hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

পরিবার ও পারিবারিক জীবন

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (র.)

৩৯
কনের জরুরী গুণাবলী
কনে বাছাই করার সময় ইসলামের দৃষ্টিতে বিশেষ একটি গুণের যাচাই করে দেখা আবশ্যক। সে গুণটি হচ্ছে কনের দ্বীনদার ও ধার্মিক হওয়া। এ সম্পর্কে নবী করীম (ﷺ) এরশাদ করেছেনঃ

(আরবী)

চারটি গুণের কারণে একটি মেয়েকে বিয়ে করার কথা বিবেচনা করা হয়ঃ তার ধন-মাল, তার বংশ গৌরব –সামাজিক মান-মর্যাদা, তার রূপ ও সৌন্দর্য এবং তার দ্বীনদারী। কিন্তু তোমরা দ্বীনদার মেয়েকেই গ্রহণ করো।

যে সব কারণে একজন পুরুষ একটি মেয়েকে স্ত্রীরূপে বরণ করার জন্যে উৎসাহিত ও আগ্রহান্বিত হতে পারে তা হচ্ছে এ চারটি। এ গুণ চতুষ্টয়ের মধ্যে সর্বশেষে উল্লেখ করা হয়েছে দ্বীনদারী ও আদর্শবাদিতার গুণ। হাদীসেও উল্লিখিত চারটি গুণ স্বতন্ত্র গুরুত্বের অধিকারী। এর প্রতিটি গুণই এমন যে, এর যে কোনো একটির জন্যে একটি মেয়েকে বিয়ে করা যেতে পারে, যদিও এ গুণ চতুষ্টয়ের মধ্যে মেয়ের দ্বীনদার তথা ধার্মিকতা ও চরিত্রবতী হওয়ার গুণটিই ইসলামের দৃষ্টিতে সর্বাগ্রগণ্য ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।

নবী করীম (ﷺ)-এর আলোচ্য নির্দেশের সারকথা হলোঃ

(আরবী)

দ্বীনদারীর গুণসম্পন্না কনে পাওয়া গেলে তাকেই যেন স্ত্রীরূপে বরণ করা হয়, তাকে বাদ দিয়ে অপর কোনো গণসম্পন্না মহিলাকে বিয়ে করতে আগ্রহী হওয়া উচিত নয়।

দ্বীনদার ও ধার্মিক কনেকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করা উচিত –অন্য কথায় বিয়ের জন্যে চেষ্টা চালানো পর্যায়ে কনের খোঁজ-খবর লওয়ার সময় –রাসূলে করীম (ﷺ)-এর নির্দেশ হলো, কেবল দ্বীনদার কনেই তালাশ করবে। বিয়ের প্রস্তাব উত্থাপিত হলে কনে সম্পর্কে প্রথম জানবার বিষয় হলো কনের দ্বীনদারীর ব্যাপার। অন্যান্য গুণ কি আছে তার খোঁজ পরে নিলেও চলবে অর্থাৎ কনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গুণ হচেছ তার দ্বীনদার হওয়া। ধনী, সদ্বংশজাত ও সুন্দরী রূপসী হওয়াও কনের বিশেষ গুণ বটে; এবং এর যে-কোন একটি গুণ থাকলেই একজন মেয়েকে স্ত্রীরূপে বরণ করে নেয়া যেতে পারে। কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে এসব গুণ মুখ্য ও প্রধান নয় –গৌণ। রাসূল (ﷺ)-এর নির্দেশ অনুযায়ী কেবল ধন-সম্পত্তি, বংশ-মর্যাদা ও রূপ-সৌন্দর্যের কারণেই একটি মেয়েকে বিয়ে করা উচিত নয়। সবচাইতে বেশি মূল্যবান ও অগ্রাধিকার লাভের যোগ্য গুণ হচ্ছে কনের দ্বীনদারী।

চারটি গুণের মধ্যে দ্বীনদারী হওয়ার গুণটি কেবল যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ তা-ই নয়, এ গুণ যার নেই তার মধ্যে অন্যান্য গুণ যতই থাক না কেন, ইসলামের দৃষ্টিতে সে অগ্রাধিকার লাভের যোগ্য কনে নয়। রাসূল (ﷺ)-এর হাদীস অনুযায়ী তো দ্বীনদারীর গুণ-বঞ্চিতা নারীকে বিয়েই করা উচিত নয়। তিনি স্পষ্ট ভাষায় নির্দেশ দিয়েছেনঃ

(আরবী)

তোমরা নারীর কেবল বাহ্যিক রূপ-সৌন্দর্য দেখেই বিয়ে করো না। কেননা তাদের এ রূপ সৌন্দর্য তাদের নষ্ট ও বিপথগামী করে দিতে পারে। তাদের ধন-সম্পদের প্রাচুর্য দেখেও বিয়ে করবে না। কেননা ধন-সম্পদ তাদের বিদ্রোহী ও দুর্বিনীত বানিয়ে দিতে পারে। বরং বিয়ে করো নারীর দ্বীনদারীর গুণ দেখে। মনে রাখবে, কৃষ্ণকায়া দাসীও যদি দ্বীনদার হয় তবু অন্যদের তুলনায় উত্তম।

এ হাদীসটির ভাষা অপর এক বর্ণনায় এরূপ উদ্ধৃত হয়েছেঃ

(আরবী)

তোমরা স্ত্রীদের কেবল তাদের রূপ-সৌন্দর্য দেখেই বিয়ে করো না –কেননা এ রূপ-সৌন্দর্যই অনেক সময় তাদরে ধ্বংসের কারণ হতে পারে। তাদের ধন-মালের লোভে পড়েও বিয়ে করবে না –কেননা এ ধন-মাল তাদের বিদ্রোহী ও অনমনীয় বানাতে পারে। বরং তাদের দ্বীনদারীর গুণ দেখেই তবে বিয়ে করবে। বস্তুত একজন দ্বীনদার কৃষ্ণাঙ্গ দাসীও কিন্তু অনেক ভালো।

রাসূলে করীম (ﷺ)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল (আরবী) ‘বিয়ের জন্য কোন ধরনের মেয়ে উত্তম?’ জবাবে তিনি বলেছিলেনঃ

(আরবী)

যে মেয়েলোককে দেখলে বা তার প্রতি তাকালে স্বামীর মনে আনন্দের হিল্লোল বয়ে যায়, তাকে যে কাজের আদেশ করা হবে তা সে যথাযথ পালন করবে এবং তার নিজের ও স্বামীর ধন-মালের ব্যাপারে স্বামীর মত ও পছন্দ-অপছন্দের বিপরীত কোনো কাজই করবে না।

অপর এক হাদীসে উদ্ধৃত হয়েছে –সাহাবায়ে কিরাম একদিন বললেনঃ

(আরবী)

সর্বোত্তম মাল-সম্পদ কি, তা যদি আমরা জানতে পারতাম, তাহলে তা আমরা অবশ্যই অর্জন করতে চেষ্টা করতাম। একথা শুনে নবী করীম (ﷺ) বললেনঃ সর্বোত্তম সম্পদ হচ্ছে আল্লাহর যিকর-এ মশগুল মুখ ও জিহবা, আল্লাহর শোকর আদায়কারী দিল এবং সেই মু’মিন স্ত্রীও সর্বোত্তম সম্পদ, যে স্বামীর দ্বীন-ইমানের পক্ষে সাহায্যকারী হবে।

এ সব হাদীস থেকে অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয়ঃ

(আরবী)

সর্ব পর্যায়ে দ্বীনদার লোকদের সাহচর্য অতি উত্তম। কেননা দ্বীনদার লোকদের সঙ্গী-সাথীগণ তাদের চরিত্র, উত্তম গুণাবলী ও ধরন-ধারণ, রীতিনীতি থেকে অনেক কিছুই শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। বিশষ করে স্ত্রী তো দ্বীনদার হওয়া একান্তই অপরিহার্য এবং এদিক দিয়ে যে ভালো সেই উত্তম। কেননা সে-ই তার শায়িনী, সে-ই তার সন্তানের জননী, গর্ভধারিনী, সে-ই তার ধন-মাল, ঘর-বাড়ি ও তার (স্ত্রীর) নিজের রক্ষণাবেক্ষণের একমাত্র দায়িত্বশীল ও আমানতদার।

বস্তুত রূপ-সৌন্দর্য ও ধন-মাল যেমন স্থায়ী নয়, তেমনি দাম্পত্য জীবনের স্থায়িত্ব দানে তার ক্রিয়া গভীর ও সুদূরপ্রসারীও নয়। বরং অনেক ক্ষেত্রে এ রূপ-সৌন্দর্য ও ধন-মাল পারিবারিক জীবনে অনেক তিক্ততা ও মনোমালিন্যের সৃষ্টি করে থাকে –করতে পারে। সুন্দরী-রূপসী নারীদের মধ্যে –বিশেষত যাদের রূপ-সৌন্দর্য ছাড়া অন্য কোন মহৎ গুণ নেই –অহমিকা ও আত্মম্ভরিতা প্রকট হয়ে দেখা দিতে পারে। আর তার ফলে হয়ত তারা স্বামীর কাছে নতি স্বীকার করতে বা তার প্রতি নমনীয় হতে কখনও প্রস্তুত হয় না। উপরন্তু তাদের রূপের আগুনে আত্মহুতি দেয়ার জন্যে অসংখ্য কীট-পতঙ্গ চারদিকে ভীড় জমাতে পারে আর তারা পারে ওদের আত্মহুতি দেয়ার জন্যে অনেক অবাধ সুযোগ করে দিতে। তখন এ রূপ ও সৌন্দর্যই হয় তার ধ্বংসের কারণ। ধন-মালের প্রাচুর্যও তেমনি নারী জীবনের ধ্বংস টেনে আনতে পারে। যে নারী নিজে বা তার পিতা বিপুল ধন-সম্পত্তির মালিক তার মনে স্বাভাবিকভাবেই একটা অহংকার ও বড়ত্বের ভাব (Superiority Complex) থেকে থাকে। তার বিয়ে যদি হয় এমন পুরুষের সাথে, যার আর্থিক মান তার সমান নয় বরং তার অপেক্ষা কম কিংবা সে যদি গরীব হয়, তাহলে এ দুজনের দাম্পত্য জীবন সুখের হতে পারে না বললেও অত্যুক্তি হবে না। কেননা ধনী কন্যা বা ধনশালী স্ত্রী সব সময়ই তার গরীব স্বামীকে হেয়, হীন ও নীচ মনে করতে থাকবে। তার ফলে স্বামী নিজেকে তার স্ত্রীর নিকট ক্ষুদ্র, অপমানিত ও লাঞ্ছিত মনে করবে। আর এ কারণেই এ ধরনের স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য জীবন না হবে স্থায়ী, না হবে সুখের ও মাধুর্যময়।

কুরআন মজীদের নিম্নোক্ত আয়াতও হাদীসের ঘোষিত নীতিরই সমর্থক। সূরা আন-নূর এ বলা হয়েছেঃ

(আরবী)

এবং বিয়ে দাও তোমাদের জুড়িহীন ছেলেমেয়েকে, আর তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যে যারা নেককার –যোগ্য, তাদের।

অন্যত্র বলা হয়েছেঃ

(আরবী)

তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক আল্লাহ-ভীরু ব্যক্তিই আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানার্হ।

এরশাদ হয়েছেঃ

(আরবী)

তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার এবং যাদের ইলম দান করা হয়েছে, আল্লাহ তাদের সম্মান ও মর্যাদা অধিক উচ্চ ও উন্নত করে দেবেন।

এজন্যে নবী করীম (ﷺ) বলেছেনঃ

(আরবী)

দুনিয়ার সব জিনিসই ভোগ ও ব্যবহারের সামগ্রী। আর সবচেয়ে উত্তম ও উৎকৃষ্ট সামগ্রী হচ্ছে নেক চরিত্রের স্ত্রী।

কেননা নেক চরিত্রের স্ত্রী স্বামীকে সব পাপের কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখে এবং দুনিয়া ও দ্বীনের কাজে তাকে পূর্ণ সাহায্য ও তার সাথে আন্তরিক সহযোগিতা করে থাকে। এ হাদীসের অর্থ হচ্ছেঃ

(আরবী)

স্ত্রী যদি নেক চরিত্রের না হয়, তাহলে সে হবে সবচেয়ে নিকৃষ্ট ও বেশি খারাপ সামগ্রী।

আর নেক চরিত্রের স্ত্রী বলতে বোঝায়ঃ

(আরবী)

নেককার, পরহেযগার, আল্লাহ-ভীরু ও পবিত্র চরিত্রের স্ত্রী –যে তার স্বামীর জন্যে সর্বাবস্থায় কল্যাণকামী, তার ঘরের রানী এবং তার আদেশানুগামী, তাকেই নেক চরিত্রের স্ত্রী মনে করতে হবে।

উপরোদ্ধৃত আয়াত ও হাদীস থেকে যে কথাটি স্পষ্ট হয়ে উঠছে, তা এই যে, ইসলামের দৃষ্টিতে তাকওয়া, পরহেযগারী, দ্বীনদারী ও উন্নত মর্যাদার চরিত্রই হচ্ছে মানুষের বিশিষ্টতা লাভের শ্রেষ্ঠ গুণ। এতদ্ব্যতীত অন্য কোনো গুণই এমন নয়, যার দরুন কোনো লোক অপরের তুলনায় শ্রেষ্ঠ প্রমাণিত হতে পারে। একথা যেমন নারীদের ব্যাপারে সত্য, তেমনি পুরুষদের ক্ষেত্রেও তা অনুরূপ গুরুত্ব সহকারে প্রযোজ্য। তাই দ্বীনদার ও চরিত্রবতী মেয়েই বিয়ের জন্য সর্বাগ্রগণ্যা, বিশেষত মুসলিম পরিবারে তা-ই হওয়া উচিত। দ্বীনদার চরিত্রবতী কনে বাছাই ও বিয়ে করার জন্যে ইসলামে যেমন বলা হয়েছে বরকে –বিবাহেচ্ছুক পুরুষকে, তেমনি বলা হয়েছে কনেকেও। এ সম্পর্কে ‘রদ্দুল মুহতার’ গ্রন্থে ফিকাহবিদদের সর্বসম্মত মতের উল্লেখ করে বলা হয়েছেঃ

(আরবী)

নারী স্বামী গ্রহণ করবে তার উত্তম দ্বীনদারী ও উদার চরিত্রের জন্যে, সেই গুণ দেখে এবং সে কখনো ফাসিক ও ধর্মহীন ব্যক্তিকে বিয়ে করবে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন