hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

পরিবার ও পারিবারিক জীবন

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (র.)

৯৭
দৃষ্টি চালনা সম্পর্কে রাসূলের নির্দেশ
রাসূলে করীম (ﷺ) বলেছেনঃ

(আরবী)

তোমাদের দৃষ্টিকে নীচু করো, নিয়ন্ত্রিত করো এবং তোমাদের লজ্জাস্থানের সংরক্সণ করো।

এ দুটো যেমন আলাদা আলাদা নির্দেশ, তেমনি প্রথমটির অনিবার্য পরিণতি হচ্ছে শেষেরটি অর্থাৎ দৃষ্টি নিয়ন্ত্রিত হলেই লজ্জাস্থানের সংরক্ষণ সম্ভব। অন্যথায় তাকে চরম নৈতিক অধঃপতনে নিমজ্জিত হতে হবে নিঃসন্দেহে।

নবী করীম (ﷺ) হযরত আলী (রা)-কে লক্ষ্য করে বলেছিলেনঃ

(আরবী)

হে আলী, একবার কোনো পরস্ত্রীর প্রতি দৃষ্টি পড়লে পুনরায় তার প্রতি চোখ তুলে তাকাবে না। কেননা তোমার জন্যে প্রথম দৃষ্টিই ক্ষমার যোগ্য, দ্বিতীয়বার দেখা নয়।

এর কারণ সুস্পষ্ট। আকস্মিকভাবে কারো প্রতি চোখ পড়ে যাওয়া আর ইচ্ছাক্রমে কারো প্রতি তাকানো সমান কথা নয়। প্রথমবার যে চোখ কারো ওপর পড়ে গেছে, তার মূলে ব্যক্তির ইচ্ছার বিশেষ কোনো যোগ থাকে না; কিন্তু পুনর্বার তাকে দেখা ইচ্ছাক্রমেই হওয়া সম্ভব। এ জন্যেই প্রথমবারের দেখার কোনো দোষ হবে না; কিন্তু দ্বিতীয়বার তার দিকে চোখ তুলে তাকানো ক্ষমার অযোগ্য।

বিশেষত এজন্যে যে, দ্বিতীয়বারের দৃষ্টির পেছনে মনের কলুষতা ও লালসা পংকিল উত্তেজনা থাকাই স্বাভাবিক। আর এ ধরনের দৃষ্টি দিয়েই পরস্ত্রীকে দেখা স্পষ্ট হারাম।

তার মানে কখনো এ নয় যে, পরস্ত্রীকে একবার বুঝি দেখা জায়েয এবং এখানে তার অনুমতি দেয়া হচ্ছে। আসলে পরস্ত্রীকে দেখা আদপেই জায়েয নয়। এজন্যেই কুরআন ও হাদীসে দৃষ্টি নত করে চলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

রাসূলে করীম (ﷺ)-কে জিজ্ঞেস করা হলোঃ ‘পরস্ত্রীর প্রতি আকস্মিক দৃষ্টি পড়া সম্পর্কে আপনার কি হুকুম’? তিনি বললেনঃ

(আরবী) –তোমার দৃষ্টি সরিয়ে নাও।

অপর এক বর্ণনায় কথাটি এরূপঃ

(আরবী) –তোমরা চোখ অন্যদিকে ফিরিয়ে নাও।

দৃষ্টি ফিরিয়ে নেয়া কয়েকভাবে হতে পারে। আসলে কথা হচ্ছে পরস্ত্রীকে দেখার পংকিলতা থেকে নিজেকে পবিত্র রাখা। আকস্মিকভাবে নিতান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও যদি কারো প্রতি দৃষ্টি পড়ে যায়, তবে সঙ্গে সঙ্গেই চোখ নীচু করা, অন্যদিকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে ঈমানদার ব্যক্তির কাজ।

(আরবী) –মেয়েলোকদের জন্যে ভালো কি?

প্রশ্ন শুনে সকলেই চুপ মেরে থাকলেন, কেউ কোনো জবাব দিতে পারলেন না। হযরত আলী এখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বাড়ি এসে ফাতিমা (রা) কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি সঙ্গে সঙ্গেই জবাব দিলেনঃ

(আরবী)

ভিন পুরুষরা তাদের দেখবে না। (এটাই তাদের জন্যে ভালো ও কল্যাণকর)।

অপর বর্ণনায় ফাতিমা (রা) বলেনঃ

(আরবী)

বস্তুত ইসলামী সমাজ জীবনের পবিত্রতা রক্ষার্থে পুরুষদের পক্ষে যেমন ভিন মেয়েলোক দেখা হারাম, তেমনি হারাম মেয়েদের পক্ষেও ভিন পুরুষদের দেখা। কুরআন মজীদে এ সম্পর্কে যেমন পাশাপাশি দুটো আয়াতে রয়েছে –পূর্বে উদ্ধৃত হয়েছে –তেমনি হাদীসেও এ দুটো নিষেধবাণী একই সঙ্গে ও পাশাপাশি উদ্ধৃত রয়েছে। হযরত উম্মে সালমা বর্ণিত এক হাদীসের ভিত্তিতে আল্লামা শাওকানী লিখেছেনঃ

(আরবী)

পুরুষদের দেকা মেয়েদের জন্য হারাম, ঠিক যেমন হারাম পুরুষদের জন্য মেয়েদের দেখা।

এর কারণস্বরূপ তিনি লিখেছেনঃ

(আরবী)

কেননা মেয়েলোক মানব জাতির অন্তর্ভূক্ত একটা প্রজাতি। এজন্য পুরুষের মতোই মেয়েদের জন্য তারই মতো অপর প্রজাতি পুরুষদের দেখা হারাম করা হয়েছে। এ কথার যথার্থতা বোঝা যায় এ দিক দিয়েও যে, গায়র-মুহাররমের প্রতি তাকানো হারাম হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে যৌন বিপর্যয়ের ভয়। আর মেয়েদের ব্যাপারে এ ভয় অনেক বেশি। কেননা যৌন উত্তেজনা যেমন মেয়েদের বেশি, সে পরিমাণে বুদ্ধিমত্তা তাদের কম। আর পুরুষদের তুলনায় মেয়েদের কারণেই অধিক যৌন বিপর্যয় ঘটে থাকে।

নিম্নোক্ত ঘটনা থেকে এ কথার যথার্থতা প্রমাণিত হয়। একদিন হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মকতুম (রা) রাসূল করীম (ﷺ)-এর ঘরে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। তখন রাসূলের কাছে বসে ছিলেন হযরত মায়মুনা ও উম্মে সালমা –দুই উম্মুল মু’মিনীন। রাসূলে করীম (ﷺ) ইবনে উম্মে মকতুমকে প্রবেশের অনুমতি দেয়ার পূর্বে দুই উম্মুল মু’মিনীনকে বললেনঃ (আরবী) অর্থাৎ তোমরা দুজন ইবনে উম্মে মকতুমের কারণে পর্দার আড়ালে চলে যাও।

তাঁরা দুজন বললেনঃ

(আরবী)

হে রাসূল, ইবনে মকতুম কি অন্ধ নয়? ….তাহলে তো সে আমাদের দেখতেও পাবে না আর চিনতেও পারবে না, তাহলে পর্দার আড়ালে যাওয়ার কি প্রয়োজন?

তখন রাসূলে করীম (ﷺ) বললেনঃ

(আরবী)

সে অন্ধ, কিন্তু তোমরা দুজনও কি অন্ধ নাকি? সে তোমাদের দেখতে না পেলেও তোমরা কি তাকে দেখতে পাবে না?

তার মানে একজন পুরুষের পক্ষে ভিন মেয়েলোকদের দেখা যে কারণে নিষিদ্ধ, মেয়েলোকদের পক্ষেও ভিন পুরুষদের দেখায় ঠিক সে কারণই বর্তমান। অতএব তাও সমানভাবে নিষিদ্ধ।

বস্তুত আল্লাহর বান্দা হিসেবে সঠিক জীবন যাপন করার জন্য দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণ করা বিশেষ জরুরী। যার দৃষ্টি সুনিয়ন্ত্রিত নয় –ইতস্তত নারীর রূপ ও সৌন্দর্য দর্শনে যার চোখ অভ্যস্ত, আসক্ত, তার পক্ষে আল্লাহর বন্দেগী করা সম্ভব হয় না। নবী করীম (ﷺ) এরশাদ করেছেনঃ

(আরবী)

যে মুসলিম ব্যক্তি প্রথমবারে নারীর সৌন্দর্য দর্শন করে ও সঙ্গে সঙ্গেই দৃষ্টি ফিরিয়ে নেয়, আল্লাহ তার জন্যে তারই ইবাদত-বন্দেগীর কাজে বিশেষ মাধুর্য সৃষ্টি করে দেবেন।

তাহলে যাদের দৃষ্টি নারী সৌন্দর্য দেখতে নিমগ্ন থাকে, তাদের পক্ষে ইবাদতে মাধুর্য লাভ সম্ভব হবে না। হাফেয ইবনে কাসীর একটি হাদীস উদ্ধৃত করেছেন। নবী করীম (ﷺ) বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন সমস্ত চোখ ক্রন্দনরত থাকবে; কিন্তু কিছু চোখ হবে সন্তুষ্ট; আনন্দোজ্জ্বল। আর তা হচ্ছে সে চোখ, যা আল্লাহর হারাম করে দেয়া জিনিসগুলো দেখা হতে দুনিয়ায় বিরত থাকবে, যা আল্লাহর পথে অতন্দ্র থাকার কষ্ট ভোগ করবে এবং যা আল্লাহর ভয়ে অশ্রু বর্ষণ করবে। (আরবী)

মোটকথা, গায়র মুহাররম স্ত্রী-পুরুষের পারস্পরিক দৃষ্টি বিনিময় কিংবা একজনের অপরজনকে দেখা, লালসার দৃষ্টি নিক্ষেপ ইসলামে নিষিদ্ধ। এতে করে পারিবারিক জীবনে শুধু যে পংকিলতার বিষবাষ্প জমে উঠে তাই নয়, তাতে আসতে পারে এক প্রলয়ংকর ভাঙন ও বিপর্যয়। মনে করা যেতে পারে, একজন পুরুষের দৃষ্টিতে কোনো পরস্ত্রী অতিশয় সুন্দরী ও লাস্যময়ী হয়ে দেখা দিল। পুরুষ তার প্রতি দৃষ্টি পথে ঢেলে দিল প্রাণ মাতানো মন ভুলানো প্রেম ও ভালবাসা। স্ত্রীলোকটি তাতে আত্মহারা হয়ে গেল, সেও ঠিক দৃষ্টির মাধ্যমেই আত্মসমর্পণ করল এই পর-পুরুষের কাছে। এখন ভাবুন, এর পরিণাম কি? এর ফলে পুরুষ কি তার ঘরের স্ত্রীর প্রতি বিরাগভাজন হবে না? হবে নাকি এই স্ত্রী লোকটি নিজের স্বামীর প্রতি অনাসক্ত, আনুগত্যহীনা। আর তাই যদি হয়, তাহলে উভয়ের পারিবারিক জীবনের গ্রন্থি প্রথমে কলংকিত ও বিষ-জর্জর এবং পরে সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হতে বাধ্য। এর পরিণামই তো আমরা সমাজে দিনরাতই দেখতে পাচ্ছি।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন