hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

পরিবার ও পারিবারিক জীবন

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (র.)

৮৪
নিজের ও স্বামীর ধন-সম্পদে স্ত্রীর অধিকার
স্বামীর ঘরে স্ত্রীর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ইসলামের পারিবারিক ব্যবস্থায় সুস্পষ্টরূপে স্বীকৃত। স্ত্রীর যেমন অধিকার আছে সীমার মধ্যে থেকে যাবতীয় দায়িত্ব পালন করার পরে যে কোনা কাজ করে অর্থোপার্জন করার, তেমনি অধিকার রয়েছে সেই উপার্জিত অর্থের মালিক হওয়ার এবং নিজের ইচ্ছানুক্রমে তা ব্যয় ও ব্যবহার করার। স্বামীর ধন-সম্পদেও তার ব্যয়-ব্যবহার ও দান প্রয়োগের অধিকার রয়েছে। সেই সঙ্গে সে মীরাস পেতে পারে পিতার, ভাইয়ের, পুত্র-কন্যার এবং স্বামীর।

স্বামীর ধন-সম্পদে স্ত্রীর অধিকার এতদূর রয়েছে যে, তার ব্যয়-ব্যবহার করার ব্যাপারে সে তার স্বামীর মর্জি বা অনুমতির মুখাপেক্ষী নয়। হযরত আয়েশা (রা) বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছেঃ

(আরবী)_)

স্ত্রী যদি স্বামীর খাদ্যদ্রব্য থেকে শরীয়ত-বিরোধী নয় –এমন কাজে এবং খারাপ নয় –এমনভাবে ব্যয় করে তবে তাতে তার সওয়াব হবে, কেননা সে ব্যয় করেছে; আর তার স্বামীর জন্যেও সওয়াব রয়েছে, কেননা সে তা উপার্জন করেছৈ।

হযরত আবূ হুরায়রা (রা) বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছেঃ

(আরবী)

স্ত্রী যদি তার স্বামীর কামাই-রোজগার করা ধন-সম্পদ থেকে তার আদেশ ব্যতীতই কিছু ব্যয় করে, তবে তার স্বামী তার অর্ধেক সওয়াব পাবে।

হযরত আসমা বিনতে আবূ বকর (রা) একদিন রাসূলে করীম (ﷺ)-কে জিজ্ঞেস করলেনঃ

(আরবী)

হে রাসূল, স্বামী জুবাইর আমাকে সংসার খরচ বাবদ যা কিছু দেন, তা ছাড়া আমার আর কিছুই নেই। এখন তা থেকে যদি আমি দান-সাদকার কাজে কিছু ব্যয় করি, তবে কি আমার গুনাহ হবে?

তখন নবী করীম (ﷺ) বললেনঃ

(আরবী)

যা পারো দান-সাদকা করো –করতে পারো; তবে নিজের তহবিলে নিয়ে জমা করে রেখো না, তাহলে মনে রেখো, আল্লাহও তোমার জন্যে শাস্তি জমা করে রাখবেন।

ইবনে আরাবী লিখেছেনঃ স্বামীর ঘরের মাল-সম্পদ থেকে দান-সাদকা করা স্ত্রীর পক্ষে জায়েয কিনা –এ সম্পর্কে প্রথম যুগের মনীষিগণের মধ্যে মতবিরোধ রয়ছে। অনেকের মতে –সে দানের পরিমাণ অল্প, সামান্য ও হালকা হলে কোনো দোষ নেই, তা জায়েয। কেননা তাতে স্বামীর বিশেষ কোনো ক্ষতি-লোকসানের আশংকা নেই। কেউ বলেছেন, স্বামীর অনুমতি হলে তবে তা করা যেতে পারে; সেই অনুমতি সংক্ষিপ্ত ও অস্পষ্ট হলেও ক্ষতি নেই। ইমাম বুখারীরও এই মত। তবে কোনে প্রকার অন্যায় কাজে অর্থ ব্যয় কিংবা স্বামীর ধন-সম্পদ বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে অর্থ ব্যয় করা সর্বসম্মতবাবে না জায়েয। অনেকের মতে স্বামীর ধন-সম্পদে যখন স্ত্রীর অধিকার স্বীকৃত এবং তা দেখাশোনা করার দায়িত্বও তারই ওপর রয়েছে, তখন তা দান-সদকা করাও স্ত্রীর পক্ষে অবশ্যই সঙ্গত হবে।

ইমাম শাওকানীর মতে এ সম্পর্কিত যাবতীয় হাদীস থেকে এ কথাই প্রমাণিত হয়ঃ

(আরবী)

স্বামীর ঘর থেকে তার অনুমতি ব্যতিরেকেই অর্থসম্পদ ব্যয় করা স্ত্রীর পক্ষে সম্পূর্ণ জায়েয।

তবে যেসব হাদীসে এ সম্পর্কে নিষেধ উল্লিখিত হয়েছে, নিষেধের মানে ‘হারাম’ নয়, বরং বড়জোর মাকরূহ। আর মকরূহ তানজীহ জায়েয হওয়ার পরিপন্থী নয়।

(আরবী)

অপর এক হাদীসে উদ্ধৃত হয়েছ, মুজার কবীলার এক সম্মানিতা মহিলা রাসূলে করীম (ﷺ)-কে সম্বোধন করে বললেনঃ

(আরবী)

হে আল্লাহর নবী, আমরা হচ্ছি আমাদের পিতা, পুত্র ও স্বামীদের ওপর এক বোঝা স্বরূপ। এমতাবস্থায় তাদের ধনমাল থেকে ব্যয় করার কোনো অধিকার আমাদের আছে কি?

জবাবে রাসূলে করীম (ﷺ) বললেনঃ

(আরবী)

যাবতীয় তাজা খাদ্য তোমরা খাবে, আর অপরকে হাদিয়া-তোহফা দেবে।

এ হাদীস থেকেও প্রমাণিত হয় যেঃ

(আরবী)

মেয়েদের জন্যে তাদের স্বামী, পিতা ও পুত্রের ধনমাল থেকে তাদের অনুমতি ছাড়াই পানাহার করা ও অপরকে হাদিয়া-তোহফা দেয়া সম্পূর্ণ জায়েয।

তবে ইমাম শাওকানীর মতে মেয়েদের এ অধিকার কেবলমাত্র খাদ্য ও পানীয়ের দ্রব্যাদি সম্পর্কেই প্রযোজ্য ও স্বীকৃত। কাপড়-চোপড় ও টাকা-পয়সার ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। এ পর্যায়ে পরের উক্ত হাদীসটি উল্লেখযোগ্যঃ

(আরবী)

স্ত্রী স্বামীর আদেশ-অনুমতি ব্যতিরেকেই যা কিছু ব্যয় করে তার অর্ধেক সওয়াব সে স্বামীকে দেয়।

স্ত্রীর নিজস্ব ধনমাল ব্যয়-ব্যবহার ও দান-সদকা করার অধিকার আছে কিনা, থাকলে কতখানি, তা নিম্নের আলোচনা থেকে প্রমাণিত হবে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা) বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছেঃ

(আরবী)

স্ত্রীর পক্ষে স্বামীর অনুমতি ছাড়া অন্য লোককে দান-সাদকা করা বা উপহার-উপঢৌকন দেয়া জায়েয নয়।

অপর বর্ণনায় হাদীসটির ভাষা নিম্নরূপঃ

(আরবী)

স্ত্রীর সমগ্র যৌন সত্তার মালিক যখন স্বামী, তখন তার অনুমতি ছাড়া তার নিজের ধনমাল ব্যয়-বণ্টন করা স্ত্রীর জন্যে জায়েয নয়।

এ হাদীস থেকে বাহ্যত প্রমাণিত হয় যে, স্ত্রী যদি পূর্ণ বয়স্কা ও বুদ্ধিমতিও হয়, তবু স্বামীর অনুমতি ব্যতিরেকে তার নিজের ধনমাল থেকেও দান-সাদকা করা, উপহার-উপঢৌকন দেয়া তার পক্ষে জায়েয নয়। কিন্তু এ সম্পর্কিত চূড়ান্ত ফায়সালায় মনীষীদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। ইমাম লাইস বলেছেনঃ

(আরবী)

স্ত্রীর পক্ষে তা আদৌ জায়েয নয়, এক-তৃতীয়াংশের ওপরও নয়, তার কম পরিমাণের ওপর নয়। তবে অল্প-স্বল্প পরিমাণ ধর্তব্য নয়।

তাউস ও ইমাম মালিক বলেছেঃ

(আরবী)

স্বামীর অনুমতি ছাড়া স্ত্রী তার নিজের ধনমালের এক-তৃতীয়াংশ থেকে দান-সাদকা করতে পারে। তার বেশি পারে না।

আর অধিকাংশ ফিকাহবিদ ও মনীষীদের মত হচ্ছেঃ

(আরবী)

স্ত্রী যদি বুদ্ধিহীনা ও বোকা না হয়, তাহলে স্বামীর কোনো প্রকার অনুমতি ব্যতিরেকেই তার (স্ত্রী) নিজের ধনমাল থেকে সে ব্যয়-ব্যবহার করতে পারে। আর সে যদি বুদ্ধিহীনা ও বোকা হয়, তবে তা জায়েয নয়।

এঁদের দলীল হচ্ছে প্রধানত এই যে, রাসূলে করীম (ﷺ)-এর আহবানক্রমে মহিলা-সাহাবিগণ নিজ নিজ অলংকার জিহাদের জন্যে দান করেছিলেন কিংবা যাকাত বাবদ দিয়ে দিয়েছিলেন এবং রাসূলে করীম (ﷺ) তা গ্রহণও করেছিলেন। এ থেকে স্পষ্টত প্রমাণিত হয় যে, স্বামীর অনুমতি –এমন কি তার উপস্থিতি ছাড়াই স্বামীর ধন-সম্পদ থেকে দান-সাদকা করা যখন স্ত্রীর পক্ষে জায়েয হলো তখনঃ

(আরবী)

স্ত্রীর নিজের ধনমাল থেকে দান-সদকা করা তো আরো বেশি করে জায়েয হবে।

ঈদের ময়দানে উপস্থিত মেয়েরা নবী করীম (ﷺ)-এর আহবানক্রমে নিজেদের অলংকারাদি যাকাত বাবদ কিংবা দ্বীনরে জিহাদের জন্যে দান করেছিল। হযরত ইবনে আব্বাস বর্ণিত হাদীসে স্পষ্ট বলা হয়েছেঃ

(আরবী)

নবী করীম (ﷺ) মেয়েদের কাছে উপস্থিত হয়ে তাদের নসীহত করলেন, তাদের লক্ষ্য করে ওয়াজ করলেন এবং সাদকা দিতে আদেশ করলেন। এ সময় বিলাল কাপড় পেতে ধরলেন এবং মেয়েরা আংটি, কানের বালা, ঝুমকা ইত্যাদি অলংকার সে কাপড়ের ওপর ফেলতে লাগল।

ইমাম নববী এ হাদীস সম্পর্কে লিখেছেনঃ

(আরবী)

এ হাদীস প্রমাণ করছে যে, মেয়েরা তাদের নিজেদের ধন-সম্পদ থে স্বামীর অনুমতি ব্যতিরেকেই দান সাদকা করতে পারে –করা জায়েয এবং এ দান মোট সম্পদের এক-তৃতীয়াংশের মধ্য থেকে হওয়ার কোনো শর্ত নেই।

এ হাদীস থেকে একথাও স্পষ্ট বেঝা যাচ্ছে যে, নবী করীম (ﷺ) যখন মেয়েদের দান করতে বললেন এবং সে দান গ্রহণ করাও হচ্ছিল, তখন তিনি এ কথা জিজ্ঞেস করেন নি যে, তারা তাদের স্বামীদের কাছে অনুমতি পেয়ে দান করছে কিনা। বরং তারা যে তাদের স্বামীদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে দান করছে না তা তখন স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। দানকারিণী এ মহিলাদের স্বামীরা ময়দানে উপস্থিত ছিল বটে, কিন্তু তারা ছিল বেশ খানিকটা দূরে অবস্থিত। তাদের বেগমরা ঈদ-ময়দানের অপর একপাশে বসে কেবলমাত্র রাসূলে করীমের নির্দেশ মতো দান করছিলেন। ফলে তাদের স্বামীরা এ দানের খবর এবং তার পরিমাণ সম্পর্কে জানতেও পারেনি, আর এ দানে তাদের অনুমতি দেয়ারও কোনো অবকাশ ছিল না। কাজেই তাদের নীরব অনুমতিরও কোনো প্রশ্ন ওঠে না।

দ্বিতীয়ত মেয়েরা যখন দান করছিল, তখন তাদের সমস্ত সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ থেকে দান করছে কিনা, তা জিজ্ঞেস করারও কোনো প্রয়োজন নবী করীম (ﷺ) বোধ করেন নি।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন