hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

পরিবার ও পারিবারিক জীবন

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (র.)

১২৬
পিতামাতার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করা কবীরা গুনাহ
পিতামাতার সাথে ভালো ব্যবহার করা সম্পর্কে কুরআন-হাদীসে যেসব তাগিদ বাণী উদ্ধৃত হয়েছে, উপরে তা আমরা মোটামুটি উল্লেখ করেছি। তা থেকে একথাও বোঝা যায় যে, এহেন পিতামাতার সাখে খারাপ ব্যবহার করা, তাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা, তাদের মনে কষ্ট দেয়া ও তাদের নাফরমানী করা অত্যন্ত বড় গুনাহ –সন্দেহ নেই। শুধু তাই নয়, যারা তা করে, তাদের ওপর আল্লাহর লা’নত বর্ষিত হয়ে থাকে।

এ সম্পর্কে কুরআন মজীদে যে মূলনীতি উল্লিখিত হয়েছে তা হচ্ছে এইঃ (১) সূরা মুহাম্মদ-এ বলা হয়েছেঃ

(আরবী)

তোমরা কি ভেবে দেখেছ, তোমরা যদি জমিনে বিপর্যয়ের সৃষ্টি করো এবং রেহেম (রক্ত সম্পর্ক) ছিন্ন করো, তাহলে আল্লাহ তাদের ওপর অভিসম্পাত করবেন এবং এরপর তাদের বধির ও অন্ধ করে দেবেন।

‘রেহেম’ বা রক্তসম্পর্ক ছিন্ন করার মানে অতি নিকটের আত্মীয় –মানে রক্তসম্পর্কের আত্মীয়দের –সাথে কথা ব্যবহার ও আর্থিক সাহায্যদান প্রভৃতির দিক দিয়ে ভালো ব্যবহার না করা। তাদের হক আদায় না করা সাধারণ নিকটাত্মীয়দের সম্পর্কেই এত বড় কঠোর বাণী যে, তাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে আল্লাহর অভিশাপ হবে এবং তার ফলে তারা সত্যের আওয়াজ শ্রবণে বধির হবে ও সত্য দর্শনে হবে অন্ধ। তাহলে দুনিয়ায় সবচেয়ে সেরা আত্মীয় –সব আত্মীয়ের মূল আত্মীয় –পিতামাতার সাথে যদি কেউ খারাপ ব্যবহার করে, সম্পর্ক ছিন্ন করে, তাদের অধিকার হরণ করে, তাহলেও যে আল্লাহর লা’নত হবে তাতে আর কি সন্দেহ থাকতে পারে?

সূরাআর রায়াদ-এ-ও এ কথাই বলা হয়েছে নিম্নোক্ত ভাষায়ঃ

(আরবী)

যে সব লোক আল্লাহর প্রতিশ্রুতি শক্ত করে বাধার পরে তা ভঙ্গ করে এবং আল্লাহ যার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে আদেশ করেছেন তা ছিন্ন করে, আর এরই ফলে দুনিয়ায় বিপর্যয়ের সৃষ্টি করে, তাদের অভিশাপ এবং তাদের পরিণাম অত্যন্ত খারাপ।

এখানেও আল্লাহর দেয়া অস্বীকৃতি এবং আল্লাহর স্থাপিত সম্পর্ককে বিচ্ছিন্নকরণের পরিণতি স্বরূপ আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হওয়ার কথাই উদাত্ত কণ্ঠে ঘোষণা করা হয়েছে।

এসব আয়াতের পপ্রেক্ষিতে রাসূলে করীম (ﷺ)-এর স্মরণীয় একটি হাদীসে বলা হয়েছেঃ

(আরবী)

রেহেমের সম্পর্ক কর্তনকারী কখনই বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না।

রাসূলে করীম (ﷺ) সবচেয়ে বড় গুনাহ কি কি –বলতে গিয়ে প্রথমত উল্লেখ করেছেনঃ

(আরবী)

আল্লাহর সাথে শিরক করা এবং পিতামাতার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা।

অপর এক হাদীসে তা কবীরা গুনাহ বলে উল্লেখ করেছেনঃ

(আরবী)

কোনো ব্যক্তির পক্ষে তার পিতামাতাকে গালাগাল করাও কবীরা গুনাহ।

সাহাবীগণ একথা শুনে বলেনঃ পিতামাতাকেও কেউ কেউ গালাগাল করে নাকি হে রাসূল? তখন রাসূল (ﷺ) বললেনঃ

(আরবী)

এক ব্যক্তি অপর কারো বাপকে গাল দেয়, প্রত্যুত্তরে সে দেয় প্রথম ব্যক্তির বাপকে গাল, এমনিভাবে কেউ অপর ব্যক্তির মাকে গালাগাল করে সে ব্যক্তি প্রথম ব্যক্তির মা’কেই গাল দেয়।

অর্থাৎ সরাসরিভাবে নিজের মা-বাপকে কেউ গালাগাল না করলেও প্রকারান্তরে –অপর লোক দ্বারা নিজ মা-বাপকে গাল খেতে বাধ্য করে। তাও তার নিজেরই গালাগালের সমান হয়ে দাঁড়ায়।

অপর হাদীসে বলা হয়েছেঃ

(আরবী)

কারোর নিজের বাপ-মার পর অভিসম্পাত করাও সবচেয়ে বড় কবীরা গুনাহ।

পিতামাতাকে গালাগাল ও অভিসম্পাত করার কাজ ঔরসজাত সন্তান নিজেই করে, আবার কখনো অপরের দ্বারা গাল খাওয়ায়। এ দু’অবস্থার ফল একই। এজন্যে এরূপ সরাসরি বা পরোক্ষভাবে পিতামাতাকে গালাগাল করা ও অভিসম্পাত দেয়া সম্পূর্ণ হারাম। -কবীরা গুনাহের মধ্যেও সবচেয়ে বড়।

একটি হাদীসে বিশেষভাবে মা’র সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা সম্পর্কে রাসূলে করীম (ﷺ) বলেছেনঃ

(আরবী)

নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা মা’দের সাথে সম্পর্কে ছিন্ন করা, তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা ও তাদের হক নষ্ট করাকে চিরদিনের তরে হারাম করে দিয়েছেন।

উপরে পিতামাতার সাথে সম্পর্ক রক্ষা করা, তাদের হক আদায় করা এবং তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করা সম্পর্কে কুরআন-হাদীসের সুস্পষ্ট নির্দেশাবলী উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তার বিপরীত দিক সম্পর্কে যে কঠোর বাণী উচ্চারিত হয়েছে, তাও বিস্তারিতভাবে উল্লিখিত হয়েছে।

(আরবী)

কিন্তু ব্যাপার এখানেই শেষ নয়। কুরআন-হাদীসের দৃষ্টিতে বাপ-মা’র সাথে তো বটেই, তাদের বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের সাথেও ভালো ব্যবহার করার নির্দেশ রয়েছে। বলা হয়েছেঃ

(আরবী)

প্রত্যেক ব্যক্তির পক্ষে তার পিতার বন্ধু-বান্ধবদের সাথে ভালো ব্যবহার করাও অতি উত্তম নেক কাজ।

অপর এক হাদীসের শেষ কথাটি হচ্ছেঃ (আরবী) –পিতামাতার বন্ধুদের সম্মান করাও সেলায়ে রেহমীর কাজ।

কুরআন মজীদের সূরা আল-বাকারায় বলা হয়েছেঃ

(আরবী)

হে রাসূল, লোকেরা তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে, তারা কোথঅয় ধনমাল ব্যয় করবে। তুমি তাদের বলে দাও, তোমরা যা কিছু খরচ করবে, তা করবে পিতামাতার জন্যে, নিকটাত্মীয়দের জন্যে, ইয়াতীম, মিসকীন ও সম্বলহীন পথিকদের জন্যে।

এ আয়াত সন্তানের ধনসম্পদ ব্যয়ের ক্ষেত্রে পিতামাতার অগ্রাধিকার স্পষ্টভাবে পেশ করছে। নওয়াব সিদ্দীক হাসান এ আয়াতের তাফসীরে লিখেছেনঃ

(আরবী)

সন্তানের অর্থ ব্যয়ের ব্যাপারে পিতামাতাকে সর্বপ্রথম উল্লেখ করা হয়েছে এ কারণে যে, সন্তানের ওপর –তার অর্থ সম্পদের ওপর পিতামাতার যে অধিকার রয়েছে, তা আদায় করা সন্তানের জন্যে ওয়াজিব। কেননা এ পিতামাতাই হচ্চে সন্তানের এই দুনিয়ায় অস্তিত্ব লাভের বাহ্যিক কারণ ও মাধ্যম।

সন্তানের ধনসম্পদে পিতামাতার এ অধিকার কেবল সন্তানের মৃত্যুর পর মিরাস হিসেবেই নয়; বরং তার জীবদ্দশায়-ই এ অধিকার স্বীকৃত। রাসূলে করীম (ﷺ) এরশাদ করেছেনঃ

(আরবী)

সন্তান পিতার অতি উত্তম উপার্জন বিশেষ। অতএব তোমরা –পিতামাতার –সন্তানের ধনসম্পদ থেকে পূর্ণ স্বাদ গ্রহণ সহকারে পানাহার করো।

এক ব্যক্তি রাসূলের কাছে উপস্থিত হয়ে বললোঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ, আমার মাল-সম্পদ রয়েছে আর সন্তান-সন্ততিও আছে। কিন্তু এমতাবস্থায় আমার বাবা আমার মাল নিতে চায়, এ সম্পর্কে আপনার কি রায়? রাসূলে করীম (ﷺ) বললেনঃ

(আরবী)

তুমি আর তোমার মাল-সম্পদ সবই তোমার বাবার।

এ পর্যায়ের কয়েকটি হাদীস উদ্ধৃত করে তার ভিত্তিতে ইমাম শাওকানী লিখেছেনঃ

(আরবী)

এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, পিতা তার সন্তানের মাল-সম্পদ ন্যায়ত অংশীদার। অতএব সন্তান অনুমতি দিক আর নাই দিক পিতা তার সন্তানের মাল-সম্পদ থেকে পানাহার করতে পারে এবং তা নিজের মালের মতোই ব্যয়-ব্যবহারও করতে পারে –যতক্ষণ না সে ব্যয়-ব্যবহার অযথা, বেহুদা ও নির্বুদ্ধিতার খরচের পর্যায়ে পড়ে।

শুধু তাই নয়, সচ্ছল অবস্থায় সন্তানের কর্তব্য হচ্ছে গরীব পিতামাতাকে আর্থিক সাহায্য দান।

আল্লামা শাওকানী লিখেছেনঃ

(আরবী)

দরিদ্র ও অভাবগ্রস্ত পিতামাতারজন্যে অর্থ ব্যয় করা যে সচ্ছল অবস্থায় সন্তানের পক্ষে ওয়াজিব –এ সম্পর্কে শরীয়তবিদদের ইজমা হয়েছে।

পিতামাতার ধন-সম্পদ রক্ষা করাও সন্তানের কর্তব্য। রাসূলে করীম (ﷺ) বললেনঃ

(আরবী)

প্রত্যেক ব্যক্তিই তার পিতার ধনমাল রক্ষণাবেক্ষণের জন্যে দায়ী। সে দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা হলো কিনা, সে বিষয়ে অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে –জবাবদিহি করতে হবে। জিজ্ঞাসাবাদের এ কাজ ইহকাল-পরকাল সব জায়গায়ই হতে পারে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন