hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

পরিবার ও পারিবারিক জীবন

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (র.)

৫৬
দেন-মোহর
বিয়েতে দেন-মোহর বা ‘মহরানা’ অবশ্য দেয় হিসেবে ধার্য করার এবং তা যথারীতি আদায় করার জন্যে ইসলামে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ‘এনায়া’ গ্রন্থে ‘মহরানা’ বলতে কি বোঝায় তার সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে নিম্নোক্ত ভাষায়ঃ

(আরবী)

দেনমোহর বলতে এমন অর্থ-সম্পদ বোঝায়, যা বিয়ের বন্ধনে স্ত্রীর ওপর স্বামীত্বের অধিকার লাভের বিনিময়ে স্বামীকে আদায় করতে হয়, হয় বিয়ের সময়ই তা ধার্য হবে, নয় বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার কারণে তা আদায় করা স্বামীর ওপর ওয়াজিব হবে।

বিয়ের ক্ষেত্রে মহরানা দেয়া ফরয বা ওয়াজিব। কুরআন মজীদে বলা হয়েছেঃ

(আরবী)

তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের কাছ থেকে যে যৌন-স্বাদ গ্রহণ করো, তার বিনিময়ে তাদের ‘মহরানা’ ফরয মনে করেই আদায় করো।

তাফসীরের কিতাবে এ আয়াতের তরজমা করা হয়েছে নিম্নোক্ত ভাষায়ঃ

(আরবী)

অর্থাৎ তোমরা পুরুষরা বিবাহিতা স্ত্রীদের সাথে কার্য সম্পাদন করে যে স্বাদ গ্রহণ করেছ, তার বিনিময়ে তাদের প্রাপ্য মহরানা পুরাপুরি তাদের নিকট আদায় করে দাও, আদায় করো এ হিসেবে যে, তা পূর্ণমাত্রায় দেয়া আল্লাতর তরফ থেকে তোমাদের ওপর ফরয করা হয়েছে।

অপর আয়াতে বলা হয়েছেঃ

(আরবী)

এবং মেয়েদের অলি-গার্জিয়ানের অনুমতি নিয়ে তাদের বিয়ে করো এবং তাদের ‘মহরানা’ প্রচলিত নিয়মে ও সকলের জানামতে তাদেরকেই আদায় করে দাও।

এ আয়াতদ্বয়ে বিয়ের ক্ষেত্রে দেয়ার স্পষ্ট নির্দেশ ঘোষিত হয়েছে। এজন্যে ‘মহরানা’ হচ্ছে বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার একটি জরুরী শর্ত। প্রথম আয়াতে আজাদ ও স্বাধীন মহিলাকে বিয়ে করা সম্পর্কে নির্দেশ এবং দ্বিতীয় আয়াতে দাসী বিয়ে করা সম্পর্কে বলা হয়েছে। আর দু’জায়গায় বিয়ের বিনিময়ে মহরানা দেয়ার স্পষ্ট নির্দেশ উল্লিখিত হয়েছে।

আল্লামা ইবনুল আরাবী লিখেছেনঃ

(আরবী)

মহান আল্লাহ মহরানাকে বিনিময় স্বরূপ ধার্য করেছেন এবং যাবতীয় পারস্পরিক বিনিময়সূচক ও একটা জিনিসের মুকাবিলার আর একটা জিনিস দানের কারবারের মতোই ধরে দিয়েছেন।

অতএব এটাকে স্বামীর ‘অনুগ্রহের দান’ মনে না করে একটার বদলে একটা প্রাপ্তির মতো ব্যাপার মনে করতে হবে। অর্থাৎ মহরানার বিনিময়ে স্ত্রীর যৌন অঙ্গ ব্যবহারের অধিকার লাভ।

আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ

(আরবী)

এবং মুহাররম মেয়েদের ছাড়া আর সব মহিলাকেই তোমাদের জন্যে হালাল করে দেয়া হয়েছে এজন্যে যে, তোমরা তাদের গ্রহণ করবে তোমাদের ধন-মালের বিনিময়ে।

ইবনুল আরাবী লিখেছেনঃ

(আরবী)

আল্লাহ মহান হুকুমদাতা স্ত্রীর যৌন অঙ্গ ব্যবহার হালাল করেছেন ধন-মালের বিনিময়ে ও বিয়ের মাধ্যমে পবিত্রতা রক্ষার্থে, জেনার জন্যে নয়। আর একথা প্রমাণ করে যে, বিয়েতে মহরানা দেয়া ওয়াজিব অর্থাৎ ফরয নয়।

কুরআনে আবার বলা হয়েছেঃ

(আরবী)

এবং মুসলমান ও আহলি কিতাব বংশের সতীত্ব-পবিত্রতাসম্পন্না মহিলারাও তোমাদের জন্যে হালাল, যখন তোমরা তাদের মহরানা আদায় করে বিয়ে করবে।

অন্যত্র এ কথারই পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে নিম্নোক্ত ভাষায়ঃ

(আরবী)

তোমরা যদি সে মহিলাদের বিনিময় –মহরানা –দিয়ে বিয়ে করো, তবে তোমাদের কোনো গুনাহ হবে না।

এ আয়াত দুটি উদ্ধৃত করে ইবনুল আরাবী লিখেছেনঃ

(আরবী)

এসব আয়াত থেকে প্রমাণিত হয় যে, মহরানা দেয়া সকল বিয়েতে ও সকল অবস্থায়ই ওয়াজিব (ফরয)। এমনকি আকদ-এর সময় যদি ধার্য করা নাও হয় তবুও সে স্ত্রীর সাথে যৌন মিলন হওয়ার সাথে সাথে মহরানা দেয়া ওয়াজিব (ফরয) হয়ে যাবে।

শুধু তা-ই নয়, মহরানা আদায় করতে হবে অন্তরের সন্তোষ ও সদিচ্ছা সহকারে এবং মেয়েদের জন্যে আল্লাহর দেয়া এক নেয়ামত মনে করে। কুরআন মজীদে বলা হয়েছেঃ

(আরবী)

এবং স্ত্রীদের প্রাপ্য মহরানা তাদের আদায় করে দাও আন্তরিক খুশীর সাথে ও তাদের অধিকার মনে করে।

আয়াতে উদ্ধৃত (আরবী) শব্দের অর্থ ব্যাপক। তার একটি মানে হচ্ছে (আরবী) কোনো বিনিময় ও বদলা ব্যতিরেকেই কিছু দিয়ে দেয়া। আয়াতের আর একটি অর্থ হচ্ছেঃ

(আরবী)

মহরানা দিয়ে মনকে পবিত্র ও নিষ্কলুষ করে নাও, মহরানা দেয়ার জন্যে মনের কুণ্ঠা কৃপণতা দূর করো।

আর এর তৃতীয় অর্থ হচ্ছেঃ

(আরবী) –আল্লাহর তরফ থেকে বিশেষ দান।

কেননা জাহিলিয়াতের যুগে হয় মহরানা ছাড়াই মেয়েদের বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যেত, নয় মহরানা বাবদ যা কিছু আদায় হতো তা সবই মেয়েদের বাপ বা অলি-গার্জিয়ানরাই লুটে পুটে খেয়ে নিত। মেয়েরা বঞ্চিতাই থেকে যেত। এজন্যে ইসলামে যেমন মহরানা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, তেমনি এ জিনিসকে একমাত্র মেয়েদেরই প্রাপ্য ও তাদের একচেটিয়া অধিকারের বস্তু বলে ঘোষণা করা হয়েছে এবং এতে বাপ বা অলী-গার্জিয়ানের কোনো হক নেই বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। বস্তুত মহরানা যখন মেয়েদের জন্যে আল্লাহর বিশেষ দান, তখন তা আদায় করা স্বামীদের পক্ষে ফরয এবং স্বামীদের ওপর তা হচ্ছে স্ত্রীদের আল্লাহর নির্ধারিত অধিকার।

প্রশ্ন উঠতে পারে, স্বামী-স্ত্রী উভয়ই তো উভয়ের কাছে থেকে যৌন সুখ ও পরিতৃপ্তি লাভ করে থাকে। ‘মহরানা’ যদি এরই ‘বিনিময়’ হয় তাহলে তা কেবল স্বামীই কেন দেবে স্ত্রীকে, তা কি স্বামীদের ওপর অতিরিক্ত ‘জরিমানা’ হয়ে যায় না?

এর জবাবে বলা যায়, প্রকৃত ব্যাপার এই যে, স্বামী বিয়ের মাধ্যমে স্ত্রীর ওপর এক প্রকারের কর্তৃত্ব বা নেতৃত্ব লাভ করে থাকে। স্বামী স্ত্রীর যাবতীয় অর্থনৈতিক প্রয়োজন পূরনের দায়িত্ব গ্রহণ করে আর স্ত্রী নিজেকে –নিজের দেহমন, প্রেম-ভালবাসা, যাবতীয় সম্পদ-ঐশ্বর্য –একান্তভাবে স্বামীর হাতে সোপর্দ করে দেয়। এর বিনিময়স্বরূপই মহরানা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেননাঃ

(আরবী)

অতঃপর স্ত্রী স্বামীর মত ও অনুমতি না নিয়ে –না নফল রোযা রাখবে, না হজ্জ করবে। আর না তার ঘর ছেড়ে কোথাও চলে যাবে।

শাফিয়ী মাযহাবের আলেমগণ মহরানার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেনঃ

(আরবী)

বিয়ে হবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিনিময়মূলক একটি বন্ধন। বিয়ের পর একজন অপরজনকে নিজের বিনিময়ে লাভ করে থাকে। প্রত্যেক অপরজনের থেকে যেটুকু ফায়দা লাভ করে, তাই হচ্ছে অপর জনের ফায়দার বিনিময় –বদল। আর মহরানা হচ্ছে এক অতিরিক্ত ব্যবস্থা। আল্লাত তা’আলা তা স্বামীর ওপর অবশ্য দেয় –ফরয করে দিয়েছেন এজন্যে যে, বিয়ের সাহায্যে সে স্ত্রীর ওপর খানিকটা অধিকারসম্পন্ন মর্যাদা লাভ করতে পেরেছে।

অতএব বিয়ের আকদ অনুষ্ঠিত হওয়ার সময়ই মহরানা নির্ধারণ এবং তার পরিমাণের উল্লেখ একান্ত কর্তব্য। নবী করীম (ﷺ) অত্যন্ত জোরের সাথে বলেছেনঃ

(আরবী)

বিয়ের সময় অবশ্য পূরণীয় শর্ত হচ্ছে তা, যার বিনিময়ে তোমরা স্ত্রীর যৌন অঙ্গ নিজের জন্যে হালাল মনে করে নাও।

-আর তা হচ্ছে মহরানা বা দেন-মোহর।

বিয়ের পর স্ত্রীকে কিছু না দিয়ে তার কাছে যেতেও নবী করীম (ﷺ) স্পষ্ট ভাষায় নিষেধ করেছেন। হযরত আলী (রা) হযরত ফাতিমা (রা)-কে বিয়ে করার পর তাঁর নিকটে যেতে প্রস্তুত হচ্ছিলেন। তখন নবী করীম (ﷺ)-

(আরবী)

তাকে কোনো জিনিস না দেয়া পর্যন্ত তাঁর নিকট যেতে তাঁকে নিষেধ করলেন।

আল্লামা শাওকানী লিখেছেনঃ

(আরবী)

নবী করীম (ﷺ) স্ত্রীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও তার মনকে স্বামীর প্রতি আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে স্ত্রীকে কিছু না-কিছু আগে-ভাগে দেবার জন্যে স্বামীকে আদেশ করেছেন।

প্রসঙ্গত মনে রাখতে হবে, বিয়ের সময় দেন-মোহর ছাড়া অপর এমন কোনো শর্ত আরোপ করা চলবে না, যা শরীয়তের বিরোধী।

নবী করীম (ﷺ) বলেছেনঃ

(আরবী)

কোনো মহিলা তার বিয়ের জন্যে তারই অপর এক বোনকে তালাক দেয়ার শর্ত আরোপ করতে পারবে না।

বুখারী শরীফে এ হাদীসটির পূর্ণ ভাষণ নিম্নরূপঃ

(আরবী)

কোনো মেয়েলোকের জন্যে তার অপর এক বোনকে তালাক দেয়ার দাবি করা –যেন সে তার ভোগের পাত্র সে নিজের জন্যে পূর্ণভাবে আয়ত্ত করে নিতে পারে –হালাল নয়। কেননা সে তা পাবেই, যা তার জন্যে নির্দিষ্ট করে রাখা হয়েছে।–[ইবনে হাবীব বলেছেনঃ

(আরবী)

মনীষীগণ এ নিষেধকে অবশ্য পালনীয় মনে করেন না; বরং এ কাজ বাঞ্ছনীয়-ও মনে করেন না। তা সত্ত্বেও এরূপ শর্ত যদি কেউ আরোপ করে, তবে তাতে তার বিয়ে ভেঙ্গে যাবে না –যদিও ইবনে বাত্তাল এ কথার ওপর জোর আপত্তি জানিয়েছেন।]

‘তার অপর এক বোন’ বলতে আপন সহোদরাও হতে পারে, অনাত্মীয় কোনো মেয়েলোকও হতে পারে। কেননা সে তার আপন সহোদরা বোন না হলেও মুসলিম হিসেবে সে তার দ্বীনী বোন অর্থাৎ কোনো পুরুষ –যার স্ত্রী রয়েছে –যদি অপর কোনো মেয়ে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়, মেয়ে সে বিয়েতে রাজি হয়ে পুরুষটিকে একথা বলতে পারবে না যে, তোমরা আগের (মানে বর্তমান) স্ত্রীকে আগে তালাক দাও, তারপর আমাকে বিয়ে করো। এরূপ শর্ত আরোপ করার তার কোনো অধিকার নেই। সে ইচ্ছে করলে এ বিয়ের প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করতে পারে। কিন্তু একজনের বর্তমান স্ত্রীকে তালাক দেয়ার শর্ত আরোপ করা এবং সে তালাক হয়ে যাওয়ার পর তার নিকট বিয়ে বসতে রাজি হওয়ার কারো অধিকার থাকতে পারে না। এরূপ শর্ত আরোপ করা ইসলামী শরীয়তের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। রাসূলে করীম (ﷺ) এ পর্যায়ে স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেছেনঃ

(আরবী)

আল্লাহর কিতাবে নেই –এমন কোনো শর্ত আরোপ করা হলে তা অবশ্যই প্রত্যাখ্যান হবে।

মহরানা না দিয়ে স্ত্রীর নিকট গমন করাই অবাঞ্ছনীয়। হযরত ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেছেন, হযরত আলী যখন হযরত ফাতিমাকে বিয়ে করলেন, তখন নবী করীম (ﷺ) তাঁকে বললেনঃ

(আরবী)

তুমি ওকে কিছু একটা দাও।

হযরত ইবনে উমর বললেনঃ

(আরবী)

কোনো মুসলমানেরই মহরানা বাবদ কম বা বেশি কিছু অগ্রিম না দিয়ে তার স্ত্রীর নিকট গমন করা জায়েয নয়।

মালিক ইবনে আনাস বলেছেনঃ

(আরবী)

স্ত্রীকে তার মহরানার কিছু-না-কিছু না দিয়ে স্বামী যেন তার নিকট গমন না করে। মহরানার কম-সে-কম পরিমাণ হলো একটি দীনারের এক চতুর্থাংমে কিংবা তিন দিরহাম। বিয়ের সময় এ পরিমাণ নির্দিষ্ট হোক আর নাই হোক, তাতে কিছু আসে যায় না।

দেন-মোহরের কি হওয়া উচিত, ইসলামী শরীয়তে এ সম্পর্কে কোনো অকাট্য নির্দেশ দেয়া হয়নি, নির্দিষ্টভাবে কোনো পরিমাণও ঠিক করে বলা হয়নি। তবে একথা স্পষ্ট যে, প্রত্যেক স্বামীর-ই কর্তব্য হচ্ছে তার আর্থিক সামর্থ্য ও স্ত্রীর মর্যাদার দিকে লক্ষ্য রেখে উভয় পক্ষের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোনো পরিমাণ নির্দিষ্ট করে বেঁধে দেয়া। আর মেয়ে পক্ষেরও তাতে সহজেই রাজি হয়ে যাওয়া উচিত। এ ব্যাপারে শরীয়ত উভয় পক্ষকে পূর্ণ আজাদি দিয়েছে বলেই মনে হয়। এ বিষয়ে শাহ ওয়ালীউল্লাহ দেহলভী যা লিখেছেন, তা নিম্নোক্ত ভাষায় প্রকাশ করা হচ্ছেঃ

নবী করীম (ﷺ) মহরানার কোনো পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দেন নি এ কারণে যে, এ ব্যাপারে লোকদের আগ্রহ-উৎসাহ ও ঔদার্য প্রকাশ করার মান কখনো এক হতে পারে না। বরং বিভিন্ন যুগে, দুনিয়ার বিভিন্ন স্তরের লোকদের আর্থিক অবস্থা এবং লোকদের রুচি, দৃষ্টিভঙ্গি, কার্পণ্য ও উদারতার ভাবধারায় আকাশ-ছোঁয়া পার্থক্য হয়ে থাকে। বর্তমানেও এ পার্থক্য বিদ্যমান। এজন্যে সর্বকাল যুগ-সমাজ স্তর, অর্থনৈতিক অবস্থা ও রুচি-উৎসাহ নির্বিশেষে প্রযোজ্য হিসেবে একটি পরিমাণ স্থায়ীভাবে নির্দিষ্ট করে দেয়া বাস্তব দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ অসম্ভব। যেমন করে কোনো সুরুচিপূর্ণ দ্রব্যের মূল্য সর্বকালের জন্যে নির্দিষ্ট করে দেয়া যায় না –দেয়া অবৈজ্ঞানিক ও হাস্যকর। কাজেই এর পরিমাণ সমাজ, লোক ও আর্থিক মানের পার্থক্যের কারণে বেশিও হতে পারে, কমও হতে পারে। তবে শুধু শুধু এবং পারিবারিক আভিজাত্যের দোহাই দিয়ে এর পরিমাণ নির্ধারণর বাড়াবাড়ি ও দর কষাকষি করাও আদৌ সমর্থনযোগ্য নয়। তার পরিমাণ এমন সামান্য ও নগণ্য হওয়া উচিত নয়, যা স্বামীর মনের ওপর কোনো শুভ প্রভাবই বিস্তার করতে সমর্থ হবে না। যা দেখে মনে হবে যে, মহরানা আদায় করতে গিয়ে স্বামীকে কিছুমাত্র ক্ষতি স্বীকার করতে হয়নি, সেজন্যে তাকে কোনো ত্যাগও স্বীকার করতে হয়নি।

শাহ দেহলভীর মতে, দেন-মোহরের পরিমাণ এমন হওয়া উচিত, যা আদায় করা স্বামীর পক্ষে কষ্টসাধ্য হবে এবং সেজন্যে সে রীতিমতো চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়বে। পক্ষান্তরে তার পরিমাণ এমনও হওয়া উচিত নয়, যা আদায় করা স্বামীর পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। এজন্যে নবী করীম (ﷺ) একদিকে গরীব সাহাবীকে বললেনঃ

(আরবী)

কিছু-না-কিছু দিতে চেষ্টা করো। আর কিছু না পার, মহরানা বাবদ অন্তত লোহার একটি আঙ্গুরীয় দিতে পারলেও সেজন্যে অবশ্য চেষ্টা করবে।

আর যে নিঃস্ব সাহাবী তাও দিতে পারেন নি, তাঁকে তিনি বলেছেনঃ

(আরবী)

কুরআন শরীফের যা কিছু তোমরা জানা আছে, তা তুমি তোমার স্ত্রীকে শিক্ষা দেবে –এই বিনিময়েই আমি মেয়েটিকে তোমার নিকট বিয়ে দিলাম।

এ ধরনের মহরানার সম্পর্কে ফিকাহবিশারদ মকহুল বলেছেনঃ

(আরবী)

এ ধরনের মহরানার বিনিময়ে বিয়ে সম্পন্ন করার ইখতিয়ার রাসূলে করীম (ﷺ)-এর পরে আর কারো নেই।

ফিকাহবিদ লাইস বলেছেনঃ

(আরবী)

রাসূলের তিরোধানের পর এই ধরনের মহরানা নির্দিষ্ট করার অধিকার আর কারো নেই।

ইবনে জাওজী বলেছেনঃ ইসলামের প্রথম যুগে স্বাভাবিক দারিদ্র্যের কারণে প্রয়োজনবশতই এ ধরনের মহরানা নির্দিষ্ট করা জায়েয ছিল। কিন্তু এখন তা জায়েয নয়।

একটি হাদীস থেকে জানা যায়, এক জোড়া জুতার বিনিময়ে অনুষ্ঠিত বিয়েকেও রাসূলে করীম (ﷺ) বৈধ বলে ঘোষণা করেছিলেন। তিনি মেয়েলোকটিকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘তুমি মহরানা বাবদ যা পেয়েছ, তাতে বিয়ে করতে কি তুমি রাজি আছ?’ সে বলল, ‘হ্যাঁ’। তখন রাসূলে করীম (ﷺ) সে বিয়েতে অনুমতি দান করেছিলেন।

অপরদিকে কুরআন মজীদে এই মহরানা সম্পর্কে বলা হয়েছেঃ

(আরবী)

এবং তোমরা মেয়েদের এক-একজনকে ‘বিপুল পরিমাণ’ ধন-সম্পদ মহরানা বাবদ দিয়ে দিয়েছ।

এ আয়াতের ভিত্তিতে বিপুল পরিমাণ সম্পদ মহরানা বাবদ দেয়া জায়েয প্রমাণিত হচ্ছে। হযরত উমর (রা) উম্মে কুলসুমকে বিয়ে করেছিলেন এবং মহরানা বাবদ দিয়েছিলেন চল্লিশ হাজার দিরহাম। চল্লিশ হাজার দিরহাম তদানীন্তন সমাজে বিরাট সম্পদ। নবী করীম (ﷺ) স্বয়ং হযরত উম্মে হাবীবাকে মহরানা দিয়েছিলেন চারশত দীনার –চার শতটি স্বর্ণমুদ্রা। এক বর্ণনা থেকে জানা যায়, তাঁর মহরানার পরিমাণ ছিল আটশ’ দীনার। (আরবী)

এ আলোচনা থেকে একদিকে যেমন জানা যায় মহরানার সর্বনিম্ন পরিমাণ, অপর দিকে জানা যায় সর্বোচ্চ পরিমাণ। ইসলামী শরীয়তে এ দু’ধরনের পরিমাণই জায়েয।

কিন্তু জাহিলিয়াতের যুগে পরিমাণে মহরানা ধার্য করা হতো। পরিমাণ বৃদ্ধির জন্যে কন্যাপক্ষ খুবই চাপ দিত। ফলে দুপক্ষের মধ্যে নানারূপ দর কষাকষি ও ঝগড়াঝাটি হতো। এর পরিণামে সমাজে দেখা দিত নানা প্রকারের জটিলতা। বর্তমানেও মুসলিম সমাজে মহরানা ধার্যের ব্যাপারে অনুরূপ অবস্থাই দেখা দিয়েছে। বলা যেতে পারে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও সভ্যতা-সংস্কৃতির চরমোন্নতির এ যুগে পুরাতন জাহিলিয়াত নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এখন নতুন করে স্মরণ করা আবশ্যক বোধ হচ্ছে নবী করীম (ﷺ)-এর পুরাতন বাণী। বলেছেনঃ

(আরবী)

সবচেয়ে উত্তর পরিমাণের মহরানা হচ্ছে তা, যা আদায় করা খুবই সহজসাধ্য।

এজন্যে একান্ত প্রয়োজন হচ্ছে অবস্থাভেদে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ পরিমাণের মধ্যে সহজ দেয় একটা পরিমাণ বেঁধে দেয়া এবং এ ব্যাপারে কোনো পক্ষ থেকে অকারণ বাড়াবাড়ি করা কিছুমাত্র বাঞ্ছনীয় নয়।

মহরানা বাঁধার মান মধ্যম পর্যায়ে আনার প্রচেষ্টা রাসূলে করীম (ﷺ)-এর সময় থেকেই শুরু হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে একটা ভুল দৃষ্টি যেন মুসলমানদের মধ্যে থেকেই গিয়েছে। হযরত উমর ফারূক (রা) পর্যন্ত এ সম্পর্কে বিশেষ যত্নবান হয়েছিলেন। তিনি একদা মিম্বরের ওপর দাঁড়িয়ে লোকদের নসীহত করছিলেন এবং মহরানা সম্পর্কে বিশেষভাবে বলেছিলেনঃ

(আরবী)

সাবধান হে লোকেরা, স্ত্রীদের মহরানা বাঁধতে কিছুমাত্র বাড়াবাড়ি করো না। মনে রেখো, মহরানা যদি দুনিয়ায় মান-সম্মান বাড়াতে কিংবা আল্লাহর নিকট তাকওয়ার প্রমাণ হতো। তাহলে অতিরিক্ত মহরানা বাঁধার কাজ করার জন্যে রাসূলে করীমই ছিলেন তোমাদের অপেক্ষাও বেশি অধিকারী ও যোগ্য। অথচ তিনি তাঁর স্ত্রীদের ও কন্যাদের মধ্যে কারো মহরানাই বারো ‘আউকিয়া’ (চার শ’ আশি দিরহাম কিংবা বড়জোর একশ’ কুড়ি টাকা)-র বেশি ধার্য করেন নি। মনে রাখা আবশ্যক যে, এক-একজন লোক তার স্ত্রীকে দেয় মহরানার দরুন বড় বিপদে পড়ে যায় এবং শেষ পর্যন্ত সে নিজের স্ত্রীকে শত্রু বলে মনে করতে শুরু করে।

এমনি এক ভাষণ শুনে উপস্থিতদের মধ্য থেকে একজন মহিলা দাঁড়িয়ে বললেনঃ

(আরবী)

আল্লাহ তো আমাদের দিচ্ছেন, আর তুমি হারাম করে দিচ্ছ? তুমি লোকদেরকে মেয়েদের মহরানার পরিমাণ চরশ’ দিরহামের বেশি বাঁধতে নিষেধ করছো? …তুমি কি শোননি, আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ

তোমরা তোমাদের এক এক স্ত্রীকে মহরানা দিচ্ছ বিপুল পরিমাণে?

তখন উমর (রা) বললেনঃ

(আরবী)

একজন মেয়েলোক ঠিক বলতে পারল; কিন্তু ভুল করল একজন রাষ্ট্রনেতা।

বললেনঃ

(আরবী)

হে আল্লাহ মাফ করে দাও, -সব লোকই কি উমরের তুলনায় অধিক সমঝদার?

অপর বর্ণনায় হযরত উমরের কথাটি এভাবে উদ্ধৃত হয়েছেঃ

(আরবী)

প্রত্যেকটি ব্যক্তিই উমরের অপেক্ষা বেশি ফিকাহবিদ –এমনকি মেয়েলোকরা পর্যন্ত।

বাহ্যত মনে হয়, হযতর উমর (রা) অধিক পরিমাণে মহরানা বাঁধার কাজকে নিষেধ করা থেকে ফিরে গিয়েছেন। বস্তুত হযরত উমরের কথার অর্থ এই ছিল না যে, তিনি অধিক পরিমাণে মহরানা ধার্য করাকে হারাম মনে করতেন, আর তাকে হারাম করে দেওয়াও তাঁর উদ্দেশ্য ছিল না। বরং বলা যায়, তিনি অধিক পরিমাণে মহরানা ধার্য করা ভালো মনে করতেন না। বস্তুত মহরানা পরিমাণের কোনো সর্বোচ্চ পরিমাণ নেই, এ কথার ওপরই মনীষীদের ইজমা হয়েছে।

(আরবী)

কাজেই শরীয়তে না সর্বনিম্ন পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে, না সর্বোচ্চ পরিমাণ। যার পক্ষে যতটুকু আদায় করা সহজসাধ্য, তার সেই পরিমাণই ধার্য করা উচিত।–[তবে সহজ হওয়ার অর্থও নিশ্চয়ই এই নয় যে, মহরানার পরিমাণটা এতই সামান্য হবে যে, মনে হবে সে ভিখারীকে ভিক্ষা দিচ্ছে। বস্তুত শরীয়তে মহরানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তার পরিমাণটাও তেমনি গণনার যোগ্য হওয়া উচিত।] তার চেয়ে কম করা যেমন স্বামীর উচিত নয়, তেমনি তার চেয়ে বেশি করতে চেষ্টা করাও উচিত নয় মেয়ে পক্ষের।

কোনো কোনো সাহাবী ও তাবেয়ীন নিজেদের ইজতিহাদের ভিত্তিতে মহরানার একটা সর্বনিম্ন পরিমাণ নির্ধারণ করতে চেষ্টা করেছেন। হযতর আলী (রা) বলেছেনঃ

(আরবী)

দশ দিরহাম পরিমাণের কমে মহরানা হতে পারে না।

শা’বী, ইবরাহীন নখয়ী ও অন্যান্য তাবেয়ীও এ মতই প্রকাশ করেছেন। ইমাম আবূ হানীফা, আবূ ইউসুফ, মুহাম্মাদ, জুফর, হাসান ইবনে জিয়াদেরও এই মত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। হযরত আবূ সাইদ খুদরী (রা), হাসান, সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যিব ও আতা প্রমুখ ফকীহ বলেছেনঃ

(আরবী)

বিয়ে কম পরিমাণ মহরানায়ও শুদ্ধ হয়, শুদ্ধ হয়ে বেশি পরিমাণ মহরানায়ও।

হযরত আবদুর রহমান ইবনে আওফ (রা) এক ‘নাওয়াত’ পরিমাণ স্বর্ণ মহরানা বাবদ দিয়েছিলেন। তার মূল্য বড়জোর তিন দিরহাম মাত্র। আর কেউ বলেছেন পাঁচ, কেউ বলেছেন দশ দিরহাম। ইমাম মালিক বলেছেনঃ

(আরবী)

নিম্নতম মহরানার পরিমাণ হচ্ছে এক দীনারের এক-চতুর্থাংশ।

পূর্বেই বলেছি, এসব হচ্ছে ইসলামের বিশেষজ্ঞ মনীষীদের নিজস্ব মতামত ও নিজস্ব ইজতিহাদ। এর মূলে কুরআন ও সুন্নাহর কোনো অকাট্য দলীল নেই।

আসলে বিয়েতে দেন-মোহরের ব্যবস্থা করা হয়েছে কেবল আনুষ্ঠানিকভাবে একটা কিছু বেঁধে দেয়ার উদ্দেশ্যে নয়। বরং যা কিছু ধার্য করা হবে তা একদিকে যেমন স্ত্রীর প্রাপ্য আল্লাহর দেয়া অধিকার, অপরদিকে স্বামীর শ্রেষ্ঠত্ব ও ব্যক্তিত্বের প্রমাণস্বরূপ স্ত্রীর অঙ্গের অধিকার হালাল করার একটি পুরস্কারও বটে। অতএব তা ধার্য করতে হবে তাকে ঠিক ঠিকভাবে ও যথাসময়ে স্ত্রীর নিকট আদায় করে দয়োর উদ্দেশ্যে। স্ত্রীর অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বিধানও এর একটা বিশেষ লক্ষ্য। কিন্তু শুধু করে দেয়ার উদ্দেশ্যে। স্ত্রীর অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বিধানও এর একটা বিশেষ লক্ষ্য। কিন্তু শুধু আনুষ্ঠানিকভাবে যদি একটা বিরাট পরিমাণ বেঁধেও দেয়া হয় কিংবা স্বামীকে তা স্বীকার করে নিতে বাধ্যও করা হয়, অথব তা যদি সঠিকভাবে আদায়ই না করা হয়, তাহলে স্ত্রীর কার্যত কোনো ফায়দাই তাতে হয় না। আর পরিমাণ যদি এত বড় হয় যে, তা আদায় করা স্বামীর পক্ষে কিছুতেই সম্ভব নয়, তাহলে তার পরিমাণ পারিবারিক ও দাম্পত্য জীবনে মারাত্মক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে। স্বামী যদি বিয়ের উদ্দেশ্যে মেয়ে পক্ষের অসম্ভব দাবির নিকট মাথা নত করে দিয়ে তাদের মর্জি মতো বড় পরিমাণের মহরানা স্বীকার করে নেয়, আর মনে মনে চিন্তা ও সিদ্ধান্ত করে রাখে যে, কার্যত সে তার কিছুই আদায় করবে না, তা হলেও ব্যাপারটি একটি বড় রকমের প্রতারণার পর্যায়ে পড়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে আদায় করার নিয়ত না থাকা সত্ত্বেও একটা বড় পরিমাণের মহরানা মুখে স্বীকার করে নেয়া যে কত বড় গুনাহ তা রাসূলে করীম (ﷺ)-এর উদ্ধৃত বাণী থেকেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তিনি ঘোষণা করেছেনঃ

(আরবী)

যে লোক কোনো মেয়েকে কম বেশি পরিমাণের মহরানা দেয়ার ওয়াদায় বিয়ে করে অথচ তার মনে স্ত্রীর সে হক আদায় করার ইচ্ছা থাকে না, সে কিয়ামতের দিন আল্লাহর সম্মুখে ব্যভিচারীরূপে দাঁড়াতে বাধ্য হবে।

হযরত সুহাইব ইবনে সানান (রা) বর্ণনা করেছেন, রাসূলে করীম (ﷺ) ইরশাদ করেছেনঃ

(আরবী)

যে লোক কোনো মেয়েকে কম বেশি পরিমাণের মহরানা দেয়ার ওয়াদায় বিয়ে করে অথচ তার মনে স্ত্রীর সে হক আদায় করার ইচ্ছা থাকে না, সে কিয়ামতের দিন আল্লাহর সম্মুখে ব্যভিচারীরূপে দাঁড়াতে বাধ্য হবে।

হযরত সুহাইব ইবনে সানান (রা) বর্ণনা করেছেন, রাসূলে করীম (ﷺ) ইরশাদ করেছেনঃ

(আরবী)

যে-লোক তার স্ত্রীর জন্যে কোনো মহরানা ধার্য করবে অথচ আল্লাহ জানেন যে, তা আদায় করার কোনো ইচ্ছাই তার নেই, ফলে আল্লাহর নামে নিজের স্ত্রীকেই প্রতারিত করল এবং অন্যায়ভাবে ও বাতিল পন্থায় নিজ স্ত্রীর যৌন অঙ্গ নিজের জন্যে হালাল মনে করে ভোগ করল, সে লোক আল্লাহর সাথে ব্যভিচারী হিসাবে সাক্ষাৎ করতে বাধ্য হবে। (আরবী)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন