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষ ও তিক্ততা-বিরক্তির বিষাক্ত পরিণতি থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে উভয়ের মধ্যে চূড়ান্তভাবে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দেয়া।

কিন্তু তাই বলে ইসলামে তালাক বা বিচ্ছেদ কোনো পছন্দনীয় কাজ নয়। এ কাজকে কোনো দিক দিয়ে কিছুমাত্র উৎসাহিত করা হয়নি। বরং এ হচ্ছে নিরুপায়ের উপায়, অগতির গতি। দাম্পত্য জীবনে মিলমিশ রক্ষার সব চেষ্টা যখন ব্যর্থ হয়ে যাবে, তখন এ ব্যবস্থার সাহায্যে উভয়ের স্বতন্ত্র ও ব্যক্তিগত সত্তাকে বাঁচিয়ে রাখা। -আসন্ন ধ্বংসের হাত থেকে উদ্দার করাই হচ্ছে এর উদ্দেশ্য।

‘তালাক’ যে ইসলামে কোনো পছন্দনীয় কাজ নয়, একথা হাদীসের স্পষ্ট ঘোষণা থেকেই প্রমাণিত।

রাসূলে করীম (ﷺ) বলেছেনঃ

(আরবী)

আল্লাহর কাছে সব হালাল কাজের মধ্যে সর্বাধিক গৃণার্হ ও ক্রোধ উদ্রেককারী কাজ হচ্ছে তালাক।

এই হাদীসের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে আল্লামা খাত্তাবী লিখেছেনঃ

(আরবী)

তালাক ঘৃণ্য হওয়ার অর্থ আসলে সেই মূল কারণটির ঘৃণ্য হওয়া, যার দরুন একজন তালাক দিতে বাধ্য হয়। আর তা হচ্ছে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক খারাপ হওয়া –মিলমিশের অভাব হওয়া। মূল তালাক কাজটিই ঘৃণ্য নয়। কেননা এ কাজটিকে আল্লাহ তা’আলা মুবাহ করে দিয়েছেন। আর রাসূল (ﷺ) তাঁর কোনো কোনো স্ত্রীকে ‘রাজয়ী’ তালাক দিয়ে পুনরায় গ্রহণ করেছেন বলে প্রমাণিত।

আর ইমাম মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল কাহলানী ছানআনী এ হাদীসের ব্যাখ্যায় লিখেছেনঃ

(আরবী)

এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, হালালের মধ্যেও কতক কাজ এমন রয়েছে, যা আল্লাহর কাছে অত্যন্ত ঘৃণ্য। আর এসব হালাল কাজের মধ্যে ‘তালাক’ হচ্ছে সবচেয়ে ঘৃণ্য।

ফিকাহবিদদের মতেও তালাক মূলত নিষিদ্ধ। তবে তালাক না দিয়ে যদি কোনো উপায়ই না থাকে, তাহলে তা অবশ্যই জায়েয হবে। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে শত্রুতা ও হিংসা-বিদ্বেষের ভাব যদি এমন হয়ে দাঁড়ায় যে, একত্র জীবন সম্পূর্ণ অসম্ভব হয়ে পড়ে, একত্র জীবনে আল্লাহর নিয়ম-বিধান রক্ষা করা সম্ভবপর না হয়, তাহলে তখন এ তালাকের আশ্রয় নিতে হবে। (আরবী)

ফিকাহবিদদের মতে তালাক-ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তা অন্যায়, জুলুম ও নিদারুণ কষ্ট, জ্বালাতন ও উৎপীড়ন থেকে নিষ্কৃতি লাভের পন্থা। ফিকাহর ভাষায় বলা হয়েছেঃ

(আরবী)

তালাকের সৌন্দর্য হলো কষ্টকর অশান্তি থেকে অব্যাহতি লাভ।

বস্তুত আল্লাহ তা’আলা তালাককে শরীয়তসম্মত করেছেন। কেননা পারিবারিক জীবনে এর প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। তবে বিনা প্রয়োজনে –স্ত্রীর কোনো গুরুতর দোষ-ত্রুটি ব্যতীতই –তালাক দেয়া একান্তই এবং মারাত্মক অপরাধ। এ সম্পর্কে ইসলামের মনীষীগণ সম্পূর্ণ একমত। ইমাম আবূ হানীফার ফিকাহর আলোচনায় এ বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে উল্লেখ করা হয়েছে। ইসলামের সুস্পষ্ট ভাষায় ঘোষিত সাধারণ নীতি হলোঃ (আরবী) ‘না নিজে ক্ষতি স্বীকার করবে, না অন্যকে ক্ষতিগ্রহস্ত করবে’। অথচ অকারণ তালাকের দরুন স্ত্রীকে অপূরনীয় ক্ষতি ও অপমান-লাঞ্ছনার সম্মুখীন হতে হয়। প্রখ্যাত ফিকাহবিদ ইবনে আবেদীন বলেছেনঃ তালাক মূলত নিষিদ্ধ, মানে হারাম; কিন্তু দাম্পত্য জীবনে সম্পর্ক যখন এতদূর বিষজর্জর হয়ে পড়ে যে, তা থেকে নিষ্কৃতি লাভ অপরিহার্য হয়ে পড়ে, তখন তা অবশ্যই জায়েয হবে। পক্ষান্তরে বিনা কারণেই যদি তালাক দেয়া হয়; স্ত্রীকে তার পরিবার-পরিজনকে, সন্তান-সন্ততি ও পিতামাতা, ভাই-বোনদেরকে কঠিন কষ্টদান করা ও বিপদে ফেলাই যদি উদ্দেশ্য হয়, তাহলে এ তালাক একেবারেই জায়েয নয়। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলা কেবলমাত্র তখনই সঙ্গত হতে পারে, যখন তাদের উভয়ের স্বভাব-প্রকৃতিতে এতদূর পার্থক্যের সৃষ্টি হবে, আর পরস্পরের মধ্যে এতদূর শত্রুতা বেড়ে যাবে যে, তারা মিলিত থেকে আল্লাহর বিধানকে পালন ও রক্ষা করতে পারেই না। এরূপ অবস্থার সৃষ্টি না হলে তালাক তার মূল অবস্থায়ই থাকবে –মানে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ও হারামই বিবেচিত হবে। এজন্য আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেছেনঃ

(আরবী)

স্ত্রীরা যদি স্বামীদের কথামতো কাজ করতে শুরু করে, তাহলে তখন আর তাদের ওপর কোনো জুলুমের বাহানা তালাম করো না –তালাক দিও না।

বাস্তবিকই, কোনো প্রকৃত কারণ না থাকা সত্ত্বেও যারা স্ত্রীকে তালাক দেয়, তারা মহা অপরাধী, সন্দেহ নেই। এদের সম্পর্কেই রাসূলে করীম (ﷺ) বলেছেনঃ

(আরবী)

তোমাদের এক-একজনের অবস্থা কি হয়েছে? তারা কি আল্লাহর বিধান নিয়ে তামাসা খেলছে? একবার বলে তালাক দিয়েছি, আবার বলে পুনরায় গ্রহণ করেছি।

বলেছেনঃ

(আরবী)

তারা কি আল্লাহর কিতাব নিয়ে তামাসা খেলছে, অথচ আমি তাদের সামনেই রয়েছি।

রাসূলে করীমের ওপরে উল্লিখিত বাণীসমূহ থেকে একথা স্পষ্ট বোঝা যায় যে, ‘তালাক’ কোনো সাধারণ জিনিস নয়, মুখে এল আর তালাকের শব্দ উচ্চারণ করে ফেললাম, তা এরূপ সহজ ও হালকা জিনিস নয় আদৌ। বরং এ হচ্ছে অতি সাংঘাতিক কাজ। মানুষের জীবন, মান-সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলার কাজ হচ্ছে এটা, ইসলামে তার অবকাশ রাখা হয়েছে নিষ্কৃতির সর্বশেষ উপায় হিসেবে মাত্র।হযরত মুয়ায থেকে বর্ণিত হাদীসের ভাষা থেকেও একথারই সমর্থন পাওয়া যায়। রাসূলে করীম (ﷺ) বলেছেনঃ

(আরবী)

আল্লাহ তা’আলা তালাক অপেক্ষা অধিকতর ঘৃণার্হ জিনিস আর একটিও সৃষ্টি করেন নি।

হযরত আলী (রা) থেকে বর্ণিত রাসূলের নিম্নোক্ত বাণী থেকেও তালাকের ভয়াবহতা ও ভয়ংকরতা স্পষ্ট বুঝতে পারা যায়। বাণীটি নিম্নরূপঃ

(আরবী)

তোমরা বিয়ে করো, কিন্তু তালাক দিয় না, কেননা তালাক দিলে তার দরুন আল্লাহর আরশ কেঁপে ওঠে।

সমাজে এমন লোকের অভাব নেই, যারা মৌমাছির মতো ফুলে ফুলে মধু খেয়ে বেড়ানোর অভ্যাসের দাস। এদের কাছে না বিয়ের কোনো মূল্য আছে, না আছে নারীর জীবন, মান-সম্ভ্রমের এক কড়া-ক্রান্তি দাম। এরা বিয়েকে দুটি দেহের একই শয্যায় একত্রিত হওয়ার মাধ্যম মনে করে এবং একটি দেহের স্বাদ আকণ্ঠ পান করার পর নতুন এক দেহের সন্ধানে বেরিয়ে পড়াই তাদের সাধারণ অভ্যাস।

এদের সম্পর্কেই রাসূলে করীম (ﷺ) এরশাদ করেছেনঃ

(আরবী)

তোমরা বিয়ে করো; কিন্তু তালাক দিও না। কেননা আল্লাহ তা’আলা সেসব স্ত্রী-পুরুষকে (ভালোবাসেন না) পছন্দ করেন না, যারা নিত্য নতুন বিয়ে করে স্বাদ গ্রহণ করতে অভ্যস্ত।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন