hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

পরিবার ও পারিবারিক জীবন

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (র.)

৬৯
স্ত্রীর খোরপোশ সরবরাহের দায়িত্ব স্বামীর
স্ত্রীর শোভনীয় মান অনুপাতে খোরপোশ নিয়মিত সরবরাহ করা স্বামীরই কর্তব্য, যেন সে নির্লিপ্তভাবে স্বামীর ঘর-সংসার পরিচালন ও সংরক্ষণ এবং সন্তান প্রসব ও লালন-পালনের কাজ সুষ্ঠুরূপে সম্পন্ন করতে পারে।

এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেছেনঃ

(আরবী)

যে লোককে অর্থ-সম্পদের সাচ্ছন্দ্য দান করা হয়েছে, তার কর্তব্য সেই হিসেবেই তার স্ত্রী-পরিজনের জন্যে ব্যয় করা। আর যার আয়-উৎপাদন স্বল্প পরিসর ও পরিমিত, তার সেভাবেই আল্লাহর দান থেকে খরচ করা কর্তব্য। আল্লাহ প্রত্যেকের ওপর তার সামর্থ্য অনুসারেই দায়িত্ব অর্পন করে থাকেন। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম শাওকানী লিখেছেনঃ

(আরবী)

এ আয়াতে আদেশ করা হয়েছে সচ্ছল অবস্তায় লোকদেরকে যে, তারা দুগ্ধদায়িনী স্ত্রীদের জন্যে তাদের স্বাচ্ছন্দ্য অনুপাতে বহন করবে। আর যাদের রিযিক নিম্নতম প্রয়োজন মতো কিংবা সংকীর্ণ সচ্ছল নয়, তারা আল্লাহর দেয়া রিযিক অনুযায়ীই খরচ করবে। তার বেশি করার কোনো দায়িত্ব তাদের নেই।

স্ত্রীদের জন্যে খরচ বহনের কোনো পরিমাণ শরীয়তে নির্দিষ্ট আছে কিনা –এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন মত রয়েছে। ইমাম মালিক ও ইমাম আহমাদ বলেছেনঃ

(আরবী)

স্ত্রীর ব্যয়ভারের কোনো পরিমাণ শরীয়তে নির্দিষ্ট নয়, বরং তা বিচার-বিবেচনার ওপরই নির্ভর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে স্বামী-স্ত্রীর উভয়ের অবস্থা বিবেচনীয়। সচ্ছল অবস্থায় স্ত্রীর জন্যে সচ্ছল অবস্থায় স্বামী সচ্ছল লোকদের উপযোগী ব্যয় বহন করবে। অনুরূপভাবে অভাবগ্রস্ত স্ত্রীর জন্যে অভাবগ্রস্ত স্বামী ভরণ-পোষনের নিম্নতম দায়িত্ব পালন করবে।

উপরোক্ত আয়াতের শেষাংশ প্রমাণ করছে যে, সামর্থ্যের বেশি কিছু করা স্বামীর পক্ষে ওয়াজিব নয়। ইমাম আবূ হানীফারও এই মত। আল্লামা ইবনুল হুম্নান লিখেছেনঃ স্বামী যদি গরীব হয়, আর স্ত্রী হয় সচ্ছল অবস্থায়, তাহলে স্বামী গরীব-লোকদের উপযোগী ভরণ-পোষণ দেয়ার জন্যে দায়িত্বশীল। কেননা স্ত্রী নিজে সচ্ছল অবস্থার হলেও সে যখন গরীব স্বামী গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে, তখন সে প্রকারান্তরে গরীবলোক-উপযোগী খোরপোশ গ্রহণেও রাজি হয়েছে বলতে হবে।

পক্ষান্তরে স্বামী যদি সচ্ছল অবস্থার হয়, আর যদি স্ত্রী হয় গরীব অবস্থার, তাহলে সে সচ্ছল লোক উপযোগী ব্যয়ভার লাভ করতে পারবে।

স্বামীর অবস্থা অনুযায়ী স্ত্রীকে খোরপোশ দেয়ার কথা কুরআন থেকে প্রমাণিত। হযরত আয়েশা (রা) বর্ণনা করেছেনঃ আবূ সুফিয়ানের স্ত্রী –উৎবা কন্যা –রাসূলে করীম (ﷺ)-এর সমীপে উপস্থিত হয়ে নিবেদন করলেনঃ

(আরবী)

হে আল্লাহর রাসূল, আমার স্বামী আবূ সুফিয়ান একজন কৃপণ ব্যক্তি; সে আমার ও আমার সন্তানদের প্রয়োজন পরিমাণ ভরণ-পোষণ দেয় না, তবে আমি তাকে না জানিয়ে প্রয়োজন মতো গ্রহণ করতে থাকি। এ কাজ জায়েয কিনা?

তখন নবী করীম (ﷺ) তাকে বললেনঃ

(আরবী)

সাধারণ প্রচলন অনুযায়ী তোমার ও তোমার সন্তানাদির প্রয়োজন পরিমাণ ভরণ-পোষণ তুমি গ্রহণ করতে পারো।

এ হাদীস থেকে জানা যায় যে, আবূ সুফিয়ান সচ্ছল অবস্থাসম্পন্ন ছিল, রাসূলে করীম (ﷺ) জানতেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও সে কেবলমাত্র কৃপণতার কারণে নিজ স্ত্রী ও পুত্র-কন্যার প্রয়োজন পরিমাণ ভরণ-পোষণ দিত না। সেই কারণে রাসূলে করীম (ﷺ) তার স্ত্রীকে প্রয়োজন পরিমাণ গ্রহণ করার অনুমতি দিয়েছিলেন। (আরবী)

ইমাম শাফিয়ীর মতে এই পরিমাণ শরীয়ত কর্তৃক নির্দিষ্ট বলে এ ব্যাপারে বিচার-বিবেচনার কোনো অবকাশ নেই। আর এ ব্যাপারে স্বামীর অবস্থানুযায়ীই ভরণ-পোষনের ব্যবস্থা করতে হবে।

স্ত্রীর যদি খাদেম-চাকরের প্রয়োজন দেখা দেয়, তাহলে স্বামীর সামর্থ্য থাকলে খাদেম-চাকর যোগাড় করে দেয়া স্বামীর কর্তব্য। এ ব্যাপারে ফিকাহবিদগণ সম্পূর্ণ একমত। ইমাম মুহাম্মাদ বলেছেনঃ

(আরবী)

একাধিক খাদেম-চাকরের খরচ বহন করা অসচ্ছল অবস্থার স্বামীর জন্যেও ওয়াজিব হবে।

একজন খাদেম-চাকরের প্রয়োজন হলে তাও সংগ্রহ করা ও খরচ বহন করা স্বামীর কর্তব্য কিনা –এ সম্পর্কে ফিকাহবিদগণ একমত নন। ইমাম মালিকের মতে দুই বা তিনজন খাদেমের প্রয়োজন হলে তার ব্যবস্থা করা স্বামীর কর্তব্য। আর ইমামা আবূ ইউসুফ বলেছেনঃ

(আরবী)

এমতাবস্থায় স্বামীর কর্তব্য হবে শুধু দুজন খাদেমের ব্যবস্থা করা ও খরচ বহন করা। তাদের একজন হসে ঘরের ভিতরকার জরুরী কাজ-কর্ম করার জন্যে। আর অপরজন হবে ঘরের বাইরে জরুরী কাজ সম্পন্ন করার জন্যে।

গরীব ও অসচ্ছল স্বামীদের সান্ত্বনা দানের উদ্দেশ্যে আল্লাহ তা’আলা উক্ত আয়াতের পরই বলেছেনঃ

(আরবী)

আল্লাহ অসচ্ছলতা ও দারিদ্র্যের পক্ষে অবশ্যই সচ্ছলতা ও প্রাচুর্য সৃষ্টি করে দেবেন।

এ পর্যায়ে কুরআন মজীদের নিম্নোক্ত আয়াতটিও পাঠ আবশ্যক। আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেছেনঃ

(আরবী)

সন্তানের পিতার কর্তব্য হচ্ছে প্রসূতির খাবার ও পরার প্রচলিত মানে ব্যবস্থা করা। কোনো ব্যক্তির ওপরই তার সামর্থ্যের অধিক বোঝা চাপানো যেতে পারে না।

এ আয়াতের ভিত্তিতে ইমাম শাওকানী লিখেছেনঃ

(আরবী)

সন্তান ও স্ত্রীর ব্যয়ভার, খোরাক ও পোশাক সংগ্রহ ও ব্যবস্থা করা সন্তানের পিতার পক্ষে ওয়াজিব। আর তা করতে হবে সাধারণ প্রচলন অনুযায়ী –যা লোকেরা সাধারণত করে থাকে। এ ব্যাপারে কোনো পিতাকেই তার শক্তি-সামর্থ্যের বাইরে –তার পক্ষে কঠিন ও দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে –এমন মান বা পরিমাণ তার ওপর চাপানো যাবে না।

এ আয়াত থেকে স্পষ্ট জানা যায় যে, সন্তান গর্ভে ধারণ, সন্তান প্রসব ও লালন-পালন করা স্ত্রীর কাজ; আর তার সন্তানের ভরণ-পোষণ ও যাবতীয় প্রয়োজন পূরণের দায়িত্ব স্বামীর। এর ফলে স্ত্রীরা খোর-পোশের যাবতীয় চিন্তা-ভাবনা থেকে মুক্ত হয়ে গেল। এর প্রভাব তাদের মনে ও জীবনে সুদূরপ্রসারী হবে। রাসূলে করীম (ﷺ) স্বামীদের লক্ষ্য করে তাই এরশাদ করেছেনঃ

(আরবী)

স্ত্রীদের খাবার ও পরার ব্যবস্থা করার ব্যাপারে তোমরা অবশ্যই তাদের প্রতি ভালো ব্যবহার করবে।

অর্থাৎ কেবলমাত্র মোটা ভাত ও মোটা কাপড়ের ব্যবস্থা করেই ক্ষান্ত হরে চলবে না। এ ব্যাপারে তাদের প্রতি কঠোরতা অবলম্বনের বদলে সহানুভূতিমূলক নীতি গ্রহণ করবে।

আলোচনার সারকথা হচ্ছে এই যে, স্বামী-স্ত্রীতে অতি স্বাভাবিকভাবেই কর্মবণ্টন করে দেয়া হয়েছে। যে যৌন মিলনের সুখ ও মাধুর্য স্বামী-স্ত্রী উভয়েই সমানভাবে ভোগ করে, তার সুদূরপ্রসারী পরিণতি কেবল স্ত্রীকেই ভোগ করতে হয় প্রকৃতির এক অমোঘ নিয়ম অনুযায়ী। পুরুষকে তার কোনো ঝুঁকিই গ্রহণ করতে হয় না। এ হচ্ছে এক স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক ব্যবস্থা। কাজেই স্ত্রী প্রকৃতির এই দাবি পূরণে সতত প্রস্তুত থাকবে, আর স্বামী তার যাবতীয় প্রয়োজন পূরণের জন্যে দায়ী হবে। মূল ব্যাপারে সমান অংশীদারিত্বের এটা অতি স্বাভাবিক দাবি।

উপরোক্ত আয়াত ও হাদীস থেকে একথাও প্রমাণিত হয় যে, স্ত্রীর চলতি নিয়মে কেবল খাওয়া-পরার ব্যবস্থা করে দেওয়াই দাম্পত্য জীবনে মাধুর্য সৃষ্টির পক্ষে যথেষ্ট নয়, সেই সঙ্গে স্বামীর তওফীক অনুযায়ী তারও বেশি এবং অতিরিক্ত হাত খরচাও স্ত্রীর হাতে তুলে দেয়া স্বামীর কর্তব্য; যেন স্ত্রী নিজ ইচ্ছা, বাসনা-কামনা ও রুচি অনুযায়ী সময়ে-অসময়ে খরচ করতে পারে। এতে করে স্ত্রীর মনে স্বামীর প্রতি ভালোবাসা, আস্থা ও নির্ভরশীলতা অত্যন্ত দৃঢ় ও গভীর হবে। স্বামী সম্পর্কে তার মনে জাগবে না কোনো সংশয়, উদ্বেগ বা বীতরাগ। (আরবী)

এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, কোনো স্বামী যদি তার স্ত্রীর ভরণ-পোষণের দায়িত্ব পালনে অক্ষমই হয়ে পড়ে তাহলে তখন ইসলামী সরকার সে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দেবে। নবী করীম (ﷺ)-কে এক ব্যক্তি সম্পর্কে বলা হয়েছিল যে, সে তার স্ত্রীর ভরণ-পোষণ করতে পারে না, এমতাবস্থায় কি করা যেতে পারে? তখন নবী করীম (ﷺ) বলেছিলেনঃ

(আরবী) –এ দুজনের মধ্যে বিচ্ছেদ করে দিতে হবে।

দ্বিতীয় খলীফা হযরত উমর ফারূক (রা) তাঁর খিলাফতকালে সৈন্যবাহিনীর বিভিন্ন প্রধানের প্রতি ফরমান পাঠিয়েছিলেন এই বলেঃ

(আরবী)

হয় তারা তাদের স্ত্রীদের ভরণ-পোষনের যাবতীয় প্রয়োজন পূরণ করবে, না হয় তাদের তালাক দিয়ে দেবে।

কিন্তু স্বামীর দৈন্য ও আর্থিক অনটনের সময় স্ত্রীকে পরিত্যাগ করতে বাধ্য করা কতখানি সমীচীন এবং রাসূলে করীম (ﷺ) ও উমর ফারূকের উক্ত কথারই বা তাৎপর্য কি, সে সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন মতের উল্লেখ করা হয়েছে।

একটি মত এই –হ্যাঁ, এরূপ অবস্থায় –যখন স্বামী স্ত্রীর ভরণ-পোষণের ক্ষমতা রাখে না তখন –বিয়ে ভেঙ্গে উভয়কেই মুক্ত করে দেয়া সমীচীন। হযরত আলী, হযরত উমর ফারূক, হযরত আবূ হুরায়রা (রা) প্রমুখ সাহাবী, বহু সংখ্যক তাবেয়ী, ফিকাহবিদ এবং ইমাম মালিক, শাফিয়ী ও ইমাম আহমাদ প্রমুখ ফকীহর এই মত বলে জানা গেছে। দলীল হিসেবে তাঁরা যেমন পূর্বোক্ত কথা দুটির উল্লেখ করেছেন, তেমনি ইসলামের স্থায়ী ও সর্বজনস্বীকৃত (আরবী) “না, কারো ক্ষতি করা হবে, না কাউকে অপর কারো ক্ষতি করতে দেয়া হবে” –এই মূলনীতিও পেশ করেছেন অর্থাৎ অসচ্ছল ও অভাব-অনটনের সময় স্ত্রীকে স্বামীর সঙ্গে দৈন্য ও দুঃখ-দুর্ভোগ পোহাতে বাধ্য করা কোনো ইনসাফের কথা হতে পারে না। এ ছাড়া আরও একটি কথা রয়েছে, আর তা হচ্ছে এই যে, মূলত স্ত্রীর সাথে সহবাস ও যৌন সঙ্গম হচ্ছে স্ত্রীর যাবতীয় খরচ বহনের বিনিময়। কাজেই বিনিময়ের দুটি জিনিসের মধ্যে একটি অনুপস্থিতিতে অপরটির উপস্থিতি ধারণা করা যায় না। এরূপ অবস্থায় স্ত্রীর অবশ্য ইখতিয়ার থাকা উচিত –হয় সে অভাবগ্রস্ত স্বামীর সাথে নিজ ইচ্ছায় থাকবে, আর থাকতে না চাইলে বিবাহ-বিচ্ছেদ করে তার মুক্তির পথ উন্মুক্ত করে দিতে হবে।

এঁদের আরও দুটি দলীল রয়েছে। একটি এই যে, ক্রীতদাসকে খেতে-পরতে দিতে না পারলে রাসূলে করীম (ﷺ) নির্দেশ দিয়েছেন তাকে বিক্রয় করে দিতে। তাহলে স্ত্রীকে খেতে পরতে না দিতে পারলে তাকে তালাক দিয়ে মুক্ত করে দেয়া হবে না কেন? আর যদি স্বামী নপুংসক হয়ে যায়, তাহলে তাদেরও বিয়ে-বিচ্ছেদ করে স্ত্রীর মুক্তির পথ প্রশস্ত করাই ইসলামের আইন। খেতে পরতে দিতে না পারা স্বামীর নপুংসকতার শামিল, তখণও অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণের নীতিই স্বাভাবিক।

তাঁদের দ্বিতীয় দলিল হচ্ছে আল্লাহ তা’আলার নিম্নোক্ত আয়াতাংশঃ

(আরবী)

হয় যথাযথ নিয়মে ও ভালোভাবে স্ত্রীকে রাখবে, নয় ভালোভাবে ও অনুগ্রহ প্রদর্শন করে তাকে ছেড়ে দেবে।

এ আয়াতের ভিত্তিতে তাঁরা বলেন যে, স্ত্রীকে খাওয়া-পরা না দিয়ে রাখা নিশ্চয়ই মারুফ ভাবে রাখা নয়। বরং এরূপ অবস্থায় পড়ে থাকতে স্ত্রীকে বাধ্য করা হলে তদপেক্ষা অধিক কষ্টদান ও ক্ষতি সাধন আর কিছু হতে পারে না।

এ পর্যায়ে দ্বিতীয় মত হচ্ছে, স্বামীর অভাব-অনটনের সময় স্ত্রীকে তালাক দিতে বাধ্য করা কিংবা বিচার বিভাগের সাহায্যে উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটানো অত্যন্ত মর্মান্তিক কাজ সন্দেহ নেই। এ মতের অনুকূলে আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণী পেশ করা হয়। তিনি বলেছেনঃ

(আরবী)

যার রিযিক পরিমিত হয়ে পড়েছে সে যেন আল্লাহর দেয়া সম্পদ থেকে ব্যয় করে। আল্লাহ একজনকে ততটাই দায়িত্ব দেন, যতটার সম্পদ তিনি তাকে দিয়েছেন।

এ আয়াত অনুযায়ী অভাবের সময় স্ত্রীর ভরণ-পোষণ সংগ্রহের ব্যাপারে স্বামীর আদৌ কোনো দায়িত্ব থাকে না। কাজেই কোনো সময় তা না দিতে পারলে সেজন্যে যে বিয়ে ভেঙ্গে দিতে হবে কিংবা তাকে তালাক দিতে বাধ্য করা হবে –এমন কোনো কথাই হতে পারে না। হযরত আয়েশা ও হাফসা (রা) যখন রাসূলে করীম (ﷺ)-এর নিকট নিজেদের খরচের দাবি জানিয়েছিলেন, তখন হযরত আবূ বকর (আয়েশার পিতা) ও হযরত উমর (হাফসার পিতা) অত্যন্ত ক্রোধ এবং রাগ প্রকাশ করেছিলেন ও নিজ নিজ কন্যাকে রাসূলের সামনেই মারধেঅর করতে চেয়েছিলেন। অথচ দাবি অনুযায়ী খরচ দিতে না পারায় তাঁরা কেউই রাসূলের নিকট তালাকের দাবি করেন নি। (আরবী)

এ প্রসঙ্গে শেষ কথা এই যে, পারিবারিক যাবতীয় ব্যয়ভার বহনের দায়িত্ব ইসলামী শরীয়তে কেবল স্বামীর ওপরই অর্পণ করা হয়েছে। কিন্তু তাই বলে স্ত্রীকে এ অধিকার দেয়া হয়নি যে, সে স্বামীকে সর্বাবস্থায়ই খোরপোশের বিশেষ একটা নির্দিষ্ট মান রক্ষা করে চলতে বাধ্য করবে। পূর্বোক্ত আয়াতের ভিত্তিতে স্বামী তার সামর্থ্য ও আর্থিক ক্ষমতানুযায়ী যে কোনো একটি মান (Standard) রক্ষার জন্যে দায়ী মাত্র। কোনো বিশেষ মান রক্ষার জন্যে –তাও আবার সকল অবস্থায় –তাকে দায়ী করা হয়নি।

পারিবারিক জীবনের আর্থিক দায় সম্পর্কিত এ সম্যক আলোচনা সম্বন্ধে এ কথা সুস্পষ্ট ভাষায়ই বলা যায় যে, ইসলামের এ ব্যবস্থা স্বভাব ও প্রকৃতি-ব্যবস্থার স্থায়ী নিয়মের সাথে পুরোপুরি সমঞ্জস। তা সত্ত্বেও যে সব স্বামী স্ত্রীদের বাধ্য করে তাদের স্বাভাবিক দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সঙ্গে অর্থোপার্জনের দায়িত্বও পালন করতে কিংবা যারা স্ত্রীদেরকে সন্তান গর্ভে ধারণ, সন্তান প্রসব ও লালন-পালনের ঝঞ্ঝাট থেকে মুক্তি দিয়ে পুরুষের মতোই অর্থোপার্জনের যন্ত্ররূপে খাটাতে ইচ্ছুক, তারা যে স্বভাব ও প্রাকৃতিক ব্যবস্থার দাবির সম্পূর্ণ বিপরীত কাজ করে, তাতে কোনোই সন্দেহ থাকতে পারে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন