hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

পরিবার ও পারিবারিক জীবন

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (র.)

৮৮
ভুল ধারণা অপনোদন
উপরোক্ত আয়াতকে কেউ কেউ একাধিক স্ত্রী গ্রহণের প্রতিবন্ধক হিসেবে পেশ করতে চেষ্টা করে থাকেন। তাঁদের বক্তব্য হলো, প্রথম আয়াতে একাধিক স্ত্রী গ্রহণের অনুমতি দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে সমতা রক্ষার শর্তে। আর দ্বিতীয় আয়াতে বলা হয়েছে যে, সমতা রক্ষা করতে চাইলেও তা করা মানুষের সাধ্যাতীত। অতএব একাধিক স্ত্রী গ্রহণ জায়েয নয়, আল্লাহর পছন্দও নয়। তাঁদের মতে আল্লাহ তাআলা একাধিক স্ত্রী গ্রহণের অনুমতি এক হাতে যেমন দিয়েছেন, অপর হাতে তেমনি তা ফিরিয়েও নিয়েছেন। ফলে এজন্য আর কোনো অনুমতি বাকি রইল না।

এ সম্পর্কে প্রথম কথা এই যে, যাঁরা এ ধরনের কথা বলেন, তাঁরা কুরআন-হাদীস তথা ইসলামী শরীয়তকে ভালো করে না বুঝেই বলেন অথবা বলা যেতে পারে তাঁরা নিজেদের মনগড়া কথাকেই কুরআনের দোহাই দিয়ে চালিয়ে দিতে চান। কেননা পূর্বোর বিস্তারিত আলোচনা থেকে একথা প্রমাণিত হয়েছে যে, একাধিক স্ত্রীর মধ্যে আদল –সুবিচার –ও সমতা যেসব বিষয়ে রক্ষা করার জন্য শরীয়ত দাবি করে –নির্দেশ দেয়, তা মানুষের সাধ্যায়ত্ত বিষয়। আর যে ক্ষেত্রে সমতা রক্ষা করা মানুসের সাধ্যাতীত, সে ক্ষেত্রে প্রথমোক্ত মানের সমতা রক্ষার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, শরীয়ত তার দাবিও করে না। প্রথম প্রকারের ‘আদল’ হচ্ছে বৈষয়িক বিষয়, স্ত্রী সহবাস, খাদ্য-পানীয়-পোশাক পরিবেশন ইত্যাদির ক্ষেত্রে। এ হচ্ছে বস্তু বিষয়ে আদল (সুবিচার) আর দ্বিতীয় হচ্ছে আধ্যাত্মিক …..প্রেমপ্রীতি ভালোবাসার ক্ষেত্রের আদল। প্রথম আয়াতে প্রথম পর্যায়ের আদল রক্ষার শর্ত করা হয়েছে একাধিক স্ত্রী গ্রহণের জন্যে। আর দ্বিতীয় পর্যায়ের আদল করা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয় বলে তার কম-সে-কম মাত্রার নির্দেশ করা হয়েছে। অতএব আয়াতদ্বয়ে কোনো প্রকার বৈপরীত্য নেই। বরং এ দুটোর আয়াত থেকেই মানুষের পক্ষে করণীয় আদল এবং একটা সুস্পষ্ট ও বাস্তব রূপ ফুটে ওঠে যার অনুসরণ করতে হবে একাধিক স্ত্রীর স্বামীকে। এ নির্দেশ চিরন্তনের জন্যে। আর এ নির্দেশ যথাযথভাবে পালন না করলে রীতিমত গুনাহগার হতে হবে।

দ্বিতীয় আয়াতে সেই আদল-এর কথা বলা হয়েছে, যা মানুষের সাদ্যায়ত্ত নয়। আর আল্লাহ যখন মানব-প্রকৃতি ও মানুষের প্রকৃতিগত ত্রুটি-দুর্বলতা সম্পর্কে পূর্ণ ওয়াকিফহাল, তখন তিনি এ ‘আদল’ মানুষ করতে পারে না বলে যথার্থই ঘোষণা করলেন। এ অবস্তায় মানুসের দ্বারা যা এবং যতটুকু সম্ভব তারই নির্দেশ দিলেন। তিনি বললেনঃ “একাধিক স্ত্রী থাকলে তাদের একজনের প্রতি তো ঝুঁকে পড়বেই –এ স্বাভাকি, তবে এমনভাবে কখনো ঝুঁকে পড়বে না, যার ফলে অপর স্ত্রী ঝুলন্ত অবস্থায় না বিবাহিতা না পরিত্যাক্তা –হয়ে থাকতে বাধ্য হয়”। তার অর্থঃ কোনো এক স্ত্রীর দিকে খানিকটা ঝুঁকে পড়ার অনুমতি আল্লাহ তা’আলা নিজেই দিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, এ খানিকটা ঝুঁকে পড়া যে অবশ্যম্ভাবী, তাও বলে দিচ্ছেন। অতএব কারো প্রতি খানিকটা ঝুঁকে পড়লে তা দোষের হবে না, মানুষকে সেজন্যে দোষী বা দায়ীও করা হবে না। আয়াতের শেষ অংশে সেই কথাই বলা হয়েছেঃ

(আরবী)

যদি তোমরা ভুল-ত্রুটির সংশোধন করতে থাক –ভুলের মধ্যে ডুবে দিশেহারা হয়ে পড় না, আর সব ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করতে থাক, তাহলে আল্লাহ মাফও করবেন, রহমত করবেন।

আয়াতের এ অংশে স্বামীকে স্ত্রীদের প্রতি ভালো ব্যবহার ও তাদের অধিকারসমূহ সঠিকরূপে আদায় করার জন্যে নতুন করে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ যদি স্বামী করতে থাকে, তাহলে এক স্ত্রীর প্রতি খানিকটা ঝুঁকে পড়ার দরুন অপর স্ত্রীর প্রতি যা কিছু অবহেলা-উপেক্ষা এর মধ্যে হয়ে গেছে তা দূর হয়ে যাবে এবং আল্লাহও ক্ষমা করবেন। আর যেহেতু সে ভবিষ্যতে আল্লাহকে ভয় করে স্ত্রীদের অধিকার সমানভাবে আদায় করতে থাকবে বলে এবং কখনো ইচ্ছে করে কোনো বিষয়ে তাদের মধ্যে তারতম্য –পার্থক্য করবে না বলে সংকল্প গ্রহণ করেছে, এজন্যে আল্লাহ তাদের প্রতি রহমত বর্ষণ করবেন, ভবিষ্যতে যাতে করে সকলের অধিকার ঠিক ঠিকভাবে আদায় করতে পারে, সেজন্যে তওফীকও দান করবেন। তার মনে স্ত্রীদের প্রতি ভালো ব্যবহারের দায়িত্বের অনুভূতিও জাগিয়ে দেবেন।

সেসব লোক যা ধারণা করেছে, তাই যদি আল্লাহর ইচ্ছে হয়ে থাকে, তাহলে বলতে হবে যেঃ (আরবী) এ আয়াতের সত্যিই কোনো অর্থ হয় না, বরং এ কথাটি বলারও কোনো প্রয়োজন ছিল না। সোজা করে বললেই পারতেনঃ তোমরা ‘আদল’ করতে পারবে না বলে একাধিক বিয়েও করো না। তা না বলে এক অসম্ভব শর্তের সাথে যুক্ত করে একাধিক বিয়ের অনুমতি দেয়ার কি প্রয়োজন থাকতে পারে? আল্লাহ তো সর্বোচ্চ, একজন সাধারণ বুদ্ধিমান লোকও যে এ ধরনের কথা বলতে পারে, তা সত্যিই ধারণা করা যায় না।

সর্বোপরি, রাসূলে করীম (ﷺ)-ই হচ্ছেন কুরআনের ধারক, কুরআনের ব্যাখ্যাকারী। মুখের কথা দ্বারাও এবং বাস্তব কাজের ভিতর দিয়েও। আর তিনি নিশ্চয়ই কোনো হারাম কাজ করেন নি বা করতে পারেন না। আর কোনো হারাম কাজকে তিনি চুপচাপ বরদাশত করবেন, তাও তাঁর দ্বারা সম্ভব নয়। বহু সংখ্যক স্ত্রীর স্বামী ইসলাম কবুল করলে তিনি তাদের মধ্য থেকে চারজনকে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরকম ঘটনা একটা দুটো নয়। তার সংখ্যা অনেক এবং তার প্রত্যেকটি ঘটনারই নিভর্রযোগ্য সনদসূত্রে প্রমাণিত। একাধিখ স্ত্রী গ্রহণ যদি হারামই হতো, তাহলে রাসূলে করীম (ﷺ) তাদেরকে একজন মাত্র রাখারই নির্দেশ দিতেন, চারজন রাখার নয়। তা ছাড়া তিনি নিজেও একসঙ্গে একাধিক স্ত্রীর স্বামী ছিলেন –যদিও তাঁর জন্যে আল্লাহর মর্জি অনুযায়ীই চারজনের কোনো সীমা নির্দিষ্ট ছিল না। উপরন্তু একথাও ধারণা করা যেতে পারে যে, রাসূলে করীম (ﷺ) নিজে সাহাবায়ে কেরাম এবং তাবেয়ী পর্যায়ের বড় বড় মনীষী –যাঁরা সকলেই একবাক্যে চারজন পর্যন্ত স্ত্রী গ্রহণ জায়েয বলে ঘোষনা করেন –এ আয়াতদ্বয়ের সঠিক তাৎপর্য বুঝতে পারেন নি, বুঝতে পেরেছেন –আজকালকার এ বুদ্ধিমানেরা! এ ধরনের কথা আধুনিক বুদ্ধিবাদী নির্বোধেরাই বলতে পারে।

আমার মনে হয়, একাধিক স্ত্রী গ্রহণকে যারা কুরআনের ভিত্তিতেই হারাম বলে প্রমাণ করতে চান, তাঁরা দু’শ্রেণীর লোক। এক শ্রেণীর অত্যন্ত সাদাসিধে, ইসলামের প্রতি অত্যন্ত নিষ্ঠাবান। তাঁরা যখন দেখলেন ইসলামের ওপর উপর্যুপরি আক্রমণ চালানো হচ্ছে, তখন তাঁরা ইসলামের মান রক্ষার উদ্দেশ্যেই বলতে শুরু করলেন, ‘না ইসলামে আসলে একজন স্ত্রী রাখাই নির্দেশ, একাধিক স্ত্রী রাখার নয়’। তাঁদের সম্পর্কে বলা যায়, এঁরা হচ্ছেন ঈমানদার নির্বোধ লোক। অন্যের কারণে নিজের ঘরে আগুন লাগাবার কাজ করেন তাঁরা। তাঁদেরকে ক্ষমা করা যায়। কিন্তু তাঁদের প্রতি কোনো শ্রদ্ধা জাগে না। তাঁরা বুঝেন না যে, একাধিক স্ত্রী গ্রহনই ইসলামের ওপর পাশ্চাত্য সমাজের হামলার একমাত্র কারণ নয়। তার কারণ অনেক গভীর এবং যারা এ হামলা চালাচ্ছে, তারা নিজেরাই ‘বহু বিবাহে’ নয়, বহু স্ত্রী সঙ্গমে বিশ্বাসী এবং বাস্তবেও অভ্যস্ত।

আর দ্বিতীয় শ্রেণীর লোক তারা, যাদের নিয়তই খারাপ। তারা ইসলামের পূর্ণাঙ্গ ও নির্ভুল ব্যবস্তায় এমন এক নতুন জিনিসের আমদানি করতে চায়, যার সাথে ইসলামের কোনো মিল, কোনো সামঞ্জস্য নেই। ইউরোপীয় সভ্যতার প্রভাবে তারা সে ‘সত্য’কে মনের মাঝে বদ্ধমূল করে নিয়েছে তাকেই তারা ইষলামের নামে চালিয়ে দিয়ে দুনিয়াকে ধোঁকা দিতে চায়। তাদের নিজেদের পছন্দকে ‘আল্লাহর পছন্দ’ বলে লোকদের সামনে তুলে ধরতে চায়। এ হচ্ছে দস্তুরমতো বিশ্বাসঘাতকতা, এ হচ্ছে ইসলাম বিকৃতকরণ; এ এক অমার্জনীয় অপরাধ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন